Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Friday, October 3, 2014

একটি রোমহর্ষক গণহত্যার কাহিনী

একটি রোমহর্ষক গণহত্যার কাহিনী

বিপ্লব রহমান
(ফুন্দুরী রাঙ্গা ঝুরবো ফেগ, তম্মা মইলে মুইদো এজ…চাকমা ছড়াগান…রাঙালেজের কান্ত পাখি, তোমার মা মারা গেলে আমার কাছে এসো…)
০১। কোনো পেশাগত কারণে নয়, স্রেফ বেড়াতে যাওয়ার জন্যই সেবার পাহাড়ে যাই চাকমা আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বিঝুর আমন্ত্রণে। ১৯৯২ সালের ১১ এপ্রিল সকালে কলাবাগান থেকে বিশাল দলবলসহ লক্কড়-ঝক্কড় বাস 'ডলফিন' ছাড়ে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে। সেটা শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরেরও বছর পাঁচেক আগের ঘটনা [লিংক]। পাহাড় তখন দারুন অশান্ত, যুদ্ধ — বিক্ষুব্ধ। জনসংহতি সমিতির সাবেক গেরিলা গ্রুপ শান্তিবাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর রক্তক্ষয়ী বন্দুক যুদ্ধ লেগেই আছে [লিংক]



বাসে আমার সহযাত্রী প্রধীরদা (প্রধীর তালুকদার, অখণ্ড পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক নেতা, পরে তিনি শান্তিবাহিনীতে যোগ দেন) পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা করছিলেন। বলছিলেন জলপাই শাসনের ভয়াল রূপ। আশৈশব থেকে দেখা তার চিরচেনা পাহাড় দিনের পর দিন বহিরাগত বাঙালি সেটেলারদের দখলে চলে যাওয়ার বেদনাদায়ক ইতিহাস।
 

কুমিল্লা সেনানিবাস পার হওয়ার পথেই বুঝতে পারি আতংকিত জনপদে প্রবেশের যন্ত্রণা। বেশ কয়েক জায়গায় বাঁশ-কল দিয়ে গাড়ি আটকে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যাত্রীদের নাম-ধাম ইত্যাদির তালিকা তৈরী করেন। লাগেজ-ব্যাগেজও তল্লাসী হয় কয়েকবার। চেকপোস্টগুলোতে তখন এমন সাইনবোর্ড দেখি: থামুন। আপনার পরিচয় দিন। পাহাড়ি-বাঙালি দুই লাইনে দাঁড়ান। নিরাপত্তা তল্লাসীতে সহায়তা করুন– ইত্যাদি।

সফরসঙ্গী ইলিয়াস ভাই (প্রয়াত লেখক আখতারুজ্জামন ইলিয়াস), আনু ভাই (অর্থনীতিবিদ ও লেখক আনু মুহাম্মদ), শাজাহান ভাই (প্রয়াত ব্যারিস্টার লুৎফর রহমান শাজাহান), সারা আপা (ব্যারিস্টার সারা হোসেন), আহাদ ভাই (আহাদ আহমেদ খন্দকার, তৎকালীন অখন্ড ছাত্র ফেডারেশন সভাপতি) — তারাই নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

বাস রামগড় প্রবেশের সময় চোখে পড়ে পথের দুপাশের উঁচু উঁচু পাহাড়ে ও টিলায় এক কিলোমিটার অন্তর অন্তর সেনাবাহিনীর ওয়াচ-পোস্ট।

বাস খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর আগেই পথের মধ্যে দু-এক জায়াগায় কয়েকজন পাহাড়ি বাস থামিয়ে সঙ্গী অপরাপর পাহাড়ি বন্ধুদের সঙ্গে কথোপকথন সেরে নেন। এভাবে বাসের মধ্যেই লোকমুখে জানতে পারি, রোমহর্ষক এক গণহত্যার কাহিনী।

আগের দিনই (১০ এপ্রিল, ১৯৯২) তুচ্ছ এক গ্রাম্য বিরোধকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার লোগাং নামক একটি পাহাড়ি গ্রামে সেনাবাহিনী, আনসার, ভিডিপি ও সেটেলাররা একযোগে আক্রমণ চালায়। ওরা নিরস্ত্র, হত-দরিদ্র সাধারণ পাহাড়িদের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে নির্বিচারে গুলি করে। সেটেলারদের দায়ের আঘাতে প্রাণ যায় অনেকের। হতাহতের সংখ্যা কত হবে, কেউ তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারছেন না। পুরো এলাকায় নাকি কারফিউ জারি করা হয়েছে।…

