নিত্যানন্দ গায়েন ঃসুন্দরবনের কবিতা,বাদাবন মানুষের কবিতা
1- ক্যানিং নদী
-------------
ক্যানিং নদী মোজে গেছে
দু ধারে অসংখ মানুষের বসবাস
দাদু বলতেন
এক সময় এই নদী নাকি ছিল খুব রাগী ,
দুরন্ত।
আসত যখন জোয়ার
মনে হত
আসছে সেই অহঙ্কারী ইংরেজ অফিসার
লার্ড ক্যানিং
এক মাতালের মত
তাই এর নাম ছিল মাতলা নদী
এখন আর সেই রাগ নেই
বুড়ো হয়ে গেছে
ভাটা পড়লে দেখা যায় তার তলে পাঁক
ধসে যায় নৌকো
কাপড় গুছিয়ে পার করে তাকে সব
নদী ও বুড়ো হয়ে যায় গো মানুষের মতো
কত -কত মাছ , চিংড়ি
কত -কত জলীয় জীব বাস করতো আগে
তুমি তো ছিলে সুন্দর বনের জীবন রেখা
মেলা লাগতো
ছেলে -মেয়ে , বউ , মা , বাবা
সবাই আসতেন
মাঝিরা খেয়া টানতেন
ফুল , প্রদীপ , বাতাসা দিয়ে
তোমার পূজা করতেন
আমি বুঝলাম
তোমার অবস্থা
আর মানুষের গল্প এক হি
তুমি সুখিয়ে যাচ্ছ
আমি পাচ্ছি অসীম বেদনা
আমি দেখতে চাই আবার
তোমার সেই যৌবন। ...
2-সেই পুরনো মাটির ঘর
আমার গ্রামের
সেই পুরনো মাটির ঘর
আজ ও দাড়িয়ে আছে
ওই ঘরের দেয়ালে লুকিয়ে আছে অনেক -অনেক স্মৃতি
আমাদের বংশের পুরনো ইতিহাস
টিকটিকি, মাকসা আরও অনেক জীব
প্রতিদিন পড়ে আমাদের সেই ইতিহাস
এই ঘর করেছে ভোগ অনেক
ঝড় -বৃষ্টি
তবুও পড়েনি ভেঙ্গে
আজ ও দাড়িয়ে আছে স্মৃতির বল নিয়ে
এক যোদ্ধার মত
ওই বৃদ্ধ ঘর জানে
পড়ে গেলে ভেঙ্গে যাবে
সুখ - দু:খ, কান্না -হাসির সব গল্প
তাই সে দাড়িয়ে আছে আজ ও
কোনো বৃধ্য পর্বতের মত
উঠুনের গাছেরা তাকে বাতাস করে
বৃষ্টি দেয় জল
তাপ দেয় রোদ
পাখিরা সোনায় গান
জ্যোত্স্না দেয় নতুন স্বপ্ন। ........
3)তুমি আসবে তো ..?
............................
তুমি আসবে তো ..?
আবার আঁকবো
একটি সুন্দর ছবি
থাকবে মুখে
মোনালিসা হাসি
প্রভাতের সূর্যের কিরণের মত
তুমি আসবে তো
আমার সেই ছবি হতে ?
4-.সোনার হরিন
সে যে কখনো বলেনি
সোনার হরিনের কথা
ছিলনা তার কাছে কোনো রাম
ফাটেনি কোনো পৃথিবীর বুক
রাবন করেনি তার হরণ
জালিয়ে মেরেছে তাকে
তার নিজের জন .....
5.শিউলি ফুল
------------
কুয়াসায় ভেজা রাত
শিউলি ফুলের গন্ধ
শিশিরে ভিজে যায় পাতা
চক -চক করে চাঁদের আলোতে
মাটিতে পড়ে টপ-টপ
পাহারা দেয়
নিশব্দ রাত
ভোর -ভোরে
ছুটে আসে পাড়ার মেয়েরা
মাটি তে পড়ে থাকে
শিউলি ফুল
No comments:
Post a Comment