যুদ্ধের দামামা থামা নরাধাম,
বুদ্ধম্ শরণম্!যুদ্ধবাজ অন্ধ জাতীয়তাবাদের মুখে ছাই,শান্তিতে যৌথ জয় ভারত-পাকের
তবে কি গান্ধীকে বর্ণ বৈষম্যের অভিযোগে নোবেল না দেওয়ার প্রয়শ্চিত্ত করা হল এবার?
মালালার সঙ্গে এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী
নুসরাত জাহান নদী ঠিকই লিখেছেনমেয়েরা যে জগতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে মালালা তার জীবন্ত উদাহরণ।
পলাশ বিশ্বাস
যুদ্ধবাজ অন্ধ জাতীয়তাবাদের মুখে ছাই,শান্তিতে যৌথ জয় ভারত-পাকের
যুদ্ধের দামামা থামা নরাধাম
মালালার সঙ্গে এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন ভারতের কৈলাশ সত্যার্থী।
তবে কি গান্ধীকে বর্ণ বৈষম্যের অভিযোগে নোবেল না দেওয়ার প্রয়শ্চিত্ত করা হল এবার?
নুসরাত জাহান নদী ঠিকই লিখেছেনমেয়েরা যে জগতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে মালালা তার জীবন্ত উদাহরণ।
নোবেল শান্তি পুরস্কার এবার ভারতে। এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন কৈলাস সত্যার্থী। শিশু ও কিশোরদের অধিকার রক্ষা ও শিশুদের শিক্ষার অধিকারের জন্য তাঁর কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার। ভারতের কৈলাস সত্যার্থীর পাশাপাশি পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাইকেও এবারের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে,বিভিন্ন সূত্রের খবর,ত রবিবার থেকে শুরু হয়েছে। এখনও কাটেনি আতঙ্কের প্রহর। বারেবারেই সীমান্তের ওপার থেকে ধেয়ে আসছে গোলাগুলি। আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন বহু মানুষ। যারা রয়ে গিয়েছেন, তারাও বাড়ির বাইরে বেরনোর সাহস করছেন না। আর ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানো? পুঞ্ছ, রাজৌড়ির বাসিন্দারা দুঃস্বপ্নেও তা ভাবতে পারেন না।
গোলাগুলি আর ভারী বুটের আওয়াজ শুনে ওরা অভ্যস্ত। কিন্তু, সীমান্তের ওপার থেকে লাগাতার হামলা? বহুদিন হয়ে গিয়েছে এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি ওদের। তাই আতঙ্কে কার্যত সিঁটিয়ে গিয়েছেন পুঞ্ছ, রাজৌড়ির বাসিন্দারা। ঘর ছেড়ে অনেকেই পালিয়েছেন। যারা এখনও ভিটেমাটি আঁকড়ে পড়ে রয়েছেন, বাড়ি থেকে খুব একটা বেরনোর সাহস করতে পারছেন না। আর ছেলেমেয়েদের স্কুল? সেই পাট সেই সোমবার থেকেই পুরোপুরি বন্ধ। একসময় এই স্কুল চত্বরেই হৈ হৈ করত পড়ুয়ার দল। এখন এক্কেবারে শুনশান। কোনও কোনও ছাত্র অবশ্য সাহস করে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে। যদি খোলে স্কুলের দরজা।
আমি কৈলাস সত্যার্থী
নরওয়ের নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান থরবিয়ন জাগল্যান্ড শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য যৌথভাবে তাদের নাম ঘোষণা করেন।
১৭ বছর বয়সী মালালা ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ নোবেলজয়ী, যিনি মেয়েদের শিক্ষা বন্ধ করে দেয়ার প্রতিবাদ করে তালেবান হামলার মুখে পড়েন এবং গুলিবিদ্ধ হয়েও বেঁচে ফিরে এসে নারী শিক্ষার জন্যই কাজ করে চলেছেন।
আর ৬০ বছর বয়সী কৈলাস গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতে শিশু শ্রমের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছেন, গড়ে তুলেছেন 'বাচপান বাঁচাও' আন্দোলন।
