ছেলে পেতে হিন্দু দ্বিতীয় বিয়ে বৈধ গোয়ায়
এই সময়, নয়াদিল্লি: কে বলে হিন্দু পুরুষেরা এক স্ত্রী থাকতে দ্বিতীয়বার বিয়ে করতে পারে না? দিব্যি পারে৷ দরকার শুধু গোয়ায় একটা পাকাপাকি বসবাসের ব্যবস্থা করে ফেলা৷
গোয়ায় সংখ্যালঘু হিন্দু জনসংখ্যার জন্য একেবারে খাতায় কলমে রয়েছে এমনই আইন৷ বিয়ের পর ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত স্ত্রী যদি সন্তানধারণ না করতে পারেন, তা হলে স্বামীর দ্বিতীয়বার বিয়ে করার অধিকার রয়েছে৷ শুধু তাই নয়, ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত যদি পুত্রসন্তান না হয় তাহলেও একই নিদান৷ লুকিয়ে চুরিয়ে নয়, একেবারে আইন মেনেই দ্বিতীয় বিয়ে হতে পারে৷ ভারতে আইন কতটা পুরুষপ্রধান তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের (ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড) একটি সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অবিলম্বে এই আইন সংশোধন করতে হবে৷
কিন্ত্ত কী করে এখনও এই রকম আইন ভারতে থাকতে পারে? রিপোর্টটি যিনি তৈরি করেছেন সেই আইনজীবী চিত্রা সিংয়ের জবাব, কেউ হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করেননি৷ তাই সম্ভবত এখনও টিঁকে আছে৷ এখন রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে দাবি ওঠার পরেও পরিস্থিতি বদলানো অবশ্য নিশ্চিত নয়৷ ভরা ভোটের মরসুমে গোয়ায় হিন্দু পুরুষদের এই 'অধিকারে' হস্তক্ষেপ করবে কি সেখানকার বিজেপি সরকার?
রিপোর্টের নাম, ভারতে আইন ও ছেলেদের অগ্রাধিকার, একটি বাস্তবসম্মত সমীক্ষা৷ শুধু গোয়ার এই আইন নয়, রিপোর্ট বলছে, সারা দেশে মেয়েদের স্বার্থরক্ষার জন্য যে সব তথাকথিত 'কঠোর' আইন আছে, তাতে বিপুল ফাঁক আছে, যা দিয়ে অপরাধীরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে৷ অনেক সময় আইন আছে, তার সঠিক রূপায়ণ হচ্ছে না৷ কারণ, পুলিশ থেকে বিচারব্যবস্থা পর্যন্ত সব জায়গাতেই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রধান্য৷ অবস্থা এখন এমন জায়গায় গিয়েছে যে, রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে, জনসংখ্যা রোধে মাত্র দু'টি সন্তানের নিয়ম যে সব রাজ্যে আছে তা তুলে দেওয়া উচিত৷ কারণ, এই আইন থাকায় ছেলে-প্রত্যাশী বাবা-মায়েরা বেশি করে কন্যভ্রূণ হত্যা করছে৷
রিপোর্টে আইন ধরে ধরে সমীক্ষা করা হয়েছে৷ যেমন পণ রোধ আইন, ১৯৬১৷ তিনবার সংশোধনের পরেও সমস্যার মোকাবিলায় আইনটি ব্যর্থ৷ কেন? রিপোর্ট বলছে, 'পুলিশ অনেক ক্ষেত্রেই এফআইআর নেয় না৷ নিলেও ঠিকভাবে তদন্ত করে না৷ তার ওপর বিচারপতিদের একাংশে লিঙ্গবৈষম্য ভীষণভাবেই বর্তমান৷'
