Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Monday, January 14, 2013

সারা বংলাতেই, সারা দেশেই গঙ্গাসাগর, কুম্ভমেলা চলছে ধর্মমত নির্বিশেষ এবং ইহাই ধর্ম নিরপেক্ষতা। পলাশ বিশ্বাস

সারা বংলাতেই, সারা দেশেই গঙ্গাসাগর, কুম্ভমেলা চলছে ধর্মমত নির্বিশেষ এবং ইহাই ধর্ম নিরপেক্ষতা

পলাশ বিশ্বাস


সারা ভারতে মুক্ত বাজারের যে জাযনবাদী গণসংহার সংস্কৃতির অশ্বমেধ ঘোড়া দাপিয়ে বেড়াচ্ছে, তার জন্য এই দেশে ধর্মান্ধ জাতীয়তাবাদের সর্বব্যাপী সর্বশক্তিমান  পরিবেশ চলছে এই মুহুর্তে
।পশ্চিম বঙ্গে নানা রঙ্গের মাঝে অব্যাহত রাজনৈতিক সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মধ্যে মকরসন্ক্রান্তির পিঠে পুলি সহকারে চলছে গঙ্গা স্নান।ওদিকে প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে প্রয়াগরাজ মহাতীর্থ এলাহাবাদে শুরু হয়ে গেল কুম্ভ মেলা।শান্তি ও আধ্যাত্ম এই পরিবেশেপর সমাজবাস্তব নয়, এর পিছনে রয়েছে সুপরিকল্পিত বর্ণব্যবস্থা অস্পৃশ্যতানির্ভর জাতি ভেদাভেদ পরিচালিত হিংসক ব্রাঙ্মণ্যতন্ত্রের অমানবিক প্রলয়ন্কর তান্ডব, যার চরম অভিব্যক্তি প্রকাশ হচ্ছে ধর্মোন্মাদী অন্ধ দেশভক্ত যুদ্ধ উন্মাদনায়। এই ধর্ম জাতীয়তাবাদই, এই মৌলবাদই জায়নবাদী মুক্ত বাজারের বৈশ্বিক ব্যবস্থার আসল পুঁজি, যুদ্ধ গৃহযুদ্ধ ভিত্তিক কুলীন আধিপাত্যবাদী গণশত্রু অর্থনীতির ধাত্রী। আমি এই প্রসঙ্গে প্রথম ইরাক তেল যুদ্ধের সময় থেকে নিয়মিত লিখে আসছি, যে তৃতীয় বিশ্বের যাবতীয় প্রাকৃতিক ঐশ্বর্য্য লুন্ঠন করার যুধ্ধের রণাঙ্গন হচ্ছে এবার ভারত উপমাহদেশ। ভারতে উদার অর্থনীতির উত্তরণ ঘটেছে এই ধর্মোন্মাদী জাতীযতাবাদের, স্ফষ্ট করে বলতে হলে হিন্দুত্বের পুনরূত্থানের সঙ্গে সঙ্গে। ভুপাল গ্যাস দুর্ঘটনা যার ভুমিকা। শিখ গণহত্যা, সংরক্ষণবিরোধী আন্দোলন, বাবরি ধ্বংস, গুজরাত নরসংহার নানা মাইলফলক পেরিয়ে।ভারত মার্কিন পরমাণু সন্ধি, ভারত ইজরাইল মৈত্রী, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমেরিকার যুদ্ধে পার্টনরশিপ থেকে জল জঙ্গল জমি আজিবিকা থেকে বহুসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে উত্খাতের মহাসংগ্রাম, সলওয়া জুড়ুম, সেজ, পরমাণু বিদ্যুত, বেসরকারীকরণ বিনিবেশ, কালা নাগরিকত্ব আইন, অসংবৈধানিক আধার কার্ড নিলেকণিণীত করপোরেট পরিকল্পনা- সবকিছুর মধ্যে জড়িযে আছে গণ আন্দোলনের মৃত্যু, মতাদর্শের বিশ্বাসঘাতকতা ও অবশ্যই শাষকশ্রেণীর স্বার্থে একচেটিয়া মনুস্মৃতি ব্যবস্থা কায়েম রাখার চক্র। হিন্দুত্বই সংস্কার নীতির সবচেয়ে বড় আধার. যে হেতু মুক্ত বাজার ও হিন্দুত্য দুইই গণসংহার ও বহিস্কারের নীতিতে চলে। ইতিমধ্যে উদিত হয়েছে সুশীল স কুলীন সমাজ যা করপোরেট নীতি নিরধারণের কার্নিওয়াল মুখোশ। সংসদে বার বার দেখা গিয়েছে গণবিরোধী রাজনৈতিক সহমতি, জনগণের প্রতি চরম বিশ্বাস ঘাতকতা। সংস্কারের কর্ম সুচি রাজনৈতিক পালাবদল বা অস্থিরতায় একবারের জন্যও ব্যাহত হয়নি।বার বার বাধিত হয়েছে সংসদ অধিবেশন, বানচাল হয়েছে , কিন্তু সংস্কার আটকায়নি। ভাইব্রেন্ট গুজরাত শিল্প সম্মেলনে গোটা করপোরেট ইন্ডিযার আস্থা প্রকাশ পেল গুজরাত গণসংহারের ঘাতক ও একাধারে হিন্দুত্বের মহানায়ক নরেন্দ্রমোদীর পক্ষে।তাঁকে অনিল আম্বানী, মুকেস আম্বানিরা মহাত্মা বলেছেন। হিন্দুত্বকে এমন অকপট সমর্থনের রহস্য কিন্তু সংস্কার কর্মসুচিতে, সংস্কার ইতিহাসের রক্তাক্ত প্রতিটি অনুচ্ছেদে ফাঁস হয়েই আছি, ধর্মান্ধ আমরা দেখতে পাই না। দক্ষিণ বঙ্গের বৈশ্বিক পরিবেশের জন্য অতিশয় গুরুত্বপুর্ণ ও চিরউপেক্ষিত তফসিলি সুন্দরবন অন্চলে আয়লা বিধ্ব্তদের ত্রাণের ব্যবস্থাই হল না। প্রতিদিন নরক যন্ত্রণা ভোগ করে  জীবম জীবিকার খাতিরে প্রাণ হাতে করে চলতে হয় দক্ষিন 24 পরগণার মানুষকে।উন্নয়নের গল্পই আছে।বাস্তবে না আছে সরকার, না আছে প্রশাসন, আছে এবং অবয়শ্যই আছে দলবদ্ধ সংঘাতী আত্মধ্বংসী রাজনীতি। সেই অন্ছলের অত্যন্ত অনুন্নত দ্বীপে মুখ্যমন্ত্রী শুধু কপিল মুনির আশ্রেমের জীর্ণো দ্ধারই করলেন না, বরং তাংর প্রবাসের জন্য সেখানে তৈরী হয়ে গেল 10 কোটি টাকা ব্যয়ে বিলাসবহুল কটেজ। অন্ধকার সুন্দরবন বাদা এলাকার সাগরদ্বীপ এখন ত্রিফলা আলোয় আলোকিত। ধর্ম ও রাজনীতির চমত্কার যোগাযোগ।মতুয়া ঠাকুর বাড়ির ছেলেকে মন্ত্রী করে, মতুয়া পুরুষের স্মৃতি রক্ষায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করলেই যদি কোটি কোটি মতুয়া উদ্বাস্তু বোট তাঁদের যে তিমিরে সেই তিমিরে রেখেই তালুবন্দি করা যায়, ক্ষতি কি। সারা বংলাতেই, সারা দেশেই গঙ্গাসাগর, কুম্ভমেলা চলছে ধর্মমত নির্বিশেষ এবং ইহাই ধর্ম নিরপেক্ষতা

গঙ্গাসাগর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার একটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ও তীর্থস্থান ৷ এখানে বঙ্গোপসাগরের তীরে সমুদ্র সৈকতের পাশে কপিলমুনির প্রাচীন মন্দির আছে ৷ জানুয়ারি মাসে মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে এখানের মেলায় লক্ষাধিক পুন্যার্থীর সমাগম হয় ৷ তবে পশ্চিমবঙ্গে এই নিয়ে এক পুরানো বিতর্ক রয়েছে ৷ কপিল মুনির আশ্রমের কর্তৃপক্ষ ভিন রাজ্যের অধিবাসী ৷ মেলার সময় তারা এখান থেকে উপার্জিত অর্থ নিয়ে নিজের রাজ্য উত্তর প্রদেশে চলে যান এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ মাধ্যমে বিতর্ক হয়েছে ৷

গঙ্গাসাগর মেলা প্রাঙ্গণ সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। য়ার কাজ প্রায় শেষের পথে। পর্যটন দফতর ও বিদ্যুৎ দফতরের যৌথ উদ্যোগে কচুবেড়িয়া থেকে কপিল মুনির আশ্রম পর্যন্ত ৩০ কিমি রাস্তায় বসছে  ত্রিফলা আলো এবং ঐ রাস্তাটিকে ৫০ ফুট পর্যন্ত চওড়া করা হয়েছে। এর জন্য খরচ হয়েছে কয়েক লক্ষ টাকা। এমনকী বাংলা ভাষাভাষীর মানুষ ছাড়াও অন্য যে সব ভাষাভাষীর মানুষরা আসবেন তাদের জন্য মাল্টি লিঙ্গুয়াল প্রচারের ব্যবস্থাও থাকছে। তাছাড়া, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য হট লাইনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভেসেল, বাস, জেটি, শৌচালয়, স্বাস্থ্যকর্মী, ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এর পাশাপাশি অসুস্থ পুণ্যার্থীদের যাতে দ্রুত শুশ্রূষার ব্যবস্থা করা য়ায় তার জন্য থাকছে ৪৫টি অ্যাম্বুলেন্স, ৬টি ওয়াটার অ্যাম্বুলেন্স ও ৫৭টি অস্থায়ী ফার্স্ট-এড ক্যাম্প। পুণ্যার্থীদের কেউ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তার দ্রুত চিকিৎসার জন্য চেমাগুড়ি, কচুবেড়িয়া, লট-৮ ও নারায়ণপুরে থাকছে ৫টি অস্থায়ী হাসপাতাল। এছাড়াও থাকছে আরও ২০টি হাসপাতাল। গত বছরের মত এ বছরও থাকছে ৫ লক্ষ টাকার দুঘর্টনাজনিত বিমা। পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য এ বছরও থাকছে টোল ফ্রি নম্বর ১৮০০-৩৪৫৩। রাজ্যের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, তীর্থযাত্রী ও পর্যটকদের আকর্ষণ আরও বাড়াবার জন্য ও এখানে এসে তাদের যাতে কোন রকম অসুবিধার সম্মুখীন না হতে হয় তার জন্য পর্যটন দফতরের উদ্যোগে এই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এর কাজ প্রায় শেষের পথে। এ বছর কুম্ভমেলা আর গঙ্গাসাগর মেলা প্রায় একই সময় হলেও গঙ্গাসাগর মেলায় আট লক্ষ তীর্থযাত্রীর সমাগম হবে বলেই আশা করছেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী। জেলার পুলিশ সুপার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠি বলেন, যাত্রীদের সব রকম সাহায্যে জন্য ৬০০০ পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। এছাড়াও থাকছে অ্যান্টি ক্রাইম টিম, রাস্তা চেনাবার জন্য ডকুমেন্টারি ফিল্ম এর ব্যবস্থা, বসানো হচ্ছে সিসিটিভি।

কুম্ভমেলা

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
কুম্ভমেলা
কুম্ভমেলা
২০০১ সালে এলাহাবাদে আয়োজিত মহাকুম্ভ
অফিসিয়াল নামকুম্ভমেলা
পালনকারীহিন্দু
ধরনহিন্দুধর্ম
শুরুপৌষ পূর্ণিমা
সমাপ্তিমাঘী পূর্ণিমা

কুম্ভমেলা (দেবনাগরী: कुम्भ मेला) একটি হিন্দু উৎসব। এই উপলক্ষ্যে ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা তীর্থস্নান করতে আসেন।

সাধারণ কুম্ভমেলা প্রতি চার বছর অন্তর আয়োজিত হয়। প্রতি ছয় বছর অন্তর হরিদ্বার ও প্রয়াগে (এলাহাবাদ) অর্ধকুম্ভ আয়োজিত হয়।[১] প্রতি বারো বছর অন্তর প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জ্বয়িনী ওনাসিকে পূর্ণকুম্ভ আয়োজিত হয়। বারোটি পূর্ণকুম্ভ অর্থাৎ প্রতি ১৪৪ বছর অন্তর প্রয়াগে আয়োজিত হয় মহাকুম্ভ।[২][৩][৪]

২০০৭ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ ৪৫ দিন ব্যাপী সর্বশেষ অর্ধকুম্ভ আয়োজিত হয়েছে। সাত কোটিরও বেশি হিন্দু তীর্থযাত্রী প্রয়াগে এই মেলায় যোগ দেন। ১৫ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তিরদিন ৫০ লক্ষ মানুষ তীর্থস্নান করেন।[৫]

২০০১ সালে সর্বশেষ মহাকুম্ভে যোগ দিয়েছিলেন ছয় কোটি হিন্দু। এটিই ছিল ইতিহাসের বৃহত্তম জনসমাবেশ।[৬][৭][৮][৯]

হিন্দুধর্ম

Om.GIF

ওঁ • ব্রহ্ম • ঈশ্বর
হিন্দু • হিন্দুধর্মের ইতিহাস

HinduSwastika.svg

হিন্দুধর্ম প্রবেশদ্বার
হিন্দু পুরাণ প্রবেশদ্বার

কুম্ভমেলা চারটি ভিন্ন ভিন্ন স্থানে আয়োজিত হয়। এই চারটি স্থান নির্বাচিত হয় বৃহস্পতি ও সূর্যের অবস্থান অনুসারে। বৃহস্পতি ও সূর্য সিংহ রাশিতে অবস্থান করলে নাসিকের ত্র্যম্বকেশ্বরে; সূর্য মেষ রাশিতে অবস্থান করলে হরিদ্বারে; বৃহস্পতি বৃষ রাশিতে এবং সূর্য কুম্ভ রাশিতে অবস্থান করলে প্রয়াগে; এবং সূর্য বৃশ্চিক রাশিতে অবস্থান করলে উজ্জয়িনীতে মেলা আয়োজিত হয়।[১০][১১] সূর্য, চন্দ্র ও বৃহস্পতির রাশিগত অবস্থান অনুযায়ী মেলা আয়োজনের তিথি (তারিখ) নির্ধারিত হয়।[১২]

[সম্পাদনা]আরও পড়ুন

  • Kumbha Mela: History and Religion, Astronomy and Cosmobiology, by Subas Rai. Published by Ganga Kaveri Pub. House, 1993. ISBN 81-85694-01-X.
  • The Kumbh Mela, by Mark Tully (Author), Richard Lannoy (Photographer), Ashok Mahendra (Photographer). Indica Books. 2002. ISBN 81-86569-22-7.
  • Kumbha Mela, by Jack Hebner. Published by Transition Vendor, 2003. ISBN 1-886069-90-5.
  • Nashik Kumbh Mela: A Spiritual Sojourn, by Govind Swarup. India Book House Ltd, 2006.ISBN 81-7508-379-4.
  • Pilgrimage and Power: The Kumbh Mela in Allahabad, 1765-1954, by Kama Maclean. Oxford University Press, USA. 2008. ISBN 0-19-533894-4.

[সম্পাদনা]পাদটীকা

  1.  The Urn Festival TIME, Feb 08, 1960.
  2.  Kumbh Mela The Basis of Civilization--water Science?: Water Science?, by J. C. Rodda, Lucio Ubertini, International Association of Hydrological Sciences, IAHS International Commission on Water Resources Systems, Consiglio nazionale delle ricerche (Italy). Published by International Association of Hydrological Science, 2004. ISBN 1-901502-57-0 Page 165.
  3.  The Maha Kumbh Mela 2001 indianembassy.org.
  4.  Kumbh Mela dates kumbhamela.net.
  5.  Millions of Hindus Wash Away Their Sins Washington Post, January 15, 2007.
  6.  Millions bathe at Hindu festival BBC News, January 3, 2007.
  7.  Kumbh Mela pictured from space - probably the largest human gathering in history BBC News, January 26, 2001.
  8.  Kumbh Mela: the largest pilgrimage - Pictures: Kumbh Mela by Karoki Lewis The Times, March 22, 2008.
  9.  Kumbh Mela - 25 January 2001 - New Scientist
  10.  Kumbha Mela Students' Britannica India, by Dale Hoiberg, Indu Ramchandani. Published by Popular Prakashan, 2000. ISBN 0-85229-760-2.Page 259-260.
  11.  Haridwar The Imperial Gazetteer of India, 1909, v. 13, p. 52.
  12.  Kumbh Mela 'Britannica.com.

[সম্পাদনা]বহিঃসংযোগ


বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ৩০ হাজার কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যে খুব দ্রুত পা ফেলতে চাইছে সরকার৷ হাতে তিন মাসেরও কম সময়৷ তাই চলতি মাসে একটি ও আগামী দু'মাসে ছ'টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণ করতে চলেছে অর্থমন্ত্রক৷ 

অয়েল ইন্ডিয়া, এনটিপিসি, সেল, নালকো, ইআইএল এবং রাষ্ট্রীয় কেমিক্যালস- এই সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই বিক্রি করবে সরকার৷ জানুয়ারিতে অয়েল ইন্ডিয়ার বিলগ্নিকরণের কথা রয়েছে৷ ফেব্রুয়ারিতে দু'টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বিক্রি হবে৷ মার্চে চারটি৷ তবে ৩১ মার্চের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে অর্থবর্ষের শেষ মাসটিতে প্রতি সন্তাহে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার শেয়ার বিক্রি হবে৷ 

অর্থমন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিাকরিকের মতে, ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুত্‍ সংস্থা এনটিপিসি ও অ্যালুমিনিয়াম সংস্থা নালকোর বিলগ্নিকরণের কথা রয়েছে৷ খনি সংস্থা এমএমটিসি, ইস্পাত সংস্থা সেল, ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থা ইআইএল ও রাসায়নিক সংস্থা রাষ্ট্রীয় কেমিক্যালসের বিলগ্নিকরণের কথা রয়েছে মার্চে৷ 

প্রশ্ন হল কত টাকা উঠবে? ওই আধিকারিকের মতে, সরকার যদি সেল-এর ন্যূনতম অংশীদারিত্ব বিক্রি নাও করতে পারে তা হলেও সরকারি কোষাগারে ২৫ হাজার কোটি টাকা ঢুকবে৷ তবে সেল-এর অংশীদারিত্ব বিক্রি করতে পারলে ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে সরকার৷ 

হিন্দুস্তান কপার ও ন্যাশনাল মিনারেল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের শেয়ার বিক্রি করে এখনও পর্যন্ত সরকারের ঘরে এসেছে ৬৯০০ কোটি টাকা৷ এ বার বাকি আড়াই মাসে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা তুলতে হবে সরকারকে৷ অয়েল ইন্ডিয়ার ১০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে ২,৭০০ কোটি টাকা তুলতে চায় সরকার৷ অন্যদিকে, এনটিপিসি-র ৯.৫ শতাংশ শেয়ার ১২ হাজার কোটি টাকায় বিক্রি করার লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে সরকার৷ 

সেল, এমএমটিসি, ভেল, আরআইএনএল প্রভৃতি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিলগ্নিকরণে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ পাশাপাশি, হিন্দুস্তান জিঙ্ক ও বালকো-র অংশীদারিত্ব সরকারকে বিক্রি করে দেওয়ার সুপারিশ দিয়েছিল কেলকার কমিটি৷ 


খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ফের সরব সর্বোচ্চ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কোনও মহিলা মোবাইল ব্যবহার করবেন কি না বা কী ভাবে পোশাক পরবেন, তা নিয়ে কোনও নিদান দেওয়ার অধিকার খাপ পঞ্চায়েতের নেই। 

এদিন সুপ্রিম কোর্টে খাপ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানি ছিল। সেখানে উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকরা বলেছেন, বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্রে খাপ পঞ্চায়েত নানা মত দেয় ঠিকই। এবং সে মতামতে সমাজে নেতিবাচক প্রভাবও পড়ে। কিন্তু সম্মানরক্ষায় হত্যার সঙ্গে খাপ পঞ্চায়েত সব ক্ষেত্রে সরাসরি যুক্ত নয়। এ নিয়ে ৫ মার্চ খাপ পঞ্চায়েতগুলির বক্তব্য শুনবে আদালত। খাপ পঞ্চায়েতের হাত থেকে এক গোত্রে বা অসবর্ণ বিবাহ করা তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করা নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। এর আগে উত্তর প্রদেশের খাপ পঞ্চায়েতগুলি জানিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টে তারা একগোত্রে বিবাহের বিরোধিতা করবে।
বাজেটে ফের সোনার আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা অর্থমন্ত্রকের
নয়াদিল্লি: সোনার ঊর্ধ্বমুখী চাহিদায় রাশ টানতে ফের এ বছরের বাজেটে সোনার আমদানিশুল্ক বাড়ানো হতে পারে৷ রবিবার এই ইঙ্গিতই দিলেন অর্থমন্ত্রকের এক শীর্ষ আধিকারিক৷ তিনি বলেন, গত দু'মাসে সোনার আমদানির পরিমাণ বেড়ে গিয়েছে৷ সরকারের কাছে এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়৷ বর্ধিত আমদানি রুখতে কিছু পদক্ষেপ দরকার৷ হয়তো আমদানি শুল্ক বাড়ানো হবে৷ খুব সম্ভবত বাজেটেই সেই ঘোষণা হবে৷ 

সোনার বাড়তে থাকা আমদানি সরকার অন্যতম মাথাব্যাথা, তা কয়েকদিন আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম৷ এ বছরের শুরুতেই তিনি বলেছিলেন, বৈদেশিক বাণিজ্য খাতে ঘাটতি বাড়ছে৷ চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ'মাসে তা পৌঁছেছে ৩৮০০ কোটি মার্কিন ডলারে৷ ওই একই সময় দেশে মোট দু'হাজার ২৫ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের সোনা আমদানি হয়েছে দেশে৷ এই আমদানির পরিমাণ যদি ৫০ শতাংশ কম হত, তা হলে দেশে বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ (ফোরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ) বাড়ত এক হাজার কোটি মার্কিন ডলার৷ বর্তমানে সোনা আমদানিতে এত টাকা খরচ করতে পারবে না সরকার৷ সোনা আমদানির জন্য বেড়ে চলা বিপুল বাণিজ্য ঘাটতির দায় কেন নেবে সরকার৷ আমদানি নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্ক বাড়ানো ছাড়া কোনও উপায় থাকবে না সরকারের৷ 

