Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Monday, July 8, 2013

পার্টি-অন্তপ্রাণ, বলতেন ‘বাংলা বঞ্চিত’, ‘বেঙ্গল প্যাকেজ’ দাবি করেননি কখনও

পার্টি-অন্তপ্রাণ, বলতেন 'বাংলা বঞ্চিত', 'বেঙ্গল প্যাকেজ' দাবি করেননি কখনও



সাড়ে ২৩ বছর বাংলার মসনদে কাটিয়ে যাওয়া জ্যোতিবাবু রাজ্যটিকে ঠিক কী অবস্থায় রেখে গিয়েছিলেন তা বোঝাতেই প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর শততম জন্ম দিনে বিদ্যুত্‍ প্রসঙ্গের অবতারণা৷ তিনি মহাকরণ থেকে বিদায় নেওয়ার লগ্নে কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে জনস্বাস্থ্য, কোনও ক্ষেত্রেই বড়ো মুখ করে বলার মতো কোনও সাফল্য ঝুলিতে ছিল না৷ রাজ্যবাসীর মাথাপিছু গড় আয় ছিল জাতীয় গড়ের কম৷ ৪৬ শতাংশ পরিবার ছিল দারিদ্রসীমার নিচে৷ উচ্চশিক্ষা এবং ভালো চিকিত্সা মানে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেওয়াই ছিল দস্ত্তর৷ যদিও অশোক মিত্র'র মুখ দিয়েই সরকারের প্রথম বাজেটে জ্যোতিবাবুদের অঙ্গীকার ছিল, 'আমরা বিনীত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে একটি নীরব বিপ্লব ঘটাতে চাই, নীরব অর্থনৈতিক বিপ্লব৷ যে বিপ্লবের উপান্তে যুগ যুগ ধরে যে মানুষেরা নিপীড়িত, বঞ্চিত, লাঞ্ছিত হয়ে আসছিলেন, তাঁরা জীবনের অন্য একটি ভাষা খুঁজে পাবেন৷' বিপ্লবের স্বপ্ন ভঙ্গের নানাবিধ কারণের মধ্যে প্রশাসন পরিচালনায় জ্যোতিবাবুর কেরানিসুলভ মনোভাব অনেকটা দায়ী৷ মাঝপথে রাইটার্স বিল্ডিংসকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্তকে তিনি সরকারি কর্মচারীদের মতোই 'আগাম অবসর' বলেছিলেন, যে কথা রতন টাটাও বলেননি৷

প্রশাসক জ্যোতি বসু সম্বন্ধে অশোকবাবুও লিখেছেন, 'আমলাদের আলাদা কোনও প্রবণতার কথায় আমল দিতে বরাবরই তাঁর ঈষত্‍ অনীহা৷ মন্ত্রীরা যে নির্দেশ দেবেন, রাজপুরুষ সম্প্রদায় তা পুত্তলিকাবত্‍ মেনে নিয়ে পালন করবেন, এটাই যেন তাঁর ধ্রুব বিশ্বাস৷ তাই ১৯৯৭ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব জনসমর্থন সত্ত্বেও প্রশাসনিক সংস্কার নিয়ে মাথা ঘামাতে তাঁর তেমন আগ্রহ ছিল না৷ আমরা-যা-বলব-ওরা-তাই-শুনবে গোছের মানসিকতায় তিনি অবিচল৷'

জ্যোতিবাবুর অনাগ্রহ নিয়ে অশোকবাবু আসল কথাটি লেখেননি, প্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে গোড়ায় জ্যোতিবাবু বড্ড বেশি পার্টির স্বার্থ দেখেছেন৷ তখন স্লোগান ছিল---বামফ্রন্ট সরকার সংগ্রামের হাতিয়ার৷ কিন্ত্ত অচিরেই তা পার্টির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছিল৷ সেই অন্ধত্ব দীর্ঘস্থায়ী ছিল৷ সল্টলেকে ভোট কেন্দ্রে গোলমাল থামাতে গিয়ে পুলিশ তাঁর আপ্তসহায়ককে লাঠিপেটা করেছে শুনে নবতিপর বৃদ্ধ ইন্দিরাভবন থেকে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন, 'এ কি আমাদের পুলিশ আমাদের লোককেই মারছে ..? বুদ্ধ (তখন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য) কী করছে?' রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ, ব্যক্তিগত জীবনে বন্ধু সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় জ্যোতিবাবুর জীবদ্দশাতেই বলেছিলেন, 'যতক্ষণ না দলকে টানা হচ্ছে, ততক্ষণ জ্যোতির মতো বিশ্বস্ত সুহৃদ লাখে একটাও মিলবে কি না সন্দেহ৷'

