গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে বেটিং চক্রটি ধরা পড়েছে, তার মূল পাণ্ডা ছিলেন অজিত সুরেখাই। গ্রেপ্তারের পরেই তাঁকে জেরা করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, অজিত স্বীকার করেছেন এর আগে তিনি ঘোড়ার রেসে টাকা খাটাতেন। এই আইপিএলেই তাঁর ক্রিকেট বেটিংয়ে হাতেখড়ি। যদিও এসবের সত্যতা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সুরেখার গ্রেপ্তারির পর স্বাভাবিক ভাবেই টলিউডের আর কেউ এই চক্রে জড়িত কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও সবিস্তার তদন্তের আগে এই নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না গোয়েন্দারা।
রাজভবন সূত্রের খবর, রাজ্যপালকে মীরাদেবী জানিয়েছেন, সরকার এখনও পর্যন্ত যা নিরাপত্তা বাহিনী দেওয়ার কথা বলেছে তাতে অবাধ, স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অসম্ভব৷ এই অবস্থায় ভোটে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে কমিশন তার দায় নেবে না৷ আদালতের নির্দেশ মেনে কমিশনকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভোট করতে হবে৷ সেই কারণে এই সপ্তাহের মধ্যেই কমিশনকে ভোটের নির্ঘণ্টের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে৷ তবে ভোটে নিরাপত্তার প্রশ্নে সরকারও বেকায়দায়৷ সরকার আদালতের রায় মেনে ভোটের নিরাপত্তায় সশস্ত্র পুলিশ সংগ্রহে ছয় রাজ্যের কাছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী চেয়ে চিঠি দিয়েছে৷ এই রাজ্যগুলি হল বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, অসম, ছত্তিশগড় এবং অন্ধ্রপ্রদেশ৷ ছত্তিশগড় জানিয়েছে, তারা অপারগ৷
বিহার সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে কোনও মতামত না-দিলেও তাদের মনোভাব যে নেতিবাচক তা রাজ্য স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কর্তাদের জানিয়ে দিয়েছে৷ বাকি রাজ্যগুলি সম্মত হলেও সব মিলিয়ে ২০ কোম্পানির বেশি বাহিনী পাওয়া যাবে না বলে জানা গিয়েছে৷ এই অবস্থায় ভোটের নিরাপত্তার বিষয়ে আজ, বৃহস্পতিবার মীরাদেবী স্বরাষ্ট্রসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্য পুলিশের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় এবং অতিরিক্ত ডিজি (আইনশৃঙ্খলা) বাণীব্রত বসুর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন৷ রাজভবন সূত্রের খবর, এই বৈঠকের দিকে চেয়ে রয়েছেন রাজ্যপালও৷ এর আগে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সরকার ও কমিশনের বিবাদ মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন নারায়ণন৷ এ বারও তিনি একই রকম উদ্যোগ নিতে পারেন বলে জানা গিয়েছে৷ এই বৈঠকের পরে কমিশন নির্বাচনী বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিনক্ষণ জানিয়ে দিতে পারে৷ কারণ কমিশন স্থির করেছে, আগামী ২৯ মে জেলাশাসকেরা কমিশনের নির্ঘণ্ট মেনেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবেন৷
আদালতের নির্দেশ মেনে শুধু প্রথম পর্যায়ে ৯ জেলার পঞ্চায়েত ভোটের জন্য দরকার অতিরিক্ত ৭৫০ কোম্পানি সশস্ত্র পুলিশ৷ কোথা থেকে আসবে এই বাহিনী? সশস্ত্র বাহিনী চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য বেশ কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ব্যক্তিগত ভাবে যোগাযোগ করছেন৷ তাতে কতটা সুরাহা হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে তাঁর দপ্তরেরই৷ ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর ব্যাপারে কমিশনের প্যাঁচেই পড়ে গিয়েছেন মমতা৷ তাঁর আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী চাওয়া ছাড়া গতি নেই৷ এ জন্য আদালতের রায়কেই দায়ী করা হচ্ছে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে চিঠি দিলেও এই বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী মিলবে এর নিশ্চয়তা নেই৷
