আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে আগামী ২০ তারিখ দার্জিলিংয়ে জনসভা করবে মোর্চা। ২৭ তারিখ সভা করবে কার্শিয়াংয়ে। ২৮ জানুয়ারি শিলিগুড়ি সফরে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরের দিন দার্জিলিংয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর। মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগেই আন্দোলন জোরদার করে তোলার ইঙ্গিত দিয়েছেন রোশন গিরি।
চলতি মাসেই পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। তেলেঙ্গানা গঠনের সম্ভাবনা দেখা দিতেই গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে মোর্চা ফের আন্দোলনে নামতে চলেছে। মোর্চার দাবি, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি তেলেঙ্গানার চেয়ে পুরনো। সেখানে তেলেঙ্গানা নিয়ে চিন্তাভাবনা করলেও কেন্দ্র গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে উপেক্ষা করছে বলে অভিযোগ মোর্চা নেতৃত্বের।
রাজ্যে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত দেড় বছর ধরে পাহাড়ের পরিস্থিতি মোটের উপর শান্তিপূর্ণ। মিটিং-মিছিল, লাগাতার ধর্মঘট বন্ধ হওয়ায় পর্যটকদের ভিড়ও বেড়েছিল পাহাড়ে। কিন্তু পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ায় পাহাড়ে ফের অশান্তির ছায়া।
নর্দার্ন আর্মির কম্যান্ডার জেনারেল কেটি পারনায়ক জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করার অভিযোগ ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে বার বার নাকচ করেছিল পাক সেনা। তখন তাদের সামনে এই ছবি তুলে ধরা হয়। কিন্তু কী ভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে ল্যান্ডমাইন পুঁতে গেল পাক সেনা? পারনায়ক বলেছেন, 'সীমান্তের ওপার থেকে আমাদের পিকেট লক্ষ্য করে ক্রমাগত গুলি চলেছে। রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসীরা সীমান্ত পার করে এই মাইন পুঁতে গিয়েছে। আমরা সেগুলি খুঁজে বের করেছি। এগুলি সবই পাকিস্তানি মাইন। পাকিস্তানের যে ব্রিগেডিয়ার ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে এসেছিলেন, তাঁকে এই ছবি আমরা দেখিয়েছি।'
এদিকে এদিনই নিয়ন্ত্রণরেখায় পাক সেনার হাতে নির্মম ভাবে নিহত ল্যান্স নায়েক হেমরাজ সিংয়ের বাড়িতে গেলেন সেনাপ্রধান। বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিং হেমরাজের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, 'এটা আমারও রিবার। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।' আগামী ১৮ তারিখ তিনি যাবেন আর এক নিহত জওয়ানের বাড়িতে।
নিহত হেমরাজের শিরশ্ছেদ করেছে পাক সেনা। গত সপ্তাহেই নিহত জওয়ানের মাথা ফেরত আনার দাবিতে অনশনে বসেছিলেন হেমরাজের মা ও স্ত্রী। তাঁদের দাবি ছিল, সেনাপ্রধানকে তাঁদের বাড়ি গিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে। এর আগে অবশ্য উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের হস্তক্ষেপে তাঁদের অনশন ওঠে। সেনাপ্রধানও জানিয়েছিলেন তিনি যাবেন।
আজ বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই চাঙ্গা মুম্বই স্টক মার্কেট। কয়েক মিনিটের জন্য হলেও দু`বছর পর সেনসেক্সের সূচক ছুঁয়ে ফেলে ২০ হাজারের সীমারেখা। তবে বিশ্ব বাজার দুর্বল থাকায় ২০ হাজারের উপর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনি বেশিক্ষণ। নিফটি ৬ পয়েন্ট বেশি রেখে ৬০৩০ তে খুলেছে। ভারতের বৃহত্তর আইটি কোম্পানি টিসিএস অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর কোয়াটারলি ২৬.৭% প্রফিট বুক করে। তার কারণে আইটি সেকটর যথেস্ট বুলিশ ছিল। টিসিএস, উইপ্রো একলাফে অনেক পয়েন্ট উপরে খোলে।
এশিয়ার বিভিন্ন মার্কেট ভালো থাকার কারণে সেনসেক্সের পারদ উর্দ্ধমুখী ছিল, এমনই মনে করা হচ্ছে। হংকং-এর হ্যাংসেং ০.২৬%, জাপানের নিকি ১.২৬% আপ ছিল সকাল থেকেই।
রাজ্যের শাসকদলের রোষে পড়ল নাটক। সোমবার কোচবিহারের দিনহাটায় একটি নাটক মঞ্চস্থ করার সময় সংলাপে মা এবং মাটি, এই দুটি শব্দ ব্যবহার করা হয়। অভিযোগ, তারপর থেকেই কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী ওই নাট্যকার এবং তারঁ দলের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছিল। বাধ্য হয়ে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন ওই নাট্যকার। ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক নাটক সেতুবন্ধন। সোমবার কোচবিহারের দিনহাটায় প্রগতি নাট্য সংস্থার উত্সবে তা মঞ্চস্থ করা হচ্ছিল। নাটক চলাকালীন হঠাতই দর্শকাসনে গুঞ্জন শুরু হয়। অভিযোগ, দর্শকাসন থেকে কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী উঠে দাঁড়িয়ে নাটকের সংলাপ নিয়ে আপত্তি জানান। কেন আপত্তি? দর্শকদের একাংশ অভিযোগে জানিয়েছেন, নাটকের সংলাপে মা,মাটি শব্দ দুটির ব্যবহারে চটে যান তৃণমূল কর্মীরা। তাঁরা অসন্তোষ প্রকাশ করায়, পুলিস রাতে নাটকের নির্দেশক এবং অভিনেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
অভিযোগ, মঙ্গলবার সকাল থেকে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশ নাট্যকর্মীদের হুমকি দিতে শুরু করেন। নাট্যকর্মীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে নির্দেশক বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমে নাটক মঞ্চস্থ করার জন্য ক্ষমা চেয়ে নেন। তারপরই আতঙ্কে দিনহাটা ছাড়ে ওই নাট্যদল। ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছে নাট্যমহল।
ঘটনার নিন্দায় বিবৃতি দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘের রাজ্য কমিটি।
কলকাতা: বৃহস্পতিবার পথে নামছেন আমিনুল থেকে ভাঙড়ে রাজনৈতিক সংঘর্ষ, রাজাবাজারে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার হালে উদ্বিগ্ন বুদ্ধিজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মীরা৷ সুষ্ঠু গণতন্ত্রের দাবিতে মিছিলে হাঁটবেন নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, চন্দন সেনরা৷ ওইদিন দুপুর দুটোয় কলেজ স্কোয়ার থেকে তাঁদের মিছিল বেরবে।
এদিকে, আমিনুল কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত ও দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার পথে নামে কংগ্রেস৷ হাজরা মোড় থেকে শুরু করে গড়িয়াহাট পর্যন্ত এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য৷ নির্বেদ রায়, মালা রায় সহ মিছিলে পা মেলান কংগ্রেসের কর্মী, সমর্থকরা৷
সুষ্ঠু গণতন্ত্রের লক্ষ্যে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব৷
http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32525-2013-01-15-15-11-58
জেলায় জেলায় কৃষি মেলা এবং কৃষিযন্ত্র কেনায় সরকারি ভর্তুকি নিয়ে কৃষি অধিকর্তা নির্দেশ ঘিরে তৈরি হয়েছে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক৷ যে নির্দেশে পরিস্কার বলে দেওয়া হয়েছে, কৃষি মেলা ও কৃষি ভর্তুকি প্রকল্পের প্রচার কীভাবে করতে হবে৷ এবং কোথায় কোথায় তা করতে হবে উল্লেখ করা হয়েছে তাও৷ যা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন, বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র৷ যদিও বিরোধীদের এই সমালোচনা সুকৌশলে এড়িয়ে গেছেন স্বয়ং কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক৷ বিরোধীদের অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমকে এভাবে ভাগ করে বিজ্ঞাপনের জন্য চিহ্নিত করা সরকারি নিয়ম নীতির বিরোধী৷
সরকারের বিরুদ্ধে এধরনের আচরণের অভিযোগ নতুন কিছু নয়৷ ক্ষমতায় আসার একবছরের মধ্যেই প্রথম সারির দৈনিক সংবাদপত্রগুলিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত লাইব্রেরি থেকে সরিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেয় সরকার৷ কারণ এই সংবাদপত্রগুলিতে সরকারি কাজের সমালোচনা থাকে৷ তাই নির্দেশ জারি করেই জানিয়ে দেওয়া হয় সরকারের পছন্দের কোন কোন সংবাদপত্র রাখা যাবে সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত লাইব্রেরিগুলিতে৷ এবার সেই একই বৈষম্যের শিকার হল, টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলগুলির একাংশ৷ বিজ্ঞাপন দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের চোখে ব্রাত্য হল প্রথম সারির বাংলা টেলিভিশন নিউজ চ্যানেল৷ যে কারণে বৈষম্য করা হয়েছে সংবাদপত্রের সঙ্গে৷ সেই একই কারণ বৈষম্য টেলিভিশন নিউজ চ্যানেলের সঙ্গেও৷ এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷
http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59-more/32485-2013-01-14-16-18-17
আজ বেঙ্গল লিডসের দ্বিতীয় দিন। গরহাজির প্রথম শ্রেণির শিল্পপতিরা। বেঙ্গল লিডস সম্মেলনে জাতীয়স্তরের পাঁচশোজন শিল্পপতি ও শিল্পসংস্থার কর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যদিও তারমধ্যে অধিকাংশ প্রতিনিধিই হাজির হতে পারেননি বেঙ্গল লিডসে। যাঁরা হাজির হয়েছেন তাঁদের অধিকাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার প্রতিনিধি। বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের সংখ্যা খুবই কম। তবে শিল্প সম্মেলনের সামনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন দুটি। রাজ্য সরকারের জমি নীতি এবং বেড়ে চলা রাজনৈতিক হিংসার জেরে রাজ্যের সামগ্রিক ভাবমূর্তি।
গতকাল হলদিয়ায় হেলিপ্যাড ময়দানে শুরু হল বেঙ্গল লিডস। শিল্প সম্মেলনে প্রভাব ফেলল রাজনীতিও। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় তোপ দাগেন বিরোধী ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। সম্মেলনে শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য শিল্পপতিদের ধন্যবাদও জানান তিনি। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, শিল্প মহলে ভালই সাড়া জাগিয়েছে বেঙ্গল লিডস।
হলদিয়া: সেই তাল কাটলই। আর তা কাটল এক শিল্পপতির প্রশ্নকে ঘিরেই। 'বেঙ্গল লিডস'-এর আসরেও উঠে এল হলদিয়ায় এবিজি-বিতাড়ন পর্ব, বন্দরের নাব্যতার করুণ দশার কথা। হলদিয়ার বন্দর-কাঁটা যাতে সামনে চলে না আসে, সে জন্য যথেষ্ট সতর্ক ছিল শিল্প দফতর। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না।
শিল্প-সম্মেলনের প্রাক্-মুহূর্তে হলদিয়া থেকে রাতারাতি উধাও শুভেন্দু অধিকারীর কাটআউট, ব্যানার। শিল্প টানার মহামেলায় সর্বত্রই শুধু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-ব্যানার। আর এই ভরা আসরে হলদিয়া বন্দরের প্রসঙ্গ পেড়ে গঙ্গাজলে যেন চোনা ফেলে দিলেন রেনুকা সুগারের মালকিন বিদ্যা মুরকুম্ভি। মঞ্চের আশপাশে তখন সদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছেন শ্যামল আদক, সাধন জানা-সহ এমন অনেকে, অক্টোবরেই হলদিয়া থেকে পালাতে বাধ্য করার জন্য যাঁদের বিরুদ্ধে কয়েক বার থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবিজি। জঙ্গি শ্রমিক আন্দোলনের সেই কুশীলবরাই এ দিন দেখা গেল লগ্নিসেবকের ভূমিকায়!
বক্তৃতা শেষে মুখ্যমন্ত্রী শিল্পপতিদের কাছ থেকে সরাসরি প্রশ্ন আহ্বান করেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জমানায় ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি হওয়া রেণুকা সুগারের বিদ্যা মুরকুম্ভি মমতাকে বলেন, "ম্যাডাম, আমাদের কারখানাটি পূর্বাঞ্চলের এক মাত্র চিনি কারখানা। আমরা কাঁচা চিনি নিয়ে এসে তা প্রক্রিয়াজাত করে চিনি তৈরি করি। কোনও কারণে যদি কারখানা বন্ধ থাকে, তা হলে রাজ্যে চিনির দর প্রতি কিলোগ্রামে দু'টাকা বেড়ে যায়।" এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মুরকুম্ভি সরাসরি অভিযোগ করেন, "বন্দর সমস্যায় পড়ে আমাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। নাব্যতার যা হাল, তাতে হলদিয়া বন্দরে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টন পণ্যবাহী জাহাজ আনা যায়। তার বেশি আনতে হলে বার্থ পাওয়া এবং পণ্য খালাসের সমস্যায় পড়তে হয়। এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হোন। তা না হলে হলদিয়ার শিল্প সংস্থাগুলিকে ভুগতে হবে।"
পরে বিদ্যাদেবী বলেন, "একে তো নাব্যতার সমস্যা। তার উপর বন্দরের আধুনিকীকরণও পাল্লা দিয়ে হয়নি। তাই পণ্য খালাসে বাড়তি খরচ বহন করতে হচ্ছে আমাদের।" মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এই সমস্যা নিয়ে বিশদ আলোচনায় যাননি। বন্দরের চেয়ারম্যানকে দেখিয়েই দায়িত্ব সেরেছেন তিনি। বন্দর কর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন, কোম্পানি হিসেবে এবিজি কোনও বিষয়ই নয়। কিন্তু তারা বন্দরের আধুনিকীকরণ ও উৎপাদনশীলতার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। এবিজি-র চলে যাওয়াটা যে শিল্প মহলকে ভোগাবে, তা তখনই বোঝা উচিত ছিল। বন্দর কর্তাদের কেউ কেউ আবার বলেছেন, রেণুকা সুগার যে পণ্য আমদানি করে, তা এবিজি-র বার্থগুলির মাধ্যমে খালাস হোত না। তবে নাব্যতা ও দ্রুত পণ্য খালাস এক মাত্র যন্ত্রের মাধ্যমেই সম্ভব। যা হলদিয়া বন্দরে এখনও হয়নি। তার জন্য রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তা তুলে ধরে বিদ্যাদেবী ঠিক কাজই করেছেন।
দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরা না এলেও মঙ্গলবার সম্মেলন এলাকা আলো করে ঘুরতে দেখা গিয়েছে এবিজি-বিতাড়ন পর্বের একাধিক নেতাকে। বন্দরে শ্রমিক সরবরাহকারী এজেন্ট শেখ মুজফ্ফরকেও দেখা গেল সম্মেলনে। কয়েক বছর আগেও প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের ডান হাত বলে পরিচিত ছিলেন তিনি। স্যুট গায়ে রীতিমতো শিল্পপতি সেজে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে করমর্দন করতেও চলে যান! হয়তো চিনতে পেরেই পার্থবাবু আর হাত বাড়াননি। মুজফ্ফরের এক সহকারীর আক্ষেপ, "দলের নেতাকেও চিনতে পারলেন না!" ওই সঙ্গীর থেকেই জানা গেল, অধুনা শিল্পপতি মুজফফ্র নাকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও রাজভবনে আমন্ত্রিত ছিলেন! সাদা স্যুট পরে তিনি নাকি প্রথম সারিতেই বসেছিলেন।
এবিজি-পর্বে অভিযুক্ত শ্যামল আদক, সাধন জানারা যে ভাবে সভাস্থলের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত ঘুরে বেড়ালেন, তাতে ক্ষুব্ধ অনেকেই। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের এক কর্তা তো বলেই ফেললেন, "বোঝার উপায় নেই, এঁরাই বাঁদরটুপি পড়ে পরিচয় গোপন করতে পারেন!" তবে দ্বিতীয় 'বেঙ্গল লিডস'-এর অনুষ্ঠানে অদ্ভুত সমাপতন হল নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের নেতাদের লগ্নি টানার অনুষ্ঠানে আসা। নন্দীগ্রামে শিল্পতালুকের বিরোধিতা করে শিরোনামে এসেছিলেন শেখ সুফিয়ান, আবু তাহেররা। শিল্প মেলায় সস্ত্রীক এসেছিলেন তাহের। স্ত্রীকে বিভিন্ন স্টল ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলেন। সুফিয়ানও মন দিয়ে শুনলেন মুখ্যমন্ত্রী লগ্নির আহ্বান। শিল্পের দরকার আছে? দু'জনেরই জবাব, নিশ্চয়। তবে কথা নেই ফিরোজা বিবির। নন্দীগ্রামের বিধায়ক। জমি আন্দোলনে ছেলেকে হারিয়েছেন। তিনিও হাজির ছিলেন শিল্প ধরার বৈঠকে!
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32541-2013-01-16-04-03-13
সরকার 'বিবেকহীন', ইস্তফা দিলেন মীরাতুন |
পরিবর্তনপন্থী বিশিষ্ট জনেদের তালিকা থেকে মুছে যাচ্ছে আরও একটি নাম! রাজ্য সরকারকে 'বিবেকহীন ও সংবেদনশীলতাহীন' বলে আখ্যা দিয়ে কলেজ সার্ভিস কমিশন এবং রাজ্য সরকারের নজরুল অ্যাকাডেমির সদস্য পদে ইস্তফা দিলেন প্রবীণ শিক্ষিকা মীরাতুন নাহার। তাঁর উপলব্ধি, "এই সরকার নিপীড়িত মানুষদের বঞ্চনা করছে। এদের সঙ্গে থাকা যায় না।" গোড়ায় পরিবর্তনের পক্ষে সরব হলেও বিগত দেড় বছরে সরকারের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে, এমন বিশিষ্ট জনেদের তালিকায় রয়েছেন মহাশ্বেতা দেবী, সুনন্দ সান্যাল, তরুণ সান্যাল, সমীর আইচ প্রমুখ। মঙ্গলবার মীরাতুন নাহারের নামও সেই তালিকায় সংযোজিত হল। ইতিমধ্যেই তিনি পদত্যাগের কথা জানিয়ে রাজ্য সরকারের শিক্ষা দফতরের যুগ্ম সচিব এবং সংস্কৃতি অধিকর্তাকে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছেন। প্রবীণ এই শিক্ষিকা এ দিন জানান, পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি)-এর তৈরি করে দেওয়া চতুর্থ শ্রেণির পদের সফল পরীক্ষার্থীদের একাংশের প্রতি সরকারি বঞ্চনার প্রতিবাদে তিনি পদত্যাগ করেছেন। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, যে ভাবে কাজ চলছে তাতে নজরুল অ্যাকাডেমির মাধ্যমে কোনও মতেই নজরুল ইসলামের আদর্শকে বাস্তবায়িত করা সম্ভব হবে না। রাজ্যের বর্তমান সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে নষ্ট করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মীরাতুন নাহার। এ দিন মীরাতুন জানান, পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, প্রায় দেড় বছর আগে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের জন্য পিএসসি প্যানেল তৈরি করে। সেই প্যানেলের প্রথম এবং শেষের দিক থেকে কিছু প্রার্থীকে বেছে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। প্যানেলের মাঝের দিকে নাম রয়েছে, এমন প্রার্থীরা নিয়োগপত্র পাননি। ওই প্রার্থীরা বারবার বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও প্রতিকার হয়নি। এঁদের বেশির ভাগই স্নাতক বা তারও বেশি শিক্ষিত। তাঁরা দাবি আদায়ের জন্য অনশন করেছেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে জুতো পালিশ করেছেন। তার পরেও রাজ্য সরকার তাঁদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল হয়নি বলে অভিযোগ। কিন্তু কলেজ সার্ভিস কমিশনের সঙ্গে পিএসসি-র কোনও প্রত্যক্ষ যোগ নেই। তা হলে সেখান থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন কেন? মীরাতুন নাহারের কথায়, "নিপীড়িত মানুষের প্রতি সরকারের এই বঞ্চনার প্রতিবাদে আমি দুই সংস্থা থেকেই সরে যাচ্ছি। কারণ দু'টি সংস্থাই রাজ্য সরকারের।" চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের যে প্যানেল নিয়ে তিনি অভিযোগ তুলেছেন, সেই প্যানেলটি তৈরি হয়েছিল মূলত স্বাস্থ্য দফতরে নিয়োগের জন্য। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী এ দিন বলেন, "এটা বিচারাধীন বিষয়। যত ক্ষণ তা না মিটছে, তত ক্ষণ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা যাবে না।" নজরুল অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও মীরাতুন নাহারের ইস্তফাপত্র হাতে পাননি। অ্যাকাডেমির সভাপতি জয় গোস্বামী বলেন, "অ্যাকাডেমির শেষ বৈঠকেও উনি আমাদের সম্মানিত সদস্যা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। ওঁর অনেক পরামর্শ আমাদের কাজে লেগেছে।" কিন্তু উনি নিজেই তো অ্যাকাডেমির কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন? জয় গোস্বামীর জবাব, "মাত্র এক বছরের কিছু বেশি সময় নজরুল অ্যাকাডেমি গঠিত হয়েছে। কাজ করতে সময় লাগবে। রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই জায়গা দিয়েছে। সেখানে নজরুলতীর্থ গড়ার কাজ শুরু হচ্ছে।" http://www.anandabazar.com/16raj2.html |
ফের শিশুমৃত্যুর ঘটনা মালদা হাসপাতালে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ওই হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৯টি সদ্যোজাতের। আজ সকালে মারা গিয়েছে আরও ৩টি শিশু।ফলে ফের প্রশ্নের মুখে চিকিত্সা পরিষেবা।
শিশুমৃত্যুর ঘটনা স্বীকার করে নিয়ে মালদা মেডিক্যাল কলেজের সুপার হিমাদ্রি আরি জানিয়েছেন, জন্মের পর থেকে দুর্বলতার কারণেই ওই শিশুদের মৃত্যু হয়েছে। শিশুমৃত্যুর ঘটনায় উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে বৈঠক করেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী।
গড়িয়ায় দোকানঘর দখল করে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয় তৈরির অভিযোগ উঠল। দোকান মালিকের অভিযোগ, কয়েকদিন আগেই তার ফার্স্ট ফুড সেন্টারের দোকানে আগুন লাগে। তারপর থেকেই বন্ধ ছিল দোকান। এরপর দোকান খুলতে গেলে বাধা দেয় বিমল চ্যাটার্জি ও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা। দোকানে তৃণমূল কংগ্রেসের হোর্ডিং লাগিয়ে দেওয়া হয়।
পাটুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন দোকান মালিক।
তবে এবিষয়ে পুলিস এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। আজ কলকাতা পুলিসের ডিসি এসএসডির সঙ্গে দেখা করেন ওই দোকান মালিক। গোটা ঘটনার সুবিচার চেয়ে পুলিসের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
গতকালই হলদিয়ায় রাজ্যে শিল্পে নতুন জোয়ারের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। ঘোষণা করেছিলেন পর্যটন শিল্পে নতুন একগুচ্ছ প্রকল্পেরও। কিন্তু একদিনের মধ্যেই সেই পর্যটন শিল্পে কালো দিন ঘনিয়ে আসার ইঙ্গিত পাওয়া গেল। ভরা পর্যটন মরসুমে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে 'অন্তিম লড়াই'-এর ডাক দিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি।
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের আন্দোলনের কথা ঘোষণা করলেন মোর্চা নেতা রোশন গিরি। রীতিমত হুমকির সুরে তিনি জানিয়ে দিলেন তেলেঙ্গানাকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা দিলে, সেই মর্যাদা দিতে হবে গোর্খাল্যান্ডকেও। এই সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি তাঁদের অন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচীর কথাও ঘোষণা করেন। জানিয়ে দিলেন গোর্খাল্যান্ডের দাবি এদেশের সবথেকে পুরানো দাবি। তাঁদের অন্দোলন কর্মসূচির কথা কেন্দ্রীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডেকেও জানিয়ে দিয়েছেন বলে আজকের সাংবাদিক সম্মলনে জানান গিরি।
রাজ্যে নতুন সরকার আসার পর মুখ্যমন্ত্রী দার্জিলিঙে গিয়ে মোর্চার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তৈরি হয়েছিল 'গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেসন'। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে দাবিও করেছিলেন।