পার্টি অন্তপ্রাণ জ্যোতিবাবুকে দলও বিনিময়ে উজাড় করে দিয়েছে৷ তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন, মুখ্যমন্ত্রিত্বে রেকর্ডের পিছনে ব্যক্তিগত ক্যারিশমার পাশাপাশি পার্টি-সংগঠনের ভূমিকা কিছু কম নয়, বরং বেশিই ছিল৷ এক বার খানিক আক্ষেপের সুরেই বলেছিলেন, 'সারা জীবন কমরেড পরিবৃত হয়ে রইলাম, বন্ধু পেলাম না৷' পার্টিই যে তাঁর জীবনে শেষ কথা ছিল, রাজনৈতিক আত্মকথন 'যত দূর মনে পড়ে'-তে চোখ বোলালেই বোঝা যায়৷ ১২৫টি অনুচ্ছেদের মধ্যে ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ মাত্র দু'টি জায়গায়, 'ছেলেবেলা' এবং 'বাবা হলাম '৷

তবে, রাজ্যের লাভ-ক্ষতি দিয়েই জ্যোতিবাবুকে মাপা ঠিক হবে না৷ রাজনীতিক জ্যোতি বসুর মূল্যায়ন করতে গিয়ে আমার চোখে তাঁর তিনটি ভূমিকা বিষয় ভাবে ধরা পড়েছে, যার থেকে পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, সব রাজ্যই উপকৃত৷ সেই তিনের একটি ভূমি সংস্কার কর্মসূচি, যা আজ ডান-বাম নির্বিশেষে সব দল ও সরকারকেই ভাবতে হচ্ছে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতির ৯০ ভাগ সময় সিপিএমের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ব্যয় করলেও রাইটার্স বিল্ডিংসে পা রাখার ছাড়পত্র আদায় করতে তাঁকেও শেষে জমি নিয়ে বাম স্লোগান ধার করতে হয়েছিল৷ দ্বিতীয়টি হল, পঞ্চায়েত ও পুরসভার হাত দিয়ে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, যা দু-দশক আগেই গোটা দেশে সমাদৃত হয়েছে এবং সংবিধান সংশোধন করে সব রাজ্যকেই তা মেনে চলতে বাধ্য করা হয়েছে৷ কিন্ত্ত তাঁর সবচেয়ে বড়ো কৃতিত্ব অবশ্যই রাজ্যের হাতে আরও আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন যার সুবাদে আড়াই দশক একটি অঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকেও জ্যোতিবাবু হয়ে ছিলেন সর্বভারতীয় এবং রাজনীতির এক সন্ধিক্ষণে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তাঁর নাম বিবেচিত হয়েছিল৷ তাঁর ঘোর নিন্দুকেরাও আশা করি মানবেন, জ্যোতিবাবু লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা তোলার সুযোগ পেলে দেশের এমন কোনও ক্ষতি বৃদ্ধি হত না, যা এত দিনে হয়নি৷ তাই স্বীকার করতেই হবে জ্যোতিবাবু নেতৃত্বের চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাননি৷ তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হতে না দেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তকে তাই 'ঐতিহাসিক ভুল' বলে অভিহিত করেছিলেন৷ উল্টো দিকে প্রকাশ কারাতরা মনে করতেন, জ্যোতিবাবু প্রধানমন্ত্রী না হওয়ায় 'ভৌগোলিক বিপর্যয়' থেকে সিপিএম রক্ষা পেয়েছে৷ ঘোর বাস্তব হল, জ্যোতিবাবুর অবর্তমানে সিপিএম সত্যি সত্যিই ভৌগোলিক বিপর্যয়-এর স্বীকার৷

