সিপিএম ধর্মসঙ্কটে, নেতৃত্ববদল আন্দোলনের ফলে ইয়েচুরি এবং বুদ্ধদেবের ইস্তীফা মন্জুর হলে প্রকাশ কারাত থেকে বিমান বসু কেউ রেহাই পাবেন না।
माकपा का धर्मसंकट यह है कि येचुरी और बुद्धदेव अगर हट जाते हैं तो प्रकाश कारत से लेकर विमान बोस तक को हटना पड़ेगा।
এক্সকেলিবার স্টিভেন্স বিশ্বাস
জাতপাতের বজ্জাতিতে সমান দক্ষতায় বুর্জুয়া ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে কেন্দ্রে ও রাজ্যে প্রত্যক্ষ অপ্রত্যক্ষ রাজত্বের জন্য ভারতবর্ষে বাম মতাদর্শের সঙ্গে এ যাবত বিশ্বাসঘাতকতা করে লাল ঝান্ডার অন্তর্জলি যাত্রা বের করেছেন যারা,তাঁদের এখন মহাবিপদ।
বাংলার কমরেডদের স্বার্থ রক্ষার্থে সারা দেশের সমর্থন সত্বেও কমরেড জ্যোতি বসুকে ভারতবর্ষের এবং সারা বিশ্বে প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হতে যারা আটকে দিয়েছিলেন মতাদর্শের নামে,তাঁদের মতাদর্শ ও পার্টি অনুশাসন তাসের ঘরে পরিণত।
এই সেদিনও ভারত মার্কিন পরমাণু চুক্তির লোক দেখানো সংসদীয় থেটারে স্পীকারপদ থেকে পার্টি নির্দেশ অনুযায়ী ইস্তীফা না দেওয়ায় অপরাধে সোমনাথ চ্যাটার্জিকে বহিস্কৃত করা হল এবং লোকসভা ভোটের ঠিক আগে বাংলার সংখ্যালঘু মুখ ও কিষানসভার সর্বভারতীয নেতা,বাম সরকারের প্রাক্তন দাপুটে মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লাকে বের করে দেওয়া হল,অথচ রাজ্য কমিটী থেকে কেন্দ্রীয কমিটির বৈঠকে নেতৃত্ব বদল আন্দোলন থামানোই যাচ্ছে না।
নন্দীগ্রাম সিঙ্গুরে জমি অধিগ্রহণ আন্দোলনের দায সরাাসরি তার ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে নষ্কলন্ক যারা এ যাবত রাজ্যপাট ভোগ রেছেন,রামরাজত্বে তাহাদেরই মহাবিপদে ফেলে দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও পোলিট ব্যুরো সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাতচার্য,সব পদ ছেড়ে দেবেন বলে গোঁ ধরে।
ইহাই শেষ নয়,পার্টিতে কমরেড জেনারেল সেক্রেটারির পর যিনি সর্বভারতীয বাম রাজনীতিতে সেকন্ড ইন কমান্ড,সেই সীতারাম ইয়েচুরিও সেন্ট্রাল কমিটির বৈঠকে ইস্তীফা টাঙিয়ে দিয়েছেন সর্বজনসমক্ষে।
কংগ্রেসের ভরা়ডুবিতে খড়কুটো ধরে বাঁচার চেষ্টাও ব্যর্তবিশেষ ভাবে উল্লেক্য,কংগ্রেসের সঙ্গে নতুন করে সখ্য বাড়ানোর কাজ শুরু করেছিল সিপিআই(এম)। সংসদে প্রায়ই কংগ্রেস সহসভাপতি রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতও করেছেন সিপিআই(এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি।
সিপিআই(এম) সূত্রেরই খবর, সাংসদ তথা দলের পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরিকে বিশেষভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কংগ্রেসের সঙ্গে নির্দিষ্টভাবে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার। এসব করা হচ্ছিল ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে।
দ্বিতীয়ত. লোকসভা নির্বাচনে যাতে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে আবার জোট তৈরি হতে না পারে সেদিকেও নজর রেখেছে সিপিআই(এম)। দিলি্লর রাজনৈতিক মহলের মতে, সে কারণেই রাহুলের সঙ্গে সীতারামের ঘন ঘন সাক্ষাত।
কংগ্রেসের সঙ্গে রাজনৈতিক মতভেদ হলেও ব্যক্তিগতভাবে সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে এখনো সুসম্পর্ক রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু দিলি্লর রাজনৈতিক মহলের দাবি, আগামীদিনে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনো রকম রাজনৈতিক অাঁতাতে যেতে নারাজ ছিলেন রাহুল গান্ধী।
বাংলায় বামকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার শেষ উদ্যোগও কংগ্রেসের লজ্জাজনক হারের সঙ্গে সঙ্গে বাংলায় বামেদের মাত্র দুটি আসন প্রাপ্তিতে বানচাল।
বাংলায় এখন বিপ্লব ও মতাদর্শ পদ্ম প্রলয়ে আত্মস্থ।দলে দলে কমরেডগণ বামে আর আশা নেই বলেই দিল্লীর মুদিখানার রেশন হাসিল করতে গৌরিক শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন।
সিপিএম ধর্মসঙ্কটে,নেতৃত্ববদল আন্দোলনের ফলে ইয়েচুরি এবং বুদ্ধদেবের ইস্তীফা মন্জুর হলে প্রকাশ কারাত থেকে বিমান বসু কেউ রেহাই পাবেন না।
আনন্দ বাজারের প্রতিবেদন অনুযায়ীঃনেতা বদলের দাবি উঠেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রাজ্য কমিটির বৈঠকেই। বিমান বসু থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেউই সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পাননি। এ বার সীতারাম ইয়েচুরিও পলিটব্যুরোর বৈঠকে জানিয়ে দিলেন, তিনি লোকসভা নির্বাচনের খারাপ ফলের দায় নিয়ে পলিটব্যুরো থেকে সরে দাঁড়াতে তৈরি। দলের হাল শোধরাতে তিনি পদ ছাড়তে রাজি আছেন।
দলের নিয়ম মেনে এমনিতেই প্রকাশ কারাটকে আগামী বছর দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়তে হবে। কিন্তু ভোটে বিপর্যয়ের পরপরই তিনি যে ভাবে ব্যক্তিগত ভাবে দায় নেওয়ার বিরুদ্ধে বলে এসেছেন, সেই অবস্থানকে আজ ফের প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল সীতারামের ঘোষণা।
লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরেই রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু জানিয়েছিলেন, তিনি হারের দায় নিয়ে সরে দাঁড়াতে রাজি আছেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও জানিয়ে দেন, তিনি আর পলিটব্যুরো বা কেন্দ্রীয় কমিটির কোনও পদে থাকতে চান না। এত দিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেও তাঁদের নিরস্ত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এখনও ভোটে হারের কারণই বিশ্লেষণ হয়নি। আগে জেলা ভিত্তিক রিপোর্ট আসুক। রাজ্য কমিটি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত সব স্তরে ভোটের ফলাফল নিয়ে আলোচনা হোক। তার পরে দায় নেওয়ার প্রশ্ন।
সেই ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণেই আজ থেকে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে দিল্লিতে। চলবে তিন দিন। আলোচসূচিতে না থাকায় ইয়েচুরির পলিটব্যুরো ছাড়ার ইচ্ছা নিয়ে এ দিন কোনও আলোচনা হয়নি। দিনের শেষে কারাটও জানিয়ে দেন, আজকের বৈঠকে নেতৃত্ব বদল নিয়ে কোনও কথা হয়নি।" তবে ইয়েচুরিও শেষ পর্যন্ত বিমান-বুদ্ধদেবের পথ ধরায় যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছেন কারাট। বাকি সবাই পদ ছাড়তে রাজি আছি বললেও কারাটের পক্ষে এখন আর সে কথা বলা সম্ভব নয়।
P.B Communiqué
Sunday, May 18, 2014
Press Communiqué
The Polit Bureau of the Communist Party of India (Marxist) met in New Delhi today. It has issued the following statement:
The Polit Bureau discussed the results of the Lok Sabha elections and the post-election situation. It conducted a preliminary review of the elections and the performance of the Party. It examined the various factors which led to the poor results for the Party and the Left.
The Polit Bureau will meet again on June 6 to finalise the election review and the political-organisational steps to be taken in the present political situation. This will be placed before the Central Committee meeting on June 7 and 8 for discussion and adoption.
The Polit Bureau condemned the continuing attacks on the CPI(M) and the Left Front workers and supporters in West Bengal.
West Bengal Verdict "Distorted"
Friday, May 16, 2014
CPI(M) General Secretary Prakash Karat termed the results of the Lok Sabha elections from West Bengal as "distorted". Addressing the press in New Delhi today, he said that there was widespread rigging and violence during the last three phases of the elections in the state and the entire democratic process was vitiated. "The results do not reflect the strength and support of the people for the Left Front in West Bengal".
Prakash Karat said that in 32 out of 42 constituencies in the state, there was widespread rigging and violence and these have been widely reported in the Bengali media. But the Election Commission has failed in its duty of ensuring a free and fair poll. "The Left, the Congress and the BJP together had demanded repoll in 3200 booths where rigging was done, but the EC had ordered repoll only in 16 booths. There is something wrong with the election machinery." He said that during the 2004 and 2009 Lok Sabha elections the Party had raised the issue about the role of observers who are sent to the constituencies. Prakash Karat pointed out that "there is something defective as there are no clear guidelines about how these observers should act".
Answering a question about the fall in percentage of votes polled by the Party in Bengal, Prakash said that "the percentage of votes does not reflect the correct picture as there was widespread rigging." He termed the drop of over 11 per cent vote since the last assembly elections as "unacceptable". This does not reflect the true situation, he said.
Our immediate concern will be taking our Party and the movement ahead in West Bengal, irrespective of the election results, he added.
About the outcome of the elections at the national level, Prakash said though the Party had worked for the rejection of the Congress, it is not happy with the outcome, as the main benefit of the anti-Congress mood has gone to the BJP.
On Lok Sabha Verdict
Friday, May 16, 2014
The verdict of the people in the 16th Lok Sabha election has been clear and decisive. There has been an anti-Congress wave which has routed the Congress and the UPA. The BJP has gained from this anti-Congress wave resulting in a big victory for the BJP and the NDA. There was an unprecedented use of money power in these elections.
The results for the CPI(M) and the Left parties have been disappointing. The Left Democratic Front made gains in Kerala and the Left Front in Tripura won with increased margins. However, the widespread rigging, violence and intimidation targeting the Left Front in the elections in West Bengal has led to a distorted result which does not reflect the popular support for the CPI(M) and the Left Front. The Election Commission failed to intervene to rectify the situation from the third to the fifth round of polling in West Bengal.
The Polit Bureau of the CPI(M) greets the thousands of cadres and supporters of the CPI(M) and the Left Front in West Bengal who have worked courageously in the face of ceaseless attacks in these elections. The Party will identify the weaknesses and take steps to overcome them.
The people have voted against the policies of the Congress-led UPA government which resulted in price rise, agrarian distress and corruption. They voted for a change and for relief from the problems afflicting them. The CPI(M) will continue to work to defend the interests of the working people and to safeguard the secular democratic framework of the country.