গত বছর বাজেটে তত্‍‌কালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় সোনার আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করেছিলেন৷ ২৪ ক্যারেটের সোনার বারে আমদানি শুল্ক বেড়ে হয়েছিল চার শতাংশ৷ ২২ ক্যারাটের ক্ষেত্রে তা হয়েছে ১০ শতাংশ৷ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩-১৪ বর্ষের জন্য বাজেট পেশ করতে চলেছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ মনে করা হচ্ছে সেই বাজেটের পর আমদানি শুল্ক কম করা তো দূরের কথা বরং আরও বাড়বে৷ এবং দেশে মহার্ঘ হবে সোনা৷ গত বছর প্রণব মুখোপ্যাধ্যায়ের বাজেট ঘোষণার পর দেশ জুড়ে বিক্ষোভ দেখান সোনা কারবারিরা৷ টানা তিন সন্তাহ সারা দেশে ব্যবসা বন্ধ রেখেছিলেন সোনা কারবারিরা৷ এ বছর বাজেটেও আমদানি শুল্ক বাড়ানো হলে দেশে তেমনই পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ পাশাপাশি, সোনা আকাশছোঁয়া দর এই ধাতুর চোরাকারবার বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তবে অর্থমন্ত্রকের বক্তব্য, সোনার বেআইনি পাচার রুখতে সরকার সবসময়ই সক্রিয়৷ 

অর্থমন্ত্রকের ব্যাখ্যা ছিল, সোনাকে খালি অলঙ্কার হিসেবে না ব্যবহার করে তাকে বিনিয়োগ বাজারে লাগানো হোক৷ যাদের বাড়িতে, ব্যাঙ্কের লকারে অঢেল সোনা পড়ে রয়েছে, তাদের কাছে অর্থমন্ত্রকের অনুরোধ, এই মূল্যবান ধাতুকে 'নিষ্কর্মা' করে ফেলে না রাখতে৷ দেশে 'নিষ্কর্মা' সোনার পরিমাণ যাতে কমে তা জন্য ব্যাঙ্ক ও বিনিয়োগ ক্ষেত্রে সোনা সংক্রান্ত বিভিন্ন স্কিম চালু করার কথা ভাবছে সরকার৷ একই প্রস্তাব রয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে৷ সোনার চাহিদা কমাতে আরবিআই-ও এই ধাতুর আমদানি শুল্ক ও সোনায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল৷ এ ছাড়া সোনার বদলে যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দেয়, সেখানেও সোনার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু কঠোর নিয়ম চালু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক৷ পাশাপাশি, কোনও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে সোনা কেনার জন্য ঋণ দেওয়ার ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আরবিআই৷ 

আর্থিক সংহতির লক্ষ্যে কেলকার কমিটি তৈরি করে সরকার৷ কমিটির মত ছিল খাদ্য, জ্বালানি ও সারে ভর্তুকি কমিয়ে বাজেট ঘাটতি কমানো৷ হিন্দুস্তান জিঙ্ক ও বালকোর বিলগ্নিকরণের জেরে সরকারের ঘরে ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি আসবে বলে সংশ্লিষ্ট কমিটি জানিয়েছিল৷ কিন্ত্ত এই দুই সংস্থায় প্রধান অংশীদারিত্ব রয়েছে বেদান্ত সংস্থার৷ তাই হিন্দুস্তান জিঙ্ক ও বালকোর শেয়ার বিক্রি নিয়ে আইন মন্ত্রকের পরামর্শ চেয়েছে অর্থমন্ত্রক৷ 

বছরের শুরুতেই দেশে বিপুল বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ
মুম্বই: 'ফিসক্যাল ক্লিফ' এড়াতে মার্কিন কংগ্রেস বিল পাশ করানোয় শেয়ার বাজারে বিনিয়োগে উত্‍সাহ বেড়েছে৷ ২০১৩ শুরু হওয়ার পরে প্রথম দু' সপ্তাহেই ভারতের শেয়ার বাজারে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হয়েছে ৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (প্রায় ১.৬ বিলিয়ন ডলার)৷ জানুয়ারি মাসের প্রথম এগারো দিনে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলি ভারতের শেয়ার বাজার থেকে মোট ২৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে৷ অন্যদিকে, ওই দিনগুলিতে সংস্থাগুলি মোট ১৬ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে৷ এর ফলে শেয়ার বাজারে নিট বিনিয়োগ হয়েছে ৮ হাজার ৮১৩ কোটি টাকা৷ 

এর আগে ২০১০ সালে ভারতের শেয়ার বাজারে সব থেকে বেশি বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ লক্ষ্য করা যায়৷ ওই বছর মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা৷ তারপরেই ২০১২ সালে বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হয়েছে ১.২৮ লক্ষ কোটি টাকা৷ 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক দুরারোহণ (ফিসক্যাল ক্লিফ)-এর আশঙ্কা দূর করতে একটি বিল পাশ করেছে মার্কিন কংগ্রেস৷ এর ফলে আগামী দু'মাসের মধ্যে খরচ কমানোর পাশাপাশি ব্যক্তিগত আয় চার লক্ষ ডলার এবং পারিবারিক আয় সাড়ে চার লক্ষ ডলারের বেশি হলে কর বাড়ানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে ওই বিলে৷ এর ফলেই ভারতের শেয়ার বাজারে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলির বিনিয়োগ করার উত্সাহ বেড়েছে বলে মনে করছেন শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা৷ এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপও এর অন্যতম কারণ হতে পারে বলে তাঁদের ধারনা৷ 

অন্যদিকে, এই বছরে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলির বিভিন্ন ঋণপত্রে (বন্ড) বিনিয়োগের পরিমাণ ২৬১ কোটি টাকা৷ এর ফলে শেয়ার ও ঋণপত্র মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত মোট বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হয়েছে ৮ হাজার ৫৫২ কোটি টাকা৷ বর্তমানে এ দেশের শেয়ার বাজার নথিভূক্ত বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১,৭৬০৷ 

 ভোগ্যপণ্য, খনি এবং মূলধনী পণ্যের শিল্পে খারাপ ফল হওয়ায় ২০১২-র নভেম্বরে শিল্পোত্‍পাদন হার গত অর্থবর্ষের একই সময়ের তুলনায় ০.১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে৷ এর ফলে, আগামী ২৯ জানুয়ারি ঋণনীতি ঘোষনার সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ টানা ১৬ মাস নিম্নমুখী থাকার পরে আশার আলো দেখিয়ে অক্টোবরে ঊর্ধ্বমুখী হয় ভারতের শিল্পোত্‍পাদন হার৷ অক্টোবর মাসের ঘোষিত শিল্পোত্‍পাদন সূচক সংশোধন করে ০.১ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৩ শতাংশ করা হয়েছে, যা ২০১১ সালের জুনের পরে সর্বাধিক৷ 

২০১১ সালের নভেম্বরে শিল্পোত্‍পাদন হার ছিল ৬ শতাংশ৷ ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের জুলাইয়ে এই হার ০.১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল৷ 

গত অর্থবর্ষের (২০১১-১২) প্রথম আট মাসে (এপ্রিল-নভেম্বর) ফ্যাক্টরি থেকে উত্পাদনের হার ছিল ৩.৮ শতাংশ৷ কিন্ত্ত, চলতি অর্থবর্ষের একই সময়ে এই হার কমে এক শতাংশ হয়েছে৷ 

শিল্পোত্‍পাদন সূচক নির্ণয়ের প্রধান ক্ষেত্র, খনন, ম্যানুফ্যাকচারিং, বিদ্যুত্ ও সাধারণ পণ্যের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের বৃদ্ধি গত অর্থবর্ষের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ০.৩ শতাংশ বেড়ে ৬.৯ শতাংশ হয়েছে৷ ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে এই হার ছিল ৬.৬ শতাংশ৷ তবে, নভেম্বরে শেষ হওয়া আট মাসে শিল্পোত্‍পাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র এক শতাংশ বেড়েছে৷ 

খনি শিল্পের উত্‍পাদন হার নভেম্বর মাসে সাড়ে পাঁচ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে৷ গত অর্থবর্ষের একই মাসে খনি শিল্পে উনভেম্বরে পড়ল শিল্পোত্‍পাদনের হার 



নয়াদিল্লি: ভোগ্যপণ্য, খনি এবং মূলধনী পণ্যের শিল্পে খারাপ ফল হওয়ায় ২০১২-র নভেম্বরে শিল্পোত্‍পাদন হার গত অর্থবর্ষের একই সময়ের তুলনায় ০.১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে৷ এর ফলে, আগামী ২৯ জানুয়ারি ঋণনীতি ঘোষনার সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে৷ টানা ১৬ মাস নিম্নমুখী থাকার পরে আশার আলো দেখিয়ে অক্টোবরে ঊর্ধ্বমুখী হয় ভারতের শিল্পোত্‍পাদন হার৷ অক্টোবর মাসের ঘোষিত শিল্পোত্‍পাদন সূচক সংশোধন করে ০.১ শতাংশ বাড়িয়ে ৮.৩ শতাংশ করা হয়েছে, যা ২০১১ সালের জুনের পরে সর্বাধিক৷ 

২০১১ সালের নভেম্বরে শিল্পোত্‍পাদন হার ছিল ৬ শতাংশ৷ ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের জুলাইয়ে এই হার ০.১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল৷ 

গত অর্থবর্ষের (২০১১-১২) প্রথম আট মাসে (এপ্রিল-নভেম্বর) ফ্যাক্টরি থেকে উত্পাদনের হার ছিল ৩.৮ শতাংশ৷ কিন্ত্ত, চলতি অর্থবর্ষের একই সময়ে এই হার কমে এক শতাংশ হয়েছে৷ 

শিল্পোত্‍পাদন সূচক নির্ণয়ের প্রধান ক্ষেত্র, খনন, ম্যানুফ্যাকচারিং, বিদ্যুত্‍ ও সাধারণ পণ্যের মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের বৃদ্ধি গত অর্থবর্ষের একই সময়ের তুলনায় মাত্র ০.৩ শতাংশ বেড়ে ৬.৯ শতাংশ হয়েছে৷ ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে এই হার ছিল ৬.৬ শতাংশ৷ তবে, নভেম্বরে শেষ হওয়া আট মাসে শিল্পোত্‍পাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মাত্র এক শতাংশ বেড়েছে৷ 

খনি শিল্পের উত্‍পাদন হার নভেম্বর মাসে সাড়ে পাঁচ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে৷ গত অর্থবর্ষের একই মাসে খনি শিল্পে উত্‍পাদন কমেছিল সাড়ে তিন শতাংশ৷ দুই অর্থবর্ষেরই প্রথম আট মাসে খনিজ পদার্থের উত্‍পাদন হার কমতে দেখা যায়৷ 

কাঁচামাল উত্‍পাদনও নভেম্বরে ৭.৭ শতাংশ কমেছে৷ ২০১১-র নভেম্বরে যা ৪.৭ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল৷ 

তবে, ম্যানুফ্যাকচারিং, খনিজ পদার্থ এবং কাঁচামালের উত্‍পাদন হার কমলেও নভেম্বরে বিদ্যুত্ উত্‍পাদন হার ২.৪ শতাংশ বেড়েছে৷ ২০১১ সালের নভেম্বরে এই হার ছিল ১৪.৬ শতাংশ৷ 

চলতি অর্থবর্ষের নভেম্বরে ভোগ্যপণ্য উত্‍পাদন গত নভেম্বরের তুলনায় এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ গত নভেম্বরে এই হার ছিল ১২.৮ শতাংশ৷ কনজিউমার ডিউর্যাবল ক্ষেত্রেও বৃদ্ধির হার হয়েছে ১২.৩ শতাংশ৷ সামগ্রিকভাবে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের ২২ টি গ্রুপের মধ্যে ১৩ টি গ্রুপের বৃদ্ধির হার কমেছে নভেম্বরে৷ 

এই ১৩ টি গ্রুপের মধ্যে সব থেকে বেশি সংকোচন (২২.১ শতাংশ) লক্ষ্য করা যায় প্রকাশনা, সিডি, ক্যাসেট প্রভৃতির উত্‍পাদনে৷ অন্যদিকে সব থেকে বেশি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায় বিদ্যুত্চালিত যন্ত্র ও বস্ত্ততে৷ এই ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ২৫.১ শতাংশ৷ 

নভেম্বরে ভারতের শিল্পোত্‍পাদন হারের সংকোচন পরিসংখ্যানগত কারণে হয়েছে বলে জানান যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিং আলুওয়ালিয়া৷ তিনি বলেন, 'শিল্প ক্ষেত্রে বৃদ্ধির যাত্রা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এবং সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার ফল আগামী মাসগুলিতে পাওয়া যাবে৷' তাঁর মতে, 'দেশের অর্থনীতি তলানিতে নেই৷ এর প্রয়োজন ঊর্ধ্বমুখী হওয়া৷ প্রকাশিত তথ্য কখনও এর পরস্পরবিরোধী নয়৷ ডিসেম্বরে কী হয় তা দেখতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে৷' আলুওয়ালিয়া আরও বলেন, 'শিল্পোত্‍পাদন কমে যাওয়ায় বিস্মিত হওয়ার কোনও কারণ নেই৷ এই বছরে নভেম্বর মাসে দীপাবলি ছিল, কাজেই আপনারা যা দেখছেন তা আসলে নভেম্বরের চিত্র৷ শিল্পোত্‍পাদন হার কতটা কমেছে তা গত বছরের বৃদ্ধির হারের সঙ্গে তুলনা করা উচিত৷' 

শিল্পোত্‍পাদন হার কমায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা সংসদের চেয়ারম্যান সি রঙ্গরাজন বলেন,'আশা করি এই মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের ঋণনীতি ঘোষণা করার সময় সুদের হার কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে শিল্পোত্‍পাদন সূচকের বিষয়টিও বিবেচনা করবে৷' 

তিনি আরও বলেন, 'চলতি অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিক অথবা, আগামী অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রে অবশ্যই বৃদ্ধি ঘটবে৷' 

অন্যদিকে, শিল্পোত্‍পাদন কমায় বিনিয়োগ এবং ক্রেতা চাহিদা বাড়ানোর লক্ষ্যে সুদের হার কমানোর জনা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে অনুরোধ করেছেন বণিকসভা ফিকি-র প্রেসিডেন্ট নয়না লাল কিদওয়াই৷ দন কমেছিল সাড়ে তিন শতাংশ৷ দুই অর্থবর্ষেরই প্রথম আট মাসে খনিজ পদার্থের উত্‍পাদন হার কমতে দেখা যায়৷ 

কাঁচামাল উত্‍পাদনও নভেম্বরে ৭.৭ শতাংশ কমেছে৷ ২০১১-র নভেম্বরে যা ৪.৭ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল৷ 

তবে, ম্যানুফ্যাকচারিং, খনিজ পদার্থ এবং কাঁচামালের উত্‍পাদন হার কমলেও নভেম্বরে বিদ্যুত্ উত্‍পাদন হার ২.৪ শতাংশ বেড়েছে৷ ২০১১ সালের নভেম্বরে এই হার ছিল ১৪.৬ শতাংশ৷ 

চলতি অর্থবর্ষের নভেম্বরে ভোগ্যপণ্য উত্‍পাদন গত নভেম্বরের তুলনায় এক শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে৷ গত নভেম্বরে এই হার ছিল ১২.৮ শতাংশ৷ কনজিউমার ডিউর্যাবল ক্ষেত্রেও বৃদ্ধির হার হয়েছে ১২.৩ শতাংশ৷ সামগ্রিকভাবে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের ২২ টি গ্রুপের মধ্যে ১৩ টি গ্রুপের বৃদ্ধির হার কমেছে নভেম্বরে৷ 

এই ১৩ টি গ্রুপের মধ্যে সব থেকে বেশি সংকোচন (২২.১ শতাংশ) লক্ষ্য করা যায় প্রকাশনা, সিডি, ক্যাসেট প্রভৃতির উত্‍পাদনে৷ অন্যদিকে সব থেকে বেশি বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায় বিদ্যুত্চালিত যন্ত্র ও বস্ত্ততে৷ এই ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ২৫.১ শতাংশ৷ 

নভেম্বরে ভারতের শিল্পোত্‍পাদন হারের সংকোচন পরিসংখ্যানগত কারণে হয়েছে বলে জানান যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিং আলুওয়ালিয়া৷ তিনি বলেন, 'শিল্প ক্ষেত্রে বৃদ্ধির যাত্রা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে এবং সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টার ফল আগামী মাসগুলিতে পাওয়া যাবে৷' তাঁর মতে, 'দেশের অর্থনীতি তলানিতে নেই৷ এর প্রয়োজন ঊর্ধ্বমুখী হওয়া৷ প্রকাশিত তথ্য কখনও এর পরস্পরবিরোধী নয়৷ ডিসেম্বরে কী হয় তা দেখতে আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে৷' আলুওয়ালিয়া আরও বলেন, 'শিল্পোত্‍পাদন কমে যাওয়ায় বিস্মিত হওয়ার কোনও কারণ নেই৷ এই বছরে নভেম্বর মাসে দীপাবলি ছিল, কাজেই আপনারা যা দেখছেন তা আসলে নভেম্বরের চিত্র৷ শিল্পোত্‍পাদন হার কতটা কমেছে তা গত বছরের বৃদ্ধির হারের সঙ্গে তুলনা করা উচিত৷' 

শিল্পোত্‍পাদন হার কমায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা সংসদের চেয়ারম্যান সি রঙ্গরাজন বলেন,'আশা করি এই মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তাদের ঋণনীতি ঘোষণা করার সময় সুদের হার কমানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে শিল্পোত্‍পাদন সূচকের বিষয়টিও বিবেচনা করবে৷' 

তিনি আরও বলেন, 'চলতি অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিক অথবা, আগামী অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রে অবশ্যই বৃদ্ধি ঘটবে৷' 

অন্যদিকে, শিল্পোত্‍পাদন কমায় বিনিয়োগ এবং ক্রেতা চাহিদা বাড়ানোর লক্ষ্যে সুদের হার কমানোর জনা রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে অনুরোধ করেছেন বণিকসভা ফিকি-র প্রেসিডেন্ট নয়না লাল কিদওয়াই৷ 

২০১৬-র আগে নয় জিএএআর, জানালেন অর্থমন্ত্রী
নয়াদিল্লি: আপাতত স্বস্তি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের৷ কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিল যে, ২০১৬ সালের এপ্রিলের আগে জেনারেল অ্যান্টি অ্যাভয়ড্যান্স রুল (জিএএআর) চালু হচ্ছে না৷ নয়াদিল্লিতে অর্থমন্ত্রী পালানিয়াপ্পান চিদম্বরম বলেন, 'আমরা পরিস্থিতি বিচার করেছি, সব দিক খতিয়ে দেখে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আয়কর আইনের ১০এ অধ্যায় (গিএএআর সংক্রান্ত) কার্যকর হবে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল৷' 

২০১২-১৩ অর্থবর্ষের বাজেটে জিএএআর-এর প্রস্তাব করেন তত্কালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ এই নিয়ম চালু হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ দেশে কর দেওয়া এড়াতে পারবেন না৷ এই প্রস্তাব পেশের পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল৷ বিদেশি বিনিযোগকারীদের আশঙ্কা ছিল এই নিয়ম চালু হওয়ার ফলে কর বিভাগ অকারণ তাঁদের সমস্যা তৈরি করবে৷ 

চিদম্বরম বলেন, সোম কমিটির সুপারিশ মেনেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত৷ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ খতিয়ে দেখতে গতবছর জুলাই মাসে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর রিসার্চ অন ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক রিলেশনসের ডিরেক্টর ও সিইও পার্থসারথি সোমের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷ কমিটির সুপারিশ ছিল, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষের আগে জিএএআর লাগু না করা৷ তাই আগামী অর্থবর্ষের গোড়ায় জিএএআর চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ 

সোম কমিটির বেশ কয়েকটি সুপারিশ মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, 'করগ্রহীতা ও বিনিয়োগকারী উভয়ের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে যে সব রদবদল করা হয়েছে সেগুলি উপযুক্ত, যথাযথ ও ঠিক৷ সুতরাং সব উত্কণ্ঠারই অবসান হল৷' একই সঙ্গে তিনি বলেন, এই নিয়ম শুধু কর এড়ানো বন্ধ করার জন্য, তাই এই নিয়ম চালু হলে ডাবল ট্যাক্সেশন অ্যাভয়ড্যান্স এগ্রিমেন্ট (ডিটিটিএ) কার্যকর থাকবে না৷ 

ফের হাড় কাঁপানো শীতে ছন্দপতন। এই মুহুর্তে উত্তুরে হাওয়ার গতিপথে কোন বাধা না থাকলেও আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের কাছাকাছি আসতে চলেছে একটি পশ্চিমীঝঞ্ঝা। এর ফলে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের কাছে চলে আসছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। 

সেই কারণেই শীতের স্বাভাবিক গতিতে ছেদ পড়েছে  বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আজ কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল বারো ডিগ্রি সেলসিয়াস। হাল্কা কুয়াশাও রয়েছে।


পৌষ সংক্রান্তির উত্সবে রকমারি পিঠে-পুলির সম্ভার সাজিয়ে হাজির শহরের মিষ্টি ব্যবসায়ীরা৷ ক্ষীর পাটিসাপ্টা, নারকেল পাটিসাপ্টা, দুধ পুলি, ক্ষীর পুলি, রসবড়ার পাশাপাশি রয়েছে নোনতা, ঝাল পিঠেও৷ সকাল থেকেই মিষ্টির দোকানে ভিড় জমছে ক্রেতাদের৷
পৌষ সংক্রান্তি মানেই তো শীতের সকালে মা-ঠাকুমার হাতে বানানো পিঠে-পুলির গন্ধে বাড়ি ম-ম করা৷ 
ডায়েটিং ভুলে এই দিনটা তাই শুধুই পেট পুরে পিঠে খাওয়া৷ 
কিন্তু, চূড়ান্ত ব্যস্ত দিনলিপিতে ইচ্ছে থাকলেও বানানোর সময় কোথায়? তবে তাতে সাধ পূরণে বাধা নেই৷ রকমারি পিঠের সম্ভার নিয়ে হাজির শহরের মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা৷ হাজারো কাজের ফাঁকেও সাধ পূরণে সকাল থেকেই মিষ্টির দোকানে ভিড় ক্রেতাদের৷
এই দিনটার জন্য অবশ্য পিঠে-পুলি নিয়ে রীতিমতো গবেষণাও চালিয়েছেন ব্যবসায়ীরা৷ আর তার সঙ্গে চির পরিচিত ক্ষীর পাটিসাপ্টা, নারকেল পাটিসাপ্টা,দুধ পুলি, ক্ষীর পুলি, রসবড়া তো রয়েইছে৷ আর যাঁদের রক্তে শর্করা ইতিমধ্যেই বাড়িয়েছে, মিষ্টি থেকে বঞ্চিত থাকলেও তাঁদের জন্য রয়েছে নোনতা, ঝাল পিঠে৷ 
পিঠে-পুলি-পায়েসের পৌষ পার্বণে অন্তত চির পরিচিত প্রবাদ বাক্য বদলে দিতে বাঙালি প্রস্তুত৷ 

