নির্বাচনী মেরুকরণ রাজনীতির বাইরে সর্বস্বহারা মানুষের বিরুদ্ধে তাই এই নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন অমোঘ মৃত্যুবাণ।
দিদির ক্ষতি হোক না হোক,বাংলার মাটি থেকে মুছতে চলেছে কংগ্রেস এবং বামপন্থী রাজনীতি,পদ্মচাষের এই উত্সবে বাম বিরোধী ধর্মোন্মাদী শিবিরে তাই বাংলা ও বাঙালির জাতি সত্তাকে তিলান্জলি দিয়ে চলছে অকুন্ঠ গৌরিক মিছিল!
সূর্যকান্ত মিশ্র অসত্য বলছেন না যে মমতা বিরোধিতা করেননি।কিন্তু পূর্ণ সত্য হল ,বামপথীরাও নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করেননি।
মোদীর সমালোচনাই যথেষ্ট নয়,পদ্মপুরাণ আটকালেই বেনাগরিকতদের নাগরিকত্ব সামাধান হচ্ছে না।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বহাল থাকলে,মোদী যা বলছেন,কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় এলে তাঁরাও শরণার্থীদের উত্খাত করবেনই,যেহেতু করপোরেট স্বার্থেই এই আইন প্রণয়ণ।মোদী এলে,মুসলিমদের কি হবে,বলা অসম্ভব,কিন্তু ভারতভাগেরবলি উদ্বাস্তুদের কপালে অসীম দুর্ভোগ নাচছে,অথচ তাঁদেরই হ্রদমাঝারে এইরবীন্দ্রজযন্তীতে নমো নমো পদ্মফূল,কল্কি অবতারের নূতন পুজো বাংলায় চালু হলে বলে।
পলাশ বিশ্বাস
মনে রাখা দরকার,নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন অনুযায়ী 18 মে,1947এপ র পর ভারতে আসা সব্বাইকে একচেটিয়া ভাবে,হিন্দু মুসলমান ভেদাভেদ ছাড়া অনুপ্রবেশকারি তকমা দিয়ে দিয়েছে।নাগরিকত্ব অর্জন না করে থাকলে ঐ সময়ের পর আসা সব্বাই বেনাগরিক।মোদী ঠেকই বলেছেন,ক্ষমতায় আসার আগে মমতা অনুপ্রবেশকারিদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।তাঁর গৌরিক মন্ত্রিত্বকালে লালকৃষ্ণ আদবাণী এি আইন প্রণয়ন করেন।সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী,যিনি উদ্বাস্তুদের আপত্তি আদৌ শোনেননি।বামপন্থীরা সে সময কংগ্রেস তৃণমুলিদের সঙ্গেই এই আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।
সূর্যকান্ত মিশ্র অসত্য বলছেন না যে মমতা বিরোধিতা করেননি।কিন্তু পূর্ণ সত্য হল ,বামপথীরাও নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করেননি।
মোদীর সমালোচনাই যথেষ্ট নয়,পদ্মপুরাণ আটকালেই বেনাগরিকতদের নাগরিকত্ব সামাধান হচ্ছে না।
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বহাল থাকলে,মোদী যা বলছেন,কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় এলে তাঁরাও শরণার্থীদের উত্খাত করবেনই,যেহেতু করপোরেট স্বার্থেই এই আইন প্রণয়ণ।মোদী এলে,মুসলিমদের কি হবে,বলা অসম্ভব,কিন্তু ভারতভাগেরবলি উদ্বাস্তুদের কপালে অসীম দুর্ভোগ নাচছে,অথচ তাঁদেরই হ্রদমাঝারে এইরবীন্দ্রজযন্তীতে নমো নমো পদ্মফূল,কল্কি অবতারের নূতন পুজো বাংলায় চালু হলে বলে।
সত্যি কথা হল,শুধু বিজেপি নয়,অবশ্যই কংগ্রেসও এবং অন্যান্য দল সারা দেশে শুধু বাঙালি নয়,আদিবাসী ও সহরান্চলে বস্তিবাসীদের করপোরেট স্বার্থে বিজেপি প্রণীত এই আইন প্রয়োগ করেছে সেই 2003 সাল থেকেই অবিরাম।মোদীকে আটকে থার্ড ফ্রন্ট সরকার হলে,এবং মাণিক সরকারেকে প্রধানমন্ত্রী করলেও করপোরেট রাজ খতম হওয়ার কোনও সম্ভাবনা আপাততঃ নেই।
নির্বাচনী মেরুকরণ রাজনীতির বাইরে সর্বস্বহারা মানুষের বিরুদ্ধে তাই এই নাগরিকত্ব সংশোধণী আইন অমোঘ মৃত্যুবাণ।
অনুপ্রবেশকারী-শরণার্থী প্রসঙ্গে অনড় মোদী
৭ মে, ২০১৪, ২১:০১:৩৯
শ্রীরামপুর, বাঁকুড়ার পরে এ বার কলকাতা। অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থী নিয়ে নিজের অবস্থান বজায় রাখলেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। অনুপ্রবেশকারী ও শরণার্থীদের যে একই বন্ধনীতে ফেলা যায় না, বুধবার ফের সে প্রসঙ্গে বিশদ ব্যাখ্যা দিলেন তিনি। একইসঙ্গে বুঝিয়ে দিলেন, এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে গ্রেফতারের যে দাবিই তুলুন না কেন, তাকে তিনি বিশেষ আমল দিচ্ছেন না।
বুধবার রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোট চলাকালীনই বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে কৃষ্ণনগর, বারাসত ও কলকাতার কাঁকুড়গাছিতে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে এসে নরেন্দ্র মোদী ফের বলেন, প্রথমে অনুপ্রবেশকারীদের বিরোধিতা করলেও ভোটের জন্য অনুপ্রবেশকারীদের সুযোগ-সুবিধা করে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। এ দিন তিনি ফের বলেন, শরণার্থীরা এ দেশে আসতেই পারেন। তাঁদের নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। শুধু বাংলা বা অসম নয়, ভারতবর্ষের অন্য রাজ্যেও তাঁদের জন্য ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই প্রসঙ্গেই ফের মমতাকে এক হাত নেন মোদী। তিনি মনে করিয়ে দেন, ২০০৫-এ মমতাই অনুপ্রবেশকারীদের বিরোধিতায় সংসদে সোচ্চার হয়েছিলেন। এই অনুপ্রবেশকারীদের প্রসঙ্গেই বামপন্থীদেরও সমালোচনা করতে ছাড়েননি তিনি। তাঁর কথায়: "দিদি ও বামপন্থীদের সেই পুরনো কথাই আমি আবার বলছি। তা হলে আমার এ কথার বিরোধিতা কি শুধু ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি?"
