প্রদীপ চক্রবর্তী
ছেলেকে কুকুরে কামড়েছে৷ প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন দিতে হবে৷ হুগলির শিয়াখালা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা কানাই কর্মী এসেছিলেন প্রধানের কাছ থেকে চিঠি নিতে৷ চিঠি দেখালে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ইঞ্জেকশন মিলবে৷ সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধান সুরজিত্ মালিক বুধবার শেষ অফিসে এসেছিলেন৷ আগের দিনই জেলাশাসকের দপ্তর থেকে বিডিও-র মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে দিনই প্রধান এবং সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ কানাইবাবু প্রধানকে অনেক অনুনয় বিনয় করলেও সুরজিত্বাবুর কিছু করার ছিল না৷ তিনি কানাইবাবুকে জানিয়ে দিলেন, আর চিঠি দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাঁর৷ হতাশ হয়েই ফিরতে হল কানাইবাবুকে৷
শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রাজ্যধরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল৷ প্রধান অসীম শীলও মঙ্গলবার একই ধরনের নির্দেশিকা পেয়েছেন বিডিও-র কাছ থেকে৷ তখন থেকেই হাত তুলে নিয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার এক মহিলা এসেছিলেন মেয়ের জন্য ওবিসি সার্টিফিকেট নিতে৷ অসীমবাবু তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন সার্টিফিকেট দেওয়ায় তাঁর অক্ষমতা জানিয়ে৷ কী করবেন ওই মহিলা? জবাব নেই প্রধানের কাছে৷
অসীমবাবু এবং সুরজিত্বাবু--যুযুধান দুই শিবিরের প্রতিনিধিই একটা বিষয়ে কিন্ত্ত একমত৷ তাঁরা মানছেন, ভোট হয়ে নতুন পঞ্চায়েত বোর্ড তৈরি হল না, অথচ পুরনো বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে সমস্যায় পড়বেন পঞ্চায়েত এলাকার সাধারণ বাসিন্দারাই৷ বাড়িতে শৌচাগার, নলকূপ তৈরির ক্ষেত্রেও প্রধানের সার্টিফিকেট লাগে৷ চাকরি বা অন্য দরকারে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দেওয়ারও অধিকারী পঞ্চায়েত প্রধান৷ এ রকম ছোট-বড় নানা কাজে প্রতিনিয়তই প্রধানের প্রয়োজন পড়ে৷ অসীমবাবু এবং সুরজিত্বাবু--দু'জনেরই এক কথা, 'কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হল৷ অনেকেই বাড়িতে আসছেন৷ বোঝালেও বুঝতে চাইছেন না৷'
শিয়াখালা কিংবা রাজ্যধরপুর নমুনা মাত্র৷ পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে জটিলতার জেরে সারা রাজ্যেই অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ মঙ্গল-বুধবারই বহু পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ শনিবারের মধ্যে বাকিগুলির মেয়াদও শেষ হবে৷ এই অবস্থায় গ্রামে গ্রামে আর প্রশাসন বলে কিছু থাকছে না৷ সব ক্ষমতাই চলে যাচ্ছে বিডিও-দের হাতে৷ এখন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের সার্টিফিকেট নিতে বা অন্য যে কোনও দরকার ছুটতে হবে কয়েক কিলোমিটার দূরের বিডিও অফিসেই৷ সেখানে বিডিও সাহেবের দেখা পাওয়া অবশ্য যে-সে কথা নয়! স্বভাবতই দুশ্চিন্তায় লাখ লাখ মানুষ৷
তৃণমূলের প্রধানরা এই পরিস্থিতির জন্য দুষছেন বিরোধীদের৷ আর বিরোধীরা দোষারোপ করছেন শাসকদলকে৷ ভোট হবে কি না, ঠিক নেই--তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় নির্বাচনী জনসভা করে চলেছেন৷ প্রতিটি সভায় নিয়ম করে অভিযোগ করছেন, বিরোধীরা ভোট চায় না৷ আবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব কিংবা প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান প্রমুখ কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, ফল খারাপ হবে--এই আশঙ্কাতেই এখন পঞ্চায়েত ভোট করতে চাইছে না শাসকদল৷ এই চাপানউতোরে গ্রামের মানুষের কী-ই বা যায় আসে! তাঁদের এখন নাভিঃশ্বাস উঠেছে৷
পঞ্চায়েত নিয়ে যতই দুর্নীতির অভিযোগ থাকুক না কেন, গ্রামের মানুষের কাছে পঞ্চায়েত বড় ভরসা৷ ভোট নিয়ে টালবাহানায় গ্রাম-প্রশাসনের গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই ভেঙে পড়ছে৷
