বেঁকে বসল ব্যাঙ্ক, অনিশ্চিত মমতার বিনিয়োগ প্রকল্প
এই সময়: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী 'সেফ সেভিংস স্কিম' চালু নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমতি ছাড়া এ ধরনের প্রকল্প আদৌ চালু করা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে কতকগুলি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের ব্যাখ্যা না-পেলে ব্যাঙ্কগুলি কোনও আমানত জমা নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে৷
সারদা-কাণ্ডের পর এ রাজ্যের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যাতে আর সারদার মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত না হন, সেই উদ্দেশ্যে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'সেফ সেভিংস স্কিম' চালুর কথা ঘোষণা করেন৷ এই প্রকল্পে বিনিয়োগের জামিন থাকবে রাজ্য সরকার৷ প্রকল্পটি তত্ত্বাবধান করবে রাজ্য সরকারেরই সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো বিত্ত উন্নয়ন নিগম (ডব্লুবিআইডিএফসি)৷ এতে আমানতের টাকা জমা হবে ব্যাঙ্ক মারফত, কিন্ত্ত সুদ দেবে বিত্ত উন্নয়ন নিগম৷
এই প্রকল্পে একজন বিনিয়োগকারী ন্যূনতম ১,০০০ টাকা এবং সর্বাধিক ১ লক্ষ টাকা জমা রাখতে পারবেন এক থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে৷ এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ইউকো ব্যাঙ্কের যে কোনও শাখায় সেফ সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগের টাকা আমানতকারীরা জমা করতে পারবেন৷
এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে যে সুদ পাওয়া যাবে তা দেবে ডব্লুবিআইডিএফসি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'ওই সুদের হার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সমমেয়াদি ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হারের চেয়ে কম হবে না৷' প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হওয়ার কথা ৬ নভেম্বর থেকে৷ সেই লক্ষ্যে বুধবার ডব্লুবিআইডিএফসির পক্ষ থেকে প্রকল্পটির বিশদ বিবরণ দিয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, এ রাজ্যে এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ইউকো ব্যাঙ্কের যে কোনও শাখায় সেফ সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগের টাকা আমানতকারীরা জমা করতে পারবেন৷
কিন্ত্ত, ওই বিজ্ঞাপন প্রকাশের পরেই এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, 'ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন বিত্ত নিগম তাদের সেফ সেভিংস স্কিমের অন্যতম ব্যাঙ্কার হিসাবে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের নাম বিজ্ঞাপনে ছাপিয়েছে৷ বিনা অনুমতিতে ব্যাঙ্কের নাম সংযুক্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষকে সাবধান করতে চায় যে, এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের কোনও শাখা ওই প্রকল্পের অধীনে কোনও আমানত জমা নেবে না৷' শুধু এলাহাবাদ ব্যাঙ্কই নয়, রাজ্য সরকারের সেফ সেভিংস স্কিমের টাকা এখনই জমা নিতে চায় না আরও দু'টি ব্যাঙ্ক৷
রাজ্য সরকারের সেফ সেভিংস স্কিমের টাকা জমা নেওয়া নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির এই অনীহা কেন?
