ডিজিটালে কোন কোন কম্পানীর লাভ?
ডিজিটালে সাধারণ মানুষ বাঁচবেন ত?
ছ মাসেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে,সারা দেশে বাংলার দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে।
নোট বাতিল সিদ্ধান্ত কিন্ত বাংলার গৈরিকীকরণ অভিযানেরই অঙ্গ।বাংলার জননেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কোনো হিতৈষী সত্যি সত্যি আছে কিনা আমি জানি না।
তিনিই আমাদের নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।অন্ধ বামবিরোধী ভোটব্যান্কের রাজনীতিতে বামপন্থী আন্দোলনের ঐতিহ্য ধুয়ে মুছে ফেলার রাজনৈতিক ফসল তুলতে গিয়ে সেই জমি আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি যেভাবে বাংলা কে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্বকরণ ও আড়াআড়ি ধর্মীয় মেরুকরমের রণকৌশল সেই জমি আন্দোলনের সময় থেকে গ্রহণ করেছেন,এই মুহুর্তে বাংলার অর্থব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থার পক্ষে তা আত্মঘাতী।
করপোরেট হিল্দুত্ব এজেন্ডার বিরুদ্ধে তাঁর মোদি হটাও জিহাদে মানুষের কতটা সমর্থন?
পলাশ বিশ্বাস
নোট বাতিল নিযে ভারতীয অর্থব্যবস্থার চুড়ান্ত নৈরাজ্য নিযে আমি নিযমিত হিন্দিতে লিখছি।কখনো কখনো ইংরেজিতে.আমি মোবাইলে লিখি না,তাই এফবি তে তত্ক্ষণাত্ কোনো মন্তব্য করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।বাংলা আমার মাতৃভাষা,যদিও বাংলায় আমি লেখক বা সাংবাদিক হিসেবে কোনো প্রতিষ্ঠিত মানুষ নই।আমি আপনাদেরই মত একজন অতি সাধারণ নাগরিকমাত্র।গত পয়তাল্লিশ বছর যাবত আমি ইংরেজি এবং হিন্দিতে জনগণের হয়ে কথা বলতে লিখতে অভ্যস্ত।কোনোদিন বাণিজ্যিক লেখা লিখতে পারিনি।
আজ জিরো ইনকাম স্টেটসেও আমার পক্ষে করপোরেট স্বার্থে লেখা সম্ভব নয।তাই প্রিন্ট ও ইলেক্রোনিক মীডিয়ায অনুপস্থিত আমার মত নন সেলেব্রিটি মানুষের পক্ষে সাধারণ পাঠককে সম্বোধিত করা এক্কেবারেই অসম্ভব।অন্যদিকে আমার সর্বভারতীয় একটি পাঠকশ্রেণী এই পয়তাল্লিশ বছরে তৈরি হয়েছে.যাদের প্রতি আমি রিয়েল টাইমে যাবতীয় তথ্যও বিশ্লেষণ প্রস্তুত করতে দায়বদ্ধ।
আমি মাঝে মাঝে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে বাংলায় অবশ্য লিখি,কিন্তু আমি এখন লিখতে পারছি না ,তাই আপনাদের কাছে করজোড়ে ক্ষমাপ্রার্থী।
নোট বাতিল সিদ্ধান্ত কিন্ত বাংলার গৈরিকীকরণ অভিযানেরই অঙ্গ।বাংলার জননেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির কোনো হিতৈষী সত্যি সত্যি আছে কিনা আমি জানি না।
তিনিই আমাদের নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।অন্ধ বামবিরোধী ভোটব্যান্কের রাজনীতিতে বামপন্থী আন্দোলনের ঐতিহ্য ধুয়ে মুছে ফেলার রাজনৈতিক ফসল তুলতে গিয়ে সেই জমি আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি যেবাবে বাংলা কে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্বকরণ ও আড়াআড়ি ধর্মীয় মেরুকরমের রণকৌশল সেই জমি আন্দোলনের সময় থেকে গ্রহণ করেছেন,এই মুহুর্তে বাংলার অর্থব্যবস্থা ও সমাজব্যবস্থার পক্ষে তা আত্মঘাতী।
রাজনৈতিক ভাবেও বামপন্থীদের সরিয়ে ব্যাপক গৈরিকীকরণের হাইওয়ে ধরে কালো টাকার দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ব রাজনীতি তাঁর প্রবল গণ সমর্থনকেও বিপর্যস্ত করে তুলেছে,এবং তিনি ও তাঁর সমর্থকরা এটা একেবারেই বুঝতে পারছেন না,এটা বাঙালি ও বাংলার পক্ষে অশণিসংকেত,আমি মনে করি।
