Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Monday, December 3, 2012

রাম মারলেও মারবে, শ্যাম মারলেও মারবে,মৃত্যূ সুনিশ্চিত, নিয়তিবদ্ধ আমরা৷রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে ধ্বংস না করে শান্ত হবেন না প্রধানমন্ত্রিত্বের নূতন দাবিদার চিদম্বরম! পলাশ বিশ্বাস

রাম মারলেও মারবে, শ্যাম মারলেও মারবে,মৃত্যূ 

সুনিশ্চিত, নিয়তিবদ্ধ আমরারাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে ধ্বংস 


না করে শান্ত হবেন না প্রধানমন্ত্রিত্বের নূতন দাবিদার 


চিদম্বরম!

আর্থিক সংস্কারের নামে একতরফা মনুস্মৃতি শাষণ চলছে, বহুজন সমাজকে অর্থব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে৷ডিজিটাল বোয়োমেট্রিক নাগরিকত্ব আইনবলে জল জমি জন্গল আজীবিকা থেকে উতখাত করা অশ্বমেধ যজ্ঞ চলছে তফসিলী জাতি উপজাতি, সংখ্যালঘু  ও সবধরনের পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিধনকল্পে৷ মনুস্মৃতি শাষনেরই সর্বাধিনায়ক হলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ব্রাহ্মণসন্তান একনিষ্ঠ চন্ডীউপাসক প্রণবমুখার্জী, যার উত্তরণ ইন্দিরার সমাজবাদ থেকে খোলা বাজারের ব্রহ্মণতন্ত্রে৷ এফডিআই জেহাদ শেষ৷ সংসদ চলবে আর্থিক সংস্কারের এজন্ডা নিয়ে৷ কেন্দ্রে বিজেপির সাম্প্রদায়িক শক্তি ও রাঝ্যে মমতার বিরোধিতার ধুয়ো তুলে খেলা বাজারের সংস্কারের এজেন্ডা কে খোলা সমর্থন দিচ্ছে বামপন্থীরা৷ আম্বেডকরবাদীরা ও সমাজবাদীরাও বিজেপির বিরোধিতার আড়ালে কংগ্রেসের জনসংহার নীতিকে সমর্থন দিচ্ছেন ৷ অথচ জায়নবাদী খোলাবাজারের সবচেয়ে বড় সমর্থক বিজেপি রাম মারলেও মারবে, শ্যাম মারলেও মারবে,মৃত্যূ সুনিশ্চিত, নিয়তিবদ্ধ আমরা


পলাশ বিশ্বাস

রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে ধ্বংস না করে শান্ত হবেন না প্রধানমন্ত্রিত্বের নূতন দাবিদার চিদম্বরম!আগামী পাঁচ বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করার কথা ঘোষনা করল কোল ইন্ডিয়া৷ কিছুদিন আগেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে তাদের উদ্বৃত্ত অর্থ বিনিয়োগ করতে নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক৷ এরপরই কোল ইন্ডিয়ার এই বিনিয়োগ পরিকল্পনা ঘোষণা প্রসঙ্গে সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস নরসিং রাও বলেন, 'আমাদের বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে৷ আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে৷'  মোক্ষম সময়ে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ালেন মায়াবতী। খুচরো ব্যবসায় এফডিআই নিয়ে ভোটাভুটি শুরুর ঠিক আগের দিনই জানিয়ে রাখলেন, তাঁর দল নীতিগত ভাবে এফডিআই-র বিরোধী। তবে বিএসপি সাংসদরা কোন পক্ষে ভোট দেবেন, তা খোলসা করেননি। জাতি উন্মুলনের আম্বেডকর মিশনকে তিলান্জলি দিয়ে মায়াবতী এখন ক্ষমতার রাজনীতিতে নিষ্ণাত।বহুজনসমাজকে একতাবদ্ধ করে বারতের ওবামা হওয়ার লক্ষ্য তাঁর নয়।জাতি উন্মুলন নয়, জাত পাঁতের মনুস্মৃতি রাজনীতিই তাঁর জমাপুঁজিতাই ভারতবর্ষে বাজারের পক্ষে করপোরেট সরকারের জনসংহার অভিযানকে প্রতিহত করতে বহুজন সমাজের নির্মাণের কোনও আশা আপাতত বৃথা

রাহুল গান্ধী নন। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে পারেন পালানিয়াপ্পন চিদম্বরম। ব্রিটিশ ম্যাগাজিন 'দি ইকনমিস্ট'-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কংগ্রেস এবং বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ সমীকরণ যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রিত্বের দ্বৈরথে নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদির বিপক্ষে দেখা যেতে পারে তামিল ব্রাহ্মণকেই। চিদম্বরমের পক্ষে একাধিক যুক্তির উত্থাপন করেও ম্যাগাজিনটির ইঙ্গিত, এ বিষয়ে শেষ কথা বলবেন সনিয়া গান্ধীই। ঘরে-বাইরে আশার আলো দেখা দিতেই পরপর দু'দিনে শেয়ার বাজারে পারদ লাফিয়ে বাড়ল৷ মঙ্গলবার মুম্বই শেয়ার বাজারের সূচক সেনসেক্স বেড়েছিল ৩২৫ পয়েন্ট৷ বুধবার বাজার বন্ধ ছিল গুরু পূর্ণিমার জন্য৷ বৃহস্পতিবার আরও ৩২৯ পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে সেনসেক্স গত ১৯ মাসে সর্বোচ্চ ১৯১৭০.৯১ অঙ্কে পৌঁছাল৷ কিন্তু প্রণবমুখার্জীকে রাইসিনা হিলে বিশ্রেমে পাঠিয়ে দুর্দান্ত করপোরেট লবিইং মারফত ভারতীয় অর্থব্যবস্থা চিদম্বরমের হাতে তুলে দেওয়ার পর থেকেই সংস্কারের রাজধানী এক্সপ্রেস টানা ছুটছে৷ উগ্রতম হিন্দুত্বের পতাকাতলে শাষকশ্রেণীর রক সলিড একতা সংস্কারর অব্যাহত করবে, টিদম্বরমের কৃতিত্বেই এই বিপ্লব ইতিমধ্যে সংগঠিত হয়েছে৤ভর্তুকির টাকা সরাসরি আধার যোঝনা মারফত ব্যান্কে জমা করার প্রকল্প আসলে অবৈধ আধার যোজনাকে মনমোহনী কৌশলে বৈধতা দেওয়ার রণকৌশল

লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে জনমোহিনী পথে হাঁটছে কংগ্রেস৷ আধার কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা ভর্তুকির টাকা সরাসরি পাবেন বলে আজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ এই নিয়মের ফলে এলপিজি, কেরোসিনে ভর্তুকি সমেত কেন্দ্রের বেশ কিছু প্রকল্পের আওতায় আসবেন গরিবরা৷ লোকসভা ভোটের আগে নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে জনমোহিনী পথে হাঁটছে কংগ্রেস৷ আধার কার্ডের মাধ্যমে গ্রাহকরা ভর্তুকির টাকা সরাসরি পাবেন বলে আজ ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ এই নিয়মের ফলে এলপিজি, কেরোসিনে ভর্তুকি সমেত কেন্দ্রের বেশ কিছু প্রকল্পের আওতায় আসবেন গরিবরা৷ 