খাগড়াছড়ি পৌঁছানোর পর পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের ছেলে-মেয়েরা ফুল দিয়ে আমাদের স্বাগতঃ জানায়। তবে লোগাঙের কথা শুনে সবারই চোখ-মুখ কেমন যেনো শুকনো বলে মনে হয়। শান্তিবাহিনীর প্রতিশোধমূলক পাল্টা আক্রমণ, আর নিরাপত্তা বাহিনীর পাল্টা আক্রমণের আশংকায় ছোট্ট পাহাড়ি শহর খাগড়াছড়ি একেবারেই শুনশান হয়ে পড়ে। ঝপ করে সন্ধ্যা নামে কালা পাহাড়ের দেশে।

০২। জেলা সার্কিট হাউজে অতিথিদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাড়ে সাতটার বিবিসির রেডিওতে খাগড়াছড়ি সংবাদদাতার বরাত দিয়ে প্রচার করা উল্টো খবর। লোগাঙে নাকি শান্তিবাহিনীর আক্রমণে মাত্র ১০ জন পাহাড়ি ও তিনজন বাঙালিসহ মোট ১৩ জন মারা গেছেন!

হাড়ের তথ্য-সাংবাদিকতার সুবাদে আমার জানা ছিলো, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান — এই তিন পার্বত্য জেলার সাংবাদিকদের তখন আসলে নিয়ন্ত্রণ করতো নিরাপত্তাবাহিনী। সেনা নিয়ন্ত্রণের বাইরে তথ্য-সংবাদ পরিবেশনের উপায় ছিলো না। তিন জেলার তিনটি প্রেসক্লাবও উদ্বোধন করেছেন তিন জন মেজর জেনারেল। আমার পাহাড়ি বন্ধুদের ভাষায়, প্রেসক্লাবগুলো হচ্ছে সাংবাদিকদের কবরখানা!

তো সব মিলিয়ে বিবিসির ওই খবর বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে না।…

সার্কিট হাউজে যখন অতিথিদের রাতের খাবার হিসেবে পাহাড়ি ছেলে-মেয়েরা যখন প্লেটে পোলাও-মাংস তুলে দিচ্ছিলেন, তখন বাইরের বারান্দায় দেখি একজন পাহাড়ি লোককে এক গামলা মুড়ি খেতে দরিদ্র। তার কোলে একরত্তি একটি দুধের শিশু। লোকটিকে কান্তি আর অজানা এক অনুভূতি ঘিরে রাখে। সে যত না মুড়ি খায়, তার চেয়েও বেশী পানি খায় ঢক ঢক করে। কোলের শিশুটিকেও পানি খাওয়ায় কয়েকবার।

তার পরিচর্যা করছিলেন যে সব ছেলে-মেয়েরা তাদের কাছ থেকে জানতে পাই, এই ভাগ্যহতের ইতিকথা। দ্রুত নোট প্যাড বের করে টুকে নিতে থাকি নাম বিস্তৃত পাহাড়ি লোকটির চাকমা ভাষার ভাষ্য। এনালগ ইয়াশিকা ক্যামেরায় তার দু-একটি সাদাকালো ছবিও তুলি। লোকটি হচ্ছেন লোগাং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শি; প্রাণে বেঁচে যাওয়া সৌভাগ্যবানদের একজন।

তাদের গ্রামে আক্রমণ হতেই শিশুটিকে কোলে করে দুর্গম পাহাড়-জঙ্গল ভেঙে প্রায় ৩০ কিলিমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি প্রথমে পৌঁছান জেলা সদরে। পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতারা সার্কিট হাউজে আছেন — এই খবর শুনে তিনি আসেন সেখানে। অনর্গল চাকমা ভাষায় শুধু একটা কথাই বলেন তিনি, বাবারা আমাকে একটু আশ্রয় দাও! চিদরেরা (সেনা বাহিনী) আমার কথা জানতে পারলে হয়তো আমাকেও মেরে ফেলবে!