শান্তিতে নোবেল জয়ী এই দুইজন এমন দুটি প্রতিবেশী দেশের প্রতিনিধি, যে দেশগুলো ১৯৪৭ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে চারবার যুদ্ধে জড়িয়েছে; কাশ্মির সীমান্তে দুদিন আগেও দুই দেশের সীমান্তরক্ষীদের মধ্যে গোলাগুলি হয়েছে।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বলেন, "একজন হিন্দু, অন্যজন মুসলমান; একদিকে একজন ভারতীয়, অন্যদিকে একজন পাকিস্তানি; একই লক্ষ্য নিয়ে, শিক্ষার অধিকারের দাবিতে এবং উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন- যা নোবেল কমিটির কাছে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।"
কৈলাস সত্যার্থী তার নোবেল পুরস্কারকে উৎসর্গ করেছেন সেই শিশুদের জন্য, দারিদ্র্যের কারণে যাদের দাসত্বের জীবন কাটাতে হচ্ছে।
নোবেল জয়ের খবরে সিএনএন-আইবিএনকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, "যে শিশুরা আজো দাসত্বের জীবন কাটাচ্ছে, শ্রম দিতে বাধ্য হচ্ছে, অথবা পাচারের শিকার হচ্ছে-এই সম্মান তাদের সবার জন্য।"
নোবেল কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়, "শিশুদের অবশ্যই স্কুলে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে এবং অবশ্যই তাদের শ্রমিক হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর মোট জনগোষ্ঠীর ৬০ শতাংশের বয়স ২৫ বছরের কম। বিশ্বের শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের স্বার্থেই শিশু ও তরুণদের অধিকারকে সম্মান দেখাতে হবে।"
কৈলাস সম্পর্কে নোবেল কমিটির মূল্যায়ন, তিনি গান্ধীর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণাভাবে শিশুশ্রম বন্ধের দাবিতে এবং আর্থিক লাভের জন্য শিশুদের ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন চালিয়ে আসছেন অসম সাহসের সঙ্গে।
"শিশু অধিকার নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনভেনশনেও তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।"
মালালা সম্পর্কে নোবেল কমিটি লিখেছে, "বয়সে তরুণ হলেও গত কয়েক বছর ধরে তিনি নারী শিক্ষার অধিকার আদায়ে লড়াই চালিয়ে আসছেন। শিশু ও তরুণদের সামনে তিনি এই নজির গড়েছেন, যে নিজেদের অবস্থার উন্নয়নের চেষ্টায় তারাও অবদান রাখতে পারে। আর এই লড়াই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন সবচেয়ে বেশি বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতির মধ্যে থেকে।"
এ বছর নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়নে মোট ২৭৮ জনের নাম আসে, যাদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নজরদারির খবর ফাঁস করে দেওয়া এডওয়ার্ড স্নোডেন, পোপ ফ্রান্সিস, জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, কঙ্গোর চিকিৎসক ডেনিস মাকোয়েজ ও রাশিয়ার সংবাদপত্র নভোয়া গেজেটার নামও ছিল।
রাসায়নিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার চেষ্টার স্বীকৃতি হিসাবে গত বছর নোবেল শান্তি পুরস্কার পায় আন্তর্জাতিক সংস্থা 'অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অফ কেমিক্যাল উইপনস (ওপিসিডব্লিউ)। গতবারের মনোনয়নের তালিকাতেও মালালার নাম ছিল।
গত বছর নোবেল না পেলেও জাতিসংঘ মানবাধিকার পুরস্কার, ইউরোপীয় ইউনিয়নের 'শাখারভ' মানবাধিকার পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি সম্মাননা পান এই পাকিস্তানি কিশোরী।
