মতুয়া ধর্ম , মতুয়া আন্দলন, মতুয়া আদর্শ অপহরন হয়ে যাচ্ছে , মতুয়ারা কি বুঝতে পারছেন না? উড়াকান্দি অপহরন হয়ে লক্ষি খালি চলে যাচ্ছে । হরি লিলামৃত অপহরন হয়ে তৈরি হচ্ছে গোপালচাঁদ লিলামৃত।
রিপন বিশ্বাস
নমস্কার, আজ মতুয়া ভাই বোনদের কাছে ভারতীয় রাজনীতি নিয়ে কিছু কথা
বলব। ভারতীয় রাজনীতিতে স্বাধীনতা আন্দলন চলাকালীন সময় থেকে রাজনৈতিক
মতাদর্শের অপহরণ চলছে। আপনারা আমার কথা শূনে একটু অবাক হবেন জানি।
তবে এই অপহরণ সম্বন্ধে কিছু কথা বললে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন
রাজনৈতিক মতাদর্শ কি করে অপহরন হয়। স্বাধীনতা আন্দলনে নিতাজি সুভাষ চন্দ্র
বোসের অবদান বা রাজনৈতিক স্থান সম্বন্ধে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের
কাছে কিছু বলা মানে মায়ের কাছে মাসির গল্প করার মত। তবে অনেকেই
একটা কথা কিছুতেই মিলাতে পারেন না জহরলাল নেহেরু কি করে স্বাধীন
ভারতের প্রধান মন্ত্রী হলেন? ইতিহাস বিশ্লেষণ করে দেখলে বুঝা যায় এটা
আর কিছুই না , এটা ছিল রাজনৈতিক মতাদর্শ ও ক্ষমতা অপহরণ । প্রচুর
অর্থ ও মোসাহেবই ছিল এর প্রধান অস্ত্র । আমার কথা পরিস্কার করে বুঝাতে
চলুন স্বাধীন ভারতের কিছু রাজনৈতিক ঘটনা মনে করিয়ে দেই। ৭০এর
দশকে জয়প্রকাস নারায়ন নামে একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী মহান রাজনৈতিক
ব্যক্তি স্বরাজ নামে একটি আন্দোলন শুরু করেন। যার উদ্দেশ্য ছিল ভারতের
সিস্টেম পরিবর্তন । জয়প্রকাস নারায়ণের মন্তব্য ছিল ভারতে অনাচার দারিদ্রতা
দুর্নীতি এসবই সিস্টেমের দান। তাই তাঁর স্লোগান ছিল সিস্টেম পরিবর্তন করতে
হবে।এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল বিহার থেকে কারন জয়প্রকাস নারায়ন ছিলেন
বিহারের নাগরিক । এই আন্দলনে জুবসমাজ রাস্তায় নেমে মিছিলে যোগদান
করেছিল। হাজার হাজার মানুষ এই আন্দলনে সামিল হয়ে ব্যবস্তা পরিবর্তনে
উৎসাহ দেখিয়েছিল। এই আন্দলনে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষও যোগদান করেছিল
তাদের নাম সকলেই জানেন ,তবুও নামগুল আপনাদের মনে করিয়ে দেই।
এরা হল লালু প্রসাদ যাদব , রাম বিলাস পাসবান, নিতিস কুমার, সুশীল মোদি।
এবার বুঝতে পারছেন কি করে মতাদর্শ ও রাজনৈতিক সক্তি
অপহরণ হয়। এরা ছিল আন্দলনের সিপাহী কিন্তু আন্দলন সপাপ্ত হওয়ার
পরে এদের মধ্যে থেকে নতুন নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি হয় এবং এরাই
বিহারের মুখ্য মন্ত্রী হয় । কিন্তু এরা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ব্যবস্থা পরিবর্তনের
জন্য কিছুই করেন নাই। এরা সুধু মাত্র নিজেদের আখের ঘুছিয়েছে।
আপনারা হয়তো এখনো বুঝতে পারছেন না মতাদর্শ ও রাজনৈতিক সক্তি
কি করে অপহরণ করলো ? তবে আসুন আর একটি উধাহরন দেই।
২০১১ সালে আন্না নামে একজন গান্ধিবাদি সমাজসেবী লোকপালের জন্য
আন্দোলন সুরু করেন । খবরের চ্যনেলে ২৪ ঘন্টা এই আন্দলনের সম্বন্ধে
বিভিন্ন খবর শূনতে শূনতে মানুষ মনে করেছিল এবার হয়তো ভারতের
মাটিথেকে দুর্নীতি ধুয়ে মুছে যাবে। দিল্লির আকাশে বাতাসে আন্না আন্না ধ্বনি
মুখরিত হয়ে উঠেছিলো । এই আন্দোলন সমর্থন করতে মানুষের ঢল নেমেছিল
দিল্লির রাস্থায়। রামলীলা ময়দানে তিল পরিমান জায়গা ছিল না। এ ঘটনা সবাই
জানেন। এই আন্দলনের সঙ্গে এবং আন্নার সঙ্গে যোগদান করেছিল
অরবিন্দ কেজিরিবাল, কুমার বিশ্বাস , মনিষ সিসদিয়া, প্রমুখ।
যখন এরা দেখলো মানুষের সমর্থন আছে এই আন্দলনের সঙ্গে তখন এরা আন্দলন কে অপহরন করে মানুষের সমর্থন অপহরন করে
নতুন রাজনৈতিক দল তৈরি করে এবং ইলেকশনের মধ্যদিয়ে অরবিন্দ
কেজরিবাল এখন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কিন্তু মুক্ষমন্ত্রি হওয়ার পরে আর লোকপালের
কথা একবার ও উচ্ছারন করেন নাই। যেমন লালু প্রসাদ যাদব ও নিতিস কুমার
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ব্যবস্থা পরিবর্তনের চেষ্টা তো দুরের কথা ব্যবস্তা
পরিবর্তনের নাম একবারও উচ্চারন করেন নাই। এভাবেই হয় মতাদর্শের ও
মানুষের সমর্থনের অপহরন,। নেতাজীর আন্দোলনকে অপহরন করে
নেহেরু প্রধানমন্ত্রী হলেন সঙ্গে সঙ্গে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে গেলেন
রাজনৈতিক ঘরানা ও বিশাল রাজনৈতিক সাম্রাজ্য । জয়প্রকাসের ব্যবস্থা
পরিবর্তন আন্দোলন, নিতিস লালু অপহরন করে হলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী আর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রেখে যাবেন রাজনৈতিক ঘরানা আর অর্থের প্রাচুর্য তো থাকবেই। তেমন অরবিন্দ কেজিরিবাল ও আন্নার আন্দলন অপহরন করে
রেখেযাবেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রাজনৈতিক ঘরানা। এখন হয়তো্
ভাবছেন এসব কথা আমি মতুয়াদের কেন সুনাচ্ছি? তবে আসুন বুঝিয়ে দেই কেন আমি মতুয়াদের এই ইতিহাস সুনাচ্ছি। যেমন করে নিতাজি, জয়প্রকাস নারায়ন,ও আন্নার আন্দলন অপহরন হয়েছিল তেমন করে মতুয়া ধর্ম , মতুয়া আন্দলন, মতুয়া আদর্শ অপহরন হয়ে যাচ্ছে , মতুয়ারা কি বুঝতে পারছেন না? উড়াকান্দি অপহরন হয়ে লক্ষি খালি চলে যাচ্ছে । হরি লিলামৃত অপহরন হয়ে তৈরি হচ্ছে গোপালচাঁদ লিলামৃত।
হরি সংগীত অপহরন হয়ে তৈরি হচ্ছে গোপালচাঁদ সংগীত । হরিচাঁদ গুরুচাঁদ মতুয়া মিশন অপহরন হয়ে তৈরি হয়েছে মতুয়া মহাসঙ্গ। এখন তো আবার সর্বভারতীয় গোপালচাঁদ মিশন তৈরি হচ্ছে। একেই বলে বাসের চেয়ে কঞ্চি শক্ত । মতুয়াদের এখন যদি চোখ না খোলে তবে হরিচাঁদ গুরুচাঁদের মতুয়া ধর্ম গোপাল চাঁদ মতুয়া ধর্ম হতে আর বেশি দেরি নাই। আর এটাই হওয়া স্বাভাবিক কারণ ইতিহাস তাই বলে।
( রিপন বিশ্বাস )
No comments:
Post a Comment