বরাবর
বার্তা সম্পাদক
...............................
...............................
বিষয়ঃ "মে দিবসের ছবিরহাট" শিল্পকর্ম প্রদর্শনী প্রসঙ্গে
জনাব,
আপনার বহুল প্রচারিত সংবাদমাধ্যমে নিচের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশ করে বাধিত করবেন।
বার্তা প্রেরক
ছবিরহাট, শাহবাগ, ঢাকা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
মহান মে দিবসে উপলক্ষে ছবিরহাট নিয়মিত আয়োজন হিসেবে "মে দিবসের ছবিরহাট" শিরোনামে উন্মুক্ত পরিসরে শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্যোগ নিয়েছে। হাটুরেদের অংশগ্রহণে ১মে থেকে ১১মে পর্যন্ত দিবা-রাত্রি ছবিরহাটে প্রদর্শনী চলবে। উল্লেখ্য,সম্প্রতি সাভারের রানা প্লাজায় সংঘটিত মর্মান্তিক প্রাণহানির বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিশেষ মাত্রা যোগ করার প্রয়াস থাকছে প্রদর্শনীতে।
"শ্রমে-সৃষ্টিতে শ্রমিকের জয়গান"
মৃত্যুপুরী থেকে শ্রমিকের লাশ এলো জনসমুদ্রে। ধ্বংসস্তূপের ভিতরে দুমড়ানো-থেঁতলানো লাশের স্তূপ থেকে কংক্রিটের দেয়াল কেটে শ্রমিক তুলে আনছে আধমরা,জীবিত,মৃত একের পর এক সহস্র। ওরা মানুষ,ওরা শ্রমিক।
রক্ত মাংসের গন্ধে ভারি হয়ে গেছে সাভারের বাতাস। তবু সেই মৃত্যুপুরীতে গর্ত খুড়ে নামছে জীবন্ত মানুষ। প্রাণান্ত চেষ্টায় তুলে আনছে প্রাণের মানুষ। ঝুলন্ত কাপড়ে শুয়ে নামল জীবন্ত মানুষ - আধমরা আহতের দল।
রক্ত মাংসের গন্ধে ভারি হয়ে গেছে সাভারের বাতাস। তবু সেই মৃত্যুপুরীতে গর্ত খুড়ে নামছে জীবন্ত মানুষ। প্রাণান্ত চেষ্টায় তুলে আনছে প্রাণের মানুষ। ঝুলন্ত কাপড়ে শুয়ে নামল জীবন্ত মানুষ - আধমরা আহতের দল।
ওখানে অনেক জীবিত মানুষ আছে। হাত,পা,কোমর,বুক,ঘাড় আটকে পড়ে আছে তারা। ছটফট প্রাণ তার। বাঁচাও বাঁচাও করছে।
রাষ্ট্রের আশি-ভাগ প্রবৃদ্ধি আনে এইসব শ্রমিকের দল। বিনিময়ে একের পর এক দুর্ঘটনায় হাজার হাজার শ্রমিকের মৃত্যু। নেই মজুরি,নেই নিরাপত্তা,আছে মৃত্যু। এমনকি স্বজনের আহাজারি উপেক্ষা করে চোখের সামনে থেকে গুম হয়ে যায় এইসব শ্রমিকের লাশ।
রক্ত মাংসের দাগ ধুয়ে আবার উঠে দাঁড়ায় ভুলের ইমারত। অনুভূতিহীন,অমানবিক। -আবার মৃত্যুর জন্য সিঁড়ি ভাঙে এ কদল মানুষ। দিনরাত কাজ করতে তারা স্বপ্ন বোনে - উনুনে হাঁড়িতে ফুটছে সাদা ভাত। ক্ষুধার রাজ্য পার হয়ে যাবে এবার। তারপর মানুষ হবে মানুষের। জীবনের সঞ্চিত স্বপ্ন বাস্তবে নেবে রূপ। নিরাপত্তা দেবে রাষ্ট্র। দেবে অধিকার। মৃত্যুপুরী নয়,কলকারখানা হবে নিরাপদ।
ভাবতে ভাবতে দাউ দাউ জ্বলে ওঠে চারিপাশ। ধোঁয়ার কুন্ডুলিতে ঢেকে যায় সব মুখগুলি। তারপর শুধু আগুনের গর্জন। জানালার কাঁচ ভেঙে বাঁচার জন্য মানুষ ঝাপ দেয় বহুতল থেকে অবধারিত মৃত্যু মেনেও। তখন বাতাসে রক্ত মাংসের পোড়া গন্ধ। ছাই আর কয়লার স্তূপে সমস্ত স্বপ্ন মিলিয়ে যায়। শুধু স্বজনের হাতে একমুঠো ছাই।
তবু ওই ধ্বংসস্তূপে ছাই গন্ধ টেনে টেনে মানুষ বাঁচার স্বপ্ন দেখে। স্বজনের লাশ ছাই হয়ে ওড়ে বাতাসে। সে দৃশ্য পাড় হবার আগেই অন্য কোথাও কেঁপে ওঠে বহুতল শ্রমিক খেকো কারখানা-গার্মেন্টস। ভয়ার্ত মানুষ বাঁচার জন্য নেমে আসে মর্তে -মালিকের রক্ত চক্ষু আর মজুরির প্রলোভনে আবার মৃত্যুর সিঁড়ি ভেঙ্গে ওঠে শ্রমিক, সুত টানা মানুষগুলোর সুতো টানতে টানতে জীবনের সুতোয় পরে টান।
টালমাটাল হয়ে ওঠে গোটা কারখানা ভবন। মূহুর্তে বিশাল আকাশ শূন্যটা নিয়ে ধ্বংসস্তূপ চুইয়ে নামে রক্তের বন্যা। চাপা পরা মানুষের আর্তনাদ। দ্বিখণ্ডিত ছিন্নভিন্ন দেহ। তবু মৃত্যুর তলানিতে বেঁচে থাকে কেউ কেউ মহাপ্রাণ। মানুষ নামছে পাতালে মানুষের সন্ধানে। ওরা মানুষ,মানুষ খোঁজার দল,ওরা শ্রমিক। ওরা জানে মানুষ মানুষের।
আর রাজনীতিবিদ,রাষ্ট্রনায়কের নাটকে তখন ক্লাইম্যাক্স। ভোটারের গায়ে ভাই ফোটার কাল। তখনো শ্রমিকের রক্ত নামে কংক্রিটের দেয়াল বেয়ে টুপটাপ। লাশের স্তূপে তখনো মানুষ আছে,জীবিত মানুষ।
সামনে শ্রমিক দিবস,আসছে ১লা মে। শ্রমিকের রক্তে লাল শ্রমিক জান্তা। আমরা পুড়ে যাওয়া কয়লা,ভেঙ্গে যাওয়া পাজর,নির্বাক চোখ,হিম শীতল দেহ,নিথর।
তবু শ্রমিকের হাত মুষ্টিবদ্ধ হবে জানি। তবু জীবনের পক্ষে লড়বে মজুর। অধিকার-সংগ্রাম চলবেই। মৃত্যু উপত্যকায় শ্রমিক গাইবে মৃত্যুঞ্জয়ী গান।
No comments:
Post a Comment