সুদের হার কমানো নিয়ে তাঁর আর্জিতে কর্ণপাত করছে না রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সংঘাতের বাতাবরণে একলা চলেই অর্থনীতির হাল ফেরানোর সংকল্প করেছেন তিনি।

জীবনবীমার টাকা বাজারে লগ্নি হল৷কর্মচারি ভবিষত্ নিধির টাকাও শেয়ার বাজারে৷ করপোরেট সংস্থাগুলিকে ব্যান্কিংক লাইসেন্স দিলে কালোবাজারের অর্থব্যবস্থাতে জনগণের জমাপুঁজি সরাসরি ব্যান্ক থেকে চলে যাবে করপোরেট কম্পানির পুঁজি হয়ে রইল পড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি, তাঁদের জমাপুঁজি ধ্বংস না হলে একচেটিয়া করপোরেট রাজত্ব কায়েম হওয়া অসম্ভব৷হেজেমেনি বা কর্তৃত্বের শাষক জোট ও বিপক্ষ দুপক্ষই এখন উগ্রতম ধর্মরাষ্ট্রবাদের পাতাকাতলে৷ ধর্মান্ধ উগ্রতম জাতীয়তাবাদ ইজরায়েলী জায়নবাদ ও করপোরেট সাম্রাজ্যবাদের পারমাণবিক দোসর৷ হিন্দুত্বের পুনরূত্থানের সন্গে অন্গাগীভাবে জড়িত নবউদারবাদী খোলা বাজার ব্যবস্থা৷ আর্থিক সংস্কারের নামে একতরফা মনুস্মৃতি শাষণ চলছে, বহুজন সমাজকে অর্থব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করে৷ডিজিটাল বোয়োমেট্রিক নাগরিকত্ব আইনবলে জল জমি জন্গল আজীবিকা থেকে উতখাত করা অশ্বমেধ যজ্ঞ চলছে তফসিলী জাতি উপজাতি, সংখ্যালঘু  ও সবধরনের পিছিয়ে পড়া মানুষদের নিধনকল্পে৷ মনুস্মৃতি শাষনেরই সর্বাধিনায়ক হলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি ব্রাহ্মণসন্তান একনিষ্ঠ চন্ডীউপাসক প্রণবমুখার্জী, যার উত্তরণ ইন্দিরার সমাজবাদ থেকে খোলা বাজারের ব্রহ্মণতন্ত্রে৷ এফডিআই জেহাদ শেষ৷ সংসদ চলবে আর্থিক সংস্কারের এজন্ডা নিয়ে৷ কেন্দ্রে বিজেপির সাম্প্রদায়িক শক্তি ও রাঝ্যে মমতার বিরোধিতার ধুয়ো তুলে খেলা বাজারের সংস্কারের এজেন্ডা কে খোলা সমর্থন দিচ্ছে বামপন্থীরা৷ আম্বেডকরবাদীরা ও সমাজবাদীরাও বিজেপির বিরোধিতার আড়ালে কংগ্রেসের জনসংহার নীতিকে সমর্থন দিচ্ছেন ৷ অথচ জায়নবাদী খোলাবাজারের সবচেয়ে বড় সমর্থক বিজেপি রাম মারলেও মারবে, শ্যাম মারলেও মারবে,মৃত্যূ সুনিশ্চিত, নিয়তিবদ্ধ আমরা

ইতিমধ্যে আধার কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি অর্থ হস্তান্তরের কথা ঘোষণা করে কেন্দ্র কোনও রকম নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করেনি। কাল নির্বাচন কমিশনের চিঠির উত্তরে আজ একথাই জানানো হল কেন্দ্রের তরফে। জয় হোক, নাগরিক গোপনীয়তা, স্বাধীনতা ও সম্প্রভুতার হত্যাকারী ডিজিটাল বায়োমেট্রিক বহুজন বিধ্বংসক নাগরিকত্য আইন ও অসংবৈধানিক বোইনি আধার যোজনার সর্বদলীয় সহমতির 

গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের আগে আধার কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি অর্থ হস্তান্তরের কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র সরকার। গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সরকারের ঘোষণায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। কমিশনের পক্ষ থেকে গুজরাত নির্বাচনের আগে কেন্দ্রের এই রকম পদক্ষেপের ব্যাখা চেয়ে ক্যাবিনেট সচিব অজিত শেঠকে চিঠি দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছিলেন, এই চিঠির সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া না গেলে, নির্বাচনী বিধিভঙ্গের জন্য কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কমিশন। 

আজ এই চিঠিরই উত্তর দেওয়ার কথা ক্যাবিনেট সচিব অজিত শেঠের। তার আগেই সরকারের হয়ে সওয়াল করতে ময়দানে অবতীর্ণ হলেন কেন্দ্রীয় তথ্যসম্প্রচার মন্ত্রী মনীষ তিওয়ারি। তিনি জানিয়েছেন, কমিশনের কাছে কেন্দ্র সবরকম ব্যাখা দিতে প্রস্তুত। আধার কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি অর্থ হস্তান্তরের বিষয়টি প্রক্রিয়া মেনে নির্ধারিত সময়েই হয়েছে। এর সঙ্গে গুজরাত নির্বাচনের কোনও সম্পর্ক নেই। নিজের বক্তব্যের সপক্ষে যুক্তি হিসাবে তথ্যসম্প্রচারমন্ত্রী জানিয়েছেন, চলতি বছরের মার্চ মাসে বাজেট পেশের সময়ই অর্থমন্ত্রী সরাসরি টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের তরফেও গত সেপ্টেম্বর মাসেই এই বিষয়ে প্রেস বিজ্ঞতি জারি করা হয়। এর অনেক পরে অক্টোবর মাসের ৩ তারিখ গুজরাত নির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়। আগামী ১৩ ও ১৭ তারিখ গুজরাতে সাধারণ নির্বাচন। তাই এখন আধার কার্ডের মাধ্যমে সরাসরি অর্থ হস্তান্তরের বিষয়টির চূড়ান্ত ঘোষণা করে কেন্দ্র কোনও রকম নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করেনি। 

প্রসঙ্গত, এই ঘোষণার পর গত শুক্রবার কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে লালকৃষ্ণ আদবানীর নেতৃত্বে বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় তথ্যসম্প্রচারমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনকে কৈফিয়ত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণ হেনেছেন বিজেপির বিরুদ্ধেও। অর্থ হস্তান্তরের বিষয়টিতে বিজেপি এত ভয় পাচ্ছে কেন সেই নিয়েই কটাক্ষ করেছেন তিনি।