কিন্তু সেদিনও
2013
নেতা বদল নয়, প্রয়োজন নীতি বদলের : ইয়েচুরি
13 ডিসেম্বর 2013 15:27
নেতৃত্ব এক রেখে নীতিতে পরিবর্তন ঘটাতে চায় সিপিআইএম
কেন্দ্রে নেতা বদল নয়, প্রয়োজন নীতি বদলের। ত্রিপুরায় সিপিআইএম পলিটব্যুরো বৈঠক শেষে একথাই বললেন সীতারাম ইয়েচুরি। ত্রিপুরায় এই প্রথম বৈঠকে বসল সিপিআইএম পলিটব্যুরো। আলোচনা হয় লোকসভা ভোটে দলের রণনীতি নিয়ে। শুক্রবার থেকে আগরতলায় শুরু হল সিপিআইএমের তিন দিনের পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটি বৈঠক। চাররাজ্যের ভোটের ফলাফল এবং লোকসভা নির্বাচন। আলোচনার কেন্দ্রে মূলত এই দুটিই এজেন্ডা।
চার রাজ্যের ভোটে ধরাশায়ী কংগ্রেস। নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে অনেকটাই উজ্জীবিত বিজেপি। মোদীর দলের থিঙ্কট্যাঙ্ক মনে করছে দিল্লিতে মসনদ বদল এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে, দিল্লিতে কংগ্রেসের বদলে বিজেপি আসলে সমস্যা মিটে যাবে এমনটা মনে করছে না সিপিআইএম শীর্ষ নেতৃত্ব।
এই পরিস্থিতিতে বিকল্প নীতির সন্ধান ইতিমধ্যেই করতে শুরু করেছে বামেরা। ৩০ অক্টোবর দিল্লিতে কনভেনশনে যোগ দিয়েছিলেন মুলায়ম সহ অনেকেই। আগামী দিন এই বিকল্পকে আরও কীভাবে সংহত করা যায় তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বৈঠকে।
माकपा का धर्मसंकट यह है कि येचुरी और बुद्धदेव अगर हट जाते हैं तो प्रकाश कारत से लेकर विमान बोस तक को हटना पड़ेगा।बुद्धदेव ने राज्य कमिटी की बैठक में तो सीताराम येचुरी ने सर्वशक्तिमान सेंट्रल कमिटी की बैठक में ही सारे पद छोड़ने की पेशकश करके माकपा महासचिव को चारों दिशाओं से घेर लिया है।जिस पार्टी ने कामरेड ज्योति बसु को पूरे देश की इच्छा को दुत्कारते हुए कभी प्रधानमंत्री बनने से रोकने का पराक्रम दिखाया था,जिस पार्टी ने अपने दल के लोकसभा अध्यक्ष सोमनाथ चटर्जी को स्पीकर पद से इस्तीफा देने से इंकार करने के कारण बेरहमी से कामरेड बसु की प्रबल आपत्ति के बावजूद पार्टी बाहर कर दिया,उसकी यह दुर्गति है कि आपस में आम बुर्जुआ दलों की तरह सत्ता संघर्ष घमासान है।विचारधारा धरी की धरी रह गयी देश में सिरे से अप्रासंगिक बन गये वामपंथियों की।
लोकसभा चुनाव में मिली करारी हार के बाद माकपा के सीताराम येचुरी समेत पश्चिम बंगाल के वरिष्ठ नेताओं ने एक बार फिर पोलित ब्यूरो की सदस्यता से इस्तीफे की पेशकश की है। नई दिल्ली में शनिवार को शुरू हुई पार्टी की सेंट्रल कमेटी की बैठक के पहले दिन विभिन्न राज्यों से पहुंचे नेताओं ने हार पर चर्चा की और अपने-अपने विचार रखे। लगभग एक सप्ताह पहले माकपा के पूर्व दिग्गज नेता सोमनाथ चटर्जी ने पार्टी नेतृत्व में बड़े स्तर पर परिवर्तन की वकालत की थी।
सूत्रों का कहना है कि येचुरी समेत पश्चिम बंगाल के दूसरे नेताओं ने बंगाल में पार्टी की हार की जिम्मेदारी लेते हुए पोलित ब्यूरो की सदस्यता से इस्तीफे की पेशकश की। हालांकि, इसकी हालांकि आधिकारिक पुष्टि नहीं हो सकी, लेकिन बैठक में पार्टी नेताओं के बीच चर्चा के दौरान गरमा गरम बाताबाती हो गयी।
बंगाल में विधानसभा चुनावों में सत्ता से बेदखल होने के बाद वामदलों में इतनी भगदड़ नहीं मची थी,जो लोकसभा चुनावों में चारों खानों चित्त वामदलों का हो रहा है।पश्चिम बंगाल में 2011 में तृणमूल कांग्रेस ने वाम मोर्चा के 34 साल के शासन का अंत किया था। जिसके बाद इस लोकसभा चुनाव में 42 सीटों वाले पश्चिम बंगाल में वाम मोर्चा सिर्फ दो सीटें ही जीतने में कामयाब हो पाई।
ममता बनर्जी के मुख्यमंत्रित्व में भी वामदलों को सत्ता में वापसी की उम्मीद थी।लेकिन अचानक राज्य में शुरु केसरिया सुनामी में वामदलों का समूचा जनाधार उसीतरह केसरिया होता जा रहा है ,जैसे पूरे गैरतृणमूली जमीन कमल से लहलहाने लगी है। हालत इतनी खराब हो गयी कि नेतृत्व का फैसला मानने को हमेशा तत्पर कैडर कामरेड खुली बगावत पर उतारु है और कोलकाता में माकपा की राज्य कमेटी की बैठक के दौरान कमेटी के सदस्यों ने नेतृत्व परिवर्तन की मांग कर दी। इतना ही नहीं माकपा नेताओं ने लोकसभा चुनाव में मिली करारी हार के लिए पार्टी महासचिव प्रकाश करात के गलत राजनीतिक फैसलों को जिम्मेदार बताया।
इसी बीच वामदलों में नेतृत्व के खिलाफ अभूतपूर्व विद्रोह शुरु हो चुका है और माकपा महासचिव की मौजूदगी में नेतृत्व बदल की मांग राज्य कमिटी की बैठक में ही बुलंद आवाज में ज्यादातर जिला प्रतिनिधियों ने उठा दी है। इसी परिदृश्य में पूर्व मुख्यमंत्री कामरेड बुद्धदेव भट्टाचार्य ने सभी पदों से इस्तीफे की पेशकश करके नेतृत्व पर भारी दबाव पैदा कर दिया है।लोकसभा चुनाव में पश्चिम बंगाल में बुरी तरह पराजय का मुंह देख चुकी माकपा में रार थमने का नाम नहीं ले रही। स्थिति यह है कि जहां एक ओर सांगठनिक और नेतृव में फेरबदल की मांग तेज होती जा रही हैं वहीं पूर्व मुख्यमंत्री बुद्धदेव भट्टाचार्य ने यह कह कर सबको चौंका दिया है कि वह पार्टी से जुड़े सभी पदों को छोड़ना चाहते हैं। हालांकि, राय कमेटी की दो दिवसीय बैठक में प्रदेश सचिव विमान बोस ने हार की जिम्मेदारी ली है।लेकिन हार की जिम्मेवारी लेने से ही वाम नेतृत्व को माफ करने को तैयार नहीं हैं कार्यकर्ता,नेता और समर्थक।घटक दलों की ओर से भी आपरोपों की फेहरिस्त सार्वजनिक है।
माकपा का धर्मसंकट यह है कि बुद्धदेव अगर हट जाते हैं तो प्रकाश कारत से लेकर विमान बोस तक को हटना पड़ेगा।क्योंकि पार्टी के नेता कार्यकर्ता एक के बाद एक निष्कासन और बहिस्कार के बावजूद पार्टी नेतृत्व में न केवलजाति वर्चस्व तोड़ने की मांग करते हुए सभी समुदायों को प्रतिनिधित्व देने की मांग कर रहे हैं,वे तुरंत प्रकाश कारत समेत बंगाल राज्य कमिटी का इस्तीफा भी मांग रहे हैं। बुद्धदेव माकपा की पोलित ब्यूरो के सदस्य होने के साथ ही केंद्रीय कमेटी और राज्य कमेटी के भी सदस्य हैं। कोलकाता में राज्य कमेटी की बैठक में बुद्धदेव ने अपने इस प्रस्ताव से सबको सन्न कर दिया। बुद्धदेव ने सिर्फ इच्छा ही नहीं जताई बल्कि दृढ़ता से पदों को छोड़ने की बात शीर्ष नेतृव के सामने रखी।
इसीलिए संगठन में जमीनी स्तर पर छिटपुट बदलाव करने को तैयार पार्टी नेतृत्व बुद्धदेव को पदत्याग की इजाजत देनेकी हालत में नहीं है।जैसे नेतृत्व बदलकी मांग खारिज कर दी गयी,उसी तरह पार्टी नेतृत्व बुद्धदेव के इस्तीफे की पेशकश भी तुरंत खारिज कर दी है।लेकिन मुश्किल यह है कि नंदीग्राम सिंगुर प्रकरण की वजह से पार्टी की हार का ठीकरा उनके ही मत्थे फोड़े जाने से नाराज बुद्धदेव विधानसभा चुनावों के तुरत बाद से लगातार पदमुक्त होने का दबाव बना रहे हैं और अबकी दफा वे बने रहने को तैयार नहीं हैं। बुद्धदेव भट्टाचार्य पोलित ब्यूरो सदस्य होने के बावजूद 2011 से अब तक कोलकाता के बाहर होनी वाली किसी भी बैठक में शामिल नहीं हुए हैं, लेकिन मंगलवार की बैठक में उनके रुख का गहरा अर्थ निकला जा रहा है। प्रदेश माकपा सचिव मंडली के एक सदस्य ने कहा कि प्रकाश करात समझाने के बावजूद बुद्धदेव आश्वस्त नहीं हो सके और पूरी बैठक के दौरान वे मौन रहे। इसके उनकी गंभीरता का पता चलता है।
दूसरी तरफ 1960 के दशक से चुनाव मैदान में आई माकपा का प्रदर्शन इस लोकसभा चुनाव में अब तक का सबसे खराब प्रदर्शन रहा है। जिसके चलते पिछले कुछ दिनों से अयोग्य नेतृत्व को बदलने की मांग तेज होने लगी है। राज्य कमेटी के नेताओं ने पार्टी के बड़े नेताओं प्रकाश करात, प्रदेश सचिव विमान बोस, पोलित ब्यूरो के सदस्य व पूर्व मुख्यमंत्री बुद्धदेव भंट्टाचार्य और प्रदेश में विपक्ष के नेता सूर्यकांत मिश्रा पर चुनाव के दौरान बेहतर नेतृत्व नहीं दे पाने का आरोप लगाया। इस बैठक में करात के साथ साथ त्रिपुरा के मुख्यमंत्री मानिक सरकार और पोलित ब्यूरो के सदस्य सीताराम येचुरी भी मौजूद थे।
इस पर तुर्रा यह कि इसी बैठक में बुद्धदेव ने साफ साफ कह दिया है कि कि वह किसी पद पर अब नहीं बने रहना चाहते, बल्कि एक साधारण पार्टी सदस्य के तौर ही पर जुड़े रहना चाहते हैं। बैठक के दौरान सभी पार्टी पदों को छोड़ने पर आमादा बुद्धदेव को माकपा के शीर्ष नेता प्रकाश करात ने किसी तरह पद न छोड़ने पर आश्वस्त करना चाहा, लेकिन वह फिर आश्वस्त नहीं हुए और बैठक में खामोश रहे।
पत्रकारों से बाद में करात ने बुद्धदेव के इस्तीफे के प्रस्ताव का खंडन किया। उन्होंने कहा लोग अपनी बात कहते सकते हैं, लेकिन माकपा में निर्णय पार्टी स्तर पर ही लिया जाएगा।
संस्कृति प्रेमी पूर्व मुख्यमंत्री बुद्धदेव भट्टाचार्य बतौर पद पर रहते अपने को सांगठनिक गतिविधियों और काम काज में कब तक जोड़े रखेंगे, इस पर राय माकपा मुख्यालय के आला नेताओं को ही संदेह है।
राजनीतिक जानकार मानते हैं कि लोकसभा चुनाव प्रचार के दौरान बुद्धदेव माकपा के राज्य में बेहतर स्थिति रहने की उम्मीद पाले हुए थे। लेकिन, बुरी तरह पराजय ने उन्हें निराश कर दिया है। खास कर बुद्धदेव इस बात से भी क्षुब्ध हैं कि माकपा के वोट प्रतिशत में गुणात्मक तौर पर कमी आ गई है। राजनीतिक विश्लेषकों का मानना है कि बुद्धदेव के पद छोड़ने पर माकपा के राज्य सचिव विमान बोस भी पद पर नहीं बने रह पाएंगे। बताते हैं कि विमान ने भी लोकसभा चुनाव में शर्मनाक पराजय के बाद पद छोड़ने की पेशकश की थी, लेकिन करात ने उन्हें भी मना कर दिया था।
वहीं अगले हफ्ते से राज्य में माकपा की विभिन्न जिला कमेटियों की बैठक के साथ ही 7 और 8 जून को नई दिल्ली में केंद्रीय कमेटी की बैठक में विरोध और मतभेद के स्वर अभी और उभर सकते हैं। कुछ लोगों का मानना है कि लोकसभा चुनाव में बुरी तरह पराजित होने के बाद माकपा के लिए अब 2016 का राज्य विधानसभा चुनाव अंतिम लाइफलाइन जैसा हो सकता है। इसमे न उबर पाने पर बंगाल में उसके राजनीतिक अस्तिव पर ही प्रश्न चिन्ह लग सकता है।
কারাটের চাপ বাড়ল, সরতে চান সীতারামও
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি, ৭ জুন, ২০১৪, ০৩:৩৭:১৮
নেতা বদলের দাবি উঠেছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে রাজ্য কমিটির বৈঠকেই। বিমান বসু থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কেউই সমালোচনার হাত থেকে রেহাই পাননি। এ বার সীতারাম ইয়েচুরিও পলিটব্যুরোর বৈঠকে জানিয়ে দিলেন, তিনি লোকসভা নির্বাচনের খারাপ ফলের দায় নিয়ে পলিটব্যুরো থেকে সরে দাঁড়াতে তৈরি। দলের হাল শোধরাতে তিনি পদ ছাড়তে রাজি আছেন।
দলের নিয়ম মেনে এমনিতেই প্রকাশ কারাটকে আগামী বছর দলের সাধারণ সম্পাদকের পদ ছাড়তে হবে। কিন্তু ভোটে বিপর্যয়ের পরপরই তিনি যে ভাবে ব্যক্তিগত ভাবে দায় নেওয়ার বিরুদ্ধে বলে এসেছেন, সেই অবস্থানকে আজ ফের প্রশ্নের মুখে ফেলে দিল সীতারামের ঘোষণা।
লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরেই রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু জানিয়েছিলেন, তিনি হারের দায় নিয়ে সরে দাঁড়াতে রাজি আছেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যও জানিয়ে দেন, তিনি আর পলিটব্যুরো বা কেন্দ্রীয় কমিটির কোনও পদে থাকতে চান না। এত দিন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফেও তাঁদের নিরস্ত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এখনও ভোটে হারের কারণই বিশ্লেষণ হয়নি। আগে জেলা ভিত্তিক রিপোর্ট আসুক। রাজ্য কমিটি থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি পর্যন্ত সব স্তরে ভোটের ফলাফল নিয়ে আলোচনা হোক। তার পরে দায় নেওয়ার প্রশ্ন।
সেই ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণেই আজ থেকে পলিটব্যুরো ও কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক শুরু হয়েছে দিল্লিতে। চলবে তিন দিন। আলোচসূচিতে না থাকায় ইয়েচুরির পলিটব্যুরো ছাড়ার ইচ্ছা নিয়ে এ দিন কোনও আলোচনা হয়নি। দিনের শেষে কারাটও জানিয়ে দেন, আজকের বৈঠকে নেতৃত্ব বদল নিয়ে কোনও কথা হয়নি।" তবে ইয়েচুরিও শেষ পর্যন্ত বিমান-বুদ্ধদেবের পথ ধরায় যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছেন কারাট। বাকি সবাই পদ ছাড়তে রাজি আছি বললেও কারাটের পক্ষে এখন আর সে কথা বলা সম্ভব নয়।
কারণ ভোটের ফল প্রকাশের পরেই কারাট বলেছিলেন, "সিপিএমে সমষ্টিগত ভাবে সব সিদ্ধান্ত হয়। কেউ ব্যক্তিগত ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নেয় না। তাই নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির উপর ভোটের ফলাফলের দায় বর্তায় না।" পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম নেতাদের এতে খুশি হওয়ারই কারণ ছিল। কারণ সমষ্টিগত সিদ্ধান্তের কথা বলে কারাট এক দিকে যেমন নিজে দায় নেননি, তেমনই আলিমুদ্দিনের নেতাদের ঘাড়েও দায় চাপাননি।
সিপিএম নেতারা মনে করছেন, কারাটের সেই অবস্থানই এখন 'ব্যুমেরাং' হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলে বার্তা যাচ্ছে, বিমান, বুদ্ধদেব, সীতারামরা পার্টির নিচুতলার দাবি মেনে পদ ছাড়তে রাজি। অথচ কারাট গদি আঁকড়ে ধরে থাকতে চাইছেন।
কারাটের ঘনিষ্ঠ-মহল থেকে অবশ্য বলা হচ্ছে, তিনি মোটেই গদি আঁকড়ে থাকতে চান না। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী টানা তিন বারের বেশি শীর্ষ পদে থাকতেও পারবেন না তিনি। আগামী বছরের পার্টি কংগ্রেসেই তাঁকে সরতে হবে।