গঙ্গা সাগরে আজ মকরস্নান। মানুষের ঢল নেমেছে গঙ্গাসাগরে। পঞ্জিকা মতে আজ দুপুর একটা তেরো মিনিট থেকে মঙ্গলবার দুপুর একটা তেরো মিনিট পর্যন্ত পুণ্যস্নানের যোগ রয়েছে। মাহেন্দ্রযোগে ডুব দেওয়ার অপেক্ষা না করে  পুণ্যস্নান সেরে ফিরে গেছেন অনেকেই।  কুম্ভমেলা এবার থাবা বসাচ্ছে গঙ্গাসাগরের ভিড়ে। অন্যবারের তুলনায় ভিড় খানিকটা পাতলা। কিন্তু তাতেও হারিয়ে যায়নি সাগরমেলার ফি বছরের চিত্র। এবারেও লাখো মানুষের ভিড়ে সাগরে হাজির একটুকরো ভারত। 

এরইমধ্যে রবিবার রাতের দিকে আট নম্বর লটের চার নং জেটিতে ট্রলারের ধাক্কা লেগে বিপত্তি বাধে। ক্ষতিগ্রস্থ হয় জেটির একাংশ। আটকে পড়েন কয়েক হাজার পূণ্যার্থি। 

সব তীর্থ বারবার। গঙ্গাসাগর একবার। এ প্রবাদের দিন আজ অতীত। আগে গঙ্গাসাগর পৌঁছতে পুণ্যার্থীদের অনেক কাঠখড় পোড়াতে হত। কিন্তু আজ আর সেদিন নেই। ট্রেন, বাস , জলপথে অনায়াসেই পৌঁছনো যায় গঙ্গাসাগরে।  মকর সংক্রান্তির ভিড় এড়াতে আগেভাগেই গঙ্গাসাগরে স্নান সেরে গেছেন প্রায় চারলক্ষ পুণ্যার্থী। 

পুণ্যস্নান সোমবার। সেই পুণ্যস্নানের টানে রবিবার দিনভর অনেকেই এসেছেন মেলা প্রাঙ্গনে। আট নম্বর লট থেকে তিনটি ভেসেল  সাগর প্রাঙ্গনে পুণ্যার্থীদের নিয়ে যাওয়া হয়। 

প্রশাসনের নির্দেশে বিকেল পাঁচটার পর নামখানা থেকে চেনাগুড়ি হয়ে সাগরদ্বীপে ভেসেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চলছে কড়া নজরদারি। সিসিটিভি-র ফুটেজ সাগরদ্বীপের কন্ট্রোল রুম থেকে সরাসরি চলে যাচ্ছে মহাকরণে এডিজি আইনশৃঙ্খলার ঘরে। 

সাগরদ্বীপের আট নম্বর লট, কচুবেড়িয়া, সাগর মোহনায় নজরদারি চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দশটি স্পিড বোট। রাজ্য পুলিসের ১২টি লঞ্চ নজরদারি করছে। ডুবুরিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আকাশপথেও নজরদারি করছে উপকূলরক্ষী বাহিনীর হেলিকপ্টার।

রবিবার মেলার প্রস্ততি ঘুরে দেখেন জনস্বাস্থ্য কারিগরী মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে দেড় হাজার পুলিসকর্মী। ইতিমধ্যেই ছিনতাইতের চেষ্টার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 


আজ থেকে শুরু হচ্ছে মহাকুম্ভ। অসংখ্য মানুষের ঢল নেমেছে কুম্ভমেলায়। প্রতি ১৪৪ বছরে একবার হয় মহাকুম্ভ। এবছর প্রায় দশ কোটি পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। শেষবার কুম্ভমেলা হয়েছিল ২০০১-এ। সেই বছর প্রয়াগে চার কোটি পূণ্যার্থীর সমাগম ঘটেছিল। এবছর সেই রেকর্ড ভাঙার লক্ষ্যে তৈরি এলাহাবাদ। 

তাপমাত্রা মাইনাসের ঘরে। চলছে শৈত্যপ্রবাহ। কিন্তু তাতে কী? সব উপেক্ষা করেই সোমবার গঙ্গা-যমুনা সঙ্গমস্থলে ডুব দেবেন কয়েক লক্ষ পূণ্যার্থী। 

একমাস আগে থেকেই শুরু হয়েছে আয়োজন। পঞ্চান্ন দিন ধরে চলবে মেলা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ১৪টি হাসপাতাল সাময়িক ভাবে তৈরি করা হয়েছে। দুশো তেতাল্লিশ জন চিকিত্‍সককে ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পূণ্যার্থীদের জন্য তৈরি হয়েছে ৪০ হাজার শৌচালয়। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শহরের বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন রয়েছেন তিরিশ হাজার পুলিস কর্মী। পূণ্যস্নানে এতটুকুও দেরি করতে রাজী নন অনেক পূণ্যার্থী। তাই নদী তটেই ছোট ছোট তাঁবুতে রাত কাটাচ্ছেন তাঁরা। গোটা এলাকায় প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও দূষণ কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। গঙ্গা, যমুনা দুই নদীতেই দূষণের মাত্রা বেড়েছে। কিন্তু সেই সবের তোয়াক্কা না করেই সোমবার মহাকুম্ভে গঙ্গা-যমুনার সঙ্গম স্থলে ডুব দেবেন লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থী। 


ইলাহাবাদ: পূর্ণকুম্ভে পুণ্যলাভের লক্ষ্যে প্রয়াগে কুম্ভমেলায় জনজোয়ার৷ গঙ্গা, যমুনা ও পৌরাণিক সরস্বতী নদীর সঙ্গমস্থলে আজা পূণ্যস্নানে সামিল অসংখ্য পুণ্যার্থী৷


হিন্দুমতে, এই পুণ্যলগ্নে গঙ্গায় পুণ্যস্নান করলে পাপ মোচন হয়৷ সেই লক্ষ্যেই প্রয়াগে পুণ্য-সমাগম৷ এদিন, ভোর হতে না হতেই গঙ্গাস্নান শুরু করে দেন পুণ্যার্থীরা৷ সারাদেশ এমনকী বিশ্বের নানা প্রাপ্ত থেকে বহু মানুষ যোগ দেন কুম্ভমেলায়৷ সকাল ১০টাতেই ভিড় ছাড়ায় ৭ লক্ষ৷ 
সকাল ৬ টায় শাহী স্নান দিয়ে শুরু হল এবারের কুম্ভ মেলা।  ১৩ টি সাধুগ্রামের (আখড়া) শোভাযাত্রা সহকারে ত্রিবেণী তীর্থে পূণ্যস্নান দিয়েই সূচনা এই মহাপ্রাণের মেলার। রৌপ্যখচিত রথে, হাতির পিঠের উচ্চাসনে বসে রয়েছেন বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা প্রধান সন্ন্যাসী (মহামণ্ডলেশ্বর), ডান হাতে বরাভয় মুদ্রা। ধুন্ধুমার ব্যান্ডে জমজমাট শোভাযাত্রা। মোট আখড়া ১৩টি (দিগম্বর, নির্মোহী, নিরঞ্জনী ইত্যাদি), এখানে সেগুলির শাখা-আখড়াও রয়েছে বহু।এদিন প্রথম শোভাযাত্রাটি ছিল মহানির্বানী ও অটল আখড়ার। এরপরই, নিরঞ্জনী, আনন্দ,জুনা,আহ্বান এবং অগ্নির শোভাযাত্রা। এরপরই আসে নির্বানি অনি,নির্মোহী,ন্যায় উদাসীন ও বরা উদাসীন এবং নির্মল আখড়ার শোভাযাত্রা। কুম্ভ মেলার ইতিহাসে প্রথম স্নানের অধিকার নিয়ে আখড়াগুলির মধ্য সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এজন্য, ব্রিটিশ আমলে নির্ধারিত ক্রম অনুযায়ী বিভিন্ন আখড়ার শোভাযাত্রার সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। দুটি আখড়ার শোভাযাত্রা যাতে মুখোমুখি না হতে পারে সেজন্য স্নানে আসার পথ এবং স্নান সেরে ফিরে আসার পখ আলাদা করা হয়েছিল। পথের ধারে ব্যারিকেডের বাইরে দাঁড়িয়ে আড়ম্বরপূর্ণ এই শোভাযাত্রা প্রত্যক্ষ করেছেন অসংখ্য মানুষ।
৫৪ দিন ধরে চলবে এই কুম্ভ মেলা৷আগামী ১০ মার্চ মহা শিবরাত্রিতে মেলা শেষ হবে । পুণ্যার্থীর সংখ্যা কোটি ছাড়াবে অনুমান করা হচ্ছে৷ কড়া নিরাপত্তাবলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে মেলা চত্ত্বর৷ মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী৷ টহলদারির পাশাপাশি সিসিটিভি-তে চলছে নজরদারি৷ প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০০ শয্যার হাসপাতাল ও ৪ টি অ্যাম্বুল্যান্স৷
সাধারণ কুম্ভমেলা প্রতি চার বছর অন্তর আয়োজিত হয়৷। প্রতি ছয় বছর অন্তর হরিদ্বার ও প্রয়াগে অর্ধকুম্ভ আয়োজিত হয়৷। প্রতি বারো বছর অন্তর প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জ্বয়িনী ও নাসিকে আয়োজিত হয় পূর্ণকুম্ভ৷ আর বারোটি পূর্ণকুম্ভ অর্থাৎ প্রতি ১৪৪ বছর অন্তর প্রয়াগে আয়োজিত হয় মহাকুম্ভ৷ সেই মহাকুম্ভ উপলক্ষেই।এই পুণ্য-সমাগম৷

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32464-2013-01-14-09-06-59


সাগর: মকর সংক্রান্তির পূণ্যলগ্নে সাগরতীরে মানুষের ঢল৷ পঞ্জিকামতে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত পূণ্যস্নানের সময়৷ সেই উপলক্ষেই সাগরে আজ প্রায় ৭ লক্ষ মানুষের সমাগম৷ কড়া নিরাপত্তাবলয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে মেলাপ্রাঙ্গণ৷


 নানা বয়সের মুখ, অভিব্যক্তি৷ সেই ভিড়ের নানান রঙ৷ পূণ্যলাভের আশায় হাজার হাজার মাইল ছুটে আসা ভক্তকূল, ধ্যানমগ্ন সন্ন্যাসী, দেশি-বিদেশি অতিথি, এদিন সব এসে মিশেছে নীলে৷ মকর সংক্রান্তির পূণ্যলগ্ন৷ সেই উপলক্ষে সোমবার ভোর থেকেই গঙ্গাসাগরে পূণ্যস্নান অগণিত ভক্তের৷ সাগরমেলায় এদিন প্রায় ৭ লক্ষ মানুষের ভিড়৷ 
কপিল মুনির আশ্রমের সামনেও লম্বা লাইন৷ তবে, কোনওরকম দুর্ঘটনা এড়াতে আশ্রমের সামনে দেওয়া হয় ব্যারিকেড৷ পাশাপাশি, মেলাপ্রাঙ্গণও জমজমাট৷ তবে, সাগরমেলাকে কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে ঘিরে ফেলা হয়েছে৷ স্পিড বোটে সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের টহল৷ মোতায়েন প্রচুর পুলিশ৷ পাশাপাশি, সিসিটিভি নজরদারিও৷  
এরই মধ্যে রবিবার কাকদ্বীপের ৮ নম্বর লটের চার নম্বর জেটিটি বিকল হয়ে যায়৷ ফলে, চূড়ান্ত নাজেহাল হন যাত্রীরা৷ সমস্যায় পড়েন সাগর-গামী অসংখ্য ভক্ত৷ তবে, সোমবার সকালে জেটিটি মেরামতির কাজ শেষ হয়েছে বলে পুলিশসূত্রে খবর৷ 
কেউ এসেছেন পূণ্যলাভের আশায়৷ সাগরমেলার মাহাত্ম্য দর্শনের আশায় এসেছেন কেউ কেউ৷ আশা, আকাঙ্খা, আবেগ, ভাষার নানা ছবি এদিন সাগরতীরে, সংস্কৃতির মহামিলনক্ষেত্রে৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32460-2013-01-14-06-55-18


সাগরদ্বীপ। বঙ্গোপসাগরের উপকূলে সুন্দরবনাঞ্চলের এই দ্বীপটিরই পৌরাণিক নাম শ্বেতদ্বীপ। এরই দক্ষিণাংশে গঙ্গা যেখানে সাগরের সঙ্গে মিলেছে, সেই স্থানটি গঙ্গাসাগর নামে খ্যাত। সামনে আদিগন্ত সমুদ্র, পেছনে শ্যামল বনানী আর বালুকাময় বেলাভূমির মাঝখানে মহর্ষি কপিলের মন্দির। হিন্দু-মানসে গঙ্গাসাগর একটি মহাতীর্থ হিসেবে গণ্য। সাগরতীরের সার কথা মকর-সংক্রান্তিতে সাগর সঙ্গমে পুণ্যস্নান। তাই যুগ যুগ ধরে সাধুসন্ত ও মোক্ষকামী মানুষের এত ভিড়। 
এককালে সাগরদ্বীপ ছিল ১৭০ বর্গ মাইলের এক সমৃদ্ধ জনপদ। ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দে সামুদ্রিক ঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে সাগরদ্বীপের প্রায় দু'লক্ষ মানুষ সমুদ্রের টানে ভেসে যায়। সেই থেকে দ্বীপটি বহুকাল জনহীন এবং শ্রীহীন হয়ে পড়েছিল। সপ্তদশ শতাব্দে বিদেশি বণিক এবং ইংরেজরা সাগরদ্বীপকে পরিত্যক্ত অবস্থায় আবিষ্কার করেন। হবসন জবসন অভিধানে এই দ্বীপের উল্লেখ আছে। জেমস প্রাইস নামে এক ইংরেজের লেখায় দেখা যায়, সাগরদ্বীপের নাম গঙ্গাসাগর। ১৬৮৩ খ্রিস্টাব্দে হেজেস এখানে একটি হিন্দুমন্দির দেখতে পান। এখানকার রাজা নাকি বছরে দু'লাখ টাকা তীর্থকর আদায় করতেন। পরে লুইল্লিয়ার নামে আর এক সাহেব সাগরদ্বীপে দুই সাধুকে দেখেছিলেন। ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে আলেকজেণ্ডার হ্যামিলটনের বিবরণ থেকে জানা যায়, সাগরদ্বীপ হিন্দুদের কাছে খুবই পবিত্র তীর্থস্থান। প্রতি বছর শীতে বহু সাধু ও তীর্থযাত্রী এখানে স্নান করতেন এবং পুজো দিতেন। 
পলাশির যুদ্ধের পর ইংরেজ বণিকরা বাণিজ্যের উন্নয়নের জন্য বেছে নিয়েছিলেন সুন্দরবনের খাড়ি আর সাগরসঙ্গমের দ্বীপগুলি। বলতে গেলে ইংরেজরাই সাগরের পুনরুজ্জীবন ঘটান। তাঁরাই যে জঙ্গালাকীর্ণ সাগরদ্বীপে ফের বসতি গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তার সমর্থন পাওয়া যায় ১৮১১ খ্রিস্টাব্দের (৩০ কার্তিক, ১২২৫) 'সমাচার দর্পন'-এ। ওই বছর ১৪ নভেম্বর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ''যাহারা গঙ্গাসাগর উপদ্বীপে বসতি করাইবার উদ্যোগ করিতেছে, তাহারা কলিকাতার এক্সচেঞ্জে অর্থাৎ ক্রয়বিক্রয়ের ঘরে গত বুধবার একত্র হইল এবং দশ জন সাহেব ও দুই এতদ্দেশীয় লোককে সেই কর্ম সম্পন্ন করিবার নিমিত্ত নিযুক্ত করিল...।'' ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে মাত্র চার আনা খাজনায় সাগরদ্বীপের ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু সাগরমেলার বর্তমান বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে ইংরেজদের অবদান থাকলেও সাগর উন্নয়নে সেই সময় তাঁদের প্রচেষ্টা খুব যে ফলপ্রসূ হতে পারেনি তার অন্যতম কারণ উপর্যুপরি সামুদ্রিক ঝড়ঝঞ্ঝা ও জলপ্লাবন। ১৮৩৩ ও ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের সাইক্লোন সাগরদ্বীপকে তচতচ করে দেয়। শুধুমাত্র ১৮৬৪-র ঝড়ে পাঁচ হাজার জনের মৃত্যু। এর ফলে দ্বীপের লোকসংখ্যা অনেক কমে যায়। তা হলেও দ্বীপোন্নয়নের কাজ থেমে থাকেনি। বনাঞ্চল মুক্ত করে সেখানে চাষবাদ, হাটবাজার এবং মহাজনের গোলাস্থাপনের ব্যবস্থা হয়েছে। সেই সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থাও। 
ইতিহাসের পাতাতেই নয়, মৎস্য, বায়ু এবং পদ্মপুরাণ শাস্ত্রেরও সাগরতীর্থ সম্পর্কে নানা কথা আছে। কালিদাসের 'রঘুবংশ' এবং মধ্যযুগের কয়েকটি মঙ্গলকাব্যেও ছড়িয়ে আছে গঙ্গাসাগর প্রসঙ্গ। 'মহাভারতে'-এর বনপর্বে দেখা যায়, স্বয়ং যুধিষ্ঠির সাগরসঙ্গমে এসেছিলেন মেগাস্থিনিস, হিউয়েন সাঙের বিবরণেও গঙ্গাসাগর স্থান পেয়েছে। 
মুক্তিতীর্থ গঙ্গাসাগর নিয়ে প্রচলিত আছে এক পুরা কাহিনি। অযোধ্যার সূর্যবংশের পরাক্রান্ত রাজা সগর নিরানব্বুই অশ্বমেধ যজ্ঞ সমাপনান্তে ব্যস্ত হয়ে উঠলেন শততম যজ্ঞে। এই যজ্ঞ সম্পূর্ণ করতে পারলে তিনি স্বর্গরাজ ইন্দ্রের সমপর্যায়ে উন্নিত হবেন। ইন্দ্র সগররাজের শততম যজ্ঞ পণ্ড করতে যজ্ঞের ঘোড়াটি অপহারণ করে লুকিয়ে রাখলেন। সগরের ষাট হাজার পুত্র বহু অন্বেষণের পর যজ্ঞাশ্বের সন্ধান পেলেন মহর্ষি কপিলের নির্জন সাধনক্ষেত্রে, যেখানে মহামুনি গভীর ধ্যানে মগ্ন। এই চৌর্যকর্মটি কপিলদেবের মনে করে রাজপুত্ররা তাঁর দেহে আঘাত করে বসলেন। ঘটনার এই আকস্মিকতায় মহর্ষির কোপানলে পড়ে মুহূর্তেই তাঁরা ভস্মীভুত হলেন। তারপর সগররাজের পৌত্র ভগীরথ কঠোর তপস্যায় গঙ্গাকে মর্তে নিয়ে এলেন। তাঁর পুণ্য সলিলের স্পর্শে পাপমুক্ত হলেন সগরনন্দনরা। সাগরের সঙ্গমস্থল পরিণত হল তীর্থক্ষেত্র গঙ্গাসাগরে। সেখানে একদিন প্রতিষ্ঠিত হল কপিলমুনির আশ্রম। খ্রিস্টিয় ৪৩৭ অব্দে ওখানে একটি প্রচীন মন্দিরের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। কিন্তু নদীর পথ পরিবর্তনের ফলে সে মন্দির সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর পরেও দু'বার মন্দির নির্মিত হয়েছে। কিন্তু সমুদ্রগ্রাসে কোনওটাই স্থায়ী হয়নি। বর্তমান মন্দিরটি আদি মন্দির স্থল থেকে প্রায় দুই কিমি দূরে অবস্থিত। ১৩৮০-৮১ (ইং ১৯৭৩-৭৪) বঙ্গাব্দে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে এটি তৈরি করেন অযোধ্যার হনুমানগড়ি মঠের মোহন্ত রামদাসজি মহারাজ। ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে উইলসন সাহেবের বর্ণনানুযায়ী মন্দির চত্বরে ছিল প্রকাণ্ড এক বটবৃক্ষ, যার পাদদেশেই ছিল শ্রীরাম ও হনুমানের মূর্তি। মন্দিরাভ্যন্তরে আজও বিরাজমান লালসিঁদুরে পরিলিপ্ত শিলাময় কতিপয় বিগ্রহ। প্রথমেই চোখে পড়ে পদ্মাসনে যোগারুঢ়, জটাশ্মশ্রুমণ্ডিত মহাযোগী কপিল, যাঁর বামহস্তে কমণ্ডুল, ঊর্ধে উত্থোলিত দক্ষিণ-করে জপমালা। শিরোদেশে পঞ্চনাগ-ছত্র। ডানপাশে চতুর্ভুজা মকর বাহিনী গঙ্গাদেবী, যাঁর অঙ্কে মহাতাপস ভগীরথ। স্বল্পদূরে গদা ও গন্ধমাদন পর্বত হস্তে মহাবীর হনুমান। কপিল বিগ্রহের বাঁয়ে ষাট সহস্র সন্তান বিয়োগ বেদনায় মুহ্যমান নগররাজ, যিনি মহর্ষি কপিলের করুণায় বীতশোক। রাজমূর্তির বাঁয়ে অষ্টভুজ সিংহবাহিনী বিশালাক্ষীদেবী। সর্ব বাঁয়ে অশ্বের বল্গাহস্তে ইন্দ্রদেব। মন্দিরের আশেপাশে রয়েছে কিছু দেবস্থান ও আশ্রম। যথা—স্বামী কপিলানন্দ মহারাজের আশ্রম, চিন্তাহরণেশ্বরের মন্দির, সীতারাম ওঙ্কারনাথের যোগেন্দ্রমঠ, মহানির্বাণ আশ্রম, ভারতসেবাশ্রম সঙ্ঘের ধর্মশালা, সেচবিভাগের ডাকবাংলো এবং বেগুয়াখালির হাওয়া অফিস। কপিলমুনি আশ্রমের পরম্পরাগত পুরোহিত অযোধ্যার যাজনিক ব্রাহ্মণেরা প্রত্যহ মন্দিরে পাঁচবার পূজারতি করেন—রাত দ্বিপ্রহরে ভোগারতি, সায়াহ্নে সন্ধ্যারতি এবং রাত ন'ঘটিকায় শয়নারতি। 
গঙ্গাসাগরকে নিয়ে প্রচলিত আছে এক বিখ্যাত প্রবচন: ''সব তীর্থ বার বার, গঙ্গাসাগর একবার।'' কথাটার যথার্থ ব্যাখ্যা মেলে 'খনার বচনে'। খনা বলেছেন, ''সারা বছর যাঁরা শয়ন একাদশী, ভৈমী একাদশী, উত্থান একাদশী, পার্শ্ব একাদশী, জন্মাষ্টমী, রামনবমী, শিব চতুর্দশী বা দুর্গার মহাষ্টমীর মতো শাস্ত্রীয় আচারের একটিও পালন করতে পারবেন না, তাঁরা যদি পৌষ সংক্রান্তির দিন শুধু একবার সাগরসঙ্গমে স্নান করেন, তা হলে সর্বতীর্থের পুণ্য অর্জন করবেন।'' তারই অমোঘ আকর্ষণে প্রতি বছর দেশের নানা প্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী এবং সাধুসন্ত তীর্থ ও মুক্তির আশঙ্কায় এখানে ছুটে আসেন, এমনকী বিদেশ থেকেও। সাগরদ্বীপ পরিণত হয় মানুষের মিলনমেলায়। সেই সঙ্গে বিস্তীর্ণ বেলাভূমি জুড়ে বসে নানা পণ্য পসারের এক বিশালমেলা। শস্ত্রীয় স্নানপর্ব একদিনের হলেও গঙ্গাসাগর মেলা চলে পক্ষকাল। শীতের হিমেল হাওয়ায় বালিয়াড়ির উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সঙ্গমে সূর্যোদয় অথবা সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে পুণ্যার্থীরা আদিগন্ত জলসীমায় পৌঁছে যান। সাধারণ তীর্থযাত্রীদের কাছে সাগরমেলার প্রধান আকর্ষণ নাগাসন্নাসী আর হিমালয়ের সাধুসন্ত। কিন্তু ইদানীং বড়মাপের যোগী মহাত্মাদের বড় একটা দেখা যায় না। তবু কিছু ভবঘুরে হটযোগী মাধুকরী বৃত্তিধারী সাধু এবং গৈরিকবসনধারী পরিব্রাজক সাগরমেলা জমিয়ে তোলেন। বিচিত্র কামনাবাসনা নিয়েও একদল মানুষ আসেন, যাঁরা স্নানান্তে প্রার্থনা জানিয়ে সন্তানের স্বাস্থ্য ও অর্থের জন্য মানত করেন। একদা গঙ্গাসাগরে সন্তান বিসর্জন প্রথা ছিল। সন্তানহীনরা এই মর্মে মানত করতেন যে, তাঁদের সন্তান হলে প্রথমটিকে সাগরে অর্ঘ দেবেন। ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলি এসে দেখলেন, ওই বছরেই তেইশটি শিশু সন্তান বিসর্জনের ঘটনা ঘটেছে। পরে আইন করে এই নির্মম প্রথা তিনি নিষিদ্ধ করে দেন। কিন্তু পরনো প্রথা স্মরণে আজও কখনও চোখে পড়ে প্রথম সন্তানকে সাগরজলে বিসর্জন দিয়েই তুলে নিচ্ছেন কোনও মা। রবীন্দ্রনাথের 'দেবতার গ্রাস' কবিতায় সাগরসঙ্গমে সন্তান বিসর্জনের করুণ কাহিনী তো সকলেরই জানা। 
গঙ্গাসাগরের যাত্রাপথটি বিংশ শতাব্দের গোড়ার দিকেও ছিল দুর্গম এবং শ্বাপদসঙ্কুল। তীর্থ করতে যাঁরা আসতেন, তাঁদের অনেতেই বাঘ, বন্যশুয়োর, বিষধর সাপ আর নোনাজলের কুমির হাঙরের আক্রমণে প্রাণ হারাতেন। তা ছাড়া কলেরা বসন্ত এবং নানা সংক্রমক ব্যাধিতেও মানুষ মারা যেতেন। চোর-ডাকাতের দৌরাত্ম্য তো ছিলই। তবু সাগরমেলার তীর্থযাত্রীর অভাব হয়নি কোনও দিন। স্বগৃহে আর ফেরা হবে না, এই মন নিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছেদ বিদায় নিয়ে তীর্থযাত্রীরা গৃহত্যাগ করতেন। নৌকা বজরা ছাড়া তখন যন্ত্রচালিত যানবাহন ছিল না বলে যাত্রীদের অধিকাংশ পথ পদব্রজে অতিক্রম করতে হত। পরিষেবা বলতে তখন কিছুই ছিল না। সাগরযাত্রীদের সাহায্যে এবং সেবাশুশ্রূষার কাজে প্রথম এগিয়ে এসেছিলেন খাঁদুরাম নামে মেদিনীপুরের এক ধার্মিক রাজা। তিনি দরিয়াপুর থেকে নৌকাযোগে সাধু সন্নাসী এবং সাধারণ তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করে দিতেন। তা ছাড়া পানীয়জল এবং ওষুধপত্র দিয়েও সাহায্য করতেন। পথে চোরডাকাতের উপদ্রব রুখতে সঙ্গে দিতেন সৈন্য-সামন্ত 