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই রাজ্যপালকে সরকারের সঙ্গে তাঁর দফায় দফায় বৈঠকের ফলাফলও জানান৷ শাসক দল বাদে অন্য রাজনৈতিক দলগুলি ভোটে সরকার যে নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলছে, তাতে সন্ত্তষ্ট নয় বলে কমিশনার রাজ্যপালকে জানিয়েছেন৷ তাঁর বক্তব্য ছিল, আদালত স্থির করে দিয়েছে কোন বুথে কত পুলিশ দিতে হবে৷ সেই মতো রাজ্য সরকারকে ভোটে সশস্ত্র পুলিশ দিতে হবে৷
কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে সরকার প্রথম থেকে খুশি হলেও কার্যকর করতে গিয়েই বিপাকে পড়েছে৷ জেলাবিন্যাস নিয়ে রাজ্য সরকার কমিশনের কোন আপত্তি শোনেনি৷ তিন পর্যায়ে জেলাবিন্যাসের ৯-৪-৪ ফর্মুলায় ভোট করতে বাধ্য হয়েছে কমিশন৷ কিন্ত্ত নিরাপত্তার প্রশ্নে সরকারই বেকায়দায়৷ আদালত বলেছে, অতি স্পর্শকাতর প্রতি বুথে দু'জন সশস্ত্র পুলিশ ও দু'জন কনস্টেবল থাকবে৷ স্পর্শকাতর বুথে থাকবে দু'জন সশস্ত্র পুলিশ৷ কম স্পর্শকাতর প্রতি ভোটকেন্দ্রে একজন করে সশস্ত্র পুলিশ ও কনস্টেবল থাকবে৷ সাধারণ ভোটকেন্দ্রে একজন করে সশস্ত্র পুলিশ দিতে হবে৷ এতেই প্রথম পর্যায়ে ৯ জেলার ভোটে এক লক্ষ কুড়ি হাজার সশস্ত্র পুলিশ লাগবে৷ কারণ জেলাশাসকদের রিপোর্ট বলছে এ জেলাগুলির গড়ে ৭০ শতাংশ বুথই স্পর্শকাতর বা অতি স্পর্শকাতর৷ এই সংখ্যাটা সব থেকে বেশি উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়৷ সেখানে ৮৫ শতাংশ বুথই এর আওতায়৷ কমিশন বুধবারই জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে স্পর্শকাতর বুথের তালিকা সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে৷ অথচ, সরকারের হাতে রয়েছে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের ৪৫ হাজার সশস্ত্র পুলিশ৷ কমিশনের সঙ্গে আজকের বৈঠকে সরকার জানাবে ঠিক কত সশস্ত্র বাহিনীর ব্যবস্থা তারা করছে৷ কমিশনের সচিব তাপস রায় বুধবার জানান, 'এই সন্তাহেই কমিশন ভোটের বিজ্ঞন্তি জারি করবে৷ ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চড়ান্ত হয়নি বলে যে বিজ্ঞন্তি জারি করা যাবে না, সে রকম কোনও বাধ্যবাধকতা নেই৷' কিন্ত্ত, ভোটের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কমিশন সন্ত্তষ্ট না-হলে কী হবে? তাপসবাবুর জবাব, 'কমিশনই তা ঠিক করবে৷'
নিরাপত্তা নিয়ে সরকার অসহযোগিতা করলে আদালতের নির্দেশ মেনে অবাধ, স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন কী ভাবে সম্ভব? কলকাতা হাইকোর্টে কমিশনের দায়ের করা রি-কল পিটিশনের শুনানির সময় কমিশনের তরফ থেকে তা জানতে চাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে৷ আগামী ৩ জুন শুনানি হওয়ার কথা৷ তার আগে অবশ্য কমিশন ভোটের প্রস্ত্ততিতে কোনও খামতি রাখছে না৷
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দন্তরের এক আধিকারিকের কথায়, এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার জন্য রাজ্য সরকারের প্রতিদিন খরচ হয় এক লক্ষ চৌত্রিশ হাজার টাকা৷ ৮০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এক সন্তাহ রাখার জন্য রাজ্য সরকারকে ১৫৮ কোটি টাকা দিতে হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে৷ ভিন্ রাজ্য থেকে থেকে বাহিনী আনতেও খরচ হয়৷ গাড়ি ভাড়া দিতে হয়৷ তবে রাজ্য সরকার বেশি উদ্বিগ্ন শেষ পর্যায়ে অর্থাত্ ৯ জুলাই উত্তরবঙ্গের চার জেলায় ভোট করার ব্যাপারে৷ ওই সময় উত্তরবঙ্গে ভরা বর্ষা৷
