গেদে: আবারও চাকরির প্রলোভন৷
অপরাজিতার ভাইয়ের পরে দীপশিখার দাদা (সব নাম পরিবর্তিত)৷ নিরাপত্তা দিতে অপারগ প্রশাসনের নির্লজ্জ প্রস্তাব - সরকারি চাকরি
নিশ্চিত৷ কৃষ্ণগঞ্জের গেদে সীমান্তে ধর্ষিতা ও খুন হওয়া ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে বুধবার এই আশ্বাসই দিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের
তফসিলি জাতি-উপজাতি বিষয়ক সেলের নেতা সুশীল বিশ্বাস৷ বারাসতে মৃত ছাত্রীর ভাইকে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাবে ফুঁসে উঠেছিল তার
পরিবার৷ সে রকম অবশ্য কিছু ঘটেনি গেদেতে৷ কারণ, হতদরিদ্র দীপশিখার পরিবারে লোক বলতে ক্লাস টেনের ছাত্র তার দাদা এবং
মূক-বধির মা৷ তবে ক্লাস সেভেনের ছাত্রী দীপশিখাকে (নাম পরিবর্তিত) ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় বুধবার আরও এক জনকে গ্রেপ্তার করেছে
কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ৷ ধৃতের নাম ভরত পাহাড়িয়া৷ বাড়ি নদিয়ার হাঁসখালি থানার পিপুলবেড়িয়া গ্রামে৷ নিজের গ্রাম থেকেই এ দিন তাকে
ধরা হয়৷ মঙ্গলবার ধৃত বিমল সর্দারকে এ দিন আদালতে হাজির করানো হয়৷ বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন৷
গত মঙ্গলবার নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের গেদে সীমান্তে রাস্তার ধারে, বাঁশবন সংলগ্ন হলুদ খেতের মধ্যে পাওয়া যায় ক্লাস সেভেনের ছাত্রীর মৃতদেহ৷
গলার নলি কাটা, পোশাক বিস্রস্ত৷ গ্রেপ্তার করা হয় বিমল সর্দার নামে স্থানীয় এক যুবককে৷ পুলিশের দাবি, জেরায় বিমল স্বীকার করে, সে
এবং তার দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে খুন করেছে ওই ছাত্রীকে৷ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তাপস তরফদার বলেন, 'গ্রামবাসীর কাছে ধর্ষণ ও
খুনের কথা স্বীকার করে বিমল৷ তার পর তাকে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ উত্তেজিত গ্রামবাসীকে ঠেকানো যাচ্ছিল
না৷ পুলিশ এসে বিমলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়৷' সেই রাতে গেদের সর্দারপাড়াতেও (এটি অভিযুক্ত বিমল সর্দারের পাড়া) ক্ষুব্ধ
জনতার রোষে গ্রামছাড়া হতে হয় বিমলের পড়শিদের৷ পরে অবশ্য পুলিশ সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে৷
এ দিকে, বুধবার দীপশিখার স্কুল-সহ এলাকার চারটি স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেন উত্তরপাড়া
গ্রামে৷ এই পদচারণায় সামিল হন এলাকার সাধারণ মানুষও৷ তবে দীপশিখার পরিবারের কেউ মিছিলে সামিল হননি৷ উত্তরপাড়ার ছোট্ট
বাড়িটাতে এ দিনও যেন স্তব্ধ হয়েছিল শোক৷ দীপশিখার বাবা নেই৷ মা মূক-বধির৷ কিন্তু কথা না বলেও যেন অনেক কিছু বলে ফেলছিলেন
শোকাহত মা৷ বারবার অস্ফূট কান্নায় ভেঙে পড়ে মাটিতে মাথা ঠুকছেন আর আঙুল দেখাচ্ছেন বাঁশবাগানের ধারে হলুদ খেতের দিকে, যেখান থেকে এক দিন আগেই মিলেছে তাঁর আদরিণীর নিথর দেহ৷ বাড়িতে ভিড়৷ সমবেদনা জানাতে জড়ো হয়েছেন আত্মীয়-পরিজন-গ্রামবাসী৷ তাঁদের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে ফেরত চাইছেন একমাত্র মেয়েটাকে৷
দীপশিখার স্কুল বিদ্যাসাগর মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধানশিক্ষক শ্যামল নাথ এ দিন বলেন, 'দীপশিখার ঘটনাটা আমরা মেনে নিতে পারিনি৷
এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে মেয়েটাকে সোমবারও ক্লাস করতে দেখেছি, সে আজ নেই৷ ওর স্মরণেই আজ গ্রামে মিছিল করেছি
আমরা৷ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষিকা এমনকী সাধারণ মানুষও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই মিছিলে যোগ দেন৷ মুখে কালো কাপড় বেধেঁ মিছিলে হেঁটেছেন অনেকে৷' এ দিন বিকেলে নদিয়ার জেলাশাসক পি বি সেলিম দীপশিখার বাড়িতে যান৷ শোকার্ত পরিজনদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন৷ দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাসও দেন৷ নদিয়ার ডেপুটি পুলিশ সুপার দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, 'ধৃত বিমল আর ভরতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ খুব শীঘ্রই তৃতীয় অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করা হবে৷ বিমল জানিয়েছে, তার জামাইবাবু বিশু সর্দার এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত৷ ভরত বিশুরই পরিচিত৷'
অপরাজিতার ভাইয়ের পরে দীপশিখার দাদা (সব নাম পরিবর্তিত)৷ নিরাপত্তা দিতে অপারগ প্রশাসনের নির্লজ্জ প্রস্তাব - সরকারি চাকরি
নিশ্চিত৷ কৃষ্ণগঞ্জের গেদে সীমান্তে ধর্ষিতা ও খুন হওয়া ছাত্রীর বাড়ি গিয়ে বুধবার এই আশ্বাসই দিলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের
তফসিলি জাতি-উপজাতি বিষয়ক সেলের নেতা সুশীল বিশ্বাস৷ বারাসতে মৃত ছাত্রীর ভাইকে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাবে ফুঁসে উঠেছিল তার
পরিবার৷ সে রকম অবশ্য কিছু ঘটেনি গেদেতে৷ কারণ, হতদরিদ্র দীপশিখার পরিবারে লোক বলতে ক্লাস টেনের ছাত্র তার দাদা এবং
মূক-বধির মা৷ তবে ক্লাস সেভেনের ছাত্রী দীপশিখাকে (নাম পরিবর্তিত) ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় বুধবার আরও এক জনকে গ্রেপ্তার করেছে
কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ৷ ধৃতের নাম ভরত পাহাড়িয়া৷ বাড়ি নদিয়ার হাঁসখালি থানার পিপুলবেড়িয়া গ্রামে৷ নিজের গ্রাম থেকেই এ দিন তাকে
ধরা হয়৷ মঙ্গলবার ধৃত বিমল সর্দারকে এ দিন আদালতে হাজির করানো হয়৷ বিচারক তাকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন৷
গত মঙ্গলবার নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের গেদে সীমান্তে রাস্তার ধারে, বাঁশবন সংলগ্ন হলুদ খেতের মধ্যে পাওয়া যায় ক্লাস সেভেনের ছাত্রীর মৃতদেহ৷
গলার নলি কাটা, পোশাক বিস্রস্ত৷ গ্রেপ্তার করা হয় বিমল সর্দার নামে স্থানীয় এক যুবককে৷ পুলিশের দাবি, জেরায় বিমল স্বীকার করে, সে
এবং তার দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে খুন করেছে ওই ছাত্রীকে৷ স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তাপস তরফদার বলেন, 'গ্রামবাসীর কাছে ধর্ষণ ও
খুনের কথা স্বীকার করে বিমল৷ তার পর তাকে উত্তম মধ্যম দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ উত্তেজিত গ্রামবাসীকে ঠেকানো যাচ্ছিল
না৷ পুলিশ এসে বিমলকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়৷' সেই রাতে গেদের সর্দারপাড়াতেও (এটি অভিযুক্ত বিমল সর্দারের পাড়া) ক্ষুব্ধ
জনতার রোষে গ্রামছাড়া হতে হয় বিমলের পড়শিদের৷ পরে অবশ্য পুলিশ সেখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে৷
এ দিকে, বুধবার দীপশিখার স্কুল-সহ এলাকার চারটি স্কুলের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করেন উত্তরপাড়া
গ্রামে৷ এই পদচারণায় সামিল হন এলাকার সাধারণ মানুষও৷ তবে দীপশিখার পরিবারের কেউ মিছিলে সামিল হননি৷ উত্তরপাড়ার ছোট্ট
বাড়িটাতে এ দিনও যেন স্তব্ধ হয়েছিল শোক৷ দীপশিখার বাবা নেই৷ মা মূক-বধির৷ কিন্তু কথা না বলেও যেন অনেক কিছু বলে ফেলছিলেন
শোকাহত মা৷ বারবার অস্ফূট কান্নায় ভেঙে পড়ে মাটিতে মাথা ঠুকছেন আর আঙুল দেখাচ্ছেন বাঁশবাগানের ধারে হলুদ খেতের দিকে, যেখান থেকে এক দিন আগেই মিলেছে তাঁর আদরিণীর নিথর দেহ৷ বাড়িতে ভিড়৷ সমবেদনা জানাতে জড়ো হয়েছেন আত্মীয়-পরিজন-গ্রামবাসী৷ তাঁদের দিকে তাকিয়ে নিঃশব্দে ফেরত চাইছেন একমাত্র মেয়েটাকে৷
দীপশিখার স্কুল বিদ্যাসাগর মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের প্রধানশিক্ষক শ্যামল নাথ এ দিন বলেন, 'দীপশিখার ঘটনাটা আমরা মেনে নিতে পারিনি৷
এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে মেয়েটাকে সোমবারও ক্লাস করতে দেখেছি, সে আজ নেই৷ ওর স্মরণেই আজ গ্রামে মিছিল করেছি
আমরা৷ ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক শিক্ষিকা এমনকী সাধারণ মানুষও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এই মিছিলে যোগ দেন৷ মুখে কালো কাপড় বেধেঁ মিছিলে হেঁটেছেন অনেকে৷' এ দিন বিকেলে নদিয়ার জেলাশাসক পি বি সেলিম দীপশিখার বাড়িতে যান৷ শোকার্ত পরিজনদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন৷ দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির আশ্বাসও দেন৷ নদিয়ার ডেপুটি পুলিশ সুপার দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, 'ধৃত বিমল আর ভরতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে৷ খুব শীঘ্রই তৃতীয় অভিযুক্তকেও গ্রেপ্তার করা হবে৷ বিমল জানিয়েছে, তার জামাইবাবু বিশু সর্দার এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত৷ ভরত বিশুরই পরিচিত৷'
No comments:
Post a Comment