নয়া দিল্লিতে কংগ্রেস হেডকোয়াটার্স থেকে অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম ও নগ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ এই প্রকল্পটির ঘোষণা করেন। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকেই এই প্রকল্পটিকে "গেম চেঞ্জার`` আখ্যা দেওয়া হয়েছে। 

কোল ইন্ডিয়ার কাছে এ মূহুর্তে উদ্বৃত্ত ৬১ হাজার কোটি টাকা মজুদ রয়েছে৷ 'কিন্ত্ত কিছু ক্ষেত্রে চুক্তি থাকার ফলে পুরো উদ্বৃত্ত টাকা একসঙ্গে বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়৷ রেলপথ তৈরির জন্য আমরা ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ সরিয়ে রেখেছি৷' 

উত্‍পাদন কমে যাওয়ায় মোট বিনিয়োগের প্রায় অর্দ্ধেক টাকা - ২৪ হাজার ৫০০ কোটি - উত্‍পাদন বাড়াতে ব্যয় করবে কোল ইন্ডিয়া৷ দ্বাদশ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় (২০১২-১৭) একশোটিরও বেশি ভূগর্ভস্থ ও ওপেনকাস্ট খনি তৈরি করতে ২৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে৷

এছাড়া, ২২ টি নতুন কোল ওয়াশারিও তৈরি করবে কোল ইন্ডিয়া৷ বিদেশেও খনি অধিগ্রহণ করার পরিকল্পনা আছে সংস্থাটির৷ 'মোজাম্বিকে একটি খনি অধিগ্রহণ নিয়ে কথাবার্তা চলছে তবে বলার মতো বিশেষ কিছু এখনও ঘটেনি,' বলে জানান রাও৷ বিদেশে কয়লা খনি অধিগ্রহণের উদ্দেশ্যে যৌথ উদ্যোগে গঠিত সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কোল ভেঞ্চারস প্রাইভেট লিমিটেড থেকে কোল ইন্ডিয়ার বেড়িয়ে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বিষয়ে শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ 

বিদেশে সম্পদ অধিগ্রহণের জন্য ইতিমধ্যেই কোল বিদেশ নামে একটি সংস্থা কোল ইন্ডিয়ার হয়ে কাজ করে৷ এই মূহূর্তে ওএনজিসি, গেইল, এনটিপিসি, সেল এবং ভেল সমেত ২৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছে ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা অব্যবহূত রয়েছে৷ 

 বিলগ্নিকরণে এখনও পর্যন্ত মোট ৯৩২ কোটি টাকা তুলতে পেরেছে সরকার৷ রাজ্যসভায় বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম৷ ২০১২-১৩ অর্থবর্ষে বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে মোট ৩০ হাজার কোটি টাকা তোলার লক্ষ্য কেন্দ্রীয় সরকারের৷ এখনও পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩.১ শতাংশ তুলতে পারলেও আগামী পাঁচ মাসে লক্ষ্যপূরণ হবে বলে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী৷ 

এদিন অর্থমন্ত্রী চিদম্বরম জানান, চলতি আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত ন্যাশনাল বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (এনবিসিসি)-র ১০ শতাংশ ও হিন্দুস্তান কপারের প্রায় ৬ শতাংশ অংশীদারিত্ব বিক্রি করেছে সরকার৷ এনবিসিসি-র মালিকানা বিক্রি করে পাওয়া গেছে ১২৪.৯৭ কোটি টাকা এবং হিন্দুস্তান কপারের শেয়ার বিক্রিতে কোষাগারে এসেছে ৮০৭.০২ কোটি টাকা৷ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ৩০,০০০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে৷ 

গত সন্তাহে হিন্দুস্তান কপারের ৫.৫৮ শতাংশ শেয়ারের গড় দাম দাঁড়ায় ১৫৭ টাকা৷ মূলত এলআইসি ও বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক এইচসিএলের শেয়ার কিনে নেয়৷ এ ছাড়াও এনএমডিসি-র ১০ শতাংশ, এমএমটিসি-র ৯.২ শতাংশ ও এনটিপিসি-র ৯.৫ শতাংশ বিলগ্নিকরণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার৷ অন্যদিকে, নালকো-র ১২.১ শতাংশ বিলগ্নিকরণেও ক্যাবিনেটের অনুমতি মিলেছে৷ 

রান্নার গ্যাসে ভর্তুকিতে কাটছাঁট করে আর্থিক সংস্কারের কথা বারবার বলছে ইউপিএ সরকার। কিন্তু ভর্তুকি দেওয়া এলপিজি সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ছটায় বেঁধে দিয়ে শুধু বিরোধীদের থেকে নয়, আপত্তি এসেছে দলের মধ্যে থেকেও। ঘরে-বাইরে চাপের মুখে পড়ে বছরে পরিবারপিছু ভর্তুকির সিলিন্ডারের সংখ্যা কিছুটা বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে সরকার। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায় নিজের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করলেন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। রবিবার একটি সাক্ষাত্‍কারে চিদম্বরম বলেন যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব তাঁর নয়, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের। 

অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছেন, "বছরে পরিবারপিছু ভর্তুকি দেওয়া ছটি সিলিন্ডার সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া হয়েছিল। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের থেকে আসা প্রস্তাবের ভিত্তিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন যদি তাঁরা মনে করেন, সিদ্ধান্ত পালটানো প্রয়োজন, সেটাও তাঁদের দায়িত্ব।" তবে সাবধানী অর্থমন্ত্রী এ দিন মনে করিয়ে দিয়েছেন দেশের আর্থিক দুরবস্থার কথাও। শুধু জনমোহিনী নীতির চাপে সরকারের ভাঁড়ারে যে অতিরিক্ত টান পড়বে পরোক্ষে তার ইঙ্গিত দেন অর্থমন্ত্রী। চলতি আর্থিক বছরে শুধুমাত্র জ্বালানিতে ভর্তুকি দিতে গিয়ে সরকারের আশি হাজার থেকে এক লক্ষ কোটি টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। চিদাম্বরম বলেছেন, "আমি শুধু এ কথাই বলতে চাই, এই মুহূর্তে সরকারের আর্থিক অবস্থা মোটেও ভালো না। আমি নিশ্চিত পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক যে সিদ্ধান্তই নিক না কেন, এ বিষয়টি মাথায় রেখেই নেবে।" 