বর্তামানে সাগরযাত্রা অনেক সহজগম্য হয়েছে। জঙ্গিহানার আশঙ্কায় এ বছর সাগরে পুণ্যস্নানের নিরাপত্তায় কোস্টগার্ডের হোভাব-ক্রাফট, বি এস এফ-এর লঞ্চ ছাড়াও ভারতীয় নৌবাহিনী সাগরদ্বীপ সংলগ্ন জলসীমায় প্রহরায় থাকছে। ১৪ জানুয়ারি মকর সংক্রান্তির ব্রহ্মমুহূর্ত থেকে এবার প্রায় ছয় লক্ষ পুণ্যার্থী পুণ্যস্থান করবেন। 

প্রাচীনত্ব ও বৈশিষ্ঠের দিক থেকে সাগরমেলা ভারতের এক শীর্ষস্থানীয় তীর্থ হওয়া সত্ত্বেও মেলা, যাত্রীপরিষেবা এবং সাগর উন্নয়ন খাতে এক কানাকড়িও সাহায্য করে না কেন্দ্রীয় সরকার এবং অযোধ্যা ট্রাস্ট। বরং প্রণামীবাবদ গৃহীত লক্ষ লক্ষ টাকা, সোনাচাঁদি এবং অন্যান্য অর্ঘ বস্তাবন্দি হয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খরচে চলে যায় অযোধ্যার হনুমানগড়ি মঠে। এই আয়ে কোনও অধিকার নেই রাজ্য সরকারের। আছে শুধু মেলা উপলক্ষে এক বিরাট ব্যয়ভার আর মাথাব্যথা। ফলে তীর্থযাত্রীদের জন্য এখানে আজও গড়ে ওঠেনি কোনও যাত্রীনিবাস ও শৌচাগার, ব্যবস্থা হয়নি স্থায়ী বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের। এ সব নিয়ে স্থানীয় মানুষদের ক্ষোভ বহুদিনের। অযোধ্যা ট্রাস্টের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা করেও কোনও ফল হয়নি। কেননা, কপিল মন্দিরের মালিকানা হনুমানগড়ি মঠের রামানন্দ পন্থীদের। কয়েক শতাব্দ আগে মন্দিরটি তাঁরাই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরন্তু রামায়ণের যুগে বঙ্গদেশ নাকি, অযোধ্যা রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। সুতরাং রাজ্যের চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখে দাঁড়িয়ে মেলা কমিটি এ বছর সাগরে পুণ্যস্নানের আয়োজনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বেসরকারি পর্যটন এবং বিজ্ঞাপন এজেন্সিকে। তাদের কাছ থেকে রাজ্য সরকার রাজস্ব আদায় করবে। চারটি পর্যটন সংস্থার উদ্যোগে ভি আই পি ভিলেজ হচ্ছে, যেখানে আধুনিক নগর জীবনের সমস্ত পরিষেবা পাওয়া যাবে। সর্বোপরি মেলায় অসুস্থ তীর্থযাত্রীদের চিকিৎসার জন্য চালু হচ্ছে টেলি-ইনফোটিক সার্ভিস। 

নির্মল কর 
সৌজন্যঃ আনন্দবাজার পত্রিকা ৫ মাঘ ১৪০৯ রবিবার ১৯ জানুয়ারি ২০০৩

গঙ্গাসাগর



ভূমিভাগের বিবর্তনে সাগরদ্বীপের উদ্ভব এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বাস্তবিক ক্ষেত্রে সাগরসঙ্গম এক বৈচিত্র্যপূর্ণ ভূমিগত প্রকৃতিকে নির্দেশ করে নদীপথে আগত জলস্রোতের নিম্নভিমুখী সমুদ্রস্রোতে গঠিত এই দ্বীপটির ভূ-বৈচিত্র্য সাধিত হয়েছে গঙ্গানদী বাহিত পলিরাশি ও সমুদ্র তরঙ্গ বাহিত বালুকারাশির দ্বারা বেঙ্গল ফ্যানের ওপর ভূমির পর্যালোচনা নির্দেশ করছে পূর্বে এই সাগরসঙ্গম অবস্থান করত রাজমহল পাহাড়ের পূর্বপ্রান্তে গঙ্গার এই সঙ্গমে দ্রুতগতিতে অধিক পললায়ন-এর প্রভাবে এই নদী বারংবার শাখায়িত হতে থাকে এবং বদ্বীপভূমি সম্প্রসারিত হতে থাকে ১৫৫০এর জাও দ্য ব্যারোসের বাঙলার ভূমি ও নদনদীর মানচিত্রে সাগরদ্বীপের অবস্থান দেখা যায় এর পূর্ববর্তীকালীন মানচিত্রগুলিতে সাগরদ্বীপের অবস্থান বিশেষভাবে চোখে চোখে পড়েই না বর্তমানে সাগরদ্বীপের অবস্থানের স্থানে সমুদ্রসঙ্গমের এই অপূর্ব প্রকৃতিক শোভায় সূর্যাস্তের শোভামন্ডিত আলো আঁধারি খেলা যেন এক স্বপ্নিল আমেজ তৈরি করে একদিকে সমুদ্রের চঞ্চলতা ও উদ্দামতা এবং অন্যদিকে শ্যামল বনানীর উচ্ছলতা সমগ্রপরিমন্ডলকে আপ্লুত করে, তাই নিজের অজান্তে উচ্চারিত হয়-
দূরাদয়শ্চক্র নিভস্য তন্বী তমালতালী বনরাজি নীলা
আভাতি বেলা লবণাম্বুরাশের্ধারা নিবদ্ধেব কলঙ্করেখা।।(কালিদাসঃ রঘুবংশ)
ভারতের সর্বযুগের সর্বশ্রষ্ঠ লেখক, কালিদাস, অতীতের শ্বেতদ্বীপ আজকের গঙ্গাসাগরের প্রকৃতিকে প্রণাম জানিয়েছেন পূর্বের শ্লোকটিতে। সামনে আদিগন্ত সমুদ্রপশ্চাদপটে শ্যামল বনানী আর বালুকাময় বেলাভূমি আর মহর্ষি কপিলের মন্দির বাঙলার অন্যতম প্রধান তীর্থ-পর্যটন কেন্দ্র। সুন্দরবনের অন্যান্য অঞ্চলের মতই একদা সাগরদ্বীপ ছিল সমৃদ্ধতম জনপদ। ১৬৮৮এর সুনামিতে সাগরদ্বীপের প্রায় দু'লক্ষ মানুষ ভেসে যায় এবং দ্বীপটি শ্রীহীন হয়ে পড়ে।ইওরোপিয়রা বাংলা বাণিজ্যের শুরুতেই নজর দেয় এই দ্বীপে ব্রিটিশার জেমস প্রাইসের লেখায়পাই পাই গঙ্গাসাগরের উল্লেখ। ১৬৮৩তে হেজেস এখানে একটি হিন্দুমন্দির দেখেছেন। এখানকার রাজা নাকি বছরে দু'লাখ টাকা তীর্থকর আদায় করতেন। লুইল্লিয়ার নামে আর একইওরোপিয় সাগরদ্বীপে দুই সাধুকে দেখেছিলেন। ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে আলেকজেণ্ডার হ্যামিলটনেরসময় পুরোনো স্মৃতি খুঁড়ে সাগরদ্বীপ ভারততীর্থের অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান হয়ে ওঠে
১৮১১ খ্রিস্টাব্দের 'সমাচার দর্পন' বলছে, ''যাহারা গঙ্গাসাগর উপদ্বীপে বসতি করাইবার উদ্যোগ করিতেছেতাহারা কলিকাতার এক্সচেঞ্জে অর্থাৎ ক্রয়বিক্রয়ের ঘরে গত বুধবার একত্র হইল এবং দশ জন সাহেব ও দুই এতদ্দেশীয় লোককে সেই কর্ম সম্পন্ন করিবার নিমিত্ত নিযুক্ত করিল...।'' ১৮২০ খ্রিস্টাব্দে মাত্র চার আনা খাজনায় সাগরদ্বীপের ইজারা দেওয়া হয়। ১৮৩৩ ও ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দের সাইক্লোন সাগরদ্বীপকে তছনছ করে দেয়। শুধুমাত্র ১৮৬৪-র ঝড়ে পাঁচ হাজার জনের মৃত্যু হয়
ইতিহাসের পাতাতেই নয়মৎস্যবায়ু এবং পদ্মপুরাণ শাস্ত্রেও সাগরতীর্থ সম্পর্কে উল্লেখআছে। কালিদাসের 'রঘুবংশএবং কয়েকটি মঙ্গলকাব্যেও ছড়িয়ে আছে গঙ্গাসাগর প্রসঙ্গ।'মহাভারতে'-এর বনপর্বে দেখা যায়স্বয়ং যুধিষ্ঠির সাগরসঙ্গমে এসেছিলেন। মেগাস্থিনিসহিউয়েন সাঙের বিবরণেও গঙ্গাসাগর স্থান পেয়েছে। বঙ্কিম সাহিত্যে অজর অমর এক চরিত্র নবকুমার গঙ্গাসাগর থেকে ফেরার পথে কপালকুণ্ডলাকে অর্জন করে ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে লর্ড ওয়েলেসলিএসে দেখলেনওই বছরেই তেইশটি শিশু সন্তান বিসর্জনের ঘটনা ঘটেছে। আইন করে এই প্রথা নিষিদ্ধ হয়। কিন্তু পরনো প্রথা স্মরণে আজও কখনও চোখে পড়ে প্রথম সন্তানকে সাগরজলে বিসর্জন দিয়েই তুলে নিচ্ছেন কোনও মা। রবীন্দ্রনাথের 'দেবতার গ্রাসকবিতায় সাগরসঙ্গমে সন্তান বিসর্জনের করুণ কাহিনী তো সকলেরই জানা।
গঙ্গাসাগরের পুরা বর্ণনা আদতে, রাজা সগরের নাতি ভগীরথের ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওঠার কাহিনী, পাহাড় বসিনী পুণ্যতোয়া গঙ্গার বঙ্গে বয়ে আনার কাহিনী ভাগবান রামের পূর্বপুরুষসূর্যবংশের পরাক্রান্ত রাজা সগর, স্বর্গরাজ ইন্দ্রের সমপর্যায়ে উন্নিত হওয়ার প্রচেষ্টায় শততম অশ্বমেধ যজ্ঞ অনুষ্ঠান করছেন ইন্দ্ররাজ শেষতম  ঘোড়াটি অপহরণ করে লুকিয়ে রাখলেন। সগরের ষাট হাজার পুত্র বহু অন্বেষণে যজ্ঞাশ্বের সন্ধান পেলেন গভীর ধ্যানে মগ্ন মহর্ষি কপিলের নির্জন সাধনক্ষেত্রে। রাজপুত্ররা মুণি দেহে আঘাত করলেমহর্ষির কোপানলে মুহূর্তেই ভস্মীভুত হন। সগর পৌত্র ভগীরথ কঠোর তপস্যায় গঙ্গাকে মর্তে নিয়ে এলেন। তাঁর পুণ্য সলিলের স্পর্শে পাপমুক্ত হলেন সগরনন্দনরা। সাগরের সঙ্গমস্থল পরিণত হল তীর্থক্ষেত্র গঙ্গাসাগরে। প্রতিষ্ঠিত হল কপিলমুনি আশ্রম।
খ্রিস্টিয় ৪৩৭ অব্দে সাগরে একটি প্রচীন মন্দিরের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। কিন্তু নদীর পথ পরিবর্তনের ফলে সে মন্দির সমুদ্রগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এর পরেও দু'বার মন্দির নির্মিতহয়েছে। কিন্তু সমুদ্রগ্রাসে কোনওটাই স্থায়ী হয়নি। বর্তমান মন্দিরটি আদি মন্দির স্থল থেকে প্রায় দুই কিমি দূরে অবস্থিত। ১৩৮০-৮১ (ইং ১৯৭৩-৭৪) বঙ্গাব্দে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে তৈরি করন অযোধ্যার হনুমানগড়ি মঠের মোহন্ত রামদাসজি মহারাজ। ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে উইলসন সাহেবের বর্ণনানুযায়ী মন্দির চত্বরে ছিল প্রকাণ্ড এক বটবৃক্ষযার পাদদেশেই ছিল শ্রীরাম ওহনুমানের মূর্তি।
মন্দিরাভ্যন্তরে আজও বিরাজমান লালসিঁদুরে পরিলিপ্ত শিলাময় কতিপয় বিগ্রহ। চোখে পড়ে পদ্মাসনে যোগারুঢ়জটাশ্মশ্রুমণ্ডিত মহাযোগী কপিলযাঁর বামহস্তে কমণ্ডুলঊর্ধে উত্থোলিত দক্ষিণ-করে জপমালা। শিরোদেশে পঞ্চনাগ-ছত্র। ডানপাশে চতুর্ভুজা মকর বাহিনী গঙ্গাদেবীযাঁরঅঙ্কে মহাতাপস ভগীরথ। স্বল্পদূরে গদা ও গন্ধমাদন পর্বত হস্তে মহাবীর হনুমান। কপিল বিগ্রহের বাঁয়ে ষাট সহস্র সন্তান বিয়োগ বেদনায় মুহ্যমান নগররাজযিনি মহর্ষি কপিলের করুণায় বীতশোক। রাজমূর্তির বাঁয়ে অষ্টভুজ সিংহবাহিনী বিশালাক্ষীদেবী। সর্ব বাঁয়ে অশ্বের বল্গাহস্তে ইন্দ্রদেব। মন্দিরের আশেপাশে রয়েছে কিছু দেবস্থান ও আশ্রম  স্বামী কপিলানন্দ মহারাজের আশ্রমচিন্তাহরণেশ্বরের মন্দিরসীতারাম ওঙ্কারনাথের যোগেন্দ্রমঠমহানির্বাণ আশ্রম,ভারতসেবাশ্রম সঙ্ঘের ধর্মশালাসেচবিভাগের ডাকবাংলো এবং বেগুয়াখালির হাওয়া অফিস। কপিলমুনি আশ্রমের পরম্পরাগত পুরোহিত অযোধ্যার যাজনিক ব্রাহ্মণেরা প্রত্যহ মন্দিরে পাঁচবার পূজারতি করেনরাত দ্বিপ্রহরে ভোগারতিসায়াহ্নে সন্ধ্যারতি এবং রাত ন'ঘটিকায় শয়নারতি।
''সব তীর্থ বার বারগঙ্গাসাগর একবার।খনার উবাচসারা বছর যারা শয়ন একাদশী,ভৈমী একাদশীউত্থান একাদশীপার্শ্ব একাদশীজন্মাষ্টমীরামনবমীশিব চতুর্দশী বা দুর্গামহাষ্টমীর মতো শাস্ত্রীয় আচারের একটিও পালন করতে পারবে নাতাঁরা যদি পৌষ সংক্রান্তির দিন শুধু একবার সাগরসঙ্গমে স্নান করেতা হলে সর্বতীর্থের পুণ্য অর্জন করবে  তারই অমোঘ আকর্ষণে সাগরদ্বীপ পরিণত হয় মানুষের মিলনমেলায়। শস্ত্রীয় স্নানপর্ব একদিনের। মেলা কিন্তুচলে পক্ষকাল। শীতের হিমেল হাওয়ায় বালিয়াড়ির উপর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সঙ্গমে সূর্যোদয় অথবা সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে পুণ্যার্থীরা আদিগন্ত জলসীমায় পৌঁছে যান। সাধারণ তীর্থযাত্রীদের কাছে সাগরমেলার প্রধান আকর্ষণ নাগাসন্নাসী আর হিমালয়ের সাধুসন্ত।


 শেষ ৪০ বছর ধরে তাঁরা এই ছোট্ট গ্রামটার বাসিন্দা৷ রোজকার ব্যস্ততা থেকে অনেক দূরে কয়েক ঘর গরিবগুর্বোর বাস এখানে৷ কখনও আধপেটা খাওয়া জোটে, কখনও তা-ও নয়৷ কারণ এঁরা নিয়ন্ত্রণরেখার সব থেকে কাছের গ্রামটির বাসিন্দা৷ গুলি-গোলা, অশান্তি তাঁদের নিত্যসঙ্গী৷ দুই দেশের সম্পর্কের জটের ওপর নির্ভর করে তাঁদের ভাগ্য৷ 
মুমতাজ খান ও গুলাম হুসেন দুই প্রান্তিক চাষি৷ এখন তাঁরা দিনমজুর৷ রোজের আয়ে সংসার চলে৷ জানালেন, শান্তির সময়ে কোনও মতে চলে যায়৷ চাষের সময় এর-তার জমিতে গিয়ে কাজ করে দু'পয়সা মেলে৷ 
আর গোলাগুলি যখন চলে, সে সংঘর্ষের আঁচ সরাসরি এসে পড়ে তাঁদের উপর৷ বন্ধ হয়ে যায় সামান্য রুজি-রোজগার৷ কারণ দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক না থাকলে কাজ বন্ধ হয়ে যায় ওই অঞ্চলে৷ ফলে মমতাজদের আর কোনও উপায়ও থাকে না৷ 
এই জনবসতিশূন্য এলাকায় তাঁদের একমাত্র বন্ধু ভারতীয় সেনারাই৷ গুলাম বললেন, 'আমরা জানি আমরা খুব নিরাপদ৷ কারণ সেনারা আমাদের আগলে রেখেছেন৷ ওঁরা আমাদের সব থেকে বড় ভরসা৷' 
তবে যখনই শেল, মর্টার নিয়ে আক্রমণ শুরু হয়, তখনই একটা ভীতি তাঁদের ঘিকে ধরে৷ তাই তাঁরা চান এই সব প্রান্তিক অঞ্চলে আক্রমণ থেকে বাঁচতে তৈরি হোক বাঙ্কার৷ তাঁদের আশা একটাই, দু'দেশের মধ্যে মৈত্রী, যাতে তাঁদের মতো মানুষগুলো বেঁচেবর্তে থাকতে পারেন৷


ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাংবাদিক বৈঠক
আজ পুঞ্চে ভারত-পাক ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠক। দুপুর ১টায় হবে ফ্ল্যাগ মিটিং। বৈঠকে বসার আগে সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহ সাংবাদিক বৈঠক করেন। পুঞ্চে নিহত দুই ভারতীয় সেনার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, এটি একটি নারকীয় হত্যাকাণ্ড। ক্ষমার অযোগ্য কাজ করেছে পাক সেনারা। ৬ জানুয়ারি ভারতীয় সেনা কোনও অভিযান চালায়নি। পা দেয়নি কোনও প্ররোচনাতেও। পাক সেনাদের এই হামলা পূর্ব-পরিকল্পিত ছিল সেনাপ্রধানের অভিযোগ। তিনি আরও জানান, হামলার আগে ওই এলাকায় রেকি করেছিল পাক সেনারা। ষড়যন্ত্র করেই ওই ২ ভারতীয় সেনাকে হত্যা করেছে তারা। অথচ এই হামলা আড়াল করার চেষ্টায় ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে পাকিস্তান। আর এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে বৈঠকে জানিয়েছেন বিক্রম সিংহ।

সাগরে ও কুম্ভে পুণ্যস্নানে মানুষের ঢল
আজ মকর সংক্রান্তি। পুণ্যস্নানের জন্য গঙ্গাসাগরে হাজির হাজার-হাজার পুণ্যার্থী। সকাল থেকেই চলছে স্নান ও কপিল মুনির আশ্রমে পুজোর প্রস্তুতি। ভিড় সামাল দিতে ও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহাকরণে চালু করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। দায়িত্বে রয়েছেন সচিব পর্যায়ের আধিকারিকরা। এ দিকে, গঙ্গাসাগরের ৮ নম্বর লটের ৪ নম্বর জেটিতে একটি ট্রলার ধাক্কা মারায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেটি। ফলে বেশ কিছু ক্ষণের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফলে আটকে পড়েন বহু পুণ্যার্থী। তবে এখন অবস্থা স্বাভাবিক বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
সাগরদ্বীপ। ছবি: পিটিআই
অন্যদিকে, ১২ বছর পর প্রয়াগে ফের শুরু মহাকুম্ভ মেলা। আজ শাহি স্নান। ইতিমধ্যেই ইলাহাবাদের প্রয়াগে পৌঁছেছেন প্রায় ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী। প্রশাসন সূত্রে খবর, এ বছর ১০ কোটি ভক্তের সমাগম হতে পারে। মেলা চলবে শিবরাত্রি পর্যন্ত। সেই দিকেই নজর রেখে আঁটোসাঁটো করা হয়েছে নিরাপত্তা। পুণ্যার্থীদের সুবিধার জন্য নানারকম ব্যবস্থাও করা হয়েছে। আজ নাগা সন্ন্যাসীদের স্নানের পর পুণ্যার্থীরা স্নান করেন ত্রিবেণী সঙ্গমে।



বজবজে শিক্ষিকার রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার
বজবজের অধর দাস রোডে বাড়ি থেকে উদ্ধার হল এক শিক্ষিকার রক্তাক্ত দেহ। আজ সকাল ৬টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ৫৫ বছর বয়সী ওই শিক্ষিকা ঘরের মেঝেতে পড়েছিলেন। মাথার পিছনে কোনও ভারি জিনিস দিয়ে আঘাতের ফলেই মৃত্যু হয়েছে। ঘরের জিনিসপত্র সব লন্ডভন্ড অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ডাকাতির উদ্দেশ্যেই এই খুন বলে প্রাথমিক অনুমান বজবজ থানার পুলিশের। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।



ভাগলপুরে গণধর্ষণের পর খুন
গণধর্ষণ করে এক মহিলাকে খুনের অভিযোগ উঠল বিহারের ভাগলপুরে। কহলগাঁওয়ে একটি আমবাগানে ওই মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর দেহের পাশে মোবাইল ফোন, ট্রেনের টিকিট পাওয়া গিয়েছে। অনুসন্ধানের পর জানা গিয়েছে, ওই মহিলা নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ছেলেকে নিয়ে ব্রহ্মপুত্র মেলে ওঠেন। যাচ্ছিলেন দিল্লি। কিন্তু কহলগাঁও স্টেশনে এক দল মদ্যপ যুবক তাঁকে জোর করে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর তাঁকে গলা টিপে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে কহলগাঁও থানার পুলিশ।

প্রাপকদের তালিকা নিয়ে টালবাহানা
দাসপুরে বিলিই হয়নি আয়লায় ক্ষতিপূরণের টাকা
সাড়ে তিন বছর পার হয়ে গিয়েছে। এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেন না আয়লায় ক্ষতিগ্রস্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর পঞ্চায়েত সমিতির বাসিন্দারা।
বিধ্বংসী ওই ঝড়ের মাস দশেক পরে (২০১০ সালের মার্চ) ক্ষতিপূরণের টাকা বরাদ্দ করেছিল রাজ্য সরকার। তিন বছর পার হলেও এখনও সেই টাকা বিলি করে উঠতে পারেনি তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতি। বিভিন্ন মহলে দরবার করেও টাকা না পাওয়ায় ইতিমধ্যে ধার-দেনা করে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামত করে ফেলেছেন স্থানীয় বেনাই গ্রামের আশেদ আলি, মীর পাড়ার রফিক আলি, শিবরার পঞ্চানন পাত্র ও যমুনা ঘোড়ুয়ের মতো অনেকেই। আশেদ আলির কথায়, "ঝড়ে আমাদের বাড়ি ভেঙে গিয়েছিল। তালিকাতেও নাম উঠেছিল শুনেছিলাম। কিন্তু ক্ষতিপূরণ আর পেলাম না। মাথার ছাদ তো দরকার। তাই নিজেদের মতো করে বাড়ি সারিয়েছি।"
তিন বছরেও কেন বিলি হয়নি টাকা?
তৃণমূলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতি তালিকায় ক্ষতিগ্রস্তদের সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেখিয়েছিল। পরে জেলা ত্রাণ দফতর তদন্ত করে তালিকা থেকে বেশ কয়েকজনের নাম কেটে দিলেও গ্রামবাসীদের তা জানানো হয়নি। এখন সংশোধিত তালিকা অনুযায়ী যে টাকা এসেছে, তা বিলি করতে গেলে বাদ পড়ে যাবেন অনেকেই। ফলে এই নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা পঞ্চায়েত সমিতির। তাই টাকা বিলির কাজে তাঁরা গড়িমসি করছেন বলে অভিযোগ। পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের নিশীথ পোড়ে বলেন, "আগে তালিকায় গরমিল করেছিল পঞ্চায়েত সমিতি। ফলে এখন টাকা বিলি করতে সমস্যা হচ্ছে তাদের।" পঞ্চয়েত সমিতির সভাপতি আশিস হুতাইত অবশ্য তালিকায় গরমিলের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, "আমরা সম্পূর্ণ টাকা পাইনি। তাই বিলি করা যায়নি।"
২০০৯ সালের মাঝামাঝি গোটা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকাতেও বিধ্বংসী আয়লায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর ২ ব্লকে ক্ষতির মাত্রা ছিল সবথেকে বেশি। বেনাই, দুধকোমরা, শিবরা, জোতঘনশ্যাম প্রভৃতি গ্রাম পঞ্চায়েতের কাঁচা বাড়ির টিনের ছাদ, খড়ের চাল গিয়েছিল উড়ে। ঝড়-বৃষ্টিতে মাটির বাড়ির দেওয়ালও ভেঙে পড়েছিল কোথাও কোথাও। চাষের ক্ষতি তো হয়েছিলই। রাজ্য সরকার জানিয়েছিল, আয়লায় বাড়ির আংশিক ক্ষতি হয়েছে যাঁদের, তাঁদের পাঁচ হাজার ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তদের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। সেই সময় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি সরকারি নির্দেশে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে। তাতে শুধু ওই ব্লকের মোট ১৪টি পঞ্চায়েত থেকেই প্রায় ৫০০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা পাঠানো হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ হাজার নামের যে তালিকা (আংশিক ও সম্পূর্ণ) পাঠানো হয়েছিল প্রথমে, সেই মোতাবেক ক্ষতিপূরণ দিতে হলে ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা দিতে হত রাজ্য সরকারকে। কিন্তু প্রশাসন তালিকা থেকে নাম কেটে দিয়ে বরাদ্দ করে মাত্র ২৫ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা। 
এ দিকে, টাকা আসার খবর চাউর হতেই তালিকায় নাম উঠেছিল যাঁদের, তাঁরা ব্লক অফিসে ধর্না দেওয়া শুরু করেন। এর মধ্যে অনেকের নামই কাটা গিয়েছে সংশোধিত তালিকায়। পরিস্থিতি অনুকূল নয় বুঝে টাকা বিলি স্থগিত করে দেয় পঞ্চায়েত সমিতি। টাকা এসে পড়ে থাকলেও বিলি হচ্ছে না দেখে এক সময় আন্দোলন শুরু করে সিপিএম। এমনকী তৃণমূলেরও একটি গোষ্ঠী টাকা বিলি করার জন্য তৎপর হয়। লাভ হয়নি তাতেও।
জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য তথা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তপন দত্তের কথায়, "আমরা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সিপিএম পরিচালিত জেলা পরিষদ সেই টাকা না দেওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।" উত্তরে সিপিএম পরিচালিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা তো বলেছিই প্রয়োজনে আরও টাকা দেওয়া হবে। আগে প্রথম দফার টাকা বিলি করুক ওরা। তিন বছরে তো তাই করে উঠতে পারল না।" জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যে কারণেই গড়িমসি হোক না কেন এ বার দ্রুত ওই টাকা বিলি করা হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, "যাতে দ্রুত টাকা বিলি হয় তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।"
মেদিনীপুরে সভা। শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়ে সভা করল আরএসপি-র শ্রমিক সংগঠন 'ইউনাইটেড ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস' (ইউটিইউসি)। রবিবার মেদিনীপুর শহরে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক অশোক ঘোষ, জেলা সভাপতি শক্তি ভট্টাচার্য, অমৃত মাইতি প্রমুখ। সভা থেকে শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলনে নামার ডাক দেন নেতৃত্ব।
http://www.anandabazar.com/14med2.html


ভারত-পাক সীমান্তে দুই ভারতীয় জওয়ানের নৃশংস হত্যার ঘটনায় ক্ষুব্ধ গোটা দেশ। আজ পুঞ্জের চাকন্দা বাগে দু'দেশের 'ফ্ল্যাগ মিটেও' ভারতের তরফে কড়া প্রতিবাদ জাহির করা হয়েছে। এক ঘণ্টা চলা সীমান্ত বৈঠকে ৮ জানুয়ারির ঘটনার ক্ষোভের কথা পাকিস্তান প্রতিনিধিদের সামনেও প্রকাশ করেছে ভারত। বৈঠকের আগে সেনাপ্রধান বিক্রম সিং পাক প্রশাসনের দিকে সরাসরি হুঁশিয়ারি ছুঁড়ে দেন। "বর্বরোচিত ভাবে ওই সৈনিকের অঙ্গহানি করা হয়েছে", এই ধরণের `অমার্জনীয়` ঘটনা কখনও মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন সেনা প্রধান। 

তবে পাকিস্তান তাঁদের অবনস্থানে অনড়। এ দিনের বৈঠকেও পাক সেনার হাতে ভারতীয় জওয়ান মারা যাওয়ার ঘটনা কার্যত অস্বীকার করেছে তারা। 

ভারতের পক্ষ থেকে আগেও কয়েকবার ফ্ল্যাগমিটের আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের তরফে এই বিষয়ে সদর্থক কোনও প্রত্যুত্তর পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত ভারতের তরফে কড়া হুঁশিয়ারির পরেই আলোচনায় রাজি হয় পাকিস্তান। গত রবিবার পর্যন্ত এলওসি-র উভয় দিকেই তীব্র গুলিগোলা চলেছে।

৮ জানুয়ারি ভারত-পাক সীমান্তে মেন্ধর সেক্টরে ঢুকে পড়ে দুই ভারতীয় জওয়ানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাক সেনা। ফলে লঙ্ঘিত হয় ২০০৩ -এর অস্ত্রবিরতির চুক্তি। এই ঘটনার পর এশিয়া মহাদেশের দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ নতুন করে বাড়তে শুরু করে। 


`নৃশংস`। জম্মু-কাশ্মীর সীমান্তে পাক সেনার হাতে দুই জওয়ানের মৃত্যু ও তাঁদের একজনের শিরোচ্ছেদ করার ঘটনায়, ঠিক এই ভাষাতেই কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন সেনাপ্রধান বিক্রম সিং। সোমবার তিনি জানান, "বর্বোরোচিত ভাবে ওই সৈনিকের অঙ্গহানি করা হয়েছে।" দু`দেশের দ্বিপাক্ষিক সমর্কের ক্ষেত্র এই ধরনের ঘটনা নীতিবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন সেনাপ্রধান। 

আজই পুঞ্চ সেক্টরে সীমান্ত বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত-পাকিস্তান। ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের এই বৈঠকে তিক্ততা প্রশমিত হওয়ার আশা করছেন কূটনৈতিকরা। ঠিক তাঁর কয়েক ঘণ্টা আগে সীমান্তের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, "এই ঘটনায় শান্তি চুক্তির নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে। আমরা আমাদের অবস্থান পাকিস্তানের কাছে স্পষ্ট করেছি।" পুঞ্চ সীমান্তে মৃত দুই জওয়ানের পরিবারের প্রতিও সমবেদনা জানান তিনি। 

এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠকে সেনাপ্রধান বিক্রম সিং জানিয়ছেন, লান্স নায়ক হেমরাজ সিংয়ের শরীররে বাকি অংশ ফিরিয়ে আনার জন্য দু`দেশের ডিজিএমও স্তরে কথা বলা হচ্ছে। ভারত সরকারের তরফেও বিষয়টি ইসলামাবাদের গোচরে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রম সিং। গোটা ঘটনাটি পূর্ব পরিকল্পিত ভাবেই ঘটেছে বলে দাবি করেছেন সেনা প্রধান।


নয়াদিল্লি: ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত বৈঠকের আগে সুর চড়ালেন সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহ৷ তিনি বলেছেন, বার বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করবে পাকিস্তান, আর হাত গুটিয়ে বসে থাকবে ভারত? এমনটা হতে পারে না৷ আমাদের ধৈর্য্যের একটা সীমা আছে৷ পুঞ্চে দুই ভারতীয় সেনা হত্যার কড়া নিন্দা করে বিক্রম সিংহ বলেন, পাক সেনার এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড ক্ষমার অযোগ্য৷ পূর্বপরিকল্পিতভাবে ভারতীয় সেনার ওপর হামলা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ সেনাপ্রধানের৷ সীমান্ত পেরিয়ে প্রায়ই কাশ্মীরে ঢুকে পড়ছে পাক সেনা৷ কাশ্মীরের চূড়ান্ডা গ্রামে পাক সেনার অনুপ্রবেশের প্রমাণও মিলেছে বলে দাবি করেছেন তিনি৷
সীমান্তে সাম্প্রতিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে দুদেশের মধ্যে আজ দুপুরের ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের বৈঠকের আগে পাকিস্তানকে সতর্ক করে সেনাপ্রধান বলেছেন, সীমান্তের ওপার থেকে হামলা চালানো হলে পাল্টা আঘাত হানবে ভারতীয় সেনারাও। তিনি বলেছেন, 'আমি নর্দান কমান্ডকে সুস্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছি যে, আমাদের প্ররোচিত করা হলে আমরা তত্ক্ষনাত্ প্রত্যুত্তর দেব।'
নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনার তত্পরতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানের তোলা অভিযোগ  খারিজ করে দিয়েছেন জেনারেল বিক্রম সিংহ। দুই ভারতীয় সেনার হত্যার ঘটনাকে নারকীয় আখ্যা দিয়ে সেনাপ্রধান বলেছেন, যেভাবে গলা কেটে দুই ভারতীয় সেনাকে হত্যা করা হয়েছে তা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা যায় না। দুই দেশের ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে ভারত এর প্রতিবাদ জানাবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।  মেন্ধারে পাকিস্তানের হানা পূর্বপরিকল্পিত বলেই জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পুঞ্চ সীমান্তে দুই ভারতীয় সেনা ল্যান্স নায়েক হেমরাজ সিংহ ও সুধাকর সিংহকে হত্যা করেছিল পাক সেনা। এই হত্যাকাণ্ডের পর গুলি বিনিময়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সীমান্ত। দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হওয়ার পর সীমান্তে এত বড় মাপের সংঘর্ষের ঘটনা আর ঘটেনি।

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32462-2013-01-14-07-21-40


এখনও অনশনে শহিদ জওয়ান হেমরাজ সিংয়ের পরিবার। তাঁদের দাবি, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক সরকার। ল্যান্স নায়েক হেমরাজের মাথা ফিরিয়ে আনার দাবি করেছেন তাঁরা। গত ৮ তারিখ সকালে মেন্ধরে পেট্রলিংয়ে বেরিয়েছিলেন সাত জওয়ান। তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন হেমরাজ সিং এবং সুধাকর সিং। আচমকাই গুলিবৃষ্টি শুরু হয়। ঘণ্টাখানেক পরে দুই জওয়ানের মাথা কাটা ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার নিন্দায় সরব হয় গোটা দেশ। গত বুধবার উত্তরপ্রদেশের শেরনগরে শহিদ জওয়ান হেমরাজ সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শোকে মূহ্যমান শহিদ জওয়ানের গোটা গ্রাম।

এ দিন এক সাংবাদিক বৈঠকে সেনাপ্রধান বিক্রম সিং জানিয়ছেন, হেমরাজের মাথা ফিরিয়ে আনার জন্য দু`দেশের ডিজিএমও স্তরে কথা বলা হয়েছে। 

নৃশংস হামলার পরে ভারতের আরও কড়া জবাব দেওয়া উচিত ছিল বলে হেমরাজের গ্রামের বাসিন্দারা। হেমরাজের শহীদ হওয়ার পরেও দিনকয়েক পেরিয়ে গেছে। অথচ কোনও রাজনৈতিক দল তাঁর পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি। শোকাহত পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যাননি কেউই। রাজনৈতিক দলগুলির এই অবস্থানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হেমরাজের পরিবার সহ গোটা শেরনগর গ্রাম।


ফের রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সমাজকর্মী মহাশ্বেতা দেবী। অসুস্থ লেখিকার সঙ্গে আজ দেখা করতে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। রাজ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে তিনি চিন্তিত বলে প্রদীপ ভট্টাচার্যকে জানান মহাশ্বেতা দেবী। 

রাজ্যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আনার জন্য একসময়ে সরব হয়েছিলেন মহাশ্বেতাদেবী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাস্তাতেও নেমেছিলেন তিনি। রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য আজ তাঁকে অনুরোধ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বর্ষীয়ান এই লেখিকার জন্মদিনে আজ তাঁকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য।


ভাঙড় বিতর্কে দাঁড়ি পড়ছে না। এবার তাতে যুক্ত হল মদন মিত্রের নাম। ভাঙড়ে তৃণমূলের হামলায় আহত প্রবীণ বাম বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লা বাইপাসের যে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিচিত্র একটি চিঠি পাঠালেন পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র। চাইলেন হিসেব। 

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, রাজ্যে বাম জমানা থেকে শুরু করে এপর্যন্ত কতজন সিপিআইএম নেতার বিনা খরচে চিকিৎসা করা হয়েছে ওই হাসপাতালে, তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। সেই তথ্য তিনি বিধানসভায় পেশ করবেন বলে চিঠিতে জানিয়েছেন পরিবহণ মন্ত্রী।


চাকুলিয়ায় গণধর্ষণের শিকার মহিলার চিকিত্‍সার জন্য তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হল। তাঁর শারিরীক অবস্থার উন্নতি হলেও মানসিকভাবে সে পুরোপুরি বিপর্যস্ত বলে জানিয়েছেন চিকিত্‍সকরা। আজ হাসপাতালে ওই মহিলাকে দেখতে যান সিপিআইএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য, জীবেশ সরকার। রাজ্যজুড়ে ধর্ষণের মতো ঘটনা বেড়ে যাওয়ার পিছনে পুলিস-প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করেছে সিপিআইএম। ঘটনার দুদিন পরও এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। ফের গণধর্ষণের ঘটনা রাজ্যে। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক থানার বাসিন্দা এক মহিলাকে অপহরণের পর তাকে চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।    

গত শুক্রবার পুলিস ওই মহিলাকে উদ্ধার করেছিল। তার চিকিত্‍সায় মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নির্যাতিতা মহিলাকে দেখতে সোমবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিআইএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। সঙ্গে ছিলেন আরেক সিপিআইএম নেতা জীবেশ সরকারও। অভিযুক্তদের কঠোরতম শাস্তি দাবি করেন তাঁরা। পুলিস-প্রশাসনের ভূমিকার দিকেও আঙুল তুলেছে সিপিআইএম। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ মানতে নারাজ। দোষীদের দ্রুত খুঁজে বের করে শাস্তির আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।   


বারাসতকে এখন বলা হচ্ছে আতঙ্কনগরী হিসাবে। কিন্তু কেন! বারাসতে কী এমন হল যে... সেই বারাসতকে নিয়েই এক দলিল আমাদের ওয়েবসাইটে।

দুষ্কৃতীদের হাত থেকে দিদিকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছিল রাজীব দাসের। প্রায় দুবছর বাদে, সহকর্মীর ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করে নিগৃহীত জনাকয়েক যুবক। মাঝের দুবছরে বারাসতে বারবার আক্রান্ত হয়েছেন মহিলারা। ভর দুপুর হোক বা গভীর রাত। বারাসত মানেই দুষ্কৃতীদের অবাধ বিচরণ। আর বুকে একরাশ আতঙ্ক নিয়ে মহিলাদের পা ফেলা। দুবছরেও বদলায়নি ছবিটা। 

২০১১, ১৪ ফেব্রুয়ারি দিদির সম্মান বাঁচাতে গিয়ে খুন হন রাজীব দাস। ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিস। 
 
ওই বছরেরই ২ অগাস্ট জেলাশাসকের দফতরের কাছে আক্রান্ত হয় এক পুলিসকর্মীর পরিবার। ঘটনায় গ্রেফতার এক।
 
২০১১, ২ সেপ্টেম্বর জেলাশাসকের দফতরের সামনে পুলিসকে লক্ষ্য করে গুলি চলে। গ্রেফতার এক। 
 
২০১২, ২৭ এপ্রিল অপহরণ করা হয় এক ছাত্রীকে। পরে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়ানো হয় তাঁকে। 
 
