Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Tuesday, June 11, 2013

কোন দলে কত অপরাধী, নেতাদের জানাক পুলিশ

কোন দলে কত অপরাধী, নেতাদের জানাক পুলিশ

চয়ন মুখোপাধ্যায় 

(উত্তর চব্বিশ পরগনার প্রথম পুলিশ সুপার এবং রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রান্ত অতিরিক্ত ডিজি) 

বিগত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, ধর্ষণ-শ্লীলতাহানির মতো একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে বারাসতে৷ উত্তর চব্বিশ পরগনার এই সদর-শহর কেন এমন অপরাধ-নগরী হয়ে উঠল, তা নিয়ে হইচইও কম হচ্ছে না৷ কিন্তু ঠিক কেন একটি নির্দিষ্ট থানা এলাকায় এ ভাবে অপরাধ বাড়ছে? আমি অবিভক্ত চব্বিশ পরগনায় কাজ করেছি৷ আবার জেলা ভাগের পর উত্তর চব্বিশ পরগনার প্রথম পুলিশ সুপার হিসাবেও কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ তার ভিত্তিতে বলতে পারি, ভৌগোলিক অবস্থান, জনঘনত্ব ও জনগোষ্ঠীর চরিত্রগত তারতম্যের দিক থেকে অন্য এলাকার তুলনায় বারাসত একেবারেই অন্য রকম৷

আয়তনের দিক থেকে বারাসত এখন সম্ভবত রাজ্যের সবচেয়ে বড় থানা৷ এর একটি প্রান্ত কলকাতার মতো মেট্রোপলিটন শহরের কাছাকাছি৷ আবার বারাসত-২ ব্লকের বড় অংশ জুড়ে ভেড়ি ও জলাজমি৷ এক প্রান্তে সংখ্যালঘু জনবসতি৷ আবার অন্য অংশে পূর্ববঙ্গ থেকে আসা উদ্বাস্তুদের জনঘনত্ব বেশি৷ সব মিলিয়ে কলকাতার কাছাকাছি হলেও চরিত্রগত দিক থেকে অনেকটাই আলাদা বারাসত৷ তার উপরে গত পঁচিশ বছরে জনসংখ্যাও অনেক গুণ বেড়েছে৷ ১৯৮৭-৮৮ সালে জেলার পুলিশ সুপার থাকাকালীনই আমি বারাসত থানা ভেঙে অন্তত তিনটি থানা করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম৷ এখনকার হিসাবে বারাসতে অন্তত পাঁচটি থানা হওয়া উচিত৷ থানা ভাগের জন্য ছ'মাস থেকে এক বছরের বেশি লাগার কথাও নয়৷ অথচ সিকি শতাব্দিতেও হল না! এর পিছনে প্রশাসনিক উদাসীনতাই কারণ৷

উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা পুলিশ ভেঙে বিধাননগর ও ব্যারাকপুর কমিশনারেট হয়েছে৷ আমি এই উদ্যোগের বিরোধী নই৷ কিন্তু নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া এগোনোর ফলে জেলা পুলিশেরই বড় অংশকে দুই কমিশনারেটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ তাতে জেলায় পুলিশের টানাটানি অবস্থা৷ স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপ হিসাবে এই মুহূর্তে বিশেষ তদন্তদল গঠন করে দেখা দরকার, নারী-নিগ্রহের পুরোনো ঘটনাগুলির তদন্তে অগ্রগতি কত দূর৷ সর্বশক্তি প্রয়োগ করে পুরোনো মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে৷ পাশাপাশি, রাজ্য পুলিশের সদর দপ্তর থেকে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠানো দরকার, যাতে রুটিন টহল জোরদার হয়৷ রাস্তায় বেশি পুলিশ দেখলে মানুষের আস্থা বাড়ে৷ আগে থানার ওসি বা দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের সপ্তাহে অন্তত একদিন অঞ্চল ধরে ধরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের সমস্যা শোনার নির্দেশ ছিল৷ সেটা অবিলম্বে করা দরকার৷ অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, নারীনিগ্রহ বা তোলাবাজির ঘটনায় অভিযুক্তদের পিছনে কোনও না কোনও রাজনৈতিক দলের মদত থাকে৷ কারণ, এলাকার দখল রাখতে এই ধরনের লোকজনকে দরকার হয়৷ সংশ্লিষ্ট দলের স্থানীয় কিছু নেতা বা দাদা এই ধরনের অপরাধীদের পিছনে থাকলেও দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে পুলিশের তরফে এই বার্তাটা পৌঁছে দিতে হবে, এরাই কিন্ত্ত আপনাদের দলের নাম ডোবাচ্ছে৷ কোনও দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে এটা বোঝানো খুব কঠিনও নয়৷ তাতে অপরাধীকে জেলে পুরতেই সুবিধা হবে৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...