বামপন্থীদের বিরুদ্ধে মমতার যে সংগ্রাম তার প্রশংসা করেও মোদী বলেন, "দিদি বলেছিলেন, বাংলায় পরিবর্তন আসবে। কিন্তু বাংলার কোনও পরিবর্তন না এলেও দিদিরই পরিবর্তন এসেছে।" এ রাজ্যে মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মোদী। বলেছেন, বাংলা হচ্ছে মায়ের ভূমি। মুখ্যমন্ত্রীও এক জন মহিলা। তবুও বাংলা ধর্ষণে দেশের প্রথম তিনটি রাজ্যের মধ্যে পড়ে।
এ দিন আবার সারদার প্রসঙ্গ টেনে বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী বলেন, "সারদার টাকা ফিরলে দিদির দুঃখ হয় কেন? চোর ধরতে তাঁর এত অসুবিধা কোথায়?" কলকাতার জনসভাই যে এ বারের নির্বাচনে তাঁর শেষ জনসভা সে কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলার মানুষের অকুণ্ঠ ভালবাসা তিনি পেয়েছেন। এই ভালবাসা যত বাড়ছে ততই দিদির রাগ বাড়ছে। তাঁর মন্তব্য: "দিদির এত রাগ ভাল নয়। আমি চাই না দিদি অসুস্থ হয়ে পড়ুন। যদি মোদী ক্ষমতায় চলে আসেন, সেই ভয় পাচ্ছেন দিদি। মতুয়ারা নাগরিকত্ব কেন পাচ্ছে না, সে প্রশ্নও এ দিন তিনি তোলেন সভা থেকে।
তিনি বলেন, সারদা ও টেট নিয়ে রাজ্যে দুর্নীতি চলছে। এ জন্য দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, বামেদের দেখানো পথেই চলছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে নতুন প্রজন্মের কেউই চাকরি পাচ্ছে না। সরকার বাংলাকে 'স্ক্যাম' বাংলায় পরিণত করেছে। তিনি তা মুক্ত করতে চান বলে দাবি করেন মোদী। মমতার পাশাপাশি কংগ্রেসেরও সমালোচনা করেন তিনি। কংগ্রেস জমানার একাধিক দুর্নীতির উল্লেখ করে তিনি বলেন, কংগ্রেসের হার নিশ্চিত। দেশের সরকারকে 'মা-বেটেকা' সরকার বলে বিদ্রুপও করেন তিনি।
LATEST VIDEOS
দুঃখিত কমরেড, বাম বিশ্লেষণে বাংলার মাটিতে পদ্মবাহারের জন্য যতই না দায়ী করা হচ্ছে মমতা ব্যানার্জিকে,তথ্য কিন্তু বলছে বাম নিষ্ক্রিয়তা ও আত্মসমর্পণ,ভোট কাটাকাটির খেলায় ফিরে আসার চেষ্টার ফলেই কল্কি অবতারের ছাপান্ন ইন্ছি ছাতির এই অশ্লীলী প্রদর্শনী চলছে বাংলার দুর্জেয় লাল দুর্গে।
এত সন্ত্রাস,এত সহিংসতা গণতন্ত্র উত্সবকে প্রহসনে পরিণতই করেনি,ফ্যাসিস্ট ধর্মোন্মাদী সাম্প্রদায়িকতার জমি তৈরি করে দিল এক্কেবারে বিনা প্রতিরোধে।
মোদীর অর্জুন চক্ষু বাংলার মত্স চক্ষুকে শর সন্ধাণের জন্য চিন্হিত করল কেন, যদিও দিল্লীর গদি দখলে উত্তর প্রদেশ বা গো বলয়ের একাধিপাত্যই নির্ণায়ক হতে চলেছে।
সাংসদ কিনতে কি লাগে, কত কোটি খরচ করতে হয় সরকার তৈরির জন্য প্রতি সাংসদেরসমর্থন হাসিল করতে যারা সাট্টায় এক লক্ষ কোটি টাকা খরচ করতে পারে,যারা বিজ্ঞাপনে পাঁচ হাজারকোটি টাকা খরচ করতে পারে,দশ পন্চাশ সাংসদের সমর্থনের প্রয়োজন তাণদের জন্য আদৌ কোনো সমস্যাই হওয়ার কথা নয়,থলি খুলে বসে আছেন দেশি বিদেশি অসংখ্য গৌরী সেন,যত টাকা লাগুক.যত বিঘ্ন আসুক, দিল্লীর রাজসিংহাসনে কল্কি অবতারের রাজ্যাভিষেক হচ্ছেই।
বাংলা জয় নির্বাচনী লক্ষ্যের অনুসন্ধান নয়.বরং হিন্দু মুসলিম ,বাঙালি অবাঙালি বিভাজন উস্কে ধর্মনিরপেক্ষতা ও প্রতিবাদী গণতন্ত্রকে হত্যা করে নির্বাধ করপোরেট রাজত্বই মোদীর পাখির চোখ।
চতুর্থ দফার নির্বাচনে যে ছটি সীটে নির্বাচন হল,সেগুলো বামপন্থীদের অভেদ্য কেল্লা ছিল এতদিন।
যারা মনে করেন,পরিবর্তনে বাংলায় কম্যুনিস্ট আন্দোলন শেষ হয়েছে,তাঁরা বিবেচনা করে দেখুন, বাংলায় এই পদ্ম ফসলের চাষেই বাংলার মাটিতে কমরেডদের শবযাত্রার মিছিল শুরু হতে চলেছে।
মোদী বার বার অপ্রিতিরোধ্য গতিতে বাঙালি বিদ্বেষের চুড়ান্ত নিদর্শন পেশ করে দেশ ভাগের ইতিহাসকে পুনর্জীবিত করছেন,বাংলারসিংহাসনে পদ্ম ফুলের আশায়।
দিদির ক্ষতি হোক না হোক,বাংলার মাটি থেকে মুছতে চলেছে কংগ্রেস এবং বামপন্থী রাজনীতি,পদ্মচাষের এই উত্সবে বাম বিরোধী ধর্মোন্মাদী শিবিরে তাই বাংলা ও বাঙালির জাতি সত্তাকে তিলান্জলি দিয়ে চলছে অকুন্ঠ গৌরিক মিছিল।
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর প্রশ্ন, এই ইস্যুতে দু হাজার পাঁচের অবস্থান কেন বদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী? তবে, কড়া আক্রমণের মধ্যে এদিনও বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর গলায় শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে মৈত্রীর সুর।
সারদা থেকে নারী নির্যাতন। পঞ্চমবার রাজ্য সফরে এসে প্রতিটি ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীকে তুলোধোনা করলেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর কটাক্ষ আগে মানুষের জন্য লড়াই করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এখন লড়েন কুর্সির জন্য।
ভিও- বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন মোদী। তাঁর মন্তব্য ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে সমালোচনার ঝড় ওঠে। কড়া ভাষায় তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মোদীকে গ্রেফতারের দাবিও তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থান নিয়েই প্রশ্ন তুললেন নরেন্দ্র মোদী।
বিগ্রেডে শুনিয়েছিলেন জোড়া লাড্ডুর তত্ত্ব, আসানসোলে শোনালেন জোড়া রসগোল্লা তত্ত্ব। এদিনও আক্রমণের চড়া সুরের মধ্যেও শোনা গেল মৈত্রীর বার্তা।
ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে নিজের অবস্থান বদল করেছেন। রাজ্যের ভোট প্রচারে এসে তিনটি জনসভাতেই এই অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের বিষয়টিও কৌশলে তুলেছেন মোদী। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর প্রশ্ন মতুয়াদের একটা বড় অংশ এখনও কেন দেশের নাগরিকত্ব পাননি?
আজকালের রিপোর্টঃ
কংগ্রেস হারছে, সারা দেশেই হারছে৷ আর মোদিকে ভোট দিয়ে একদমই ভুল করবেন না৷ যদি ১১ দল এক হতে পারি, তবে দিল্লিতে কংগ্রেসও নয়, বি জে পি-ও নয়, গরিব মানুষের জন্য একটা সরকার হতে পারে৷' মঙ্গলবার বিকেলে বারুইপুরে এক নির্বাচনী জনসভায় এসে এভাবেই তৃতীয় বিকল্প সরকারের সম্ভাবনার কথা বললেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী সুজন চক্রবর্তীর সমর্থনে এদিনের এই সভায় এ ছাড়াও বক্তব্য পেশ করেন আর এস পি-র চন্দ্রশেখর দেবনাথ, সি পি আইয়ের শ্রীকুমার চ্যাটার্জি প্রমুখ৷ মঞ্চে উপস্হিত ছিলেন নেতাজি পরিবারের সদস্য চন্দ্রকুমার বসু৷ তিনিও বক্তব্য পেশ করেন৷ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এদিন বক্তব্যের শুরুতেই কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বি জে পি-কে নিয়ে সরব হন৷ তিনি বলেন, কংগ্রেস পারছে না৷ পারবেও না৷ কংগ্রেস সরকার যাচ্ছে৷ আমরাও চাই এই কংগ্রেস সরকার যাক৷ কারণ যে অন্যায় করেছে কংগ্রেস, তাতে এই সরকারের আর থাকার দরকার নেই৷ কিন্তু তার বদলে যারা উঠে আসছে, তারা হল বি জে পি৷ একটা বড় বিপদ৷ বি জে পি বলছে, আমরা পারব৷ সামনে ঠেলে দিয়েছে এমন একটা মানুষকে, যার নাম নরেন্দ্র মোদি৷ ভয়ঙ্কর মানুষ৷ দেশটার সর্বনাশ করে দেবেন৷ মোদিকে ভোট দিয়ে একদম ভুল করবেন না৷ লাল, নীল, হলুদ জামা পরে, মাথায় পাগড়ি বেঁধে আসছেন৷ ওঁর নাম ঘোষণা হওয়া মাত্র দাঙ্গা বেধে গেছে৷ উনি বলছেন, হয় বি জে পি-কে ভোট দাও, নয় পাকিস্তান চলে যাও৷ ওদের পেছনে আছে আর এস এস৷ খাকি প্যান্ট পরে হাতে লাঠি নিয়ে ব্যায়াম করে৷ হিন্দুত্বে বিশ্বাসী৷ আমরা সবাইকে নিয়ে চলতে চাই৷ কখনও বি জে পি-কে ভোট দিয়ে ভুল করবেন না৷ তৃণমূলের সমালোচনা করে বুদ্ধ বলেন, তৃণমূল সম্বন্ধে যত না বলা যায়, ততই ভাল৷ এই দল এক সময় কংগ্রেসের সঙ্গে ছিল৷ কংগ্রেস যত