২০১২,২৭ জুলাই বারাসত স্টেশনের কাছে মেয়ের ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত হন বাবা। গ্রেফতার তিন। 
 
২০১২, ২০ অগাস্ট কিশোরির শ্লীলতাহানির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। 
 
২১ অগাস্ট এক মহিলাকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয়। পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিস। 
 
৩১ অগাস্ট মেয়ের শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে মার খান মা। ঘটনায় গ্রেফতার এক।
 
২০১২, ৩ সেপ্টেম্বর পাড়ার মেয়ের শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে খুন হন এক চিকিত্সক। গ্রেফতার দুই।
 
২০১২, ২৯ ডিসেম্বর এক ইটভাটার মহিলা কর্মীকে নির্যাতন করে খুন। ধৃত এক।   

শনিবার দুপুরের ঘটনা প্রমাণ করল প্রশাসনের যাবতীয় প্রতিশ্রুতির পরেও বারাসত আছে বারাসতেই। 


এবারও তারকাহীন শিল্প সম্মেলন বেঙ্গল লিডস। অতিথিদের তালিকায় নেই আম্বানি ভাই বা সাইরাস মিস্ত্রির নাম। গুজরাতে শিল্প সম্মেলনে যেখানে হাজির হয়েছিলেন তাবড় শিল্পপতিরা, সেখানে কেন বাংলার এই হাল? শিল্পমন্ত্রীর দাবি, নাম নয় কাজের লোক এনেই বাংলায় শিল্পায়নে ক্ষেত্রে সাফল্য আনবেন তাঁরা।

রতন টাটা থেকে  আম্বানিভাই। গুজরাতের শিল্পসম্মলনে হাজির ছিলেন সকলেই। নরেন্দ্র মোদির গুজরাতকে দেশের শিল্পপতিরা কোন স্থান দিচ্ছেন তা বুঝিয়ে দিয়েছে গুজরাত শিল্পসম্মেলন।  

বাংলাতেও কী সেই একই ছবি দেখা যাবে! এবছরের বেঙ্গল লিডস ঘিরে গত কয়েকদিনে এমন জল্পনা জোরদার হয়ে উঠেছিল। দেশের তাবড় শিল্পপতিদের আমন্ত্রণও জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, জল্পনা এবারও জল্পনাই থাকছে। সোমবার থেকে হলদিয়ায় শুরু হচ্ছে এবছরের বেঙ্গল লিডস। তিনদিনের শিল্প সম্মেলনে রাজ্যের শিল্পপতি এবং গুটিকয়েক বাইরের সংস্থার প্রতিনিধি ছাড়া বক্তা হিসেবে নেই কোনও তাবড় ব্যক্তির নাম। এমনকি, ১৫ তারিখ যেদিন মুখ্যমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন সে দিনও মঞ্চে দেশের প্রথম সারির শিল্পপতি বলতে যাদের নাম মনে পড়ে তাদের কারোর উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা কম। শিল্পমন্ত্রীর অবশ্য দাবি, মুখ নয়, বিনিয়োগে যাঁরা মুখ্য ভূমিকা নেবেন তাঁরাই নাকি আসছেন শিল্প সম্মেলনে।
 
শিল্প দফতরের দাবি গতবারের তুলনায় এবার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার স্টলের সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে যোগদানকারী প্রতিনিধিদের সংখ্যাও। সেখানেই উঠছে প্রশ্ন, সাধারণ প্রতিনিধি আর স্টলের সংখ্যা বাড়িয়েই কী রাজ্যের কাদায় বসে যাওয়া শিল্পের চাকাকে তোলা যাবে?


কলকাতা: অতিথি সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি, ধোঁয়াশার মধ্যেই কাল থেকে হলদিয়ায় শুরু হতে চলেছে  দ্বিতীয় 'বেঙ্গল লিডস'৷ বিনিয়োগ টানতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের এই শিল্প সম্মেলনে সোমবার রাত পর্যন্ত আসার খবর নেই দেশের প্রথম সারির শিল্পপতি, জাতীয় বণিকসভার শীর্ষকর্তাদের৷ যেখানে গাঁধীনগরে সোমবার শেষ হওয়া ভাইব্র্যান্ট গুজরাত সম্মেলনে চাঁদের হাট বসিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, সেখানে হলদিয়ায় এখনও কার্যত অমাবস্যা৷ মোদির ডাকে এসেছিলেন দুই অম্বানি ভাই, মুকেশ ও অনিল, টাটা গোষ্ঠীর সদ্য প্রাক্তন কর্ণধার রতন টাটা, নতুন কর্ণধার সাইরাস মিস্ত্রি, আদি গোদরেজ, আনন্দ মহিন্দ্রা, কুমারমঙ্গলম বিড়লা, গৌতম আদানি, উদয় কোটাক, আইসিআইসিআইয়ের চন্দা কোছার, এইচডিএফসির আদিত্য পুরী অর্থাত দেশের শিল্প মহলের তাবড় নক্ষত্ররা, সেখানে ২৪ ঘণ্টা আগে পর্যন্ত দেশের প্রথম সারির কোনও শিল্পপতিরই বেঙ্গল লিডসে যোগ দেওয়ার খবর নেই৷ আসার খবর নেই ফিকি, অ্যাসোচেম ও সিআইআইয়ের মতো জাতীয় বণিক সভার শীর্ষকর্তাদের৷ তবে শোনা যাচ্ছে, আসতে পারেন আইটিসির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর কুরুশ গ্রান্ট, শঙ্কর নেত্রালয়ের চেয়ারম্যান এমেরিটাস এস এস বদ্রিনাথ, ম্যাটিক্স গোষ্ঠীর ভাইস চেয়ারম্যান নিশান্ত কানোরিয়া রাশিয়া ও সিঙ্গাপুর থেকে আসছে দুটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল৷
এই প্রেক্ষাপটে ঘরে-বাইরে লগ্নিকারীদের কাছে রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনা সম্পর্কে ইতিবাচক বার্তা দেওয়া যে সম্মেলনের লক্ষ্য, তাতে শেষ পর্যন্ত কতখানি সাফল্য আসবে, শিল্প, বিনিয়োগ কতটা আসবে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, সংশয়ের সুর শোনা যাচ্ছে।
যদিও বেঙ্গল লিডস শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে রবিবার শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, লগ্নি টানতে শুধুমাত্র তাবড় শিল্পপতিদের চাঁদের হাট বসানো জরুরি নয়। বরং সম্মেলনে শিল্পমহলের সার্বিক উপস্থিতিই রাজ্যের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ! ধোঁয়াশা রেখে তিনি আরও বলেন, "যাঁরা বড় নাম খুঁজছেন, খুঁজুন। আমাদের কাছে শুধু মালিক নন, যাঁরা ব্যবসা চালান, সকলেই গুরুত্বপূর্ণ।"
কিন্তু শিল্পমহলের উদ্বেগ অন্যত্র. তারা মমতা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের জমি-নীতি, শিল্পভাবনায় ভরসা পাচ্ছেন না।মমতা অনড়, শিল্পের জন্য তাঁর সরকার জমি অধিগ্রহণ করবে না৷ ইনফোসিস বা অন্য কোনও সংস্থাকে দেওয়া হবে না বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (সেজ)-এর তকমা৷ এছাড়াও, ব্যাঙ্ক, বিমা, পেনশন বা খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের মতো সংস্কারমুখী পদক্ষেপেরও ঘোর বিরোধী মমতা৷ পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক অশান্তি তো রয়েইছে৷ শিল্প মহলের একাংশের মত, এসব কারণেই রাজ্যে লগ্নি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মনে নানা আশঙ্কা দেখা দিয়েছে৷ বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, বেঙ্গল লিডস করে সরকার শিল্পপতিদের বিনিয়োগের বার্তা দিলেও রাজ্যে আদৌ শিল্প আসবে তো?  
আর এই সুযোগে বেঙ্গল লিডস নিয়ে সরকার ও মুখ্যমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ আজ বিধানসভার বাইরে সূর্যকান্ত বলেন, রাজ্য এগোচ্ছে নৈরাজ্যে, গণতন্ত্রের ওপর হামলায়, মহিলা নির্যাতনে, বাজার থেকে ধার করায়৷ আর বুদ্ধদেবের প্রশ্ন, জমি নীতির ঠিক না থাকলে রাজ্যে শিল্প হবে কীভাবে? কীভাবে হবে কর্ম সংস্থান? কারখানা হচ্ছে না বলেই রাজ্যে বিদ্যুতের চাহিদা কমছে বলে মন্তব্য করে তাঁর কটাক্ষ, উন্নয়ন নয়, উত্সবে মেতেছে সরকার!

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32472-2013-01-14-13-58-39


কলকাতা ও হলদিয়া:মুখ্যমন্ত্রী শিল্প-বাণিজ্য ও কলাশিল্পের ভেদরেখা মুছে দেন। তাঁর শিল্পমন্ত্রীও তেমনই মনে করেন, শিল্প সম্মেলনে বড় শিল্পপতিদের উপস্থিতিটা জরুরি নয়!


সম্প্রতি 'ভাইব্র্যান্ট গুজরাতে' চাঁদের হাট বসিয়েছিলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুই অম্বানী ভাই মুকেশ ও অনিল, টাটা গোষ্ঠীর সদ্য প্রাক্তন কর্ণধার রতন টাটা, নতুন কর্ণধার সাইরাস মিস্ত্রি কে ছিলেন না সেই দলে! তার পরপরই পশ্চিমবঙ্গের শিল্প সম্মেলন 'বেঙ্গল লিডস'। স্বাভাবিক ভাবেই কৌতূহল, দেশের প্রথম সারির কোন কোন শিল্পপতি আসবেন এই সম্মেলনে? গুজরাতের সঙ্গে কতটা টক্কর দিতে পারবে পশ্চিমবঙ্গ? 
এই কৌতূহল কিন্তু সম্মেলনের দু'দিন আগেও মেটাতে পারল না রাজ্য সরকার। আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকে হলদিয়ায় শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় বেঙ্গল লিডস। তার ৪৮ ঘণ্টা আগে রবিবার শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, লগ্নি টানতে শুধুমাত্র তাবড় শিল্পপতিদের চাঁদের হাট বসানো জরুরি নয়। বরং সম্মেলনে শিল্পমহলের সার্বিক উপস্থিতিই রাজ্যের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ! রবিবার শিল্পমন্ত্রী আরও বললেন, "যাঁরা বড় নাম খুঁজছেন, খুঁজুন। আমাদের কাছে শুধু মালিক নন, যাঁরা ব্যবসা চালান, সকলেই গুরুত্বপূর্ণ।" 
এ যেন চাঁদ ছাড়াই চাঁদের হাট বসানোর পরিকল্পনা। 
তবে একই সঙ্গে শিল্পমন্ত্রীর ইঙ্গিত, চমকও আছে। প্রথম সারির শিল্প-কর্তাদের উপস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এ সব প্রশ্নের জবাব ১৫ তারিখ দেব। কোন সংস্থা কাকে পাঠাচ্ছে, তাঁদের কিছু নাম জানি। কিন্তু যত ক্ষণ না ওঁরা সেখানে পৌঁছচ্ছেন, এখনই তা নিয়ে বলব না। আর তা ছাড়া, কোন সংস্থা কাকে পাঠাবে, সেটা তাদের ব্যাপার।" তা হলে কি কলকাতা থেকে হলদিয়ার দূরত্বের জন্য বিষয়টি অনিশ্চিত? এ কথা অবশ্য মানতে নারাজ শিল্পমন্ত্রী। 
প্রশ্ন ওঠে, টাটা বা রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর কে আসছেন? শিল্পমন্ত্রী বলেন, "আমাদের কাছে খবর আছে, ওঁদের লোক আসবেন।" তা হলে কি সাইরাস মিস্ত্রি বা অম্বানী ভাইয়েরাও আসবেন? এ বার স্পষ্ট কোনও জবাব মেলেনি। উল্টে তিনি বলেন, "ও ভাবে বলা যাবে না। টাটাদের সবাইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ওঁদের পিএ-দের জিজ্ঞাসা করুন।" আর সজ্জন জিন্দল? এ প্রশ্নের জবাবে অবশ্য পার্থবাবু বলেন, "হ্যাঁ।"যদিও জিন্দলেরই সংস্থা জেএসডব্লিউ বেঙ্গল-এর সূত্রে তেমন ইঙ্গিত রবিবার পর্যন্ত মেলেনি। 
বড় শিল্পপতিদের নাম নিয়ে ধোঁয়াশা রাখলেও হলদিয়ায় আলোচনাচক্রে কারা বক্তব্য পেশ করবেন, সেই তালিকাটি ('বেঙ্গল লিড্স'-এর ওয়েবসাইটেও তা রয়েছে) এ দিন পুরো পড়ে শুনিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী। সেই তালিকায় মূলত বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্তা এবং রাজ্যের আমলারাই রয়েছেন। 
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এ রকম শিল্প সম্মেলন আয়োজনের মূল কারণ, ঘরে-বাইরে লগ্নিকারীদের রাজ্য সম্পর্কে একটা ইতিবাচক বার্তা দেওয়া। সম্মেলনে প্রথম সারির শিল্প-কর্তারা থাকলে লগ্নিকারীদের আস্থা বাড়ে। তখন অন্য লগ্নিকারীরা মনে করেন, প্রথম সারির শিল্প-কর্তারা যখন বারবার আসছেন, তখন নিশ্চয়ই রাজ্যে লগ্নি-সহায়ক পরিবেশ রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি নিয়ে এখনও সংশয়ে রয়েছে শিল্পমহল। তাই এই রাজ্যে এমন বার্তা দেওয়াটা আরও বেশি জরুরি। 
শিল্পমহলের মতে, শিল্প-সহায়ক পরিবেশের দিক থেকে এ রাজ্যের চেয়ে হাজার মাইল এগিয়ে গুজরাত। সেখানে সহজেই লগ্নি যাবে, এটাই স্বাভাবিক। তবু মোদী আত্মতুষ্ট হননি। আর তাই তাঁর পাশে বসে সম্মেলন সফল করতে দেখা গিয়েছে মুকেশ-অনিল অম্বানী বা রতন টাটাকে। এই সম্মেলন সফল করতে একই রকম চনমনে থাকেন দেশ-বিদেশের অন্য বড় শিল্পকর্তারাও। কেউ কেউ গুজরাতের দাঙ্গা নিয়ে সরব হয়েও সে রাজ্যে বিনিয়োগের গুরুত্ব মেনে নেন। আর প্রথম সারির শিল্প-কর্তা বা কূটনীতিক যখন এ সব কথা বলেন, তখনই সে রাজ্যের সম্পর্কে একটা বার্তা যায় সর্বত্র। 
অথচ 'বেঙ্গল লিড্স' সম্মেলনের দু'দিন আগেও এই নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলতে পারছে না পশ্চিমবঙ্গ। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, সম্মেলন হলেও শিল্প হবে তো? প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও রবিবার এই নিয়ে বিঁধেছেন রাজ্য সরকারকে। তাঁর বক্তব্য, চেন্নাই পেরেছে, গুড়গাঁও পেরেছে, গুজরাত পেরেছে। কিন্তু তৃণমূল সরকারের শিল্প ও জমি-নীতির ফলে অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে বাংলা। 
বস্তুত, মমতার সরকারও যে কখনও বড় শিল্প-কর্তাদের উপস্থিতিকে গুরুত্ব দেয়নি, এমন নয়। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে শিল্পমহলের সঙ্গে প্রথম যে বৈঠকটি করেন, সেখানে এসেছিলেন আদি গোদরেজ। 
গত বার কলকাতার মিলন মেলায় আয়োজিত 'বেঙ্গল লিড্স'-এ এসেছিলেন সজ্জন জিন্দল, রাজীব তলোয়ার, বেণু শ্রীনিবাসন, অতুল পুঞ্জ। শিল্প মহলের খোঁজখবর যাঁরা রাখেন, তাঁদের বক্তব্য, এই সব শিল্পপতিদের আনার ব্যাপারে অনুঘটকের কাজ করেছিলেন এক অনাবাসী বাঙালি শিল্পপতি। 
গত বারের 'বেঙ্গল লিডস'-এর আসরে উপস্থিত শিল্পপতি ও বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধিদের নাম করে করে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টই জানতে চেয়েছিলেন, তাঁরা এ রাজ্যে লগ্নি করবেন কি না। 
তবু রাজ্য এখন বড় শিল্প-কর্তাদের উপস্থিতিকে শিল্প সম্মেলন সফল করার মাপকাঠি হিসেবে মানতে নারাজ। তেমনই নারাজ ছোটখাটো ভুল নিয়ে প্রশ্ন শুনতেও। শিল্পমন্ত্রী বলেছেন, "অনেকেই বানান থেকে শুরু করে ছোটখাটো ভুল ধরছেন। কাজ করলে ভুল হতেই পারে। তবে বাদবাকি যে ভাল কাজটা হচ্ছে, সেটাকে তুলে ধরুন।" 
তাঁর দাবি, গত বারের চেয়ে এ বার স্টলের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাঁর আশা, বাড়বে শিল্পমহলের প্রতিনিধির সংখ্যাও। হলদিয়ায় রোজ যাওয়ার জন্য রাজ্য শিল্পোন্নয়নের নিগমের দফতর থেকে বিশেষ ভলভো বাসের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। ব্যবস্থা থাকছে বিমানবন্দরেও, যাতে বিমান থেকে নামার পরে হলদিয়া যেতে সমস্যা না হয়। পাশাপাশি, বেঙ্গল লিডস-এর ওয়েবসাইটে টিআইএল সংস্থা ট্র্যাক্টর তৈরি করে বলে যে তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তা এ দিন সরিয়ে ফেলা হয়েছে। 
এ সব সত্ত্বেও প্রস্তুতিপর্ব নিয়ে সংশয় এখনও পুরোপুরি কাটেনি। যেমন, হলদিয়ার হেলিপ্যাড ময়দানে রবিবার সন্ধ্যায়ও অধিকাংশ স্টল তৈরির কাজ অনেক বাকি। ২১০টি স্টলের মধ্যে মাত্র দু'টি স্টলের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকিগুলিতে প্লাই দিয়ে কাঠামো তৈরি হচ্ছে মাত্র। মেলা প্রাঙ্গণের পূর্ব ও পশ্চিমে তিনটি করে মোট ছ'টি 'হ্যাঙ্গারে'র প্রাথমিক কাঠামো তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে চারটিতে স্টল হবে। বাকি দু'টি আলোচনাসভা এবং অতিথিদের বসার জন্য ব্যবহার করা হবে। 
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানও হবে সেখানেই। অথচ ওই দু'টি হ্যাঙ্গারের পরিকাঠামোই এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। যদিও 'বেঙ্গল লিডস'-এ অন্যতম আয়োজক হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের (এইচডিএ) মুখ্য নির্বাহী আধিকারিক পি উলগানাথন বলেন, "যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা খুবই পারদর্শী। এখনও এক দিন হাতে আছে। নির্দিষ্ট সময়েই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে।"

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32448-2013-01-14-03-31-15


কলকাতা ও হলদিয়া:রাজ্যে শিল্প আনতে বেঙ্গল লিডস ঘিরে যখন স্বপ্ন দেখছে রাজ্য সরকার, তখন তাকে আকাশকুসুম কল্পনা বলে কটাক্ষ করছে সিপিএম৷ বণিকমহলের আস্থা অর্জন তো দূরের কথা, তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যে একটাও শিল্প আসেনি, দু'হাজারও কর্মসংস্থান তৈরি হয়নি বলে দাবি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর৷ সিঙ্গুরের কারখানা করতে না পারার আক্ষেপ যে তাঁর মনে রয়ে গিয়েছে, তা স্পষ্ট করে দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, সিঙ্গুর যখন শ্মশান হয়ে গিয়েছে, তখন গুজরাত-গুরগাঁও এগিয়ে যাচ্ছে৷

চেন্নাই পেরেছে, গুড়গাঁও পেরেছে। গুজরাত পারছে। কিন্তু শিল্প ও উন্নয়নের বদলে পশ্চিমবঙ্গ মেতে রয়েছে উৎসবে! জলের মতো টাকা খরচ হচ্ছে বিজ্ঞাপনে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যপাট সম্পর্কে এ ভাবেই ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁর পূর্বসূরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। 'বেঙ্গল লিড্স' শীর্ষক শিল্প সম্মেলন শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগে। দমদমের কালিন্দীতে দলীয় জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে রবিবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম সত্ত্বেও তাঁর জমানায় শিল্পের জন্য এগোনোর চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের সরকারের শিল্প ও জমি-নীতির দৌলতে রাজ্য ডুবছে অন্ধকারে। বুদ্ধবাবুর কথায়, "কৃষকদের আত্মহত্যা করতে হচ্ছে। কৃষি, শিল্প কিচ্ছু হচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গে! হচ্ছে শুধু বিজ্ঞাপন আর উৎসব! শিল্প নেই তবু এ সবের পিছনে কোটি কোটি টাকা! বিজ্ঞাপনের একেবারে বান বয়ে যাচ্ছে! এত বিজ্ঞাপন আমি দিইনি কখনও। মানুষের টাকায় আমার ছবি ছাপাব কাগজে, এটা হতে পারে কখনও!" 
ক্ষমতায় আসার দিন থেকেই নানা উৎসব, অনুষ্ঠান, পুরস্কার এবং সেই বাবদ বিজ্ঞাপনে মমতার সরকার বিশেষ মনোযোগী বলে অভিযোগ বিরোধীদের। ক্লাবকে আর্থিক অনুদান বা যুব উৎসবকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি সেই অভিযোগ আরও প্রবল হয়েছে। রাজনীতির কারবারিদের অনেকেই বলছেন, রাজ্যের উন্নয়ন নয়, হাততালি কুড়োনোর দিকেই নজর এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। শিল্প মহলের তুলনায় চলচ্চিত্র মহলের সান্নিধ্যেই তিনি বেশি স্বচ্ছন্দ। 
সেই দিকেই ইঙ্গিত করে এ দিন বুদ্ধবাবুর মন্তব্য, "এক-একটা মিটিং হচ্ছে, হাজার হাজার লোক নিয়ে আসছে আর খরচ হচ্ছে! পঞ্চায়েত নির্বাচন জিততে হবে, এমনও বলা হচ্ছে সরকারি মঞ্চ থেকে!" শিল্পে অনীহা নিয়ে মমতার সরকারকে ধারাবাহিক ভাবেই আক্রমণ করছেন বুদ্ধবাবু-নিরুপম সেনেরা। এতটা আক্রমণাত্মক বুদ্ধবাবুকে সাম্প্রতিক কালে দেখা যায়নি। সিপিএম সূত্রের ব্যাখ্যায়, একের পর এক ঘটনায় রাজ্য সরকার সম্পর্কে সমাজের বিভিন্ন অংশের অসন্তোষ স্পষ্ট হতেই কণ্ঠ আরও ধারালো হয়েছে বুদ্ধবাবুর। বুদ্ধবাবু এ দিন সওয়াল করেছেন তাঁর আমলের শিল্প নীতির পক্ষে। বলেছেন, "রাজ্যের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা হয়েছিল, বামফ্রন্ট মানেই সিঙ্গুর! বামফ্রন্ট মানেই নন্দীগ্রাম! আমরা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, খড়গপুর, নৈহাটিতে জমি নিয়েছি। কোনও গোলমাল হয়েছে?" 
সিঙ্গুরে তৃণমূল নেত্রীর দাবি মেনে ৪০০ একর জমি ছেড়ে দিলে টাটার কারখানা যে হত না, সে কথাও ফের বলেছেন বুদ্ধবাবু। বলেছেন, টাটার কারখানা হলে রাজ্যে অটো-মোবাইল শিল্পের খরা কাটত, যন্ত্রাংশের অনুসারী শিল্পের পথ ধরে আরও প্রকল্প আসত। তাঁর কথায়, "বলেছিলাম, ৪০০ একর দিলে কারখানা হয় না। নইলে আমার কী আপত্তি ছিল? আমরা কি জেদ করেছিলাম! গুজরাতে এখন টাটার পরে ফোর্ড গিয়েছে। চেন্নাইয়ে হবে, গুড়গাওঁয়ে হবে, গুজরাতেও হবে। বাংলা সেই অন্ধকারেই থেকে যাবে!"