সাধারণ ভাবে একটি ভর্তুকি দেওয়া ১৪,২ কিলোগ্রামের সিলিন্ডারের দাম হয় ৪১০. ৫০ টাকার মতো। বর্তমান নিয়মে বছরে ছটার বেশি যে কোনও সংখ্যক সিলিন্ডারের জন্য গ্রাহককে গুনতে হবে এর দ্বিগুনেরও বেশি টাকা। সূরযকুণ্ডে কংগ্রেসের সাম্প্রতিক সমাবেশেও এ বিষয়ে আপত্তি ওঠে। ভর্তুকিযুক্ত সিলিন্ডারের সংখ্যা বছরে ছয় থেকে বারোতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দাবি জানান কংগ্রেসের অনেক নেতাই। এমনকি পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বীরাপ্পা মইলিও এ কথা স্বীকার করেন যে ভর্তুকিতে কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত তাঁর পূর্বসূরী জয়পাল রেড্ডির আমলে নেওয়া হয়েছিল। এর ফলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলেও মেনে নেন তিনি। মইলি বলেন, "কিছু অংক কষে ওঁরা বুঝেছিলেন যে বছরে ছটা সিলিন্ডার হলেই চলে যায়। কিন্তু রসায়নটা বোঝেননি।" 


শুক্রবার জানা যাবে চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে মোট জাতীয় উত্‍পাদন কী হারে বেড়েছে৷ প্রথম ত্রৈমাসিকে এই হার ছিল ৫.৫ শতাংশ৷ বিশেষজ্ঞদের অনুমান, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে সেটা ৫.১ শতাংশে নামতে পারে৷ এক নজরে এই সংখ্যা হতাশাজনক মনে হলেও, আশার কথা এই যে এমনটা হলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওপর চাপ বাড়বে সুদের হার কমানোর৷ ডিসেম্বরেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঋণনীতির পর্যালোচনা করবে৷ তখনই আরবিআই সুদের হার কমাতে পারে৷ 

আর ডিসেম্বরে সুদের হার কমার গন্ধ পেলেই বিনিয়োগকারীরা দ্বিগুণ উত্সাহে শেয়ার কেনার জন্য ঝাঁপাবে৷ পরিসংখ্যান বলছে, ডিসেম্বরে শেয়ার বাজারে সাধারণত ঊর্ধমুখী থাকে৷ তবে, এবছর ডিসেম্বরের গুরুত্ব একটু আলাদা৷ কারণ, মার্কিন মুলুকে আর্থিক দুরারোহন (ফিসক্যাল ক্লিফ) এড়ানো নিয়ে এমাসের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে৷ 

বৃহস্পতিবার শেয়ার বাজার লাফানোর একটা বড় কারণ ফিসক্যাল ক্লিফ নিয়ে মার্কিন মুলুকে বড়দিনের আগেই সাম্ভাব্য ঐক্যমত তৈরি হতে পারে বলে একটা আশার আলো দেখা গেছে৷ মঙ্গলবার গ্রিসের ঋণ পাওয়ার জট কাটায় ইউরোজোন থেকে খানিকটা স্বস্তির হাওয়া এসে লেগেছিল শেয়ার বাজারে৷ 'বিশ্ব অর্থনীতির অবস্থা ২০১১ সালের পর এই মূহূর্তে সবচেয়ে ভালো,' মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷ ঘরের আকাশেও রাজনৈতিক অচলাবস্থার যে বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল নভেম্বরের ২২ থেকে সেটা কেটে গেছে ইউপি সরকার বহুব্র্যান্ড খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে সংসদে আলোচনা ও দরকার পড়লে ভোটাভুটি করতে৷ সরকারের এই রাজি হওয়ায় একটা বিষয় পরিষ্কার যে ভোট হলেও সরকার পক্ষের জয় নিয়ে কংগ্রেস সন্দিগ্ধ নয়৷ বিনিয়োগকারীদের কাছে এর অর্থ, সরকার এবার অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় বিলগুলি সংসদে পাশ করিয়ে নিতে পারবে৷ 

অনেক শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞ মনে করছেন আগামী বছর শেয়ার সূচক ২১,০০০ ছাড়িয়ে যাবে৷ 

গোল্ডম্যান স্যাক্সের মতো সংস্থা জানিয়ে দিল, আগামী বছর ভারতের মোট জাতীয় উত্পাদন ৬.৫ শতাংশ হারে বাড়বে৷ ফলে, ভারতের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার এখন উপযুক্ত সময়৷ মঙ্গলবার রেটিং সংস্থা মুডিজও জানায় যে ভারতের রেটিং কমানো নিয়ে কোনও সম্ভাবনা তারা দেখছে না৷ 'সেনসেক্স এত তাড়াতাড়ি ১৯,০০০ পেরোবে ভাবা যায় নি৷ আগামী মাসগুলিতে বাজার আরও ভালো হবে,' বলেন মোতিলাল অসওয়াল মিউচুয়াল ফান্ডের ফান্ড ম্যানেজার মনিশ সোন্থালিয়া৷ 

শেয়ারের দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের লাভ হয়েছে ৮০,০০০ কোটি টাকারও বেশি৷ রিয়েলটি, ব্যাঙ্ক, অটো এবং মূলধনী দ্রব্যের প্রস্ত্ততকারক সংস্থাদের শেয়ার কেনার চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি৷ 

 একসময়ের দাঙ্গার স্মৃতিকে দূরে সরিয়ে রেখে উন্নয়নকে সঙ্গী করেছে। ২০০২ আর ২০১২, এই ১০ বছরে সবরমতীর জল যেমন ঘোলাটে হয়েছে, গুজরাত রূপকার নরেন্দ্র মোদীকে কেন্দ্র করে খানিকটা বিবর্তিতও হয়েছে জাতীয় রাজনীতি। সাধারণ নির্বাচন আবার দরজায় কড়া নাড়ছে। চতুর্দশ লোকসভা নির্বাচনের যখন আর ১৮ মাসও বাকি নেই, তখন খোদ সুষমা স্বরাজের মতো বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের চোখে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখা নিঃসন্দেহে অনেকগুলো রাজনৈতিক সমীকরণকে মিলিয়ে দেয়।

ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বর তরফে এটাই সম্ভবত প্রথম ও ইঙ্গিতবাহি পদক্ষেপ। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোদীই যে বিজেপির তুরুপের তাস তা স্পষ্ট সুষমা স্বরাজের কথাতেই। গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে বদোদরায় এসে সুষমা স্বরাজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন, "দ্বিতীয় কেউ নন, মোদীই যোগ্য প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী।" তবে কি দেশের শীর্ষ ক্ষমতায় বসার দৌড়ে গুজরাত মুখ্যমন্ত্রীকেই এগিয়ে রাখছে তাঁর দল? সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সুষমা বলেন, "সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।" মোদীর তারিফ করতে গুজরাটের উন্নয়নের খতিয়ানকেই তুলে ধরেছেন লোকসাভার বিরোধী দলনেত্রী। গুজরাতের উন্নয়নকে বরাবর প্রাধান্য দিয়ে আসা মোদী তাঁর নির্বাচনী প্রচারে এনেছেন থ্রি-ডি চমক। একটি স্টুডিও থেকে ক্যামেরাবন্দি হচ্ছে মোদীর ভাষণ। একই সময়ে সেই প্রচার দেখানো হচ্ছে একাধিক জনসভায়। এক ব্রিটিশ সংস্থার সঙ্গে এই থ্রিডি প্রচারের চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৪ অবধি ওই সংস্থাটি আর কোনও সর্বভারতীয় নেতার প্রচার করতে পারবে না। থ্রিডি অবয়বে মোদী হাততালিও কুড়োচ্ছেন ভালই। এমনই একটি জনসভার হোর্ডিংয়ে রাজ্যবাসীর কাছে আরও ৫ বছর সময় চেয়েছেন মোদী। অন্যদিকে, প্রত্যেকটি প্রচার কর্মসূচীতে মোদীর নিশানা এড়াতে পারেনি দিল্লি। মোদীর ভাষায়, "গত ১১ বছর ধরে গুজরাট ও গুজরাটবাসীদের সম্মানহানির চেষ্টায় লাগাতার প্রচার চলছে। গোটা বিশ্ব যখন গুজরাট প্রসঙ্গে কথা বলে, তখন তার বিষয় থাকে শুধুই উন্নয়ন। কিন্তু দিল্লির প্রসঙ্গ এলেই, বিষয় হয় দুর্নীতি।"