ছেলেকে কুকুরে কামড়েছে৷ প্রতিষেধক ইঞ্জেকশন দিতে হবে৷ হুগলির শিয়াখালা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা কানাই কর্মী এসেছিলেন প্রধানের কাছ থেকে চিঠি নিতে৷ চিঠি দেখালে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ইঞ্জেকশন মিলবে৷ সিপিএমের পঞ্চায়েত প্রধান সুরজিত্ মালিক বুধবার শেষ অফিসে এসেছিলেন৷ আগের দিনই জেলাশাসকের দপ্তর থেকে বিডিও-র মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে দিনই প্রধান এবং সদস্যদের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ কানাইবাবু প্রধানকে অনেক অনুনয় বিনয় করলেও সুরজিত্বাবুর কিছু করার ছিল না৷ তিনি কানাইবাবুকে জানিয়ে দিলেন, আর চিঠি দেওয়ার ক্ষমতা নেই তাঁর৷ হতাশ হয়েই ফিরতে হল কানাইবাবুকে৷
শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রাজ্যধরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল৷ প্রধান অসীম শীলও মঙ্গলবার একই ধরনের নির্দেশিকা পেয়েছেন বিডিও-র কাছ থেকে৷ তখন থেকেই হাত তুলে নিয়েছেন৷ বৃহস্পতিবার এক মহিলা এসেছিলেন মেয়ের জন্য ওবিসি সার্টিফিকেট নিতে৷ অসীমবাবু তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন সার্টিফিকেট দেওয়ায় তাঁর অক্ষমতা জানিয়ে৷ কী করবেন ওই মহিলা? জবাব নেই প্রধানের কাছে৷
অসীমবাবু এবং সুরজিত্বাবু--যুযুধান দুই শিবিরের প্রতিনিধিই একটা বিষয়ে কিন্ত্ত একমত৷ তাঁরা মানছেন, ভোট হয়ে নতুন পঞ্চায়েত বোর্ড তৈরি হল না, অথচ পুরনো বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সবচেয়ে সমস্যায় পড়বেন পঞ্চায়েত এলাকার সাধারণ বাসিন্দারাই৷ বাড়িতে শৌচাগার, নলকূপ তৈরির ক্ষেত্রেও প্রধানের সার্টিফিকেট লাগে৷ চাকরি বা অন্য দরকারে রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট দেওয়ারও অধিকারী পঞ্চায়েত প্রধান৷ এ রকম ছোট-বড় নানা কাজে প্রতিনিয়তই প্রধানের প্রয়োজন পড়ে৷ অসীমবাবু এবং সুরজিত্বাবু--দু'জনেরই এক কথা, 'কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হল৷ অনেকেই বাড়িতে আসছেন৷ বোঝালেও বুঝতে চাইছেন না৷'
শিয়াখালা কিংবা রাজ্যধরপুর নমুনা মাত্র৷ পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে জটিলতার জেরে সারা রাজ্যেই অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ মঙ্গল-বুধবারই বহু পঞ্চায়েতের মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ শনিবারের মধ্যে বাকিগুলির মেয়াদও শেষ হবে৷ এই অবস্থায় গ্রামে গ্রামে আর প্রশাসন বলে কিছু থাকছে না৷ সব ক্ষমতাই চলে যাচ্ছে বিডিও-দের হাতে৷ এখন পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের সার্টিফিকেট নিতে বা অন্য যে কোনও দরকার ছুটতে হবে কয়েক কিলোমিটার দূরের বিডিও অফিসেই৷ সেখানে বিডিও সাহেবের দেখা পাওয়া অবশ্য যে-সে কথা নয়! স্বভাবতই দুশ্চিন্তায় লাখ লাখ মানুষ৷
তৃণমূলের প্রধানরা এই পরিস্থিতির জন্য দুষছেন বিরোধীদের৷ আর বিরোধীরা দোষারোপ করছেন শাসকদলকে৷ ভোট হবে কি না, ঠিক নেই--তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলায় জেলায় নির্বাচনী জনসভা করে চলেছেন৷ প্রতিটি সভায় নিয়ম করে অভিযোগ করছেন, বিরোধীরা ভোট চায় না৷ আবার বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রের মতো সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব কিংবা প্রদীপ ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান প্রমুখ কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, ফল খারাপ হবে--এই আশঙ্কাতেই এখন পঞ্চায়েত ভোট করতে চাইছে না শাসকদল৷ এই চাপানউতোরে গ্রামের মানুষের কী-ই বা যায় আসে! তাঁদের এখন নাভিঃশ্বাস উঠেছে৷
পঞ্চায়েত নিয়ে যতই দুর্নীতির অভিযোগ থাকুক না কেন, গ্রামের মানুষের কাছে পঞ্চায়েত বড় ভরসা৷ ভোট নিয়ে টালবাহানায় গ্রাম-প্রশাসনের গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই ভেঙে পড়ছে৷
No comments:
Post a Comment