অন্যায় করেছে, এরা তা সমর্থন করেছে৷ বি জে পি-র সঙ্গেও ছিল৷ ভোটের শুরুতে বি জে পি সম্বন্ধে কিছু বলছিল না৷ এখন মোদি প্রথমে লাড্ডু, পরে রসগোল্লা ভাগাভাগি করে খাওয়ানোর কথা বলায় এখন মোদির বিরুদ্ধে বলতে শুরু করেছে৷ গুজরাটে দাঙ্গার পর এই মুখ্যমন্ত্রী মোদিকে ফুল দিতে গিয়েছিলেন৷ এই মুখ্যমন্ত্রীকে আমরা একদম বিশ্বাস করি না৷ কখন বলেছেন ভুল করেছি? একবারও বলেননি৷ এখনও একবারও কি বলছেন, মোদি ডাকলে যাব না৷ বলছেন না, প্রস্তুত হয়ে আছেন৷ নেতা নিয়ে সরকার হয় না৷ নীতি নিয়ে সরকার হয়৷ কখনও আপনারা তৃণমূলকে বিশ্বাস করবেন না৷ তিন বছরে সরকার কোনও কাজ করেনি৷ নতুন কোনও শিল্প হয়নি৷ আমরা সব করে গিয়েছিলাম৷ সেগুলোও নষ্ট করেছে৷ এই সরকারের কাজ ধার করা আর ধারের টাকায় জলসা করা৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এই নির্বাচনের দিন গোলমাল পাকানোর চেষ্টা হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন৷ বলেন, আমরা হুঁশিয়ারি দিচ্ছি৷ নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে, তারা তাদের কাজ করবে৷ তবে আমরা চুপ করে থাকব না৷ কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ঘরে ঘরে প্রস্তুত হোন৷ কোনওরকম গোলমাল হলে এগিয়ে যাবেন৷ মানুষ যদি এগিয়ে আসে তবে ভোট কেউ রুখতে পারবে না৷ ভোট করতেই হবে৷ দিল্লিতে সংখ্যা বাড়াতে পারলে কোনও সরকারকেই অন্যায় কাজ করতে আমরা দেব না৷
শরণার্থী আইন সংশোধনে চুপ ছিলেন মমতা: সূর্যকাম্ত
| |
|
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে মমতার বিরুদ্ধেই পাল্টা অবস্থান বদলের অভিযোগ মোদির
ওয়েব ডেস্ক,এবিপি আনন্দ
বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যের জেরে তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বুধবার রাজ্যে এসে তাঁর জবাব দিলেন বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী৷ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই পাল্টা অবস্থান বদলের অভিযোগ করলেন তিনি৷ টেনে আনলেন অনুপ্রবেশ ইস্যুতে ২০০৫-এ সংসদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের প্রসঙ্গ৷
২০০৫ সালের ৪ঠা অগাস্ট বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটে থাকাকালীন সংসদে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে উত্তেজিত হয়ে, লোকসভার তত্কালীন ডেপুটি স্পিকার চরণজিত্ সিংহ অটওয়ালকে লক্ষ্য করে, তাঁর হাতে থাকা কাগজ ছুঁড়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ লোকসভায় মমতা বলেছিলেন,
পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশ এখন বিপর্যয়ের আকার নিয়েছে৷ বাংলাদেশি এবং ভারতীয় নাম একসঙ্গে ভোটার তালিকায় রয়েছে৷ আমার কাছে বাংলাদেশ ও ভারতের ভোটার তালিকা রয়েছে৷ এটা খুবই গুরুতর বিষয়৷ আমি জানতে চাই, এটা নিয়ে কখন আলোচনা হবে?
এদিকে সম্প্রতি রাজ্যে এসে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদি বলেন তাদের অবিলম্বে দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত্।
এরপরই মোদির গ্রেফতারের দাবিতে সুর চড়াতে শুরু করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যদিও, বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর দাবি, বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান বদলের মূল কারণ হল ভোটব্যাঙ্ক৷ ২০০৫-এ মমতা বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন, কারণ তখন তারা সিপিএমের ভোটব্যাঙ্ক ছিল৷ আর এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশ অনুপ্রবেশকারীদের আগলানোর চেষ্টা করছেন, কারণ, তারা এখন তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক৷ এমনটাই দাবি নরেন্দ্র মোদির৷
যদিও, বিরোধীরা এও দাবি করছেন, শুধু বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ইস্যুই নয়, এর আগে আরও একাধিক ইস্যুতেও মমতাকে অবস্থান বদলাতে দেখা গিয়েছে৷
বর্তমানে, প্রায় প্রতিটি সভা থেকেই মোদিকে দাঙ্গাবাজ বলে আক্রমণ করছেন মমতা৷
কিন্তু, বিরোধীদের দাবি এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই ২০০২ সালে গুজরাত হিংসার পরেও বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র সঙ্গেই ছিলেন৷ সেই সময়ের কথা, তত্কালীন তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণা বসু তাঁর বইয়ে লিখেছেন৷ কৃষ্ণা বসু লিখেছেন,
গুজরাত সংঘর্ষের ঘটনা আমাকে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছিল৷ এ বিষয়ে বিজেপির অবস্থানে আমি বিরক্ত হয়ে উঠেছিলাম৷ কিন্তু, আমার নিজের দলেই, আমার সুরে কথা বলার মতো আর কেউ ছিলেন না৷ গুজরাত সংঘর্ষ নিয়ে মমতার দ্বিমুখী আচরণে আমি একইসঙ্গে হতাশ ও হতভম্ব হয়ে পড়েছিলাম৷
প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কৃষ্ণা বসু তাঁর বইতে আরও দাবি করেছেন,
গুজরাত সংঘর্ষের পরে, তৃণমূলের সংসদীয় দল বৈঠকে বসে৷ সেই বৈঠকে মমতার মন বুঝে সবাই তাঁর মতের পক্ষেই সায় দিয়েছিলেন৷ ঠিক হয়েছিল, সরকারের সমালোচনা করব, কিন্তু, সরকারের পক্ষেই ভোট দেব৷ আমি একমাত্র বিরোধিতা করেছিলাম৷ এই ইস্যুতে আমি চেয়েছিলাম, সরকারের বিরুদ্ধে দল ভোট দিক।
'An outsider in politics' বইয়ে কৃষ্ণা বসু আরও দাবি করেছেন,
এক সময় জল্পনা তৈরি হয়েছিল, মমতাকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে এনে পুরনো মন্ত্রকই দেওয়া হবে কি না? আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, 'আপনিও কি মায়াবতীর মতো করবেন?' তিনি যা চাইছেন, সেটা আদায় করে কি, তার পরিবর্তে সমর্থন দেবেন? তা যদি না হয়, তা হলে কেন তিনি নিজের রাস্তা বদলে, এমন একটা জিনিষকে সমর্থন করছিলেন, যা কোনওভাবেই সমর্থন করা সম্ভব নয়?
২০০২ সালের ১ মে আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকীয়তেও লেখা হয়েছিল,
'কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ফিরিয়া পাইতে মরিয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে বাজপেয়ীকে খুশি করার এমন মওকা হাতছাড়া করা কঠিন৷ ইহার পরও গুজরাতের নিহত-নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের জন্য তাঁহার উদ্বেগ যেমন কুম্ভীরাশ্রু বলিয়া গণ্য হইবে, তেমনই নরেন্দ্র মোদীর ইস্তফার দাবি প্রতারণামূলক ও লোকদেখানো শোনাইবে'।
তাত্পর্যপূর্ণ বিষয় হল, ২০০২-প্রসঙ্গে কৃষ্ণা বসু তাঁর বইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে এও লিখেছেন,
'আমি তাঁকে বোঝাতে পারিনি, যে এ সব করার পরে, আপনি যদি ওদের সঙ্গে যান এবং ভোট দেন, তা হলে আপনি আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পূর্ণ ভাবে হারাবেন৷'
বিরোধীদের এও দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করলেও, তিনিই ২০০৩ সালে বিজেপির মূল চালিকাশক্তি রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন৷ ২০০৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মমতা বলেছিলেন,
'আমি আগে কখনও এতজন আরএসএস নেতার সঙ্গে বৈঠক করিনি৷ তবে, কয়েকজনের সঙ্গে দেখা করেছি৷ আপনারা প্রকৃত দেশপ্রেমিক৷ আমি জানি আপনারা দেশকে ভালবাসেন'
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বুঝে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান বদলের নজির দীর্ঘদিনের বলেই দাবি বিরোধীদের৷
পরিবর্তন নিয়ে মমতাকে পাল্টা মোদি, 'আপনি তো পরিবর্তন বলছিলেন, আপনারই তো পরিবর্তন হয়েছে'
এলেন, দেখলেন এবং কুৎসা ছড়ালেন...
