অতনু দাস
'ওরা বঙ্গবিভূষণের ভারে ক্লান্ত, তাই ওদের ডাক শোনা পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না৷'
এমন তীব্র ব্যঙ্গের মুখে রাজ্যের সুশীল সমাজ, বিশেষ করে বারাসতের৷ ফেসবুকের ওয়ালে আছড়ে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিবাদ৷ সেখানেই
ডাক আসছে পথে নামার৷ সাড়াও মিলছে প্রচুর৷ সুশীল সমাজকে উপেক্ষা করে শনি এবং রবিবার ছাত্র-ছাত্রীরা পথে নামছে সেই ডাকে সাড়া
দিয়েই৷ কবি-শিল্পী-নাট্যকর্মীদের বড় অংশের নীরবতার বিরুদ্ধেও তাদের ক্ষোভ একাত্ম হচ্ছে৷ প্রশ্ন উঠছে, তাঁরাও কি দলদাস হয়ে যাচ্ছেন?
ওয়ালে উঠে আসছে কবীর সুমনের গান, 'সরকারি রঙে বিবেক মেখে শিল্পীরা হন বর্ণচোরা৷'
এই ফেসবুক প্রতিবাদের ধরন কী রকম? বারাসতের বাসিন্দা ডায়েটিশিয়ান তানিয়া দাস ফেসবুক ওয়ালে জানাচ্ছেন, তিনি এখন সকালে উঠে খবরের কাগজ পড়তে ভয় পান৷ বারবার বারাসতের মেয়েদের শরীর নিয়ে ছিনিমিনি খেলা দেখলে তাঁর বমি পায়৷ ভয়ে তিনি খবরের
চ্যানেল দেখাও বন্ধ করেছেন৷
আইএসআই-এর রামায়ণী চৌধুরীর গলায় তীব্র শ্লেষ, 'কোনও দিন স্বপ্নেও ভাবিনি আমার বাংলা দুষ্কর্মের অভয়ারণ্য হয়ে উঠবে৷' এর পরও
মুখ্যমন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা কিংবা বুদ্ধিজীবীদের রবীন্দ্রনাথ আওড়াতে দেখে তাঁর ব্যঙ্গ, 'ইস্, যদি রবীন্দ্রনাথ জন্ম না নিতেন৷'
কারও কারও বুকে কষ্ট৷ বারাসতেরই বাসিন্দা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুদীপ্ত দাসের ওয়ালে সতর্কবাণী, 'বি অ্যাওয়ার অফ বারাসত...ইট বিকামস মোর ফিউরিয়াস দ্যান ব্লাডি ডগস৷' জনস্বরের পরিচালক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওয়াল বলছে, 'মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে৷' মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, সমাজকর্মী শ্যামল চট্টোপাধ্যায় একটি চিঠি পোস্ট করেছেন অপরাজিতার উদ্দেশে, 'জানি না, তোর নাম অপরাজিতা কি না৷ ....সবাই বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে৷ এক হওয়ার কোনও চেষ্টা নেই৷ আসলে নিজেকে মেলে ধরার বিকৃত প্রয়াস মাত্র৷ আমি এই ভণ্ডামিতে থাকতে রাজি নই৷'
প্রতিবাদের ভাষা জেলা আদালতের আইনজীবী পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের ওয়ালেও৷ তিনি লিখছেন, 'পরিবর্তন নাকি আকাশভাঙা৷ বাংলা আজ রক্তে রাঙা৷' বারাসত সরকারি কলেজের ছাত্র মৃত্যুঞ্জয় দে-র ওয়ালে হতাশা ঝরে পড়ছে, 'মন ভালো নেই৷ বারাসতের পর আবার নদিয়া৷' অরীন বসু প্রশ্ন তুলেছেন, 'আমরা কি সুবিধাবাদী প্রতিবাদী? পথে নামার আগে রিস্ক ফ্যাক্টর বুঝে নিতে চাই?' জবাবে কলেজ-ছাত্র সুকান্ত
মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'দিল্লি-কাণ্ডের পর মহানগরীর প্রতিবাদটা যে ফ্যাশন শো ছিল, এ বার বোঝা গেল৷' শাশ্বতী মিত্রের ব্যঙ্গ, 'বারাসতের
ঘটনা বঙ্গবিভূষণদেরও মৌন করে দিয়েছে৷ তাঁরাও ভাষা হারিয়ে ফেলছেন৷' প্রায় একই মত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র তুহিন দে-র, 'বঙ্গবিভূষণের বড্ড ভার৷ ওই ভার কাঁধে নিয়ে সুশীল সমাজের পক্ষে কলকাতা থেকে বারাসতের গ্রাম পর্যন্ত হাঁটা অসম্ভব৷' দত্তপুকুরের সন্দীপন ঘোষের বক্তব্য, 'মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে নানা যুক্তি মনে প্রশ্রয় পাচ্ছিল৷ আর মন মানছে না৷ জানোয়ারগুলির মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত৷' পুলিশও পারছে না সুশীল সমাজের এমন নীরবতাকে মেনে নিতে৷ রাজ্য পুলিশের এক অফিসার দেবাশিস চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, 'অসত্ লোকেদের কর্মকাণ্ডে সমাজ ধ্বংস হয় না, সমাজ ধ্বংস হয় ভালো মানুষের নিষ্ক্রিয়তায়৷'
সোশ্যাল নেটওয়ার্কে এমন প্রতিবাদের ঝড়ে শেষমেশ সুশীল সমাজকে উপেক্ষা করেই পথে নামার ডাক দিয়েছে বারাসতের তরুণ সমাজ৷ শহরের শিল্পী শুভ্রা বেহরা 'প্রোটেস্ট এগেনস্ট রেপ কেস অফ বারাসত' নামে একটি কমিউনিটি খুলেছেন ফেসবুকে৷ আগামী শনিবার বিকেলে তাঁরা বারাসত ডাকবাংলো মোড় থেকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে হাঁটবেন বলে জানিয়েছেন৷ তাঁর দাবি, প্রায় চারশো জন মিছিলে সামিল হবেন৷
কাঙাল হরিনাথ লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরির পক্ষ থেকেও ওই দিনই বারাসত স্টেশন থেকে সাড়ে ৬ টায় মোমবাতি মিছিলের ডাক দেওয়া
হয়েছে৷ অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুটা পথে নামছে শনিবার৷ দুপুর দুটোয় তাঁদের মিছিল বেরোবে কলেজ স্ট্রিট থেকে৷
'ওরা বঙ্গবিভূষণের ভারে ক্লান্ত, তাই ওদের ডাক শোনা পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না৷'
এমন তীব্র ব্যঙ্গের মুখে রাজ্যের সুশীল সমাজ, বিশেষ করে বারাসতের৷ ফেসবুকের ওয়ালে আছড়ে পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিবাদ৷ সেখানেই
ডাক আসছে পথে নামার৷ সাড়াও মিলছে প্রচুর৷ সুশীল সমাজকে উপেক্ষা করে শনি এবং রবিবার ছাত্র-ছাত্রীরা পথে নামছে সেই ডাকে সাড়া
দিয়েই৷ কবি-শিল্পী-নাট্যকর্মীদের বড় অংশের নীরবতার বিরুদ্ধেও তাদের ক্ষোভ একাত্ম হচ্ছে৷ প্রশ্ন উঠছে, তাঁরাও কি দলদাস হয়ে যাচ্ছেন?
ওয়ালে উঠে আসছে কবীর সুমনের গান, 'সরকারি রঙে বিবেক মেখে শিল্পীরা হন বর্ণচোরা৷'
এই ফেসবুক প্রতিবাদের ধরন কী রকম? বারাসতের বাসিন্দা ডায়েটিশিয়ান তানিয়া দাস ফেসবুক ওয়ালে জানাচ্ছেন, তিনি এখন সকালে উঠে খবরের কাগজ পড়তে ভয় পান৷ বারবার বারাসতের মেয়েদের শরীর নিয়ে ছিনিমিনি খেলা দেখলে তাঁর বমি পায়৷ ভয়ে তিনি খবরের
চ্যানেল দেখাও বন্ধ করেছেন৷
আইএসআই-এর রামায়ণী চৌধুরীর গলায় তীব্র শ্লেষ, 'কোনও দিন স্বপ্নেও ভাবিনি আমার বাংলা দুষ্কর্মের অভয়ারণ্য হয়ে উঠবে৷' এর পরও
মুখ্যমন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতা কিংবা বুদ্ধিজীবীদের রবীন্দ্রনাথ আওড়াতে দেখে তাঁর ব্যঙ্গ, 'ইস্, যদি রবীন্দ্রনাথ জন্ম না নিতেন৷'