সিপিএমের শিল্পায়নের প্রধান মুখ যখন দমদমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করছেন, তখন হলদিয়ায় সরব তাঁরই শিল্পায়ন-যুদ্ধের একদা প্রধান সেনাপতি নিরুপম সেন৷ 

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, দু'হাজার এগারোয় বুদ্ধবাবুর শিল্পায়ন স্লোগান মুখ থুবড়ে পড়লেও, দু'হাজার ছয়ে এই ইস্যুই যে ঐতিহাসিক জয় এনে দিয়েছিল তা আলিমুদ্দিনের জানা৷ তাই সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সামনে রেখেই শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান ইস্যুকে হাতিয়ার করে হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে চাইছে তারা৷ শুধু শহরাঞ্চল নয়, গ্রামাঞ্চলেও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখেই লড়াই করতে চাইছে তারা৷ তাই বুদ্ধ-নিরুপমদের গলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের শিল্প-ব্যার্থতাই বেশি করে জায়গা পাচ্ছে৷

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32449-2013-01-14-03-58-34


পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্লাব-খয়রাতি নিয়ে ক্ষুব্ধ যোজনা কমিশন। 
মুখ্যমন্ত্রী সরকারের তহবিল থেকে দু'বছরে আড়াই হাজারের উপরে ক্লাবকে মোট ৬০ কোটি টাকা দিয়েছেন। এখানেই শেষ নয়। আগামী পাঁচ বছর ধরে এই তালিকায় আরও ক্লাব জুড়ে খয়রাতি চালিয়ে যাওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন সদ্য গত পরশু। এই খবর জানার পরে যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান মন্টেক সিংহ অহলুওয়ালিয়া রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট চাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।


কিন্তু কেন ক্ষুব্ধ যোজনা কমিশন? 
যোজনা কমিশন সূত্রে খবর, বিভিন্ন সূত্রে তারা জানতে পেরেছে, ক্রীড়া ক্ষেত্রের জন্য যে যোজনা বরাদ্দ রয়েছে, তার থেকে ক্লাব-খয়রাতির টাকা জোগাচ্ছে রাজ্য সরকার। যোজনা কমিশনের এক উপদেষ্টা বলেন, "যোজনা বরাদ্দ থেকে এই অর্থ দেওয়া একেবারেই আর্থিক নীতিবিরোধী। এই বরাদ্দ ব্যবহার করা হয় এমন কিছুতে, যাতে স্থায়ী সম্পদ (ডিউরেবল অ্যাসেট) তৈরি করা যায়। যেমন, ক্রীড়া মন্ত্রকের সম্পদ হল স্টেডিয়াম, ফ্লাডলাইট, মাল্টিজিমের মতো পরিকাঠামো।" যোজনা কমিশনের পশ্চিমবঙ্গ সম্পর্কিত রিপোর্টে বলা হচ্ছে, রাজ্যে ৯৩ পয়সা খরচ হয় যোজনা বহির্ভূত ব্যয়ে আর ৭ পয়সায় উন্নয়ন হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অমিত মিত্র বারবার বলছেন যে, এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে অতীতের বামফ্রন্ট সরকার। কিন্তু যোজনা কমিশনের প্রশ্ন হল, যখন যোজনা বহির্ভূত ব্যয়ের এই পরিস্থিতি, তখন যোজনা বরাদ্দ থেকে কি এই ধরনের খরচ করা উচিত? যোজনা কমিশন কিন্তু মনে করে, যোজনা বরাদ্দও অডিট অনুসারে হওয়া উচিত। অর্থাৎ কোন খাতে কতটা প্রয়োজন, তার একটা আগাম বিশ্লেষণ হওয়া উচিত। অথচ রাজ্য সরকারেরই কোনও কোনও মহলের আশঙ্কা, এই টাকা ক্লাবগুলি কী ভাবে খরচ করবে, তার কোনও অডিট হওয়ার সম্ভব নয়। শুধু মন্টেক নন, যোজনা কমিশনের বহু উপদেষ্টাই তাই মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় উদ্বিগ্ন। যে রাজ্যের ২.২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ, সেই রাজ্যে এই ধরনের তহবিল বরাদ্দ উদ্বেগজনক।

যোজনা কমিশনের রিপোর্টে আরও বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিতে ২০০১ সালে কৃষি থেকে শিল্প অভিমুখে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। জনগণনার পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, পশ্চিমবঙ্গে ১৯৯১ সালে কৃষক ছিলেন শতকরা ৩৮.৪ ভাগ। যা ২০০১ সালে কমে দাঁড়ায় ২৫.৪ ভাগে। পাশাপাশি অকৃষিজাত কাজের সঙ্গে '৯৯ সালে যেখানে যুক্ত ছিলেন ২৯.৩% মানুষ, ২০০১ সালে সেখানে বেড়ে হয় ৪১.৬%। কৃষি ক্ষেত্র থেকে সরে অন্য কর্মক্ষেত্রে চলে যাওয়ার এই ধারাকে যোজনা কমিশন বলছে, অর্থনীতির পক্ষে ইতিবাচক। যোজনা কমিশনের এই তথ্য পেয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের সমীক্ষা থেকে। যোজনা কমিশন বলছে, যেখানে পশ্চিমবঙ্গ-সহ গোটা বিশ্বে কৃষি ক্ষেত্র থেকে অন্য কর্মক্ষেত্রে চলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, সেখানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও ভাবেই কৃষিজমি বিপন্ন না করার নীতি নিয়েছে। তাই তারা বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছে। এই শিল্প-বিরোধী নীতির ফলে পশ্চিমবঙ্গে বেকার যুবকদের সংখ্যা বাড়বে বই কমবে না। এই আর্থিক সঙ্কটের ফলে রাজ্য জুড়ে বাড়বে সামাজিক এবং মনস্তাত্ত্বিক সমস্যাও। যোজনা কমিশনের পশ্চিমবঙ্গ বিষয়ক উপদেষ্টারা ফি বছর পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করেন। এই রিপোর্ট মূলত রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তৈরি হয়। কিন্তু উপদেষ্টারা তাঁদের মতামতও এই রিপোর্টে ব্যক্ত করেন। জ্যোতি বসু থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, অশোক মিত্র থেকে অসীম দাশগুপ্ত, যোজনা কমিশন কিন্তু রাজ্য সরকারের বহু অবস্থানের সমালোচনা করেছে। মধু দণ্ডবতে যখন যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান ছিলেন, বাম শাসকদের বন্ধু-নেতা হওয়া সত্ত্বেও তিনি বেশ কিছু বিষয়ে রাজ্য সরকারের অর্থনীতির সমালোচনা করেছিলেন।
যোজনা কমিশন আজও পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক সমালোচনায় মুখর। যোজনা কমিশন বলছে, ১৯৯৯-২০০০ সালে পশ্চিমবঙ্গে মোট শিল্পের মধ্যে প্রাথমিক ক্ষেত্রে কাজ করতেন ৩৪ ভাগ মানুষ। এটি মূলত কৃষি ক্ষেত্র। ২০০৪-০৫ সালে এসে এই ক্ষেত্রে কর্মরতের সংখ্যা কমে হয়ে যায় ২২ শতাংশ। এই সময়ের মধ্যে সেকেন্ডারি সেক্টর, যা মূলত উৎপাদন শিল্প ক্ষেত্র, সেখানে বড় পরিবর্তন দেখা যায়নি (পাঁচ বছরে ১৮ শতাংশ থেকে তা সামান্য কমে ১৭ শতাংশ হয়েছে)। কিন্তু বেড়েছে টার্শিয়ারি (যা মূলত পরিষেবা ক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত) ক্ষেত্রে কর্মরতের সংখ্যা। ৪৮ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৯ শতাংশ। যোজনা কমিশনের বক্তব্য, এই পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট, কৃষির জীবিকা থেকে মানুষ সরে যাচ্ছে। এ কথা মাথায় রেখেই রাজ্য সরকারকে হাঁটকে হবে। ক্ষুব্ধ যোজনা কমিশন আরও বলছে, এই নিয়ে ভাবনাচিন্তা বা নীতি প্রণয়ন না করে ক্লাবকে খয়রাতি করে চলাটা এক ধরনের 'রাজনৈতিক ভর্তুকি'। যোজনা কমিশনের এক কর্তা আজ বলেন, "পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এতে রাজনৈতিক ডোপিং হতে পারে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতির কোনও দীর্ঘস্থায়ী সমাধান হতে পারে না।"
আগামিকাল হলদিয়া শিল্প সম্মেলন 'বেঙ্গল লিডস' শুরু হচ্ছে। তার আগে যোজনা কমিশন কিন্তু এমন একটি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যা নিয়ে শিল্পমহল বারবার সরব হয়েছে। তা হল বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ। ক্ষমতায় আসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার জানিয়ে দেন, তাঁর সরকার এ জন্য জমি নেবে না। শিল্প সংস্থাকে জমি মালিকদের কাছ থেকে কিনে নিতে হবে। 
যোজনা কমিশন জানাচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে নতুন শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে জমি-সঙ্কট এখন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। 
পশ্চিমবঙ্গে ৩৭ হাজার ৫৭৪ হেক্টর অকৃষি জমি রয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার হেক্টর জমি রাণীগঞ্জ-আসানসোলে কয়লাখনি। সাড়ে ৮ হাজার পাবর্র্ত্য এলাকায়। ৪ হাজার ৭০০ হেক্টর তরাই-তিস্তা এলাকায় বন্যাপ্রবণ অঞ্চলে। এ সব এবং আরও কিছু ক্ষেত্র বাদ দিলে শিল্পযোগ্য অকৃষি জমির পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ হাজার ৭১ হেক্টর। ২০০৭ সালের হিসেব ছিল, প্রস্তাবিত শিল্পের জন্য প্রয়োজন ৩৬ হাজার ৪২৭ হেক্টর, যা ২০১৩ সালে এসে আরও বেড়েছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, তখনই যা শিল্পযোগ্য অকৃষি জমি রয়েছে, তাতে চাহিদা মিটবে না। কৃষি জমি অধিগ্রহণ করতেই হবে। 
২০০৭ সালে বণিকসভা সিআইআই বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমীক্ষাকারী সংস্থা কেপিএমজি-র সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি সমীক্ষা করে। তাতে দেখা যায়, শতকরা ৫৭ ভাগ মানুষ মনে করেন, শিল্পের জন্য কৃষিজমি নেওয়া প্রয়োজন। আর ৮৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন, কৃষিজমি নিলে খাদ্যসুরক্ষার উপর তার কুপ্রভাব পড়বে না। যোজনা কমিশন বলছে, রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যখন জমি নিয়ে শিল্প করতে রাজি, তখন সেই পথে না হেঁটে রাজ্য সরকার ক্লাবগুলিতে 'হরির লুট' করছে কেন? এর ফলে শিল্পায়ন তো সম্ভবই নয়, উল্টে রাজ্যে অসামাজিক কার্যকলাপ বাড়ার আশঙ্কা যথেষ্টই। বিষয়টি নিয়ে যোজনা কমিশনের পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত অফিসাররা রাজ্যের যোজনা পর্ষদের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনায় বসবেন।

http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32450-2013-01-14-04-44-45


শীতের শহরে নক্ষত্র সমাগম। সেখানে হাজির টলিউড, বলিউড থেকে শুরু করে বিদেশি তারকারাও। সৌজন্যে কলাকার অ্যাওয়ার্ড। শিল্প ও সংস্কৃতি জগতের কয়েকজন ব্যক্তিত্বকে সম্মান জানাতে কলাকার অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে। সেই অনুষ্ঠানে সেরা বাংলা নিউজ চ্যানেলের সম্মান পেল ২৪ ঘণ্টা।

রবিবার সন্ধেয় এক অনবদ্য সময়ের সাক্ষী রইল সায়েন্স সিটি প্রেক্ষাগৃহ। তারকাদের মহামিলনে তৈরি হল এক আশ্চর্য আবহ। ঘরের টলিউডপাড়া থেকে শুরু করে আরব সাগরের তীরের বলিউড, অতিথি বাসরে সবাই হাজির। 

কলাকার অ্যাওয়ার্ডে সেরা বাংলা নিউজ চ্যানেলের পুরস্কারে সম্মানিত চব্বিশ ঘণ্টা। 

সারা জীবনের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হল অমলা শঙ্করকে। জীবন্ত কিংবদন্তীর সম্মানে সম্মানিত হলেন প্রেম চোপড়া। 

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত হলেন ক্যুইন অফ টলিউড। 

ওম শান্তি ছবির জন্য সেরা পরিচালকের সম্মান পেয়েছেন শতাব্দী রায়। 

সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেলেন বোমান ইরানি। 

সিরিন ফারহাদ কি তো নিকল পড়ি ছবিতে অভিনয়ের জন্য বলিউডের বেস্ট ডেবিউ অ্যাকট্রেস পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন ফারহা খান।

খিলাড়ি ৭৮৬ ছবিতে অক্ষয় কুমারের সঙ্গে আইটেম নম্বরে পারফর্ম করেছেন জার্মানির অভিনেত্রী ক্লডিয়া। বেস্ট ডেবিউ ফরেন ফেসের পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।


নাগপুর: আয়কর ফাঁকির অভিযোগ ঘিরে ফের অস্বস্তিতে বিজেপি সভাপতি নিতিন গড়কড়ী। বিজেপি সভাপতি ও তাঁর সম্পর্কিত কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়ে গড়কড়ীকে তলব করল আয়কর বিভাগ। গত কয়েকমাসে তদন্ত চালিয়ে প্রাপ্ত কয়েকটি নথি সম্পর্কে বক্তব্য জানানোর জন্য গড়কড়ীকে ব্যক্তিগতভাবে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে আয়কর বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, আগামী ২১ জানুয়ারি গড়কড়ীকে তলব করেছে আয়কর বিভাগ। যদিও গড়কড়ী শিবিরের দাবি, আয়কর বিভাগের সামনে হাজিরা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কোনও নোটিশই পাননি।
পিটিআই জানিয়েছে,এর আগে গড়কড়ী নাগপুরে না থাকার কারণে তাঁর হাজিরা দু সপ্তাহের জন্য মুলতুবি রাখার আর্জি জানিয়েছিলেন। তাঁর সেই আর্জি মঞ্জুর করা হয়েছে। এখন ২১ জানুয়ারি গড়কড়ীর হাজিরা দেওয়া নতুন দিন স্থির করা হয়েছে বলে আয়কর বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। 
গড়কড়ীর কোম্পানি পূর্তি পাওয়ার অ্যান্ড সুগার লিমিটেডে যেসব কোম্পানিগুলি বিনিয়োগ করেছিল তাদের সম্পর্কে তদন্ত চালিয়ে আয়কর বিভাগ দিল্লিতে সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ডাইরেক্ট ট্যাক্স (সিবিডিটি)কে একটি রিপোর্টও পাঠিয়েছে। সূত্র  মারফত্ জানা গেছে, আয়কর বিভাগের তদন্তে গড়কড়ীর কোম্পানির সঙ্গে 'আর্থিক লেনদেন' থাকা প্রায় ৩০ টি কোম্পানি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছে।
অন্যদিকে, গড়কড়ীর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে দাবি করা হয়েছে, এধরনের  হাজিরা দেওয়ার কোনও নোটিশই আয়কর বিভাগের কাছ থেকে পাননি গড়কড়ী। পূর্তি পাওয়ার অ্যান্ড সুগার লিমিটেডের বিরুদ্ধে আয়কর সংক্রান্ত একটি মামলা কিছুদিন ধরেই চলছে। কিন্তু গড়কড়ী এবিষয়ে আদৌ জড়িত নন। কেননা, অনেকদিন আগেই তিনি পুর্তি গ্রুপ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে দাবি গড়কড়ীর ঘনিষ্ঠ মহলের।

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32431-2013-01-13-08-13-27


দেরাদুন: মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে মন্তব্য করে এবার বিতর্কে জড়ালেন  উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বহুগুণা৷ সম্প্রতি উত্তরাখণ্ডের ডিজিপি মন্তব্য করেন, নিরাপত্তার স্বার্থে, কাজের জন্য সন্ধে ৬টার পর মহিলাদের বাড়ির বাইরে থাকা উচিত নয়৷ আজ এই মন্তব্যকেই সমর্থন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বহুগুণা৷ এমনকি, তাঁর বক্তব্য, কাজ থেকে ফিরতে দেরি হলে, সেই মহিলাকে, নিরাপত্তা দিয়ে বাড়ি ফেরানোর দায়িত্ব, সংশ্লিষ্ট সংস্থারই৷ মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য, আসলে দায় এড়ানোর কৌশল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ বিজয় বহুগুণার এহেন মন্তব্যে সমালোচনায় মুখর সবমহল৷ সম্প্রতি মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত এবং বিজেপি বিধায়ক ‍রমেশ বায়েসের মন্তব্য ঘিরেও বিতর্ক তৈরি হয়েছিল৷ 

http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32409-2013-01-12-10-55-58


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ বিশিষ্ট লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর বাড়িতে গিয়ে তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে এলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷ আধঘণ্টা কথা হয় দু'জনের মধ্যে৷ প্রদীপ ভট্টাচার্যের দাবি, রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মহাশ্বেতা দেবী৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি আরও জানান, রাজ্যে পরিবর্তনে, অন্যতম কাণ্ডারির ভূমিকা নিয়েছেন মহাশ্বেতা দেবী৷ তৃণমূল সরকারের আমলে রাজ্যে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তার পরিবর্তনেরও কাণ্ডারির ভূমিকা নেওয়ার জন্য এই প্রবীন সাহিত্যিকের আছে আর্জি জানান তিনি৷ 

প্রতিবছরই মহাশ্বেতা দেবীর জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবারও ১২ জানুয়ারি সাহিত্যিকের কসবার বাড়িতে গিয়ে তাঁকে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু, এই প্রথম মহাশ্বেতা দেবীর বাড়িতে গেলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে কেন? তৃণমূলের অভিযোগ, রাজনীতি করতেই মহাশ্বেতা দেবীর বাড়িতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷ যদিও, সে অভিযোগ খারিজ করে দেন, প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ 
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, পরিবর্তনে যে বিদ্বজ্জনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল, সম্প্রতি তাঁদের একাংশ নানা ইস্যুতে সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেছে৷ এমনকী, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের সমালোচনার করেছেন মহাশ্বেতা দেবী নিজেও৷ এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলর সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মহাশ্বেতা দেবীকে পাশে পেতেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির এই জন্মদিন-কৌশল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা৷ 


http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32463-2013-01-14-08-28-12


বিনিপয়সায় চিকিত্‍সা কোন সিপিএম নেতাদের, হাসপাতালকে মদনের চিঠি



বিনিপয়সায় চিকিত্‍সা কোন সিপিএম নেতাদের, হাসপাতালকে মদনের চিঠি
এই সময়: ভাঙড়কাণ্ডে বিতর্ক আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র। বাম জমানা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত কত জন সিপিএম নেতা নিখরচায় চিকিত্‍সা করিয়েছেন, আরএন টেগোর হাসপাতালকে চিঠি পাঠিয়ে তা জানতে চেয়েছেন তিনি। পরিবহণমন্ত্রীর এ ধরনের চিঠি পাঠানোর এক্তিয়ার রয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ভাঙড়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই এই উদ্যোগ। 

চিকিত্‍সার প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও, রেজ্জাক মোল্লাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য হাসপাতালের উপর চাপ তৈরি করছে প্রশাসন। এহেন অভিযোগের মধ্যেই চিঠি মদন মিত্রর। তাঁর অভিযোগ, বিনা খরচে চিকিত্‍সা করিয়েও সিপিএমের বেশ কয়েক জন বিধায়ক সরকারের থেকে চিকিত্‍সাবাবদ টাকা তুলেছেন। সে কারণেই তিনি হাসপাতালের কাছে এই তথ্য চেয়েছেন। গত ১০-১৫ বছরে সিপিএমের কত জন মন্ত্রী বিনা খরচে চিকিত্‍সা করিয়েছেন, তার সবিস্তার তথ্য চেয়েছেন তিনি। পরিবহণমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, বিষয়টি প্রয়োজনে তিনি বিধানসভায় তুলবেন। 

চিঠি প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর কটাক্ষ, 'পরিবহণ দফতর কবে থেকে স্বাস্থ্য দফতর দেখতে শুরু করল, জানি না।' সরকার 'প্রতিহিংসাপরায়ণ' বলে তাঁর খোঁচা, 'আবদুর রেজ্জাক মোল্লা কেমন আছেন, সে খবর না-নিয়ে কে কবে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সে তথ্য খোঁজা হচ্ছে।'

গঙ্গাসাগরের পথে দেদার তোলাবাজি পার্কিং লটে



গঙ্গাসাগরের পথে দেদার তোলাবাজি পার্কিং লটে
এই বাসগুলিই খারাপ করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে বাড়তি অর্থ আদায় চলছে।---নিজস্ব চিত্র
শুভেন্দু হালদার 

ডায়মন্ড হারবার: তীর্থক্ষেত্রেও ছাড় নেই তোলাবাজিতে৷ গঙ্গাসাগরের পথে গাড়িচালকদের কাছ থেকে জবরদস্তি টাকা আদায়ে জড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূলের নাম৷ গাড়িচালকরা সরাসরি অভিযোগ করায় প্রশাসন বা তৃণমূল নেতা কেউই একেবারে অভিযোগটি অস্বীকার করতে পারছেন না৷ তবে দলের কেউ এতে জড়িত নন বলে সাফাই দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা৷ 