পুরস্কার বাবদ একটি সোনার মেডেল ও ৮০ লাখ সুইডিশ ক্রোনার (১২ লাখ ৫০ হাজার ডলার) পাবেন মালালা ও কৈলাস। আগামী ১০ ডিসেম্বর অসলোতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে এ পুরস্কার।
মালালা ইউসুফজাই হলেন পাকিস্তানে জন্ম নেয়া তৃতীয় নোবেলজয়ী এবং এ পুরস্কার পাওয়া ৪৭তম নারী। আর কৈলাসের সত্যার্থীর আগে মোট সাতজন ভারতীয় নোবেল পেয়েছেন।
মালালা ইউসুফজাই
পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মেয়ে মালালা ইউসুফজাইয়ের জন্ম ১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই।
নারী শিক্ষার বিরোধী তালেবান জঙ্গিদের এলাকায় বসে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার পক্ষে বিবিসি ব্লগে লেখালেখি করে তিনি যখন পশ্চিমা বিশ্বের নজর কাড়েন, তখন তার বয়স মাত্র ১১। কিন্তু নারী শিক্ষার পক্ষে কথা বলায় তাকে পড়তে হয় প্রাণনাশের হুমকির মুখে।
২০১২ সালের ৯ অক্টোবর সোয়াত উপত্যকার মিনগোরাত এলাকায় ১৪ বছর বয়সী মালালা ও তার দুই বান্ধবীকে স্কুলের সামনেই গুলি করে তালেবান জঙ্গিরা।
পাকিস্তানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার করে বুলেট সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হলেও পরে যুক্তরাজ্যের কুইন এলিজাবেথ হাসপাতালে তাকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়।
ওই ঘটনা বিশ্বেজুড়ে আলোড়ন তোলে, মালালর স্বপ্ন সফল করতে ২০১২ সালের ১০ নভেম্বরকে 'মালালা দিবস' ঘোষণা করে জাতিসংঘ।
তাৎক্ষণিকভাবে পাকিস্তানে ফিরতে না পারলেও মালালা যুক্তরাজ্যে থেকে তার লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, জর্ডান, সিরিয়া ও কেনিয়ার মেয়েদের শিক্ষার সহায়তায় গঠন করেন মালালা ফান্ড।
গত বছর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এক বক্তৃতায় মালালা বলেন, "চরমপন্থিরা বই আর কলমকে ভয় পায়।তারা নারীদেরকে ভয় পায়।… তালেবানরা ভেবেছিল বুলেট দিয়ে আমাদের স্তব্ধ করে দেবে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে।"
প্রতিটি শিশুর স্কুলে যাওয়া নিশ্চিত করতে বিশ্ব নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মালালা বলেন, "আসুন আমরা খাতা কলম হাতে তুলে নেই। এগুলোই আমাদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। সবার আগে শিক্ষা, শিক্ষাই সমস্যার একমাত্র সমাধান। একজন শিশু, একজন শিক্ষক, একটি কলম ও বই গোটা বিশ্বকে পরিবর্তন করে দিতে পারে।"
কৈলাস সত্যার্থী
সাম্প্রতিক এক নিবন্ধে কৈলাস সত্যার্থী লিখেছেন, কেবল বাবা-মায়ের দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা, অজ্ঞানতা বা শিক্ষা ব্যবস্থার অনগ্রসরতার কারণেই যে শিশুরা শ্রম দিতে বাধ্য হচ্ছে- তা নয়। আসল বিষয় হচ্ছে, বহু ব্যবসায়ী সস্তা শ্রম খাটিয়ে বেশি লাভের জন্য শিশুদের শ্রমিক হিসাবে ব্যবহার করছে।
ভারতে যারা শিশু অধিকার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, ১৯৫৪ সালের ১১ জানুয়ারি মধ্যপ্রদেশে জন্ম নেওয়া কৈলাস তাদেরই একজন।
১৯৯০ এর দশক থেকে শিশু অধিকার প্র্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ব্যাপকভাবে সক্রিয় হলেও কৈলাস সত্যার্থীকে বিষয়টি প্রথম নাড়া দেয় মাত্র ৬ বছর বয়সে।
