ঝলমলে আতসবাজির কালো জগত্
বাসবদত্তা সরকার
আপনাদের কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই? বছরে এই ক'টা দিন ওরা রোজগার করে৷ সেটাও আপনাদের সহ্য হচ্ছে না? চায়ের দোকানে বসে থাকা টহলদার পুলিশ অফিসার প্রায় ধমক দিলেন৷ বারাসতের কাছে নারায়ণপুরের ঘরে ঘরে শুরু হয়ে গিয়েছে বাত্সরিক বাজি তৈরির কাজ৷ এ বার বৃষ্টি থামতেই চাইছে না৷ শুকনো আবওহাওয়া বাজি তৈরির অনুকূল৷ টানা বৃষ্টিতে আকাশের মতো ওদের মুখও তাই ভার৷ ওরা বাজি তৈরি করে বাবুদের ঘরে পৌঁছে দেয়৷ 'বাবুরা সব কাজ বুঝে টাকা ধার দেয়৷ বাবুদের বেশিরভাগ লাইসেন্স রয়েছে,' বুক ঠুকে দাবি করে নরেন৷ তবে লাইসেন্সের সীমায় এত বাজির মশলা আমদানি কি সম্ভব? সে ব্যাপারে বাবুদের ঠিকাদার নরেনের মুখে কুলুপ৷
বাড়ির উঠোনে লম্বা চওড়া ত্রিপল বিছিয়ে কাজ চলছে৷ বাড়ির ছোটবড় সব সদস্যই হাত লাগিয়েছে৷ কারও বয়স বিশ তো কারও দশের কোঠাও অতিক্রম করেনি৷ হাতে গ্লাভস বা বিষাক্ত রাসায়নিক থেকে শরীরের চামড়া রক্ষার মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা খালি চোখে ধরা পড়ল না৷ ওরা শুধু জানে যে ধারে কাছে বিড়ি খাওয়া বা দেশলাই জ্বালান নিষেধ৷ বাড়িতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকার সম্ভাবনা দূর অস্ত৷ ওরা জানে আগুন লাগলে পুকুরের জল ঢাললেই চলে৷ পুকুরটা কতদূর? 'ওই তো!' হাতের আঙুল লম্বা হয়, কিন্ত্ত তার শেষ প্রান্তে কোনও পুকুর চোখে পড়ে না৷ অর্থাত্ আগুন লাগলে এই ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চলে শুধু উত্পাদিত বাজি নয়, প্রাণরক্ষা করাও বেশ মুশকিল৷ জীবন বিমার কথা বলতে আবদুলদের মুখ সেই যে হাঁ হল, বন্ধ হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা গেল না৷ বিমার বিষয়টা ওদের সম্পূর্ণ অজানা৷ অথচ বাজি তৈরি দারুণ ঝুঁকির কাজ৷ দুর্ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত৷
প্রশাসন রয়েছে নিজস্ব জায়গায়৷ পুরো গ্রামের কর্মসংস্থানের প্রশ্ন যেখানে জড়িত, সেখানে ভিমরুলের চাকে ঢিল মারতে যাবে কে? এর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি জেলার বিশাল ভোটব্যাঙ্কও৷ এতগুলো মানুষের রুজি রোজগার বন্ধ করার ঝুঁকি তাই কেউই নিতে চায় না৷ নিন্দুকেরা অবশ্য বলছে সব বন্দোবস্ত করা রয়েছে৷ নরেন বলল খাঁটি কথাটা, 'মশাই, আমরা বাজি না তৈরি করলে, এত সস্তায় বাজি পেতেন? আইন মেনে করলে খরচ কত পড়বে জানেন?'
ঝলমলে আতসবাজির প্রেক্ষাপট কেন কালো এতক্ষণে তা বোঝা গেল!
আপনাদের কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই? বছরে এই ক'টা দিন ওরা রোজগার করে৷ সেটাও আপনাদের সহ্য হচ্ছে না? চায়ের দোকানে বসে থাকা টহলদার পুলিশ অফিসার প্রায় ধমক দিলেন৷ বারাসতের কাছে নারায়ণপুরের ঘরে ঘরে শুরু হয়ে গিয়েছে বাত্সরিক বাজি তৈরির কাজ৷ এ বার বৃষ্টি থামতেই চাইছে না৷ শুকনো আবওহাওয়া বাজি তৈরির অনুকূল৷ টানা বৃষ্টিতে আকাশের মতো ওদের মুখও তাই ভার৷ ওরা বাজি তৈরি করে বাবুদের ঘরে পৌঁছে দেয়৷ 'বাবুরা সব কাজ বুঝে টাকা ধার দেয়৷ বাবুদের বেশিরভাগ লাইসেন্স রয়েছে,' বুক ঠুকে দাবি করে নরেন৷ তবে লাইসেন্সের সীমায় এত বাজির মশলা আমদানি কি সম্ভব? সে ব্যাপারে বাবুদের ঠিকাদার নরেনের মুখে কুলুপ৷
বাড়ির উঠোনে লম্বা চওড়া ত্রিপল বিছিয়ে কাজ চলছে৷ বাড়ির ছোটবড় সব সদস্যই হাত লাগিয়েছে৷ কারও বয়স বিশ তো কারও দশের কোঠাও অতিক্রম করেনি৷ হাতে গ্লাভস বা বিষাক্ত রাসায়নিক থেকে শরীরের চামড়া রক্ষার মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা খালি চোখে ধরা পড়ল না৷ ওরা শুধু জানে যে ধারে কাছে বিড়ি খাওয়া বা দেশলাই জ্বালান নিষেধ৷ বাড়িতে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকার সম্ভাবনা দূর অস্ত৷ ওরা জানে আগুন লাগলে পুকুরের জল ঢাললেই চলে৷ পুকুরটা কতদূর? 'ওই তো!' হাতের আঙুল লম্বা হয়, কিন্ত্ত তার শেষ প্রান্তে কোনও পুকুর চোখে পড়ে না৷ অর্থাত্ আগুন লাগলে এই ঘন বসতিপূর্ণ অঞ্চলে শুধু উত্পাদিত বাজি নয়, প্রাণরক্ষা করাও বেশ মুশকিল৷ জীবন বিমার কথা বলতে আবদুলদের মুখ সেই যে হাঁ হল, বন্ধ হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা গেল না৷ বিমার বিষয়টা ওদের সম্পূর্ণ অজানা৷ অথচ বাজি তৈরি দারুণ ঝুঁকির কাজ৷ দুর্ঘটনাও ঘটছে নিয়মিত৷
প্রশাসন রয়েছে নিজস্ব জায়গায়৷ পুরো গ্রামের কর্মসংস্থানের প্রশ্ন যেখানে জড়িত, সেখানে ভিমরুলের চাকে ঢিল মারতে যাবে কে? এর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি জেলার বিশাল ভোটব্যাঙ্কও৷ এতগুলো মানুষের রুজি রোজগার বন্ধ করার ঝুঁকি তাই কেউই নিতে চায় না৷ নিন্দুকেরা অবশ্য বলছে সব বন্দোবস্ত করা রয়েছে৷ নরেন বলল খাঁটি কথাটা, 'মশাই, আমরা বাজি না তৈরি করলে, এত সস্তায় বাজি পেতেন? আইন মেনে করলে খরচ কত পড়বে জানেন?'
ঝলমলে আতসবাজির প্রেক্ষাপট কেন কালো এতক্ষণে তা বোঝা গেল!
No comments:
Post a Comment