তবে চাপটা অন্য। সিপিএম সূত্রে বলা হচ্ছে, কারাট ও তাঁর অনুগামীরা সাধারণ সম্পাদক পদে এস আর পিল্লাইকে নিয়ে আসতে চাইছেন। কারাট-বিরোধী শিবিরের মত, পিল্লাই সাধারণ সম্পাদক পদে বসলেও দলের নিয়ন্ত্রণ কার্যত কারাটের হাতেই থাকবে। তাই কারাট-বিরোধী শিবির যতটা না কারাটকে সরাতে উদ্যোগী, তার থেকেও বেশি আগ্রহী পিল্লাইকে আটকাতে। কারাট-বিরোধী শিবিরের মতে, কারাট ও তাঁর অনুগামীদের ভুল রাজনৈতিক লাইনের ফলেই দলের ভরাডুবি হয়েছে। নতুন চিন্তাভাবনা, ও রাজনৈতিক কৌশলেরও প্রয়োজন। নেতৃত্বের ভরকেন্দ্র বদল হলেই তা সম্ভব। ভরকেন্দ্র বদলের এই দাবি আলিমুদ্দিনেই শুনে এসেছিলেন কারাট। রাজ্য কমিটির বৈঠকে ইয়েচুরি, মানিক সরকার ও তাঁর সামনেই বুদ্ধদেব জানিয়েছিলেন, দলের ভিতরে-বাইরে এত লোক যখন মনে করছেন নেতৃত্বে মুখ বদল না হওয়াটাই হারের কারণ, তখন তিনি আর বোঝা হয়ে থাকতে চান না। কারাট তাই নিচুতলার ক্ষোভকেও অস্বীকার করতে পারছেন না। আগামী বছর পার্টি কংগ্রেস হওয়ার কথা। কিন্তু পার্টি কংগ্রেসের সম্মেলন দুর্গাপুজোর আগেই সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু করে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। লক্ষ্য হল, দলের কর্মীদের ক্ষোভ নিরস্ত করতে এই বার্তা দেওয়া যে, তাঁদের দাবি মেনে নেতৃত্ব বদলের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে।
তবে নিচুতলায় যে দাবিই উঠুক, সিপিএমের কোনও নেতাই অবশ্য এখনই নেতৃত্বে মুখ বদলের সম্ভাবনা দেখছেন না। সকলেই একমত, এই ভাবে সিপিএমে নেতা বদল হয় না। হলে হবে আগামী বছরের পার্টি কংগ্রেসে দলের সব স্তরে আলোচনা করে। পলিটব্যুরোর এক নেতার বক্তব্য, যাঁরা পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন, তাঁরা নেহাৎই আবেগের বশে এ কথা বলছেন। শুধু কয়েক জন নেতা সরে দাঁড়ালেই পার্টি ঘুরে দাঁড়াবে, এমনও নয়। কঠিন অবস্থার মধ্যে রয়েছে দল। ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ের মধ্যে দিয়েই নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে। রাতারাতি নেতা বদলে লাভ হবে না।
সিপিএম ছেড়ে দলে দলে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে সংখ্যালঘুরাওJune 5, 2014, 10:18 pm | তৌসিফ মণ্ডল, স্টিং নিউজ করেসপনডেন্ট | Print| 29 views
রাজ্যে বিজেপির পদ্ম ফুলের শিকড় যেন একটু একটু করে বাড়ছে আর রাজ্য রাজনীতিতে নিজেদের অন্যতম শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে কোন রকম কসুর ছাড়ছেন না বিজেপি নেতৃত্ব। পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যন্ত এলাকাতে দলীয় সমর্থকদের পাশে থাকতে পৌঁছে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় কমিটির তাবড় নেতারা। ঠিক তখনই উল্টো ছবি দেখা যাচ্ছে বামপন্থী সিপিএম নেতাদের ক্ষেত্রে। এমনিতেই লোকসাভা ভোটে বিপর্যয়ের পর রাজ্যের নেতৃত্ব নিয়ে চলছে দলীয় কোন্দল। ভোটের সময় হাড়য়ায় দলীয় কর্মী সমর্থকরা উপর আক্রমণ হলে চটজলদি দেখা যায়নি নেতাদের, তা নিয়ে সমালচিত হন উপর মহলের নেতারা।
সম্প্রতি সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত নেতা ঠোঁট কাটা বলে পরিচিত রেজ্জাক মোল্লা বলেন, 'এসি ঘরে বসে রাজনীতি হয়না, গায়ে ঘামের গন্ধ না থাকলে গরিব মানুষের নেতা হাওয়া যায়না'। তিনি আর বলেন, কর্মী সমর্থকরা মার খাচ্ছে আর ওরা কলকাতায় বসে সাংবাদিক সস্মেলন করছেন, এরা বামপন্থী থেকে একেবারে সরে এসেছে। যত দিন যাচ্ছে সিপিএমের কাস্তে যেন ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ আগেই মুখ ফিরিয়েছে তা ভোটের পরই স্বীকার করে সিপিএম নেতৃত্ব। কিন্তু ভোটের পর যারা ছিল তারাও আস্তে আস্তে দল ছাড়ছেন। সিপিএমের নিচু তলার কর্মী সমর্থকরা আর আস্থা রাখতে পারছে না দলের উপর ও দলের উপর তলার নেতাদের উপর।
রাজ্যেরে বিভিন্ন প্রান্তে তাই দল ত্যাগের হিড়িক হয় শাসক দল নয়তো রাজ্যের উদীয়মান শক্তি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে সিপিএমের নিচু তলার কর্মী সমর্থকরা। লোকসভা ভোটের পর থেকেই নদীয়ায় নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছিল বিজেপি, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছিল সাধারণ মানুষ ও অন্য দলের কর্মীরা। এদিন নদীয়ার করিমপুর ব্লকের পিপুলবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পাকশি গ্রামের প্রায় ১২০০ সিপিএম কর্মী সমর্থকরা বিজেপিতে যোগ দিলেন। রাজ্যের শাসক দলের অত্যাচার থেকে বাঁচতেই বাংলাদেশ সীমান্ত লাগয়া কাঁটাতার ঘেঁষা এই গ্রামের সিপিএম কর্মী সমর্থকরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বলে জানান সদ্য দলত্যাগীরা। এদের অধিকাংশই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।
গ্রামের আনিসুর রহমান, জয়নাল সেখ, লিটন সেখ, রাজ্জাক মোল্লা,তসলিমা বিবি,ইয়াসমিন বিবি, বিপ্লব মোল্লারা এক জোটে জানান, ''গ্রামের প্রায় সকলেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। আমরা দীর্ঘ দিন ধরে সিপিএম সমর্থক ছিলাম কিন্তু রাজ্যে নতুন সরকার আসার পর থেকেই শাসক দলের লোকজন আমাদের বাড়িঘর ভেঙে দিচ্ছে। থানায় গেলে পুলিশ অভিযোগ নিচ্ছেনা। আমাদের আগেই তৃণমূল নেতারা থানায় গিয়ে বসে থাকছে। আমাদের ছেলেদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে কিন্তু নিরাপত্তা দেওয়ার কেউ নেই। আর সিপিএম নামে দলটার কোন অস্তিত্ব আছে কিনা সেটাই বুঝতে পারছিনা। তাই আমরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছি''।
বিজেপিতে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ থাকলেও মূলত তৃনমূলের বিরধিতা মনে রেখেই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন সংখ্যালঘু মানুষরা। অনেকে মনে করছেন রাজ্যে বিরধিতা করতে গেল সিপিএম করে লাভ নেয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলবদলের এই অনুষ্টানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি কল্যাণ নন্দি, করিমপুর ১ ব্লকের সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, নদীয়া জেলা সহ সভানেত্রী অজিতা রায়, বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মহম্মদ মারফত আলী শেখ। জেলা সভাপতি কল্যাণ বাবু বলেন, " কিছু রাজনৈতিক দল নিজেদের স্বার্থে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল বলে। তাদের সেই অপপ্রচারকে ভুল তা আজ মানুষ বুঝছে তাই সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ দলে দলে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন"।
করিমপুরের সিপিএম বিধায়ক সমরেন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন,"পাকশিতে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার খবর আমার জানা নেই। তবে বেশ কিছু এলাকায় শাসক দলের অত্যাচারে বাধ্য হয়ে কেউ কেউ বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন"।
পদ্ম ফুটছে সিপিএমের জমিতে
রাজ্যে এ-ও এক পরিবর্তন! ঘটনা ১: শুক্রবার উত্তর ২৪ পরগনার দুই কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াল বিরোধী ছাত্র গোষ্ঠী৷ এসএফআই নয়, বিজেপির ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ! ঘটনা ২: এদিনই জেলার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বর্ধমানের জেলাশাসককে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে ব্যাপক জমায়েত করেছে বিজেপি৷ ঘটনা ৩: সিপিএম-সহ বাম দলগুলি থেকে দলে দলে কর্মী-সমর্থকদের নরেন্দ্র মোদীর দলে নাম লেখানোর পালা তো জারি আছেই৷ পার্টি অফিস আক্রান্ত হলেও কোনও কর্মসূচি নিচ্ছে না দল, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবারই দল ছেড়েছেন নদিয়ার বেশ কিছু সিপিএম সদস্য৷ এ বার গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের সভাপতি, কলকাতা পুরসভায় কংগ্রেসের কাউন্সিলর প্রদীপ ঘোষ৷ আবার কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক দেবকীনন্দন পোদ্দারের ছেলে মনোজ পোদ্দার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন৷ আর আপ? পশ্চিমবঙ্গে আপ-এর পুরো শাখাটাই শুক্রবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছে! রাজ্য-রাজনীতিতে পরিবর্তনের নতুন ট্রেন্ড এটাই!
দু'দিন আগে পর্যন্ত যাদের অস্তিত্ব দূরবিন দিয়ে খুঁজতে হত, উপরের তিনটে ঘটনাই এখন রাজ্যে তাদের রমরমা প্রমাণ করছে৷ বিশেষ করে, রাজ্যে দিশেহারা ও ভরাডুবির মুখোমুখি সিপিএম এতটাই হতোদ্যম যে, তাদের তরফে আন্দোলনের সিকিভাগও দেখা যাচ্ছে না৷ সেই সুযোগটাই কাজে লাগিয়ে সিপিএমের ছেড়ে যাওয়া ফাঁকা মাঠ দখলে পুরোদমে কাজে নেমে পড়েছে বিজেপি৷ বামেদের এই শীতঘুমের সুযোগ নিয়ে ঘর গোছাতে তত্পর হয়ে উঠেছেন রাহুল সিনহা, তথাগত রায়রা৷ আজ শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্য বিজেপির দু'দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক৷ বৈঠকে লোকসভা ভোটে দলের সব প্রার্থীকেই হাজির থাকতে বলা হয়েছে৷
বাম শিবিরেরও দখল অনেকাংশে চলে যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের হাতে৷ শুধু ক্ষমতালোভী নেতাই নন, বাম শিবিরের অনেক অসহায় এবং সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরাও বিজেপিতে ভিড়ছেন৷ রাজ্যের এক বাম নেতার কথায়, এটা অনেকটা ঝড়ের মুখে কুঁড়েঘর ছেড়ে পাকা বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার মতো ঘটনা৷ তিনি বলছেন, 'আমরা না করছি আন্দোলন, না দিতে পারছি কর্মীদের নিরাপত্তা৷ এই পরিস্থিতিতে বিজেপির শক্তিবৃদ্ধি অত্যন্ত স্বাভাবিক ঘটনা৷
একসুর দলত্যাগী বাম কর্মী-সমর্থকদেরও৷ যেমন, বৃহস্পতিবার বিজেপিতে যোগ দেওয়া নদিয়ার চাকদহের সিরিন্ডা (১) গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য পার্থ সরকার বলছেন, 'আমাদের নিরাপত্তা তো দূরের কথা, পার্টি অফিস আক্রান্ত হলেও কোনও কর্মসূচি নিচ্ছে না দল৷ সিপিএমে কোনও নেতা নেই৷ তাই দল ছেড়েছি৷' এ জেলারই সিপিএমের শিক্ষক সংগঠনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন কানুরঞ্জন ঘোষাল৷ তিনিও লাল ঝান্ডা ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন৷ তাঁর কথায়, 'সিপিএম প্রতিবাদের ভাষা ভুলে গেছে৷ পার্টি এখন প্রতিরোধ করার কথাও বলে না৷ এমন পরিস্থিতিতে তো মানুষ প্রধান প্রতিপক্ষ শিবিরেই থাকতে পছন্দ করে৷'
আর এক বাম দল আরএসপির শক্ত ঘাঁটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ঝড়খালিতেও বইছে গেরুয়া হাওয়া৷ ঝড়খালি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দিলীপ মণ্ডল এবং সদস্য পার্বতী মণ্ডলও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, মোদী মানুষের ভালো করবেন এই প্রত্যাশায়৷ পার্বতীদেবীর কথায়, 'নরেন্দ্র মোদীকে দেখে মনে হয়েছে, এই অস্থির অবস্থা থেকে পশ্চিমবঙ্গকে তিনি মুক্ত করতে পারবেন৷' বিজেপির তত্পরতার প্রমাণও মিলছে পদে পদে৷ এদিন বারাসত এবং গোবরডাঙায় রাজ্যের শাসকদলের ছাত্র সংগঠনকে কেন্দ্রের শাসকদলের ছাত্র সংগঠন যে ভাবে জবাব দিয়েছে, তা প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে এসএফআইয়ের অস্তিত্বকে৷ বাম শিবিরে ভাঙন এবং বিজেপির উত্থানের এই চিত্র স্পষ্ট রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত হালের রিপোর্টেও৷ সেখানে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষের পরিচিত রিপোর্ট বদলে গিয়েছে৷ শুধু সন্দেশখালিই নয়, পুলিশ রিপোর্ট বলছে, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ সমস্ত থানা এলাকাতেই রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদলের বিরোধ-গোলমাল প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে৷ কারণ, নারী নির্যাতন থেকে কলেজে ভর্তিতে অনলাইন ব্যবস্থা চালুর দাবি, সব ইস্যুতেই বিজেপি এখন পথের দখল নিয়েছে৷
গত শতকের নয়ের দশকের গোড়ায় রামমন্দির নির্মাণ আন্দোলনকে সামনে রেখে এ রাজ্যে বিজেপির উত্থান হয়েছিল৷ কিন্ত্ত সে বারের সঙ্গে এবারের দু'টি উল্লেখযোগ্য ফারাক লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ তখন বিজেপির উত্থানের খেসারত দিতে হয়েছিল মূলত কংগ্রেসকে৷ তা ছাড়া, তখনকার গেরুয়া-ঢেউ আজকের মতো এত ব্যাপক ছিল না৷ এই সুযোগে দলে বেনোজল ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করছেন বিজেপির একাংশ৷ তবে রাহুল সিন্হা সেই সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়ে বলছেন, 'অন্য দল থেকে বিজেপিতে আসছে মানেই বেনোজল ঢুকছে তা নয়৷ কারণ, যাঁরা আমাদের দলে আসছেন, তাঁরা পুরোনো দলের দক্ষ ও স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতা-কর্মী৷ তাঁদের পরীক্ষা দেওয়ার দরকার নেই৷'
বিজেপির শক্তিবৃদ্ধির কথা মেনে নিচ্ছে সিপিএমও৷ দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব বলছেন, 'যার যে কোনও দলে যোগ দেওয়ার স্বাধীনতা আছে৷ বিজেপি দরজা খুলে দিয়েছে তাই অনেকে যাচ্ছে৷ তবে আমাদের দল থেকে কেউ গিয়েছে বলে শুনিনি৷' রবীনবাবু এ কথা বললেও এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে রামচন্দ্র নগর এলাকায় সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুজন চক্রবর্তীর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল গিয়েছিলেন বিজেপিতে চলে যাওয়া কর্মীদের ঘরে ফেরার আর্জি জানাতে৷ তাতে কাজ কতটা হয়েছে, তা জানা যায়নি এখনও৷ কারণ, তৃণমূলের হামলায় আক্রান্ত ওই গ্রামে গিয়ে এদিন নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে বিজেপির প্রতিনিধি দলও৷ রাজ্যে এখন পরিবর্তন এটাই!