দিল্লী,পাটনা বা লাখনৌ হয়ত বা সারা দেশে মোদী হটাও জিহাদের পরিবর্তে বাংলার ধর্ম নিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পরিবেশকে রক্ষা করার জন্য তৃণমূল স্তরে যে রাজনৈতিক সংগঠন এবং অর্থনৈতিক রাজনৈতিক অভিযানের প্রয়োজন,তেমন কোনো দিশা মাননীয়া মমতা ব্যানার্জির তৃণমূল কংগ্রেস বা বামপন্থী দলের কারও নেই।
সবচাইতে বেদনাদায়ক প্রসঙ্গ হল রাজনৈতিক শ্লোগান ছাড়া এই অইর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সঠিক বিশ্লেষণ জনসমক্ষে আসছে না,খবরের কাগজ বা টিভি দেখে মানুষের যাবতীয় ধ্যান ধারণা চুড়ান্ত ভাবে রাজনৈতিক।
এই নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের কোনো অর্থশাস্ত্রীয় ভিত্তি নেই।মুক্ত বাজারের প্রবক্তা মাননীয় অমর্ত্য সেন থেকে অভিরুপ সরকার পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত সব অর্থবিদরাই খোলাখুলি বলছেন।যত নোট বাতিল হয়েছিল তার সবগুলিই আবার ব্যান্কে ফেরত এসেছে।
কালো টাকার হদিশ কিন্ত এখনো মেলেনি এবং এখন সবাই ডিজিটাল ইন্ডিয়ার ধুয়ো তুলছেন।কোন কোন কম্পানীর লাভ হবে এই ডিজিটালে,বুঝে নিতে হবে।কালো টাকার কথা প্রধানমন্ত্রী বেমালূম ভুলে গেছেন।
এত কাল যাবত ছাপানো নোটের বদলে সমসংখ্যক বা অন্ততঃ কাজ চালানোর মত নোট ছাপানোর মত পরিকাঠামো রিজার্ভ ব্যান্কের নেইকালো টাকার হদিশ কিন্ত এখনো মেলেনি এবং এখন সবাই ডিজিটাল ইন্ডিয়ার ধুয়ো তুলছেন।কোন কোন কম্পানীর লাভ হবে এই ডিজিটালে,বুঝে নিতে হবে।কালো টাকার কথা প্রধানমন্ত্রী বেমালূম ভুলে গেছেন।
ছ মাস ছ বছরে ও বাজারে নগদের জোগান বাড়ার সম্ভাবনা শেষ।উপরন্তু ডিজিটাল ইন্ডিযার লক্ষ্যে অবিচল করপোরেট ফিস্ক্যাল পোলিটিক্যাল পরিকল্পনা অনুযায়ী নগদ টাকার কৃত্তিম অভাব তৈরি করা হল।
মোদ্দা কথা হল,সাধারণ মানুষকে ক্রয়ক্ষমতা থেকে বন্চিত করে তাঁর সবরকম আর্থিক সুযোগ সুবিধা,স্বাধীনতা,ক্ষমতা,উত্পাদন,জীবিকা,উদ্যম থেকে তাঁদের বন্চিত করা হল।এটিএম বা ব্যান্কের লাইনে যারা মারা যাচ্ছেন আমরা সকলেই তাঁদের চর্ম চক্ষুতে দেখতে পারছি।কিন্তু সাধারণ কোটি কোটি মানুষের অকাল মৃত্যুর ভয়াল ভবিষ্যত আমরা প্রত্যক্ষ দেখতে পারছি না।
গতকালই ডিজিটাল ইন্ডিয়ার লক্ষ্যে যে এগারো দফা ইনসেন্টিভ ঘোষণা করা হল,তাঁর কোনো হিসেব আমাদের হাতে নেই।আখেরে এই জডিজিটাল লেনদনের চার দেওয়ালে আমাদের হাতে শেষ পর্যন্ত কতটা ক্রয়ক্ষমতা থাকছে,এবং এই সোয়াইপ মেশিনগুলো কারা সাপ্লাই করবেন,তাঁদের কমিশন কত,ছাড় বাবদ কত পাব আর পরিসেবা বাবত কত দিতে হবে।
ফেসবুক করা,এসএমএস করা আর ডিজিটাল লেনদেন এক কথা নয়।আধার নাম্বার দিয়ে যে ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে,তাতে জান মালের নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা ব্যান্কিংএর মত থাকছে না।
প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে কার্ড যেকোনো পয়েন্টে হ্যাক হতে পারে যেমনটা এটিএম বা ক্রেডিট কার্ডের ক্ষেতেরে হযেছিল।ব্যান্ক সেক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ দেবে কিন্তি নন ব্যান্কিং সংস্থা আদৌ কি ক্ষতিপূরণ দিতে দায়বদ্ধ,এমন কোনো প্রশ্ন করপোরেট সাংবাদিকরা করেন নি।
কত কালো টাকা উদ্ধার হল?
কত নোট ছাপা হল?
আদানি টাটা রিলাযেন্স বিলিয় বিলিযন পৌন্ড বা ডলারে বিজনেস করছেন সারা পৃথীবীব্যাপী,তাঁদের লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকছে না,অথছ একটি দুহাজারটাকার নোট নিতে গিয়ে মানুষকে বেঘোরে প্রাণ হারাতে হচ্ছে ব্যান্কে টাকা থাকা সত্বেও?