বিজেপির তারকা নেতা নভজ্যোত সিং সিধুর ঝাঁঝাল বক্তব্য একদিকে যেমন উন্মাদনা এনেছে দলীয় কর্মীদের মধ্যে, তেমনই মোদী বিরোধীদেরও কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। গুজরাটে বিজেপির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারী তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কেশুভাই প্যাটেলকে 'দেশদ্রোহী' বলে কটাক্ষ করেছেন সিধু। প্যাটেলের নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রচারে গিয়েই জন সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন সিধু। এসবের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে পারদ চড়ছে মোদীগড়ে। রাজনৈতিক দূরদর্শীরা বলছেন, মোদীর পা গুজরাতের মাটিতে থাকলেও, চোখ দিল্লিতে। সুষমার ইঙ্গিত যদি সত্যি হয়, সেক্ষেত্রে গুজরাতের ভোট মোদীর কাছে মক-টেস্ট। উন্নয়েনের পরীক্ষায় গুজরাটের মানুষ তাঁকে কত নম্বর দেয় সেটা যেমন দেখার, তেমনই নজর রাখতে হবে ভাটনগরের মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মানুষটিকে কেন্দ্র করে দিল্লির রাজনীতি কতটা বিবর্তিত হয় সেই দিকেও।

 এফ ডি আই নিয়ে সংসদে ভোটাভুটিতে এখনও কংগ্রেস বা ইউ পি এ-কে সমর্থনের কোনো আশ্বাস দেয়নি সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি। রবিবার এক বেসরকারী টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে নিজেই একথা জানালেন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কমলনাথ। তবে তা সত্ত্বেও তাঁর দাবি, এফ ডি আই নিয়ে ওই গুরুত্বপূর্ণ ভোটাভুটিতে সংসদের উভয় কক্ষেই জেতার জন্য প্রয়োজনীয় 'সংখ্যা' পেয়ে যাবে বলে সরকার নিশ্চিত। কমলনাথের যুক্তি, সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি দায়িত্বশীল দল এবং তাই ওই দুই দল সরকারের পক্ষে ভোট দেবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তাঁর আশা, এফ ডি আই নিয়ে ওই দুই দল বি জে পি-র রাজনীতির পক্ষে ভোট দেবে না।

উল্লেখ করা যেতে পারে, খুচরো বাণিজ্যে এফ ডি আই'র বিরোধিতা করে সংসদে এনিয়ে আলোচনা ও ভোটাভুটির জন্য প্রথম নোটিস কিন্তু বামপন্থীরা দিয়েছে, বি জে পি নয়। কমলনাথ এদিন সুকৌশলে সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেছেন। উলটে তিনি খুচরো বাণিজ্যে এফ ডি আই'র বিরোধিতা মানে বি জে পি-কে সমর্থন জানানো, এমন একটি চাল দিয়েছেন। মনে করা হচ্ছে, তিনি ভেবেচিন্তেই বি জে পি-র নাম করেছেন, যাতে বি জে পি-জুজু ও মুসলিম ভোটব্যাঙ্কের ভয় দেখিয়ে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টিকে সরকারের পক্ষে ভোট দিতে বা ভোটাভুটিতে বিরত থাকতে বাধ্য করা যায়।

এর আগে ইউ পি এ-র শরিকদের মধ্যে ডি এম কে এই প্রশ্নে সরকারের পক্ষে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। কংগ্রেসের তরফে সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির সঙ্গে বেশ কয়েক দফা আরজি জানানো হলেও দুই দলের কেউই অন্তত প্রকাশ্যে সরকারকে সমর্থনের কথা দেয়নি। আবার লোকসভায় ইউ পি এ-র গরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভায় নেই। এই অবস্থাতেই এফ ডি আই নিয়ে সংসদে ভোটাভুটিতে যেতে হচ্ছে সরকারকে। স্বভাবতই বেসরকারী টিভি চ্যানেলের ওই অনুষ্ঠানে কমলনাথকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এফ ডি আই নিয়ে সংসদে ভোটাভুটিতে সরকার গরিষ্ঠ সংখ্যক সাংসদের সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে কতটা আশাবাদী। তার উত্তরেই তিনি এফ ডি আই-কে কেন্দ্র করে নীতিগত প্রশ্নটিকে পিছনে ঠেলে দিয়ে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিকে ব্যবহার করে সংসদে বৈতরণী পার হওয়ার লক্ষ্যে বি জে পি-র নাম ছুঁড়ে দিয়েছেন, এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

তিনি এদিন এইসঙ্গেই দাবি করেছেন, খুচরো বাণিজ্যে এফ ডি আই সংক্রান্ত ফেমা (বিদেশী মুদ্রা পরিচালনা আইন)-র বিধি সংশোধনের জন্য লোকসভার অনুমতিই যথেষ্ট। রাজ্যসভায় তা অনুমোদিত না হলেও ওই সংশোধনী প্রয়োগে অসুবিধা হবে না। প্রসঙ্গত, এর আগে রাজ্যসভায় সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকাকে ইঙ্গিত করে সি পি আই (এম) নেতা সীতারাম ইয়েচুরি জানিয়ে দিয়েছেন, ফেমা-র সংশোধনীতে সংসদের উভয় কক্ষেরই সম্মতি দরকার। সরকার তা না পেয়েও যদি ওই সংশোধনী প্রয়োগ করতে যায়, তাহলে আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে। কমলনাথ সে সম্পর্কে বলেছেন, যে কেউ আদালতে যেতে পারেন। সরকার বুঝে নেবে। কমলনাথের এই বক্তব্যে অবশ্য স্পষ্ট যে, রাজ্যসভায় গরিষ্ঠতা না থাকার বিষয়টি তাঁদের চিন্তায় রেখেছে। তাই ফেমার ক্ষেত্রে সরকার সংসদের উচ্চকক্ষকে এড়িয়ে যেতে চাইছে। খুচরো বাণিজ্যে এফ ডি আই-কে অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভোটাভুটিতেও যে রাজ্যসভাই সরকারের গলার কাঁটা, এই মন্তব্য করে তাও প্রকারান্তরে মেনেই নিলেন ইউ পি এ সরকারের সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী।