কারণ একাধিক৷ প্রধান কারণ, ব্যাঙ্ক নয় এমন কোনও ফিনান্স কোম্পানির (এ ক্ষেত্রে ডব্লুবিআইডিএফসি) সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের আমানত ব্যাঙ্কগুলি সংগ্রহ করতে পারে কি না৷ এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের চেয়ারপার্সন শুভলক্ষ্মী পানসে বৃহস্পতিবার জানান, 'আমরা জানি, কোনও নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কোম্পানি কোনও সঞ্চয় বা বিনিয়োগ প্রকল্প চালু করলে সেই প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের আমানত ব্যাঙ্ক সংগ্রহ করতে পারে না৷ তাই, ডব্লুবিআইডিএফসির সেফ সেভিংস স্কিমে আমানতকারীদের টাকা ব্যাঙ্ক সংগ্রহ করতে পারে কি না, সে নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে চেয়েছি৷ সেই ব্যাখ্যা না-পাওয়া অবধি আমাদের ব্যাঙ্কের কোনও শাখা ওই প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের কোনও আমানত জমা নেবে না৷ এই কথা আমরা রাজ্য সরকারকেও জানিয়ে দিয়েছি৷'
ব্যাঙ্কিং সূত্রের খবর, সেফ সেভিংস স্কিমের আওতায় ব্যাঙ্কগুলিকে কী হারে কমিশন দেবে ডব্লুবিআইডিএফসি তা নিয়েও কোনও ঐকমত্য হয়নি৷
ডব্লুবিআইডিএফসির বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, এক থেকে চার বছর মেয়াদে টাকা রাখলে আমানতকারীরা ৯ শতাংশ হারে সুদ পাবেন৷ পাঁচ বছর মেয়াদে টাকা রাখলে পাবেন ৯.২৫ শতাংশ হারে৷ কিন্ত্ত, সমমেয়াদের ফিক্সড ডিপোজিটে তাদের নিজেদের গ্রাহকদেরই এর চেয়ে কম হারে সুদ দিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি৷ যেমন, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক তিন থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদি আমানতে ৮.৭৫ হারে সুদ দেয়, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া দু' থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ফিক্সড ডিপোজিটে বর্তমানে সুদ দিচ্ছে ৮.৭৫ শতাংশ হারে৷
তাই, ব্যাঙ্কের চেয়ে বেশি হারে সুদ দেওয়ার গ্যারান্টি দেওয়া ডব্লুবিআইডিএফসির সঞ্চয় প্রকল্পে আমানত কী ভাবে সংগ্রহ করবে ব্যাঙ্কগুলি, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷ ব্যাঙ্কিং মহলের অনুমান, কোনও নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কোম্পানিকে লগ্নি প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে তোলার অনুমতি দিলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত তৈরি করবে৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আদৌ সেই অনুমতি দেবে কি না, তা নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন৷
সারদা-কাণ্ডের পর এ রাজ্যের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা যাতে আর সারদার মতো বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত না হন, সেই উদ্দেশ্যে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'সেফ সেভিংস স্কিম' চালুর কথা ঘোষণা করেন৷ এই প্রকল্পে বিনিয়োগের জামিন থাকবে রাজ্য সরকার৷ প্রকল্পটি তত্ত্বাবধান করবে রাজ্য সরকারেরই সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো বিত্ত উন্নয়ন নিগম (ডব্লুবিআইডিএফসি)৷ এতে আমানতের টাকা জমা হবে ব্যাঙ্ক মারফত, কিন্ত্ত সুদ দেবে বিত্ত উন্নয়ন নিগম৷
এই প্রকল্পে একজন বিনিয়োগকারী ন্যূনতম ১,০০০ টাকা এবং সর্বাধিক ১ লক্ষ টাকা জমা রাখতে পারবেন এক থেকে পাঁচ বছর মেয়াদে৷ এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ইউকো ব্যাঙ্কের যে কোনও শাখায় সেফ সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগের টাকা আমানতকারীরা জমা করতে পারবেন৷
এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে যে সুদ পাওয়া যাবে তা দেবে ডব্লুবিআইডিএফসি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'ওই সুদের হার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সমমেয়াদি ফিক্সড ডিপোজিটে সুদের হারের চেয়ে কম হবে না৷' প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হওয়ার কথা ৬ নভেম্বর থেকে৷ সেই লক্ষ্যে বুধবার ডব্লুবিআইডিএফসির পক্ষ থেকে প্রকল্পটির বিশদ বিবরণ দিয়ে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়, এ রাজ্যে এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং ইউকো ব্যাঙ্কের যে কোনও শাখায় সেফ সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগের টাকা আমানতকারীরা জমা করতে পারবেন৷
কিন্ত্ত, ওই বিজ্ঞাপন প্রকাশের পরেই এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়, 'ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন বিত্ত নিগম তাদের সেফ সেভিংস স্কিমের অন্যতম ব্যাঙ্কার হিসাবে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের নাম বিজ্ঞাপনে ছাপিয়েছে৷ বিনা অনুমতিতে ব্যাঙ্কের নাম সংযুক্ত করার পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সাধারণ মানুষকে সাবধান করতে চায় যে, এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের কোনও শাখা ওই প্রকল্পের অধীনে কোনও আমানত জমা নেবে না৷' শুধু এলাহাবাদ ব্যাঙ্কই নয়, রাজ্য সরকারের সেফ সেভিংস স্কিমের টাকা এখনই জমা নিতে চায় না আরও দু'টি ব্যাঙ্ক৷
রাজ্য সরকারের সেফ সেভিংস স্কিমের টাকা জমা নেওয়া নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির এই অনীহা কেন?