মুখ্যমন্ত্রী হয়েও জ্যোতিবাবু যে দেশের স্বার্থকে এগিয়ে রাখতেন, তার নানা দৃষ্টান্ত আছে৷ একটি ঘটনার কথা বলি৷ ১৯৯৪-এ জ্যোতিবাবু সরকারের নয়া শিল্পনীতি ঘোষণা করলে বণিকসভা সিআইআই কলকাতায় তাদের শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করে৷ নেতাজি ইনডোরে এক দিনের আলোচনার বিষয় ছিল --শিল্প স্থাপনে শিল্পপতিদের আর্থিক সুবিধা প্রদান৷ আলোচনায় দুই অতিথি মুখ্যমন্ত্রী হরিয়ানার ভজনলাল এবং হিমাচলপ্রদেশের বীরভদ্র সিং দেদার সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন৷ জ্যোতিবাবু কিন্ত্ত জাতীয় নেতার মতোই বলেছিলেন, 'শিল্পপতিদের সুবিধা দেওয়াই যদি শিল্পায়নের শর্ত হয় তা হলে যে সব রাজ্যে সরকারটাই গরিব, সেখানে তো কলকারখানা হবেই না৷' অনেকেই জ্যোতিবাবুর মূল্যায়ন করতে বসে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে জোট সরকার পরিচালনার কৃতিত্ব তাঁকে দেবেন, যে কারণে ১৯৯৬-এ তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করার কথাও বিবেচিত হয়েছিল৷ আমি কিন্ত্ত জোট সরকার পরিচালনার রেকর্ডকে বিশেষ কৃতিত্ব দেব না৷ কারণ, বামফ্রন্ট মূলত সমমনোভাবাপন্ন দলগুলির জোট, যারা দীর্ঘ সময় অভিন্ন কর্মসূচিকে সামনে রেখে আন্দোলন করার সুবাদে ক্ষমতায় এসেছিল৷ ফলে দলগুলির মধ্যে একটা আত্মিক যোগ গড়ে উঠেছিল৷ তা ছাড়া, সাত বারের বামফ্রন্ট সরকারের মধ্যে মাত্র এক বার জ্যোতিবাবুর দল বিধানসভায় নিরঙ্কুশ ছিল না৷ ফলে জোট ভেঙে সরকার পতনের সম্ভাবনা ছিলই না৷ তা ছাড়া শরিকদের দশা হয়েছিল অনেকটাই মানবদেহে অ্যাপেনডিক্সের মতো৷ থাকা-না থাকা অর্থহীন৷ বরং যন্ত্রণা দিলে কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে, এমনটাই ছিল বড়ো শরিক সিপিএমের মনোভাব৷ তবু সরকার ছেড়ে যাওয়ার স্পর্ধা কোনও শরিক দেখায়নি৷ বামফ্রন্ট হয়ে উঠেছিল চিটেগুড়ে আটকে থাকা মাছির মতো৷

গত তিন-সাড়ে তিন দশকে দেশ আমূল বদলে গিয়েছে৷ বদলেছে বাংলাও৷ রাইটার্স বিল্ডিংস আজ আর ক্ষমতা লালবাড়ি নয়৷ তবু ক্ষমতার অলিন্দের রাজনীতির মূল সুরটা কিন্ত্ত একই ---রাজ্য বঞ্চিত৷ তবে, তখন 'রাজ্য' ছিল বহুবচন অর্থাত্‍ রাজ্যগুলি৷ আজ একবচন৷ ক্ষমতায় আসার কিছু দিনের মধ্যেই জ্যোতিবাবু সংবিধানের ৩৫৬ নম্বর অনুচ্ছেদের অপপ্রয়োগের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন৷ অকংগ্রেস শাসিত রাজ্যে কংগ্রেসের ক্ষমতার ফেরা নিশ্চিত করতে দিল্লির সরকার কথায় কথায় ওই অনুচ্ছেদ প্রয়োগ করে নির্বাচিত রাজ্য সরকারগুলিকে ফেলে দিত৷ বছর পনেরো আগে সুপ্রিম কোর্ট ওই অনুচ্ছেদটির প্রয়োগ নিয়ে কঠোর মনোভাব নিলে পরিস্থিতি বদলে যায়৷ যার প্রেক্ষাপটে ছিল জ্যোতিবাবুর নেতৃত্বে অকংগ্রেস দলগুলির আন্দোলন৷ ১৯৮০-তে ইন্দিরা গান্ধী দিল্লির মসনদে ফিরে এলে রাজ্যের হাতে অধিক আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতার দেওয়ার দাবিতে জ্যোতিবাবু অকংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে কর কাঠামোর সংস্কার এবং রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রীয় রাজস্বের ভাগ আরও বেশি দেওয়ার যে দাবি তুলেছিলেন , তার সুফল আজ সব রাজ্যই পাচ্ছে৷ পশ্চিমবঙ্গে তখন অর্ধেক মানুষ নিরক্ষর৷ তাদের কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা বোঝাতে জ্যোতিবাবু বলতেন, 'ওদের (কেন্দ্র) হাতে টাকা ছাপানোর মেশিন আছে , আমাদের (রাজ্যের) নেই৷ ওরা যত ইচ্ছে টাকা ছাপায়, আমাদের দেয় না৷'
বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংয়ের প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় হয় পরিবর্তনের সূচনা, জ্যোতিবাবু ছিলেন যাঁর সরকারের অন্তরাত্মা৷ তার আগে আটের দশকের গোড়ায় সারকারিয়া কমিশন গঠন এবং সেখানে রাজ্যপাল পদের প্রয়োজনীয়তা থেকে নিয়োগের পদ্ধতি, সব ক্ষেত্রেই আজ জ্যোতিবাবুর উত্থাপিত দাবিগুলির প্রতিফলন৷ সেই ধারাবাহিকতা মেনেই বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ ক্ষমতা আসার পর করকাঠামোর সংস্কার এবং রাজস্বের কেন্দ্র -রাজ্য বিভাজন নিয়ে সুপারিশ করার জন্য গঠিত ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের অর্থমন্ত্রী অসীম দাশগুন্তকে৷ এই ইতিবাচক পরিবর্তনের পিছনেও আছে জ্যোতিবাবুর নেতৃত্বে অকংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলির আন্দোলন, যা পরবর্তীকালে দল নির্বিশেষে সব রাজ্যের অভিন্ন স্বর হয়ে দাঁড়ায়৷ তাই ২০০৮-এ ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের কাছে সব রাজ্য সম্মিলিতভাবে স্মারকলিপি দিয়ে রাজস্বের আরও বেশি অংশ দাবি করে৷ তার আগেই দ্বাদশ অর্থ কমিশন ২৯ শতাংশের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় করের ৩২.৫ শতাংশ রাজ্যগুলিকে দেওয়ার সুপারিশ করে৷ কেন্দ্র -রাজ্য সম্পর্কে আজ আর দিল্লির জমিদারি চলে না৷ চাইলেই প্রধানমন্ত্রী কোনও রাজ্যকে উজাড় করে দিতে পারেন না৷ সেই সুযোগ থাকলে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজ দিয়েই মমতা, নীতীশকুমারদের ইউপিএ পাশে পেয়ে যেত৷ জ্যোতিবাবুও বলতেন 'বাংলা বঞ্চিত', কিন্ত্ত তিনি বেঙ্গল প্যাকেজ দাবি করেননি৷ রাজ্যগুলি যে আজ আর দিল্লি উপনিবেশ নয়, বরং আর্থিক ও প্রশাসনিক ভাবে অনেকটাই স্বাধীন, তার পিছনে আরও একটি কারণ জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতা৷