স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিদিনই তার চেয়েও কম বয়সী এক শিশুকে দিনি দেখতেন বাবার সঙ্গে জুতা পলিশ করতে। বিষয়টি তাকে এতোটাই নাড়া দিয়েছিল যে, প্রতিদিনই তিনি লজ্জিত হতেন।
সেই তাড়নায় ১১ বছর বয়স থেকেই শুরু হয় কৈলাসের চেষ্টা। দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বই বা অর্থ দিয়ে সহায়তা করতে সমবয়সীদেরও উৎসাহ যোগাতে থাকেন ওই বয়সেই।
১৯৮০ এর দশকে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছেড়ে পুরোদমে শিশু অধিকারের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন কৈলাস। গড়ে তোলেন 'বাচপান বাঁচাও' আন্দোলন, যে সংগঠনটি সারা ভারতে এ পর্যন্ত ৮০ হাজারেরও বেশি শিশুকে শ্রমের দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছে। এসব শিশুর পুনর্বাসন আর শিক্ষাও নিশ্চিত করেছে 'বাচপান বাঁচাও'।
শুধু ভারত নয়, কৈলাস বিশ্বব্যাপী নানা সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িয়েছেন। গ্লোবাল মার্চ অ্যাগেইনস্ট চাইল্ড লেবার, ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার অন চাইল্ড লেবার অ্যান্ড এডুকেশনের পাশাপাশি গ্লোবাল ক্যাম্পেইন ফর এডুকেশনের সঙ্গেও কাজ করে যাচ্ছেন।
কম্বল ও কার্পেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিশুদের শ্রমিক হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করে সনদ দেওয়ার জন্য কৈলাস গড়ে তোলেন 'রাগমার্ক' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যা বর্তমানে 'গুডউয়েভ নামে পরিচিত।"
তার এই সংগঠন ১৯৮০ এবং ৯০-এর দশকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে কারখানায় শিশুশ্রম ব্যবহারের বিষয়ে ক্রেতাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার চালায়। এর ফলে বিশ্বজুড়ে কার্পেট প্রস্তুত ও সরবরাহে বড় ধরনের প্রভাব পড়ে।
শিশুশ্রমকে একটি মানবাধিকার 'ইস্যু' হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি একে কল্যাণ ও সেবামূলক বিষয় হিসেবে তুলে ধরতেও সক্ষম হন কৈলাস।
তিনি দেখিয়েছেন, দারিদ্র, কর্মহীনতা, অশিক্ষা, জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং সামাজিক সমস্যা সমাজে শিশুশ্রম বাড়িয়ে দেয়। শিশুশ্রমের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে 'সবার জন্য শিক্ষা' আন্দোলনের সঙ্গে একীভূত করতেও ভূমিকা রাখেন এই ভারতীয়।
শিশুশ্রম রোধ এবং শিশুদের শিক্ষা নিশ্চিত করতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন, চুক্তি স্বাক্ষরের পেছনেও তার অবদান রয়েছে।
এসব কাজের স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের 'ডিফেন্ডার অফ ডেমোক্রেসি অ্যাওয়ার্ড (২০০৯), স্পেনের আলফনসো কোমিন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড (২০০৮), মেডেল অফ দ্য ইটালিয়ান সিনেটসহ (২০০৭) বিভিন্ন পুরস্কার আর খেতাবে ভূষিত হয়েছেন কৈলাস সত্যার্থী।
বর্ণ বিদ্বেষ অভিযোগে নোবেল বন্চিত গান্ধী
বিতর্ক।। নোবেল পুরস্কার বনাম গান্ধী ।।
তরুণ কান্তি ঠাকুর
ভারতের ম-হা-ন নেতা মোহন দাস করমচন্দ গান্ধী, শান্তির জলন্ত প্রতিক ,সারা বিশ্বকে শান্তির পাঠ পড়ানেবালা অথচ শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেলেন না । এই রকম বৈষম্য মূলক ও অন্যায় কেন হল গান্ধীজী প্রতি।আপনার বিচারে কি সেই কারন যার জন্য নোবেল থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তিনি ???