উপরতলায় না হলেও নিচুতলায় কোপ পড়তে চলেছে সিপিএমে
এই সময়: নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর নেতৃত্ব বদল নিয়ে তুমুল বিতর্ক সত্ত্বেও সিপিএমের উপরতলায় পরিবর্তনের সম্ভাবনা আপাতত খারিজ হয়েছে৷ কিন্ত্ত কোপ পড়তে চলেছে নিচুতলায়৷ শাখা থেকে জেলা স্তরের নেতাদের একাংশ 'দলবিরোধী' কাজের অভিযোগে শাস্তি পেতে চলেছেন৷ দলের রাজ্য কমিটির সর্বশেষ বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ কিন্ত্ত প্রশ্ন উঠছে, বার বার শুধু নিচুতলাতেই কোপ কেন! দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের অবশ্য দাবি, লোকসভা ভোটে সিপিএমের নজিরবিহীন বিপর্যয়ের পিছনে বিজেপির উত্থান, শাসকদলের সন্ত্রাসের মতো বিষয় ছাড়াও নিচুতলার নেতৃত্বের একাংশের দলবিরোধী কার্যকলাপও বড় ভুমিকা নিয়েছিল৷ নেতাদের এই অংশের বিরুদ্ধে ভোটে অন্তর্ঘাতের অভিযোগও জমা পড়েছে আলিমুদ্দিনে৷ সেই অংশকে চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব৷
লোকসভা ভোটে ভরাডুবির পর দলের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য নেতৃত্বের দিকেই অবশ্য বিশেষ ভাবে আঙুল তোলা হয়েছে৷ সে কাজে এমনকি সামিল হয়েছিলেন মইনুল হাসান, শমীক লাহিড়ি, তড়িত্ তোপদার, মানব মুখোপাধ্যায়, অমল হালদারের মতো রাজ্য কমিটির প্রথম সারির নেতারাও৷ যদিও পাল্টা মত পেশ করেন অঞ্জু কর, নিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, অসীম দাশগুপ্তরা৷ তবে প্রকাশ কারাট, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসুদের পদ থেকে সরানোর দাবিতে রাজ্য কমিটির সদস্যদের একটা বড় অংশ সরব হওয়ায় পরিস্থিতির গুরুত্ব উপলব্ধি করেছেন শীর্ষ নেতৃত্ব৷ তাই রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু ও সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটকে এই বিষয়ে 'জবাব' দিতে হয়েছে৷ দু'জনেরই বক্তব্য, তাঁরা দলের নেতা-কর্মীদের মনোভাব বুঝতে পারছেন৷ কিন্ত্ত কমিউনিস্ট পার্টিতে হঠাত্ করে কোনও সিদ্ধান্ত হয় না৷ দলকে নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে চলতে হয়৷ কেন্দ্রীয় কমিটির আসন্ন বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন কারাট৷
রাজ্য কমিটির দু'দিনের বৈঠকে তড়িত্ তোপদারের মতো কয়েক জন শীর্ষ নেতৃত্বে রদবদলের প্রসঙ্গে এ কথাও বলেন, নেতা পরিবর্তনের সময় শুধু যেন নিচুতলায় কোপ না পড়ে৷ কিন্ত্ত ভোটের ফল পর্যালোচনা করতে গিয়ে বিভিন্ন জেলা কমিটির তরফেই দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা কবুল করে নিচুতলার একাংশকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে৷ শীর্ষ নেতৃত্ব বারে বারে সংগঠন সুদৃঢ় করার কথা বললেও তা যে বাস্তবে হচ্ছে না, সেটা কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে কয়েকটি জেলা কমিটির রিপোর্টে৷ সেখানে বলা হয়েছে, নিচুতলার বিভিন্ন স্তরের বেশ কয়েক জন নেতা এ বার নির্বাচনে যথাযথ ভূমিকা পালন করেননি৷ একাংশের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতে জড়িত থাকার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে৷ কেউ কেউ দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলেননি৷ এঁদের মধ্যে জেলা কমিটির নেতাও আছেন৷ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পার্টির তিন জন যেমন ভোট পর্যন্ত দেননি৷ কয়েক জন জেলা সম্পাদকও ভোটে সক্রিয় ভূমিকা নিতে 'পারেননি'৷ রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, 'অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে৷ এর পর প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷'
কিন্ত্ত উপরের মহল রেহাই পেলেও শুধু নিচুতলায় কেন কোপ পড়ছে? ওই নেতার বক্তব্য, 'নিচুতলার নেতা-সদস্য বলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা নয়৷ আসলে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হবে তাঁরাই শাস্তি পাবেন৷ শীর্ষ কোনও নেতার বিরুদ্ধে এখনও দলবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ অন্তত ওঠেনি৷' দলবিরোধিতা প্রসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে তদন্ত কমিটির বিষয়টিও ওঠে রাজ্য কমিটির সভায়৷ প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই সেখানে সভা করতে গিয়ে জেলা পার্টির সদস্য-কর্মীদের একাংশের হাতে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব৷ ওই ঘটনার তদন্তের জন্য জেলা কমিটিকেই নির্দেশ দেয় রাজ্য কমিটি৷ কিন্ত্ত জেলা কমিটি তদন্তে টালবাহানা করায় এ বার তদন্তের ভারও নিজেদের হাতে নিয়েছে রাজ্য কমিটি৷ রবীন দেব, তাপস সিন্হারা আগামী এক মাসের মধ্যেই রিপোর্ট দেবেন৷
পদ ছাড়তে বার্তা বুদ্ধ-বিমানকে, বিপাকে কারাটও
কলকাতা: নেতৃত্ব বদলের যে দাবিতে এতদিন সোচ্চার ছিলেন নিচুতলার কর্মীরা, এবার দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট ও ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের উপস্থিতিতে সেই দাবি উঠল সিপিএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে৷ নির্বাচনী বিপর্যয়ের জন্য নেতাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানালেন রাজ্য কমিটির চার সদস্য৷ সরে যাওয়ার স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হলো, প্রকাশ কারাত, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং বিমান বসুদের৷
একদল সদস্য যখন নেতৃত্ব বদলের পক্ষে সওয়াল করলেন, তখন হুড়োহুড়ি করে নেতৃত্ব বদল না করে নেতৃত্বর কর্মপদ্ধতি উন্নত করার পক্ষে পালটা সওয়াল করলেন রাজ্য কমিটির তিন হেভিওয়েট সদস্যও৷ রাজ্য কমিটির সভায় নেতৃত্ব বদল নিয়ে এই নজিরবিহীন মতপার্থক্য প্রকাশ্যে এলেও দলের রাজনৈতিক লাইনের ব্যর্থতা নিয়ে কমবেশি সহমত সকলেই৷ নরেন্দ্র মোদীকে ঠেকানোর জন্য তৃতীয় বিকল্প সরকার গঠনের স্লোগান জনমানসে কোনও দাগ কাটেনি তা এই বিকল্পর প্রধান হোতা প্রকাশ কারাটের সামনেই খোলাখুলি বললেন রাজ্য কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য৷ বিমান বসুর পেশ করা লোকসভা নির্বাচনের খসড়া পর্যালোচনা রিপোর্টেও উল্লেখিত হল তা৷ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের দু-দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক৷ দলের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট ছাড়াও মানিক সরকার, সীতারাম ইয়েচুরি সহ পলিটব্যুরোর ছয় সদস্য উপস্থিত রয়েছেন রাজ্য কমিটির এই বৈঠকে৷
এবার লোকসভা ভোটে সিপিএম যে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে পার্টির জন্মের ৫০ বছরে তার নজির নেই৷ আবার নির্বাচনী বিপর্যয়ের কারণে রাজ্য কমিটির বৈঠকে নেতৃত্ব বদলের দাবি তোলার নজিরও খুব একটা নেই৷ কারণ, কমিউনিস্ট পার্টি যৌথ নেতৃত্বে বিশ্বাস করে৷ বস্ত্তত কমিউনিস্ট পার্টিতে মতাদর্শগত বিরোধেই তেমন দাবি উঠে থাকে৷ যেমন, ইন্দিরা গান্ধী ও জরুরি অবস্থাকে সমর্থন সিপিআই এসএ ডাঙ্গেকে বহিষ্কার করেছিল৷ ১৯৭৭-এর নির্বাচনী বিপর্যয়ের পর এই সিদ্ধান্ত হয়ে থাকলেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল মতাদর্শগত কারণেই৷ কিন্ত্ত এবার নির্বাচনে ভরাডুবির পর থেকেই নেতৃত্ব বদলের দাবি এতটাই জোরালো হয়েছে যে ভোট পরবর্তী পলিটব্যুরোর বৈঠকে বিমান বসু নৈতিক দায় নিয়ে সরে যাওয়ার প্রস্তাব দেন৷ তবে তা খারিজ করে পলিটব্যুরো৷
লোকসভা নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিপর্যয়ের জন্য নেতৃত্ব বদলের দাবিতে কয়েক দিন আগে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএম রাজ্য দপ্তর মুজফফর আহমেদ ভবন থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ করেছিলেন নিচুতলার একদল নেতা কর্মী৷ নির্বাচনী বিপর্যয়ের দায় নিয়ে অবিলম্বে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সরে যাওয়া উচিত বলে প্রকাশ্যে সোচ্চার হয়েছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিট-মল্লিকবাজার লোকাল কমিটির সদস্যরা৷ নিচুতলার এই নেতা-কর্মীদের এই ক্ষোভের আঁচ এবার রাজ্য কমিটির সভায় বসে টের পেলেন প্রকাশ কারাট, বিমান বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মতো সিপিএমের শীর্ষ নেতারা৷
রাজ্য কমিটির সভার প্রথম দিনেই বর্ধমানের জেলা সম্পাদক অমল হালদার, উত্তরবঙ্গের হেভিওয়েট নেতা অশোক ভট্টাচার্য, প্রাক্তন দুই সাংসদ শমীক লাহিড়ি ও মইনুল হাসান খোলাখুলি নেতৃত্ব বদলের পক্ষে সওয়াল করেন৷ তাত্পর্যপূর্ণ বিষয় অমল হালদার ছাড়া কোনো জেলা সম্পাদক কিংবা জেলাওয়াড়ি রিপোটিংর্ যে নেতারা করেছে তাদের কেউ নেতৃত্ব বদলের পক্ষে সওয়াল করেননি৷ জেলা সম্পাদকের দায়িত্বে না থাকা নেতারা মূলত সরব হয়েছেন নেতৃত্ব বদলের দাবিতে৷ যার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে রাজ্য কমিটির এক সদস্যর যুক্তি, 'নেতৃত্ব বদলের পক্ষে জেলা সম্পাদকরা সওয়াল করলে নিজেদের জেলায় তাদেরও একই দাবির মুখে পড়তে হবে৷ তাই কৌশলগত কারণে জেলা সম্পাদকের পদে যে নেতারা নেই তারা নেতৃত্ব বদলের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷'
এ দিনের সভায় এই পরিবর্তনের দাবিতে প্রথম সোচ্চার হন অমলবাবু৷ বর্ধমান জেলায় ফল খারাপ হওয়ার জন্য শাসক দলের রিগিংকে মুখ্যত দায়ী করার পাশাপাশি বিজেপি পক্ষে জনসমর্থনের চোরাস্রোত যে এতটা মারাত্মক ভাবে বইছে তা যে বোঝা যায়নি বলে মেনে নিয়েছেন তিনি৷ শাসক দলের রিগিং প্রতিরোধ করার কথা ভাবা হলেও তা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত করা যায়নি বলেও মেনে নেন তিনি৷ জেলা সম্পাদক হিসেবে নিজের এই ব্যর্থতার কথা মেনে নিয়ে অমলবাবু বলেন, 'এই বিপর্যয়ের জন্য প্রয়োজনে যদি আমাদের সরে যেতে হয় তা হলে তা করা বাঞ্ছনীয়৷' এখানেই থেমে না থেকে তিনি সরাসরি বিমান বসুকে আক্রমণ করেছেন৷ লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের দিন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সাংবাদিক বৈঠক করতে গিয়ে অপ্রিয় প্রশ্নের মুখে বিমানবাবু যে ভাবে উত্তেজিত হয়ে সংবাদমাধ্যমকে আক্রমণ করেছিলেন তা দলের ভাবমূর্তিকে আরও নষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি৷
নিজে থেকে জেলা সম্পাদকের পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে আদতে বিমান বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নেতৃত্ব থেকে সরে যাওয়ার জন্য কৌশলী চাপ তৈরি করেছেন বর্ধমানের এই দাপুটে নেতা৷ অমল হালদারের পথে হেঁটে পরপর আরও খোলাখুলি নেতৃত্ব বদলের দাবি করেন অশোক ভট্টাচার্য, মইনুল হাসান, শমীক ভট্টাচার্য৷ ঘুরিয়ে একই বার্তা দিয়েছেন মানব মুখোপাধ্যায়৷ এদের মধ্যে শমীক লাহিড়ি ও মইনুল হাসান দলের সাংগঠনিক সম্মেলন এগিয়ে এনে সর্বস্তরে র্যাংক অ্যান্ড ফাইলকে বদল করার কথা বলেন৷ একদা, একের পর এক রাজ্য কমিটির সভায় এই নেতৃত্ব বদলের পক্ষেসওয়াল করতেন রেজ্জাক মোল্লা৷ পরবর্তী সময়ে লক্ষ্মণ শেঠের মতো নেতারা রেজ্জাক মোল্লার সঙ্গে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব বদলের পক্ষে করা শুরু করেন তিনি৷ যদিও তাদের সেই দাবিতে গ্রাহ্য করা হয়নি উল্টে বহিষ্কৃত রেজ্জাক ও লক্ষ্মণ শেঠ দু-জনে বহিষ্কৃত হয়েছেন৷ তাদের সেই দাবি এবার রাজ্য কমিটির সভায় ওঠায় রেজ্জাক মোল্লা এ দিন বলেন, 'আমি যখন নেতৃত্ব বদলের কথা বলতাম তখন অমলরা তাকে গ্রাহ্য করত না, নেতারা অবজ্ঞা করতেন৷ এখন ওরা ঠেকে শিখেছে৷ এর ফলে একটা ধাক্কা অন্তত দেওয়া যাবে৷' যদিও তাড়াহুড়ো করে নেতৃত্ব বদল করলে আদতে কোনও ফল হবে না বলে পালটা যুক্তি দিয়েছেন অসীম দাশগুপ্ত, বাসুদেব আচারিয়া, বিপ্লব মজুমদারের মতো কয়েক জন নেতা৷ এদের যুক্তি, নেতৃত্ব বদল করলে অবস্থার পরিবর্তন হবে এর কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই৷ বরং নেতৃত্বর কর্মতত্পরতা আরও বাড়ানোর পক্ষে তারা৷