কারও কারও বুকে কষ্ট৷ বারাসতেরই বাসিন্দা, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সুদীপ্ত দাসের ওয়ালে সতর্কবাণী, 'বি অ্যাওয়ার অফ বারাসত...ইট বিকামস মোর ফিউরিয়াস দ্যান ব্লাডি ডগস৷' জনস্বরের পরিচালক প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওয়াল বলছে, 'মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে৷' মহারাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, সমাজকর্মী শ্যামল চট্টোপাধ্যায় একটি চিঠি পোস্ট করেছেন অপরাজিতার উদ্দেশে, 'জানি না, তোর নাম অপরাজিতা কি না৷ ....সবাই বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতিবাদে সামিল হয়েছে৷ এক হওয়ার কোনও চেষ্টা নেই৷ আসলে নিজেকে মেলে ধরার বিকৃত প্রয়াস মাত্র৷ আমি এই ভণ্ডামিতে থাকতে রাজি নই৷'
প্রতিবাদের ভাষা জেলা আদালতের আইনজীবী পার্থপ্রতিম বিশ্বাসের ওয়ালেও৷ তিনি লিখছেন, 'পরিবর্তন নাকি আকাশভাঙা৷ বাংলা আজ রক্তে রাঙা৷' বারাসত সরকারি কলেজের ছাত্র মৃত্যুঞ্জয় দে-র ওয়ালে হতাশা ঝরে পড়ছে, 'মন ভালো নেই৷ বারাসতের পর আবার নদিয়া৷' অরীন বসু প্রশ্ন তুলেছেন, 'আমরা কি সুবিধাবাদী প্রতিবাদী? পথে নামার আগে রিস্ক ফ্যাক্টর বুঝে নিতে চাই?' জবাবে কলেজ-ছাত্র সুকান্ত
মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'দিল্লি-কাণ্ডের পর মহানগরীর প্রতিবাদটা যে ফ্যাশন শো ছিল, এ বার বোঝা গেল৷' শাশ্বতী মিত্রের ব্যঙ্গ, 'বারাসতের
ঘটনা বঙ্গবিভূষণদেরও মৌন করে দিয়েছে৷ তাঁরাও ভাষা হারিয়ে ফেলছেন৷' প্রায় একই মত ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র তুহিন দে-র, 'বঙ্গবিভূষণের বড্ড ভার৷ ওই ভার কাঁধে নিয়ে সুশীল সমাজের পক্ষে কলকাতা থেকে বারাসতের গ্রাম পর্যন্ত হাঁটা অসম্ভব৷' দত্তপুকুরের সন্দীপন ঘোষের বক্তব্য, 'মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে নানা যুক্তি মনে প্রশ্রয় পাচ্ছিল৷ আর মন মানছে না৷ জানোয়ারগুলির মৃত্যুদণ্ডই হওয়া উচিত৷' পুলিশও পারছে না সুশীল সমাজের এমন নীরবতাকে মেনে নিতে৷ রাজ্য পুলিশের এক অফিসার দেবাশিস চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, 'অসত্ লোকেদের কর্মকাণ্ডে সমাজ ধ্বংস হয় না, সমাজ ধ্বংস হয় ভালো মানুষের নিষ্ক্রিয়তায়৷'
সোশ্যাল নেটওয়ার্কে এমন প্রতিবাদের ঝড়ে শেষমেশ সুশীল সমাজকে উপেক্ষা করেই পথে নামার ডাক দিয়েছে বারাসতের তরুণ সমাজ৷ শহরের শিল্পী শুভ্রা বেহরা 'প্রোটেস্ট এগেনস্ট রেপ কেস অফ বারাসত' নামে একটি কমিউনিটি খুলেছেন ফেসবুকে৷ আগামী শনিবার বিকেলে তাঁরা বারাসত ডাকবাংলো মোড় থেকে মুখে কালো কাপড় বেঁধে হাঁটবেন বলে জানিয়েছেন৷ তাঁর দাবি, প্রায় চারশো জন মিছিলে সামিল হবেন৷
কাঙাল হরিনাথ লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরির পক্ষ থেকেও ওই দিনই বারাসত স্টেশন থেকে সাড়ে ৬ টায় মোমবাতি মিছিলের ডাক দেওয়া
হয়েছে৷ অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুটা পথে নামছে শনিবার৷ দুপুর দুটোয় তাঁদের মিছিল বেরোবে কলেজ স্ট্রিট থেকে৷
No comments:
Post a Comment