বাড়তি টাকা আদায় হচ্ছে গঙ্গাসাগরের পথে পাকিং লটে৷ মূলত লট নম্বর ৮ এবং হারউড পয়েন্টে ওই অভিযোগ তুলছেন ভিন রাজ্য থেকে তীর্থযাত্রীদের নিয়ে আসা গাড়ির চালকরা৷ এর মধ্যে বাস যেমন আছে, তেমনি ছোট গাড়িও রয়েছে৷ পার্কিংয়ের জন্য গাড়ি অনুযায়ী আলাদা আলাদা ফি ধার্য করেছে প্রশাসন৷ পাকিং তদারকি করার জন্য স্থানীয় কিছু যুবককে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিয়োগ করেছেন তাঁরা৷ অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধেই৷ এই স্বেচ্ছাসেবকরা সবাই তৃণমূল কর্মী বলে প্রশাসনের কাছে নালিশ জানিয়েছে সিপিএম৷ 



নির্ধারিত পার্কিং ফি ছাড়াও অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে ভয় দেখিয়ে৷ গাড়িচালকদের অভিযোগ এমনই৷ প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী ছোট গাড়ি প্রতি ৪০০ এবং বাসের জন্য পার্কিং ফি ৬০০ টাকা৷ কিন্ত্ত রসিদ দিয়ে সেই টাকা নিয়ে আরও বেশি অর্থ আদায় চলছে বিনা রসিদে৷ গাড়ি খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে চলছে এই তোলাবাজি৷ অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে তীর্থযাত্রীদের নিয়ে এসেছেন বাসচালক শেখ রহিম৷ তিনি বলেন, 'পার্কিংয়ে গাড়ি ঢোকানোর সঙ্গে সঙ্গে আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকা নিয়েছিল ব্যাজ পরা কেউ৷ পরে সন্ধ্যার দিকে আবার রসিদ নিয়ে এসে পার্কিং ফি নিয়েছে ৬০০ টাকা৷ বাইরে এসেছি, ফলে প্রতিবাদ করতে পারিনি৷ তবে মনে হচ্ছে, ৩০০ টাকাটা ঘুষ দিতে হয়েছে৷' 



রাজস্থানের এক বাসচালক রাজু পাটানের অভিজ্ঞতা একই রকম৷ তিনি বলেন, '৬০০ টাকা পার্কিং ফি দিয়েছি৷ তার জন্য রসিদ দিয়েছিল৷ তার পর বুকে ব্যাজ লাগানো এক দল যুবক এসে আরও ৫০০ টাকা চাইলেন৷ ভয় দেখালেন, টাকা না দিলে গাড়ি খারাপ করে দেবেন৷ ভয়ে তাই দিয়ে দিলাম৷' কাকদ্বীপের সিপিএম নেতা রাম দাস বলেন, 'এই তোলাবাজি ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে৷ কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক ও এসডিপিও-কে জানালেও, তাঁরা কোনও প্রতিকার করেননি৷ ব্যাজ লাগানো যুবকদের নিয়োগ করেছেন তৃণমূল নেতারা৷ তাই ধরেই নেওয়া যায়, এই তোলাবাজিতে তাঁদের প্রশ্রয় আছে৷' 



কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক অমিতকুমার নাথ বলেন, 'পার্কিং প্লেসে পুলিশ ও এনভিএফ কর্মীরা আছেন৷ ফলে এমনটা হতে পারে না৷ যদি সত্যি হয়ে থাকে, তার মানে বহিরাগত কেউ এসব করছে৷' সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, 'এ রকম ঘটনা হতেই পারে না৷ যারা বলছেন, তাঁদের বলুন পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে৷'


সি ফুড ফেস্টিভ্যাল শুরু হচ্ছে মোহনায়



সোমনাথ মাইতি 

দিঘা: সি ফুড বলতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ইলিশ-চিংড়ি-তপসে-ভাঙর-পমফ্রেট-কাঁকড়া৷ একটু সাহসী হতে চাইলে, হাতের নাগালে রয়েছে নামী রেস্তোরাঁ৷ কিন্ত্ত গত তিন বছর ধরে এই রাজ্যেই আয়োজিত হচ্ছে সি ফুড ফেস্টিভ্যাল৷ তা-ও এক্কেবারে হাতের মুঠোয়৷ দিঘার কাছে মোহনায়৷ দিঘায় বিচ ফেস্টিভ্যালের মরসুমেই মোহনাও নিয়ে বসবে সি ফুডের পসরা৷ এ বার ফেস্টিভ্যাল শুরু হচ্ছে ১৬ জানুয়ারি৷ চলবে ২০ তারিখ পর্যন্ত৷ 

দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রণব কর বলেন, সমুদ্র থেকে একশোরও বেশি প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়৷ রুলি, তাপড়া, কাগজার মতো এমন অনেক সামুদ্রিক মাছ আছে যা অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়া সত্ত্বেও তেমন জনপ্রিয় নয়৷ খাওয়া তো দূরের কথা, বেশির ভাগ মানুষই এ সব মাছ চোখে দেখেননি, নাম শোনেননি৷ স্থানীয় বাজারে মাছগুলির চাহিদা রইলেও, বাকি রাজ্যে এই মাছগুলি তেমন বিক্রি হয় না৷ 



প্রদর্শনীতে প্রায় ১০০ রকমের সামুদ্রিক মাছ দেখতে পাওয়া যাবে৷ তবে শুধু চোখের দেখাই নয়, রসনা তৃপ্তিরও বন্দোবস্ত থাকবে এখানে৷ মাছের চপ-কাটলেট-ফ্রাই- চেখে দেখতে পারেন যে কোনও পদ৷ ইলিশ-চিংড়ির লড়াই চলবে এখানেও৷ সেই সঙ্গে অবশ্যই থাকবে নাম-না-জানা রকমারি স্বাদু মাছের ডিশ৷ এই সব মাছ জনপ্রিয় হলে, চাহিদা বাড়লে উপকৃত হবেন দরিদ্র মত্‍স্যজীবীরা৷ মিষ্টি জলের মাছে টান পড়ায়, এতে বাজারের ঘাটতিও পূরণ হতে পারে৷ মোহনায় সি ফুড ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন করবেন মত্‍স্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিং৷ উদ্যোক্তারা আশা করছেন, মুখ্যমন্ত্রী বিচ ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে দিঘায় এলে, মোহনাতেও একবার ঘুরে যাবেন৷ ঠিক যেমন গত বছর হঠাত্‍ করেই চলে এসেছিলেন তিনি৷

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা নেই, বললেন হাসিনা



ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা নেই, বললেন হাসিনা
ঢাকা: ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে কোনও সমস্যা নেই বললেই চলে। সোমবার এ কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। তিনি বলেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে শান্তি বজায় রাখাই তাঁর সরকারের প্রথম লক্ষ্য। আর তা সামনে রেখেই তাঁরা চলছেন। 

রাশিয়া সফরে যাওয়ার আগে হাসিনা বলেছেন, 'আমাদের দেশের ভৌগোলিক অবস্থান সকলের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখতে আমাদের বাধ্য করে। তাঁর বাবা মুজিবর রহমানের কথা তুলে ধরে হাসিনা বলেছেন, 'প্রত্যেকের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলাটা গুরুত্বপূর্ণ।' দক্ষিণ এশিয়ায় বিতর্কিত বিষয়গুলি নিয়ে অশান্তি যতটা সম্ভব কমানোর কথা বলে হাসিনা জোর দিয়েছেন আলোচনার উপর। কী ভাবে এই সুসম্পর্ক বাংলাদেশকে সাহায্য করেছে, তা বোঝাতে গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন তিনি। বলেছেন, 'গঙ্গার জল বণ্টন নিয়ে ভারতের সঙ্গে যে সমস্যা ছিল, তা অনায়াসেই মিটেছে। 




খুন-ধর্ষণ-নিগ্রহ, এক দশকে বেড়েছে নাবালকদের অপরাধ



খুন-ধর্ষণ-নিগ্রহ, এক দশকে বেড়েছে নাবালকদের অপরাধ
নয়াদিল্লি: 'যে ছেলেটাকে সবাই নাবালক বলছে, আমার মেয়েকে লোহার রড দিয়ে মেরেছিল সে৷ শরীরের ভিতরে রড ঢুকিয়ে অন্ত্র পর্যন্ত টেনে বার করে এনেছিল৷ ওর কাতর অনুনয়ের উত্তরে গালি দিয়েছিল৷ তা সত্ত্বেও আইন ওকে নাবালক বলবে?' 

১৬ ডিসেম্বরের ঘটনার পর প্রথম বার মুখ খুলে যে প্রশ্নটা তুলেছেন দিল্লির সাহসিনীর মা, তা নিয়ে আপাতত তোলপাড় দেশের বিচার ব্যবস্থা৷ ধর্ষণ বা হত্যার মতো অপরাধের ক্ষেত্রে নাবালকদের বয়ঃসীমা পরিবর্তনের পক্ষে উঠছে জোর সওয়াল৷ কিন্ত্ত অনেক আগেই হয়তো প্রশাসনিক স্তরে এ বিষয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হওয়ার অবকাশ ছিল৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তথ্য বলছে, গত এক দশকে অস্বাভাবিক দ্রুত হারে বেড়েছে নাবালক অপরাধ৷ 

২০০১ সালে ধর্ষণে অভিযুক্ত নাবালকের সংখ্যা ছিল ৩৯৯৷ ২০১১-এ তা পৌঁছেছে ১৪১৯-এ৷ হত্যার ক্ষেত্রেও চিত্রটা কাছাকাছিই৷ ২০০১-এর ৫৩১ জন অভিযুক্তের সংখ্যাটা ২০১১-এ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৮৮৷ 
মহারাষ্ট্র, গুজরাটের মতো রাজ্যগুলিতে গ্রেপ্তার হওয়া নাবালকের সংখ্যা ৫ হাজার ছাড়িয়েছে৷ শুধুমাত্র দিল্লিতেই অভিযুক্ত ৯৪২৷ ক্রমাগত বেড়ে চলা অপ্রাপ্তবয়স্ক অপরাধীদের রুখতে কী শুধু আইনই যথেষ্ট, নাকি পরিবর্তনের প্রয়োজন আরও গভীরে, শিক্ষা ও সচেতনতার স্তরে? প্রশ্ন যাই হোক, উত্তর খোঁজাটা আশু প্রয়োজন৷
- পিটিআই

দিল্লি গনধর্ষণের স্মৃতি উস্কে পাঞ্জাবের বাসে নিগ্রহ, ধৃত ৭
চণ্ডীগড় ও শ্রীনগর: দেশজোড়া ধর্ষণ-বিরোধী প্রতিবাদ, সচেতনতা প্রসারের উদ্যোগ - কিন্ত্ত কিছুতেই টনক নড়ছে না বিকৃতকামদের, ঘুম ভাঙছে না 'ধীরে চলো' বিচারব্যবস্থার৷ তাই দিল্লির গণধর্ষণের মতো ঘটনা ফের ঘটে গেল পাঞ্জাবে৷ আর কিশোরী মেয়ের ধর্ষক ও খুনিদের বিচার চেয়ে দাঁতে দাঁত চেপে দিন গুনতে হয় কাশ্মীরের কোনও পিতাকে৷ 
অবশ্য পাঞ্জাবের ঘটনায় অভিযুক্তদের তত্‍পরতার সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ বাসচালক দালের সিং ও কন্ডাক্টর রবি-সহ ৭ অভিযুক্তই গ্রেপ্তার হয়েছে৷ পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের তিন দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়েছে, এবং প্রাথমিক জেরার মুখে তারা অপরাধ স্বীকারও করেছে৷ 
পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে বাসে উঠে গণধর্ষণের শিকার হন ২৮ বছরের এক তরুণী৷ পুলিশ সূত্রে খবর, বিবাহিতা ওই তরুণীর বাপের বাড়ি পাঞ্জাবের পাঠানকোট জেলায়৷ সেখান থেকে গুরুদাসপুর অঞ্চলে নিজের শ্বশুরবাড়িতে আসার জন্য শুক্রবার সন্ধেবেলা একটি মিনিবাসে ওঠেন তিনি৷ গুরুদাসপুরের ঘুকলা গ্রামের বাস-স্ট্যান্ডে নামার কথা ছিল তাঁর৷ অভিযোগ, গন্তব্যে পৌঁছে গেলেও সেখানে থামতে অস্বীকার করেন বাসচালক৷ প্রমাদ গোনেন ওই তরুণী৷ বারবার কন্ডাক্টরকে বাস থামানোর জন্য অনুরোধ করেন তিনি৷ কিন্ত্ত সেই মিনতি কানে তোলা হয়নি৷ 

রাত্রিবেলা এক অচেনা নির্জন জায়গায় বাসটি থামে৷ বাসচালক আর কন্ডাক্টরের ৫ 'বন্ধু'ও সেখানে জড়ো হয়েছিল৷ সবাই মিলে ওই তরুণীকে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে যায়৷ সেখানেই সারা রাত ধরে তাঁর উপর চলে অমানবিক অত্যাচার৷ আক্রান্ত তরুণীর কথায়, 'ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমাকে আটকে রাখা হয়৷ ওদের কথা মতো চলতে বাধ্য হই আমি৷' 
শনিবার সকালে ঘুকলা গ্রামের কাছে ওই তরুণীকে নামিয়ে দিয়ে যায় অভিযুক্তরা৷ সে দিনই স্থানীয় কানুওয়ান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি৷ তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়৷ গ্রেপ্তার হয় সব অভিযুক্তই৷ 
অন্য দিকে, ২০০৭ সাল থেকে ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন শ্রীনগরের বাসিন্দা আব্দুল গনি শাহ৷ স্কুল থেকে ফেরার পথে তাঁর ১৪ বছরের মেয়েকে অপহরণ করে ৪ দুষ্কৃতী৷ ওই কিশোরীকে গণধর্ষণ করার পর তার গলার নলি কেটে মৃতদেহ রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায় তারা৷ জনরোষের মুখে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ তত্‍কালীন কংগ্রেস সরকার মৃতার পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও দ্রুত বিচারের প্রতিশ্রীতিও দেয়৷ কিন্ত্ত পাঁচ বছর পরও অপরাধীদের সাজা দেওয়ার ধারেকাছে পৌঁছতে পারেনি আদালত৷ বরং বিচারের দাবি চেয়ে পথে নামা ২০ জন বিক্ষোভকারীকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়৷ আব্দুলের দাবি, অপরাধীদের ফাঁসিতে ঝোলানো হোক৷ আর কোনও ক্ষতিপূরণ তিনি চান না৷

মঙ্গলবারের মধ্যে ৮০০০ কোটি স্পেকট্রাম ফি চায় সরকার



মঙ্গলবারের মধ্যে ৮০০০ কোটি স্পেকট্রাম ফি চায় সরকার
নয়াদিল্লি: স্পেকট্রাম বণ্টন বাবদ বকেয়া ফির প্রথম কিস্তির ৮,১১৫.৬৮ কোটি টাকা ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এক সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, 'যদি টেলিকম সংস্থাগুলি কিস্তিতে টাকা দিতে চায় তবে সব সংস্থাকেই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রথম কিস্তির টাকা দিতে হবে যার যোগফল আট হাজার কোটি টাকা৷' 

প্রথম কিস্তি হিসাবে ভোডাফোনকে ২,০৯৩ কোটি টাকা, এয়ারটেলকে ১,৭৫৮ কোটি, বিএসএনএল-কে ১,২৮২.৯৮ কোটি এবং এমটিএনএলকে ৯১৬ কোটি টাকা দিতে হবে৷ আইডিয়া সেলুলারের ক্ষেত্রে এই অঙ্ক ৮১০ কোটি (স্পাইস কমিউনিকেশনসের ৮৪.৪৫ কোটি টাকা ধরে), এয়ারসেলের ৫৮৪ কোটি (ডিসনেটের ১.৯৮ কোটি টাকা ধরে), লুপ মোবাইলের ৬০৭ কোটি টাকা ও রিলায়েন্স কমিউনিকেশনের ৬৩ কোটি টাকা৷ 
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি ভারতী এয়ারটেল ও রিলায়েন্স৷ জিএসএম মোবাইল পরিসেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলির সংগঠন সিওএআই-এর মহানির্দেশক রঞ্জন ম্যাথিউজ বলেন, 'আমাদের সদস্যরা আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখছে, তারা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে৷' 

একেবারে গোড়ায় সারা ভারতের জন্য ১,৬৫৮ কোটি টাকায় ৪.৪ মেগাহাত্র্‌জ স্পেকট্রাম বণ্টন করে কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রক ৷ নির্দিষ্ট গ্রাহকের উপর নির্ভর করে পরে আরও ১.৮ মেগাহাত্র্‌জ পর্যন্ত স্পেকট্রাম পেতে পারত পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি৷ 

নভেম্বরেই সরকার স্থির করে, ২০০৮ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারির মধ্যে যে সব সংস্থা ৬.২ মেগাহাত্র্‌জের বেশি স্পেকট্রাম ব্যবহার করেছে তাদের অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য অর্থ দিতে হবে৷ গত নভেম্বরে নিলামে যে দাম ওঠে তার উপর ভিত্তি করেই অর্থের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে৷ 


শিল্প বাঁচানোর মঞ্চ ভাঙচুরে অভিযুক্ত তৃণমূল
ক দিকে অব্যবস্থা। অন্য দিকে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন। 
রাত পোহালেই যে শিল্প-শহরে বসছে শিল্প সম্মেলন 'বেঙ্গল লিড্স', সেই হলদিয়ায় শিল্প বাঁচানোর স্লোগান নিয়ে সভা করতে আসা ডিওয়াইএফের মঞ্চ ভাঙচুর করা হল। ডেকরেটরের কর্মীদের ভোজালি দেখিয়ে বেঁধে মারধর করল দুষ্কৃতীবাহিনী। তছনছ করা হল মাইক। গুন্ডামির জেরে এবিজি বিদায়ের পরে আরও এক বার কাঠগড়ায় উঠল হলদিয়ার আইনশৃঙ্খলা। দেশের শিল্পমহলের সামনে যা মোটেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়। 
শনিবার রাতে হলদিয়ার সুতাহাটা এলাকার ওই ঘটনায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে ডিওয়াইএফ এবং সিপিএম। রবিবার ভাঙা মঞ্চের পাশে নতুন করে মঞ্চ বেঁধে সভা করে তারা। সেখানে প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন বললেন, "শাসক দল মানুষকে ভয় পাচ্ছে। সে জন্যই ভাঙড় থেকে হলদিয়া, বারবার হামলা চালানো হচ্ছে বিরোধী কর্মী-সমর্থকদের উপর।" আর তমলুকের প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের বক্তব্য, "হলদিয়া বাঁচানোর দাবিতেই সভার আয়োজন হয়েছিল। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা তা বিঘ্নিত করল। আতঙ্কের এই পরিবেশে বড় কোনও শিল্পসংস্থা এখানে আসবে না।" 
শিল্পমহলের একাংশেরও অভিমত, এই ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা শিল্পের পরিপন্থী। 'বেঙ্গল লিড্স'-এর আগে এমন ঘটনা শুধু নতুন লগ্নি টানার ক্ষেত্রে নয়, যে সব সংস্থা ইতিমধ্যেই সেখানে রয়েছে, তাদের কাছেও বিরূপ বার্তা দেয়। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ডিওয়াইএফের সম্মেলনে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে আর এক শিল্পাঞ্চল আসানসোলের বারাবনিতেও। রবিবার সংগঠনের বারাবনি-১ লোকাল কমিটির সম্মেলন ছিল স্থানীয় নুনি গ্রামে। সকাল ১০টা নাগাদ সম্মেলন শুরু হয়। লোকাল কমিটির সম্পাদক কপিল ঘোষের অভিযোগ, "হঠাৎ কুড়ি-বাইশ জন দুষ্কৃতী মোটরবাইকে চড়ে হাজির হয়। তাদের হাতে ছিল রিভলভার, লাঠি ও রড। ওরা প্রথমেই শহিদ বেদী উল্টে দেয়। ম্যারাপ লন্ডভন্ড করে চেয়ার-টেবিল উল্টে দেয়।"
ভাঙা মঞ্চের পাশে তৈরি হচ্ছে নতুন মঞ্চ।—নিজস্ব চিত্র
ডিওয়াইএফের রাজ্য সভাপতি আভাস রায়চৌধুরী বলেন, "হলদিয়া ও বারাবনির ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামছি।" 
যদিও দু'টি ঘটনার সঙ্গেই দলের কোনও যোগ আছে বলে মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর মোবাইল দিনভরই বন্ধ ছিল। তবে সুতাহাটায় তৃণমূলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রাক্তন বিধায়ক তুষার মণ্ডলের পাল্টা অভিযোগ, "বেঙ্গল লিড্সের আয়োজন সহ্য করতে না পেরেই গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা হচ্ছে।" বারাবনির যুব তৃণমূল নেতা পাপ্পু উপাধ্যায়ের দাবি, "ডিওয়াইএফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ওই ঘটনা।"
গত ৭ জানুয়ারি কলকাতা থেকে শুরু হয়েছিল সিপিএমের যুব সংগঠনের পদযাত্রা 'হলদিয়া বাঁচাও, রাজ্যের শিল্প বাঁচাও'। শনিবার পদযাত্রা হলদিয়ায় পৌঁছয়। রবিবার সুতাহাটার আমলাট আজাদ হিন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সভা হওয়ার ছিল। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ যখন মঞ্চ বাঁধার কাজ চলছে, তখন তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মাইকের দায়িত্বে থাকা শঙ্করপ্রসাদ কুইল্যার কথায়, "কিছু দুষ্কৃতী ভোজালি নিয়ে চড়াও হয়। আমাদের বেঁধে রেখে মঞ্চ ভেঙে দেয়। তার পর মাইক সেট তুলে নিয়ে চলে যায়।" এ দিনই দুপুরে সুতাহাটা থানায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলা ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেন ডিওয়াইএফ নেতা মিলন বেরা। তবে, রাত পর্যন্ত কাউকে ধরতে পারেনি পুলিশ। অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। 
এ দিন নিরুপমবাবু অভিযোগ করেন, "হাজার হাজার কোটি টাকা লগ্নির কথা বলা হলেও এখানে শিল্প-বান্ধব পরিবেশ নেই।" তাঁর আক্ষেপ, "যারা অনেক শিল্প গোষ্ঠীকে হলদিয়া ছাড়া করল, তারাই আজ করছে 'বেঙ্গল লিড্স'!"
http://www.anandabazar.com/14med1.html

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...