নেতৃত্ব বদলের দাবির পাশে ভোটের মুখে জোড়াতালি নিয়ে তৃতীয় বিকল্প গঠনের রাজনৈতিক লাইন সম্পূর্ণ ভুল বলে সাফ জানিয়েছেন মানব মুখোপাধ্যায়৷ পরমানু চুক্তির মতো দুরূহ বিষয়ে সমর্থন তুলে নিয়ে তা আমজনতাকে বোঝাতে যেমন বেগ পেতে হয়েছিল তেমনই নির্বাচনী আঁতাত যে দলগুলির মধ্যে হয়নি তাদের নিয়ে তৃতীয় বিকল্প সরকার গড়ার ডাককে মানুষ কোনও গুরুত্ব দেয়নি বলে মন্তব্য করেছেন তিনি৷ একই ভাবে বিজেপি পক্ষে যে সমর্থনের চোরাস্রোত বইছে তা পুরোপুরি আঁচ করা যায়নি বলে একাধিক নেতা কবুল করেছেন৷ এই সমালোচনার মুখে আজ মঙ্গলবার রাজ্য কমিটির সভায় জবাবি ভাষণ দেবেন বিমান বসু, প্রকাশ কারাট ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ নেতৃত্ব বদলের দাবির মুখে নেতৃত্ব কী বলেন সেই দিকে এখন তাকিয়ে রয়েছে সমগ্র সিপিএম৷- ওয়েবসাইট।
- See more at: http://news.zoombangla.com/International/2014-06-03-06-35-27-5-9760#sthash.ObZEc3qZ.dpuf
জেএনইউ-তে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ইয়েচুরি-বৃন্দা ময়দানে
Sep 12, 2013, 10.40AM IST
প্রসেনজিত্ বেরা
আঁতুড়েই কোণঠাসা!
ধাক্কা সামলাতে ময়দানে সীতারাম ইয়েচুরি স্বয়ং৷ সঙ্গী বৃন্দা কারাট, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, শিবদাসনরা৷
'বিদ্রোহী'দের দাপটে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্তৃত্ব হাতছাড়া হয়েছে এসএফআই-র৷ অথচ এ চত্বরেই ছাত্র রাজনীতি করে উত্থান ইয়েচুরির৷ প্রসেনজিত্ বোসেরও৷ এই অনুজটিকে সামাল দিতেই জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের নির্বাচনে ফের সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ সীতারাম ইয়েচুরি৷ 'মেন্টরে'র বিরুদ্ধে কোমর বাঁধছেন প্রসেনজিত্ও৷
আগামিকাল, শুক্রবার জেএনইউ-র ছাত্র সংসদ নির্বাচন৷ বিদ্রোহী নেতাদের দাপটে গতবার প্রায় ধুয়েমুছে গিয়েছিল এসএফআই৷ এবার সাফল্য পেতে মরিয়া সিপিএম৷ ইতিমধ্যেই সীতারাম নিজে ক্যাম্পাসে গিয়ে এসএফআই সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলেছেন, প্রচার করেছেন৷ তিনি প্রচার করে যাওয়ার পর ক্যাম্পাসে যান বৃন্দা কারাট৷ পাল্টা লড়াইয়ে তৈরি সিপিআইএমএলের (লিবারেশন) ছাত্র সংগঠন এআইএসএ (আইসা) এবং প্রসেনজিত্ বোসের ডিএসএফ৷ দুই সংগঠনের শীর্ষ নেতানেত্রীরা মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন ক্যাম্পাসে৷
তুঙ্গে কথার যুদ্ধও৷ এসএফআই যখন আইসা ও ডিএসএফের মধ্যে 'গোপন আঁতাতে'র অভিযোগ আনছে, তখন ডিএসএফের পাল্টা প্রশ্ন, 'কেন যুগ্ম-সম্পাদকের পদে এসএফআই প্রার্থী দিল না?', 'কেন সীতারাম ইয়েচুরি ক্যাম্পাসে এলেও ছাত্রছাত্রীদের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন?' সব মিলিয়ে সরগরম ক্যাম্পাস৷
গত বছর ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কিছু দিন আগে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে রাষ্ট্রপতি পদে সিপিএমের সমর্থনের প্রশ্নে জেএনইউ-র এসএফআই ভেঙে যায়৷ প্রসেনজিত্ বোস, ভি লেনিন কুমার, জিকো দাশগুপ্তর নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা ডিএসএফ নামে নতুন ছাত্র সংগঠন গড়ে তোলেন৷ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক পদ আইসা দখল করলেও, সভাপতি পদে ডিএসএফ জয়ী হয়৷ কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদে জয়ী হতে পারেনি এসএফআই৷ স্কুল ও সেন্টারের ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে মাত্র একটি পদে এসএফআই জয়ী হয়৷ এককথায়, সীতারাম ইয়েচুরির খাসতালুকে এসএফআই-র ভিত নড়ে যায়৷
তার পর বেশ কয়েক মাস ক্যাম্পাসে এসএফআই ইউনিটই তৈরি করতে পারেনি৷ অবস্থা এমন হয় যে, শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে কেরল ও পশ্চিমবঙ্গ সিপিএম বাছাই করা ছাত্র নেতাদের জেএনইউ-তে পাঠায় এসএফআই ইউনিট তৈরি করার জন্য৷ অর্জুন সেনগুপ্তের নেতৃত্বাধীন নতুন সেই ছাত্র ইউনিটকে হাতিয়ার করে এবার জেএনইউতে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে এসএফআই৷ যদিও সীতারাম ও বৃন্দা প্রচারে আসায় বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয় ডিএসএফ বা আইসা৷ ডিএসএফ নেতা জিকো দাশগুপ্তর কথায়, 'ইয়েচুরি ও বৃন্দা কারাট এলেও, তার কোনও প্রভাব পড়বে না৷ প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন বা টিপি চন্দ্রশেখরন হত্যা মামলা নিয়ে ছাত্রদের কোনও প্রশ্নের যুক্তিযুক্ত উত্তর দিতে পারেননি সিপিএম নেতারা৷' আইসার মুখপাত্র সুচেতা দে'র বক্তব্য, 'সিপিএম ও এসএফআই এখানে ঠুঁটো জগন্নাথ৷ আমরা গতবারের থেকে ভালো ফল আশা করছি৷' অন্য দিকে, এসএফআই-র সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, 'বিশ্বাসঘাতকদের জন্য গতবার ফল খারাপ হয়েছিল৷ আমরা এখনও সংগঠন গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় আছি৷ স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সের মতো শাখায় আমাদের ফল দেখে অনেকে চমকে যাবেন৷' ঘটনা হল, ত্রিমুখী লড়াইয়ে স্কুল অফ সোশ্যাল সায়েন্সে এসএফআই ভালো ফলের আশা করলেও, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ সব পদই আইসা-র হাতে যাওয়ার সম্ভাবনা জোরালো৷
http://eisamay.indiatimes.com/city/kolkata/jnu/articleshow/22507667.cms
বি জে পি-র পথে কংগ্রেসের প্রদীপ ঘোষ |
যোগ দিল রাজ্য আপ-এর একাংশ |
| |
|
কোথায় দাঁড়িয়ে সিপিএম
সূচনা রহমান
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর পঞ্চায়েতেও বড় পরাজয় হয়েছে সিপিএমের। এ অবস্থায় ঘনিয়ে আসছে লোকসভা নির্বাচন। বিশ্লেষকদের ধারণা এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা ধরনের সঙ্কটের মুখোমুখি দলটি। তারা বলছেন, মুখে কংগ্রেস ও বিজেপির বিরোধিতার কথা বলা হলেও রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে সিপিএমকে আবার কংগ্রেসের মুখাপেক্ষী হতে হবে। শুধু সিপিএমই নয়, অন্য বামেরাও নরেন্দ্র মোদি, বিজেপিকে রোখার নামে আবার কংগ্রেসের সহযোগী হবার সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে এগিয়ে যেতে চাইছে।
১৯৬৪ সালে সিপিআই ভাগ হয়ে সিপিআই ও সিপিএমে পরিণত হয়। এরপর ১৯৬৭ সালে প্রয়াত সিপিআই নেতা শ্রীপাদ অমৃত ডাঙ্গে ঠিক একইভাবে 'হিন্দু ফ্যাসিবাদী' জনসংঘকে রুখতে ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের সঙ্গে আঁতাতের আহ্বান জানিয়ে সিপিএমের কাছে কংগ্রেসের দালাল বলে চিহ্নিত হয়েছিলেন। আজ বামপন্থি আন্দোলনের বড় পরিহাস সেই সিপিএম নেতাদের সোনিয়া গান্ধীর বন্দনা গাইতে ও কংগ্রেসকে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি হিসেবে সার্টিফিকেট দিতে হচ্ছে নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপিকে রোখার নামে।
১৯৬৪ সালে তেনালি পার্টি কংগ্রেসের পর সিপিএম কংগ্রেস বিরোধিতাকে লক্ষ্য রেখে ভারতীয় রাজনীতিতে যে উগ্র বামপন্থার জন্ম দিয়েছিল তা আজ স্তিমিত। মূলত সিপিএমের দুই কংগ্রেস ঘেঁষা প্রয়াত নেতা জ্যোতি বসু ও হরকিষাণ সিং সুরজিত সিপিএমের সত্ আদর্শবাদের দাবিদার বাম—মার্কসবাদী শক্তিকে কংগ্রেসের সহযোগী শক্তিতে পরিণত করে ফেলেছিলেন। অতীতে প্রথম ইউপিএ সরকার থেকে ভারত- মার্কিন পরমাণু চুক্তির ইস্যুতে সিপিএম ও বামেরা সমর্থন প্রত্যাহার করলেও রাজনৈতিক মহল মনে করছেন, সামনের লোকসভা নির্বাচনের পর সিপিএম আরো বেশি করে কংগ্রেস নির্ভরশীল রাজনীতি করবে। দেশজুড়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বে সেকুলার ফ্রন্ট গঠনেও সিপিএমের সমর্থন জুটবে। সিপিএমের রাজনৈতিক লাইন পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যাবে যে, তাদের ৪৯ বছরের সুদীর্ঘ রাজনীতিতে বিভিন্ন সময়ে তারা আদর্শগত ও নীতিগত অবস্থান থেকে সরে সুবিধাবাদী রাজনৈতিক লাইন গ্রহণ করেছে। ১৯৬৪ সালে পার্টি তৈরির পর উগ্র কংগ্রেস— বিরোধিতা ও সিপিআই বিরোধিতার রাজনীতি চালানো হয়। আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিভেদে রুশ বিরোধী ও চীনপন্থি অবস্থান গ্রহণ করা হয়। ১৯৬৭ তে পশ্চিম বাংলায় কংগ্রেস রাজের অবসানে যুক্তফ্রন্ট রাজনীতির সূচনা হয়। সিপিএম এ সময় অতুল্য ঘোষ, প্রফুল্ল সেন বিরোধী কংগ্রেস নেতা অজয় মুখোপাধ্যায়, সুশীল ধাড়াদের সঙ্গে হাত মেলায় এবং চলতে থাকে তাদেও কংগ্রেস তথা ইন্দিরা গান্ধী বিরোধিতার রাজনীতি।
১৯৬৯ সালে কংগ্রেসের বিভাজন ঘটলে সিপিএম সুর পাল্টিয়ে ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেস গোষ্ঠীকে প্রকাশ্যে রাজনৈতিক মদদ জোগাতে শুরু করে। ইন্দিরা গান্ধীর বিভিন্ন কর্মসূচিকে 'প্রগতিশীল' বলে গাওনা গাওয়াও শুরু হয়। এর পরিণতিতে সিপিএমের পশ্চিম বাংলা শাখার উগ্রপন্থি গোষ্ঠী মূলতঃ চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রত্যক্ষ সমর্থনে সিপিআই (এমএল) তৈরি করে সিপিএমের কংগ্রেস ঘেঁষা রাজনীতিকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ জানায়।
১৯৭০'র দশকে পশ্চিম বাংলা জুড়ে প্রবল নকশাল আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। ১৯৭১'র নির্বাচনে সিপিএম বড় রকমের ধাক্কা খায়। কংগ্রেস সিপিআই ও অজয় মুখার্জির সাহায্যে রাজ্যে 'গণতান্ত্রিক কোয়ালিশন' সরকার গঠন করে। রাজ্য জুড়ে নকশালী সন্ত্রাস ও কংগ্রেসের আক্রমণের সামনে সিপিএম বিপদ বুঝে আবার কংগ্রেস বিরোধিতার রাজনীতি শুরু করে দেয়। সোভিয়েত রাশিয়ার মদদে ও জাতীয় পুঁজিপতিদের সাহায্যে ইন্দিরা গান্ধী পশ্চিম বাংলায় সিপিএম নিধনে ব্রতী হন। তখন তার প্রধান সহযোগী হয়ে ওঠে সিপিআইএম।
সিদ্ধার্থ রায়ের আমলে ধারাবাহিক আক্রমণে সিপিএমের এগারোশ' নেতা ও কর্মী খুন হয়; এলাকা ছাড়া হয় হাজার হাজার কর্মী ও সমর্থক। এ সময় ইন্দিরা গান্ধীর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়তে সিপিএম লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণের ছাতার তলায় আশ্রয় নেয়। ১৯৭৪'র এক সকালে কংগ্রেসের 'আধা-ফ্যাসিবাদে'র বিরুদ্ধে লড়তে জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে সিপিএমসহ কংগ্রেস বিরোধী শক্তিগুলো বিশাল গণমিছিল বের করে। ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন গভীর রাতে ভারতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষিত হয় ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক অস্তিত্ব রক্ষার প্রশ্নে। এর আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট নির্বাচনে অবৈধ উপায় অবলম্বনের দায়ে ইন্দিরা গান্ধীর নির্বাচন বাতিল করে দেন। এই সময়েই গুজরাটে জনসংঘ, সোশালিস্ট পার্টি, আদি-কংগ্রেসের সমন্বয়ে বিধানসভার নির্বাচনে জনতা ফ্রন্ট বিশাল জয় পায়। সিপিএমসহ অন্যান্য বামপন্থিরাও জনতা ফ্রন্টকে সমর্থন জানায়। জরুরি অবস্থার অবস্থানে ১৯৭৭-এ দেশে ঐতিহাসিক নির্বাচনে দিল্লির মসনদে প্রথম অকংগ্রেসী সরকার গঠন করে জনতা পার্টি। সিপিএম ও অন্যান্য বামপন্থিরা এই সরকারকে সমর্থনে এগিয়ে আসে। পশ্চিম বাংলায় জনতা পার্টি ও সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম দলগুলোর মধ্যে 'ফ্যাসিবাদী কংগ্রেস বিরোধী জোট' গঠিত হয় ও পশ্চিম বাংলার নির্বাচনে কংগ্রেস শোচনীয় ফল করে, জনতা পার্টি- বাম জোট বিশাল সাফল্য পায়। জনতা পার্টিতে জনসংঘ থাকা সত্ত্বেও সিপিএম কোন সময়ই সাম্প্রদায়িকতার কথা তোলেনি। হঠাত্ মস্কোর কমিউনিস্ট নেতাদের নির্দেশে সিপিএম মোরারজি দেশাই'র নেতৃত্বে জনতা পার্টি ও সরকার পতনে কংগ্রেসের সঙ্গে একাত্ম হয়। ১৯৭৯ তে জনতা সরকারের পতন ঘটে এবং ১৯৮০ সালে নির্বাচন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ১৯৮০'র নির্বাচনে কংগ্রেস ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে ক্ষমতায় ফেরে। সিপিএম ও অন্য কমিউনিস্টদের তখন নরম সুর দেখা যায়।
সাম্প্রদায়িকতা ও আরএসএস প্রশ্নে জনতা পার্টি বিভাজিত হয়ে বিজেপির উত্থান ঘটে। এ পরিস্থিতিতে সিপিএম আবার বিজেপি বিরোধিতায় নামে এবং হঠাত্ করে সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্ন তোলা হয়। জ্যোতি বসু ও সুরজিতরা এই সময় থেকে দলকে কংগ্রেসমুখী করতে শুরু করেন। ১৯৮৪ সালে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাতে ইন্দিরা গান্ধী নিহত হলে দেশে অকাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় রাজিব গান্ধী ক্ষমতায় ফিরলে রাজিব শাসনে বোফর্স কেলেঙ্কারি নিয়ে কংগ্রেসী বিক্ষুব্ধ নেতা বিশ্বনাথ প্রতাপ সিংয়ের সঙ্গে রাজিব বিরোধী, কংগ্রেস বিরোধী অবস্থান নেয় সিপিএম। দেশ জুড়ে ওঠে কংগ্রেস বিরোধী হাওয়া। নতুন করে জনতা দল, বামপন্থি শক্তি ও বিজেপির মধ্যে আঁতাত গড়ে ওঠে। ১৯৮৯'র নির্বাচনের মাধ্যমে বিশ্বনাথ প্রতাপ সিং ক্ষমতায় আসলে সিপিএম ও বিজেপি একত্রেই কংগ্রেস বিরোধী অবস্থান নেয়। এ সময় অটল বিহারী বাজপেয়ীর হাত ধরে জ্যোতি বসু কলকাতার ময়দানে সমাবেশ করেছিলেন। ভি পি সিং সরকারকে পরিচালনা করতে সমর্থনকারী সিপিএম, বিজেপি প্রভৃতি দল নিয়ে সমন্বয় কমিটিও গঠিত হয়। এরপর মন্ডল কমিশন ও অযোধ্যা প্রশ্নে সামাজিক ও ধর্মীয় উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। বিজেপি সমর্থন প্রত্যাহার করায় ভি পি সিং সরকারের পতন ঘটলে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ১৯৯১-এ কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সরকার নরসীমা রাওয়ের নেতৃত্বে ক্ষমতায় আসে। তখন বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের শর্ত মেনে উদার অর্থনীতি ও শিল্পনীতি গৃহীত হয়।
১৯৯৬'র নির্বাচনের পর কংগ্রেসের সমর্থনে ও সিপিএমের সক্রিয়তায় প্রথমে দেবগৌড়া ও পরে আই কে গুজরালের যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে। দু'বারই সোনিয়া গান্ধী যুক্তফ্রন্ট সরকারের পতনের কারণ হয়ে ওঠেন। এরপর ১৯৯৮ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপি জোট ক্ষমতায় ফেরে। ১৩ মাসের মাথায় কংগ্রেস ও কমিউনিস্টরা সাম্প্রদায়িকতা ও 'হিন্দু ফ্যাসিবাদে'র বিরুদ্ধে বিপদের কথা বলে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটিয়ে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনিবার্য করে তুলেছিলো।
১৯৬৪ সালে উগ্র বামপন্থা থেকে সিপিএমের উত্থান। সেই সিপিএমই এখন সুর নরম করে কংগ্রেসের নেতৃত্বে কেন্দ্রে ধর্মনিরপেক্ষ ফ্রন্ট সরকার গঠনের আওয়াজ তুলছে। সমালোচকরা বলছেন মার্কসবাদ নয়, সংসদীয় ক্ষমতা দখলই এখন তাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য। বিভিন্ন সময়ে এজন্য সুবিধাবাদী রাজনীতির পথ গ্রহণ করা হয়েছে। সিপিএম আজ এক গভীর রাজনৈতিক সঙ্কটের সামনে দাঁড়িয়ে। দলীয় আদর্শ ও নীতি থেকে সরে আগামী লোকসভা নির্বাচনে যে সিপিএম ও অন্য বামেরা বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদি বিরোধিতায় কংগ্রেসমুখী হবে তা বলাই বাহুল্য।
নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার সিপিএম নেতা অশোক গুড়িয়া
তমলুক, ০৫ ফেব্রুয়ারি- তৃণমূল নেতা সমর মাইতি হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার করা হল সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা নন্দীগ্রামের নেতা অশোক গুড়িয়াকে। মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁকে রেয়াপাড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর সঙ্গে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হলেও পুলিশ তাঁদের নাম জানাতে চায়নি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যাবেলা মোটর সাইকেলে যাওয়ার সময় আততায়ীর ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছিলেন সমরবাবু। তাঁর পিঠের ডান দিকে দু'টি, ডান হাতের কনুইতে এবং বাঁ চোখে একটি করে মোট চারটি গুলি লাগে। রেয়াপাড়া থেকে তমলুক জেলা হাপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়। তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী এই খুনের ঘটনায় 'সিপিএমের দুষ্কৃতীরা জড়িত' বলে ওই দিন দাবি করেছিলেন। তার পর অশোক গুড়িয়ার গ্রেফতার যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। যদিও নিহত নেতার বাবা তথা তৃণমূল নেতা বাদল মাইতি এই ঘটনার জন্য দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছিলেন। শেখ নাজিমুদ্দিন নামের বিক্ষুব্ধ এক তৃণমূল নেতার দিকে আঙুলও তুলেছিলেন তিনি। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করেছেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগে অশোকবাবুকে ফাঁসানো হয়েছে।
এই খুনের ঘটনার সঙ্গে সিপিএমের কোনও যোগ নেই, বরং তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে, বলে বুধবার মন্তব্য করেছিলেন অশোকবাবু। কিন্তু এই ঘটনায় তাঁকেই গ্রেফতার করায় বিস্মিত তাঁর দল। এর আগে তাঁকে নন্দীগ্রাম নিখোঁজ মামলায় ২০১২ সালের ১৭ মার্চ মুম্বই থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই বছরেরই ২৩ জুলাই জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন তিনি। সেই মামলা এখনও শেষ হয়নি, তার মধ্যে ফের অশোকবাবু গ্রেফতার হলেন।
- See more at: http://www.deshebideshe.com/news/details/26614#sthash.3spO7KSw.dpuf
বিপর্যয়ের পেছনে মূল কারণ সাংগঠনিক দুর্বলতা : মানছে সিপিএম
May 21, 2014
ভিনিউজ ডেস্ক:
লোকসভা নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা স্বীকার করে নিয়েছে সিপিএম পলিটব্যুরো। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে দল ধরাশায়ী হওয়ার পেছনে শুধু সন্ত্রাস নয়, নড়বড়ে সংগঠনকেও অন্যতম বড় কারণ হিসেবে দেখছেন দলটির নেতারা। অথচ ভোটের প্রচার চলাকালে বিভিন্ন ইস্যুতে সরব হলেও সংগঠন নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। গণপ্রতিরোধের কথা বললেও সে ক্ষেত্রে দলের তৃণমূল পর্যায়ের ভূমিকা কী হবে, তা নিয়ে খোলাখুলি কোনো নির্দেশনাও দেননি তারা। বরং সংগঠনের শক্তি নিয়ে আগাগোড়াই ছিলেন তৃপ্তির সুরে।
দিলি্লতে গত রোববার ছিল পলিটব্যুরোর বৈঠক। সেখানে সিপিএমের সামগ্রিক ফল নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা করেন প্রকাশ কারাত, বিমান বসু এবং সূর্যকান্ত মিশ্রসহ শীর্ষস্থানীয় নেতারা। সেখানে সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে ঠিক হয়েছে, এবার এ বিষয়ে কয়েকটি কড়া ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে ভবিষ্যতের রূপরেখা ঠিক করতে আগামী ৬ জুন আবারো বৈঠকে বসবেন পলিটব্যুরোর সদস্যরা।
এদিকে, সর্বোচ্চ নেতৃত্ব যখন কর্মীদের ওপর দোষ চাপাতে চাইছে, তখন তৃণমূল পর্যায় থেকে নেতা বদলের দাবি জোরদার হতে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে সবচেয়ে সরব দলের ছাত্র-যুবদের একাংশ। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরই ছাত্র-যুব সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মী পার্টির নেতৃত্ব বদলের দাবি ফেসবুকসহ অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে পোস্ট করছেন। রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের একজন এসএফআই নেতা নিজের প্রোফাইলে বলেছেন, 'রক্ত আর হাঁটুর জোর বাড়াতে হবে। লড়াইটা কঠিন, বড়দের আশীর্বাদ নিয়ে ছোটদের আরো বেশি করে কাজ করতে দিন।' প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই ইউনিটের এক সাবেক প্রেসিডেন্ট নিজের ওয়ালে কবিতা লিখে দলে নেতৃত্বের বদল দাবি করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'শত কমরেড, গড়ে ব্যারিকেড নেতাদের নেই চিহ্ন, দূরে সরে গেছ জনগণ থেকে, হয়ে গেছ বিচ্ছিন্ন; পদ ছাড় আজ, হয়েছে অনেক, আসুক তরুণ রক্ত।'
তবে ফোনে তাদের প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে দলীয় শৃঙ্খলার কথা মাথায় রেখে কেউই সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি। কিন্তু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএফআই নেতা সৈনিক শূর নেতৃত্বের প্রতি আস্থাভাজন হয়েও বলেছেন, 'এটা ঠিক, আরো ছাত্র-যুবকের দলে উঠে আসা উচিত। সেই কথা পার্টিও বিশ্বাস করে।' দলের একাংশের বক্তব্য, সেই দাবিকে আড়াল করতে সাংগঠনিক দুর্বলতার তত্ত্বকে খাড়া করছে পলিটব্যুরো। শীর্ষ পর্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, বুর্জোয়া দলের মতো কমিউনিস্ট পার্টিতে এভাবে নেতা বদলের পরম্পরা নেই। তাছাড়া তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীরা নেতৃত্ব বদলের দাবি তুললেও তারা তাদের দায়িত্ব পালন করছে কিনা, সেই প্রশ্নও রয়েছে। ওপর মহলের মতে, তৃণমূল পর্যায়ের কমিটি তাদের কাজ করলে এর প্রভাব ভোটে পড়ত। সাধারণ কর্মীরা অবশ্য দলের নীতিনির্ধারক নেতাদের অপসারণের দাবি থেকে সরতে নারাজ। এ অবস্থায় পলিটব্যুরোর পরবর্তী বৈঠকে কী পদক্ষেপ নেয়া হয়, তার অপেক্ষায় রয়েছে দলের বাকি অংশ।
প্রাথমিক আলোচনার পর পলিটব্যুরোকে ভাবিয়ে তুলেছে সন্ত্রাস, বিজেপির উত্থানের পাশাপাশি দলের সাংগঠনিক ফাটল। ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটের পর থেকেই সংগঠনকে ঢেলে সাজানোর কথা বার বার বলেছে পলিটব্যুরো। তারপর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা, পৌরসভা, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর সদ্য শেষ হলো লোকসভার ভোট। কিন্তু সংগঠন চাঙ্গা হওয়া তো দূরের কথা, প্রাপ্ত আসনের নিরিখে দলের রক্তক্ষরণ বেড়েই চলেছে। সংবাদসূত্র : ইনডিয়া টাইমস
বদলের বার্তা পশ্চিমবঙ্গের বাম শিবিরে
অবশেষে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলস্তরের বামপন্থি কর্মীরা৷ প্রকাশ কারাট থেকে শুরু করে রাজ্যস্তরে বুদ্ধ-বিমান, সবার অপসারণ দাবি করেছেন তাঁরা৷
পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থি আন্দোলনের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম নেতৃত্ব বদলের দাবি উঠল!
ভারতের মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টি অর্থাৎ সিপিআইএম দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রধান দুই মুখ প্রকাশ কারাট এবং সীতারাম ইয়েচুরিরসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বামপন্থি নেতাদের মতবিরোধ দীর্ঘদিনের৷ সেই যবে থেকে কেন্দ্রে বহুদলীয় জোট সরকারের সর্বসম্মত প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও প্রয়াত জ্যোতি বসুর প্রধানমন্ত্রিত্বে বাদ সেধেছিলেন এঁরা দুজন৷ তার পর থেকে নানা ইস্যুতে বারবার প্রকাশ হয়ে পড়েছে সিপিএম পলিটব্যুরোর তথাকথিত কারাট লাইনের সঙ্গে মূলত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বেঙ্গল লাইনের তীব্র মতপার্থক্য৷ যদিও সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবদ্ধতার কারণে এই বিরোধ কখনও দলীয় কোন্দলের চেহারা নেয়নি৷
কিন্তু এবার সরাসরি কারাট লাইন নিয়ে প্রশ্ন উঠল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে৷ এই প্রথম জানতে চাওয়া হল, সর্বভারতীয় রাজনীতিতে তথাকথিত তৃতীয় ফ্রন্ট তৈরির কোনও সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও প্রতিবার কেন তৃতীয় শক্তির ধুয়ো তুলে নির্বাচনি লড়াইয়ের অভিমুখ নষ্ট করা হয়!
প্রকাশ কারাট
অবশ্য শুধু কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নয়, দলের মধ্যে জোরদার বিরোধিতার আওয়াজ উঠল রাজ্য এবং জেলাস্তরের নেতা-কর্মীদের মধ্যেও, লক্ষ্য হলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বামফ্রন্ট সভাপতিবিমান বসু এবং বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র৷ পশ্চিমবঙ্গে বামপন্থি আন্দোলনের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম নেতৃত্ব বদলের দাবি উঠল!
২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে শোচনীয় হার এবং ৩৪ বছর পর রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর যে ব্যাপক হতাশা ছড়িয়েছিল, তাও সামলে ওঠার চেষ্টা করছিলেন সাধারণ বাম কর্মী-সমর্থকরা৷ কিন্তু সাম্প্রতিক লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে বামফ্রন্ট৷ ৪২টি লোকসভা আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র দুটিতে জিততে পেরেছেন বামপ্রার্থীরা৷ পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে একটা আলোচনা তখন থেকেই শুরু হয়েছিল যে, এমন ভরাডুবির কী কারণ হতে পারে৷ একটা বড় কারণ অবশ্যই এই রাজ্যে বিজেপির রাজনৈতিক জমি পাওয়া৷ ভোটের আগে ধারণা ছিল, বিজেপির ভোট বাড়লে তা আসবে মূলত বামবিরোধী, তথাকথিত দক্ষিণপন্থী ভোটব্যাংক থেকে৷ সুতরাং খারাপ ফল করবে তৃণমূল এবং কংগ্রেস, কিন্তু বাম ভোট অক্ষত থাকবে৷
৪২টি লোকসভা আসনে প্রার্থী দিয়ে মাত্র দুটিতে জিততে পেরেছেন বামপ্রার্থীরা
কিন্তু কার্যত হল তার ঠিক উল্টো৷ বিজেপির সম্ভাব্য হিন্দুত্ববাদী হুমকির মুখে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট সঙ্ঘবদ্ধ হল, না, চিরাচরিত নিয়মে বামপন্থীদের পতাকার নীচে নয়, বরং তৃণমূল কংগ্রেসের শিবিরে৷ অন্যদিকে নিম্নবর্গীয় অনুন্নত শ্রেণির হিন্দুদের যে ভোট বামপন্থীরা এতদিন পেয়ে আসছিল, তা ব্যাপকহারে চলে গেল বিজেপির দিকে৷ ফলে বামেদের ভোটব্যাঙ্কে ধস নামল৷ অথচ ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরের তিন বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এমন কোনও সাফল্যের নজির রাখতে পারেনি, যা তাদের পক্ষে জনসমর্থনকে আরও জোরদার করতে পারত৷ সুতরাং ভোটের ফলে এটাই বরং পরিস্কার হল যে, এ রাজ্যের মানুষের আস্থা এবং বিশ্বাস তো আগেই হারিয়েছিল বামপন্থীরা, এবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক বিরোধী হওয়ার যোগ্যতাও তারা হারিয়েছে৷
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক ডেকে হারের কারণ পর্যালোচনা করার সাংগঠনিক ভড়ংই সম্ভবত ক্ষিপ্ত করে তোলে বাম কর্মীদের৷ প্রথম পোস্টার পড়ে বাঁকুড়া জেলায় দলের দফতরের বাইরে৷
সীতারাম ইয়েচুরি
নেতাদের পরামর্শ দেওয়া হয় – এসি লাগানো গাড়ি ছেড়ে, রোদের মধ্যে পায়ে হেঁটে ঘোরার জন্য৷ সিপিএমের জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্ব কিন্তু এই পোস্টারের কথা প্রথমে অস্বীকার করে৷ রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু চিরাচরিত ভঙ্গিতে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন৷ এর পর পোস্টার পড়ে বিতাড়িত নেতা ও প্রাক্তন সাংসদ লক্ষণ শেঠের পূর্ব মেদিনীপুরে৷ তাতে উচ্চতর নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কথা বলার পাশাপাশি আরও গুরুতর অভিযোগ তোলা হয় যে, দলের একাংশ তলে তলে হাত মিলিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে৷
এর পর সরাসরি রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকেই অভিযোগ তোলেন শমীক লাহিড়ি, নেপালদেব ভট্টাচার্যের মতো নেতারা৷ এবং অভিযোগ আনেন বামফ্রন্টের প্রাক্তন মন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায়৷ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বামফ্রন্ট সভাপতি বিমান বসু এবং রাজ্য বিধানসভায় বামফ্রন্টের নেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের বিরুদ্ধে৷ এদিকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য গত বিধানসভায় দলের বিপর্যয়ের পর যেমন দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি চেয়েছিলেন, এবারও তাই করেছেন৷ কিন্তু যথারীতি তাঁর দায়িত্ব ছাড়ার ইচ্ছা দলীয় অনুমোদন পায়নি৷ অন্যদিকে বিমান বসুও লোকসভা ভোটে ফ্রন্টের খারাপ ফলাফলের দায় স্বীকার করেছেন৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এসব সাংগঠনিক ছলাকলায় সাধারণ কর্মীদের আস্থা ফেরানো যাচ্ছে না৷ এমনকি যে নেতারা বর্তমান নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, তাদের আদৌ সেই নৈতিক বৈধতা আছে কিনা, সেই প্রশ্ন বরং উঠছে৷
DW.DE
ভারত
বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে দ্বিতীয় শক্তি!
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল বামফ্রন্ট আর ভোট বাড়িয়ে দ্বিতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে এলো বিজেপি৷ অন্যদিকে সফল হয়েও দুশ্চিন্তায় থাকল তৃণমূল কংগ্রেস৷
সারা ভারতে বিজেপি এবং নরেন্দ্র মোদীর পক্ষে জনসমর্থনের যে হাওয়া, পশ্চিমবঙ্গেও তার ঝাপটা এসে পৌঁছাল৷ যদিও এবারের লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে দুটিতে জিতেছে বিজেপি, যা গত লোকসভা ভোটের থেকে একটি আসন বেশি৷ কিন্তু এ রাজ্যে বিজেপির ভোট বেড়েছে ১১ শতাংশ এবং বেশ কিছু কেন্দ্রে দ্বিতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে তাদের উত্থান হয়েছে, যা ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে নির্ধারিত বিধানসভা নির্বাচনের জন্য নিশ্চিতভাবেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে৷ বিশেষ করে যখন কেন্দ্রে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় থাকবে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি সরকার৷ অথচ এই নরেন্দ্র মোদীকেই কিছুদিন আগে কোমরে দড়ি দিয়ে ঘোরানোর হুমকি দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
একক শক্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য ভালো ফল করেছে পশ্চিমবঙ্গে৷ ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে ২৭টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ১৯টিতে জিতেছিল তৃণমূল৷
একজন নরেন্দ্র মোদী
-
চা ওয়ালা
১৯৫০ সালে গুজরাটের নিম্নবিত্ত এক ঘাঞ্চি পরিবারে জন্ম নেয়া নরেন্দ্র মোদী কৈশরে বাবাকে সাহায্য করতে রেল ক্যান্টিনে চা বিক্রি করেছেন৷ ঘাঞ্চি সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেন নামের এক বালিকার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়, যদিও বেশিদিন সংসার করা হয়নি৷ ছাত্র হিসেবে সাদামাটা হলেও মোদী বিতর্কে ছিলেন ওস্তাদ৷ ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর প্রচারক হিসাবে রাজনীতির দরজায় পা রাখেন মোদী৷
এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৪২টি আসনের সবকটিতেই প্রার্থী দিয়েছিলেন৷ মুখে ৪২টি আসনে জেতার কথা বললেও, অধিকাংশ আসনেই বামফ্রন্ট, কংগ্রেস এবং বিজেপির সঙ্গে চতুর্মুখী লড়াইয়ে ৩৬ থেকে ৩৮টির বেশি আসনে জেতার আশা মমতা করছিলেন না৷ সেখানে ৩৪টি আসন জিতেছে তৃণমূল এবং রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের ভোট কেটে বামফ্রন্ট প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের জয়ের সম্ভাবনা নিশ্চিত করেছেন৷ হার হয়েছে কংগ্রেস প্রার্থী, কট্টর মমতা-বিরোধী বলে পরিচিত দীপা দাসমুন্সির৷
তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে, তাঁদের নেতাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত কুৎসা সত্ত্বেও মানুষের অকুণ্ঠ সমর্থন পেয়েছেন বলে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই বিজয়কে মানুষের প্রতি উৎসর্গ করেছেন তিনি৷ প্রসঙ্গত সংবাদমাধ্যমকে দুষেছেন তৃণমূল নেত্রী, তাঁদের বিরুদ্ধে একজোটে, একতরফা প্রচার চালানোর জন্য৷ বিজেপির প্রচারে কোটি কোটি টাকা খরচের দিকে ইঙ্গিত করে মমতা প্রশ্ন তুলেছেন, মূল্যবোধের রাজনীতির যুগ কি তা হলে শেষ হয়ে গেল? এবার কি পয়সা ছড়িয়ে প্রচার করেই ভোট কেনা হবে!