আগামী সোমবারেই ফলপ্রকাশ মাধ্যমিক। ৮১ দিন পর প্রকাশিত হচ্ছে এবারের মাধ্যমিকের ফল। সোমবার সকাল ৯টায় আনুষ্ঠানিক ফল প্রকাশ করা হবে। বেলা ১১টা থেকে ওয়েবসাইটে ফল প্রকাশ করা হবে। নজিরবিহীন ভাবে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মার্কশিটে পর্ষদ সচিবের স্বাক্ষর থাকছে না। স্বাক্ষর থাকবে প্রশাসকের।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বেশ কিছু নির্বাচিত ও মনোনীত প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি একটি স্বশাসিত সংস্থা। গোটা রাজ্যের কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থীর মূল্যায়ন করে মাধ্যমিকের মার্কশিট দেয় পর্ষদ। মার্কশিটে স্বাক্ষর থাকে পর্ষদে প্রশাসনিক প্রধান সচিবের। কয়েক দশক ধরে এই নিয়মই চলে আসছে পর্ষদে। এবারই সে নিয়ম বদলাচ্ছে। মার্কশিটে স্বাক্ষর থাকবে পর্ষদ প্রশাসকের। প্রশ্নটা আরও জোরাল হচ্ছে, কারণ এর আগেও পর্যদে প্রশাসক নিয়োগ হয়েছে। কিন্তু তখনও মার্কশিটে স্বাক্ষর করেছেন পর্ষদ সচিব।
পর্ষদের কর্তাদের যুক্তি প্রায় দেড়মাস আগে সচিব অবসর নিয়েছেন তাই কোনও সচিব না থাকায় প্রশাসককেই স্বাক্ষর করতে হচ্ছে। পর্ষদের এই যুক্তিও অনেকেই মানতে নারাজ। তাঁদের যুক্তি, পর্ষদ সচিব অবসর নিয়ে থাকলে কোনও সিনিয়র সহ সচিবকে মার্কশিটে স্বাক্ষরের দায়িত্ব দেওয়া যেত। কিন্তু তা হচ্ছে না। যেটা হচ্ছে, তা রীতিমতো রোমহর্ষক। মার্কশিট দেওয়া হবে পর্ষদের নামে। অথচ তাতে স্বাক্ষর থাকবে পর্ষদে নিয়োজিত প্রশাসকের, যিনি আবার পর্ষদের কেউ নন। নির্বাচিত ও মনোনীত সদস্যদের নিয়ে তৈরি পর্যদ ভেঙে দিয়ে যাঁকে সাময়িক সময়ের জন্য নিয়োগ করেছে সরকার। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যতে কোনও আইনি জটিলতায় পড়তে হবে কি না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে।
চব্বিশ ঘণ্টায় নটি শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মৃত শিশুদের প্রত্যেকেরই বয়স এক দিন থেকে এক বছরের মধ্যে। ঘটনায় ইতিমধ্যেই শিশু মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
যদিও মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিত্সকদের দাবি অপুষ্টিজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে এই শিশুগুলির। জেলার রোগী কল্যাণ কমিটির চেয়ারপার্সন তথা পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী জানান, অবিলম্বে শিশু মৃত্যু সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রেল মন্ত্রকের সাম্প্রতিক দূর্নীতির মধ্যেই ফের পুরনো এক ঘুষকাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে আনলেন এক পুলিসকর্তা। এরাজ্যেরই আইপিএস অফিসার নজরুল ইসলাম সেই দূর্নীতির জন্য কার্যত দায়ী করেছেন এরাজ্যেরই বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ওই ঘটনার কথা এখন ফের লিখিতভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জানিয়েছেন তিনি।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে এরাজ্যের ডিজি এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের মাধ্যমে। বর্তমানে রেলমন্ত্রকে যে দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই চিঠিটি দেওয়া হচ্ছে বলে গত ১০ মে জানিয়েছেন এরাজ্যের এডিজি প্রভিশনিং ডঃ নজরুল ইসলাম। মধ্যে রেলের চিফ সিকিউরিটি অফিসারের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে ২০১০ সালের ২২ মার্চ একটি চিঠি দিয়েছিল সিবিআই। যার তদন্ত করেছিলেন সেই সময় রেলমন্ত্রীর বিশেষ আস্থাভাজন নজরুল ইসলাম। আর সেই তদন্তকে কেন্দ্র করেই দূর্নীতির হদিশ মিলেছিল। যার উল্লেখ ও বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে এই চিঠিতে।
