Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Monday, February 6, 2017

১৯৪৭-এর জুন মাসে বাংলার বিধানসভায় বাংলাভাগ চূড়ান্ত হলে পূর্ববাংলা থেকে নির্বাচিত ড. আম্বেদকরের সদস্যপদ স্বাভাবিক কারণেই খোয়া যায়, একই কারণে খোয়া যায় প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের সদস্যপদও।

পি. আর. ঠাকুর(3)

কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর
পি. আর. ঠাকুর প্রসঙ্গে যাবার আগে বাবাসাহেব ড. আম্বেদকর সম্পর্কে দুয়েকটি কথা বলা দরকার। গণ-পরিষদে বাংলা থেকে তাঁর নির্বাচন আটকাতে কংগ্রেস, বিশেষত সরদার বল্লভভাই প্যাটেল সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। যার ফলে আমরা স্বাভাবিক ভাবে ধরে নিই, সংবিধান পরিষদের ভেতরেও কংগ্রেস সদস্য ও নেতৃবৃন্দ নিশ্চয়ই সেই বিরোধিতা অব্যাহত রেখেছিলেন। ঘটনাবলী কিন্তু তার বিপরীত সাক্ষ্যই দেয়। একেবারে সূচনা থেকেই সেখানে বাবাসাহেবকে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। বাইরের বিরোধিতা ভেতরে টেনে আনা হয়নি।
৯ ডিসেম্বর '৪৬, অধিবেশন শুরুর দিন উপস্থিত ছিলেন সর্বমোট ২০৭ জন। সম্মানের সঙ্গে একেবারে প্রথম সারিতে যাঁদের বসানো হয়েছিল, তালিকাটা লক্ষণীয়: পণ্ডিত জহরলাল নেহেরু, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, আচার্য কৃপালিনী, ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ, সরোজিনী নাইডু, হরেকৃষ্ণ মহতাব, জি বি পন্ত, বি আর আম্বেদকর, শরৎচন্দ্র বোস, সি রাজাগোপালাচারী এবং এম. আসফ আলি। পরবর্তী কালেও লক্ষ করা গেছে, সংবিধান সভার চেয়ারম্যান রাজেন্দ্রপ্রসাদ একটি বিষয় নিয়ে বিতর্কে কুড়িজনের তালিকা ডিঙিয়ে আম্বেদকরকে বলার সুযোগ দিচ্ছেন। বাবাসাহেব সেজন্য বক্তব্যের আগে বিস্ময়ও প্রকাশ করছেন। ১৯৪৭-এর জুন মাসে বাংলার বিধানসভায় বাংলাভাগ চূড়ান্ত হলে পূর্ববাংলা থেকে নির্বাচিত ড. আম্বেদকরের সদস্যপদ স্বাভাবিক কারণেই খোয়া যায়, একই কারণে খোয়া যায় প্রমথ রঞ্জন ঠাকুরের সদস্যপদও।
৩০শে জুন ১৯৪৭, ড. রাজেন্দ্রপ্রসাদ বোম্বের প্রাইম মিনিস্টার বি জি খেরকে অনুরোধ করেন ড. আম্বেদকরকে পুনঃনির্বাচিত করতে। সেই সূত্রে জুলাই মাসেই ড. আম্বেদকর সংবিধান পরিষদে পুনঃনির্বাচিত হয়ে আসেন এবং বাংলার পরিবর্তে বোম্বের সদস্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। বাংলার সঙ্গে তাঁর নির্বাচনী বন্ধন ছিন্ন হয়। ইতিপূর্বে, জুন মাসের ২তারিখে মহাপ্রাণ যোগেন্দ্রনাথ মণ্ডলকে (Law Member to the Govt.of India) তিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি লেখেন যোগেন্দ্রনাথের ৩০মে '৪৭-এর চিঠির উত্তরে। যাতে ড.আম্বেদকরের দৃষ্টিভঙ্গী, বিশ্বাস ও আগামী কর্মসূচি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ছবি ধরা পড়ে। ধরা পড়ে হিন্দু ও মুসলমান নেতৃবৃন্দ সম্পর্কে তাঁর প্রকৃত মনোভাব। ওই পরিস্থিতিতে দু'দিকেই রক্ষাকবচ (safeguards)আদায় করাকেই তপশিলিদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। নানা বিষয়ে আলো ফেলা সেই গুরুত্বপূর্ণ চিঠিটি প্রসঙ্গান্তরে নিশ্চয়ই কেন্দ্রীয় আলোচ্য বিষয় হতে পারে, কিন্তু বর্তমান আলোচনায় তা ততটা প্রাসঙ্গিক নয়। 
সংবিধান সভায় পি আর ঠাকুরের যা কিছু অবদান, জুন '৪৭-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই সময়ে যেখানে সুযোগ মিলেছে, তিনি নিজের বক্তব্য তুলে ধরেছেন। যেমন সংবিধান সভাতেও (২৫/১/৪৭) তিনি পূর্ববাংলার দুর্ভিক্ষ আর দাঙ্গা পীড়িতদের জন্য জোরালো কন্ঠে ত্রাণের দাবী তুলে ধরেছেন। এই দরদ ও দায়বদ্ধতা সংবিধান পরিষদে আর কোনও সদস্যের কন্ঠে আমরা শুনতে পাই না। তাঁর সম্পর্কে আর কয়েকটি তথ্য দিয়ে এই আলোচনার ইতি টানব।

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...