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেছেন, শাসকদল তৃণমূল যেরকম ব্যাপক হারে রিগিং করে, সন্ত্রাস ছড়িয়ে ভোট করল পশ্চিমবঙ্গে, তা তাঁদের কাছেও এক জরুরি শিক্ষা হয়ে থাকল৷ ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের সময় এই শিক্ষা তাঁরা মনে রাখবেন৷ আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৭৪ হাজার ভোটে জেতা বিজেপির প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয়-ও একই অভিযোগ এনেছেন শাসকদলের বিরুদ্ধে৷ দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্রে বিজেপি নেতা তথাগত রায় জিততে না পারলেও পশ্চিমবঙ্গে তাঁদের দলের ভোটের হার বৃদ্ধির জন্য ভোটারদের অভিনন্দন জানিয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন, এ রাজ্যে বিজেপির কাছে পাখির চোখ এখন পরের বিধানসভা নির্বাচন৷
আগের লোকসভা ভোটে জাতীয় কংগ্রেস জিতেছিল পশ্চিমবঙ্গের ছয়টি আসনে৷ এবার তারা জিতেছে চারটি আসনে৷ বহরমপুরে অধীর চৌধুরী, মালদা উত্তরে মৌসম বেনজির নুর, মালদা দক্ষিণে আবু হাসেম খান চৌধুরি, এবং জঙ্গিপুরে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়৷
পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে দুটিতে জিতেছে বিজেপি
বাকি দেশে কংগ্রেসের নির্বাচনি ভরাডুবির মধ্যে বরং পশ্চিমবঙ্গেই তাদের ফল কিছুটা ভালো৷ এর মধ্যে অধীর চৌধুরী রাজ্যের সমস্ত বিজয়ী প্রার্থীদের মধ্যে সবথেকে বেশি ব্যবধানে জিতেছেন৷ অধীর এদিন বলেছেন, এই রাজ্যে এতদিন রাজনীতি হতো দ্বিমুখী, বামপন্থি এবং অবামপন্থিদের মধ্যে৷ এবার এই লড়াইটা বহুমুখী হয়ে গেল৷
তবে এই লোকসভা ভোটের পর পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল বামফ্রন্ট৷ গত লোকসভা ভোটে ১৫টি আসনে জিতেছিলেন বাম প্রার্থীরা৷ সেখানে এবার অন্তত ছয়টি আসন বামেরা দখলে রাখতে পারবে বলে প্রাক-নির্বাচনি জনমত সমীক্ষায় মনে হয়েছিল৷ কিন্তু বামেদের হাতে এসেছে মাত্র দুটি আসন৷ তার মধ্যেও রায়গঞ্জে কংগ্রেসের ভোটে তৃণমূল ভাগ বসানোয় ও সংখ্যালঘু ভোটের কারণে মহম্মদ সেলিম জিততে পেরেছেন, তাও অতি সামান্য ব্যবধানে৷
তবে বিজেপি-বিরোধী লড়াইয়ে রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটের বেশিটাই সম্ভবত গিয়েছে তৃণমূলের পক্ষে৷ ৩৪টি আসনে নিশ্চিন্ত জয়ের সেটা একটা বড় কারণ হতে পারে৷ অন্যদিকে তফশিলি, উপজাতি ও অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণির ভোটের এক বড় অংশ সম্ভবত টেনে নিয়েছে বিজেপি, যা কার্যত বাম ভোটব্যাংকে ধস নামিয়েছে৷
মাওবাদী অঞ্চলে ভোটের হার বৃদ্ধি কিসের ইঙ্গিত?
ভারতে এবারের নির্বাচনের সবথেকে আশাব্যঞ্জক দিক হলো, মাওবাদী এলাকাগুলিতে ভোটের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে৷ তাতে এটাই সূচিত হচ্ছে মাওবাদীদের বজ্রমুষ্টি ক্রমশই ঢিলে হচ্ছে৷
ভারতের সাতটি রাজ্য ছত্তিশগড়, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িষা এবং পশ্চিমবঙ্গ মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি৷ প্রতিবার নির্বাচনের আগে মাওবাদীদের ভোট বয়কটের ডাকে আদিবাসী ও উপজাতি জনগোষ্ঠী সাড়া দিতে বাধ্য হত ভয়ে এবং আতঙ্কে৷ কিন্তু ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভোটদানের অষ্টম পর্বে ৫০২টি আসনের ভোটের পর দেখা গেছে মাওবাদী জঙ্গিদের রক্তচক্ষু এবং ভোট বয়কটের ডাক অগ্রাহ্য করে ৬২ শতাংশ ভোট পড়েছে ঐসব অঞ্চলে৷ গত ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে এই হার ছিল ৪৭ শতাংশের মত৷
মাওবাদী গেরিলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রিত ক্ষেত্র বলে পরিচিত মহারাষ্ট্রের গডচিরোলী এবং দন্ডকারণ্য স্পেশাল জোন কমিটি নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ভোট পড়ে ৬৯ শতাংশের মত৷ ২০০৯ সালের নির্বাচনে এই হার ছিল বেশ কম৷ উল্লেখ্য, দন্ডকারণ্য ঘন জঙ্গল ঘেরা এক দুর্গম ভূখন্ড৷ ছত্তিশগড়, ওড়িষা, মহারাষ্ট্র ও অন্ধ্রপ্রদেশ এই চারটি রাজ্য জুড়ে এই ভূখন্ড বিস্তৃত৷
গত ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে এই হার ছিল ৪৭ শতাংশের মত
অনুরূপভাবে বিহারের জামুই ও মুঙ্গের সংসদীয় আসনগুলিতে ভোটের হার বেড়েছে ১০ শতাংশ৷ ওড়িষার মালকানগিরিতে অবশ্য এই হার কিছুটা কম৷
ছত্তিশগড়ের বস্তার অঞ্চল মাওবাদীদের দুর্ভেদ্য গড়৷ গত ১০ এপ্রিল সেখানকার আদিবাসীদের মধ্যে ভোট দেবার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে মাওবাদীদের৷ এর কারণ খুঁজতে আদিবাসী এবং উপজাতি প্রতিনিধিদের ডেকে বিভিন্ন জায়গায় গোপন মিটিং করেছে মাওবাদীরা৷
পশ্চিমবঙ্গের মাওবাদী অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলে ৭ মে পর্যন্ত চতুর্থ দফার ভোট পর্বে ভোটের হার ছিল যথাক্রমে ৮১.৪১, ৭৮.৭৫ ও ৮০.৫৫ শতাংশ৷ আর ঝাড়গ্রামের মাওবাদী এলাকায় ভোট পড়ে ৮৮ শতাংশের মত৷
সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, আপাত কারণ হলো, আদিবাসী ও উপজাতি জনগোষ্ঠী এতদিন সুদিনের আশায় মাওবাদীর ওপর আস্থা রেখেছিল৷ কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে হিংসা, রক্তপাত এবং আতঙ্কের আবহে থাকতে থাকতে তাঁরা ক্লান্ত ও হতাশ৷ এর পরিবর্তনে তাঁরা মরিয়া৷ উন্নয়নের জন্য, শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দিন বদলের আশায় তাঁরা চাতক পাখির মত তৃষ্ণার্ত৷
ভারতের নির্বাচন ২০১৪
-
জনগণের সরকার
ভারতের সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর৷ পার্লামেন্টে দুটি কক্ষ রয়েছে৷ উচ্চকক্ষকে বলা হয় রাজ্যসভা আর নিম্নকক্ষ লোকসভা হিসেবে পরিচিত৷ নিম্নকক্ষে যে দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তারাই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করে৷
সম্প্রতি ডয়চে ভেলে মাওবাদী ঘাঁটি জঙ্গলমহল সফরে গিয়ে এটাই দেখেছে, সেখানকার গরিব, নিরন্ন আদিবাসী পরিবারগুলো কীভাবে সুদিনের আশায় ছটফট করছে৷ শুনে এসেছে মাওবাদীদের হাতে কীভাবে দিনের পর দিন অত্যাচারিত হয়েছে৷ কীভাবে রক্ষকরাই হয়েছে ভক্ষক৷
প্রান্তিক আদিবাসী গ্রামগুলির জওয়ান ছেলেদের টাকা আর ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে নিয়ে গিয়ে গেরিলা ট্রেনিং দিয়ে ক্যাডার বানিয়েছে মাওবাদী নেতারা৷ তোলা আদায় করেছে গরিব মানুষদের কাছে৷ দিতে না পারলে উনুন জ্বালানো বন্ধ আর অরন্ধনের আদেশ দিয়েছে৷ পুলিশের চর সন্দেহে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গেছে লাশ৷ জ্বালিয়ে দিয়েছে আদিবাসীদের ঘর আর সরকারি প্রাথমিক স্কুল৷ নিরাপত্তা বাহিনীকে আটকাতে রাস্তাঘাট কেটে মাইন পুঁতে রাখে৷ আধা সামরিক বাহিনীর হাতে মাওবাদীদের শীর্ষ নেতারা নিহত বা ধরা পড়ার পর তাঁরা এখন বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারছে৷ নিরাপত্তাবোধ কিছুটা ফিরে এসেছে৷ স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে৷ দু টাকা কিলো দরে নিয়মিত চাল পাচ্ছে৷ ঘর তোলার জন্য সাহায্য পাচ্ছে৷ তাই ভোটে তাঁদের উৎসাহ বেড়েছে৷ এটাকে টিকিয়ে রাখতে হলে নতুন সরকারের উচিত নিরাপত্তার পাশাপাশি সর্বাত্মক উন্নয়নে গতি আনা৷
DW.DE
ভারতের নির্বাচন ২০১৪
আসামে বড়োভূমি সহিংসতার জন্য দায়ী কে?
৪১ জন কোটিপতি, ২৬ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা
ভারতের নির্বাচন ২০১৪
Vol. XXXVIII No. 22
June 01, 2014
You are here
Defend the Party, Left in West Bengal
Prakash Karat
THE brutal violence against the CPI(M) and the Left Front in West Bengal is continuing after the Lok Sabha elections. For about fifteen days after the polling ended on May 12, there have been widespread attacks targeting the CPI(M) workers and Left Front supporters in various districts. A report of such attacks is published in this issue of People's Democracy. In the post-poll violence, so far three CPI(M) workers have been killed, more than a thousand Left Front supporters were injured in the attacks, and several hundreds have been forced to leave their villages and homes by the violence unleashed by the TMC goons.
These are not some sporadic clashes or acts of violence in the aftermath of the elections. These are planned and targeted attacks on the grassroots level party cadres and supporters who stood firmly for the Left Front, worked in the elections and mobilised people to support and vote for Left Front candidates. Even ordinary people who identified and voted for the CPI(M) or the Left Front were targeted in this terror campaign.
What is being witnessed is the planned and diabolic attempt by the Trinamool Congress to eliminate the CPI(M) as an organisation and to suppress the Left Front by repression and violence. In this effort, the police and the administration are being utilised to play a partisan role. Thousands of false cases have been foisted on those attacked while the attackers go free.
This pattern of attacks began in some areas after the panchayat elections in 2008. It assumed statewide proportions after the Lok Sabha elections in 2009. Between then and the assembly elections in May 2011, 388 men and women were killed by the TMC gangs. After an election, the TMC identifies the areas where the CPI(M) and the Left Front has retained mass support and their cadres have worked among the people. They are targeted for further attacks to eliminate the organisation. By this they aim to suppress the organised movement of the workers, peasants and the working people.
In the weeks following the May 2011 assembly elections, 30 Left Front leaders and workers were killed, of these 28 were from the CPI(M) and two from the RSP. Further, 23 women were raped and 508 molested; 3,785 persons were injured and had to be hospitalised; 40,000 people had to leave their homes. The drive to eliminate the CPI(M) and the Left Front saw 758 offices of the party, trade unions and mass organisations captured.
The pattern was repeated after the panchayat elections in July 2013 --- 24 CPI(M) cadres and supporters were killed between June 3 and July 25. In the present bout of violence directed against the CPI(M) and the Left Front after the Lok Sabha elections, the pattern is the same. Party offices are being attacked, damaged and destroyed. Those who dared to stand up to the TMC threats and worked for the Left Front candidates are being punished with physical attacks and even murdered.
Among the three who have died in this round of violence, a 65-year old woman, Bela Dey, got serious injuries trying to protect her two sons who had worked as CPI(M) volunteers in the elections in Nadia district. She later died. Another CPI(M) worker, Kajal Mallick, was beaten to death in Manteswar of Burdwan district. The third killing was of Ashmira Begum. She was a former CPI(M) elected panchayat member who had courageously defied the TMC threats and mobilised people to vote in a village in Ketugram in Burdwan district. She was stabbed to death when the TMC goons attacked her house. With these three deaths, the number of cadres and supporters who were killed since the Assembly elections in May 2011 has reached 157.
Thousands of cadres and supporters like Ashimira Begum had campaigned for the CPI(M) and the Left Front courageously defying the threats and intimidation of the TMC goons. It is these valiant comrades who are being subjected to attack and their means of livelihood being destroyed. Another type of attack is on the livelihood of CPI(M) and Left activists. In some places, they are prevented from going to work in the unorganised sector. In many places, the peasants and agricultural workers are forcibly stopped from working in the fields. In other instances, their shops and establishments have been looted or damaged.
What is being experienced in West Bengal is not only a wholesale attack on democracy but a concerted fascistic attempt to suppress the CPI(M) and the Left Front by systematic violence and terror. The brunt of this violence is borne by the working people who have stood with the party and the Red Flag – the rural poor, agricultural workers, adivasis and women.
The paramount task today is to defend the party and protect its cadres and supporters. The state and central leadership have to urgently take steps in this direction. It is essential to mobilise the people and build resistance against these attacks on democracy. This is not a battle of the CPI(M) and the Left in West Bengal but of the entire party and the Left movement of the country. All the democratic forces in the country must be rallied to express solidarity and support for the struggle against these fascistic attacks.
ADD NEW COMMENT
YOUR NAME
SUBJECT
COMMENT *
MATH QUESTION *2 + 12 =
Solve this simple math problem and enter the result. E.g. for 1+3, enter 4.
ALL ARTICLES
ARCHIVE CALENDAR
Contact Details
Editorial Desk : pd.cpim@gmail.com
Managerial office: pdpbln@gmail.com
SUBSCRIBE TODAY!
No comments:
Post a Comment