এ তো গেল বাস্তব অবস্থা৷ আইনের গলদও বিস্তর৷ যেমন সংজ্ঞাতেই সমস্যা৷ পণের জন্য ছেলেদের ওপর অত্যাচার হয়েছে, এমনটা বিরলতম ঘটনা মধ্যেই পড়ে৷ তা সত্ত্বেও আইনে 'পণ'কে লিঙ্গ নিরপেক্ষ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে৷ সর্বোচ্চ আদালতের একটি রায় বলছে, মেয়ের পৈত্রিক সম্পত্তিতে স্বামীর দাবি বা উপহার চাওয়া পণ নয়৷ একটি মহিলা সংগঠন এই রায় পর্যালোচনার আবেদন জানিয়েছিল, খারিজ হয়ে যায় তা৷ রিপোর্ট বলছে, এত যে কন্যাভ্রূণ হত্যা হচ্ছে, তার একটা কারণ হল এই পণের আতঙ্ক৷ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পণের পরিমাণ বাড়ার ধারণা থাকায় এই কারণে তাল মিলিয়ে চলছে বাল্যবিবাহও৷ দেশের ৪৩% মেয়ের বিয়ে এখনও ১৮ বছরের নীচেই হয়ে যায়৷
এভাবেই বিভিন্ন আইন বিচার করা হয়েছে৷ রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে, সব ব্যক্তিগত সম্পত্তি-সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে ছেলে-মেয়ের সম্পত্তিতে সমান অধিকার দিতে হবে৷ উইল করে বা অন্য আইনি ব্যবস্থায় পৈত্রিক সম্পত্তি শুধু ছেলেদের দেওয়া বন্ধ করতে হবে৷ পণ আইনে সংশোধন এনে তা ঠিকভবে রূপায়ণ করতে হবে ও বিলাসবহুল বিয়ে আইন করে বন্ধ করতে হবে৷ সকলের জন্য বার্ধক্য ভাতা দিতে হবে, যাতে বয়স হলে বাবা-মা জীবনধারণের জন্য শুধু ছেলেদের ওপরে নির্ভর না করেন৷ বাধ্যতামূলকভাবে বাবা-মা বা পরিবারের বেছে দেওয়া ছেলের সঙ্গে বিয়ে বন্ধ করতে হবে৷ মর্যাদা-হত্যা বন্ধ করতে কড়া আইন করতে হবে৷
সুপারিশ তো অনেক আছে৷ কিন্ত্ত তাতে কি সরকার কান দেবে আদৌ?
গোয়ায় সংখ্যালঘু হিন্দু জনসংখ্যার জন্য একেবারে খাতায় কলমে রয়েছে এমনই আইন৷ বিয়ের পর ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত স্ত্রী যদি সন্তানধারণ না করতে পারেন, তা হলে স্বামীর দ্বিতীয়বার বিয়ে করার অধিকার রয়েছে৷ শুধু তাই নয়, ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত যদি পুত্রসন্তান না হয় তাহলেও একই নিদান৷ লুকিয়ে চুরিয়ে নয়, একেবারে আইন মেনেই দ্বিতীয় বিয়ে হতে পারে৷ ভারতে আইন কতটা পুরুষপ্রধান তা নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের (ইউনাইটেড নেশনস পপুলেশন ফান্ড) একটি সমীক্ষা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, অবিলম্বে এই আইন সংশোধন করতে হবে৷
কিন্ত্ত কী করে এখনও এই রকম আইন ভারতে থাকতে পারে? রিপোর্টটি যিনি তৈরি করেছেন সেই আইনজীবী চিত্রা সিংয়ের জবাব, কেউ হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করেননি৷ তাই সম্ভবত এখনও টিঁকে আছে৷ এখন রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্টে দাবি ওঠার পরেও পরিস্থিতি বদলানো অবশ্য নিশ্চিত নয়৷ ভরা ভোটের মরসুমে গোয়ায় হিন্দু পুরুষদের এই 'অধিকারে' হস্তক্ষেপ করবে কি সেখানকার বিজেপি সরকার?