জিটিএ নিয়ে মোর্চা নেতৃত্ব যে মোটেও সন্তুষ্ট নন এর আগেও বেশ কয়েক বার তাঁদের বক্তব্য থেকে সেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী যতই দার্জিলিংকে বাংলার অভিন্ন অংশ বলে দাবি করুন না কেন, মোর্চা নেতারা পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে কোনদিনই সরে আসেননি। এত দিন সেভাবে সোচ্চার না হলেও আজ নতুন করে পৃথক রাজ্যের ডাক দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে তাঁরা এক চুলও সরে আসতে নারাজ।
রাজ্যে অনান্য শিল্পের সঙ্গে যখন সরকারের তরফ থেকেই পর্যটন শিল্পে নতুন বিনিয়োগের কথা বলা হচ্ছে, তখন বাংলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে আশান্তির অশনি সংকেত রাজ্যের সামগ্রিক শিল্প পরিস্থিতিকে বড়সড় প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।
গোর্খাল্যান্ড: এবার চূড়ান্ত আন্দোলন, হুমকি মোর্চার
শিলিগুড়ি: পাহাড়ে আগুন নিভেছে, শান্তি ফিরেছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যতই দাবি করুন না কেন, ফের গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড় অশান্ত হওয়ার আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির ঘোষণায়৷ গোর্খাল্যান্ড চেয়ে মোর্চা এবার পাহাড়জুড়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে নামবে বলে আজ ঘোষণা করলেন তিনি৷ রোশন দাবি করেছেন, কেন্দ্র পৃথক তেলেঙ্গানা রাজ্য দিতে রাজি হয়েছে বলে তাঁদের কাছে খবর রয়েছে৷ রোশনের বক্তব্য, তেলেঙ্গানার দাবি মেনে নেওয়া হলে তাঁদের কাছে গোর্খাল্যান্ড চেয়ে ফের পথে নামা ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই৷ জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী শীঘ্রই পাহাড়ে যাচ্ছেন৷ তাঁর সফরের আগে পৃথক রাজ্যের দাবিতে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিচ্ছেন বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা৷ তারই অঙ্গ হিসাবে ২০ তারিখ দার্জিলিং এবং ২৭ তারিখ কার্শিয়ংয়ে সভা হবে বলে এদিন ঘোষণা করেছেন মোর্চা সাধারণ সম্পাদক৷
মমতা ভেবেছিলেন, আলাদা রাজ্যের দাবি ছেড়ে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনেই খুশি হবেন পাহাড়ের নেতারা।ফের রাজ্য ভাগ হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু তাঁর সেই ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে ফের পাহাড় অগ্নিগর্ভ হওয়ার বিপদ দেখা দিল৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32558-2013-01-16-11-03-19
হাওড়া স্টেশনে এক বালকের কাছ থেকে উদ্ধার স্যুটকেস ভর্তি অস্ত্র৷ উদ্ধার ১৭টি দেশি পিস্তল৷ রেল পুলিশের অনুমান, অস্ত্রগুলি মুঙ্গের থেকে রাজ্যে পাঠানো হচ্ছিল৷ অস্ত্র উদ্ধার হলেও বালক পলাতক৷
এ যেন কোনও হিন্দি ছবির চিত্রনাট্য৷ ছোট বয়সে অস্ত্র পাচার দিয়ে হাতেখড়ি৷ তারপর বড় হয়ে কুখ্যাত ক্রিমিনাল৷ গল্প অতদূর না গড়ালেও এদিন হাওড়া স্টেশনে যা ঘটল তা কোনও ফিল্মের স্ক্রিপ্টের থেকে কম নয়৷
হাওড়া স্টেশন৷ ১ প্ল্যাটফর্ম থেকে একটি স্যুটকেস হাতে বেরোচ্ছিল বছর দশেকের ছেলেটি৷ সন্দেহ হওয়ায় এগিয়ে যান ২ আরপিএফ জওয়ান৷ কিছু বুঝে ওঠার আগেই স্যুটকেস ফেলে একছুটে ভিড়ে মিশে যায় অজ্ঞাতপরিচয় বালক৷ এরপর স্যুটকেস খুলে মেলে ১৭টি দেশি পিস্তল৷
রেল পুলিশের অনুমান, অস্ত্রগুলি মুঙ্গের থেকে আসছিল৷ পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই অস্ত্র পাচারে ছোট ছেলেকে ব্যবহার করা হয়েছে৷ রেল পুলিশ সূত্রে খবর, ডাউন জামালপুর এক্সপ্রেস, গয়া-হাওড়া প্যাসেঞ্জার, টাটা আসানসোল লোকালের মাধ্যমেই এরাজ্যে অস্ত্র ঢোকে৷ মূলত বিহারের মুঙ্গের ও জামালপুর থেকে এরাজ্যে অস্ত্র পাচার হয়৷
রেল পুলিশের অনুমান, হাওড়া স্টেশনকেই অস্ত্র পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷ তাই অস্ত্র পাচার রুখতে ইতিমধ্যেই ২০ জনের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ তৈরি করেছে রেল পুলিশ৷ সাদা পোশাকে বিভিন্ন ট্রেনে নজরদারি চলছে৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32553-2013-01-16-09-18-07
আজ পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদায় জঙ্গলমহল সফরে ফের একবার কল্পতরু হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। উজাড় করে দিলেন তাঁর প্রতিশ্রুতির ঝুলি। সঙ্গে নিয়মমাফিক আক্রমণ হানলেন পূর্বতন বামসরকারের প্রতি। দিলেন তাঁর সরকারের সাফল্যের খতিয়ানও।
বেলদার জনসভায় একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাসের মুখ্যমন্ত্রী। এরমধ্যে রয়েছে কংসাবতী নদীর ওপর মেদিনীপুর অ্যানিকাট বাঁধের পুনর্গঠন সহ কয়েকটি প্রকল্প। ঘোষণা করলেন একগুচ্ছ নতুন প্রকল্পেরও। জানালেন পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরেই তৈরি করবেন বেলদা মিউনিসিপ্যালিটি। বিদ্যাসাগর ইন্ড্রাস্টিয়াল পার্কে হবে ৩৬ হাজার কর্মসংস্থান। পাঁচটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
বিরোধী দলনেতার খাসতালুকে দাঁড়িয়ে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলকে জেতানোর আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। আহ্বান জানালেন সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে। কংসাবতী নদীতে অ্যানিকেট বাঁধ, একাধিক জল প্রকল্প, ব্লকে ব্লকে আইটিআই, প্রতিটি মহকুমায় পলিটেকনিক কলেজের মতো নানা প্রকল্প ঘোষণা, শিলান্যাস। সাইকেল, জমি, পাওয়ার টিলার বিলি। বুধবার বেলদার সভায় রীতিমতো কল্পতরু মুখ্যমন্ত্রী।
সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকেই নিজের দলের জন্য ভোট চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে নিজের সরকারকে ঢালাও সার্টিফিকেট। ৯৯ শতাংশ কাজ হয়ে গেলে কেন হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিতে হল মুখ্যমন্ত্রীকে? উঠছে প্রশ্ন। সরকারের হাতে টাকা না থাকার জন্য আগের বামফ্রন্ট সরকার ও কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারের কোর্টেই বল ঠেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে চেনা বিরোধী দলনেত্রীর ঢঙে মুখ্যমন্ত্রী কাঠগড়ায় তুললেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে।
সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চকে রাজনৈতিক প্রচারের কাজে লাগানোর অভিযোগ আগেও উঠেছে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। কিন্তু সম্ভবত এই প্রথম বার সরকারি মঞ্চ থেকে সরাসরি তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হলদিয়া পেট্রোকেমের আংশিক মালিকানা থেকে সরে আসছে রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের শেয়ারের মূল্য নির্ধারণের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এই মালিকানা কার হাতে যাবে তা নিয়ে বিরোধ রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থা ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন নিলাম না ডেকে পূর্ণেন্দু চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর হাতে একতরফা পরিচালন ক্ষমতা তুলে দেবার বিরুদ্ধে। নিলাম হলে তাতে অংশ নেবার কথাও ঘোষণা করেছেন আইওসি কর্তৃপক্ষ।
১৯৮৫ সালের চুক্তি অনুযায়ী হলদিয়া পেট্রোকেমে ৪৪ শতাংশ মালিকানা রয়েছে পূর্ণেন্দু চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর হাতে।এছাড়া রাজ্য সরকারের শিল্পোন্নয়ন নিগমের হাতে রয়েছে ৩৩ শতাংশ শেয়ার। বাদবাকি শেয়ারের মধ্যে রয়েছে ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের ১০ শতাংশ।টাটাগোষ্ঠীর ৩ শতাংশ এবং অন্যান্য ১৭টি গোষ্ঠীর হাতে মিলিতভাবে ১০ শতাংশ।
রাজ্য সরকারের শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার কথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন। দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে এইচপিএল চালানো হয়েছে সর্বোচ্চ উত্পাদনশীলতার থেকে অনেক কম হারে। ফলে সংস্থার আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। এই অবস্থায় রাজ্য সরকারের অংশীদারির ন্যায্য আর্থিক মূল্য কত, তা নির্ধারণের জন্য `ডিউ ডিলিজেন্স` প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। হিসাবপত্র পরীক্ষার কাজ শেষ। চলতি মাসেই তিন বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়ে গড়া একটি দল প্রযুক্তিগত দিকগুলি খতিয়ে দেখতে আসছেন। কেন্দ্রে ইউপিএ- টু সরকারের বিলগ্নীকরণ নীতিতে এই অলাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থাকে লাভজনক বেসরকারি সংস্থা হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেটের নীতিগত সম্মতির পর এবার ওপেন বিড বা প্রকাশ্য নিলামের পালা।
বিলগ্নিকরণ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট কমিটির সিংহভাগ সদস্যের মত, চ্যাটার্জি গোষ্ঠীকে প্রথমে হলদিয়া পেট্রোকেম অধিগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। চ্যাটার্জি গোষ্ঠীর দাবি মূল চুক্তি অনুযায়ী তাদের এই প্রস্তাব প্রাপ্য। তারা চার হাজার কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজের মাধ্যমে পেট্রোকেমের পুনর্জীবন দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এখানে নীতিগত আপত্তি তুলেছে অন্যতম অংশীদার রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থা ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন। তাদের দাবি, নিলাম হোক প্রকাশ্যে। সর্বাধির দর প্রদানকারীকেই দেওয়া হোক পেট্রোকেম পরিচালনার দায়িত্ব। এমনকি কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে তারা নিলামে অংশ নেবার কথাও জানিয়ে দিয়েছেন।
১) ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব তেল সংস্থা। বিশেষ ক্যাবিনেট কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তাদের আদৌ নিলামে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি না, তা বড় প্রশ্ন।
২) পেট্রোকেমকে লাভজনক করার জন্য আইওসি-র দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা কি, তা এখনও স্বচ্ছ নয়।
৩) আইওসি-র মনোভাব দেখে কেন্দ্র আদৌ ওপেন টেন্ডার ডাকবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল।
৪) ওপেন টেন্ডার না ডেকে বিলগ্নীকরণ হলে বিনিয়োগকারীদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে।
এই যাবতীয় বিতর্ক সামাল দিয়ে কোন পন্থায় এইচপিএল-এর বিলগ্নীকরণ হবে, তার দিকে এখন তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্বের শিল্পমহল।
রাজ্যে এ ভাবে আগুন জ্বললে কিভাবে শিল্প হবে এবার তাই নিয়ে প্রশ্ন তুললো কংগ্রেস। তাঁদের দাবি, শুধু বক্তৃতা দিয়ে শিল্প হয় না। শিল্প করতে গেলে গড়ে তুলতে হবে শিল্প-বন্ধু পরিবেশ।
রাজ্যে শিল্পের পরিবেশ নেই বলে মনে করছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন ``কোথায় শিল্প?" মঙ্গলবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, "রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, তাতে নতুন করে শিল্প আসা মুশকি।"
হলদিয়ায় আজকে শুরু হচ্ছে বেঙ্গল লিডস্। আর রাজ্যের শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে একরাশ হতাশা কংগ্রেস নেতাদের গলায়। শিল্প নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও দাবি মানতেই নারাজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। "তিনি বললেন বিহারে শিল্প হয় কিন্তু এখানে হয় না।" পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন রাজ্যে শিল্পের পরিবেশই নেই।
টাটাগোষ্ঠী নয় কাজের পিছনে ছুটেছিল তাঁর সরকার। বেঙ্গল লিডসের প্রাক্কালে ফের একবার সিঙ্গুর থেকে একলাখি গাড়ি কারখানার বিদায় প্রসঙ্গকে টেনে আনলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাজারহাটের জনসভায় তিনি বলেন, গাড়ি প্রকল্প হলে দশ হাজার লোকের কাজ হত। আফসোসের সুরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, সিঙ্গুর, রাজারহাট, হলদিয়া সবর্ত্র এখন শুধুই অন্ধকার।
সিঙ্গুরে একলাখি গাড়ি, নয়াচরে পেট্রো রসায়ন তালুক, রাজারহাটে স্যাটেলাইট টাউনশিপ, হলদিয়ায় জাহাজ কারখানা, বারাসত-রায়চক রাস্তা। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আমলে একের পর এক বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল এরাজ্যে। আর প্রতিটি প্রকল্পই মুখ থুবড়ে পড়ে তত্কালীন বিরোধী দলের চরম বিরোধিতায়। সেই আক্ষেপের সুর সোমবার বার বার শোনা গেল রাজারহাটে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জনসভায়।
গৌতম দেব আবাসন মন্ত্রী থাকাকালীন রাজারহাট স্যাটেলাইট টাউনশিপ তৈরি হয়। বেঙ্গল লিডস শুরু ঠিক আগে প্রাক্তন আবাসন মন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যের ভাবমূর্তি বদল ও সঠিক জমিনীতি না নিলে শিল্পায়ন সম্ভব নয়। রাজারহাটের জনসভায় ভাঙড় ইস্যুতেও সরব হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ পঞ্চায়েত নির্বাচনে আরাবুল ইসলামের পেশিশক্তিকে রাজ্যজুড়ে মডেল করতে চাইছে শাসক দল। দলীয় কর্মীদের মনোবল বাড়াতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সভা করবেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
অন্য দিকে সর্বভারতীয় ব্রাহ্মণ্যবাদী জায়নবাদী কর্তৃত্ব ধর্মন্মাদী জাতীয়তাবাদের জিগির তুলে সীমান্ত যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে চলেছে, করপোরেট মীডিয়া যত ভাবে সম্ভব যুদ্ধউন্মাদনায় ইন্ধন যুগিয়ে চলছে।পাকিস্তানের অভ্যন্তরিন হাল হকীকতও রীতিমত আশন্কাজনক, রীতিমত সংবৈধানিক সংকটের মুখোমুখি পাকিস্তান সরকার।ভারতের এই যুদ্ধ উন্মাদনা সেখানে পুনারায় সৈন্যবাহিনীর কর্তৃত্ব স্থাপনের সুযোগ করে দিতে চলেছে।
ফাঁড়া কাটতে চাইছে না পাকিস্তানের। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শক্তি প্রকল্পে দুর্নীতির জেরে অভিযুক্ত প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিল সুপ্রিম কোর্ট।
আশরাফকে কাল আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় আরও ১৫ জনকেও গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছে পাক শীর্ষ আদালত। পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ এ দিন এই সিদ্ধান্ত নেয়।
সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশ হওয়ার পরই রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদ। ধর্মীয় নেতা মহম্মদ তাহির উল কাদরির নেতৃত্বে লঙ মার্চকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের ওই মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে পুলিস। শূন্যে গুলিও ছোঁড়া হয়। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট এবং প্রাদেশিক আইনসভা ভেঙে দেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন কাদরি। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত সরকারকে চরম সীমা বেঁধে দিয়েছিলেন কাদরি। এই ইস্যুতেই আজ ইসলামাবাদে একটি সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন তিনি।
পুলিসের অভিযোগ, সমাবেশে আচমকাই গণ অভ্যুত্থানের ডাক দেন কাদরি। এরপরই ব্যারিকেড ভেঙে কাদরির নেতৃত্বে মিছিল এগিয়ে যায় পাক সংসদ ভবনের দিকে। নিরাপত্তাবাহিনী আন্দোলনকারীদের আটকাতে গেলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি, নিরাপত্তাবাহিনী সরাসরি কাদরির ওপর হামলা চালানোয় উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে।
ভারতের বিরুদ্ধে তিনটি যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল সীমান্তের ওপার থেকেই। সেই পাকিস্তানই এবার ভারতের গায়ে 'যুদ্ধবাজ' তকমা লাগাতে উদ্যত। ওয়াশিংটনে এশিয়া সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে হিনা রব্বানি খার বলেছেন, 'আমি ভেবেছিলাম যুদ্ধবাজি হল পুরনো দিনের ঘটনা এবং আমরা তা পিছনে ফেলে অনেকটা এগিয়ে এসেছি।' দুই জওয়ানের নৃশংস হত্যার প্রসঙ্গে সুকৌশলে এড়িয়ে সাম্প্রতিক জটিলতার পুরো দায় ভারতের ঘাড়ে ঠেলে খার বলেছেন, 'ভারত সরকারের শীর্ষ স্থান থেকে যে ধরনের বিবৃতি আসছে, তাতে পাকিস্তান অত্যন্ত হতাশ। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখার দায়বদ্ধতা থেকে আমরা সরে আসব না।'
প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারিও দিতে ভোলেননি পাক বিদেশমন্ত্রী। কূটনৈতিক সৌজন্যের মোড়কে পেশ করেছেন বক্তব্য, 'আমি খুশি আমরা কথা বা কাজে ভারতকে প্রত্যুত্তর দিচ্ছি না।' তাঁর চোখে, নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে 'তিলকে তাল' করে দেখাচ্ছে ভারত। 'পরিণত' দেশের উদাহরণ তুলে খার বলেছেন, 'আলোচনার দরজা বন্ধ করলে চলবে না। যে কোনও স্তরে আমাদের আলোচনা করতে হবে। সংবেদনশীল বিষয়গুলি নিয়ে আমাদের আরও পরিণত হতে হবে।'
দুই জওয়ানকে হত্যার অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করে খার বলেছেন, 'তদন্তে তেমন কিছু জানা যায়নি। নিয়ন্ত্রণরেখায় কোনও হত্যাকাণ্ড ঘটেনি।'
আট দিন নিশ্চুপ থাকার পরে, বুধবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং তীব্র ভাষায় প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে জানিয়ে দেন, এই রকম পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়৷ তাঁর কথায়, 'পাকিস্তান যে বর্বর আচরণ করেছে, তা কোনও মতেই মেনে নেওয়া যায় না৷ এমতবস্থায় সম্পর্কের স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে ভারত অপারগ৷' ৬৫ তম সেনা দিবসের অনুষ্ঠানে মনমোহন তাঁর নীরবতা ভঙ্গ করেন৷
একই ভাবে বিদেশ মন্ত্রকও কড়া মনোভাব দেখিয়ে সম্পর্কের উন্নতি ঘটাতে পাকিস্তান তেমন আগ্রহী নয় বলে বিবৃতি দিয়েছে৷ তারা এ দিন বলে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখায় অকারণে যে ভাবে অনাক্রমণ চুক্তি ভঙ্গ করে প্ররোচনা দিচ্ছে, তা থেকে সে দেশের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে৷ পাকিস্তানের এই মনোভাব প্রশ্ন তুলেই দিচ্ছে যে তারা আদৌ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায় কি না৷
ভারতের এই কড়া বিবৃতির কিছু ক্ষণের মধ্যেই পাকিস্তান পাল্টা বিবৃতি দেয়৷ তারা জানায়, ভারতের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়া বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷ পাকিস্তান আন্তরিক ভাবে নিয়ন্ত্রণ রেখার সমস্যা মেটাতে চাইছে৷ তারা দু'দেশের মধে সুসম্পর্ক চায়৷ তবে অনাক্রমণ চুক্তি ভেঙে সীমান্ত পারে যে গুলির লড়াই চলছে ও তার ফলে যে পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে, তার জন্য তারা এ দিনও রাষ্ট্রপুঞ্জের তদন্ত চেয়েছে৷ উল্লেখ্য, পাকিস্তান আগেও এই দাবি তুলেছিল ও ভারত তা খারিজ করে দিয়েছিল৷ এ দিন পাক প্রধানমন্ত্রী রাজা আশরফ পারভেজকে দুর্নীতির অপরাধে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট গ্রেন্তারের নির্দেশ দিয়েছে৷ ঘরে-বাইরে জর্জরিত পাকিস্তান স্বাভাবিক ভাবেই তাই আজ সুর নরম করেছে৷ তবে পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার এ দিন ভারতের সেনাপ্রধানের বিবৃতির সমালোচনা করে বলেছেন, 'তাঁর বক্তব্য উত্তেজক৷ তাঁর কথা শুনে মনে হচ্ছে আমরা ২০ বছর পিছিয়ে গিয়েছি৷' তিনি ভারতকে অনুরোধ করেন, পাকিস্তানের 'উন্নয়ন' কর্মসূচির দিকে নজর রাখতে৷
তবে নরমে-গরমে দু'দেশের মধ্যে যতই বিবৃতির লড়াই চলুক না কেন, মেন্ধারের কাছে নিয়ন্ত্রণরেখায় এ দিনও গুলি চালায় পাক সেনাবাহিনী৷ তা অবশ্য বেশি ক্ষণ স্থায়ী হয়নি৷ ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে এ খবর মিলেছে৷
মঙ্গলবার সেনা দিবসের অনুষ্ঠানে মনমোহন বলেছেন, 'শান্তি প্রক্রিয়ার ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ল৷ এই শান্তি প্রক্রিয়া এখন নির্ভর করবে পাকিস্তানের কী ব্যবস্থা নেয় তার ওপর৷' কী ব্যবস্থা নিতে হবে তাও ব্যাখ্যা করেছেন প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, 'পাকিস্তানকে স্বীকার করতে হবে যে এই ঘটনা তারা ঘটিয়েছে৷ দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে৷ আমি আশা করি, পাকিস্তান ভুল বুঝতে পারবে৷' মনমোহন এ-ও জানান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি, বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ ও সেনাপ্রধান বিক্রম সিং পাকিস্তানের কাছে ভারতের মনোভাবের কথা আগেই জানিয়েছেন৷ বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বলেছেন,'দোষিদের যাতে শাস্তি হয় সে জন্য আমরা পাকিস্তানের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছি৷ গতকাল পুঞ্চে যে ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছে, তার ফলাফলে আমরা সন্ত্তষ্ট নই৷ তবে চেষ্টা চলছে৷ এই বর্বরোচিত ঘটনার পর সম্পর্ক স্বাভাবিক থাকতে পারে না৷'
প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতিকে এ দিন স্বাগত জানিয়েছে বিজেপি৷ তারা জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিষয়ে সরকারকে তারা সব রকম সহায়তা দিতে প্রস্ত্তত৷ এনডিএ আমলের বিদেশমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা এ দিন বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী দেরিতে মুখ খুললেও তা স্বাগত৷ সরকারের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা৷ আমার বিশ্বাস, সরকারের বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি আছে৷' বিরোধী দলনেত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী দেশের মনোভাব বুঝতে পেরে সেই মতো বিবৃতি দিয়েছেন৷' গতরাতেও প্রধানমন্ত্রী সংসদের দুই বিরোধী নেতা সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলির সঙ্গে কথা বলেছেন৷ পরিস্থিতি জানাতে, এ দিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন গিয়েছিলেন সুষমার বাড়িতে৷ সেখানে অরুণ জেটলিও ছিলেন৷ সুষমা জানান, মেননের সঙ্গে তাঁদের কথাবার্তা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে৷ তবে বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি রয়েছে কি না সে বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রক মুখ খোলেনি৷