"আমি রেলমন্ত্রীর মতামত জানতে চেয়েছিলাম। সেই কারণে আমি তাঁর চেম্বারে গিয়ে অভিযোগগুলি দেখাই এবং তাঁর মতামত জানতে চাই। রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, "সিধু অত্যন্ত দুর্নীতিপরায়ণ। ওকে সাসপেন্ড কর। তাড়িয়ে দাও।`` আমি ভেবেছিলাম, উনি দুর্নীতিতে যুক্ত আইপিএস অফিসারের বিষয়ে অত্যন্ত বিরক্ত এবং তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চান। আমি যথেষ্ট নিষ্ঠার সঙ্গে তদন্ত শুরু করলাম এবং অভিযোগ খতিয়ে দেখে এই সম্পর্কিত আইন এবং নিয়মগুলি খতিয়ে দেখলাম। আমি মুম্বই যেতে চেয়েছিলাম আরও তথ্য সংগ্রহের জন্য। রেলমন্ত্রীর ওএসডি বা অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি গৌতম সান্যাল আমায় জানালেন, পুরভোট এসে যাওয়ায় রেলমন্ত্রী আমাকে কাছাকাছি থাকতে বলেছেন এবং মুম্বই যাওয়ায় আপত্তি করেছেন। সুতরাং আমি দিল্লিতে বসেই যতটা সম্ভব তথ্য জোগাড় করে কাগজপত্র তৈরি করলাম। ডিজি, সেক্রেটারি, মেম্বার স্টাফ এবং রেলমন্ত্রীর ওএসডি আমার সঙ্গে কাগজপত্র নিয়ে আলোচনা করল। আমি ব্যক্তিগতভাবে রেলমন্ত্রীর ওএসডিকে জানালাম, রেলমন্ত্রী নির্দিষ্ট করে ওই দুর্নীতিপরায়ণ আইপিএস অফিসারকে সাসপেন্ড এবং বরখাস্ত করতে চেয়েছেন, তাই আমি রেলমন্ত্রীকে পুরো বিষয়টি জানাতে চাই। ওএসডি বললেন, "আমায় প্রথমে আলোচনা করে নিতে দিন। তারপর আপনাকে ডাকব।" কিন্তু আমাকে ডাকা হয়নি।"
তদন্তে বেশকিছু তথ্য পাওয়া গেলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রককে তা জানায়নি রেলমন্ত্রক। সাসপেন্ড করা দূরের কথা, বরং কোনও অনুমোদন ছাড়াই রেলমন্ত্রক সেই অফিসারকে ছেড়ে দেয়। নজরুল অসলাম লিখেছেন, "খবর পেয়েছি, ওই অফিসারকে বাঁচাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল, তবে তার জন্য মোটা অঙ্কের টাকা নেওয়া হয়েছিল। রেলমন্ত্রীর দফতরে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকে যথেষ্ট ঘুষ দেননি ওই চিফ সিকিউরিটি কমিশনার। সেই কারণেই ওই অফিসারের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ। আর যার তদন্তভার আমাকে দেওয়া হয়েছিল, কারণ ঘুষ দিয়ে আমার সঙ্গে এই বিষয়টি নিয়ে সমঝোতার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। এবার ও যথেষ্ট টাকা দেওয়ায় এবার বাঁচানোর চেষ্টা শুরু হয়ে যায়। একটি সিডি থেকে মারাত্মক তথ্য পাওয়া গেলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি আমাকে বিশ্বাস করতে বাধ্য করায়, যে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ার বিষয়টি সত্যি। অভিযোগগুলি সম্পর্কে কয়েকজন আমাকে বেশকিছু তথ্যও দিয়েছিল, যার মধ্যে একটি সিডি ছিল। একটি সিডিতে একজন উচ্চপদস্থ আরপিএফ অফিসার একদম স্পষ্ট করে বলছিলেন রেলমন্ত্রকে কয়েক লক্ষ টাকা ঘুষ দেওয়ার কথা। আমি এই সিডি সম্পর্কে রেলমন্ত্রীর ওএসডি গৌতম সান্যাল এবং রেলবোর্ডের সচিব এস রক্ষিতকে জানিয়েছিলাম। কীভাবে রেলের অফিসাররা রেলমন্ত্রককে ঘুষ দেওয়ার কথা বলছেন তা বোঝার জন্য আমি ওঁদের সিডি-টি দেখতেও বলি। অফিসার অন স্পেশ্যাল ডিউটি সিডি দেখতেই চাননি। রেলবোর্ডের সচিব আমার চেম্বারে এসে সিডি দেখে একটি শব্দও উচ্চারণ না করে চলে যান। কিছুই হয় না।"