আমেথিতে মোদির জনসভা
তিনি এলেন, দেখলেন এবং কুৎসা রটিয়ে গেলেন। আমেথির উত্তপ্ত সূর্যালোকের নাচে নিখুঁত শুভ্রবস্ত্র পরিধান করে নরেন্দ্র মোদি প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সমগ্র গান্ধী শাসক-পরিবারের চরিত্রে কলঙ্কলেপন করলেন। সমগ্র দৃশ্যই ছিল মোদি শক্তির নির্বিকার, উচ্ছৃঙ্খল প্রদর্শনী। উত্তরপ্রদেশে গ্রামীণ মাঠে নামানো মহাশূন্য যানে সদৃপ এক বিশাল তাঁবু গেঁথে বিরাট হর্ষ্যােৎফুল্ল জনতার উদ্দেশে এ শক্তি দেখানো হলো। তাদের ওই অঞ্চলের আশপাশ থেকে এমনকি হরিয়ানা ও গুজরাটের মতো দূরবর্র্তী স্থান থেকেও বাসে করে আনা হয়েছিল। একে বলা হয় মোদি ধরনের 'ক্লোজ এনকাউন্টার।'
একে আমেথির সমাবেশ না বলে প্রাক বিজয় উৎসব বলাই ঠিক। ফুরফুরে মেজাজের মোদি মা-বেটা সরকারের পতন ঘোষণা করলেন। বহুল প্রত্যাশিত ভাষণটির ইতিবাচক এমনকি ভাল কৌতুক ভাব প্রকাশের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। উৎসাহ উদ্দীপ্ত স্মৃতি ইরানীর মুখস্থ করা লাইনগুলো পুনরাবৃত্তি করার পর মোদি প্রথমেই 'ভারত মাতা কি জয়!' স্লোগান দিয়ে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন। তিনি 'ছোটিবেহেন' স্মৃতি ইরানিকে পরিচিত করিয়ে দেন। মোদি সাধারণত নিজেকেই ব্যালটে নাম লেখা প্রার্থী হিসেবে প্রচার করতে তামুককে ভোট দিলে আমাকেই ভোট দেয়া হবে- এমনভাবে প্রচার করতেই বেশি পছন্দ করেন। এবার তিনি ব্যক্তিগতভাবে উৎসাহ নিয়ে ইরানির গুণগান করতে অনেক কর্মবিরতি ব্যয় করেন। তিনি বলেন, আমি রাহুলের অসুবিধা বাড়াতে নয় আমেথির অসুবিধা হ্রাস করতে তুলসীকে পাঠিয়েছি। তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আমি স্মৃতিকে বেছে নিয়েছি, এখন আপনাদের তাকে বেছে নেয়া প্রয়োজন। কিন্তু এ সব কিছু 'ওয়ার্মআপ' কাজ বলেই প্রমাণিত হয়। এগুলো শ্রোতাদের কাছ থেকে তেমন একটা উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া পায়নি। কারণ তারা ইরানির ব্যাপারে বা তিনি আমেথিতে কী অলৌকিক কীর্তি দেখতে পারবেন, তা নিয়ে সামান্যই আগ্রহী ছিল। তারা মহান ব্যক্তিকে দেখতে এবং তার অত্যাসন্ন আত্মপ্রশংসা উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে এসেছিল। অনেকটা তাদের নেতার মতো, তাদের মন আরও কিছু চেয়েছিল। 'আমি বদলা চাই না, আমি বদল চাই' রাহুল-মোদি ঘোষণা করার পরই আসল প্রদর্শনী শুরু হয়। মোদি আমেথি আসার কারণ ব্যাখ্যা করেন, আমি আপনাদের বেদনাকে আমার বেদনায় পরিণত করতে এসেছি। আপনাদের দুঃখের ভাগী হতে এসেছি। ৪০ বছর ধরে এ পরিবার তিন প্রজন্মের স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছে। আপনাদের স্বপ্ন আমার হয়ে দাঁড়িয়েছে, সে জন্যই আমি এখানে এসেছি।
তারপর মোদি থেমে যান এবং স্বপ্ন নয় বরং দুঃস্বপ্নের অর্থাৎ ওই পরিবারের কথা বলতে ছুটে যান। আগের মতোই তিনি এর অন্ধকার লুটপাট, মিথ্যাচার ও শেষে এক নতুন বিষয় ক্রোধের প্রতি নিন্দা জানান। তিনি গান্ধী পরিবারের 'ক্রোধের রাজনীতি'র দৃষ্টান্ত হিসেবে সেগুলোর সত্যতা যাচাই করা হয়নি ব্যক্তিগত বিদ্বেষের এমন কয়েকটি কাহিনী বলেন। প্রথমে বলা হলো- রাজীব গান্ধীর কাহিনী; কংগ্রেস দলের সভাপতি রাজীব গান্ধী তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে আসা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে কাঁদতে বাধ্য করেছিলেন। তারপর এলো সোনিয়া গান্ধীর কথা- তিনি তাঁর লোকজনকে দিয়ে কেরল, গীতা-রাম কেশরীকেই দৈহিকভাবে উঠিয়ে নিয়ে ফুটপাতে ফেলে দেননি, অধিকন্ত তিনি পরে নরসিমা রাওয়ের পরিবারের লোকজনকে দিল্লীতে তাঁর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান করতে দিতেও অঙ্গীকার করেছিলেন। শেষে আসে রাহুলের কথা- বলা হয়, তিনি একটি দলিল ছিঁড়ে ফেলে অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র অপরাধই করেছিলেন, যদিও সেটি কোন দলিল ছিল, তা ইচ্ছাকৃতভাবে জানানো হয়নি। মোদির অভিসন্ধি নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এটি ছিল তাঁর ধৃষ্টতা 'রাজপরিবারকে' তাদের নিজেদের আঙিনায় অপমান করতে 'চা বিক্রেতার' ধৃষ্টতা প্রদর্শন করা। সত্য কথা হলো, মোদির সেখানে যাওয়ার প্রয়োজন ছিল না। তবুও তিনি কেবল এই কারণেই তা করেছিলেন, যাতে আমেথিতে এক বিশাল সমাবেশ করে গান্ধী পরিবারের বিরুদ্ধে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিষোদ্গার করতে পারেন। মোদির প্রতিটি জনসংযোগ কর্মসূচীই এমন সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত হয় যে, তা কখনও সূক্ষ্মভাবে পরিকল্পিত হয় যে, তা কখনও ব্যর্থ হয় না। -ফ্রন্টপোস্ট অনলাইন
নজর মায়ার ভোটব্যাঙ্ক, 'দলিত' সাজলেন মোদি
দিল্লি, ৬ মে (সংবাদ সংস্হা)– আবার মোদি৷ আবার প্রিয়াঙ্কা৷ লোকসভা নির্বাচনের প্রায় অম্তিম লগ্নে জমজমাট তাঁদের বাকযুদ্ধ৷ সোমবার গান্ধী পরিবারের খাসতালুক আমেথিতে প্রচার করে যাওয়ার পর মোদিকে 'নিচু স্তরের রাজনীতি'-র দায়ে অভিযুক্ত করেন আমেথি সাংসদ রাহুল গান্ধীর বোন৷ বলেন, 'আমার শহিদ বাবাকে অপমান করেছেন বি জে পি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী৷ এর যোগ্য জবাব দেবেন আমেথির প্রত্যেক ভোটদাতা৷' প্রিয়াঙ্কার এই মম্তব্যকে উল্টো প্যাঁচ দিয়ে আজ জাতপাতের তাস খেলেছেন নরেন্দ্র মোদি৷ আজ সকালে একাধিক টুইট মারফত জানিয়েছেন, 'আমি সামাজিকভাবে নিম্ন স্তরের মানুষ৷ স্রেফ এই কারণে আমার বিরুদ্ধে 'নিম্ন স্তরের রাজনীতি করার অভিযোগ করছেন ওঁরা৷ এই তথাকথিত 'নিম্ন স্তরের রাজনীতিই' দেশকে ৬০ বছরের অপশাসন থেকে মুক্ত করবে৷ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির অপসারণ ঘটিয়ে কোটি কোটি মানুষের চোখের জল মুছিয়ে দেবে৷ 'ভারত মা'-কে দেশের অন্যতম শক্তিশালী ও প্রতিপত্তিশালী দেশে পরিণত করবে৷' আরও একটি টুইটে বি জে পি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর বক্তব্য, 'কিছু মানুষ হয়ত এটা দেখতে পান না বা দেখতে চান না, কিন্তু ঘটনা হল, অম্ত্যজ শ্রেণীর মানুষের স্বার্থত্যাগ, আত্মবলিদান দেশকে আজ এই জায়গায় পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ৷' তাঁরই সম্প্রদায়ভুক্ত, বি জে পি নেতা সুশীল মোদিকে তাঁর বক্তব্যে পাশে পেয়েছেন নরেন্দ্র মোদি৷ সুশীল মোদি টুইটারে জানিয়েছেন, 'এই প্রথম নেহরু-গান্ধীদের পরিবারতন্ত্রকে চ্যালেঞ্জ করার সাহস দেখিয়েছেন এক পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষ৷ আর সেটা ওঁদের হজম হচ্ছে না৷' আসলে আমেথির দলিত ভোটের দিকে নজর মোদির৷ গতকাল তিন-তিনবার তিনি নিজেকে দলিত বলে ঘোষণা করেন৷ সোমবার আমেথিতে প্রিয়াঙ্কাকে 'অহঙ্কারের রাজনীতি ' করায় অভিযুক্ত করেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেন, এটাই ওদের পারিবারিক রীতি৷ দুটি ঘটনার উল্লেখ করেন৷ বলেন, ১৯৮২-তে অন্ধ্রপ্রদেশের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী টি আঞ্জাইয়াকে প্রকাশ্যে অপমান করেছিলেন তৎকালীন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গান্ধী৷ মোদির কথায়, 'ম্যাডাম সোনিয়া গান্ধী' চাননি বলেই ৯৮-এ কংগ্রেসের সভাপতির পদ থেকে সরে যেতে হয় সীতারাম কেশরীকে৷ আনজাইয়া ও কেশরী– দুজনেই পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের নেতা৷ বাবা-মা-র বিরুদ্ধে মোদির এই বক্তব্যের প্রতিবাদেই মোদির বিরুদ্ধে নিচু স্তরের রাজনীতি করার অভিযোগ করেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী৷ মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের ডুমরিয়াগঞ্জ এবং মহারাজগঞ্জের জনসভাতেও মোদির বক্তব্য ছিল মোটামুটি একই সুরে বাঁধা৷ কংগ্রেসের ৬০ বছরের 'অপশাসনের' প্রসঙ্গ তুলে মোদি বলেন, তরুণ প্রজন্ম যথেষ্ট সচেতন৷ বারবার কংগ্রেসের খুঁচিয়ে তোলা 'সাম্প্রদায়িকতার' ঊধের্ব উঠতে জানে তারা৷ ওরা উন্নত ভবিষ্যৎ চায়৷ অম্ত্যজ শ্রেণীর উদ্দেশে বলেন, কয়েক পুরুষ ধরে নেহরু-গান্ধী পরিবারের জন্য আত্মত্যাগ করেও বঞ্চনা আর লাঞ্ছনা ছাড়া কিছুই পাননি ওঁরা৷ এবার সব পাল্টে দেওয়া সময় এসেছে৷ এই প্রথম গরিবদের জন্য গরিবের সরকার আসছে৷ মোদির আবেদন, 'আপনাদের সব পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেব না৷ তবে পানীয় জল, বিদ্যুৎ, গরিব মা-বোনেদের জন্য শৌচাগারের মতো ন্যূনতম পরিষেবাটুকু অবশ্যই দেব৷' আসলে বসপা সুপ্রিমো মায়াবতীর ভোটব্যাঙ্কে নজর দিয়েছেন মোদি৷ ডুমরিয়াগঞ্জের জনসভায় তিনি বলেন, নিচু জাতের হওয়া কি অপরাধ? ওরা ছকংগ্রেসগ্গ আমাকে চা-ওয়ালা বলে এমনভাবে হেয় করেছে যেন চা বিক্রি করা অপরাধ৷ বলেছে একজন চা-ওয়ালা আবার প্রধানমন্ত্রী হবে! যাঁরা আকাশছোঁয়া ইমারতে থাকেন, তাঁদের বোঝা উচিত, অম্ত্যজ শ্রেণীর হাড়ভাঙা খাটনির ফলেই আজ ওঁদের এত রমরমা৷ নিজেকে তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবে পেশ করে বলেন, 'আমরা আর কিছুই চাই না৷ শুধু মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই৷ এইটুকু চাওয়ার জন্য চাইলে আমাকে ফাঁসি দিন৷ তবে আমার দেশবাসী ভাইবোনদের অপমান করবেন না'৷ এতদিন উন্নয়ন উন্নয়ন করলেও আজ জাতপাতের রাজনীতির শরণ নেওয়ায়, মোদিকে 'স্পিন মাস্টার' বলেছে কংগ্রেস৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং দলের মুখপাত্র কপিল সিবাল বলেছেন, জেনেবুঝে প্রিয়াঙ্কার মম্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করছেন বি জে পি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী৷ প্রিয়াঙ্কা শুধু নিচু স্তরের রাজনীতির কথা বলেছেন৷ তার সঙ্গে জাতের কোনও সম্পর্কই নেই৷ এর থেকেই প্রমাণিত প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে জিততে কতটা মরিয়া তিনি৷ সিবাল বলেন, 'এই হলেন নরেন্দ্র মোদি৷ কোন কথার কী মানে করে কোথায় নিয়ে যাবেন, তার ঠিক নেই৷' অতি সম্প্রতি প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে 'অহংকারী' বলেছেন বি জে পি নেতা অরুণ জেটলি৷ তাঁর নিন্দা করে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী, অমৃতসরের কংগ্রেস প্রার্থী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং জানিয়েছেন, প্রিয়াঙ্কাকে নিন্দা না করে, নিজেকে দেখুন জেটলি৷ তিনি নিজে তো অত্যম্ত দেমাকি৷ তাঁর কথায়, 'রাহুল, প্রিয়াঙ্কাকে ছোটবেলা থেকে চেনার সুবাদে বলতে পারি, ওরা দুজনেই খুব বন্ধুবৎসল এবং ভদ্র স্বভাবের৷' একই কথা বলেছেন দলের আরেক নেতা রশিদ আলভি৷ বলেছেন, 'নিচ রাজনীতির কথা বলা হয়েছে৷ তার সঙ্গে জাতপাতের সম্পর্ক কোথায়?'
লোকসভা নির্বাচনে এবার রেকর্ড ভেঙ্গে সর্বোচ্চ ভোট
ইন্দিরা গান্ধীর রেকর্ড এবার ভাঙতে চলেছে। ১৯৮৪ সালে ইন্দিরার চিতার আগুন ভারত জুড়ে যে আবেগ উস্কে দিয়েছিল, তার ঢেউ আছড়ে পড়েছিল ভোট বাক্সে। স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সর্বাধিক ভোটদানের (৬৪.০১ শতাংশ) হার ছিল সে বছরই। কিন্তু চলতি লোকসভা নির্বাচনের সাতটি রাউন্ডের পরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, পুরনো রেকর্ড চুরমার করে এবারই ভোটদানের হার সর্বোচ্চ স্থান ছুঁতে চলেছে।
মোট ৫৪৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৪৩৮টি আসনে ভোটদান শেষ। এখনই ভোটদানের হার ছুঁয়েছে ৬৬.৯ শতাংশ। অনুমান করা হচ্ছে আগামীকাল এবং ১২ তারিখ, বাকি দুই পর্বে ১০৫টি আসনে ভোট শেষ হওয়ার পর এই হার আরও বাড়বে। গত লোকসভা নির্বাচন তথা ২০০৯-এর তুলনায় এবারের ভোটদানের হার বেড়েছে ৯.২১ শতাংশ।
উপনির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুৎসি বলেছেন, যেভাবে মানুষ বেরিয়ে এসে ভোট দিচ্ছেন, তা এক কথায় অভূতপূর্ব। দেখা যাচ্ছে উত্তরপ্রদেশে যে ক'টি আসনে ভোট হয়েছে সেখানে ভোটদানের হার গড়ে ১৫ শতাংশ বেড়েছে। সূত্র : ওয়েবসাইট
'ক্লিনটনের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য আমি অনুতপ্ত'
এক সময়ের হোয়াইট হাউস শিক্ষানবিস মনিকা লিউনস্কি ফিরে এসেছেন। তার দিকে থেকে তার ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সঙ্গে যে সম্পর্ক ছিল তাতে তার (লিউনস্কির) ভূমিকা কি ছিল তা তিনি জানাতে এসেছেন। এ ঘটনায় ক্লিনটন ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার উপক্রম হয়েছিলেন। লিউনস্কি (৪০) 'ভ্যানিটি ফেয়ার' ম্যাগাজিনে চলমান ইস্যু নিয়ে লেখা একটি নিবন্ধে বলেছেন, 'আমি আমার ও প্রেসিডেন্ট ক্লিনটনের সম্পর্ক নিয়ে নিজে গভীরভাবে অনুতপ্ত। আমাকে আবার এটি বলতে দিন : আমি নিজে গভীরভাবে অনুতপ্ত কি ঘটেছে তা নিয়ে।' হিন্দুস্থান টাইমস অনলাইন
ফাঁক থেকে গেল নির্বাচন কমিশনের প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবে, সন্ত্রাসের অভিযোগের হাত ধরেই রাজ্যে শেষ হল চতুর্থ দফার ভোট
28 ঘন্টার রিপোর্টঃ
নির্বাচন কমিশন কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেও, প্রতিশ্রুতি ও বাস্তবে ফাঁক থেকে গেল। রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোট শেষে এমনই দাবি বিরোধীদের। বেলা বাড়া সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অভিযোগের বহর। ছাপ্পাভোট, বুথ দখল, ভোটারদের হুমকি, মারধর জঙ্গলমহলের পাঁচ কেন্দ্র ও আসানসোল দিনভর ভোটচিত্রটা ছিল এমনই। এবারও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে এবারও তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিরোধীরা।
আসানসোল
প্রতিবন্ধী ভোটারকে মারধর, বিরোধী এজেন্টকে অপহরণ, ছাপ্পা ভোট, বুথ দখল, ভোটারদের ভয় দেখানো। ভোট শুরু হতেই অভিযোগ আসতে শুরু করে আসানসোলের বিভিন্ন এলাকা থেকে। পাণ্ডবেশ্বরের ডাঙ্গালপাড়ায় সিপিআইএম সমর্থক বলে পরিচিত এক প্রতিবন্ধী ভোটারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। জামুড়িয়ার বিভিন্ন বুথে ব্যাপক ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ ওঠে । জামসোলে তৃণমূল কর্মীদের হাতে প্রহৃত হন সিপিআইএম কর্মীরা।পাণ্ডবেশ্বর, জামুড়িয়া ও মণ্ডলপুরে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে।বার্নপুরে বহিরাগতদের ভোটকেন্দ্র থেকে সরিয়ে দিতে লাঠি চালাতে হয় পুলিসকে। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসানসোলের সিপিআইএম প্রার্থী বংশগোপাল চৌধুরী।
মেদিনীপুর
------