সেনাপ্রধান বিক্রম সিং সোমবারই জানান, নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানের কোনও বেচাল দেখলেই প্রত্যাঘাত করা হবে৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন সহ্য করা হবে না৷ এ দিন আরও আক্রমণাত্মক হয়ে নর্দান কম্যান্ডের লেফটেন্যান্ট জেনারেল পাকিস্তানের উপর চাপ বৃদ্ধি করে বলেন, 'ওই দেশের সেনাবাহিনী হতাশ হয়ে পড়ছে৷ অনেক দিন তারা ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশ করাতে পারেনি৷ উরিতে নালা পেরিয়ে পাক সেনার সহায়তায় জঙ্গিরা ঢোকার চেষ্টা করলেও, তা ব্যর্থ করে দেয় ভারতীয় বাহিনী৷' তিনি জানান, গত কালের ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পরও আরও তিনটি আক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছে৷ যদিও ভারত কোনও ক্ষেত্রেই পাল্টা আক্রমণে যায়নি৷ তবে পাকিস্তানের প্রতিটি পদক্ষেপের উপর ভারত কড়া নজর রেখে চলছে৷ ভারতীয় সেনারা যথাসম্ভব সংযত রয়েছেন৷
কূটনৈতিক মহল বলছে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ওপর তার নজর রাখছে৷ সেই সঙ্গে আমেরিকা যাতে পকিস্তানর ওপর চাপ সৃষ্টি করে সে চেষ্টাও সুকৌশলে চালানো হচ্ছে৷ সরকারের পক্ষে প্রধান অসুবিধা হল, পাক বর্বরতার ঘটনার পর দেশের মধ্যে প্রতিশোধের দাবি ক্রমশ প্রবল হচ্ছে৷ কিন্ত্ত বর্তমান পরিস্থিতিতে সামরিক দিক থেকে প্রতিশোধ নেওয়া কঠিন৷ তাই কূটনৈতিক দিক থেকেই পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷ আপাতত, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও পাকিস্তান যদি কোনও ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে ভবিষ্যতে বাণিজ্য সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হতে পারে৷ কাজেই, সব মিলিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তা আপাতত শিকেয় উঠেছে৷
সুতরাং, স্বাভাবিক শান্তিপ্রক্রিয়া শুরু হওয়ার এখনই কোনও সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷
ক'দিন আগে ভারত-পাক ক্রিকেট সিরিজে খুলেছিল পাঁচ বছরের বন্ধ দরজা৷ মাস খানেক আগে পাঞ্জাবে বিশ্বকাপ কবাডি খেলে গিয়েছিল পাক কবাডি দল৷ খেলার মাঠের সুসম্পর্কে যখন রাজনৈতিক বরফ গলার স্বপ্নে বিভোর দু'দেশই, তখনই হকির ধাক্কায় সেই স্বপ্ন আবারও আছড়ে পড়ল বাস্তবের মাটিতে৷
নিরাপত্তার আশ্বাস বিফলে৷ ঝুঁকি এড়াতে, পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের দেশে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল হকি ইন্ডিয়া লিগ৷ পাকিস্তানের মোট ন'জন খেলোয়াড়কে দলে নিয়েছিল বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি৷ হকি ইন্ডিয়ার নির্দেশে, এই ন'জনকেই ফিরে যেতে হচ্ছে দেশে৷
ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রে এমন ঘটনা প্রায় বিরল৷ এর আগে আইপিএলে শাহিদ আফ্রিদি, উমর গুলদের খেলা নিয়ে ঝড় উঠেছিল৷ কিন্ত্ত মাঝ পথে দেশে ফিরে যেতে হয়নি তাঁদের৷ এ বারের ঘটনা ছাপিয়ে গেল অতীতকে৷ সঙ্গে আবারও প্রশ্নচিহ্নের সামনে সবুজ মাঠে ভারত-পাক ভবিষ্যত্৷ ধোনি-মিসবাদের সিরিজে ফের আইপিএলে আফ্রিদিদের খেলতে আসার যে ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল, তা প্রায় মুছে গেল এ দিন৷
চব্বিশ ঘণ্টা আগে কিন্ত্ত পরিস্থিতি এমন ছিল না৷ পাক হকির কর্তারা তখনও আশায় ছিলেন, ভারতে নিরাপত্তা জনিত সমস্যায় পড়তে হবে না তাঁদের খেলোয়াড়দের৷ কিন্ত্ত পরিস্থিতি বদলাল কয়েক ঘণ্টায়৷ হকি ইন্ডিয়ার সচিব নরেন্দ্র বাত্রা বলে দেন, 'সাম্প্রতিক পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চিন্তিত৷ তাই ফ্র্যাঞ্চাইজিদেরও আমরা জানিয়ে দিয়েছি, ওদের জায়গায় পরিবর্ত খেলোয়াড় নেওয়ার জন্য৷'
ইতিমধ্যেই বিকল্প খেলোয়াড় খুঁজতে নেমে পড়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি-রা৷ মুম্বই ম্যাজিসিয়ানসের কর্তারা যোগাযোগ করছেন অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের সঙ্গে৷ মুম্বই দলে নিয়েছিল চার পাকিস্তানিকে৷ এঁরা হলেন ফরিদ আহমেদ, ইমরান বাট, মেহমুদ রশিদ ও মহম্মদ তৌসিক৷ দিল্লি দলে রয়েছেন মহম্মদ রিজওয়ান (সিনিয়র) ও মহম্মদ জুনিয়র (জুনিয়র)৷ মুম্বই মালিক অমিত বর্মন বলেছেন, 'সীমান্তের ঘটনায় জনমানসে যে প্রভাব পড়েছে, তাকে সম্মান জানাতেই এই সিদ্ধান্ত৷' তবে রাজনৈতিক ক্ষেত্র বা হকি ইন্ডিয়ার তরফ থেকে তাঁদের উপর কোনও চাপ ছিল বলে মানতে চাননি তিনি৷ তাঁর দাবি, এটা সম্পূর্ণই তাঁদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত৷
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল মুম্বইতেই৷ পাক খেলোয়াড়দের হুমকি দেয় শিবসেনা৷ জড়িয়ে দেওয়া হয় শাহরুখ খানের নামও৷ বেগতিক দেখে মুম্বই ম্যাজিসিয়ানসের ঘরের মাঠ স্থানান্তরিত হয়ে যায় দিল্লিতে৷ কিন্ত্ত সেখানেও ঝামেলা পিছু ছাড়েনি৷ সোমবার দিল্লি-পাঞ্জাব ম্যাচে 'হিন্দু যুবক সংঘ'-এর দুই প্রতিনিধি মাঠে ঢুকে পাক বিরোধী স্লোগান দিতে থাকে৷ এরপর আর ঝুঁকি নেওয়ার সাহস দেখায়নি কর্তৃপক্ষ৷ রাতারাতি নিয়ে ফেলা হয় সিদ্ধান্ত৷
পাক খেলোয়াড়দের দেশে ফিরিয়ে দিয়েই যে বিতর্কের অবসান হয়ে গেল, এমন ভাবলে ভুল৷ এমন একটা বিষয়কে নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু করেছেন রাজনীতিকরা৷ চলছে মন্তব্য-পাল্টা মন্তব্যের পালা৷
আগের দিন হকি ইন্ডিয়ার পাল্টা সংস্থা, ভারতীয় হকি ফেডারেশনের মুখ্য উপদেষ্টা কেপিএস গিল বলেছিলেন, 'যে ভাবে ভারতীয় জওয়ানদের নৃশংস হত্যা করেছে পাকিস্তান, তারপর এই হকি লিগে পাক খেলোয়াড়দের খেলতে দেওয়া উচিতই নয়৷' মঙ্গলবার পাল্টা দিলেন রাজীব শুক্ল৷ আইপিএল চেয়ারম্যান, যিনি এই হকি লিগেরও অন্যতম সদস্য, এ দিন বলেন, 'পাকিস্তান যা করেছে, অত্যন্ত নিন্দনীয়৷ এর জবাব নিশ্চয় আমাদের সরকার দেবে৷ কিন্ত্ত তার সঙ্গে রাজনীতি জড়িয়ে যে ভাবে ফয়দা তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে, এটা নিন্দনীয়৷ হকি ইন্ডিয়া লিগ দেশের আবেগকে সম্মান জানিয়েছে৷ এর মধ্যে রাজনীতি নিয়ে আসা ঠিক হচ্ছে না৷' সব মিলিয়ে, আশার আলো আবারও অন্ধকারে৷ সবুজ মাঠের ভ্রাতৃত্বের খোলা দরজা কার্যত বন্ধ হল আবার৷
এর আগে ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি ২০ হাজার পয়েন্টের উপরে ছিল সেনসেক্স৷
দিল্লির ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ গতকাল ৭২.২৫ পয়েন্ট উঠে বন্ধ হয় ৬,০২৪.০৫ পয়েন্টে৷ এ দিন তা ফের ৩২.৫৫ পয়েন্ট উঠে ৬,০৫৬.৬০ পয়েন্টে বন্ধ হয়৷ শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সূচকের এতটা উত্থান হবে তাঁরা ভাবেননি৷ মূল যে ১৩টি ক্ষেত্রের সূচক বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ প্রকাশ করেছে তাতে তথ্যপ্রযুক্তি ও মেটালের বাজার সামান্য পড়েছে৷ উঠেছে রিয়েলটি, ব্যাঙ্ক, এফএমসিজি, তেল ও গ্যাস, পিএসইউ, অটো, স্বাস্থ্য সহ বাকি সব ক'টি ক্ষেত্রের সূচক৷
সোমবার জিএএআরের বিষয়ে জানানোর পরে এ দিন স্পেকট্রামের দাম কমানোর কথা কার্যত ঘোষণাই করেছে সরকার৷ বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী সোমবার বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ হয়েছে ৬১১.১০ কোটি টাকার৷ মুদ্রাস্ফীতির হারও ঘোষণা হয়েছে সোমবারই৷ পাইকারি বাজারে পর পর তিন মাস কম রয়েছে মুদ্রাস্ফীতির হার৷ তাই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার আরও কমাতে পারে৷ ফলে একই সঙ্গে চাঙ্গা হচ্ছে ব্যাঙ্ক ও রিয়েলটির বাজার৷ জানুয়ারির ২৯ তারিখ ঋণনীতি ঘোষণার সময় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সত্যিই সুদ কমানোর জন্য পদক্ষেপ করলে শেয়ার বাজার আরও চাঙ্গা হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে শেয়ার সূচকে সার্বিক পতন হলেও এ দিন উইপ্রো ও ইনফোসিসের শেয়ারের দাম বেড়েছে৷ শেয়ার বাজারে সব চেয়ে ভালো ফল করেছে আইডিয়া সেলুলার (৮.২৭ শতাংশ), বার্জার পেন্টস (৭.৯১ শতাংশ), ভারতী এয়ারটেল (৪.৮১ শতাংশ), ইয়েস ব্যাঙ্ক (৪.০৫ শতাংশ)৷ বেড়েছে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্ক (২.০৬ শতাংশ), আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক (১.৫৩) আইটিসি (১.৯৮), টাটা পাওয়ার (১.৫১) ও বাজাজ অটোর (১.০৭)শেয়ারের দাম৷
শেয়ারের দাম পড়েছে কোল ইন্ডিয়া (১.৯৪ শতাংশ) ও জিন্দল স্টিলের (০.৭৪ শতাংশ)৷
বিশ্বের বাজারে এ দিন শেয়ার সূচক পড়েছে হংকং, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়ার৷ চিন ও জাপানের বাজারের সূচক সামান্য বেড়েছে৷ ইউরোপে লন্ডনের বাজার সামান্য উঠলেও পড়েছে জার্মানির৷
সরকার চায় জিএএআর-এর মাধ্যমে আয়কর দপ্তরের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা দিতে যাতে ভারতে সম্পত্তি আছে এমন কোনও সংস্থার কেনা-বেচায়, সেটা দেশেই হোক আর বিদেশে, মূলধনী লাভের সুবিধা নাকচ করে দিতে আয়কর দপ্তর যদি তারা মনে করে কেবল কর ফাঁকি দেওয়ার জন্যই ওই কেনা-বেচা করা হয়েছে৷
সরকার এই নিয়ম চালু করার কথা বলেছিল সুপ্রিম কোর্টে ভোডাফোন মামলায় হেরে যাওয়ার পর৷ বৃটিশ সংস্থা ভোডাফোন ভারতের টেলিকম পরিষেবা সংস্থা হাচিসন এসারের মালিকানা কেনে৷ ভোডাফোন ও হাচিসনের এই কেনা-বেচা পুরোটাই হয়েছে বিদেশের মাটিতে৷ বিদেশে কোনও কেনা-বেচার ওপর ভারত সরকার কোনও কর দাবি করতে পারে না এই যুক্তিতে কর দিতে অস্বীকার করে৷ সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত মামলা গড়ালে তাতে জয় হয় ভোডাফোনেরই৷ কিন্ত্ত ভবিষ্যতে এই ধরনের অধিগ্রহণে যাতে ভারত সরকার কর পেতে পারে, তাই জিএএআর লাগু করার প্রস্তাব দেন তদানীন্তন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ সেই সময় বলা হয়, আগে হওয়া এই ধরনের সমস্ত কেনা-বেচার ওপর জিএএআর লাগু হবে৷ ২০১২-১৩ অর্থবর্ষের বাজেটে জিএএআর-এর প্রস্তাব করেন তত্কালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়৷ এই নিয়ম চালু হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ দেশে কর দেওয়া এড়াতে পারবেন না৷ এই প্রস্তাব পেশের পর থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছিল৷ বিদেশি বিনিযোগকারীদের আশঙ্কা ছিল এই নিয়ম চালু হওয়ার ফলে কর বিভাগ অকারণ তাঁদের সমস্যা তৈরি করবে৷ এতেই শঙ্কিত হয়ে পড়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা৷
২০১৬ সালের আগে যে জিএএআর চালু করা হবে না সোমবার অর্থমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ প্রায় ১.২৩ শতাংশ বা ২৪৩ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়৷ ২ জানুয়ারির পরে এ দিনই প্রথম তিন অঙ্কে বাড়ল শেয়ার সূচক৷ দু'বছরের মধ্যে এতটা বেশি উত্থান হয়নি শেয়ার বাজারের৷ নয়াদিল্লির জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জও এ দিন এক লাফে ৭২.৭৫ পয়েন্ট (১.২২ শতাংশ) বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এদিন ১৩টি সেক্টরের মধ্যে এগারোটির সূচকই ছিল উর্ধ্বমুখী৷ শুধুমাত্র অটো ও ফার্মাসিউটিক্যালস খারাপ ফল করেছে৷
এ দিন মার্কিন ডলার সাপেক্ষে টাকার দাম ২৭ পয়সা বেড়েছে৷ ফলে ডলারের দাম ৫৪.৭৬ টাকা থেকে কমে ৫৪.৪৯ টাকা হয়েছে৷ কোটাক সিকিউরিটিজের সঞ্জীব জারবাড়ে বলেছেন, 'অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম জিএএআর নিয়ম আপাতত লাগু না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরই বাজার চাঙ্গা হয়েছে৷'
চিদম্বরম বলেন, পার্থ সারথি সোম কমিটির সুপারিশ মেনেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত৷ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ খতিয়ে দেখতে গতবছর জুলাই মাসে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর রিসার্চ অন ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক রিলেশনসের ডিরেক্টর ও সিইও পার্থসারথি সোমের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং৷ কমিটির সুপারিশ ছিল, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষের আগে জিএএআর লাগু না করা৷ তাই আগামী অর্থবর্ষের গোড়ায় জিএএআর চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
সোম কমিটির বেশ কয়েকটি সুপারিশ মেনে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, 'করগ্রহীতা ও বিনিয়োগকারী উভয়ের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে যে সব রদবদল করা হয়েছে সেগুলি উপযুক্ত, যথাযথ ও ঠিক৷ সুতরাং সব উত্কণ্ঠারই অবসান হল৷' এদিন নয়াদিল্লিতে চিদম্বরম বলেন, মরিশাসের সঙ্গে কর ফাঁকি চুক্তি নিয়ে কার্যত কোনও অগ্রগতিই হয়নি৷ অর্থমন্ত্রী বলেন, 'বহু দিন ধরেই কথাবার্তা চলছে (মরিশাসের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে)৷ তবে, আদৌ কোনও অগ্রগতি হয়েছে বলে আমি মনে করি না৷'
তিন দশকের পুরনো দ্বিপাক্ষিক ডাবল ট্যাক্সেশন অ্যাভয়ডেন্স কনভেনশনের (ডিটিএসি) ফাঁকফোকর বোজাতে ২০০৬ সালে ভারত ও মরিশাসের মধ্যে গঠিত হয় জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ (জেডব্লুজি)৷ ১৯৮৩ সালে ডিটিএসি সই হয়৷ ওই চুক্তির আওতায় রয়েছেন শুধুমাত্র ভারত ও মরিশাসের নাগরিকরাই৷ ভারত চায় মরিশাসের মাটিতে যে কোনও লেনদেন, যার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ভারতের যোগ রয়েছে, তা এই চুক্তির আওতায় আনতে৷ নতুন চুক্তি নিয়ে আট রাউন্ড বৈঠক হয়েছে৷ চিদম্বরম জানিয়েছেন পরের বৈঠক ফেব্রুয়ারি বা মার্চে হওয়ার কথা৷
মরিশাস অবশ্য কিছুদিন আগে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিল, যখনই কোনও লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য ভারত চেয়েছে, তখনই মরিশাস তা সরবরাহ করেছে৷ এমনকি ভারতের সঙ্গে যোগ থাকতে পারে মনে হলে যে কোনও লেনদেন তারা খতিয়ে দেখে৷ গত সপ্তাহে মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী নবীনচন্দ্র রামগোলামের সঙ্গে বৈঠক করেন বাণিজ্যমন্ত্রী আনন্দ শর্মা৷ দু'দেশই জেডব্লুজি এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷
জম্মু ও মথুরা: ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ব্রিগেডিয়ার পর্যায়ের ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের পরও নিয়ন্ত্রণ রেখায় গন্ডগোল থামার কোন লক্ষ্মণই নেই।গতকাল রাতেও চলল দুপক্ষের মধ্যে গুলি বিনিময়।
পুঞ্চে পাক-সেনাদের হাতে দুই ভারতীয় সেনার হত্যকাণ্ডের পর থেকেই অশান্ত নিয়ন্ত্রণরেখা৷ গতকাল রাতে ফের গোলাগুলি চলেছে সেখানে৷ গতকাল রাত ১০ টা থেকে ১১ টার মধ্যে ফের সেখানে ভারত ও পাক সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি চলে৷ নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে কুণ্ডি পোস্টে এই ঘটনা ঘটে৷ ভারতীয় জওয়ানদের গুলিতে এক পাক সেনার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পাকিস্তানের৷ যদিও, ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে৷ অন্যদিকে, পাক সেনাদের হাতে মৃত ভারতীয় জওয়ান হেমরাজের বাড়িতে আজ যান সেনাপ্রধান জেনারেল বিক্রম সিংহ৷ মথুরার শেরনগরে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন সস্ত্রীক সেনাপ্রধান৷নিহত শহীদের প্রতি তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান। তিনি সুবিচারের প্রতিশ্রুতিও নিহত সেনার পরিবারকে দিয়েছেন। গ্রামের লোক শহীদ হেমরাজের মূর্ত্তি স্থাপনের দাবি জানান।
http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32542-2013-01-16-04-43-40
নয়াদিল্লি: ক্রমাগত বেড়ে চলা কূটনৈতিক টানাপোড়েনে চাপের মুখে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক৷
ভারতীয় সেনার নির্মম হত্যার পর ফের সামনে এল পাকিস্তানের আরও এক কুকীর্তি৷ ভারতের মাটিতে ঢুকে ল্যান্ডমাইন পুঁতে দিয়ে গিয়েছে পাক সেনা৷ বুধবার ভারতীয় সেনাবাহিনীর তরফে এই চাঞ্চল্যকর খবর জানানো হয়েছে৷ দাবির স্বপক্ষে ল্যান্ডমাইনগুলির ছবিও প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী৷
এদিকে, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা জবাব দিয়েছে ইসলামাবাদ৷ ভারত যুদ্ধবাজের মতো আচরণ করছে বলে অভিযোগ পাক বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খারের৷ পুঞ্চের কাছে নিয়ন্ত্রণরেখায় দুই ভারতীয় জওয়ানের নৃশংস হত্যার প্রসঙ্গ সুকৌশলে এড়িয়ে সাম্প্রতিক জটিলতার পুরো দায় ভারতের ঘাড়ে ঠেলার চেষ্টা করেছেন পাক বিদেশমন্ত্রী৷ ওয়াশিংটনে এক সম্মেলনে যোগ দিতে গিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, দিল্লির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা যে মন্তব্য করছেন, তাতে ইসলামাবাদ হতাশ৷ তাঁর অভিযোগ, নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে তিলকে তাল করে দেখাচ্ছে ভারত৷
এদিকে, পাকিস্তানের যাবতীয় দাবি খারিজ করে দিয়েছে ভারতীয় সেনা৷ ভারত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরোয়নি বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহ৷ নিহত জওয়ান হেমরাজের মথুরার বাড়িতে গিয়ে আজ তাঁর পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন সেনাপ্রধান৷
ভারত-পাকিস্তানের এই চাপানউতোরের মধ্যই এখনও অশান্ত নিয়ন্ত্রণরেখা৷ মঙ্গলবার রাতভর গোলাগুলি চলে৷ গুলিতে তাদের এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পাকিস্তানের৷ ভারতীয় সেনাবাহিনী পাল্টা জানিয়ে দিয়েছে, তারা নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেনি, প্রথমে গুলিও চালায়নি৷ যদি কোনও পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়ে থাকে, তাহলে তা পাকিস্তানের গুলির পাল্টা জবাবের ফলে হয়েছে৷
http://abpananda.newsbullet.in/national/60-more/32559-2013-01-16-11-24-32
বেঙ্গল লিডস জুড়ে গুজরাতের ছায়া৷ দিন কয়েক আগেই নরেন্দ্র মোদীর ভাইব্র্যান্ট গুজরাত ফের চমকে দিয়েছে সবাইকে৷ আর সংবাদমাধ্যমে গুজরাতের এই প্রশংসা ভাল চোখে না দেখলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও যে তার সাফল্য অস্বীকার করতে পারেন না, তা স্পষ্ট হয়ে গেল তাঁর কথা থেকেই৷ ঘুরেফিরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলাতেও উঠে এল সেই গুজরাত প্রসঙ্গ৷ বেঙ্গল লিডস ও ভাইব্র্যান্ট গুজরাত দু'টোই লগ্নি টানার উদ্যোগ হলেও, পার্থক্য যে একাধিক তা প্রথমদিনই স্পষ্ট হয়ে গেল৷
মোদীর আমন্ত্রণে হাজির হয়েছিলেন, টাটা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এমিরেটাস রতন টাটা, দুই অম্বানি ভাই, মুকেশ ও অনিল, গৌতম আদানি, আদি গোদরেজ, এইচডিএফসির আদিত্য পুরী, আইসিআইসিআইয়ের চন্দা কোচার, উদয় কোটাক৷ ছিলেন অনাবাসী শিল্পপতি প্রসূণ মুখোপাধ্যায়ও৷ এর মধ্যে, হলদিয়ার বেঙ্গল লিডসে উপস্থিত একমাত্র প্রসূণ মুখোপাধ্যায়৷ বাকিদের একজনও উপস্থিত হলেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্প সম্মেলনে৷ তফাত আরও রয়েছে৷
গুজরাতে প্রথম দিনেই বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকার৷ বেঙ্গল লিডসে প্রথম দিন প্রকাশ্যে কোনও বিনিয়োগ প্রস্তাবের কথা শোনা যায়নি৷
ভাইব্র্যান্ট গুজরাতে ভিড় জমিয়েছিলেন ১৬ লক্ষ মানুষ৷ অংশ নেয় ১২১টি দেশ৷ বিদেশি প্রতিনিধির সংখ্যা ২১ হাজার৷ সেখানে হলদিয়ার বেঙ্গল লিডসে চিনের কনসাল জেনারেল ছাড়া অন্য কোনও দেশের কনসাল জেনারেলকে দেখা যায়নি৷
বেঙ্গল লিডসে মোট ৬৩টি সংস্থা-দফতর চারশোটি স্টল দিয়েছে৷ এই ৬৩টির মধ্যে ২৬টি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতর৷ বেঙ্গল লিডসে পঞ্চান্ন জন বক্তার মধ্যে ২১ জনই সরকারি আমলা৷
রতন টাটার অবসরের পর যাঁর সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে তৈরি করার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় সেই সাইরাস মিস্ত্রীকেও দেখা গেল না বেঙ্গল লিডসে৷ আসেননি তাঁর দাদা সাপুরজি মিস্ত্রী কিংবা সজ্জন জিন্দলও৷
তাই শিল্প মহলের মতে, প্রথম দিনের নিরিখে, ভাইব্র্যান্ট গুজরাতের কাছে অনেকটাই ফিকে বেঙ্গল লিডস৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32522-2013-01-15-14-33-15
হলদিয়া: যেখানে 'বেঙ্গল লিডস' সম্মেলন বসেছে, সেই হলদিয়াতেই রাজ্য থেকে পাততাড়ি গুটানো এবিজির কর্মচ্যুত শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশ লাঠি চালাল৷ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্মেলনের উদ্বোধনের দিনই ফের উত্তপ্ত হল হলদিয়া৷ অথচ রাজ্যে শিল্পের ভাবমূর্তি রক্ষায় হলদিয়াকেই মুখ হিসেবে তুলে ধরছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার! কয়েকদিন ধরে নন্দরামপুরে বিক্ষোভে বসেছেন হলদিয়ার কর্মচ্যুত শ্রমিকরা৷ তাই আগে থেকে বিক্ষোভস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল৷ দুপুর একটা নাগাদ এবিজির কর্মচ্যুত শ্রমিকরা মিছিল করতে গেলে গণ্ডগোলের সূত্রপাত হয়৷ মিছিল রুখতে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা৷ পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে যোগ দিতে আসা জেলা কংগ্রেস নেতা কণিষ্ক পাণ্ডাকেও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷এবিজির কর্মচ্যুত শ্রমিকদের আন্দোলনে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তিনি বাজকুলে তাঁর গাড়ি আটকে দেওয়া হয় বলে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে৷ যদিও পুলিশের বক্তব্য, আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির কথা ভেবেই তাঁর গাড়ি আটকানো হয়৷ এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়৷ প্রশ্নের মুখে পড়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32531-2013-01-15-16-16-04
রাজ্যে রেলের তেরোটি প্রকল্পের কাজ শেষের মুখে৷ বেঙ্গল লিডসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই দাবিকে ঘিরে রেল মন্ত্রকের অন্দরেই প্রশ্ন উঠে গেছে৷ রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, কাঁচরাপাড়ায় রেলের কোচ তৈরির কারখানা থেকে শুরু করে জেলিংহামে কাপলার তৈরির কারখানা-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ এখনও বিন্দুমাত্র এগোয়নি৷
তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকে রাজ্যে কার্যত শিল্পে খরা৷ যদিও, মুখ্যমন্ত্রী এ কথা মানতে নারাজ৷ হলদিয়ায় বেঙ্গল লিডসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যে ১৩টি রেল প্রকল্পের কাজ শেষের মুখে৷ কে বলে রাজ্যে শিল্প হচ্ছে না?