বিযয়টি সরাসরি তত্কালীন রেলমন্ত্রীকে জানাতে চেয়েছিলেন নজরুল ইসলাম। তিনি লিখেছেন, "এবার আমি বিষয়টি মমতা ব্যানার্জিকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু সেইসময় তাঁর সঙ্গে আমার দেখা করাটা সমস্যার হয়ে পড়ে। প্রথমদিকে আমি তাঁর চেম্বারে সরাসরি চলে যেতাম। কিছুদিন বাদে, গৌতম সান্যাল আমাকে বলেন, রেলমন্ত্রী অনুমতি নিয়ে ঢোকার কথা বলেছেন। আমি তাঁকে জানিয়ে দিই, এটা কোনও সমস্যা নয়। ভবিষ্যতে আমি ওএসডিকে জানিয়ে অনুমতি নিয়েই ঢুকব। কিন্তু পরে আমি বুঝতে পারলাম, এটা রেলমন্ত্রীর সঙ্গে যাতে আমার যোগাযোগ না থাকে তার জন্যই করা, এব্যাপারে রেলমন্ত্রীর অনুমোদনও থাকতে পারে। আমি ঠিকই করেছিলাম, ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি রেলমন্ত্রীকে জানাবো। পরের বার রেলমন্ত্রী যখন দিল্লি এলেন, তখন আমি আগের মতোই কোনও অনুমতি বা অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়াই তাঁর ঘরে ঢুকে যাই। আমি তাঁকে মনে করিয়ে দিই, উনিই আমাকে এই কেসের তদন্ত দিয়েছিলেন যাতে ওই অফিসারকে সাসপেন্ড ও চাকরি থেকে বরখাস্ত করা যায়। কিন্তু আশপাশের লোকেরা বলছে, বিশাল অঙ্কের টাকা মন্ত্রককে ঘুষ দিয়ে ও পার পেয়ে গিয়েছে। উনি(রেলমন্ত্রী) বললেন, "রেলভবনের কাউকে ঘুষ দিলেও রেলমন্ত্রকের কেউ ঘুষ নিতে পারে না।" আমি পরিস্কার করি, সিডিতে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে রেলমন্ত্রী বা তাঁর ব্যক্তিগত কর্মী যেমন, ওএসডি, পিএস, ইডিপিজিদের দিকে। উনি(রেলমন্ত্রী) অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়ে ওএসডি গৌতম সান্যালকে ডেকে আমার কথা না শোনার জন্য যা-তা বলেন। আমি আশা করেছিলাম, এবার বোধহয় কিছু হবে। কিন্তু আমাকে চরম আশ্চর্য করে, কিছুই হয় না। এমনকি আমাকে ফাইলও দেখানো হয় না।
সবকিছু বুঝে আইপিএস নজরুল ইসলাম শেষপর্যন্ত মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন খোদ তত্কালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেই।
বলেছেন, পরিস্থিতির বিচারে আমার মনে হয়
১) আমাকে ওই চিফ সিকিউরিটি অফিসারের কাছ থেকে বাড়তি ঘুষ আদায়ের জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল
২) আমার যা করা উচিত ছিল তা করতে পারিনি, কারণ আমার পদটি ছিল অস্থায়ী এবং কোনও ফাইল আমার কাছে আসা বা আমার কাছ থেকে যাওয়ার ব্যবস্থা ছিল না।
৩) রেলমন্ত্রী এই ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি জানতেন না, এমনটা নয়।
রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর মন্ত্রকের বিরুদ্ধে ওঠা ওই অভিযোগ পেয়ে এবার নতুন করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
http://zeenews.india.com/bengali/kolkatta/najrul-islam-on-mamata-bandopadhyay_13542.html
নয়াদিল্লি:পুলিশের জালে এবার রাঘব-বোয়াল? বিন্দু দারা সিংহের সূত্র ধরে নাম জড়ালো স্বয়ং ক্রিকেট প্রশাসক সংস্থার প্রধানের আত্মীয়ের৷ তিনি গুরুনাথ মায়াপ্পন৷ চেন্নাই সুপার কিংসের মালিক৷
সম্পর্কে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসনের জামাই৷
তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে চেন্নাই সুপার কিংসের ভিআইপি বক্সে অবাধ যাতায়াত ছিল বিন্দু দারা সিংহের ৷ গত ৬ই এপ্রিল চেন্নাইয়ে মহেন্দ্র সিংহ ধোনির স্ত্রীয়ের সঙ্গে একসঙ্গে বসে ম্যাচও দেখেন বিন্দু৷ সাক্ষীর পাশেই বিন্দু৷ সেই ছবিকে নিয়ে কম জলঘোলা হয়নি৷ মুম্বইয়ের একটি সংবাদপত্রকে বিন্দু যদিও জানিয়েছেন সিএসকে-র প্রধান গুরুনাথ মায়াপ্পনের আমন্ত্রণে তিনি ম্যাচ দেখতে গেছিলেন৷ বিন্দুর ফোনের কল ডিটেল থেকে মায়াপ্পনের সঙ্গে কথোপকথনের প্রমাণও পেয়েছে পুলিশ৷ এবার, শ্রীনিবাসনের জামাইকেও পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল৷