গতকাল উপরের প্রশ্ন গুলো করেছিলাম।কিন্তু কেউই উত্তর দিতে পারেননি।কেন জানিনা।তাই আজ গান্ধীজী কেন শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেলেন না সেই সত্য উদ্ঘাটন করছি।
গান্ধীজী ইংল্যান্ডে আইনের পড়াশোনা শেষ করার পর প্রত্যক্ষ ভাবে আদালতে দাঁড়িয়ে ওকালতি করার সাহস পাচ্ছিলেন না।শেষ পর্যন্ত সাহস সঞ্চয় করে আদালতে গিয়ে দাঁড়ালেন কিন্তু প্রথম দিনই আদালতের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান।পরে এরকম আরো দুই বার হয়েছিল।
থাক সে কথা, আসল কথায় ফিরে আসি।
গান্ধী 1893 সালে দক্ষিণ আফ্রিকার ডরবন শহরে পৌছান ,উদ্দেশ্য সেখানে ওকালতি ব্যাবসা করবেন।সেখানে গিয়ে তিনি একটা জিনিস লক্ষ্য করলেন যে সেখানকার পোস্ট অফিসের দুটো দরওয়াজা।একটা দরওয়াজা শাসক জাতি অর্থাৎ গোরা ইংরেজদের জন্য এবং অপরটি আফ্রিকান কালো মানুষ ও ভাভারতীয়দের জন্য।অপরাপর ভারতীয়রা কালো আফ্রিকান দের সাথে দরওয়াজা ভাগাভাগি করতে কোন সমস্যা হচ্ছিল না, কিন্তু গান্ধীজীর ভিতরকার জাত্যাভিমান জেগে উঠলো, ইংরেজদের মত এত গোরা না হলেও নিগ্রোদের মত এত কালোও তো নয়।তাই গান্ধীজী ঠিক করলেন তিনি গোরা ইংরেজদের দরওয়াজা দিয়েই পোস্ট অফিসে যাতায়াত করবেন।কিন্তু সমস্যা হল যখনই দরওয়াজা পর্যন্ত পৌছালেন ইংরেজ দারওয়ান বাধা দিল।বলল তোমার জন্য এটা নয়, তুমি কালো নিগ্রোদের সঙ্গে ঐ দরওয়াজা দিয়ে যাবে।
ব্যাস আর যায় কোথায়? শুরু হল আন্দোলন। অস্বীকার করলেন Blak আফ্রিকানদের সাথে দরওয়াজা ভাগাভাগি করতে।আফ্রিকান কালো মানুষের সাথে একই দরওয়াজা দিয়ে তিনি যাতায়াত করবেন বলে ঠিক করলেন। শুরু করেন জাতিয় ভেদভাব।শুরু করলেন বর্ণ ভেদ বা রং ভেদ।
ফলশ্রুতিতে 1896 সালে পোস্ট অফিসের দুটো দরওয়াজার জায়গায় তিনটি দরওয়াজা করা হয়।
আর এই কারণেই নোবেল কমিটি গান্ধীজী কে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার অযোগ্য সাব্যস্ত করেন।
তাছাড়া নোবেল কমিটি ও ব্রিটিশ সরকার গান্ধীজী কে পৃথিবীর সব থেকে হিংসক ব্যাক্তি মনে করতেন।কারন গান্ধীজী Do or die ; করেঙ্গে এয়া মরেঙ্গে নারা দিয়ে শান্তির সমস্ত সিমা পার করে দিয়েছিলেন ।ব্রিটিশ সরকার বুঝতে পেরেছিল শুধু ভারতের নয় ইংল্যান্ডের থেকে সমস্ত পুলিশ এবং সেনা বাহিনী আনলেও এতবড় হিংসক আন্দোলন থামানো সম্ভব নয়।উপরন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারনে ব্রিটিশ সরকার ব্যাতিব্যস্ত হয়েছিল ।সেই মূহুর্তে গান্ধীর হিংসক আন্দোলনে ইংরেজ সরকার হতবল হয়ে পড়ে।
Gandhi Creates Racial Segregation in South Africa লিখে Google search করলে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment