Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Friday, June 28, 2013

সদ্য প্রাক্তন প্রধানরাও মানছেন, সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়বেন

সদ্য প্রাক্তন প্রধানরাও মানছেন, সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়বেন

প্রদীপ চক্রবর্তী

ছেলেকে কুকুরে কামড়েছে৷ প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন দিতে হবে৷ হুগলির শিয়াখালা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা কানাই কর্মী এসেছিলেন প্রধানের কাছ থেকে চিঠি নিতে৷ চিঠি দেখালে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ইঞ্জেকশন মিলবে৷ সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধান সুরজিত্‍ মালিক বুধবার শেষ অফিসে এসেছিলেন৷ আগের দিনই জেলাশাসকের দপ্তর থেকে বিডিও-র মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে দিনই প্রধান এবং সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ কানাইবাবু প্রধানকে অনেক অনুনয় বিনয় করলেও সুরজিত্‍বাবুর কিছু করার ছিল না৷ তিনি কানাইবাবুকে জানিয়ে দিলেন, আর চিঠি দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাঁর৷ হতাশ হয়েই ফিরতে হল কানাইবাবুকে৷

শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রাজ্যধরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল৷ প্রধান অসীম শীলও মঙ্গলবার একই ধরনের নির্দেশিকা পেয়েছেন বিডিও-র কাছ থেকে৷ তখন থেকেই হাত তুলে নিয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার এক মহিলা এসেছিলেন মেয়ের জন্য ওবিসি সার্টিফিকেট নিতে৷ অসীমবাবু তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন সার্টিফিকেট দেওয়ায় তাঁর অক্ষমতা জানিয়ে৷ কী করবেন ওই মহিলা? জবাব নেই প্রধানের কাছে৷

অসীমবাবু এবং সুরজিত্‍বাবু--যুযুধান দুই শিবিরের প্রতিনিধিই একটা বিষয়ে কিন্ত্ত একমত৷ তাঁরা মানছেন, ভোট হয়ে নতুন পঞ্চায়েত বোর্ড তৈরি হল না, অথচ পুরনো বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে সমস্যায় পড়বেন পঞ্চায়েত এলাকার সাধারণ বাসিন্দারাই৷ বাড়িতে শৌচাগার, নলকূপ তৈরির ক্ষেত্রেও প্রধানের সার্টিফিকেট লাগে৷ চাকরি বা অন্য দরকারে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দেওয়ারও অধিকারী পঞ্চায়েত প্রধান৷ এ রকম ছোট-বড় নানা কাজে প্রতিনিয়তই প্রধানের প্রয়োজন পড়ে৷ অসীমবাবু এবং সুরজিত্‍বাবু--দু'জনেরই এক কথা, 'কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হল৷ অনেকেই বাড়িতে আসছেন৷ বোঝালেও বুঝতে চাইছেন না৷'

শিয়াখালা কিংবা রাজ্যধরপুর নমুনা মাত্র৷ পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে জটিলতার জেরে সারা রাজ্যেই অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ মঙ্গল-বুধবারই বহু পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ শনিবারের মধ্যে বাকিগুলির মেয়াদও শেষ হবে৷ এই অবস্থায় গ্রামে গ্রামে আর প্রশাসন বলে কিছু থাকছে না৷ সব ক্ষমতাই চলে যাচ্ছে বিডিও-দের হাতে৷ এখন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের সার্টিফিকেট নিতে বা অন্য যে কোনও দরকার ছুটতে হবে কয়েক কিলোমিটার দূরের বিডিও অফিসেই৷ সেখানে বিডিও সাহেবের দেখা পাওয়া অবশ্য যে-সে কথা নয়! স্বভাবতই দুশ্চিন্তায় লাখ লাখ মানুষ৷

তৃণমূলের প্রধানরা এই পরিস্থিতির জন্য দুষছেন বিরোধীদের৷ আর বিরোধীরা দোষারোপ করছেন শাসকদলকে৷ ভোট হবে কি না, ঠিক নেই--তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় নির্বাচনী জনসভা করে চলেছেন৷ প্রতিটি সভায় নিয়ম করে অভিযোগ করছেন, বিরোধীরা ভোট চায় না৷ আবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব কিংবা প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান প্রমুখ কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, ফল খারাপ হবে--এই আশঙ্কাতেই এখন পঞ্চায়েত ভোট করতে চাইছে না শাসকদল৷ এই চাপানউতোরে গ্রামের মানুষের কী-ই বা যায় আসে! তাঁদের এখন নাভিঃশ্বাস উঠেছে৷

পঞ্চায়েত নিয়ে যতই দুর্নীতির অভিযোগ থাকুক না কেন, গ্রামের মানুষের কাছে পঞ্চায়েত বড় ভরসা৷ ভোট নিয়ে টালবাহানায় গ্রাম-প্রশাসনের গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই ভেঙে পড়ছে৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...