২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন রাহুলই। এমন একটি ধারণাকে অনিবার্য পরিণতি ধরে যাঁরা এগোচ্ছেন, 'দি ইকনমিস্ট'-এর ব্যাখ্যা এগিয়েছে ঠিক তার উল্টো স্রোতে। নেহরু-গান্ধী পরিবারের 'উত্তরাধিকার' যে রাজীব-তনয়ের হাতেই সমর্পিত হবে, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয়ী নন কংগ্রেসের কোনও মহলের নেতা-ই। অথচ, ঘটনা হল, রাহুল নিজে এখনও সরকারের গুরুদায়িত্ব নিতে রাজি নন। তাঁর মনোযোগ সংগঠনে। প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে, 'ভারতীয় রাজনীতির সর্বোচ্চ পর্যায়ের যোগ দেওয়ার জন্য রাহুল কবে সাহসী হবেন, সেটা তাঁর অন্ধসমর্থকরাও এখন বলতে পারছেন না।' রাহুল গান্ধীর সমালোচনা করে লেখা হয়েছে, 'এখনও পর্যন্ত দেখে মনে হয়নি রাজনীতিকের যোগ্যতা বা খিদে, কোনওটাই রাহুলের রয়েছে। উনি লাজুক। সাংবাদিক, জীবনীকার, শরিক বা শত্রু-- কারও সঙ্গেই তাঁকে কথা বলতে দেখা যায়নি। সংসদেও চুপচাপ।' 

'দি ইকনমিস্ট' বলছে, এর ফলে নেপথ্যে থেকে সরকার পরিচালনার কাজে বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প খুঁজতে হবে সনিয়াকে। আর সেখানেই পত্রিকাটির বিশ্লেষণে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই সনিয়ার কাছে চিদম্বরমের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বেড়েছে-- 'মনে করা হত, দীর্ঘ দিনের ক্যাবিনেট মন্ত্রী, যাঁর ইংরেজি উচ্চারণ অভিজাত এবং নিজস্ব কোনও ভোটব্যাঙ্ক নেই, তাঁর পক্ষে দল বা সরকারের সর্বোচ্চ পদ পাওয়া সম্ভব নয়। তবে, যে দিন থেকে তিনি অর্থমন্ত্রকে এসেছেন, সে দিন থেকেই তাঁর ভাগ্য উজ্জ্বলতর হয়েছে।' 

ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে চিদম্বরমের স্বচ্ছ ধারণা তাঁকে বাকিদের থেকে এগিয়ে রেখেছে। যে ভাবে তিনি সরকারের বিভিন্ন সংস্কারমুখী প্রকল্পগুলির রূপায়ণে তত্‍পর হয়েছেন, তাতে চিদম্বরমই বাড়তি ভরসা জোগাচ্ছেন কংগ্রেস সভানেত্রীকে। শুধু তা-ই নয়, ক্যাশ ট্রান্সফার স্কিম (সিটিএস) বা নগদ হস্তান্তর প্রকল্পের প্রধান স্থপতি হিসেবে দেখা হচ্ছে চিদম্বরমকে। প্রথম ইউপিএ সরকারের ক্ষেত্রে এমজিএনআরইজিএ (চলতি কথায় যার পরিচয় এমজিনারেগা) যেমন ভোটজয়ী প্রকল্পে রূপান্তরিত হয়েছিল, কেন্দ্রের আশা, দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের ক্ষেত্রে সেই পরশপাথর হবে সিটিএস। ঘটনাচক্রে, 'দি ইকনমিস্ট'-এর ব্যাখ্যায়, চিদম্বরমের ক্ষেত্রেও জাদুকাঠির কাজ করেছে এই সিটিএস-ই। 

এ ছাড়া সনিয়ার প্রতি চিদম্বরমের আনুগত্যের কথাও বলা হয়েছে 'দি ইকনমিস্ট'-এর প্রতিবেদনে। দুর্নীতির 'বিরক্তিকর' অভিযোগ থেকে নিষ্কৃতি পেতে চিদম্বরমের সনিয়ার উপর ভরসা করা ছাড়া গতি নেই, এ কথা বলেও প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, 'অন্যান্য অনেক নেতার মতো তিনি নেহরু-গান্ধী পরিবারের চাটুকার নন। ১৯৯৬ সালে তিনি দলত্যাগ করেছিলেন, ফিরে আসেন ২০০৪ সালে। তিনি এ-ও মনে করেন না, কংগ্রেস চালাতে নেহরু-গান্ধি পরিবারের কেউ অপরিহার্য। এ ক্ষেত্রে তিনি ১৯৯০-এর দশকের প্রসঙ্গ তুলে বলে থাকেন, সে সময়ে এই পরিবারের কেউ না-থাকা সত্ত্বেও কংগ্রেস চলেছিল।' 

ব্রিটিশ পত্রিকাটির বক্তব্য, অভ্যন্তরীণ জটিলতা যা-ই থাক, বিজেপি শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদিকেই প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বেছে নেবে (ইতিমধ্যেই সুষমা স্বরাজের মন্তব্যে সে জল্পনা গতিও পেয়েছে)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জয়ের আশা করলেও, জাতীয়স্তরে মোদির সাম্প্রদায়িক ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। উল্টোদিকে, দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে তাঁর আর্থিক নীতিই সবচেয়ে প্রশংসিত। গুজরাটের উন্নয়ন সে কথা বলছে। 

মোদির এই মূল্যায়নের পর 'দি ইকনমিস্ট'-এর উপসংহার, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচন শেষ পর্যন্ত দুই অর্থনীতির লড়াইয়ে পর্যবসিত হতে পারে। যার একদিকে চিদম্বরমের সংস্কারমডেল, আর অন্য দিকে মোদির গুজরাট মডেল। 

দিনকয়েক আগেই সনিয়া-মনমোহনদের রক্তচাপ বাড়িয়েছিলেন 'নেতাজি'। তাঁর পর এবার 'বহেনজি'। কেউই আস্তিন থেকে তাস বের করলেন না। ইঙ্গিত যা, তাতে এই তাস লুকনো থাকতে পারে সংসদে ভোটাভুটি পর্যন্ত। আর চাপ যে বেড়েছে, বোঝা গেল কিছু ক্ষণ পরই। দিল্লি থেকে লখনউয়ে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কমলনাথের বার্তা গেল, সরকারি চাকরিতে তফশিলি জাতি/উপজাতির সংরক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি সংবিধান সংশোধনী বিল আনতে কেন্দ্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সমর্থনের শর্ত হিসেবে এটিই কেন্দ্রের সামনে পেশ করেছেন মায়াবতী। 