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবিকে ঘিরে রেল মন্ত্রকের অন্দরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর,
জলপাইগুড়িতে এক্সেল তৈরির কারখানার কাজ এক বিন্দু এগোয়নি৷ কাঁচরাপাড়ায় রেলের কোচ তৈরির কারখানার কাজও শুরু হয়নি৷ আদ্রায় ১৩ মেগাওয়াট বিদ্যুত্ প্রকল্পেরও কাজ একই তিমিরে৷ জেলিংহামে কাপলার তৈরির কারখানারও কোনও কাজ এগোয়নি৷
বিভিন্ন মহল প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, তা হলে কীভাবে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করছেন, রাজ্যে তেরোটি রেল প্রকল্পের কাজ শেষের মুখে৷ যদিও, রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি রেল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে৷ যেমন,
ডানকুনিতে রেলের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা, হলদিয়ায় ডিএমইউ কারখানা, খড়গপুরে ওয়াগন তৈরির কারখানা, বজবজে রেল কোচের যন্ত্রাংশ তৈরি ও কুলটিতে ওয়াগন তৈরির কারখানার কাজ শুরু হয়েছে৷
http://abpananda.newsbullet.in/state/34-more/32524-2013-01-15-14-56-55
কলকাতাঃ গঙ্গাসাগর থেকে কলকাতা হয়ে পুরী ফিরছিলেন শঙ্করাচার্য৷
আজ কলকাতায় প্রেস ক্লাবে তিনি বলেন, রাজনীতিতে ফায়দা তোলার জন্য দুর্বৃত্তদের সাহায্য নিচ্ছেন রাজনীতিবিদরা৷ ভোটের সময় সেই প্রবণতা আরও বাড়ে৷ ভোট ফুরোলেও সেই প্রবণতা থেকে বেরতে পারেন না রাজনৈতিক নেতারা৷ শঙ্করাচার্যের মতে, সেই কারণেই দেশ এগোচ্ছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে৷
স্বাভাবিকভাবেই উঠে আসে পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গও৷ দুষ্কৃতীরাজ ঠেকাতে বর্তমান রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলেই আশা শঙ্করাচার্যর৷
এদিকে দেশে বেড়ে চলা ধর্ষণ প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি বলেছেন, পশ্চিমী ঐতিহ্যের প্রভাবেই ভারতীয় সংস্কৃতিতে মারাত্মক পরিবর্তন ঘটছে। এরফলেই দেশে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে ধর্ষণের মতো ঘটনা। তিনি মনে করেন, পশ্চিমী দুনিয়ার প্রভাব পড়েছে সিনেমা, ক্লাবের আড্ডা, মানুষের পোশাক এবং জীবনযাত্রার ওপর। আগে ভারতীয় ঐতিহ্যে শেখানো হত, একজন নারীকে মা বা বোনের মতো করে দেখতে। সেখানে আজকের সমাজে নারীদের কোনও সম্মানই নেই। তাঁর কথায়, স্বাধীনতার পূর্বে আমাদের দেশে অন্যরকমের ঐতিহ্য ছিল, কিন্তু স্বাধীনতার ৬৫ বছর পর পুরো অবস্থাটারই পরিবর্তন হয়ে গেছে।
শঙ্করাচার্যের বক্তব্য, দিল্লি গণধর্ষণের মতো মারাত্মক ঘটনা কখনও একদিনে হঠাত্ করে ঘটে না। ভারতীয় সংস্কৃতিতে এখন উন্নয়নের নামে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি প্রতিটা পদক্ষেপে জড়িয়ে গেছে। মানুষ - মানুষকে সম্মান করতে ভুলে গেছে। ভারত - পাক সীমান্তে পাক সেনাদের হাতে ভারতীয় সেনাদের হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এটি একটি ক্ষমার অযোগ্য নৃশংস হত্যাকাণ্ড।
http://abpananda.newsbullet.in/kolkata/59/32563
পাকিস্তানি প্রবীণ নাগরিকদের ভিসা প্রদানে স্থগিতাদেশ জারি করল ভারত। সীমান্তে গত কয়েকদিন ধরে চলতে থাকা চাপান উতোরের মধ্যেই মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক সূত্রে খবর, ৮ জানুয়ারি পুঞ্চ সীমান্তে পাক সেনার হাতে দুই ভারতীয় জওয়ান নিহত হওয়ার পর প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে আর কতটা সৌহার্দ দেখানো হবে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বিভিন্ন মহলে।
পাকিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চাঙ্গা করতে ২০১২-র সেপ্টেম্বরে এক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিতে ৬৫ ঊর্ধ্ব পাকিস্তান নাগরিকদের ভারত ভ্রমণে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধন্ত নেয় ভারত। চার মাস পর সেই চুক্তি বাস্তবায়নের সময় এলেও পিছু হঠল ভারত। মঙ্গলবারই আঠারি সীমান্তে বিশেষ ভিসা প্রদানের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। সোমবারের `ফ্ল্যাগ মিটে` ভারতের তরফে কড়া বার্তা দেওয়ার পর ভিসা চুক্তি বস্তবায়নের আর কোনও যুক্তি থাকে না বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সম্প্রতি পাক আভ্যন্তরীণ মন্ত্রী রহমন মালিকের দিল্লি সফরকালেও ভারত-পাক ব্যবসা দূর অস্থ করতে ভিসা প্রদানে বেশ কিছু নিয়ম শিথিল করে ভারত।
সে দেশের প্রবীণ নাগরিক দের ভারত ভ্রমণে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ভিসা প্রদানের কাজ কবে শুরু হবে তাও স্পষ্ট করেনি নয়াদিল্লি। সূত্রের তরফে জানানো হয়েছে, ভারত "ঠিক সময়ে" সিদ্ধান্ত নেবে।
নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা কমার কোনও লক্ষণ নেই। পাক সেনার বিরুদ্ধে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ছিলই। কিন্তু এবার সীমান্ত পেরিয়ে ভারতীয় ভুখণ্ডে ল্যান্ডমাইন রাখার অভিযোগ উঠল। প্রমাণ হিসেবে সেই ল্যান্ডমাইনের ছবি প্রকাশ করেছে সেনাবাহিনী। সেনা সূত্রে খবর গত সোমবার পুঞ্চে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে ওই ল্যান্ডমাইনের পেশ করা হলেও, পাক সেনা তা নিতে অস্বীকার করে। ল্যান্ডমাইনগুলি যে পাকিস্তানে তৈরি, তা ছবি থেকে পরিষ্কার। ভারতীয় জওয়ানদের যাতায়াতের পথে ল্যান্ডমাইন রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
পাল্টা অভিযোগে পাকিস্তানের দাবি নিয়ন্ত্রণরেখায় হট স্প্রিং এবং জানদ্রোটে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করেছে ভারতীয় সেনা। ঘটনায় এক পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে। এবিষয়ে সরকারিভাবে ভারতীয় সেনার কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে পাক সেনা। ভারত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে। সেনার তরফে জানানো হয়েছে, পুঞ্চে লাগাতার পাক সেনা গোলাগুলি চালালেও, ভারতীয় জওয়ানরা পাল্টা হামলা করেননি।
নর্দার্ন আর্মির কম্যান্ডার জেনারেল কেটি পারনায়ক জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করার অভিযোগ ফ্ল্যাগ মিটিংয়ে বার বার নাকচ করেছিল পাক সেনা। তখন তাদের সামনে এই ছবি তুলে ধরা হয়। কিন্তু কী ভাবে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে ল্যান্ডমাইন পুঁতে গেল পাক সেনা? পারনায়ক বলেছেন, `সীমান্তের ওপার থেকে আমাদের পিকেট লক্ষ্য করে ক্রমাগত গুলি চলেছে। রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসীরা সীমান্ত পার করে এই মাইন পুঁতে গিয়েছে। আমরা সেগুলি খুঁজে বের করেছি।
সেনাপ্রধানের পর খোদ প্রধানমন্ত্রী। পুঞ্চ সীমান্তে পাক সেনার হাতে দুই ভারতীয় জওয়ানের নৃশংস মৃত্যু নিয়ে এবার মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী জানান, এই ধরনের ঘটনা চলতে থাকলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখা সম্ভব নয়। নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়, সাম্প্রতিক কয়েকটি বৈরিতাপূর্ণ ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারত সম্পর্ক ঠিক কোন খাতে এগোবে? কিন্তু সে বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি মনমোহন সিং।
গত ৮ জানুয়ারি জম্মু কাশ্মীরের সীমান্ত নিয়ম লঙ্ঘন করে ভারতে ঢুকে পড়ে পাক সৈন্য। শুধু তাই নয়, দুই ভারতীয় জওয়ানকে বর্বরোচিত ভাবে হত্যা করে তারা। ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ফলে ভারত সরকারের ওপরও চাপ বাড়ে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার। মৃত ল্যান্স নায়ক হেমরাজ সিংয়ের শিরোচ্ছেদ করে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনা। হেমরাজের শরীরের বাকি অংশ ফিরিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রের কাছে দফায় দফায় দরবার করে তাঁর পরিবার।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি তোলে বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টি। পাকিস্তান সম্পর্কিত সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলিকে গতকাল জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
গতকালই সীমান্ত বৈঠকের আগে সেনাপ্রধান বিক্রম সিং কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, প্রয়োজন পড়লে ভারত প্রত্যুত্তর দিতেও পিছপা হবে না।
রাত হলেই নিয়ন্ত্রণরেখায় গোলাগুলি চলছে বলে খবর। তাদের এক জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পাকিস্তানের৷ ভারতীয় সেনাবাহিনী অবশ্য জানিয়ে দিয়েছে, তারা নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করেনি, প্রথমে গুলিও চালায়নি৷ যদি কোনও পাক জওয়ানের মৃত্যু হয়ে থাকে, তাহলে তা পাকিস্তানের গুলির পাল্টা জবাবের ফলে হয়েছে৷
দেশের উন্নয়নে পরমাণু শক্তি জরুরি হলেও তাতে কোনওভাবেই নাগরিকদের সুরক্ষা বিঘ্নিত হবে না বলে আশ্বাস দিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
জাপানের ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পরই দেশের পরমাণু কেন্দ্রগুলির নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়ে কুড়ানকুলামে পরমাণু কেন্দ্র তৈরির প্রকল্প। সোমবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরক্ষার দিকে তাকিয়ে নতুন নিউক্লিয়ার সেফটি রেগুলেটরি অথরিটি বিল নিয়ে আলোচনা চলছে দেশের সংসদে। আন্তর্জাতিক পরমানু শক্তি সংস্থার সঙ্গে এবিষয়ে ভারত সহযোগিতা করে চলছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
৩৫ পয়সা বাড়ল পেট্রোলের দাম
ফের বাড়ল পেট্রলের দাম। মঙ্গলবার মাঝরাত থেকে লিটার পিছু ৩৫ পয়সা বাড়তে চলেছে প্রট্রলের দাম। রাজধানী দিল্লিতে তেলের দাম বেড়ে দাঁড়াল ৬৭ টাকা ৫৬ পয়সা।
জানা গিয়েছে, প্রত্যেকটি শহরে পেট্রোলের দরের নিরিখে দামবৃদ্ধি হবে। এর আগে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দু`সফায় তেলের দাম কমায় তেল সংস্থাগুলি। প্রথম বার দাম কমে ৫৬ পয়সা, দ্বিতীয় দফায় পেট্রোলের দর পড়ে ৯৫ পয়সা।
http://zeenews.india.com/bengali/football.aspx
রেলপ্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় তৈরি করা সমস্ত কমিটি ভেঙে দিয়েছেন অধীর চৌধুরী। ভাঙার পিছনে তাঁর যুক্তি, লোকসানে চলা রেলের পক্ষে কমিটির খরচ বহণ বাতুলতা মাত্র। কতটা টাকা খরচ হত কমিটির সদস্যদের জন্য? উঠে এসেছে সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
দুহাজার নয়। রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলমন্ত্রী হওয়ার পরই তড়িঘড়ি বেশ কয়েকটি কমিটি গঠন করেন তিনি।
কেন এই কমিটি? কী কাজ হবে কমিটির? কাদের নিয়ে গড়া হল কমিটি?
প্রথম দুটি প্রশ্নের থেকেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল তৃতীয় প্রশ্নটি। কারা ছিলেন সেদিনের কমিটিতিতে? শাঁওলি মিত্র, অর্পিতা ঘোষ, বিভাস চক্রবর্তী, ব্রাত্য বসু, শুভাপ্রসন্ন এবং আরও অনেকে। এককথায় নন্দীগ্রাম কাণ্ডের পর যারাই পরিবর্তনের পক্ষে পথে নেমেছিলেন, তাঁদের অধিকাংশকেই কমিটির সদস্য করে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কমিটির সদস্য হওয়ার সুবাদে এদের কেউ ভাতা পেতেন ২৫ হাজার, কেউ পেতেন ৫০ হাজার টাকা। তবে শুধু ভাতা নয়, ছিল আরও অসংখ্য সুযোগ সুবিধা। রেলমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বছরে শুধুমাত্র ভাতা বাবদ খরচ হত প্রায় চার কোটি টাকা। এসব কথা এখন প্রায় সকলেরই জানা।
কিন্তু যেটা অজানা ছিল, তা হল একেক জন কমিটির সদস্যের জন্য কত টাকা খরচ হত রেলের? সেই তালিকাও এখন আমাদের হাতে। সূত্র রেলমন্ত্রক।
যাত্রী সুরক্ষা কমিটি
শুভাপ্রসন্ন ৩০৮৭১০ টাকা
রাধিকা রঞ্জন প্রামানিক ২১০৬৫৪ টাকা
ডঃ বরকটি ২৪৯২৯০ টাকা
পল্লব কীর্ত্তনীয়া ২৪৬৯৬৮ টাকা
রচপাল সিং ২৪৮৯৬৮ টাকা
রুকবানুর রেহমান ১৯৫৮৭১ টাকা
হরনাথ চক্রবর্তী ৭৬১২৯ টাকা
পেসেঞ্জার সার্ভিস কমিটি
ডেরেক ও ব্রায়ন ৫১৮৭১ টাকা
ব্রাত্য বসু ১৫২৫৭৪ টাকা
আবু আয়েস মণ্ডল ১৭৯৫৮০ টাকা
সুলতান সিং ১৫০৯৬৮ টাকা
গৌতম ঘোষ ১১২৪৪৮ টাকা
মনীশ মিত্র ১৮৭৫৬৭ টাকা
ধুঁকছে রেল। লোকসানের পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা। রেল বিশেষজ্ঞদের দাবি, অপরিকল্পিত ব্যায়ের কারণেই রেলের এই ভয়ঙ্কর সংকট। তারমধ্যে এই কোটি কোটি টাকা খরচ করার অর্থ কী? পরিবর্তনের স্লোগানে সামিল হওয়ার কারণেই কী এটা তাঁদের পুরস্কার? রেল ভবনের অলিন্দে এখন ঘুরে বেড়ায় এইসব প্রশ্ন।
http://zeenews.india.com/bengali/nation/rail-committee_10705.html
সাগরে বিতর্কের কেন্দ্রে পাঁচ কোটির বাংলো
গঙ্গাসাগর: বাহারি টবের সারি, তার মধ্যে রঙিন আলোর স্তম্ভ৷ তিন বিঘা জমির পাঁচিল ঘেরা হয়েছে শালের খুঁটি দিয়ে৷ ঠিক মাঝখানে ১,২০০ স্কোয়্যার ফুটের বাংলো৷ শালকাঠের কাঠামো, ভিতরে ব্যবহার করা হয়েছে সেগুনের তক্তা৷ দুটো স্যুট, প্রমাণ মাপের হলঘর, সেই সঙ্গে রান্নাঘর, খাওয়ার ঘর৷ বিলাসী বাথরুমেই খরচ হচ্ছে প্রায় কোটি টাকা৷ বসবে বেলজিয়ান কাঁচও৷
গঙ্গাসাগরে কপিলমুনির আশ্রমের কাছেই তৈরি হচ্ছে বিতর্কের গর্ভগৃহ-- শাল-সেগুনের তৈরি পাঁচ কোটির বিলাসবহুল বাংলো৷ ইতিমধ্যেই খরচ হয়েছে তিন কোটি৷ অসমাপ্ত বাংলো উদ্বোধন পর্যন্ত করে গিয়েছেন দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিম৷ চোখধাঁধানো বাংলো নিয়ে হাজারো প্রশ্ন ঘুরছে দ্বীপে৷ যেখানে ঠিকাদারদের বকেয়া ৫০ লক্ষ টাকা এখনও মিটিয়ে উঠতে পারেনি জেলা পরিষদ, যেখানে এ বার প্রায় হাতে-পায়ে ধরে ছাউনি, ব্যারিকেড, শৌচাগার তৈরি করাতে হয়েছে, সেখানে এমন খরচ কেন?