নোট বদলের আগে সারা দেশে ব্যাপক যে টাকা জমা পড়েছে,সে সম্পর্কে তথ্য কোথায়?
বিজেপি মাফিয়া্ জনার্দন পুজারির পাঁচশো কোটির বিয়ের টাকা নোটবন্দিতে খরচ হল অথছ সাধারণ মানুষ নিজের বাড়িতে বিয়ে বাবদ টাকা পাচ্ছেন না?
বাংলায় তিন কোটি বিজেপির একাউন্টে জমার জন্য কি পদক্ষেপ হল?
প্রত্যেক রাজ্যে নোটবন্দীর ঠিক আগে বিজেপি দপ্তরের জন্য কোথা থেকে টাকা এল?
বিজয় মাল্য ছাড়া আর কাকে কাকে কোটি কোটি টাকার ঋণ মাফ করা হল?
নোটবন্দীর আগে নূতন আইন তৈরি করে কাদের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হল?
চা বাগানের কত শ্রমিককে তাঁদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হল?
নোট বাতিলের ফলে কত মানুষের চাকরি নট হল,কত উত্পাদন সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ হল?
পেটিএম,বিগ বাজার,জিও ইত্যাদিকে ব্যান্কের বদলে ট্রান্জেকশনের অধিকারে কার কতটা লাভ?
পেটিএম ও জিওর বিজ্ঞাপনে কেন প্রধানমন্ত্রী ছবি?
নূতন নোটে কেন প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ?
একহাজারি,পাঁচশো টাকা বাতিল করে যে দুহাজারী মহার্ঘ নোট জারি করা হল,সেই নোটেই দেশে সর্বত্র বিজেপি নেতারা কালো টাকা জমা করে ফেলিছেন ইতিমধ্যে এবং ধরাও পড়ছেন সারা দেশে,এটা কেমন করে হল?
এমন কোনো বেয়াডা় প্রশ্নের মুখোমুখি জেটলিকে হতে হয়নি।
ইতিমধ্যে এচটিএফসি ও এসবিআই ব্যান্কের চেয়ারম্যানরাও নোট বাতিলের যৌক্তিকতা নিয়ে সরব হয়েছেন।রিজার্ভ ব্যান্কও দায় ঝেড়ে ঝাড়া হাত পা।
জেটলি নিজে প্রধানমন্ত্রীর চওড়া কাঁধে সব দায়িত্ব পাঠিয়ে দিয়ে খালাস।
যারা ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থা করতে পারবেন না,এমন কোটি কোটি হাটে বাজারের মানুষকে একচেটিয়া করপোরেট আগ্রাসনের সামনে ফেলে দেওয়া হল।
বাজারে তাঁদের ফিরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।
রোজগার সৃজন ত হচ্ছেই না,চা বাগান কল কারখানার শ্রমিক থেকে অসংগঠিত সেক্টারের শর্মজীবী মানুষ বা সবচেযে বেশি গ্রামীণ ক্ষেত মজূরদের বাড়িতে হাঁড়ি কি ভাবে চলবে,কেউ বলতে পারছেন না।
সারা দেশে মাত্র দু কোটি মানূষের নিযমিত বেতন বা পেনশন,তাঁরাই বেতন বা পেনশন পাচ্ছেন না।
তাহলে বাকি 128 কোটি মানুষের মধ্যে কত মানুষ আছেন যারা ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় বেঁচে বর্তে থাকতে পারবেন,এই প্রশ্ন কেউ করছেন না।
ইতিমধ্যে জিডিপি কমতে শুরু করেছে.যা মন্দার সংকেত।
ইতিমধ্যে উত্পাদন দু পার্সেন্ট কমেছে।
ইতিমধ্যে ভারতের বাইরে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের,পৌন্ডের ভারতীয় কম্পানী আদানী,টাটা,রিলায়েন্সের অবাধ ব্যবসা সত্বেও ভারতে বিনিয়োগ মাইনাসে।
কৃষি ক্ষেত্রে বিকাশ দর আগেই শুন্য ছিল,একন এই একমাসেই কৃষিতে শতকরা সত্তর পার্সেন্ট লোকসান হযে গেছে।
রবি ফসলের চাস বাধিত।খরিফ বিক্রী হচ্ছে না।
কত লক্ষ চাষি এবছর আত্মহত্যা করতে বাধ্য হবেন,সে সম্পর্কে রাজনৈতিক নেতাদের কোনো ধারণা নেই।
ইতিমধ্যে পান্জাবে গমের দাম প্রায় এক হাজার টাকা কুন্টলে বেড়ে গেছে।
সারা দেশে খুচরো আটা তেল চাল ডালের মাচের মাংসের দাম বেড়েই চলেছে।
শীতের সব্জি বাজারেও রেহাই নেই।
ছ মাসেও পরিস্থিতির উন্নতি না হলে,সারা দেশে বাংলার দুর্ভিক্ষ ফিরে আসবে।
No comments:
Post a Comment