মুলায়ম সিং যাদব ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তিনি 'উপযুক্ত সুযোগে'র অপেক্ষা করবেন। আর সোমবার বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী কুমারী মায়াবতীও ঝুলিয়ে রাখলেন সনিয়া-মনমোহনদের। খুচরো ব্যবসায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের তীব্র বিরোধিতা করেও তিনি বলেছেন, সাম্প্রদায়িত শক্তিকে ক্ষমতায় আসা থেকে ঠেকিয়ে রাখাই তাঁর অগ্রাধিকার। তবে সংসদে কোন পক্ষে তাঁর দল ভোট দেবে, সে প্রশ্নের জবাবে 'বহেনজি'র সাফ উত্তর, 'সেটা সংসদেই দেখা যাবে।' 

সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মায়াবতী বলেছেন, 'বিদেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন। কিন্তু এটাও দেখতে হবে, কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। যদি ঘরোয়া বাজারে এফডিআই আঘাত হানে, তা হলে সেটা দুশ্চিন্তার বিষয়।' স্থানীয় উত্‍পাদন ব্যবহারের বিষয়টি বাধ্যতামূলক না-করে খুচরো ব্যবসায় এফডিআই নিয়ে এগোনো ঠিক হবে না বলে এদিন কেন্দ্রকে সতর্ক করে দিয়েছেন মায়াবতী। তিনি জানিয়েছেন, দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের মতো তাঁর দলও মনে করে খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগে কৃষক, ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ী এবং ক্ষুদ্রশিল্প মার খাবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে নিম্ন এবং মধ্যবিত্তদের উপর। মায়াবতী মনে করেন, সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে, বিদেশি বহুজাতিক সংস্থাগুলির দাসত্ব করতে হবে দেশকে। 

মায়াবতীর আশঙ্কা, 'ক্ষুদ্র কৃষকদের অবস্থা হবে সবচেয়ে করুণ। ওঁদের বাঁচাই মুশকিল হবে। এ ছাড়াও সাধারণ মানুষ মনে করেন, বাইরে থেকে শস্তা জিনিস এনে এদেশের বাজার ভরিয়ে দেবে সংস্থাগুলি।' কেন্দ্রের বক্তব্যের সারবত্তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মায়াবতী, '১০ লক্ষের বেশি জনসংখ্যা রয়েছে, এমন শহরেই সংস্থাগুলি কাজ করবে। অথচ, ঘটনা হল, সংস্থাগুলি নিজেরাই শুধুমাত্র এ ধরনের শহরে কাজ করতে চায়।' কেন্দ্রকে তাঁর পরামর্শ, 'কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলিতে আগে এফডিআই চালু করা হোক। একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে তার প্রভাব দেখার পরই বাকি রাজ্যগুলি সিদ্ধান্ত নিক। কিন্তু আপাতত একটা কথাই বলতে পারি, এফডিআই নীতির কোনও সুফল দেখতে পাচ্ছি না। আমরা এর বিরোধী।' 

এর পরই অবশ্য ভারসাম্যের তাসটি বের করেন মায়াবতী। বলেন, 'এফডিআই নীতির একটি ভালো দিক হল, রাজ্যগুলির উপর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। তবে এফডিআই নীতির বিরোধিতা করতে গিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আমাদের হাত মেলাতে হচ্ছে কি না, সেটা ভেবে দেখতে হচ্ছে। তাই, ভোটাভুটিতে আমাদের অবস্থান সংসদে ভোটের দিনই জানা যাবে।' 

মায়াবতী চাপ বাড়াতেই কাজ হয়। সাংবাদিক বৈঠকের ঠিক পর পরই নয়াদিল্লিতে মায়াবতীর অবস্থান প্রসঙ্গে কমলনাথ বলেন, 'সরকার সংবিধান সংশোধনী বিল আনবে। আমদের দায়বদ্ধাতা আছে।' মঙ্গলবার থেকেই সংসদে খুচরো ব্যবসায় এফডিআই নিয়ে আলোচনা শুরু। তার আগে মায়াবতীর মন রক্ষায় তত্‍পর হয়েছে কংগ্রেস। সেই সঙ্গে সংসদের বাইরেও শুরু হয়ে গিয়েছে প্রচার। কমলনাথ বলেছেন, 'আমরা যা নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি, তা সম্পূর্ণ ভাবে রাজনৈতিক। আমরা সব রাজনৈতিক দলের কাছে অনুরোধ করব, এই বিতর্কের নেপথ্যে রাজনীতিটাকে চিহ্নিত করুন এবং তার বিরুদ্ধে ভোট দিন। বিজেপি-র রাজনীতিকে সংসদ খারিজ করবে।' 

দরিদ্রদের থেকেই নতুন মধ্যবিত্ত শ্রেণির উত্থানের বার্তা দিয়ে গুজরাট নির্বাচনের ইস্তেহার প্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদি। আর সেই সঙ্গেই আরও জোরালো ভাবে উজিয়ে উঠল মুখ্যমন্ত্রী থেকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তাঁর উত্তরণের সম্ভাবনা। কেননা, সুষমা স্বরাজের পর এবার লালকৃষ্ণ আডবানি স্বয়ং মোদির হয়ে সওয়াল করেছেন। শুধু তা-ই নয়, বিজেপি সভাপতি নীতিন গড়করির মন্তব্যেও মোদির পক্ষে সমর্থনের সুর স্পষ্ট। 

আডবানি বলেছেন, নেতৃত্বের 'রোল মডেল' হলেন মোদি, অন্যান্য রাজ্যগুলির সেই মডেল অনুসরণ করতেই পারে। মোদির কার্যকারিতা গুজরাটের গণ্ডিতে আটকে না-রেখে আডবানি তা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন গোটা দেশেই, 'নরেন্দ্র মোদির মতো যোগ্য নেতা পেয়ে গুজরাটের মানুষ আশীর্বাদধন্য। আমার বলতে কোনও দ্বিধা নেই, দেশের সব নেতাদের কাছে মোদিই হলেন রোল মডেল।' পাশাপাশি মোদির নেতৃত্বে গুজরাটের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন গড়করিও। 

এদিকে ভোটের মাত্র ১০ দিন আগে দলের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করলেন নরেন্দ্র মোদি। ইস্তেহার প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, 'সাধারণত লোকে একে ইস্তেহার বলে থাকেন। আমি বলব 'সংকল্প পত্র'। যেখানে বর্ণিত হয়েছে গুজরাটের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা।' গৃহ-নির্মাণে গুরুত্ব দিয়ে মোদির প্রতিশ্রুতি, 'গত ১০ বছরে বিজেপি ২২ লক্ষ গৃহ নির্মাণ করেছে। আগামী পাঁচ বছরে আরও ৫০ লক্ষ বাড়ি তৈরি করব। কংগ্রেস তার মেয়াদে মাত্র ১০ লক্ষ বাড়ি তৈরি করতে পেরেছে।' কৃষিক্ষেত্রে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে মোদি বলেছেন, 'গুজরাটে কৃষিক্ষেত্রেই সর্বাধিক কর্মসংস্থান হবে। আগামী পাঁচ বছরে গুজরাট আবার দেশের বস্ত্রশিল্প রাজধানী হয়ে উঠবে।' 