রাজ্য সরকারেরও তো ভাঁড়ে মা ভবানী৷ বিভিন্ন মঞ্চে বার বার সে কথা স্পষ্ট বুঝিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ কিন্ত্ত খরচের বহরে তা মোটেই প্রতিফলিত হচ্ছে না৷
সাগরে বাংলো তৈরির টাকা দিচ্ছে হিডকো৷ পরিকল্পনা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের৷ দপ্তরের এক বাস্ত্তকারের কথায়, 'রুচিশীলতার সঙ্গে অত্যাধুনিক স্বাচ্ছন্দ্যের মেলবন্ধন হচ্ছে বাংলোয়৷ গোটাটাই হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত৷' পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর মতো হাই-প্রোফাইল অতিথি এলে তাঁরা এখানে থাকবেন৷' সেক্ষেত্রে কোথায় জায়গা হবে তাঁদের বহু সংখ্যক নিরাপত্তারক্ষী এবং আধিকারিকদের? প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন সুব্রতবাবু৷ যে ভাবে 'বাংলো কেন'র প্রশ্ন এড়িয়ে যাচ্ছেন মন্ত্রী-আমলারা৷ পূর্ত দপ্তরের খবর, চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পরিদর্শনে যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী৷
কাজ শেষ না-হতেই তড়িঘড়ি উদ্বোধন করা হল কেন? এমনিতে গঙ্গাসাগর মেলার জন্য এখন কাজ বন্ধও রয়েছে৷ ফিরহাদ হাকিম দাবি করেছেন, 'যে কোনও ভিভিআইপি চাইলে বাংলোয় গিয়ে থাকতে পারেন৷' হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন অবশ্য স্বীকার করেছেন, এখনও কিছু কাজ বাকি রয়েছে৷ কবে শেষ হবে, তা জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দপ্তর বলতে পারবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ পিএইচই-র সচিব সৌরভ দাস অবশ্য বলছেন, পরিকল্পনা হিডকোর, ফলে ওরাই বলতে পারবে৷
মাটি থেকে তিন ফুট উঁচুতে সাত কোনা কটেজ তৈরির কাঠ এসেছে উত্তর কলকাতার একটি কাঠের গোলা থেকে৷ পূর্ব মেদিনীপুরের ৩০ জন কারিগর কাঠামো গড়ছেন৷ মেলার ভিড় বিদায় নিলেই আবার কাজ শুরু হবে৷
ইতিমধ্যেই বিতর্কে জড়িয়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদ৷ গত পাঁচ বছরে ঠিকাদারদের বকেয়া প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা৷ টাকা না-পেলে ঠিকাদাররা এ বছর কাজ করবেন না বলে হুমকি পর্যম্ত দিয়েছিলেন৷ এ বার উতরে গেলেও, আগামী বছর কী হবে, কেউ জানেন না৷ জেলা পরিষদের এগজিকিউটিভ অফিসার তথা জেলাশাসক নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, 'সমস্ত বকেয়া দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হবে৷' কিন্ত্ত কেন এতদিন টাকা আটকে, তার উত্তর পাওয়া যায়নি।
গুজরাতকে হিংসা নয়, আমরাও ঐতিহাসিক | ||||||||||
জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত • হলদিয়া | ||||||||||
শিল্প আর শিল্পকলার মধ্যে কোনও ফারাক নেই তাঁর কাছে। তাই শিল্প সম্মেলনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি অনায়াসে বলতে পারেন, "এ বারে একটা গান হোক। কে কে গান শোনাবে? আমি জানি ধানুকা সাহেব পারেন।" খোদ মুখ্যমন্ত্রীর ডাক সি কে ধানুকা এড়ান কী করে! সুতরাং তাঁকে মঞ্চে উঠতে হল। "সা রে গা মা পা... সঞ্জীব আপনিও আসুন।" সঞ্জীব গোয়েন্কাও এলেন। 'সারেগামা'-র কর্ণধার হিসেবে 'গোটা সঙ্গীত দুনিয়ার মালিক' তো তিনিই। সবাই মিলে গান ধরলেন: যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে...। থুড়ি 'তোমার' ডাক শুনে। পাছে মুখ্যমন্ত্রীর অসম্মান হয়, তা-ই বোধহয় রবীন্দ্রনাথকেও পাল্টে নিলেন গায়করা। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ডাক শুনে শিল্পজগতের রথী-মহারথীরা কেউ আসেননি। তাই হলদিয়ায় 'বেঙ্গল লিডস'-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি সঙ্গীতটা আক্ষরিক অর্থেই প্রতীকী হয়ে রইল। ক'দিন আগেই অবশ্য ওই শিল্প মহারথীরা সাড়া দিয়েছিলেন আর এক মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে। 'ভাইব্র্যান্ট গুজরাত' সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদীকে ঘিরে বসেছিল চাঁদের হাট। গুজরাতের সাফল্য অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, খুব বড় ব্যাপার কিছু নয়। কারণ, মোদীর রাজ্যকে ৩৪ বছর সিপিএমের অপশাসন সহ্য করতে হয়নি। বরং বাংলা যেটুকু পেরেছে, সেটা সত্যিই কৃতিত্বের। কারণ, পরিবর্তনের দেড় বছরেই অনেক কিছু করে দেখিয়েছে তাঁর সরকার। এহেন ব্যাখ্যা শুনিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর (হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র পোস্টারে অবশ্য তিনি 'জননেত্রী') মন্তব্য, "গুজবে কান দেবেন না। অন্যকে হিংসাও করবেন না।" | ||||||||||
'একলা চলো' গান ধরলেন সি কে ধানুকা। সঙ্গে রয়েছেন সঞ্জীব গোয়েন্কা, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। ছবি: সুদীপ আচার্য | ||||||||||
কিন্তু হলদিয়ায় 'বেঙ্গল লিডস'-এর আসরে (মমতার কথায় যা ঐতিহাসিক) মোদী-রাজ্যের কথা কেন? কারণ, শিল্পমহল বারবারই এ রাজ্যের সঙ্গে তুলনা টানে গুজরাতের। কারণ, মোদী-রাজ্য লাগাতার উন্নয়নের রথ ছুটিয়েছে, লগ্নি টানার জন্য ঝাঁপিয়েছে এবং সফল হয়েছে। তার পাশে কোথায় পশ্চিমবঙ্গ? এই হাহাকার এ রাজ্যের শিল্প মহলে বারবারই ধ্বনিত হয়েছে। মমতা অবশ্য মনে করেন, এ সবই আসলে সংবাদমাধ্যমের একাংশের অপপ্রচার। সে কথা এ দিন স্পষ্ট করে বলেওছেন তিনি। কিন্তু সেখানেই থেমে যাননি। বক্তৃতার প্রথম পনেরো মিনিট ধরে বুঝিয়েছেন, গুজরাত কেন গুজরাত। তার পর বাকি সময়টা ধরে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ কেন পশ্চিমবঙ্গ। মুখ্যমন্ত্রীর সামগ্রিক বক্তব্য শুনে শ্রোতাদের অনেকেরই মনে হয়েছে, চনমনে যেন এ রাজ্যই! পিছিয়ে বরং গুজরাত! অনাবাসী শিল্পপতি প্রসূন মুখোপাধ্যায় যেমন বললেন, "গুজরাতে দু'বছর অন্তর শিল্প সম্মেলন হয়! এ রাজ্যে তো প্রতি বছর!" মমতা এ দিন বলেন, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে গুজরাতের অবস্থার কোনও তুলনা হয় না। না অবস্থানগত ভাবে, না পরিকাঠামোগত ভাবে, না অর্থনীতিগত ভাবে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য গুজরাতে জনসংখ্যা যেমন কম, তেমনই কম জনসংখ্যার ঘনত্ব। অথচ জমির পরিমাণ এ রাজ্যের চেয়ে অনেক বেশি। গুজরাতে ১৭টি বন্দর রয়েছে। ৩৪ বছরের বাম আমলের মতো বিপুল করের বোঝা তাদের উপর নেই! এ রাজ্যের মতো সুদের টাকাও গুনতে হয় না তাদের। রাজনীতি ও কর্মসংস্কৃতি? আবার উল্টো ছবি। এখানে কথায় কথায় বন্ধ, রাস্তা অবরোধ। গুজরাতকে সেই দুর্ভোগ পোহাতে হয় না। ভোটের সময়েই শাসক-বিরোধীরা শুধু লড়াই করেন। বাকি সময় রাজ্যের উন্নয়নেই মাথা ঘামান। মুখ্যমন্ত্রীর কটাক্ষ, "এখানে বামেরা যাঁরা এত গুজরাত গুজরাত করছেন, তাঁরা কেন এ সব কথা বলছেন না? চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম।" | ||||||||||
| ||||||||||
| ||||||||||
মমতার দাবি, এই কথাগুলো বলছে না সংবাদমাধ্যমও। "বলবে কেন? আমি তো আর সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মাইনি। রোজ টিভি চ্যানেলে নেগেটিভ প্রচার।" পশ্চিমবঙ্গকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লড়াইটা যে কত কঠিন, সেই প্রসঙ্গেই এ বার চলে যান মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে বন্দর মাত্র দুটো। তাও কেন্দ্র ঠিক মতো ড্রেজিং করে না। সঙ্গে রয়েছে আর্থিক বঞ্চনা। মাত্র তিন বছরের জন্য সুদের উপর ছাড় চেয়েছিলেন তাঁরা। রাজ্যে হাঁড়ির হাল। কিন্তু কেন্দ্র গা করছে না। যদি সব টাকা দেনা শোধ করতেই চলে যায়, তা হলে শিল্প সংস্থাকে রাজ্য কী করে আর্থিক সাহায্য দেবে? রাজ্যের আর্থিক সমস্যার সুরাহার জন্য তিনি এ রাজ্যের শিল্প-কর্তাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করতে যাবেন বলে জানালেন। নতুন গুজরাত বানাতে কেন্দ্রের সাহায্যের কমতি ছিল না। অবদান ছিল মমতারও! কী রকম? যখন মমতা রেলমন্ত্রী, তখন গুজরাতে বন্দর গড়ার জন্য তিনিও সাহায্য করেছিলেন। ভুজের ভূমিকম্পের পরে যখন 'অটলজি'-'আডবাণীজি' চিন্তিত কী ভাবে গুজরাতের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলা যায়, রেলমন্ত্রী হিসেবে মমতা মাত্র ১২ ঘণ্টা সময় চান। "আমি গর্বিত যে, যা চেয়েছিলাম, করতে পেরেছিলাম। এবং ত্রাণ ঠিক মতো পৌঁছেছিল।" তা না হলে ভূমিকম্প বিধ্বস্ত গুজরাত কী আর ঘুরে দাঁড়াতে পারত, মন্তব্য মমতার। গুজরাতের উন্নয়ানে তাঁর অবদানের কথা মানছে বিরোধী সিপিএমও। সূর্যকান্ত মিশ্রর কথায়, "গুজরাত সাম্প্রতিক কালে যে শিল্পে বাড়তি বল পেয়েছে, তার কৃতিত্ব এ রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর! তিনিই সিঙ্গুরের গাড়ি কারখানা গুজরাতকে উপহার দিয়েছেন!" পশ্চিমবঙ্গ তা হলে কী উপহার পাচ্ছে? অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এক গুচ্ছ ফিরিস্তি দিয়েছেন। কী কী করেছে নতুন সরকার, তার ফিরিস্তি। চেনা কথা, শোনা কথাগুলোই আবার বললেন কর-কাঠামো সংস্কার, স্বচ্ছ জমি বণ্টন নীতি, শ্রমদিবস নষ্ট হওয়া কমা, ই-টেন্ডারিংয়ের কথা। সে কথা শুনে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রর টিপ্পনী, "আমাদের সময়ে যে শ্রমদিবস বেশি নষ্ট হতো বলছেন, সেটা ওঁদের অবদান। আর এখনকার সরকারের আমলে শ্রমদিবস কম নষ্ট হচ্ছে বলছেন, সেটা আমাদের অবদান।" মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতায়, ফের পাহাড়-জঙ্গলমহল শান্ত হওয়ার প্রসঙ্গ। জমি ব্যাঙ্ক, জমি মানচিত্র, জমি ব্যবহার নীতি তৈরির প্রসঙ্গ। দেশের চেয়ে রাজ্যের জিডিপি বেশি থাকার প্রসঙ্গ। শিল্পপতিদের সঙ্গে সরাসরি আমলাদের কথা বলিয়ে দেওয়ার চেনা চমক। যার পরেই মমতা চেনা ভঙ্গিতে বলবেন, "আমি লোককে বিভ্রান্ত করি না।" | ||||||||||
| ||||||||||
| ||||||||||
কিন্তু এত আয়োজন, এত ঘোষণা কার জন্য? রাজ্যের চেনামুখ আর গোল্ডম্যান স্যাক্স-এর সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় ছাড়া আর কোনও বড় শিল্পপতি বা শিল্পসংস্থা তো ছিলেন না এ দিন। এমনকী রাজ্যে বড় লগ্নির নমুনা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী যাদের নাম নিলেন, তাঁদেরও অনেকে ছিলেন না। যেমন সেল-এর চেয়ারম্যান, যেমন এনটিপিসি-র প্রতিনিধি। মুখ্যমন্ত্রী বক্তৃতা করতে গিয়ে খোঁজ করছিলেন, এনটিপিসি-র কেউ আছেন? সাড়া এল না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানিয়ে দিলেন, আলিপুরদুয়ারে তাদের প্রস্তাব অনুমোদন করছে রাজ্য। কাটোয়া ও রঘুনাথপুরেও প্রকল্প হবে। কিন্তু ঘটনা হল, রাজ্য জমি দিতে নারাজ হওয়ায় থমকে রয়েছে কাটোয়ার তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প। এ রাজ্যে বড় শিল্প না থাকার অভিযোগ খণ্ডন করতে যে সব দৃষ্টান্ত এল, তার বেশির ভাগই অবশ্য রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পসংস্থার লগ্নি। রাজ্যের বিভিন্ন শিল্প পার্কে ১২টি শিল্পসংস্থাকে জমি বণ্টনের চিঠি বিলোনো হল। ২৭টি সংস্থাকে দেওয়া হল ঊর্ধ্বসীমার বেশি জমি রাখার ছাড়পত্র। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যে ১৩টি রেল-কারখানা গড়ার কথা বলেছিলেন মমতা। ডানকুনি, কাঁচরাপাড়া, শিলিগুড়ি ইত্যাদি অনেক জায়গাতেই কাজ চলছে বলে জানালেন। সেল-ও তাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্প গড়ছে। এ সব কি বড় শিল্প নয়? জবাব চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। হলদিয়ায় সঞ্জীব গোয়েন্কার মতো অনাবাসী শিল্পোদ্যোগী প্রসূন মুখোপাধ্যায় এ রাজ্যে বিদ্যুৎ শিল্পে লগ্নি করছেন। বিদ্যুৎ ব্যাঙ্কও হচ্ছে রাজ্যে, দাবি করলেন মমতা (যদিও নিন্দুকেরা বলেন, শিল্প নেই বলেই বিদ্যুৎ বাড়তি)। মমতার প্রশ্ন, "এগুলো কি কুটির শিল্প?" তবে রাজ্যের নজর তো যে ছোট ও মাঝারি শিল্পে, তা কখনও গোপন করেনি সরকার। তালা কারখানা, আগরবাতি তৈরির শিল্পোদ্যোগীরাও তাই ভরসা করে এসেছিলেন শিল্প সম্মেলনে। যা দেখে সূর্যকান্তর সরস মন্তব্য, "বোঝাই যাচ্ছে, যাঁদের ডাকছেন, কেউ আসছেন না!" |
http://www.anandabazar.com/16bus1.html
'একলা চলো'ই শুনল হলদিয়া
হলদিয়া: ক্ষমতায় আসার ১৮ মাস পরেও তাঁর সরকার শিল্পনীতি ঘোষণা করেনি৷ বহু বিজ্ঞাপিত ল্যান্ডব্যাঙ্কে শিল্পের জমি কতটা আছে তা নিয়েও তাঁর সরকার নীরব৷ স্বভাবতই বেঙ্গল লিডস-এর আসরে বড় অংক বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি মিলবে না, জানাই ছিল৷ কিন্ত্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তাতে কিছু যায় আসে না৷ মঙ্গলবার এখানে বেঙ্গল লিডস-এর উদ্বোধন করতে গিয়ে নিজেকে সেভাবেই তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বললেন, 'এ রাজ্যে শিল্পের উপযোগী সব আছে৷ জমি, জল, বিদ্যুত্--কী নেই? প্রচুর বিনিয়োগ আসছে৷ অচিরেই পশ্চিমবঙ্গ আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের গন্তব্য হয়ে উঠবে৷' শিল্পমঞ্চে এই সদম্ভ ঘোষণার পরই মুখ্যমন্ত্রী কাছের শিল্পপতিদের (সি কে ধানুকা ও সঞ্জীব গোয়েঙ্কা) মঞ্চে ডেকে গান গাইয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ইতি টেনেছেন৷ প্রশাসক মমতাকে ছাপিয়ে রাজনীতিক মমতার মনের কথাই যেন ফুটে উঠল সেই গানে--'যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে.....৷' অর্থাত্ তাঁর নীতি অপছন্দ বলে বেঙ্গল লিডসকে দেশের প্রথম সারির শিল্পপতিরা এড়িয়ে গেলেও তাতে তাঁর কিছু যায় আসে না৷ তিনি নিজের পথে প্রয়োজনে একলা চলবেন৷ তাই বেপরোয়া মমতা অর্থসংকট থেকে বিগত সরকারের সমালোচনার চর্বিতচর্বণ করে শিল্প সম্মেলনের ডায়াসকে ব্রিগেড বা শহিদ মিনারের জনসভার মঞ্চ করে তুলেছেন৷ বাম জমানার রাজনৈতিক সংস্কৃতি শিল্পায়নের প্রধান বাধা বোঝাতে গিয়ে লাগামহীন রাজনীতিই করেছেন এদিন৷
যদিও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে বড় বিনিয়োগ টানতে না পারার অভিযোগ নস্যাত্ করে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, 'কে বলছে জমির জন্য এখানে বড় শিল্প হচ্ছে না৷ এনটিপিসি কাটোয়া, রঘুনাথপুর ও আদ্রায় বিদ্যুত্ প্রকল্প গড়ছে৷ সিইএসসি হলদিয়াতে এবং ইউনিভার্সাল সাকসেস নয়াচর ও রঘুনাথপুরে বিদ্যুত্ প্রকল্প তৈরি করছে৷ সেল দুর্গাপুরে কুড়ি হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে৷ এ ছাড়া রেলের ১০-১২টি প্রকল্প আছে৷ রসুলপুর ও সাগরে দুটি গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি হবে বলে তিনি জানান৷ হলদিয়ায় আরও বেশি শিল্প গড়তে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের এলাকা তমলুক পর্যন্ত বাড়ানো হচ্ছে৷ পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শিল্পের নতুন গন্তব্য হিসাবে উঠে আসছে৷ এ দিন ১২টি ছোট ও মাঝারি মাপের সংস্থাকে জমি বণ্টনের চিঠি দেওয়া হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী এদিন হলদিয়ায় প্রস্তাবিত তথ্য প্রযুক্তি পার্কের ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করেন৷ তিনি বলেন, তাঁর দেড় বছরের জমানাতেই রাজ্যে শিল্পের জন্য জমি ব্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছে৷ তৈরি হচ্ছে বিদ্যুত্ ব্যাঙ্কও৷ তবে শিল্পের জন্য জমি শিল্পপতিদেরই সরাসরি কিনে নিতে হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী ফের জানিয়ে দেন৷ জমির সমস্যার কথা মাথায় রেখেই সম্ভবত মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, বড় শিল্প নয়, তাঁর লক্ষ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি কলকারখানা৷
যে শিল্পপতিরা মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছিলেন, যাঁদের সিংহভাগই এরাজ্যের এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি মাপের সংস্থার কর্ণধার, তাঁরাও চাক্ষুষ করলেন রাজ্য প্রশাসনের কর্মসংস্কৃতির হাল৷ ভিন রাজ্য থেকে কোনও বড় শিল্পকর্তাই আসেননি৷ এমনকী রাজ্যের প্রথম সারির শিল্পকর্তাদের মধ্যে আইটিসি-র যোগী দেবেশ্বর, হর্ষবর্ধন নেওটিয়াসহ অনেকেই অনুপস্থিত ছিলেন৷ সদ্য শেষ হওয়া ভাইব্রান্ট গুজরাট সম্মেলনে তারকা শিল্প কর্তাদের উপস্থিতির পাশে একেবারেই ম্যাড়মেড়ে ছিল বেঙ্গল লিডসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান৷ তাই শিল্প বার্তা দেওয়ার পরিবর্তে এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করেই গুজরাট ও পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টানার জন্য সমালোচকদের জবাব দিতে চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এমনকী শিল্প ক্ষেত্রে গুজরাটের উন্নতির পিছনে তাঁরও যে একটা ভূমিকা আছে, তা তিনি মনে করিয়ে দিলেন৷ পাশাপাশি, তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যের জন্য যে ১৩টি প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন সেগুলির কাজ প্রায় শেষের মুখে দাবি করে বোঝাতে চাইলেন রাজ্যে বড় শিল্প জমির জন্য আটকে নেই৷
শিল্পপতিদের তিনি বলেন, 'আমি রেলমন্ত্রী থাকার সময় কেন্দ্র গুজরাটে বেসরকারি বন্দর তৈরির অনুমতি দিয়েছিল৷ ওই রাজ্যে এখন ১৭টি বন্দর৷ সেখানে বাংলায় দুটি৷ তাও কেন্দ্র ড্রেজিং করাচ্ছে না৷ আমাদের জনসংখ্যাও গুজরাটের থেকে বেশি৷ অথচ জমির পরিমাণ কম৷' এই সুযোগে তিনি একহাত নেন পূর্বতন বাম সরকারকে৷ তাঁর মন্তব্য, 'গুজরাট সরকারকে কোনও রাজনৈতিক বাধার সম্মুখীন হতে হয় না৷ ওরা ভাগ্যবান৷ এ রাজ্যে আমরা ৩৫ বছরের বাম জমানার বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছি৷ আমরা যখন ক্ষমতায় আসি তখন আমাদের উপর ২ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকার দেনা৷ কীভাবে আপনাদের ইনসেনটিভ দেব?' সাফাইয়ের সুরেই তিনি উপস্থিত শিল্প কর্তাদের কাছে জানতে চাইলেন এই অবস্থার জন্য তাঁর সরকারের দোষ কোথায়? গুজরাটে কখনও এ রকম দেনার দায় ছিল না বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওদের অনেক টাকা, তাই শিল্পে অনেক সুবিধা দিতে পারে৷' দেনার প্রসঙ্গতেই তিনি তোপ দাগেন কেন্দ্রীয় সরকারকে৷ মমতা বলেন, 'কেন্দ্র আমাদের ভালবাসে না৷ মুম্বইতে ১৩ ফেব্রুয়ারি শিল্পপতিদের সঙ্গে বৈঠকের পর দিল্লিতে শিল্প ও বণিক মহলকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব৷' শিল্পমহলের প্রান্তির ঝুলি কার্যত শূন্য হলেও মুখ্যমন্ত্রীর সোজাসাপটা কথাবার্তা অনেকেরই মনে ধরেছে৷ ডানকান-গোয়েঙ্কা গোষ্ঠীর কর্ণধার জি পি গোয়েঙ্কা বলেন, 'মমতা আজ 'ব্রিলিয়ান্ট' ছিলেন৷ তিনি সত্যিটা স্বীকার করে নিয়েছেন৷ এটাই আমাদের উত্সাহ জোগাবে৷ তবে এক বছরের মধ্যেই তো শিল্প হয় না৷' এইচবিটি-র হলদিয়া ছেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে নিকো গোষ্ঠীর কর্তা রাজীব কউল বলেন, 'ওটা একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা৷' টিটাগড় ওয়াগনসের জে পি চৌধুরীর মতে, রাজ্যে বিনিয়োগ টানতে মুখ্যমন্ত্রীকে এ দিন খুবই আন্তরিক শোনাল৷ তিনি বলেন, 'সিঙ্গুর থেকে টাটারা চলে যাওয়ার পরে যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল, তা আস্তে আস্তে কেটে যাচ্ছে৷' আইটিসির কুরুশ গ্রান্টের কথায়, রাজ্যের শিল্পনীতি ঘোষণার পরেই শিল্পের ব্যাপারে রাজ্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী স্পষ্ট হবে৷ শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রও রাজ্যে শিল্পবান্ধব পরিবেশ নিয়ে সওয়াল করেন৷
শিল্প কই, বুদ্ধদেবকে সামনে রেখে পথে সিপিএম |
জয়ন্ত ঘোষাল • নয়াদিল্লি |
পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি দেখে সিপিএম পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্ত, শিল্পায়ন ও উন্নয়নের বিষয়কে আবার প্রচারের প্রধান হাতিয়ার করে তোলা হোক। আর প্রকাশ কারাট, সীতারাম ইয়েচুরি থেকে বিমান বসু সকলেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে সেই প্রচারের প্রধান মুখ করতে চাইছেন। সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিপথগামী অগ্রাধিকার দেখে মাত্র দেড় বছরেই গোটা রাজ্যের মানুষ ক্রমশ অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ছেন। আজ হলদিয়ায় 'বেঙ্গল লিডস'-এর ছবি এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, দেশের অধিকাংশ বিশিষ্ট শিল্পপতির গন্তব্যস্থল পশ্চিমবঙ্গ নয়। এই পরিস্থিতিতে মমতার সরকারের শিল্পায়নের বিপরীতে হাঁটার (ডি-ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন) সমালোচনা করে বিনিয়োগ, উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের পাল্টা স্লোগান তুলতে চাইছে সিপিএম। তবে দলীয় নেতৃত্ব এটাও বুঝতে পারছেন যে, তৃণমূল সরকার সম্পর্কে মানুষের মোহভঙ্গের প্রক্রিয়া শুরু হলেও তাঁরা কিন্তু এখনও বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরে পাননি। কলকাতায় পরশু থেকে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক। এই বৈঠকে ঠিক কী ভাবে শিল্পায়নের বিষয়টিকে সামনে রেখে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে, তার রূপরেখা তৈরি করা হবে। আন্দোলনের পথ নিয়ে অবশ্য সিপিএমের মধ্যে বিরোধ কম নয়। উন্নয়নের ডাক দিতে চাইলেও ২০-২১ ফেব্রুয়ারি সর্বভারতীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা সাধারণ ধর্মঘটে সামিল হতে চলেছে তারা। এই আন্দোলন মূলত মনমোহন সরকারের বিরুদ্ধে হলেও পশ্চিমবঙ্গে ওই দু'দিন কী অবস্থান নেওয়া হবে, সেটা মস্ত বড় বিতর্কের বিষয়। কথায় কথায় হরতাল ও ধর্মঘটের সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল যে বন্ধের রাজনীতি থেকে সরে এসেছে, সেটা স্বীকার করছেন সিপিএমের রাজ্য নেতাদের অনেকেই। বিরোধী দল হিসেবে তৃণমূল যখন বন্ধ, অবরোধ করত, তখন বুদ্ধবাবু বলেছিলেন, "আমাদের পরিত্যক্ত পথে ওরা হাঁটছে।" আর আজ নিজেরা বিরোধী আসনে গিয়ে সিপিএম ফের সেই পথেই হাঁটবে কিনা, সেটাই প্রশ্ন। প্রশ্ন, পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় হেঁটে জেলায় জেলায় হারানো জমি সিপিএম ফিরে পেতে পারে কিনা, সেটাও। ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লা আক্রান্ত হওয়ার পরে দলীয় কর্মীরা যে ভাবে উজ্জীবিত হয়ে প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছেন, তাতে এই বিষয়টি বিশেষ করে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। প্রতিরোধের মধ্যেই ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন সিপিএমের অনেকে। রেজ্জাকের উপরে আক্রমণ ঘিরে প্রতিবাদ বুদ্ধবাবুকেও ফের সামনে নিয়ে এসেছে। বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে দীর্ঘদিন গুটিয়ে রেখেছিলেন। আলিমুদ্দিনের বাইরে তাঁকে প্রায় দেখাই যায়নি। কিন্তু ভাঙড়-কাণ্ডের প্রতিবাদে ফের তিনি রাস্তায় নেমেছেন। স্বল্প সময়ের ব্যবধানে একাধিক জনসভা করেছেন। এবং তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে হাসপাতালে গিয়ে আহত রেজ্জাকের সঙ্গে দেখা করে ঐক্যের বার্তা দিয়ে এসেছেন। এই রেজ্জাকই মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবাবুর শিল্পনীতির অন্যতম সমালোচক ছিলেন। বিধানসভা ভোটে হারের পর বুদ্ধবাবু এবং তাঁর শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনকে দায়ী করে বিস্তর কড়া কথা বলেছিলেন তিনি। রেজ্জাকের সুরেই বুদ্ধবাবুর শিল্পনীতির সমালোচনা করে দলের অনেকেই বলেছিলেন, কৃষিজমি এবং কৃষকদের স্বার্থরক্ষাকে অনেক বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ছিল। কারণ, কৃষি আন্দোলনের মধ্যে দিয়েই সিপিএমের উত্থান। গ্রামের গরিব চাষিরাই ছিল দলের সব থেকে বড় ভোটব্যাঙ্ক। কেন্দ্রের নব্য উদারবাদী অর্থনীতি দ্বারা প্রভাবিত হওয়া মানে দলের গণভিত্তিকে অবক্ষয়ের পথে ঠেলে দেওয়া ভোট বিপর্যয়ের পর এটাই ছিল সিপিএমের একটা বড় অংশের অনুভব। সিপিএমের এক শীর্ষ নেতা বলেন, "বুদ্ধবাবু জেগে উঠেছেন। এটাই দলের কাছে সব থেকে বড় আশার কথা। আসলে বর্তমান পরিস্থিতি আবার প্রমাণ করছে যে, বুদ্ধবাবু ও নিরুপমবাবুর শিল্পনীতিতে কোনও ভুল ছিল না। সমস্যা হয়েছিল প্রয়োগে ও প্রশাসনিক ব্যর্থতায়।" বস্তুত, কৃষি আর শিল্পের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার বার্তা দেওয়াই সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সামনে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এক দিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামের মানুষকে অভয় দিতে হবে। বোঝাতে হবে যে, কৃষকদের ক্ষতি হবে না, খাদ্যসঙ্কট দেখা দেবে না। আবার অন্য দিকে রাজ্যে ভারী শিল্প স্থাপনের মতো পরিস্থিতি তৈরি করতে পারলে তবেই যে বেকার সমস্যা দূর হতে পারে, সেটাও বোঝাতে হবে মানুষকে। তৃণমূল সরকারের দাবি, তারা ছোট ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের স্বার্থরক্ষায় তৎপর। নিরুপমবাবু বলেন, "ছোট শিল্পের উপর জোর দেওয়াকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু ছোট ও বড় শিল্পের মধ্যে কোনও সংঘাত নেই। বরং একে অপরের পরিপূরক।" সিপিএম সূত্র বলছে, পশ্চিমবঙ্গে অতীতে প্রধান তিনটি শিল্প ছিল গঙ্গার উপকূলে পাট, উত্তরবঙ্গে চা ও হাওড়া জেলায় ইঞ্জিনিয়ারিং। পরে দুর্গাপুর ও আসানসোলে গড়ে ওঠে লৌহ ইস্পাত শিল্প। এই বড় শিল্পের কাঁচামাল জোগাতে ছোট ছোট কারখানাও গড়ে ওঠে। পরবর্তীকালে বড় কারখানাগুলি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ছোট কারখানাগুলিও সমস্যায় পড়ে। বুদ্ধবাবু ও নিরুপমবাবু মনে করেন, রাজ্যে বড় শিল্প গড়ে উঠলে ছোট শিল্প ও পরিষেবা ক্ষেত্রেরও বিস্তার ঘটবে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, "ব্রিটেনে মার্গারেট থ্যাচার ইস্পাত কারখানার চেয়ে পরিষেবার ক্ষেত্রে বেশি সংস্কার করায় সে দেশে সমস্যা বেড়েছে। তখন ব্রিটেনে ৪ কোটি টন ইস্পাত উৎপাদন হতো, এখন হয় ৯০ লক্ষ টন।" এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় কমিটি আলোচনায় দু'টি বিষয় উঠে আসতে চলেছে। প্রথমত, জেলায় জেলায় দলের সাবেক জনভিত্তি ধরে রাখতে রেজ্জাক মোল্লা, সুশান্ত ঘোষের মতো নেতাদের অচ্ছুত করা উচিত হবে না। দ্বিতীয়ত, শিল্পায়ন ও উন্নয়নই যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ বদলাতে পারে সেই বিষয়টিকেও প্রচারের অগ্রাধিকারে রাখতে হবে।উপকরণের গুণেই যেমন রান্নার বিচার হয়, তেমনি দ্বিমুখী এই রণকৌশলের মিশেলে সিপিএম উতরোতে পারে কিনা, তাই দেখার। http://www.anandabazar.com/16bus2.html |
রাজ্যের মাওবাদী প্রভাবিত তিন জেলায় সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা ঠিকমতো পৌঁছচ্ছে না। ক্ষমতায় আসার পর জঙ্গলমহলের গ্রামগুলিতে ভ্রাম্যমান চিকিত্সা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এখনও অর্ধেকের বেশি গ্রাম সেই পরিষেবার মুখ দেখেনি। রাজ্য সরকারের করানো সমীক্ষাতেই এই তথ্য উঠে এসেছে। তারপরই এবিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।
দেড় বছরের শাসনকালে রাজ্য সরকারের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরতে গিয়ে প্রায়ই জঙ্গলমহলের প্রসঙ্গ টেনে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু জঙ্গলমহল নিয়েই সাম্প্রতিক সমীক্ষার একটি রিপোর্ট, সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বর্তমান পরিস্থিতি কী, তা জানতে একটি সমীক্ষা করিয়েছে রাজ্য সরকার। সমীক্ষায় মূলত তিনটি বিষয় দেখা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিষেবা, এবং পানীয় জল পরিষেবা।
তিন জেলায় পাঁচটি থানার আওতায় ৩৫ টি গ্রামে সমীক্ষা চালানো হয়েছে। সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে,
৩৫টি গ্রামের মধ্যে মাত্র ১২টি গ্রামে স্বাস্থ্য দফতরের ভ্রাম্যমান গাড়ি পৌঁছয়। ওই ১২টি গ্রামই পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় থানার অন্তর্গত। কিন্তু বেলপাহাড়ি ও শালবনি থানার আওতাভুক্ত গ্রামগুলিতে ভ্রাম্যমান গাড়ির দেখা মেলে না। ভ্রাম্যমান গাড়ির দেখা মেলে না বাঁকুড়ার বারিকুল এবং পুরুলিয়ার বান্দোয়ান থানার গ্রামগুলিতেও।
অথচ ক্ষমতায় আসার পর, জঙ্গলমহলের মানুষের কাছে নিবিড় স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইসঙ্গে, পরিবার পিছু দুটাকা কেজি দরে চাল এবং পানীয় জল সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। সমীক্ষা রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুটাকা কেজি দরে চাল জঙ্গলমহলের মানুষ পাচ্ছেন
৩৫টি গ্রামের মধ্যে ২৩টি গ্রামে পানীয় জলের জন্য নলকূপ বসানো হয়েছে।
কিন্তু সবচেয়ে খারাপ জায়গায় দাঁড়িয়ে জঙ্গলমহলের স্বাস্থ্য। অথচ স্বাস্থ্য দফতরের সর্বোচ্চ দায়িত্বে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। স্বাভাবিক ভাবেই রিপোর্ট সামনে আসার পর তত্পর হয়েছে প্রশাসন। মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র স্বাস্থ্য সচিবকে চিঠি দিয়ে ভ্রাম্যমান চিকিত্সা পরিষেবা অমিলের বিষয়টি জানিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের ভ্রাম্যমান পরিষেবা যাতে জঙ্গলমহলের সব মানুষ পান, তা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব।http://zeenews.india.com/bengali/zila/health-condition-of-jongol-mohol_10707.html
বেঙ্গল লিডস: কিন্তু কোন দিকে?
শুরু হয়ে গেল বেঙ্গল লিডস। শিল্প সম্মেলনে প্রভাব ফেলল রাজনীতিও। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় তোপ দাগলেন বিরোধী ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। সম্মেলনে শিল্পপতিদের উপস্থিতিতে সন্তুষ্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য শিল্পপতিদের ধন্যবাদও জানিয়েছেন তিনি। শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, শিল্প মহলে ভালই সাড়া জাগিয়েছে বেঙ্গল লিডস।
নতুন মোড়কে পুরনো প্রকল্প। বেঙ্গল লিডসের শুরুতে যেসব প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তার নির্যাস এটাই। দুর্গাপুরে বিমানবন্দর ও শিল্পনগরী, কল্যাণীতে ট্রিপল আইটি সংস্থা, কিংবা হলদিয়াকে আন্তর্জাতিক মানের শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তোলা, এসব প্রকল্পই বাম আমলে ঘোষিত। আজ সেগুলিকেই রাজ্য সরকারের প্রকল্প বলে ঘোষণা করলেন শিল্পমন্ত্রী।
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হলদিয়ায় বেঙ্গল লিডস ভালই সাড়া জাগিয়েছে শিল্প মহলে। দাবি করলেন শিল্পমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই হাজির হয়েছেন ছোট,বড় ও মাঝারি শিল্পের প্রতিনিধিরা। বিনিয়োগের লক্ষ্যে এসেছেন বিদেশি সংস্থার কর্তারাও। কনসুলেটগুলির প্রতিনিধিদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মত। শিল্প সম্মেলন শুরুর ঠিক আগেই একথা জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
বড় শিল্পপতিদের অনুপস্থিতিতে শুরুটেই কিছুটা ম্লান রাজ্যের শীর্ষ শিল্প সম্মেলন বেঙ্গল লিডস। তবে এই অভিযোগ মানতে নারাজ শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সম্মেলনের শুরুর আগে তাঁর আশ্বাস, রাজ্যে বড় বিনিয়োগ আসবে রাশিয়া, জার্মানি ও সিঙ্গাপুর থেকে। তাঁর দাবি, বেঙ্গল লিডসের হাত ধরে বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা রয়েছে খনি, লৌহ-ইস্পাত এবং জাহাজ নির্মাণ ক্ষেত্রে। বেঙ্গল লিডস সম্মেলনে জাতীয়স্তরের পাঁচশোজন শিল্পপতি ও শিল্পসংস্থার কর্তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তার মধ্যে মাত্র পয়ষট্টিজন বেঙ্গল লিডসে উপস্থিত থাকতে পারেন। এদের অধিকাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার প্রতিনিধি। বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের সংখ্যা খুবই কম। তবে শিল্প সম্মেলনের সামনে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন দুটি। রাজ্য সরকারের জমি নীতি এবং বেড়ে চলা রাজনৈতিক হিংসার জেরে রাজ্যের সামগ্রিক ভাবমূর্তি। সম্মেলন শুরুর আগে শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্য, রাজ্যের স্পষ্ট জমি নীতি রয়েছে। বিরোধীরা অহেতুক জমিকে ইস্যু করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।http://zeenews.india.com/bengali/zila/which-way-is-bengal-leading_10696.html
ভাঙা মেলায় এখন শুধুই জঞ্জালের স্তূপ
অমিত চক্রবর্তী
গঙ্গাসাগর: মকরস্নান সেরে এ বার ঘরে ফেরার পালা৷ পিছনে পড়ে মেলাচত্বর৷ যার বর্ণনায় একটা শব্দই যথেষ্ট-নরক গুলজার৷
প্রশাসন প্রথম তিন দিন পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিয়েছিল ঠিকই, কিন্ত্ত ক্রমে তা একেবারে তলানিতে এসে ঠেকে৷ সাগরপাড় থেকে যাত্রী নিবাস- জঞ্জাল সব জায়গায়৷ দুপুরে মেলার ভিড় হালকা হতে শুরু করতেই সাগরপাড়ে আবর্জনা জমতে থাকে৷ যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সৈকত পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তার কোনও সদস্যকেই দেখা গেল না এ দিন৷ পরিবেশ সচেতনতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সাগর পারে উড়ছে প্লাস্টিক৷ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কাগজ৷ বাতাসে দুর্গন্ধ৷
মকরস্নান সেরে ঘরে ফেরাদের চাপে সোমবার সারাটা দিন তটস্থ থাকতে হয়েছে প্রশাসনকে৷ মূলত ৩, ৪ ও ৫ নম্বর রাস্তার দু'ধারের শিবিরগুলি সোমবার দুপুরের পর থেকেই ফাঁকা হয়ে গিয়েছে৷ রাতে প্রবল কুয়াশা এবং ভাঁটার মধ্যেও খানিকটা ঝুঁকি নিয়েই ভেসেল চালিয়ে তীর্থযাত্রীদের নদী পার করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার বেলা বাড়তেই পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে৷ ড্রেন উপচে নোংরা জল এসে পড়েছে রাস্তায়৷ ঢুকে পড়েছে কয়েকটি দোকানেও৷ ব্যবসায়ী জানালেন, প্রথম কয়েক দিন নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার করা হচ্ছিল৷ কিন্ত্ত এখন আর কারও দেখা মিলছে না৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, প্রতি বারই মেলা শেষের পরও মাস খানেক দুর্গন্ধের ঠেলায় এই চত্বর এড়িয়ে চলেন তাঁরা৷ মেলা শেষ হওয়ার পর মাটি চাপা দেওয়া নোংরা থেকে তিন-চার দিনের মধ্যেই দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে৷
মেলা চত্বরে সাফাই না হলেও, শুরু হয়েছে হাতসাফাইয়ের খেলা৷ উধাও হয়ে গিয়েছে পিএইচই-র কল৷ ছিঁচকে চোরের উপদ্রবে সারাক্ষণ সতর্ক থাকতে হচ্ছে এখনও শিবিরে থেকে যাওয়া পুণ্যার্থীদের৷ মেলার কয়েক দিনে ছিনতাই হওয়া ৭২ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ৷ উদ্ধার হয়েছে সোনার গয়নাও৷
এ দিন সকালে কলকাতা ফিরে যান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, কোথাও কোনও সমস্যা নেই৷ সব কিছু সুষ্ঠু ভাবে মিটেছে৷ সব মিলিয়ে এখনও হাজার তিরিশেক লোক আছে মেলায়, তাঁদের ফেরানোর জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে৷
এ বার মেলায় ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী এসেছে বলে প্রশাসন দাবি করলেও, জেটি ঘাট এবং অভিজ্ঞ পুলিশকর্তাদের হিসেব, লোকসংখ্যা তিন লাখের গণ্ডি ছাড়ায়নি৷ বিক্রি তেমন হয়নি বলে হতাশ ব্যবসায়ীরা৷ঊর্বসীকে ছেড়ে এ বার মুক্তিতে মজল বাঁয়া
জয়া চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার: ঊর্বশী নেহি মিলেগা? কুছ পরোয়া নেই৷ মুক্তিরানি হ্যায় না!
দশ কুনকির তাড়ায় দেশান্তরী হওয়া তো দূর অস্ত্, প্রবল পরাক্রমে প্রকাশ্য দিনের আলোয় কুনকি মুক্তিরানিকে শুঁড়ের আলিঙ্গনে জাপটে ধরে মৈথুন সারল বাঁয়া গণেশ৷ প্রাথমিক ভাবে একটু রুখে দাঁড়ালেও পরে বাঁয়ার প্রেমে দুষ্টু হাসি দেখা গেল মুক্তির শুঁড়ের ফাঁকে৷ বলিষ্ঠ বাঁয়াকে প্রেমিক হিসেবে মোটেই অপছন্দ নয় তার৷ বরং মঙ্গলবার দুপুরে বাঁয়া-সঙ্গমের পর থেকে মাহুত কার্তিক ওঁরাওকে কিঞ্চিত্ অবজ্ঞার দৃষ্টিতেই দেখছে মুক্তিরানি৷ ভাবখানা যেন, 'খুল্লমখুল্লা প্যার করেঙ্গে!' কারও নিষেধ থোড়াই কেয়ার৷ দূরে দাঁড়িয়ে সজল চোখে সে দৃশ্য দেখলেন কার্তিক৷
সোমবারই পরিকল্পনা হয়েছিল দশটি কুনকি হাতি দিয়ে তাড়িয়ে তোর্সা পার করে চিলাপাতার জঙ্গলে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বাঁয়া গণেশকে৷ সেই মতো সন্ধের অন্ধকারে কাজ শুরু হয়৷ কিন্ত্ত প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং শুরু করে বাঁয়া! ভয়ের চোটে মাদি কুনকিরা পালাবার পথ পায়নি৷ শুঁড় দিয়ে ধুলো উড়িয়ে সাময়িক ভাবে অদৃশ্য হয় গণশা৷ বনকর্মী-মাহুতেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন৷ যাক, ভয় পেয়েছে বাঁয়া৷ পিলখানায় ফিরে আসে সবাই৷ কিন্ত্ত রাত দশটা বাজতে না বাজতেই বাঁয়ার তর্জন গর্জনে ফের বুকের রক্ত জল৷ নতুন উদ্যমে ফিরে এসে পিলখানায় ঢোকার চেষ্টা করে বাঁয়া গণেশ৷ কোনওক্রমে প্রাণ হাতে করে ক্যানেস্তারা পিটিয়ে, পটকা ফাটিয়ে রাতটুকু আটকানো গেল৷ মঙ্গলবার ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই ফের ঊবর্শীর ঘেরাটোপের দিকে চেয়ে শুরু হল বাঁয়ার তাণ্ডব৷ বনকর্মীদের চালাকির ওপর দিয়ে চলে বাঁয়ার চালাকি৷
তখনই কার্তিক লক্ষ্য করেন, বাঁয়া যেন তাঁর 'মেয়ে'র দিকে কেমন কেমন দৃষ্টি দিচ্ছে! মুক্তিরানি অবশ্য মোটেই পাত্তা দেয়নি গোড়ায়৷ কিন্ত্ত বেলা বাড়তেই পিলখানা চত্বরে ঢুকে এসে আচমকা মুক্তিকে জাপটে ধরে বাঁয়া৷ অসহায় 'বাবা' কার্তিক-জানবক্সদের চোখের সামনে মুক্তিকে নিয়ে শরীরের খেলায় মেতে ওঠে৷ প্রথমে মুক্তি কিঞ্চিত্ গাঁইগুঁই করেছিল বটে, তবে বেশিক্ষণ নয়৷ এমন প্রবল প্রেমিককে কি ঠেকিয়ে রাখা যায়! বাঁয়ার শুঁড়ে শুঁড় মিলিয়ে মেয়ের আত্মসমর্পণ দেখে কার্তিক বাকরুদ্ধ৷ বললেন, 'ঊবর্শীকে না পেয়ে আমার মেয়েটাকে লোভ দেখিয়ে টেনে নিল৷ কী সর্বনাশ হয়ে গেল৷ হায় রে, কোন কুক্ষণে যে ওই তাড়ানোর দলে মুক্তিকে দিয়েছিলাম৷'
এ দিকে বাঁয়া সমীপে এসে মুক্তির ভোল পাল্টে গিয়েছে! কার্তিকের কথায় কানই দিচ্ছে না সে৷ আর বাঁয়ার তো পোয়া বারো! সমানে চলছে মুক্তির দিকে ইশারা ইঙ্গিত৷ একবার বাঁয়া মুক্তির দিকে শুঁড়ে করে ধুলো ছোড়ে, তো মুক্তি পাল্টা মদির গলায় কাছে ডাকে মনের মানুষকে৷ খুনসুটি আর দুষ্টমির অন্ত নেই৷ মুক্তির ডাকে যখন খুশি ইচ্ছেমতো পিলখানায় ঢুকে পড়ছে বাঁয়া৷ মাথায় হাত মাহুতদের৷ কিন্ত্ত করার কিচ্ছু নেই৷ হাতি বিশারদ পার্বতী বড়ুয়া বলেই দিয়েছেন, 'এক বারের সঙ্গমে হাতিদের আশ মেটেনা৷ টানা সাতদিনও চলতে পারে৷ এখন অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নেই৷ বাঁয়াকে আর আটকানো যাবে না৷ তবে তৃন্ত হলে ও নিজেই চলে যাবে৷' কিন্ত্ত কবে? অতিষ্ঠ বনকর্তারা মাথার চুল ছিড়তে বাকি রেখেছেন৷ কিন্ত্ত বাঁয়ার প্রস্থানের নাম নেই৷ নয়া প্রেমিকায় মন মজিয়ে বাঁয়া স্রেফ বুঝিয়ে দিচ্ছে - দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে!প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে জেরা করার হুমকি জ্যোতিপ্রিয়র
কোচবিহার: লোকসংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি মানুষের জন্য সরকারি বরাদ্দের চাল যাচ্ছে বন্ধ চার চা বাগানে৷ তৃণমূল সরকার সেই অসঙ্গতির হদিশ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছে৷ বামফ্রন্ট জমানায় ওই কেলেঙ্কারির জন্য প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীকে জেরা করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বর্তমান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক৷ তাঁর জেলা কোচবিহারে এসে উত্তরসূরির এই ঘোষণায় বেজায় চটেছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারী৷ তিনি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে৷
সরকারি উদ্যোগে বন্ধ চা বাগানের বাসিন্দাদের চাল দেওয়া শুরু হয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারের আমলেই৷ বাগানের মানুষকে বিপিএলভূক্ত প্রকল্পে ওই চাল দেওয়া হচ্ছে তখন থেকে৷ খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, উত্তরবঙ্গের চারটি চা বাগান ঢেকলাপাড়া, দলমোড়, কাঞ্চনভিউ ও রিংটোর চা বাগানে ২০০৪ থেকে প্রতি মাসে ৯১ হাজার মানুষকে ওই চাল সরবরাহ করা হচ্ছে৷ এতে সরকারের বিপুল ব্যয় হচ্ছে৷
খাদ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে জ্যোতিপ্রিয়বাবুর ওই পরিমাণ বরাদ্দ নিয়ে সন্দেহ হয়৷ তিনি বলেন, 'সংশয় হলেও সরবরাহ বন্ধ করতে পারিনি৷ তাতে বন্ধ চা বাগানের মানুষ বিপাকে পড়তেন৷ কিন্ত্ত সমীক্ষা করিয়ে প্রমাণ পেয়েছি, ওই চারটি বাগানে ১৭ হাজারের বেশি লোক নেই৷ চাল যাচ্ছে ৯১ হাজার মানুষের জন্য৷ কার স্বার্থে লোকসংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হয়েছিল বা কে দেখিয়েছিল, তা জানতে রাজ্য সরকার তদন্ত শুরু করেছে৷'
কৃষকদের কাছে থেকে ধান কেনার সরকারি উদ্যোগ তদারকি করতে মঙ্গলবার খাদ্যমন্ত্রী কোচবিহারে এসেছিলেন৷ সেখানেই তিনি বলেন, 'চা বাগানে চাল সরবরাহের ওই অসঙ্গতির দায় খাদ্য দন্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা যেমন এড়াতে পারেন না, তেমনি বামফ্রন্ট সরকারের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা দরকার৷ দোষী অফিসারদের তো খুঁজে বার করা হবেই৷ সেই সঙ্গে তদন্তে ডেকে পাঠানো হতে পারে তদানীন্তন খাদ্যমন্ত্রীকেও৷'
জ্যোতিপ্রিয়বাবুর মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী পরেশ অধিকারী৷ মেখলিগঞ্জের বিধায়ক বলেন, 'আমি চ্যালেঞ্জ করছি, মিডিয়াকে না বলে মন্ত্রী সত্যি সত্যি তদন্ত করান৷ আমি তদন্তের মুখোমুখি হতে রাজি৷' যদিও চা বাগানের লোকসংখ্যায় অসঙ্গতি নিয়ে তিনি দায় চাপিয়েছেন খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকদের ঘাড়ে৷ তিনি বলেন, 'জনসংখ্যার হিসেব আমাকে অফিসাররা দিয়েছিলেন৷'
একই সঙ্গে পরেশবাবু বলেন, চা বাগানে না খেতে পেয়ে মানুষ মরছে, তার তদন্ত করা হচ্ছে না তো৷ চা শিল্পের সমস্যার প্রতিকারে সরকার কিছুই করছে না৷প্রবন্ধ ২... পাঁচ দশকে উৎখাত হয়েছেন অন্তত পাঁচ কোটি
উন্নয়ন তো সবাই চায়, কিন্তু তার মূল্য কে চোকায়?— নানা কথার মাঝে প্রশ্নটা ছুড়ে দিলেন ওয়াল্টার ফার্নান্ডেজ। দীর্ঘদেহী পঁচাত্তর বছরের এক তরুণ গবেষক। আদতে কর্নাটকের লোক, কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে আছেন গুয়াহাটিতে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সমাজ গবেষণা কেন্দ্রের (এনইএসআরসি) অধিকর্তা। ভারতের নানা প্রান্তে, বিভিন্ন কারণে অভ্যন্তরীণ ডিসপ্লেসমেন্ট বা বিস্থাপনের যে-ঘটনা ভয়াবহ ভাবে বেড়ে চলেছে, তার নিরলস ও নির্ভরযোগ্য গবেষক। এমনকী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ অবধি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রস্তাবিত 'জমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পুনঃসংস্থাপন' বিল নিয়ে নানা আলোচনায় ওয়াল্টারের দেওয়া তথ্যকে প্রামাণ্য গণ্য করেছেন। সে হিসেবও অবশ্য বছর দশেকের পুরনো, স্বাধীনতার পর থেকে প্রথম পাঁচ দশকের। ওয়াল্টার জানিয়েছেন, এই সময়কালে ভারতে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য বিস্থাপিতের সংখ্যা ছিল প্রায় পাঁচ কোটি। গত এক দশকে হু-হু ভরবেগে এই সংখ্যা আরও এক কোটি বেড়ে ছ'কোটিতে পৌঁছেছে!
চা খেতে খেতে কথা হচ্ছিল। একটু আগেই 'উন্নয়ন ও বিস্থাপন' বিষয়ে একটি প্যানেলে ওয়াল্টার তাঁর কথা শুনিয়েছেন। বাংলার অনুরাধা তলোয়ার আর শ্রীলঙ্কার জেহান পেরেরাও একই প্যানেলে ছিলেন। মাঝে একটু বিরতি। চার পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে নানা বর্ণের বহু মানুষ। ভারত ও দক্ষিণ এশিয়া-সহ বিশ্বের নানা দেশ থেকে 'বলপূর্বক বিস্থাপন' নিয়ে ক্যালকাটা রিসার্চ গ্রুপ আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে (আইএএসএফএম) যোগ দিতে এসেছেন। দেশে দেশে, ভিতরে ও বাইরে ক্রমশ বাড়তে থাকা বিস্থাপনের বিচিত্র স্বরূপ বুঝতে, বিস্থাপিত-সহ সমাজের নানা অংশের প্রান্তিক মানুষদের (যাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা প্রচুর) সমস্যা, অধিকার ও ন্যায়ের বিষয়ে মতবিনিময়ের জন্য গবেষক, কর্মী ও ক্ষতিগ্রস্তদের এই সম্মেলন।নিজের দেশেই ঘরবাড়ি-জীবিকা-চেনা পরিবেশ-সংস্কৃতি ছাড়তে বাধ্য হয়ে অন্যত্র দিনাতিপাত করার দুঃসহ স্মৃতি হয়তো আগেও ছিল। কিন্তু পাঁচ দশকে তার চেহারা, পদ্ধতি বা পরিমাণ জটিল ও বিপুল হয়েছে। এতটাই যে, রাষ্ট্রপুঞ্জ এখন এই ঘরছাড়াদের 'অভ্যন্তরীণ বিস্থাপিত ব্যক্তি' 'ইন্টারনালি ডিসপ্লেসড পারসনস' বা 'আইডিপি' বলে পৃথক পর্যায়ভুক্ত করেছে। ১৯৯৮ সালে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পরিষদ এদের সুরক্ষা, পুনর্বাসন ও জীবিকা-সহ নানা অধিকার সুনিশ্চিত করতে কিছু মার্গদর্শক নীতি প্রণয়ন করে, যাতে এই নীতিগুচ্ছ অনুসরণ করে রাষ্ট্রগুলি আইডিপি-দের বিষয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারে।
ভারত এখনও এই নীতিগুচ্ছ গ্রহণ করেনি, এমনকী সরকারি ভাবে 'আইডিপি' শব্দটিও মেনে নেয়নি। তার আশঙ্কা, এই সূত্র দিয়েই ভবিষ্যতে আইডিপি-দের 'মানবিক সহায়তা' দেওয়ার নাম করে, বহু বিদেশি (পড়ুন, পশ্চিমি) রাষ্ট্র ভারতের 'অভ্যন্তরীণ বিষয়ে' হস্তক্ষেপ করতে পারে। আজ বলে নয়
অথচ, ওয়াল্টার জানালেন, অভ্যন্তরীণ বিস্থাপন অবশ্য কেবল উন্নয়নের কারণেই ঘটে না, গোষ্ঠী-দাঙ্গা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা স্রেফ খেয়েপরে বাঁচতে চাওয়ার কারণেও লোক ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়। সীমান্ত অঞ্চলে সামরিক সংঘর্ষ (যেমন, ভারতে জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত সংলগ্ন নানা স্থানে), বা রাষ্ট্রীয় বাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের ফলেও (যেমন, মধ্য ভারত ও নেপালে পুলিশ/মিলিটারি বনাম মাওবাদীদের লড়াইয়ে) দেশের মধ্যেই ঘরছাড়াদের দল বাড়তে থাকে। এর মধ্যে কাশ্মীর ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধারাবাহিক সংঘর্ষের ইতিহাস আছে। ফলে, সংঘর্ষ-প্রভাবিত আইডিপি-দের সংখ্যাও এখানে লাগামছাড়া। এই সব কিছুর মধ্যে উন্নয়নজনিত বিস্থাপন এক নতুন ও মারাত্মক মাত্রা যোগ করেছে, যার সঠিক মোকাবিলা না করলে আগ্নেয়গিরি ফেটে পড়তে পারে। ওয়াল্টারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিস্থাপিতদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ আদিবাসী, ২০ শতাংশ দলিত, ১০ শতাংশ দুর্বলতম অনগ্রসর। অর্থাৎ, ৭০-৮০ শতাংশের কাছাকাছি মানুষ যাঁদের অধিকাংশেরই প্রতিবাদের আধুনিক ভাষা রপ্ত হয়নি, তাই নীরব/নিশ্চুপ, তাঁদের ওপরেই উন্নয়নী বিস্থাপনের কুঠার নামছে সবচেয়ে বেশি।
ওয়াল্টারের সঙ্গে আলাপের মাঝে আড্ডায় জড়ালেন কে এম পারিভেলান, মুম্বইয়ের টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস-এর 'বিপর্যয়'-বিষয়ক গবেষক। তিনি শোনালেন, সুনামি-পরবর্তী উপকূলবর্তী অন্ধ্র ও তামিলনাড়ুতে মৎস্যজীবীদের বিস্থাপনের নতুন কাহিনি। এই সব উপকূল-অঞ্চলে সুনামির আগে থেকেই বন্দর-নির্মাণ ও বাণিজ্যিক ব্যবহারের কথা চলছিল, সুবিধা হচ্ছিল না, ওই স্থানগুলিতে বিপুল পরিমাণে জেলেদের বসতি হওয়ায়। সুনামির পরে, 'নিরাপত্তার' কারণে তাঁদের অনেককে উপকূল থেকে ৫ থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে, এর ফলে তাঁদের যাতায়াতের দৈনিক খরচ অনেক বেড়ে গেছে যদিও কিছু দিনের মধ্যেই ওই মৎস্যজীবীর দল সবিস্ময় দেখলেন, তাঁদের ফেলে আসা জমিতে পূর্বে পরিকল্পিত বাণিজ্যিক বন্দর, 'থিম পার্ক' প্রভৃতি নির্মিত হয়েছে। বিস্থাপন-বিষয়ে সরকারের সঠিক তথ্য ও নীতি না থাকার কুফল সম্পর্কে অন্য একটি অভিজ্ঞতা জানালেন পারিভেলান। সুনামির পরে আন্দামান/নিকোবরে সরকারি উদ্যোগে হেলিকপ্টার থেকে কম্বল ফেলা হয়েছিল। যাঁরা এই মহান কাজ করেছিলেন, তাঁরা জানতেনই না, বছরের কোনও সময়েই ওই অঞ্চলে কম্বল লাগে না!...
অনিবার্য ভাবে মনে পড়ে যায় সিঙ্গুর-প্রসঙ্গ। জিজ্ঞাসা করি, সিঙ্গুরে কোনটা ঠিক ছিল— সরকারের জমি অধিগ্রহণ, না বাজারের হাতে পুরোটা ছেড়ে দেওয়া? কোনওটাই নয়, বললেন ওয়াল্টার। জনহিতকর কাজ ছাড়া ব্যবসায়িক প্রয়োজনে সরকার জমি অধিগ্রহণের মতো জটিল ও গোলমেলে বিষয়ে জড়াবে কেন? কিন্তু তা বলে খোলা বাজারের হাতে সবটা ছেড়ে দেওয়া মানেও তো কিছু হিংস্র জমি-মাফিয়ার হাতে চাষিদের ছেড়ে দেওয়া। তাই, জমি কেনাবেচার ওপরে সরকারের কড়া নজর ও নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে, যেমনটা বেসরকারি শিল্পের ক্ষেত্রে সরকার করে, নইলে সমূহ সর্বনাশ।
http://www.anandabazar.com/16edit4.html
'মামু' শুনে ক্ষিপ্ত পুলিশ, স্কুলছাত্রকে পিটিয়ে প্রতিশোধ
মহম্মদবাজার: পুলিশকে 'মামু' বলে খ্যাপালো রাস্তার লোক৷ তার ফল ভুগতে হল স্কুলছাত্রদের৷
ক্ষিপ্ত 'মামু'দের বেধড়ক মারে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি এক ছাত্র৷ এর প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ হলে সেখানে গিয়ে লাঠি চালান 'মামু'র দল৷ এমনকী, প্রহৃত ছাত্রের বাবাকেও চড় থাপ্পড় মেরে 'উচিত শিক্ষা' দিলেন জনৈক 'মামু'! আহত ছাত্রের পরিবারের তরফে অবশ্য থানায় অভিযোগ করা হয়েছে৷ জেলা পুলিশ সুপার মুরলীধর শর্মার নির্দেশে সিউড়ির সিআই প্রসেনজিত্ দাস অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেন৷ সন্ধ্যায় মিঠুন ঘোষ ও সরফরাজ আনসারি নামে দুই কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়৷
সোমবার রাতে বীরভূমের মহম্মদবাজার বাসস্ট্যান্ডের কাছে এই ঘটনা ঘটে৷ স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার সন্ধ্যায় স্থানীয় কাঁইজুলি হেমচন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের ক্লাস টেনের চার ছাত্র - আশুতোষ ঘোষাল, অর্কিড ভট্টাচার্য, সায়নানন্দ পাল, আশুতোষ ঘোষ পাড়ারই এক শিক্ষকের কাছ থেকে টিউশন নিয়ে ফিরছিল৷ সেই সময় ফুল্লাইপুরের দিক থেকে একটি পুলিশ ভ্যান আসছিল৷ সেই ভ্যানটিকে লক্ষ্য করেই রাস্তা থেকে 'মামু' বলে হাল্কা টিটকিরি ভাসিয়ে দিয়েছিল কেউ৷ কথাটা কানে যেতেই ভ্যান থামিয়ে নেমে আসেন কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা৷ কোনও খোঁজ খবর না করে সামনে চার স্কুলছাত্রকে পেয়ে তাদের উপরেই চড়াও হন৷ লাঠি দিয়ে বেধড়ক মার, তার পরে মাটিতে ফেলে ভারী বুটের লাথি৷ হতভম্ব হয়ে যান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা৷ ছাত্র পিটিয়ে মাথা ঠান্ডা হলে খোশমেজাজে 'মামু'রা ফিরে যান গাড়িতে৷
ততক্ষণে ওই ছাত্রদের নিয়ে শশব্যস্ত হয়ে পড়েন এলাকাবাসী৷ ক্ষোভে ফেটে পড়েন মহম্মদবাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা৷ রাত আটটা নাগাদ মহম্মদবাজার বাসস্ট্যান্ড মোড়ে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা৷ খবর পেয়ে আশুতোষ ঘোষালের বাবা, স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী রক্ষাকর ঘোষাল ছুটে আসেন৷ সবাইকে প্যাটেলনগর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেন৷
ঘটনা কিন্ত্ত তখনও ঘটতে বাকি ছিল৷
অবরোধের খবর পেয়ে ইতিমধ্যে এলাকায় চলে আসেন মহম্মদবাজার থানার ওসি দেবাশিস ঘোষ৷ সঙ্গে বিশাল বাহিনী৷ স্কুলছাত্রদের নির্মম ভাবে পেটানো হয়েছে বলে তাঁকে অভিযোগ জানাতে গেলে তিনি রক্ষাকরবাবুকে ধরে এক চড় মারেন৷ উল্টে পড়েন রক্ষাকরবাবু৷ আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জনতা৷ জোরদার স্লোগানে জাঁকিয়ে বসে অবরোধ৷ পুলিশ এ বার লাঠি চালিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে অবরোধ তুলে দেয়৷ আহত রক্ষাকরবাবু কোনওক্রমে ছেলে আর তার বন্ধুদের নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছন৷ কিন্ত্ত আশুতোষের হাত ফুলে ওঠে, বমি শুরু হয়৷ তাকে তত্ক্ষণাত্ সিউড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়৷ সোমবার আশুতোষের এক্সরে ও সিটি স্ক্যান করানো হয়৷
রক্ষাকরবাবু বলেন, 'মহম্মদবাজার থানায় অভিযোগ করেছি৷ সব পুলিশকর্মীর পরিচয় জানতে পারিনি৷ তবে টিসি ৫২১ সরফরাজ আনসারি, টিসি ৭৪ স্বাধীন দাস, এএসআই রামবিলাস মণ্ডল, ওসি দেবাশিস ঘোষ, এই ক'জনের নাম জানতে পেরেছি৷ এ ছাড়াও বেশ কয়েকজন ছিলেন৷ সকলের বিরুদ্ধে পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছি৷ জানলাম যে অবরোধ তোলার জন্য যে লাঠি চালিয়েছিল পুলিশ, তার কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি৷ এসপি অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন যে দোষী প্রমাণিত হসে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷' সেই আশ্বাস কিছুটা হলেও বাস্তবায়িত হয় সোমবার সন্ধ্যায় দুই কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করায়৷
প্রবন্ধ ১... কেন্দ্র এবং রাজ্য, উঁচু এবং নিচু, রাজা এবং প্রজা কেন্দ্রীয় সরকার চতুর্দশ অর্থ কমিশন গঠন করেছে। অর্থ কমিশন নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর কেন্দ্র এবং রাজ্যের আর্থিক সম্পর্কের কাঠামো সংশোধন করে আসছে। প্রথমেই বলা দরকার, 'কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক' কথাটার মধ্যেই রাজ্যকে কিছুটা হেয় করে দেখার একটা মানসিকতা আছে কেন্দ্র যেন সূর্যের মতো, আর রাজ্যগুলো তার গ্রহ। সংবিধানে কোথাও 'কেন্দ্র' কথাটা নেই, অথচ দেশের সামগ্রিক (ইউনিয়ন) সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকার বলে ডাকার রীতি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। লক্ষণীয়, সরকারিয়া কমিশনের উত্তরসূরি হিসাবে যে কমিশনটিকে ইউনিয়ন ও রাজ্যগুলির সম্পর্কের কাঠামো পর্যালোচনার জন্য গঠন করা হয়েছিল, ২০১০ সালে যেটি রিপোর্ট দাখিল করে, তার নাম দেওয়া হয়েছিল কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক বিষয়ক কমিশন। আসলে ভারতের শাসনতন্ত্র অতিমাত্রায় কেন্দ্রীভূত, রাজ্যের ক্ষমতা এখানে অনেক কম, চিনের তুলনাতেও। এটা কিছুটা ইতিহাসের উত্তরাধিকার, কিন্তু স্বাধীনতার পরে কেন্দ্রের এই আধিপত্য নানা ভাবে আরও জোরদার হয়। সম্পদ বণ্টনের পদ্ধতিও এ ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা পালন করে।
রাষ্ট্রীয় পরিসরের বিকেন্দ্রীকরণকে চারটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়: রাজনৈতিক, শাসনকাঠামোগত, রাজস্ব নীতি সম্পর্কিত এবং অর্থনৈতিক। বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে নানা ধরনের যুক্তি পেশ করা হয়। একটা হল কার্যকারিতার যুক্তি; বলা হয়, সরকারি পণ্য ও পরিষেবা সরবরাহের ব্যবস্থাটির বিকেন্দ্রীকরণ করলে কাজ ভাল হয়, কিংবা বিভিন্ন ধরনের শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রেও বিকেন্দ্রীকরণ খুব উপযোগী, কারণ তাতে সম্পদের ব্যবহার অনেক কার্যকর হয়ে থাকে। আর এক ধরনের যুক্তি হল, বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ব্যবস্থায় সাধারণ মানুষ অনেক বেশি যোগ দেওয়ার সুযোগ পায়। তবে বিকেন্দ্রীকরণ কেবল কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যেই তো প্রযোজ্য নয়, রাজ্যের ভিতরেও বিকেন্দ্রীকরণ দরকার, সেখানেই শাসনব্যবস্থার তৃতীয় স্তরের গুরুত্ব।প্রথম অর্থ কমিশনের প্রথম বৈঠক। মাঝখানে কমিশনের কর্ণধার কে সি নিয়োগী,
তাঁর ডান দিকে ভি পি মেনন এবং এম ভি রঙ্গচারী, বাঁ দিকে কৌশলেন্দ্র রাও
এবং বি কে মদন। নয়াদিল্লি, ১০ ডিসেম্বর, ১৯৫১কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক বিষয়ক রিপোর্টটির দ্বিতীয় খণ্ডে সংবিধানসম্মত রাষ্ট্রচালনা এবং কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্কের পরিচালনার প্রশ্নগুলিও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। প্রশ্নগুলো সংক্ষেপে বলে নিই।
, অনেক সময়েই সপ্তম তফসিলে যুগ্ম তালিকার অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলিতে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করেনি।
, আন্তঃরাজ্য পরিষদ ঠিক ভাবে কাজ করে না।
, রাজস্ব ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে কেন্দ্র, রাজ্য ও যুগ্ম তালিকার বাইরে থাকা 'অবশিষ্ট' বিষয়গুলিকে কেন্দ্রের এক্তিয়ারে না রাখে রাজ্যের হাতে তুলে দেওয়া উচিত।
, রাজ্য বিধানসভায় অনুমোদিত কোনও বিল রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হলে এবং তিনি সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো হলে তিনি সেটা কত দিন ধরে রাখতে পারবেন, সংবিধানে তার কোনও সময়সীমা বেঁধে দেয়নি।
, রাজ্যপালের নিয়োগ ও অপসারণের পদ্ধতিকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করা জরুরি।
, ৩৫৬ ধারা জারি-সহ রাজ্যপালের যথেচ্ছ আচরণের ক্ষমতা খর্ব করা দরকার। সাত, যোজনা কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলি পুরোপুরি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে, সেখানে রাজ্যের কোনও প্রতিনিধিত্বই নেই। আট, রাজ্যসভার কাজ রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করা, অথচ রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যের বাসিন্দা হওয়ার যে শর্ত ছিল, সেটি ২০০৩ থেকে রদ হয়ে যায়। এটা যুক্তরাষ্ট্রীয় আদর্শের পরিপন্থী। নয়, সর্বভারতীয় সার্ভিসগুলির ক্ষেত্রে রাজ্যের গুরুত্ব বাড়ানো জরুরি।
সংবিধানের সপ্তম তফসিল অনুসারে কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে রাজস্ব ও ব্যয়ের যে বিভাজন সূত্র নির্ধারিত, সেখানেও ভারসাম্যের অভাব আছে। গড়পড়তা হিসাবে, রাজ্যগুলি মোট রাজস্বের ৩৪ শতাংশ আদায় করে এবং খরচ করে মোট ব্যয়ের ৫৮ শতাংশ। এই ৫৮ শতাংশের হিসাবটিও একটু বিভ্রান্তিকর। রাজ্যগুলির মোট ব্যয়ের প্রায় ১৫ শতাংশ যায় কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিত বিভিন্ন প্রকল্পে। এগুলির ব্যয়বরাদ্দের একটা অংশ রাজ্যকে জোগাতে হয়। সুতরাং, রাজ্য যেটা স্বাধীন ভাবে খরচ করতে পারে, তার পরিমাণ ৫৮ শতাংশের চেয়ে কম। তার উপর, কেন্দ্রনির্দেশিত প্রকল্পে রাজ্যের ব্যয়ভাগ ক্রমশ বাড়ছে, সুতরাং স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুপাত কমছে। এর পাশাপাশি, রাজ্যগুলির নিজস্ব রাজস্ব থেকে চলতি খরচ সংস্থানের সামর্থ্য সীমিত এবং সেটা ক্রমশই আরও সঙ্কুচিত হচ্ছে। রাজ্যগুলির মূলধনী আয় বাড়ানোর সুযোগও অত্যন্ত কম।
রাজ্যগুলির মধ্যে রাজস্বের ভাগ বণ্টন করে দেওয়ার ক্ষেত্রে কী ভাবে সমতা রক্ষা করা যাবে, সমস্ত অর্থ কমিশন তা নিয়ে ভেবেছে। সমতার দুটি দিক আছে:
উল্লম্ব (ভার্টিকাল), অর্থাৎ কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সমতা;
অনুভূমিক (হরাইজন্টাল), অর্থাৎ বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে সমতা। কেন্দ্র এবং রাজ্যের মধ্যে আর্থিক সম্পদের বণ্টন হয় তিন ভাবে: অর্থ কমিশন মারফত, যোজনা কমিশনের মাধ্যমে এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্প ও কেন্দ্রীয় সাহায্যপ্রাপ্ত প্রকল্প বাবদ। এর মধ্যে একমাত্র অর্থ কমিশনই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। যোজনা বরাদ্দের কোনও সাংবিধানিক স্বীকৃতি নেই।
অথচ চতুর্থ অর্থ কমিশনের পর থেকে, অর্থাৎ ১৯৬৯ থেকে নবম কমিশন পর্যন্ত যোজনা ব্যয় এবং মূলধনী ব্যয়ের জন্য অনুদান নির্ধারণের কাজটা অর্থ কমিশনের হাত থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দশম অর্থ কমিশনের সময় থেকে বিচার্য বিষয়ের তালিকা থেকে মূলধনী ব্যয় ও যোজনা ব্যয়কে স্পষ্ট ভাবে বাদ দেওয়া হয় না বটে, কিন্তু অর্থ কমিশনগুলি সেগুলি কার্যত বিবেচনা করেনি, যোজনা-বহির্ভূত চলতি খরচের বিষয়েই চিন্তাভাবনা সীমিত রেখেছে। এই রীতির পরিবর্তন জরুরি। যোজনা এবং যোজনা-বহির্ভূত ব্যয়ের পার্থক্যটি অবিলম্বে মুছে দেওয়া দরকার, যোজনা কমিশনের মাধ্যমে সম্পদ বণ্টনের মাত্রা অনেক কমানো দরকার, অর্থ কমিশনের সাংবিধানিক গুরুত্ব নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা দরকার।
দিল্লিতে সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ-এ অর্থনীতিবিদ
http://www.anandabazar.com/16edit3.htmlGorkhaland - Wikipedia, the free encyclopedia
en.wikipedia.org/wiki/GorkhalandThe movement for Gorkhaland has gained momentum in the line of ethno-linguistic-cultural ... View of Darjeeling, where the Gorkhaland movement is based ...
Gorkhaland – Wikipedia
bar.wikipedia.org/wiki/GorkhalandAPH Publishing 2000, ISBN 8176481661; Snehamoy Chaklader: Sub-regionalmovement in India: with reference to Bodoland and Gorkhaland. K.P. Bagchi ...
Subhash Ghisingh - Wikipedia, the free encyclopedia
en.wikipedia.org/wiki/Subhash_GhisinghHe spearheaded the Gorkhaland movement in the 1980s. The Gorkhaland movement grew from the demand of Gorkhas living in Darjeeling District of West ...
A very short summary on gorkhaland movement
What is a very short summary about La boheme? Poet [Rudolfo] meets Mimi [seamstress] and they fall in love - then fall out - reunited when she is on her ...Gorkhaland Movement: A Study in Ethnic Separatism - Amiya K ...
books.google.co.in/books/about/Gorkhaland_Movement.html?id...Title, Gorkhaland Movement: A Study in Ethnic Separatism. Author, Amiya K. Samanta. Edition, illustrated. Publisher, APH Publishing, 2000. ISBN, 8176481661 ...
LK Advani - Portal Forum • View topic - Why Gorkhaland Movement ...
2 posts - 1 author - 3 May 2009Why Gorkhaland Movement started ? ... More interesting information available in the following link :http://en.wikipedia.org/wiki/Gorkhaland ...
Gorkha Janmukti Morcha (GJM) - Gorkhapedia
gorkhapedia.wikidot.com/gorkha-janmukti-morcha19 Aug 2009 – Political Objectivity, The separate state of Gorkhaland within the ... The party is presently spearheading the Gorkhaland movement in Darjeeling Hills and Dooars Terai. .... View wiki source for this page without editing. View/set ...
This time Gorkhaland movement more democratic, say veterans ...
newshopper.sulekha.com/this-time-gorkhaland-movement-more-dem...Darjeeling (West Bengal), June 27 (IANS) As the Darjeeling hills throb with the demand for statehood, many prominent Gorkhas feel this time the movement is ...
Gorkhaland Movement in Brief - Gorkha Creed
www.gorkhacreed.com/.../gorkhaland/.../gorkhaland-movement-in-b...map,news,issue,flag,agitation,strike,blogs,latest news of Gorkhaland movement are the points we come across every now and then, So people lets post our ...
Darjeeling CPRM : All Party National Level Gorkhaland Movement
www.gorkhacreed.com/.../gorkhaland/.../darjeeling-cprm-all-party-n...Topic tags: CPRM, Darjeeling, gorkhaland movement, NATIONAL, party. Viewing post 1 to 1 (1 total posts). Profile picture of Gorkha Creed Gorkha Creed said 1 ...
Searches related to gorkhaland movement wiki-
Twitter / bbcbangla: গোরখাল্যান্ড ইস্যূ: পশ্চিম ...
গোরখাল্যান্ড ইস্যূ: পশ্চিম বঙ্গের নির্বাচনে গুরুত্ব http://bbc.in/hHtvWz.
BBC Bangla - মাল্টিমিডিয়া - গোরখাল্যান্ড ইস্যূ
16 এপ্রিল 2011 – ভারতের পশ্চিম বঙ্গের উত্তরাঞ্চলের ৬টি জেলায় সোমবার ভোটগ্রহন হতে যাচ্ছে। বহুবছর ধরেই ঐ এলাকার নির্বাচনে একটা বড় ইস্যূ হয়ে দাড়িয়েছে দার্জিলিং পাহাড়ের আলাদা গোরখাল্যান্ডের দাবি। এই ইস্যূ কিভাবে আসছে এবারের নির্বাচনে , তা নিয়ে কোলকাতা থেকে সহকর্মী অমিতাভ ভট্টশালী কথা বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ...
গোরখাল্যান্ড ইস্যূ - Worldnews.com
16 এপ্রিল 2011 – ভারতের পশ্চিম বঙ্গের উত্তরাঞ্চলের ৬টি জেলায় সোমবার ভোটগ্রহন হতে যাচ্ছে। বহুবছর ধরেই ঐ এলাকার নির্বাচনে একটা বড় ইস্যূ হয়ে দাড়িয়েছে দার্জিলিং পাহাড়ের আলাদা গোরখাল্যান্ডের দাবি। এই ইস্যূ কিভাবে আসছে এবারের নির্বাচনে , তা নিয়ে কোলকাতা থেকে সহকর্মী অমিতাভ ভট্টশালী কথা বলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ...
কালের কন্ঠ
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের উল্টো দিকের মাঠে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ন্যাশনাল সেন্টার ফর কাউন্টার টেরোরিজম (এনসিটিসি), গোরখাল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন টেরিটোরি (জিটিএ) এবং ফারাক্কা ইস্যুতেই প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। প্রথমে তিনি এনসিটিসি নিয়ে বলেন, ২০০১ সালে এই আইন ...
puronoguitar: ১০০ মাইলস
11 নভ 2010 – গোরখাল্যান্ড এর আবেগের মাঝে টেনো না দাগ তোমার প্রানে. আজ আর বাজে না 100 miles পিটার এর গ্রামাফোনে এ. হারিয়ে গেছি আমি কনক্রিটের ভিরে. তুমি হারিয়েছ হিংসার দাবির ভিড়ে. কুয়াশায়ে ঘেরা মনের কোনে. আজও খুজি নেপালি বাজনাওালা টাকে. হিংসার ভিড়ের মাঝে. থাকবে তুমি আমার ছোটবেলার নেপালি প্রেম হয়েই ...
puronoguitar
11 নভ 2010 – গোরখাল্যান্ড এর আবেগের মাঝে টেনো না দাগ তোমার প্রানে. আজ আর বাজে না 100 miles পিটার এর গ্রামাফোনে এ. হারিয়ে গেছি আমি কনক্রিটের ভিরে. তুমি হারিয়েছ হিংসার দাবির ভিড়ে. কুয়াশায়ে ঘেরা মনের কোনে. আজও খুজি নেপালি বাজনাওালা টাকে. হিংসার ভিড়ের মাঝে. থাকবে তুমি আমার ছোটবেলার নেপালি প্রেম হয়েই ...
তেলেঙ্গানা নিয়ে সংকটে কংগ্রেস - প্রথম আলো
15 জানু 2010 – বিশেষ করে বিদর্ভ আন্দোলন (মহারাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় এলাকা নিয়ে গঠিত),গোরখাল্যান্ড (পশ্চিম বাংলার উত্তরাঞ্চলের গোরখা অধ্যুষিত এলাকা) ও বোরোল্যান্ড (আসামের বোরো সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা) আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠনের সিদ্ধান্তের ঘোষণার পর সংবাদপত্রের সম্পাদকীয় ও কলামে বার ...
গোরখাল্যান্ড ইস্যূ - Bangladesh Wiki (বাংলাদেশ)
www.bengaliwiki.com/news/article/.../গোরখাল্যান্ড+ইস্যূBangladesh Wiki (বাংলাদেশ) - গোরখাল্যান্ড ইস্যূ. ... গোরখাল্যান্ড ইস্যূ. Apr 16 2011, 7:37 AM EDT (view original item). পশ্চিম বঙ্গের নির্বাচনে গুরুত্ব. Anonymous said Apr 17 2011, 9:44 PM EDT: Welcome to our website: http://www.bingstore.us to choose the goods you like. We Offer Wholesale fashion designer Handbags, ...
Bengali - nicedefinition.com > Home
গোরখাদক - NiceDefinition.com এ "গোরখাদক" জন্য সংজ্ঞা · গোরখাল্যান্ড - NiceDefinition.com এ "গোরখাল্যান্ড" জন্য সংজ্ঞা · গোরখোদক - NiceDefinition.com এ "গোরখোদক" জন্য সংজ্ঞা · গোরখোদকসহ - NiceDefinition.com এ "গোরখোদকসহ" জন্য সংজ্ঞা · গোরখোদকের - NiceDefinition.com এ "গোরখোদকের" জন্য সংজ্ঞা · গোরগ্রাম - NiceDefinition.com এ ...
লিখে প্রথম উপার্জন। - আমার ব্লগ
www.amarblog.com/Geducacha/posts/42883 - বাংলাদেশ5 মার্চ 2009 – ... ০৫/০৩/২০০৯ - ১১:৫৪ তারিখে তুষার আহাসান বলেছেন. (F) (F)অভিনন্দন (F) (F) আমার লেখালেখিতে প্রথম উপার্জন " গোরখাল্যান্ড" আন্দোলনের সময় রম্য লেখা "বোরখাল্যান্ড" যেটির বিনিময়ে ১৫টাকা সম্মানী পেয়েছিলাম ছাত্র-জীবনে। টাকাটা তুলে দিয়েছিলাম মায়ের হাতে Laughing out loud. মন্তব্য প্রদানের জন্য লগইন অথবা রেজিস্টার ...
Gorkhaland
From Wikipedia, the free encyclopediaGorkhaland (Nepali: गोर्खाल्याण्ड) is the name of the proposed state in India demanded by the majority people of Darjeeling hills and the people of Gorkha ethnic origin in Dooars in northern West Bengal.[1] The movement for Gorkhaland has gained momentum in the line of ethno-linguistic-cultural sentiment of the people who desire to identify themselves as Gorkha.[2]
The demand for a separate administrative unit in this region has existed since 1907, when the Hillmen's Association of Darjeeling submitted a memorandum to Minto-Morley Reforms demanding a separate administrative setup.[3]
In Independent India, Akhil Bharatiya Gorkha League(ABGL) was the first political party from the region to demand greater identity for the Gorkha ethnic group and economic freedom for the community. In 1980, the Pranta Parishad of Darjeeling wrote to the then Prime Minister of India, Indira Gandhi, with the need to form a state for the Gorkhas of India.
The movement for a separate state of Gorkhaland gained serious momentum during the 1980s, when a violent agitation was carried out by Gorkha National Liberation Front (GNLF) led by Subhash Ghising. The agitation ultimately led to the establishment of a semiautonomous body in 1988 called theDarjeeling Gorkha Hill Council (DGHC) to govern certain areas of Darjeeling district. However, in 2008, a new party called the Gorkha Janmukti Morcha (GJM) raised the demand for a separate state of Gorkhaland once again.[4] On 18 April 2011, GJM signed an agreement with the state and central governments for the formation of Gorkhaland Territorial Administration, a semiautonomous body that would replace the DGHC in the Darjeeling hills.
Contents
[hide][edit]History of the area
Before the 1780s, the area of Darjeeling formed a part of dominions of the Chogyal of Sikkim, who had been engaged in unsuccessful warfare against the Gorkhas of Nepal. From 1780, the Gorkhas made several attempts to capture the entire region of Darjeeling. By the beginning of 19th century, they had overrun Sikkim as far eastward as the Teesta River and had conquered and annexed the Terai.
In the meantime, the British were engaged in preventing the Gorkhas from overrunning the whole of the northern frontier. The Anglo-Gorkha war broke out in 1814, which resulted in the defeat of the Gorkhas and subsequently led to the signing of the Sugauli Treaty in 1815. According to the treaty, Nepal had to cede all those territories which the Gorkhas had annexed from the Chogyal of Sikkim to the British East India Company (i.e. the area between Mechi River and Teesta River).
Later in 1817, through the Treaty of Titalia, the British East India Company reinstated the Chogyal of Sikkim, restored all the tracts of land between the Mechi River and the Teesta river to the Chogyal of Sikkim and guaranteed his sovereignty.
The controversy did not end there. Later, in 1835, the hill of Darjeeling, including an enclave of 138 square miles (360 km2), was given to the British East India Company by Sikkim, executed with a Deed of Grant. In November 1864, the Treaty of Sinchula was executed, in which the Bengal Dooars, which originally had been under the Cooch Behar State and taken over by Bhutan in the second half of the eighteenth century with the passes leading into the hills of Bhutan and Kalimpong were ceded to the British by Bhutan.[1] Kalimpong as well had been a part of Sikkim and was occupied by Bhutan in 1700; but according to the Treaty Sincula was ceded to British India along with the eleven Bengal Dooars; though seven Assam Dooars had already been taken over by the British in 1942.[1] The present Darjeeling district can be said to have assumed its present shape and size in 1866 with an area of 1234 sq. miles.
Prior to 1861 and from 1870–1874, Darjeeling District was a "Non-Regulated Area" (where acts and regulations of the British Raj did not automatically apply in the district in line with rest of the country, unless specifically extended). From 1862 to 1870, it was considered a "Regulated Area". The term "Non-Regulated Area" was changed to "Scheduled District" in 1874 and again to "Backward Tracts" in 1919. The status was known as "Partially Excluded Area" from 1935 until theindependence of India.
[edit]Agitation under GNLF and formation of DGHC
In the 1980s, Subhash Ghisingh raised the demand for the creation of a state called Gorkhaland within India to be carved out of the hills of Darjeeling and areas of Dooars and Siliguri terai contiguous to Darjeeling. The demand took a violent turn, which led to the death of over 1,200 people. This movement culminated with the formation of Darjeeling Gorkha Hill Council (DGHC) in 1988. The DGHC administered the Darjeeling hills for 23 years with some degree of autonomy.
The fourth DGHC elections were due in 2004. However, the government decided not to hold elections and instead made Subhash Ghisingh the sole caretaker of the DGHC till a new Sixth Schedule tribal council was established. Resentment among the former councillors of DGHC grew rapidly. Among them, Bimal Gurung, once the trusted aide of Ghising, decided to break away from the GNLF. Riding on a mass support for Prashant Tamang, an Indian Idolcontestant from Darjeeling, Bimal quickly capitalized on the public support he received for supporting Prashant, and was able to overthrow Ghisingh from the seat of power. He went on to found the Gorkha Janmukti Morcha raising the demand a state of Gorkhaland.[5]
[edit]Agitation under GJM
Ahead of the 2009 general elections in India, the Bharatiya Janata Party again announced its policy of having smaller states and to create two more states, Telangana and Gorkhaland, if they won the general election. GJM supported the candidature of Jaswant Singh of BJP, who won the Darjeeling Lok Sabha seat with 51.5% votes in his favour. In the July 2009 budget session of Parliament, three Parliamentarians— Rajiv Pratap Rudy, Sushma Swarajand Jaswant Singh—strongly pleaded for creating a state of Gorkhaland.
The demand for Gorkhaland took a new turn with the assassination of Madan Tamang, leader of Akhil Bharatiya Gorkha League. He was stabbed to death allegedly by Gorkha Janmukti Morcha supporters on 21 May 2010, in Darjeeling, which led to a spontaneous shutdown in the three Darjeeling hill sub-divisions of Darjeeling, Kalimpong and Kurseong.[6][7] After the murder of Madan Tamang, the West Bengal government threatened action against Gorkha Janmukti Morcha, whose senior leaders are named in the FIR, meanwhile hinting discontinuation of ongoing talks over interim arrangement with the Gorkha party, saying it had "lost popular support following the assassination".[8]
On 8 February 2011, three GJM activists were shot dead (one of whom succumbed to her injuries later) by the police as they tried to enter Jalpaiguri district on a padyatra led by Bimal Gurung from Gorubathan to Jaigaon. This led to violence in the Darjeeling hills and an indefinite strike was called by GJM that lasted 9 days.[9]
In the West Bengal state assembly election, 2011 held on 18 April 2011, GJM candidates won three Darjeeling hill assembly seats, proving that the demand for Gorkhaland was still strong in Darjeeling. GJM candidates Trilok Dewan won from Darjeeling constituency, [10] Harka Bahadur Chhetri from Kalimpong constituency, and Rohit Sharma from Kurseong constituency.[11] Wilson Champramari, an independent candidate supported by GJM, also won from Kalchini constituency in the Dooars.[12]
[edit]Gorkhaland Territorial Administration
Main article: Gorkhaland Territorial AdministrationThe memorandum of agreement for the formation of a Gorkhaland Territorial Administration (GTA), a semi-autonomous administrative body for the Darjeeling hills, was signed on 18 July 2011.[13] Earlier, during the West Bengal assembly election (2011) campaign,Mamata Banerjee had promised that the issue of Gorkhaland would be resolved. While Mamata implied that this would be the end of the Gorkhaland movement, Bimal Gurung reiterated that this was just another step towards statehood. Both spoke publicly at the same venue in Pintail Village near Siliguri, where the tripartite agreement was signed.[14] A bill for the creation of GTA was passed in theWest Bengal Legislative Assembly on 2 September 2011.[15] The West Bengal government issued a gazette notification for the GTA Act on 14 March 2012, signalling preparations for elections for the GTA.[16] In the elections of the GTA held on 29 July 2012, GJM candidates won from 17 constituencies and the rest 28 seats unopposed.[17]
[edit]References
- ^ a b c Sailen Debnath, The Dooars in Historical Transition, ISBN 9788186860441
- ^ "Why Gorkhaland". Gorkha Janmukti Morcha. Retrieved 6 October 2012.
- ^ "The Parliament is the supreme and ultimate authority of India". Darjeeling Times. 23 November 2010. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Demand for Gorkhaland raised again". The Hindu. 16 November 2007. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Indian Idol reignites demand for Gorkhaland in Darjeeling hills". Live Mint. 19 March 2008. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Gorkha leader Madan Tamang killed, Darjeeling tense". The Indian Express. 21 May 2010. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Gorkha leader Madan Tamang hacked in public". The Times of India. 22 May 2010. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Tamang's murder threatens to derail Gorkhaland talks". The Times of India. 26 May 2010. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "2 killed in police firing on GJM protesters". The Hindu. 8 February 2011. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "GJM wins Darjeeling constituency by record margin of votes". Hindustan Times. 14 May 2011. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "GJM wins three Assembly seats in Darjeeling". Zee News. 13 May 2011. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "GJMM to finalise stand today". The Statesman. 13 May 2011. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Darjeeling tripartite pact signed for Gorkhaland Territorial Administration". The Times of India. 18 July 2011. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Gorkhaland struggle may not end with Mamata's deal". First Post. 20 July 2011. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "GTA Bill passed with 54 amendments". The Times of India. 3 September 2011. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "Gorkha Territory readies for polls". The Times of India. 15 March 2012. Retrieved 20 March 2012.
- ^ "GJM sweeps maiden GTA polls, not to give up Gorkhaland demand". Darjeeling Times/IANS. 2 August 2012. Retrieved 5 August 2012.
[edit]Bibliography
- Subba, Tanka Bahadur (1992). Ethnicity, State, and Development: A Case Study of the Gorkhaland Movement in Darjeeling. Har-Anand Publications & Vikas Publishing House. ISBN 0-7069-5695-8.
- Roy, Barun (2012). Gorkhas and Gorkhaland. Parbati Roy Foundation.
- Samanta, Amiya K. (2000). Gorkhaland Movement: A Study in Ethnic Separatism. APH Publishing. ISBN 81-7648-166-1.
- Lama, Mahendra P. (1996). Gorkhaland Movement: Quest for an Identity. Department of Information and Cultural Affairs, Darjeeling Gorkha Hill Council.
- Kumar, Braj Bihari (1998). "10. Gorkhaland Imbroglio". Small States Syndrome in India. Concept Publishing Company. ISBN 81-7022-691-0.
- Chaklader, Snehamoy (2004). Sub-Regional Movement in India: With Reference to Bodoland and Gorkhaland. K.P. Bagchi & Co..ISBN 81-7074-266-8.
- Samdara, Ranbir (2005). "7. Silence Under Freedom: Darjeeling Hills". The Politics of Autonomy: Indian Experiences. SAGE.ISBN 0-7619-3452-9.
- Chadha, Vivek (2005). "16. Gorkhaland Movement". In United Service Institution of India. Low Intensity Conflicts in India: An Analysis. SAGE. ISBN 0-7619-3325-5.
- Kaushik, Anupma (2007). Gorkhaland Revisited. Navjeewan Publication. ISBN 81-8268-029-8.
- Why Gorkhaland. Gorkha Janmukti Morcha. 2009.
- Debnath, Sailen. West Bengal in Doldrums. ISBN 978-81-86860-34-2.
- Debnath, Sailen. Essays on Cultural History of North Bengal. ISBN 978-81-86860-42-7.
- Debnath, Sailen. The Dooars in Historical Transition. ISBN 978-81-86860-44-1.
[edit]External links
Subhash Ghisingh
From Wikipedia, the free encyclopediaSubhash Ghisingh Born 22 June 1936
Manju Tea Estate, Darjeeling,British IndiaOccupation Politician Subhash Ghisingh (Nepali: सुवास घिसिङ) is the leader of Gorkhaland National Liberation Front (GNLF) which he founded in 1980. He was the chairman of the Darjeeling Gorkha Hill Council in West Bengal, India from 1988 to 2008. He spearheaded the Gorkhalandmovement in the 1980s.
The Gorkhaland movement grew from the demand of Gorkhas living in Darjeeling District of West Bengal for a separate state. The Gorkhaland National Liberation Front led the movement, which disrupted the district with massive violence between 1986 and 1988. The issue was resolved, at least temporarily, in 1988 with the establishment of the Darjeeling Gorkha Hill Council within West Bengal.
Contents
[hide][edit]Life
He was born on 22 June 1936 at Manju Tea Estate in Darjeeling. While a student of Class IX in St. Robert's High School, Darjeeling, his father died. As a result, he left school and joined the Gorkha Rifles of the Indian Army as a soldier in 1954. He completed his matriculation in 1959 while working, but quit the army in 1960 and returned to Darjeeling.[1]
After working as a teacher in Tindharia Bangla Primary School for about a year, he enrolled at Kalimpong Junior BT College in 1961. As result of an altercation with the college principal he left the college. He joined Darjeeling Government College and passed Pre-University Arts degree in 1963.[1]
While a second-year B.A. student, he was arrested for participating in a political agitation against the poor conditions of the hills. He then had to quit studies. He was then the general secretary of Tarun Sangh. It was the beginning of a long political career.[1]
In 1968, Ghisingh was vocal on issues concerning the hills and formed a political outfit, Nilo Jhanda, to further the cause. On 22 April 1979, for the first time, he raised the demand for a separate state for the Nepali-speaking people of the Darjeeling hills. On 5 April 1980, he demanded the formation of Gorkhaland, a separate state for the Gorkhas within India . He formed the Gorkha National Liberation Front to achieve statehood. After a prolonged struggle marked by much bloodshed, on 22 August 1988, he signed an agreement with the state and the central governments for the creation of the Darjeeling Gorkha Hill Council, a semi-autonomous body.[1]
[edit]Statehood demand
In 1986, the Gorkhaland National Liberation Front under the leadership of Subhash Ghisingh, having failed to obtain a separate regional administrative identity from Parliament, demanded a separate state of Gorkhaland. This statehood movement turned violent and was severely repressed by the West Bengal government. The disturbances almost totally shut down the Darjeeling district's economic mainstays of tea and tourism. The Left Front government of West Bengal, which earlier had supported some form of autonomy, now opposed it as "antinational". The state government claimed that Darjeeling district was no worse off than the state in general and was richer than many districts. However, GNLF spoke of discrimination from the West Bengal administration towards the Gorkhas.
After two years of violent agitation and the loss of at least 1,200 lives, the government of West Bengal and the central government of India agreed on granting a semi-autonomous administrative body to Darjeeling hills. In July 1988, the GNLF gave up its demand for a separate state, and in August 1988, the Darjeeling Gorkha Hill Council came into being. Ghisingh became its chairman after winning the first council elections. The council had authority over some economic development programmes, tourism and culture. Ghisingh remained the chairman of the DGHC for 20 years with his GNLF party winning the DGHC elections three times.
[edit]Sixth Schedule and exile
The fourth DGHC elections were due in 2004. However, the government decided not to hold elections and instead made Subhash Ghisingh the sole caretaker of the DGHC till the Sixth Schedule council was established. Most of the other political parties and organizations opposed the setting up of a Sixth Schedule Tribal Council as there was only a minority tribal population in the DGHC area. Resentment among the former councillors of DGHC also grew rapidly. Among them, Bimal Gurung, once the trusted aide of Ghisingh, decided to break away from the GNLF.[2] Riding on a mass support for Prashant Tamang, an Indian Idol candidate from Darjeeling in 2007, Bimal quickly capitalized on the public support he received for supporting Prashant, and was able to overthrow Ghisingh from the seat of power. Ghisingh resigned from the chairmanship of the DGHC in March 2008[3] and shifted residence toJalpaiguri. GNLF lost most of its support and cadres to Gorkha Janmukti Morcha, a new party headed by Bimal Gurung.
[edit]West Bengal assembly elections 2011 and return from exile
After lying in political hibernation for three years, Subhash Ghisingh returned to Darjeeling on 8 April 2011 ahead of the West Bengal assembly elections.[4] His party contested the state assembly elections held on 18 April 2011 from three constituencies in the Darjeeling hills[5] but lost all the three seats that it had won in the earlier election. Ghisingh left the Darjeeling hills again on 16 May 2011 on yet another political hibernation.[6]
[edit]References
- ^ a b c d Paul, Bappaditya. "Gorkhaland is my monkey". Perspective. The Statesman, 2007-01-11.
- ^ http://www.hinduonnet.com/fline/fl2424/stories/20071221501702700.htm
- ^ "Subhash Ghisingh resigns". The Hindu. 11 March 2008.
- ^ Ghisingh back in Hills after 3 yrs, The Times of India
- ^ GNLF to contest three assembly seats in Darjeeling hills, The Hindu
- ^ http://www.hindustantimes.com/GNLF-chief-Subash-Ghising-leaves-Darjeeling-Hills/Article1-698400.aspx GNLF chief Subash Ghising leaves Darjeeling Hills
Gorkha National Liberation Front
From Wikipedia, the free encyclopediaGorkha National Liberation Front Chairperson Subhash Ghisingh Founded 1980 Politics of India
Political parties
ElectionsGorkha National Liberation Front (GNLF) (Nepali: गोर्खा राष्ट्रिय मुक्ति मोर्चा) is a political party in the Darjeeling District of West Bengal, India. It was formed in 1980 by Subhash Ghisingh with the objective of demanding a Gorkhaland state within India.[1]
Contents
[hide][edit]Early history
During the 1980s, the GNLF led an intensive and often violent campaign for the creation of a separate Gorkhaland state in the Nepali-speaking areas of northern West Bengal (Darjeeling, Dooars and Terai).[2] The movement reached its peak around 1985–1986. On 22 August 1988, the GNLF, under Subhash Ghisingh, signed the Darjeeling Hill Accord, which created the Darjeeling Gorkha Hill Council(DGHC) in exchange for the GNLF giving up its demand for Gorkhaland.
[edit]Electoral history
[edit]State assembly
GNLF boycotted the West Bengal state assembly elections in 1991. In the assembly elections in 1996, 2001, and 2006, GNLF won three assembly seats, one each from Darjeeling, Kalimpong and Kurseong.
[edit]Lok Sabha
In 1989, GNLF candidate Inderjeet Khuller, a former journalist covering the Gorkhaland agitation and a close friend of Subhash Ghisingh, won the Darjeeling (Lok Sabha constituency) elections. GNLF supported Inderjeet as the Indian National Congress candidate in 1991, who won the Lok Sabha elections riding on GNLF support. GNLF boycotted the Lok Sabha elections in 1996, 1998, and 1999, which were won by CPI(M) candidates. Ahead of the 2004 Lok Sabha elections, the GNLF supported the Congress party candidate Dawa Narbula, who won with a big margin from the Darjeeling constituency. In the 2009 elections, GNLF was out of power in the hills and did not field any candidate or support any party and the Lok Sabha seat was won by Jaswant Singh of BJP with the support from GJMM.
[edit]Darjeeling Gorkha Hill Council
The GNLF administered the DGHC with Subhash Ghisingh as the chairman of the council from 1988 to 2004 for three successive terms. Subhash Ghisingh was appointed the sole caretaker of the DGHC from 2005 to 2008 as no election for the DGHC was held.[3]
[edit]Sixth Schedule
A Memorandum of Settlement (MoS) was signed between the Central Government, the State Government and the GNLF for the establishment of a Sixth Schedule tribal council called the Gorkha Hill Council in the DGHC area on 6 December 2005. After some initial support, there was widespread opposition to the Sixth Schedule council, led by leaders like Madan Tamang of ABGL.
[edit]Downfall
The DGHC elections were due in 2004. However, the government decided not to hold elections and instead made Subhash Ghisingh the sole caretaker of the DGHC till the Sixth Schedule council was established.[4] Resentment among the former councillors of DGHC grew rapidly. Among them, Bimal Gurung, once the trusted aide of Ghising, decided to break away from the GNLF. Riding on a mass support for Prashant Tamang, an Indian Idol contestant from Darjeeling, Bimal quickly capitalized on the public support he received for supporting Prashant, and was able to overthrow Ghisingh from the seat of power. Ghising decided to shift residence to Jalpaiguri and GNLF lost most of its support and cadres to Gorkha Janmukti Morcha, a new party headed by Bimal Gurung.
[edit]West Bengal assembly elections 2011
After lying in political hibernation for three years, GNLF chief Subhash Ghisingh announced that his party would contest the West Bengal Legislative Assembly elections 2011. Subhash Ghisingh returned to Darjeeling on 8 April 2011 ahead of the assembly elections after three years of "exile".[5] All the three GNLF candidates, Bhim Subba from Darjeeling, Prakash Dahal from Kalimpong and Pemu Chettri from Kurseong lost the elections held on 18 April 2011.[6]
[edit]References
- ^ Rai, Joel (12 June 2008). "Redrawing the map of Gorkhaland". IndianExpress.com. Indian Express. Retrieved 13 June 2012.
- ^ Pradhan, Keshav (18 January 2010). "Gorkhaland an unfinished mission". TimesOfIndia.IndiaTimes.com. The Times of India. Retrieved 13 June 2012.
- ^ "Subhas Ghising resigns". Hindu.com. The Hindu. 11 March 2008. Retrieved 13 June 2012.
- ^ "Gorkhaland is my monkey". DarjeelingTimes.com. Darjeeling Times. 11 January 2008. Retrieved 13 June 2012.
- ^ TNN (9 April 2011). "Ghisingh back in Hills after 3 yrs". TimesOfIndia.IndiaTimes.com. The Times of India. Retrieved 13 June 2012.
- ^ "West bengal State Assembly Elections 2011 Candidate List". IBNlive.in.com. Indian Broadcasting Network. Retrieved 13 June 2012.
No comments:
Post a Comment