রিপোর্টের নাম, ভারতে আইন ও ছেলেদের অগ্রাধিকার, একটি বাস্তবসম্মত সমীক্ষা৷ শুধু গোয়ার এই আইন নয়, রিপোর্ট বলছে, সারা দেশে মেয়েদের স্বার্থরক্ষার জন্য যে সব তথাকথিত 'কঠোর' আইন আছে, তাতে বিপুল ফাঁক আছে, যা দিয়ে অপরাধীরা সহজেই পার পেয়ে যাচ্ছে৷ অনেক সময় আইন আছে, তার সঠিক রূপায়ণ হচ্ছে না৷ কারণ, পুলিশ থেকে বিচারব্যবস্থা পর্যন্ত সব জায়গাতেই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রধান্য৷ অবস্থা এখন এমন জায়গায় গিয়েছে যে, রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে, জনসংখ্যা রোধে মাত্র দু'টি সন্তানের নিয়ম যে সব রাজ্যে আছে তা তুলে দেওয়া উচিত৷ কারণ, এই আইন থাকায় ছেলে-প্রত্যাশী বাবা-মায়েরা বেশি করে কন্যভ্রূণ হত্যা করছে৷
রিপোর্টে আইন ধরে ধরে সমীক্ষা করা হয়েছে৷ যেমন পণ রোধ আইন, ১৯৬১৷ তিনবার সংশোধনের পরেও সমস্যার মোকাবিলায় আইনটি ব্যর্থ৷ কেন? রিপোর্ট বলছে, 'পুলিশ অনেক ক্ষেত্রেই এফআইআর নেয় না৷ নিলেও ঠিকভাবে তদন্ত করে না৷ তার ওপর বিচারপতিদের একাংশে লিঙ্গবৈষম্য ভীষণভাবেই বর্তমান৷'
এ তো গেল বাস্তব অবস্থা৷ আইনের গলদও বিস্তর৷ যেমন সংজ্ঞাতেই সমস্যা৷ পণের জন্য ছেলেদের ওপর অত্যাচার হয়েছে, এমনটা বিরলতম ঘটনা মধ্যেই পড়ে৷ তা সত্ত্বেও আইনে 'পণ'কে লিঙ্গ নিরপেক্ষ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে৷ সর্বোচ্চ আদালতের একটি রায় বলছে, মেয়ের পৈত্রিক সম্পত্তিতে স্বামীর দাবি বা উপহার চাওয়া পণ নয়৷ একটি মহিলা সংগঠন এই রায় পর্যালোচনার আবেদন জানিয়েছিল, খারিজ হয়ে যায় তা৷ রিপোর্ট বলছে, এত যে কন্যাভ্রূণ হত্যা হচ্ছে, তার একটা কারণ হল এই পণের আতঙ্ক৷ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পণের পরিমাণ বাড়ার ধারণা থাকায় এই কারণে তাল মিলিয়ে চলছে বাল্যবিবাহও৷ দেশের ৪৩% মেয়ের বিয়ে এখনও ১৮ বছরের নীচেই হয়ে যায়৷
এভাবেই বিভিন্ন আইন বিচার করা হয়েছে৷ রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছে, সব ব্যক্তিগত সম্পত্তি-সংক্রান্ত আইন সংশোধন করে ছেলে-মেয়ের সম্পত্তিতে সমান অধিকার দিতে হবে৷ উইল করে বা অন্য আইনি ব্যবস্থায় পৈত্রিক সম্পত্তি শুধু ছেলেদের দেওয়া বন্ধ করতে হবে৷ পণ আইনে সংশোধন এনে তা ঠিকভবে রূপায়ণ করতে হবে ও বিলাসবহুল বিয়ে আইন করে বন্ধ করতে হবে৷ সকলের জন্য বার্ধক্য ভাতা দিতে হবে, যাতে বয়স হলে বাবা-মা জীবনধারণের জন্য শুধু ছেলেদের ওপরে নির্ভর না করেন৷ বাধ্যতামূলকভাবে বাবা-মা বা পরিবারের বেছে দেওয়া ছেলের সঙ্গে বিয়ে বন্ধ করতে হবে৷ মর্যাদা-হত্যা বন্ধ করতে কড়া আইন করতে হবে৷
সুপারিশ তো অনেক আছে৷ কিন্ত্ত তাতে কি সরকার কান দেবে আদৌ?
No comments:
Post a Comment