লোকসভা নির্বাচনে সম্ভাব্য জোট নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী কংগ্রেস। জানুয়ারিতে দলের চিন্তন শিবিরে সেই আলোচনা বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে ইঙ্গিত মিলছে। কেন্দ্রে সরকারের দুর্নীতি এবং জনবিরোধী নীতিতে সরকারের জনবিরোধী পদক্ষেপে দলের জনবিচ্ছিন্নতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চিন্তিত কংগ্রেস। 

রাজস্থানের জয়পুরের চিন্তন শিবিরে বসছে কংগ্রেস। সময়ে লোকসভা ভোট হলে তার আর দেরি আছে আঠারো মাস। কিন্তু, কেন্দ্রে ইউ পি এ জোটে ভাঙন ধরেছে। জোট ছেড়েছে তৃণমূল। দূরত্ব বাড়ছে ডি এম কে'র সঙ্গে। প্রাথমিকভাবে একলা চলো'র নীতি নিলেও আখেরে তাতে লাভ হচ্ছে না বলে মনে করছে দলের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। রান্নার গ্যাসে ভরতুকি কমানোতে ক্ষোভ রয়েছে দলীয় স্তরেই। আবার খুচরো ব্যবসায় বিদেশী বিনিয়োগের নীতিতে সম্মতি পেতে সংসদে হিমশিম খাচ্ছে মনমোহন সিং সরকার। সরকারকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিলেও তা যে অনিচ্ছায় স্পষ্টই জানিয়েছেন ডি এম কে প্রধান এম করুণানিধি। 

কংগ্রেস সূত্রে বলা হয়েছে, হরিয়ানার সুরজকুণ্ডের বৈঠকে দল এবং সরকারের সমন্বয় গুরুত্ব পেয়েছে। তার ফলে রাহুল গান্ধীকে মাথায় রেখে গড়া হয়েছে সমন্বয় কমিটি। তার অধীনে রয়েছে আবার তিনটি সাব গ্রুপ। যদিও, রাহুল এবং সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বুঝিয়েই দিয়েছেন যে বিদেশী বিনিয়োগ এবং ভরতুকি ছাঁটাইয়ের নীতিতে সমর্থন জানিয়েই প্রচারে নামবে কংগ্রেস। মন্দার আবহ থেকে লক্ষণীয় বৃদ্ধির হারে ফেরার লক্ষ্যকেই গুরুত্ব দেওয়া হবে প্রচারে। কিন্তু, একতরফা কৌশল নিয়ে ভোট লড়া যে সম্ভব নয় তা টের পাচ্ছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। যে কারণে প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনিকে মাথায় রেখে একটি সাব গ্রুপ তৈরি হয়েছে যা আলোচনা করবে নির্বাচনী জোটের সম্ভাবনা নিয়েই। কংগ্রেস নিশ্চিত, একার জোরে সরকার গড়া যাবে এমন দাবি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য হবে না। 

কংগ্রেস নেতা এবং কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী চিদাম্বরম এই প্রসঙ্গে জানিয়েই দিয়েছেন যে জোট গঠন অবশ্যম্ভাবী। না হলে সরকার গঠনের সম্ভাব্য দাবিদারই হতে পারবে না কংগ্রেস। চিদাম্বরমের ব্যাখ্যা, আমাদের বাস্তব বিবেচনায় রাখতেই হবে। বাস্তব হলো, রাজ্যস্তরে বহু রাজনৈতিক দল রয়েছে। যাদের সঙ্গে জোট গড়তেই হবে। ভোটের আগে জোট না গড়া হলে ভোটের পর তো জোট গড়তেই হবে। গোটা দেশে একটি দু'টি বাদে সব সরকারই চলছে জোটের ভিত্তিতে। 

আগে থেকেই হিসেব করার অন্যতম কারণ জোটসঙ্গী পাওয়ার সমস্যা। কোন কোন দল কংগ্রেসের হাত ধরতে শেষপর্যন্ত রাজি হবে? উত্তর প্রদেশের প্রধান দুই দল সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজ পার্টি কেন্দ্রে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকারের সমর্থক ঠিকই। কিন্তু, উত্তর প্রদেশ নির্বাচনে জোট তো পরের কথা, এমনকি কংগ্রেসের সঙ্গে আসন বোঝাপড়ার সম্ভাবনাও রাখেনি এই দুই দল।

২০০৯সালের নির্বাচনে লোকসভায় কংগ্রেসের আসন বেড়েছিল। সেই নির্বাচনে ২০০-র বেশি আসন পেয়ে তুলনায় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল কংগ্রেস। সামনের নির্বাচনে আসন খোয়ানো প্রায় অনিবার্য বলেই মনে করছে দলের বড় একটি অংশ। বিশেষত উত্তর প্রদেশের ফলাফলে হতাশ কংগ্রেস। লোকসভায় এই রাজ্যেই ভালো ফল করে কংগ্রেস। কিন্তু, এই বছর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ফলাফল নিরাশাজনক। দলের নেতা রাহুল গান্ধীকে মুখ্য প্রচারকের ভূমিকায় নামিয়ে লাভ হয়নি। পাঞ্জাবে ক্ষমতাসীন বি জে পি- আকালি সরকারকে গদিচ্যুত করতে পারেনি কংগ্রেস। উলটে দিল্লিতে বিভিন্ন শরিক দলের সঙ্গে দূরত্ব বেড়েছে। 

দলীয় চর্চায় অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে পাঁচমারি কনক্লেভের কথা। সোনিয়া গান্ধী দলের সভানেত্রী হওয়ার পর সেই বৈঠকেও মুখ্য বিষয় ছিল দুরাবস্থা অতিক্রম করার কৌশলজনিত আলোচনা। ২০০৩সালে সিমলাতে এমন বৈঠকে সব ধর্মনিরপেক্ষ দলের সঙ্গে বোঝাপড়ার নীতি নেয় কংগ্রেস। সেই সময় কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বি জে পি নেতৃত্বাধীন এন ডি এ জোট। ঠিক পরের বছরই ছিল লোকসভা নির্বাচন। সোনিয়ার বক্তব্য ছিল, সব সময়ই উদ্ভূত পরিস্থিতির প্রয়োজন অনুযায়ী সাড়া দিতে চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মতো অবস্থান নিতে হবে। 

ভারতে জোট বাস্তবতা বুঝতে দেরি করার অভিযোগ বিভিন্ন সময়েই উঠেছে কংগ্রেসকে ঘিরে। কংগ্রেসের একার সরকার গড়ার খোয়াব দেখতে চাওয়া অংশও রয়েছে। মুখ্যত সেদিক বিবেচনায় রেখে জোট সম্ভাবনায় গুরুত্ব দিচ্ছে দল।

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...