অন্যদিকে, পুলিশসূত্রে আরও খবর, শ্রীসন্থের বান্ধবী সাক্ষী ধোনির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী৷ দু'জনে একসঙ্গে হোটেল ম্যানেজমেন্টও পড়েছেন৷ এমনকী, শ্রীসন্থের সঙ্গে তাঁর বান্ধবীর আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন সাক্ষীই৷ তবে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর সঙ্গে সাক্ষীর যোগাযোগ কতটা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
একদিকে মায়াপ্পন, অন্যদিকে কি আরও এক বলিউড সুপারস্টার? পুলিশসূত্রে খবর, বিন্দু জানিয়েছেন, মুম্বইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে বলিউডের এক নক্ষত্রের সঙ্গে দেখা করেন বিন্দু৷ ক্রাইম ব্রাঞ্চের এক অফিসার জানিয়েছেন, মোবাইলের কললিস্ট খতিয়ে দেখে জানা যাচ্ছে, ফিক্সিং-এর আগে মুম্বইয়ের একটি পাঁচতারা হোটেলে বলিউডের এক সুপারস্টার এবং একজন অভিনেতা-পরিচালকের সঙ্গে বিন্দু দারা সিংহ দেখা করেন৷ সেখানেই আইপিএলের ম্যাচে ফিক্সিং করার জন্য বুকির কাজ করেছিলেন তিনি৷ বিন্দু ২০ লক্ষ টাকা দেন বলে অভিযোগ৷ তবে, গোটা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই গোয়েন্দা কর্তা৷
যদিও, বলিউডের ওই সুপারস্টারকে আপাতত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ তবে, বেটিং, ফিক্সিংয়ের সঙ্গে বলিউডের সবাই জড়িত নয়, অভিমত কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের মালকিন প্রীতি জিন্টার৷
সব মিলিয়ে বিন্দু দারা সিংহকে ঘিরে শোরগোল বলিউডে৷ তোলপাড় ক্রিকেটমহল৷
আইপিএল ফিক্সিংকাণ্ডে আরও জোরালো হচ্ছে বলিউড যোগ৷ ফিক্সিং-এর ব্যাপারে বিন্দু দারা সিংহের সঙ্গে আইপিএলে একটি দলের মালিকের এক আত্মীয়রও যোগাযোগ ছিল৷ সর্বভারতীয় একটি দৈনিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরে এমনটাই দাবি করা হয়েছে৷ সর্বভারতীয় ওই সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বিন্দু দারা সিংহ ও একটি আইপিএল দলের ওই মালিকের মধ্যে একাধিকবার মোবাইলে কথা হয়৷ তাঁদের মোবাইল ফোনের কললিস্টও পুলিশের কাছে রয়েছে৷ কিন্তু সংবাদপত্রে ওই আইপিএল দলের মালিক বা তাঁর ওই আত্মীয়র নাম, পরিচয় সম্পর্কে স্পষ্ট করে কিছু জানানো হয়নি৷
এদিকে, আইপিএলের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট৷ স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি প্রকাশ হয়ে পড়ায় আইপিএল নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানির সময় বুধবার দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, এ ব্যাপারে আদালত কোনও হস্তক্ষেপ করবে না৷ আইপিএল পরিচালনার দায়িত্ব বিসিসিআই-এর হাত থেকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের হাতে তুলে দেওয়ার আবেদনও আদালতে করা হয়েছিল৷ সে ক্ষেত্রে আদালত এই আবেদনে সংশোধনী এনে নতুন করে পিটিশন দাখিল করার কথা বলেছে৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/sports/cricket/36925-2013-05-22-08-30-05
ফের বিস্ফোরক তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়৷ দুর্গাপুরে দলের শ্রমিক সংগঠনের এক অনুষ্ঠানে বললেন, মমতার নামে স্লোগান দেব, আর সাদা প্যাকেটে টাকা নেব, এ ভাবে চলতে পারে না৷ গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগকে উসকে দিয়ে তাঁর মন্তব্য, তৃণমূলকে মারছে তৃণমূলই৷