ছাত্র নেতারা নিজেদের মধ্যে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কাছে ভাষ্য দেওয়ার ‌'অপরাধে' লোকটিকে নিরাপত্তা বাহিনী হয়তো ছেড়ে কথা বলবে না। তাই দ্রুত তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কোনো একটি নিরাপদ আশ্রয়ে।

সেদিন আমার রাত কাটে বর্ষিয়ান পাহাড়ি নেতা অনন্ত মাস্টার তথা রামগড়ের স্কুল শিক্ষক অনন্ত বিহারী খীসার (অখন্ড পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক নেতা, বর্তমানে শান্তিচুক্তি বিরোধী ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট– ইউপিডিএফের সভাপতি প্রসিত বিকাশ খীসার বাবা) নারানখাইয়ার বাসায়[লিংক]

০৩। পরদিন ১২ এপ্রিল ছিলো ফুল বিঝু। খুব ভোরে নাস্তার টেবিলে অনন্ত মাস্টার সুন্দর করে বুঝিয়ে বলছিলেন চাকমাদের চৈত্র সংক্রান্তির তিন দিনের বিঝু উৎসব–ফুল বিঝু, মূল বিঝু ও গইজ্যাপইজ্যা বিঝুর কথা।

এমন সময় কোথা থেকে যেনো একদল পাহাড়ি শিশু-কিশোর কিচির-মিচির করতে করতে হাজির হয় সেখানে। ঝুপ ঝুপ করে তারা অনন্ত মাস্টারকে ফুল বিঝুর প্রণাম করে। 'বাঙাল' অতিথির দিকে ওরা ফিরেও তাকায় না। …

সার্কিট হাউজে এসে শুনতে পাই, ইলিয়াস ভাই, আনু ভাই, শাজাহান ভাই — সকলে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই সকালেই লোগাং যাওয়া হবে। সরেজমিনে দেখা হবে আসলে কী ঘটেছে সেখানে। আমাদের সঙ্গে যোগ দেন পাহাড়ি গজদন্ত-কারুশিল্পী বিজয় কেতন চাকমা।

কয়েকটি ভাঙাচোরা জিপ (স্থানীয় নাম– চাঁদের গাড়ি) ভাড়া করে আমরা রওনা দেই লোগাঙের উদ্দেশ্যে।

আবারও পথে পথে চলে নিরাপত্তা তল্লাসী, জেরা, তালিকা নির্মাণ– ইত্যাদি। লোগাঙের আগেই চাঁদের গাড়িগুলোকে আটকে দেওয়া হয় পানছড়ি বাজার সংলগ্ন সেনা চেকপোস্টে।

সেখানে হাজির হন ৩৩ নম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের জোন কমান্ডার মেজর খালিদ রেজা। তিনি তখন পানছড়ির ক্যাম্পের দায়িত্বে। লোগাং যাওয়া না যাওয়ার প্রশ্নে তুমুল তর্কাতর্কি বাধে দুপক্ষের মধ্যে।

মেজর খালিদের কথা একটাই, লোগাঙে যাওয়া নাকি নিরাপদ নয়। যে কোনো মুহূর্তে সেখানে নাকি শান্তিবাহিনী আবারও পাল্টা হামলা করতে পারে। তাছাড়া তার সন্দেহ, আমারাই হয়তো শান্তিবাহিনীর আমন্ত্রণে লোগাং যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি এসেছি। তাই লোগাং 'অঘটনের' জন্য পরোক্ষভাবে আমরাও হয়তো জড়িত। নইলে ঘটনার পর পরই আমরা সেখানে হাজির হবো কী ভাবে? বিঝু-টিঝু আসলে নাকি ফালতু অজুহাত!

তর্কাতর্কির সময় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতা (বর্তমানে ইউপিডিএফের দলছুট নেতা) সঞ্চয় চাকমাকে দেখতে পাই চেক পোস্টের কাছেই একজন পাহাড়ি লোকের সঙ্গে কথা বলতে। লোকটির পিঠে এক টুকরো কাপড়ে বাধা ছোট্ট একটি শিশু। তার হাত ধরে আছে একটু বড় আরেকটি শিশু। তার সর্বাঙ্গে শুকিয়ে যাওয়া রক্তের ছোপ ছোপ ছিট!

লোকটি কথা বলছিলেন ফিসফিসিয়ে। সেখানে উপস্থিত হতেই তার কথাবার্তা বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি বুঝে সঞ্চয়কে ক্যামেরা দিয়ে বলি, তার একটি ফটো তুলে রাখতে। আর তার ভাষ্য সবই যেনো সঞ্চয় নোট করে রাখে।

পরে জানতে পাই, তিনিও লোগাং গণহত্যার আরেক প্রত্যদর্শি। সামান্য এক গ্রাম্য কোন্দালকে উপলক্ষ করে সেটেলার ও নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন একসঙ্গে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরায় লোগাং গ্রামে। নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন গুলি চালায়, আর সেটেলাররা কসাইয়ের মতো কুপিয়ে কাটে নিরাপরাধ পাহাড়িদের। প্রাণে বেঁচে যাওয়া লোকটির চোখের সামনেই কুপিয়ে খুন করা হয় তার স্ত্রী ও এক শিশুকে। কোনো রকমে গহিন জঙ্গলে শিশু দুটিকে নিয়ে লুকিয়ে থেকে প্রাণে রক্ষা পান তিনি। জঙ্গলে পালানোর সময়ে বুনো কাঁটার আঘাতে তার ছড়ে যায় সর্বাঙ্গ। গত দুদিন তাদের দানা-পানি কিছুই জোটেনি।