আসানসোলের মতোই ব্যাপক বুথ দখল ও ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ উঠেছে মেদিনীপুরেও। গড়বেতায় তিরিশটিরও বেশি বুথ বিরোধীশূন্য করে অবাধে ছাপ্পার অভিযোগ তুলেছে বামেরা। নারায়ণগড়, কেশিয়াড়ি, মোহনপুর এবং দাঁতনের একাধিক এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখা মেলেনি। স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত হলেও অনেক জায়গাতেই দেখা মেলেনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর। দেখা মেলেনি রাজ্য পুলিসেরও। বুথ দখলের অভিযোগ উঠেছে ঝাড়গ্রামের মায়তায়। নারায়ণগড়ে ভোট দিয়ে ফেরার পথে আক্রান্ত হন তৃণমূল কর্মী। তাঁর গলায় আঘাত করা হয়। কাঠগড়ায় সিপিআইএম। সিপিআইএম নেতা সুশান্ত ঘোষের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অকেজো করে রেখে ভোট লুঠ করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বাঁকুড়া
---
গণ্ডগোলের খবর এসেছে বাঁকুড়া থেকেও। আধাসেনা জওয়ানের সামনেই তৃণমূলের হুমকির মুখে পড়ছেন ন বারের বাম সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া।বিষ্ণুপুরের খণ্ডঘোষে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে সিপিআইএম-তৃণমূল কংগ্রেস। খণ্ডঘোষের কলেমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইভিএমে নজর রাখছিলেন এক ব্যক্তি। ২৪ঘণ্টায় খবর সম্প্রচারিত হওয়ার পরই তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। বিষ্ণুপুরের কোতুলপুর, জয়পুর, ইন্দাস, পাত্রসায়র ও তালডাঙরায় বিরোধী এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিষ্ণুপুরে একশোটি বুথে রিগিংয়ের অভিযোগ করেছে সিপিআইএম। নির্বাচন কমিশনের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন বাঁকুড়ার জেলা সিপিআইএম সম্পাদক অমিয় পাত্র।
অষ্টম দফায় পশ্চিমবঙ্গ ও অেন্ধ্র বেিশ ভোট
ভারতের লোকসভা নির্বাচনে অষ্টম দফায় সাতটি রাজ্যের ৬৪টি আসনে গতকাল বুধবার ভোট হয়েছে৷ এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও অন্ধ্র প্রদেশে ভোটার উপস্থিতি ছিল ব্যাপক৷ গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ৭৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ ভোট পড়েছে৷
গতকাল অনুষ্ঠিত ৬৪টি লোকসভা আসনের মধ্যে সবার দৃষ্টি ছিল কংগ্রেসের সহসভাপিত রাহুল গান্ধীর আসন উত্তর প্রদেশ রাজ্যের আমেথিতে৷ রাহুলের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির স্মৃতি ইরানির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর সহকারীকে আমেথি ছাড়তে হয়েছে৷ ভোটের আগের দিন আমেথির নিবিন্ধত ভোটার না হওয়ায় আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রার্থী কুমার বিশ্বাসের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের ওই আসন ছাড়তে বলেছিল স্থানীয় প্রশাসন৷ পরে একই কারণে প্রিয়াঙ্কার আমেথিতে অবস্থান নিয়ে এএপি প্রশ্ন তুললে বেকায়দায় পড়ে প্রশাসন৷ এসব বিতর্কের মধ্যে গতকাল রাহুলের আসনে ভোট হলো৷ বেলা তিনটা পর্যন্ত ওই আসনে ৪৩ শতাংশ ভোট পড়ে৷
উত্তর প্রদেশের আরেক আসন সুলতানপুরও ছিল সবার নজরে৷ এই আসনে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) হয়ে লড়েছেন রাহুলের চাচাতো ভাই বরুণ গান্ধী৷ এই আসনে কেমন ভোট পড়েছিল জানা যায়নি৷ তবে উত্তর প্রদেশ রাজ্যে বেলা তিনটা পর্যন্ত ৪৪ দশমিক ২২ শতাংশ ভোট পড়ে৷ রাজ্যের ১৫টি আসনে গতকাল ভোট নেওয়া হয়৷
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সব কটি আসনেই ভোটের হার ছিল চোখে পড়ার মতো৷ উপকূলীয় অন্ধ্র ও রায়ালসীমাসহ সীমান্ত এলাকায় বেলা তিনটা পর্যন্ত প্রায় ৬৩ শতাংশ ভোট পড়ে৷ উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পাঁচটি আসনে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ৫৬ শতাংশ ভোট পড়েছে৷ একই সময়ে হিমাচল প্রদেশে ৬৬ শতাংশ এবং বিহারে বেলা তিনটা পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৩৯ শতাংশ ভোট পড়ে৷
গতকাল ৮৯৭ জন প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নেন৷ এঁদের মধ্যে লোক জনশক্তি পার্টির প্রধান রাম বিলাস পাসওয়ান (হাজিপুর), রাবড়ি দেবীর (সরন) মতো প্রভাবশালী প্রার্থীও রয়েছেন৷ হিন্দুস্তান টাইমস ও টাইমস অব ইন্ডিয়া৷
চতুর্থ দফা শান্তিপূর্ণই, জানাল কমিশন
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া বুধবার রাজ্যে চতুর্থ দফার লোকসভা নির্বাচন মোটামুটি শান্তিতেই কাটল। এদিন রাজ্যে ভোটদানের হার ৮২.১৪ শতাংশ।
বুধবারের ভোটপর্ব নিয়ে সন্তুষ্ট উপনির্বাচন কমিশনার বিনোদ জুত্সি। ভোটদান শেষে তিনি জানান, রাজ্যে বুথ দখলের কোনও অভিযোগ নেই।।তাঁর দাবি, এদিন রাজ্যে কোনও কারচুপিরও অভিযোগ আসেনি কমিশনে।
তবে কমিশন আধিকারিকের কথার সঙ্গে সহমত নন বিরোধীরা। রাজ্যে শাসকদলের মদতে বেশ কয়েকটি বুথ দখল হয়েছে বলে অভিযোগ করলেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। প্রতিবাদে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের কাছে এদিন অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। তাঁর দলের নেতা সুর্যকান্ত মিশ্রের আবার দাবি, বহু প্রতিরোধ সত্ত্বেও বুধবার ভোট দিয়েছেন মানুষ। তাঁর দাবি, সব বাধা কাটিয়েই ভোট দিয়েছেন বাংলার মানুষ। তিনি আরও জানান, মানুষই নির্ণায়ক ভূমিকা নেবে।
অন্য দিকে, চতুর্থ দফার ভোট শান্তিপূর্ণ ও অবাধ হয়নি বলে অভিযোগ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যের। তাঁর অভিযোগ, সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রাখতে পারেনি নির্বাচন কমিশন।
এদিনের ভোটে কয়েকটি হিংসাত্মক ঘটনা যে একেবারেই হয়নি, তা নয়। এদিন সন্ধ্যায় আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ভাদুতলার ৩১ নম্বর বুথের সিপিএম পোলিং এজেন্ট জীতেন রায়কে। তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁকে মেদিনীপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সকালে ভোট শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বার্ণপুরের প্রি প্রাইমারি স্কুলের বুথে গন্ডগোল দেখা দেয়। এখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বহিরাগতদের বুথে ঢোকানোর অভিযোগ আনে সিপিএম। অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টে বামেদের দিকে একই অভিযোগের আঙুল তোলে তৃণমূল।তবে পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে
ভোট নিয়ে খুশি নন আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। তারকা প্রার্থী হওয়ায় এদিন তাঁর নিরাপত্তা জোরদার করে কমিশন। ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে তিন জন রক্ষী এবং একজন ভিডিওগ্রাফার নিয়োগ করা হয়। তবে দিনের শেষে শাসকদলের বিরুদ্ধে কারচুপির অভিযোগ আনেন বাবুল।
এদিকে জামুড়িয়া মণ্ডলপাড়ার ৮২ নম্বর বুথে ভোটদান বন্ধ রাখা হয় এদিন। এখানে ভোটারদের ভয় দেখানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তার জেরেই ভোটদান বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি, বিষ্ণুপুরের একটি বুথে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়। আহত হন উভয়পক্ষের ৬-৭ জন মাওবাদী হুমকি উড়িয়ে দিয়ে এদিন ভোটে স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া দিয়েছে ঝাড়গ্রাম ও দুই মেদিনীপুর। ৮১.৪১ শতাংশ, ঝাড়গ্রামে ৮৯.৮৮ শতাংশ, পুরুলিয়ায় ৭৮.৭৫ শতাংশ, বাঁকুড়ায় ৮১.৩৭ শতাংশ, বিষ্ণুপুরে ৮১.২১ শতাংশ, আসানসোলে ৭৫.৪৭ শতাংশ ভোট পড়েছে ওদিকে, মেদিনীপুরের বিডিও অফিসের সামনে রিজার্ভ ভোটকর্মীদের বিক্ষোভ। হেনস্থার অভিযোগে বিক্ষোভ দেখানোর সময়ে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক ভোটকর্মী।