কারণ একাধিক৷ প্রধান কারণ, ব্যাঙ্ক নয় এমন কোনও ফিনান্স কোম্পানির (এ ক্ষেত্রে ডব্লুবিআইডিএফসি) সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের আমানত ব্যাঙ্কগুলি সংগ্রহ করতে পারে কি না৷ এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের চেয়ারপার্সন শুভলক্ষ্মী পানসে বৃহস্পতিবার জানান, 'আমরা জানি, কোনও নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কোম্পানি কোনও সঞ্চয় বা বিনিয়োগ প্রকল্প চালু করলে সেই প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের আমানত ব্যাঙ্ক সংগ্রহ করতে পারে না৷ তাই, ডব্লুবিআইডিএফসির সেফ সেভিংস স্কিমে আমানতকারীদের টাকা ব্যাঙ্ক সংগ্রহ করতে পারে কি না, সে নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা আমরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে চেয়েছি৷ সেই ব্যাখ্যা না-পাওয়া অবধি আমাদের ব্যাঙ্কের কোনও শাখা ওই প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের কোনও আমানত জমা নেবে না৷ এই কথা আমরা রাজ্য সরকারকেও জানিয়ে দিয়েছি৷'
ব্যাঙ্কিং সূত্রের খবর, সেফ সেভিংস স্কিমের আওতায় ব্যাঙ্কগুলিকে কী হারে কমিশন দেবে ডব্লুবিআইডিএফসি তা নিয়েও কোনও ঐকমত্য হয়নি৷
ডব্লুবিআইডিএফসির বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, এক থেকে চার বছর মেয়াদে টাকা রাখলে আমানতকারীরা ৯ শতাংশ হারে সুদ পাবেন৷ পাঁচ বছর মেয়াদে টাকা রাখলে পাবেন ৯.২৫ শতাংশ হারে৷ কিন্ত্ত, সমমেয়াদের ফিক্সড ডিপোজিটে তাদের নিজেদের গ্রাহকদেরই এর চেয়ে কম হারে সুদ দিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি৷ যেমন, এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক তিন থেকে পাঁচ বছরের মেয়াদি আমানতে ৮.৭৫ হারে সুদ দেয়, ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া দু' থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ফিক্সড ডিপোজিটে বর্তমানে সুদ দিচ্ছে ৮.৭৫ শতাংশ হারে৷
তাই, ব্যাঙ্কের চেয়ে বেশি হারে সুদ দেওয়ার গ্যারান্টি দেওয়া ডব্লুবিআইডিএফসির সঞ্চয় প্রকল্পে আমানত কী ভাবে সংগ্রহ করবে ব্যাঙ্কগুলি, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷ ব্যাঙ্কিং মহলের অনুমান, কোনও নন-ব্যাঙ্কিং ফিনান্স কোম্পানিকে লগ্নি প্রকল্পে বিনিয়োগকারীদের টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে তোলার অনুমতি দিলে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত তৈরি করবে৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আদৌ সেই অনুমতি দেবে কি না, তা নিয়েও অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেন৷
No comments:
Post a Comment