প্রায় আড়াই দশক দেশ একদলীয় শাসনমুক্ত হয়ে জোট রাজনীতিতে অভ্যস্ত৷ প্রান্তির ঝুলিটাও আগের চার দশকের তুলনায় ভারি৷ জোট রাজনীতির সুবাদেই কেন্দ্রের মন্ত্রিসভা এখন পূর্ণাঙ্গ ভারত৷ রাজ্যে নয়, দেশকে জোট -রাজনীতিতে টেনে আনার ক্ষেত্রে জ্যোতিবাবু অনেক বেশি সফল৷ লোকসভা ভোটের আগে ফের একটি তৃতীয় বিকল্প তৈরির চেষ্টা চলছে৷ ভোট অদূরেই, তবু বিকল্পের চেহারাটা এখনও অস্পষ্ট৷ অথচ দুর্নীতি-মূল্যবৃদ্ধিসহ সামগ্রিক অপশাসনে কংগ্রেস আজ অনেক বেশি বিপন্ন৷ ঘরোয়া কোন্দলে বিব্রত বিজেপি৷ তবু ইউপিএ -এনডিএ বিরোধী তৃতীয় বিকল্প দানা বাঁধছে না৷ এর নানাবিধ কারণের একটি জ্যোতিবাবুর মতো নেতার অভাব, রাজ্যের গণ্ডি ছাপিয়ে যাঁর ভাবনায় প্রাধান্য পেত দেশ৷ জয়ললিতা, মায়াবতী, মুলায়ম, নবীন পট্টনায়ক, লালু্প্রসাদ, নীতীশকুমার থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় --- কেউই সেই গোত্রের নন৷

মহাকরণ থেকে বিদায় নেওয়ার লগ্নে কোনও ক্ষেত্রেই বড়ো মুখ করে বলার মতো কোনও সাফল্য ঝুলিতে ছিল না৷ আবার, মুখ্যমন্ত্রী হয়েও জ্যোতিবাবু যে দেশের স্বার্থকেই এগিয়ে রাখতেন, তা-ও সত্য৷ লিখছেন অমল সরকারপ্রশাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে গোড়ায় জ্যোতিবাবু বড্ড বেশি পার্টির স্বার্থ দেখেছেন৷ তখন স্লোগান ছিল---বামফ্রন্ট সরকার সংগ্রামের হাতিয়ার৷ কিন্ত্ত অচিরেই তা পার্টির হাতিয়ারে পরিণত হয়েছিল৷ জ্যোতিবাবু লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা তোলার সুযোগ পেলে দেশের এমন কোনও ক্ষতিবৃদ্ধি হত না, যা এত দিনে হয়নি৷ জ্যোতিবাবু নেতৃত্বের চূড়ান্ত পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পাননি৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...