বর্ধমানের কুলে প্রাথমিক স্কুলে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষ হয়েছে। তৃণমূলের অভিযোগ, ২১১ নম্বর বুথে ভোট দিতে আসা ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করে সিপিএম। এমনকি তৃণমূলের পোলিং এজেন্টকে বুথ থেকে মারধর করে বের করে দেওয়া এবং পঞ্চায়েত সদস্য অঞ্জলি রায়ের বাড়িতে হামলার অভিযোগও ওঠে সিপিএমের বিপক্ষে উল্টো দিকে, খণ্ডঘোষের ১৪৩ নম্বর বুথে তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে নজরদারির অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত কর্মীর নাম অরুপ মাঝি।তবে পরে তাঁকে বুথের 'জলবাহক' বলে জানায় নির্বাচন কমিশন। বুথে ইভিএমের সামনে উঁকি মারার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। কমিশনের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরিয়ে দেওয়া হয় প্রিসাইডিং অফিসারকেও।
পুরুলিয়ার ১৮৩ নম্বর বুথে সিআরপিএফ এবং পুলিশের মধ্যে বচসার ঘটনা ঘটেছে। জানা গিয়েছে, স্থানীয় থানার এএসআই-কে বুথে ঢুকতে বাধা দেন সিআরপিএফ জওয়ান। এর থেকেই বচসার সূত্রপাত। তবে নির্বাচন পর্যবেক্ষক জানিয়েছেন, বুথের মধ্যে রাজ্য পুলিশের প্রবেশ নিষেধ। সেখানে শুধু কেন্দ্রীয় বাহিনীই বহাল থাকবে।
তিন বছর পর বেনাচাপড়ায় ফের পা রাখলেন বিতর্কিত বাম নেতা সুশান্ত ঘোষ। এদিন সকালে ভোট দেন তিনি। সেখান থেকে নিজের পৈতৃক বাড়িতে যান সুশান্তবাবু।
রাহুল-স্মৃতির আমেথিই বেশি নজরে ছিল ৬৪ আসনের মধ্যে
পশ্চিমবঙ্গেই ভোট পড়েছে সর্বাধিক ৮০.৫১%
লোকসভা নির্বাচন '১৪
কাওসার রহমান ॥ অষ্টম দফা ভোটের দিনে বুধবার সবার দৃষ্টি ছিল আমেথির দিকে। কারণ, এ আসনে ছিল দুই হেভিওয়েট প্রার্থীর হাই-ভোল্টেজ লড়াই। এরা হলেন রাহুল গান্ধী বনাম স্মৃতি ইরানি। দিনভর এ আসন ঘিরে একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খেয়েছে- মায়ের আশীর্বাদ নাকি দাদার ছাতির জোর, কার শক্তি বেশি? রাহুল-স্মৃতির ভোটযুদ্ধ কার্যত সোনিয়া গান্ধী ও নরেন্দ্র মোদির সম্মান রক্ষার লড়াই। মোদি নিজেকে স্মৃতির দাদা বলে দাবি করে বোনের জন্য আমেথিতে ভোট চান। এ ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানের মতো পশ্চিমবঙ্গেও উৎসবের মধ্য দিয়ে ভোট হয়েছে। ভোটও পড়েছে এ রাজ্যে সর্বাধিক। বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ রাজ্যে ভোটের হার ৮০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।
উত্তর প্রদেশের আমেথি আসনটি গান্ধী পরিবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হলেও এবার মোদি ঝড়ের আতঙ্কে ভুগছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। আর তাই সকাল সকাল আমেথি আসেন কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধী। চোখেমুখে টেনশনের ছাপ ছিল স্পষ্ট। গত ১০ বছরে প্রথমবার নির্বাচনের দিন আমেথিতে আসেন রাহুল গান্ধী। বিভিন্ন নির্বাচনী কেন্দ্র ঘুরে দেখেন এবং রাস্তার ধারের চায়ের দোকানে বসে চা পান করেন।
স্মৃতি ইরানির বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ আনেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর পিএ প্রীতি সহায়। এ নিয়ে আমেথিতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর পিএ প্রীতি সহায়ের সঙ্গে স্মৃতি ইরানির বচসা হয়। প্রীতি সহায় স্থানীয় বাসিন্দা নন, তাই তাঁর কাছ থেকে অথরিটি লেটার চান স্মৃতি। পরবতীঁতে তাঁর অভিযোগের প্রেক্ষিতে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর পিএ প্রীতি সহায়কে আমেথি ছাড়ার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক।
দুপুর ১২টা পর্যন্ত আমেথি আসনে ভোট পড়ে ৩৫ শতাংশ। স্মৃতি ও আমেথির আম আদমি প্রার্থী কুমার বিশ্বাস রাহুলের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন। তবে সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয় নির্বাচন কমিশন।
আমেথির পাশেই সুলতানপুর আসন। সেখানে ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বরুণ গান্ধীর। সুলতানপুরের বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখেন বিজেপি প্রার্থী বরুণ গান্ধী। ভোটারদের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি। এ আসনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী আমেথির রানী অমিতা সিং। তিনি সকালে ভোট দিয়ে বলেন, নির্বাচনী এলাকা পাল্টানোর খেসারত দিতে হবে বরুণ গান্ধীকে।
হিমাচল প্রদেশের মান্ডি লোকসভা আসনে লড়াই করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংয়ের স্ত্রী প্রতিভা এবং হামিরপুর আসনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেমকুমার ধুমলের ছেলে অনুরাগ ঠাকুর। এছাড়াও এদিন ভোটাররা ভাগ্যনির্ধারণ করেছেন রাবড়ি দেবী, রামবিলাস পাসওয়ান, রাজীবপ্রতাপ রুডি, চন্দ্রবাবু নাইডু, জগমোহন রেড্ডি, ক্রিকেটার মুহম্মদ কাইফ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পাল্লাম রাজু, বেণীপ্রসাদ ভার্মার মতো হেভিওয়েট প্রার্থীর। সব মিলিয়ে ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মোট ১,৭৩৭ প্রার্থীর।
এদিন হিমাচল প্রদেশের কিন্নর আসনে ভোট দেন দেশের প্রথম ভোটার এসএস নেগি। তিনি এ প্রদেশের কাল্পা কেন্দ্রে ভোট দেন সস্ত্রীক। স্বাধীন ভারতের প্রথম ভোটার জনগণকে ভোট দেয়ার আর্জি জানিয়ে বলেন, '৯৭ বছর বয়সে আমি যদি ভোট দিতে পারি তাহলে তরুণরাও পারবেন।'
এ প্রদেশের রামপুরে সপরিবারে ভোট দেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিং। তাঁর দাবি, প্রদেশের চার আসনেই কংগ্রেস জয়ী হবে। হরিদ্বার আসনে ভোট দিলেন বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বিতর্কিত যোগগুরু রামদেবও। বিহারে লোকজনশক্তি পার্টির প্রধান রামবিলাস পাসওয়ানের হাজিপুর (সংরক্ষিত) আসনে এবং সারণ আসনে আরজেডি প্রার্থী রাবড়ি দেবীর জয় নিয়ে ভোটের আগে থেকেই নিশ্চিত দলের কর্মীরা। অন্যদিকে উত্তর প্রদেশের ফুলপুর আসনে কংগ্রেস প্রার্থী ক্রিকেটার মুহম্মদ কাইফ সস্ত্রীক ভোট দিয়ে বেরিয়ে বলেন, 'কংগ্রেসের টিকেট পেয়ে আমি গর্বিত।'
লোকসভা নির্বাচনের অষ্টম দফায় বুধবার পশ্চিমবঙ্গ-সহ সাত রাজ্যের মোট ৬৪ লোকসভা আসনে ভোট হয়। এর মধ্যে ছিল অন্ধ্রপ্রদেশের ২৫, উত্তরপ্রদেশের ১৫, বিহারের সাত, উত্তরাখ-ের পাঁচ, হিমাচল প্রদেশের চার এবং জম্মু-কাশ্মীরের দু'টি আসন। এর সঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশের সীমান্ধ্র অঞ্চলের ১৭৫ বিধানসভা আসনেও ভোট হয়েছে। কাডাপা, অনন্তপুর, চিতোর, গুণ্টুরে ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও টিডিপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়েছে। অন্যদিকে কাশ্মীরের দুটি আসনে ভোট হয়। এর মধ্যে বারমুলা আসনের পাহলান পাট্টানের একটি কেন্দ্রে জঙ্গীরা গ্রেনেড হামলা করে। এতে এক সিআরপিএফ জওয়ান জখম হয়েছেন।