সঞ্চয় তাকে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে খাবার কিনে বাচ্চাদের খাওয়াতে বলেন। তাকে পরামর্শ দেন, অন্য কোনো পাহাড়ি গ্রামে আপাতত লুকিয়ে থাকতে।…

সেনা বাধার মুখে সেদিন লোগাং যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে খবংপুইজ্জা নামক পাহাড়ি গ্রামে রাতে আমাদের দেখা হয় লোগাং গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শি আরো কয়েকজনের সঙ্গে।

এদের মধ্যে এক চন্দ্র সাগর চাকমা নামে এক কিশোর রয়েছে; তার মা-বাবা, ভাই -বোন সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সেটেলার বাঙালিরা। কিশোরটি জঙ্গলের ভেতর লুকিয়ে থেকে দূর থেকে প্রত্যক্ষ করে এই বেদনাদায়ক নৃশংস দৃশ্য।…

রাতে 'ইয়ং স্টার' ক্লাবে ছাত্র নেতা প্রধীরদা কাপড়ে মুড়িয়ে নিয়ে আসেন আগুনে পুড়ে কালো হয়ে যাওয়া এক শিশুর কংকাল। লোগাং হত্যাযজ্ঞ এই নাম না জানা অবোধ শিশুটিকেও রেহাই দেয়নি।…

০৪। পরে ঢাকায় ফিরে আরো এক সহকর্মী প্রিসিলা রাজের সঙ্গে 'পাহাড়ে বিপন্ন জনপদ: শোকার্ত লোগাং' শীর্ষক দুই পর্বের সচিত্র প্রতিবেদন লিখি সাপ্তাহিক 'প্রিয় প্রজন্মে' (তখন এর সম্পাদক ছিলেন ফজলুল বারী, বর্তমানে প্রবাসী)।

ওই প্রতিবেদনটিতে হামলার শিকার লোগাং গ্রামবাসী, স্থানীয় একজন স্কুল শিক্ষিকা, পানছড়ি হেলথ কমপ্লেক্সের সরকারি চিকিৎসক, খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি আহত কয়েকজনসহ অন্তত ১০ জন প্রত্যদর্শিকে উদ্ধৃত করে আমরা জানাই, লোগাং গণহত্যার লোমহর্ষক সব তথ্য। এতে বলা হয়, পাহাড়ের অসুস্থ রাজনীতি এই একটি গণহত্যাতেই কেড়ে নিয়েছে অন্তত ২০০ জন নিরপরাধ পাহাড়ির জীবন। নিখোঁজ ও আহতদের একটি আনুমানিক সংখ্যাও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনটিতে। পাশাপাশি দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসন পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ভাষ্য।

প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরই পরেই সে সময় ফজলুল বারী ভাইয়ের ওপর উর্দ্ধতন মহলের চাপ আসে। জানতে পারি, সেনা সদস্যরা সে সময় পার্বত্য চট্টগ্রামের সব কয়েকটি 'প্রিয় প্রজন্মের' কপি কিনে ফেলেছিলো, যেনো এর কোনো সংখ্যাই আর সাধারণ পাঠকের হাতে না পৌঁছে।

তবে পাহাড়ি বন্ধুরা প্রতিবেদনটি ফটোকপি করে নিজস্ব উদ্যোগে পাহাড়ে বিলি করেন; এভাবে তারা প্রচার করেন ওই প্রতিবেদনটি। এই কাজ করতে গিয়ে সে সময় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ নেতা সঞ্চয় চাকমা 'শান্তিবাহিনী' অভিযোগে প্রথমবারের মতো গ্রেফতারও হন। তিনি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্সের ছাত্র।

বলা বাহুল্য, সেবার আর বিঝু উৎসব দেখা হয়নি। লোগাঙের শোকে পাহাড়িরা বিঝু বর্জন করেন সেবার।



ছবি: প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে লোগাং গণহত্যার প্রতিবাদ জানাচ্ছেন পাহাড়ি জনতা, ১৩ মে ১৯৯২, খাগড়াছড়ি, সংগৃহিত, লেখক ।

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...