বিকেল পাঁচটায় শেষ খবর পর্যন্ত বিহারে ৫০.৩৯, অন্ধ্রে ৬৩, উত্তরপ্রদেশে ৪৪.০৩, হিমাচল প্রদেশে ৫২.৯৬, উত্তরাখ-ে ৫২.২৪ এবং জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৫.০১ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর পশ্চিমবঙ্গে ভোট পড়েছে ৮০.৫১ শতাংশ।
উৎসবে ভোট পশ্চিমবঙ্গে
উৎসবের মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ছয় আসনে ভোট হয়েছে। যেমন উৎসবের মেজাজ ছিল জঙ্গলমহলে, তেমনি তীব্র গরম উপেক্ষা করে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে সকাল থেকেই ছিল লম্বা লাইন। বিষ্ণুপুর, মেদিনীপুরেও ছিল একই ছবি। বিশেষত জঙ্গলমহলের চার লোকসভা আসন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুরে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো।
গত কয়েক বছরে বদলে গেছে জঙ্গলমহলের চেহারা। ফিরে এসেছে শান্তি। শুরু হয়েছে উন্নয়নের কাজ। তাই বুধবার ভোটের দিন সেই বদলে যাওয়া ছবিটা মানুষের উৎসাহ-উদ্দীপনায় নতুন করে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে ওঠে। পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়ার জঙ্গল অধ্যুষিত প্রত্যন্ত এলাকার আদিবাসী মানুষ সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন ভোট কেন্দ্রগুলোতে। দুপুর ১টার মধ্যেই ৬ আসনে ভোট পড়ে ৪৫.৮ শতাংশ। ঝাড়গ্রামে ভোটের হার ৬৫.৪৮ শতাংশ, মেদিনীপুরে ৫৬ শতাংশ, বাঁকুড়ায় ভোট পড়ে ৬১.৩৬ শতাংশ, পুরুলিয়ায় ৬৩.৮০, বিষ্ণুপুরে ৬২.৮০ এবং আসানসোলে ৬০.৪৮ শতাংশ ভোট পড়ে।
আর বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজ্যের ৬টি আসনে ভোটের সামগ্রিক হার দাঁড়ায় ৮০.৫১ শতাংশ। মেদিনীপুরে ৮১.৪১ শতাংশ, ঝাড়গ্রামে ৮৭.৮৮ শতাংশ, পুরুলিয়ায় ৭৮.৫৫ শতাংশ, বাঁকুড়ায় ৮০.৫৫ শতাংশ, বিষ্ণুপুরে ৮৫.২১ শতাংশ, আসানসোলে ৭৫.৪৭ শতাংশ ভোট পড়ে।
ভোটের দিন সকাল থেকেই নজর কাড়েন সেলিব্রিটি প্রার্থীরা। নীল টাঙ্গাইল শাড়ি পরে সকাল আটটা থেকে বাঁকুড়ার কেন্দ্রে কেন্দ্রে ঘোরেন মুনমুন সেন। আবার কমিউনিস্ট হলেও বেশ কিছু রীতিনীতি মানেন বাঁকুড়ার বামপ্রার্থী বাসুদেব আচার্য। যে কোন ভোটেই সাত-সকালে প্রথম ভোট দেন। এবারও তার অন্যথা হয়নি। আদ্রার গরাফুসরা প্রাথমিক স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন সবার প্রথমে। পিছিয়ে ছিলেন না সন্ধ্যা রায়ও। কাকডাকাভোরে পুজো সেরে বেরিয়ে পড়েন মেদিনীপুরে। ভোটের দিনও তৃণমূল প্রার্থী দোলা সেনকে টেক্কা দিতে আসানসোলের বুথে বুথে মরিয়া হয়ে ঘোরেন বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়। রামপুরে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে সকাল সকাল ভোট দেন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। আবার ভোটের দিন গাড়িতে সাংসদ লেখা স্টিকার লাগিয়ে বিপাকে পড়েন মেদিনীপুরের সিপিআই প্রার্থী প্রবোধ পা-া। ঝাড়গ্রামের অশোক বিদ্যাপীঠে ভোট দিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী উমা সরেন।
রাজ্যের চতুর্থ দফা ভোটে ছটি লোকসভা আসনে প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ করেন ৮৮ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে থেকেই সমগ্র জঙ্গলমহলকে নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কমিশনের তরফে জানানো হয়, ছটি লোকসভা আসনের জন্য মোট ৩৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিন ভারতে যে ৬৪ আসনে ভোট হয়েছে। তার মধ্যে ৩১ কংগ্রেসের দখলে থাকলেও এবারের ফল নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে। অন্যদিকে কেন্দ্রে সরকার গড়তে অধিকাংশ আসন নিজেদের দখলে আনতে মরিয়া বিজেপি।
http://www.allbanglanewspapers.com/janakantha.html
মোদীর জন্য এখন প্রতিটি আসনই গুরুত্বপূর্ণ
অঞ্জন রায় চৌধুরী, নয়াদিল্লি
ভারতে ১৬তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট যুদ্ধ প্রায় শেষ দিকে। গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল অষ্টম ধাপের নির্বাচন। আগামী ১২ মে'র নির্বাচনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে দীর্ঘ এক মাসের বেশি ধরে চলা নির্বাচন। কিন্তু নির্বাচন যতোই শেষের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ততোই ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নরেন্দ্র মোদীর জন্য প্রত্যেকটি আসন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। এদিকে বারানসিতে বিজেপির আজকের জনসভায় মোদীর অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
গতকাল পশ্চিমবঙ্গ-সহ ছয় রাজ্যের ৬৪টি আসনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত কিছু সংঘর্ষের খবর পাওয়া গিয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে ২টি, হিমাচল প্রদেশে ৪টি, উত্তরাখণ্ডে ৫টি , অন্ধপ্রদেশে ২৫টি, উত্তরপ্রদেশে ১৫টি, বিহারে ৭টি এবং পশ্চিমবঙ্গের ৬টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সীমান্ধ্রে শতকরা ৭১ ভাগের ওপরে ভোট পড়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে প্রায় ৫০ ভাগ, পশ্চিমবঙ্গে ৮১ দশমিক ২৮ শতাংশ, উত্তরাখন্ডে ৬৩ ভাগ, হিমাচলে ৬৫ ভাগ এবং উত্তরপ্রদেশে ৫৭ দশমিক ৫০ভাগ ভোট পড়েছে। সীমান্ধ্রের ২৫ টি আসনে ২০০৯ সালে কংগ্রেস ২১ টি আসনে জয় পেয়েছিল। কিন্তু এবছর তেলেঙ্গানা ইস্যুতে কেবল একটি আসনে জয়লাভের সম্ভাবনা কংগ্রেসের। এক্ষেত্রে মোদী আশাবাদী। তবে ভোটাররা যে তার পক্ষে আছে সেটা বলা যাবে না। উত্তরপ্রদেশ, বিহার,উত্তরাখন্ডে এবং হিমাচলে ৩১টি আসন পাওয়ার হিসাব কসছেন মোদী। ২০০৯ সালে তারা এইসব আসনের মধ্যে মাত্র চারটি আসনে জয় পেয়েছিল বিজেপি। তবে মোদীর যেটা আশা করছেন সেটা নাও হতে পারে। কারন তার বিরোধীরা এখানে শক্তিশালী। তবে উত্তরপ্রদেশে সুলতানপুরে বরুণ গান্ধীর আসনে জয়ের সম্ভাবনা তার। এই প্রদেশের ১৫টি আসনে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তিনি ভোট কেন্দ্রে ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মোদী নির্ভর করছেন আরএসএস'র উপর। এলাহাবাদের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ছেলে আদর্শ শাস্ত্রী একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে মোদীর দলের জন্য। শাস্ত্রী আম আদমি পার্টি থেকে লড়াই করছেন।
২০০৯ সালে উত্তরাখন্ডের কোনো আসনে জয় পায়নি বিজেপি। কংগ্রেস সরকারের ব্যর্থতার জন্য এবার কয়েকটি আসন পাওয়ার আশা করছে বিজেপি। ২০০৯ সালে হিমাচলের চারটির মধ্যে তিনটিতে জয় পেয়েছিল। বিহারে সাতটির মধ্যে চারটিতে জয় পায় বিজেপি। লালু প্রাসাদের রাষ্ট্রীয় জনতা দল পেয়েছিল দুটি আসন। কিন্তু এবার লালু প্রাসাদ তার দল থেকে শক্ত প্রার্থী দাঁড় করিয়েছেন। কংগ্রেস দুটি আসনে তাদের প্রার্থী দিয়েছে। বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ৫টি আসনে। পশ্চিমবঙ্গের আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয় ছাড়া বিজেপির আর কোনো প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা নেই। আগামী ১২ মে উত্তরপ্রদেশ, বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের ৪১টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৬ মে ফলাফল পাওয়া যাবে।
No comments:
Post a Comment