সাম্প্রতিকসময়ে একাধিক প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিআইসি-র গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব৷ আরও জোরালো হয়েছে দোলা সেন ও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বিরোধের তত্ত্ব৷ বুধবার দুর্গাপুরে আইএনটিটিআইসি অনুমোদিত ডিএসপি ঠিকা মজদুর ইউনিয়নের সমাবেশে যোগ দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে ফের সরব হলেন শোভনদেব৷ নাম না করে নিশানা করলেন দোলা সেন-পূর্ণেন্দু বসুর নিয়ন্ত্রনাধীণ ডিএসপি ঠিকা শ্রমিক কংগ্রেসের নেতৃত্বকে৷
দলের অভ্যন্তরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগকেও ফের উস্কে দিয়েছেন রাসবিহারীর এই বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়ক৷
দলনেত্রীর কড়া নির্দেশ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না৷ পঞ্চায়েতের আগে রাজ্যজুড়ে মরিয়া হয়ে সেই চেষ্টাই চালাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব৷ গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ক দখলে চেষ্টা হচ্ছে বুথ স্তরে টিম গড়ার৷ তারইমধ্যে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য নতুন বিতর্ক উস্কে দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা৷
http://www.abpananda.newsbullet.in/state/34-more/36940-2013-05-22-16-14-45
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। প্রথম দফার নির্বাচনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে আগামী সোমবার। দ্বিতীয় দফার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হচ্ছে ৩১ মে। তৃতীয় দফার জন্য তেসরা জুন বিজ্ঞপ্তি জারি করবে কমিশন। প্রথম দফার মনোনয়নপত্র তোলা এবং জমা দেওয়া যাবে ২৯ মে থেকে পাঁচই জুন পর্যন্ত। দ্বিতীয় দফার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শুরু হবে তেসরা জুন থেকে। চলবে ১০ জুন পর্যন্ত।
তৃতীয় দফার জন্য মনোনয়নপত্র তোলা এবং জমা দেওয়া যাবে ৫ জুন থেকে ১২ জুন পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র পরীক্ষার জন্য প্রথম দফার ক্ষেত্রে সাতই জুন , দ্বিতীয় দফার ক্ষেত্রে ১২ জুন, এবং তৃতীয় দফার ক্ষেত্রে ১৪ জুন নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রথম দফার ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে ১০ জুন, দ্বিতীয় দফা ১৫ জুন এবং তৃতীয় দফার ক্ষেত্রে ১৭ জুন।
এদিকে, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পঞ্চায়েত নির্বাচনের লক্ষ্যে এবার পর্যবেক্ষকদের তিনটির জায়গায় চারটি রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্ত থেকেই স্পষ্ট, নির্বাচনের প্রতিটি মুহূর্তের সব তথ্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে চাইছে তারা।
রাজ্যের ৩২৯টি ব্লকে এবছরের পঞ্চায়েত নির্বাচন হতে চলেছে। আগামি শনিবারই প্রথম দফার নটি জেলার জন্য মোট ২১০ জন পর্যবেক্ষককে নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে কমিশন। সেই বৈঠকেই পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে তিনটির পরিবর্তে চারটি রিপোর্ট জমা দিতে বলা হবে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্যন্ত পর্যবেক্ষককরা তিনটি করে রিপোর্ট জমা দিয়ে এসেছেন।
প্রথম রিপোর্ট জমা দিতে হত মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া পর
দ্বিতীয় রিপোর্ট জমা দিতে হত ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর
তৃতীয় রিপোর্ট জমা দিতে হত ফলপ্রকাশের পর
এবছর আরও একটি অতিরিক্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে পর্যবেক্ষকদের। কী থাকবে সেই রিপোর্টে?
১) নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙা নিয়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়ছে কিনা
২) জমা পড়ে থাকলে সেবিষয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
৩) নির্দিষ্ট সংখ্যায় বাহিনী জেলায় পৌঁছেছে কিনা?
৪) অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছেছে কিনা?
অর্থাত্ শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের লক্ষ্যে বিশেষ নজর দিতে চাইছে কমিশন। পাশপাশি, নির্বাচনী আচরণবিধি ভাঙার প্রবণতা আটকাতেও কমিশন মরিয়া। কোনও এলাকায় পর্যবেক্ষক সঠিক ব্যবস্থা না নিলে, কমিশন সরাসরি হস্তক্ষেপ করার কথাও ভাবনাচিন্তা করছে। যদি দেখা যায় কোনও ব্লকে বা জেলায় কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দল যদি প্রতিনিধি দিতে না পারে তবে, সেই বিষয়ে তদন্ত করার কথাও ভাবছে কমিশন। কমিশনের বক্তব্য, দু হাজার আটেও, এরকম ক্ষেত্রে তদন্তের নজির রয়েছে। সেই দৃষ্টান্তকে সামনে রেখে এবারের নির্বাচনকেও সুষ্ঠু ও অবাধ করতে চাইছে কমিশন
এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হল সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারির অন্যতম অভিযুক্ত দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে। সকালে কয়েকটি রুটিন পরীক্ষার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকেরা। এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বড় কোনও শারীরিক সমস্যা নেই দেবযানীর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি শারীরিক দূর্বলতা, ডিহাইড্রেশন এবং ইউরিনের সমস্যাও অনেকটাই কেটে গেছে দেবযানীর।
মঙ্গলবার বারুইপুর আদালত থেকে নিউটাউন থানায় আসার পথে হঠাতই অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবযানী। জিরলগাছা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিতসকেরা এসএসকেএম হাসপাতালে রেফার করেন দেবযানীকে। রাতেই এসএসকেএমের মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় দেবযানীকে। রাতভর হাসপাতাল পর্যবেক্ষণে ছিলেন দেবযানী। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ এসএসকেএম থেকে দেবযানীকে নিয়ে রওনা হয় দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা পুলিসের একটি দল। আপাতত দেবযানীকে সোনারপুর থানায় রাখা হচ্ছে।
অবশেষে শর্তাধীন জামিনে মুক্তি পেলেন গার্ডেনরিচ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মহঃ ইকবাল ওরফে মুন্না। গার্ডেনরিচ কাণ্ডে পুলিস খুনের ঘটনায় মুন্নার জামিন মিললেও সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও জামিন পাননি কংগ্রেস নেতা মোক্তারসহ বাকিরা। সাতাত্তর দিন পর জামিন মিলল গার্ডেনরিচের পুলিস খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মহঃ ইকবাল ওরফে মুন্নার।
মায়ের শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বুধবার আদালতে মুন্নার জামিনের আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী। বিচারক ঘটনার সত্যতা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় সিআইডিকে। মুন্নার মা অসুস্থ এবং ভেন্টিলেশনে রয়েছে বলে আদালতে জানায় সিআইডি।
ছ হাজার টাকার ব্যক্তিগত বণ্ডে জামিন দেওয়া হয় মুন্নাকে। জামিন পেলেও সপ্তাহে একদিন ভবানীভবনে গিয়ে তদন্তকারী অফিসারের সামনে হাজিরা দিতে হবে মুন্নাকে। গার্ডেনরিচে পুলিস খুনের ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মুন্না জামিন পেলেও সেদিনের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও বাকিরা জামিন পাননি।
দুটি চ্যানেলের কর্মীদের বেতন হিসাবে এককালীন এক্সগ্রাশিয়া অনুদান দেওয়া হবে বলেও ঘোষণা করা হয়েছে। পয়লা বৈশাখের দিনই প্রথম জানা যায় সারদা গোষ্ঠীর দুটি চ্যানেল বন্ধের কথা। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ওই চ্যানেল থেকেই প্রথম চিটফান্ড কেলেঙ্কারির কথা জানতে পারেন তিনি।
এবার সেই চ্যানেল দুটিকে সরকারিভাবে অধিগ্রহণের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। চ্যানেল অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে আইন তৈরি করা প্রয়োজন বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। সেক্ষেত্রে বিধানসভায় তা পাস করে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন প্রয়োজন। কিন্তু তাতে দীর্ঘ সময় লাগবে। সেকারণে দুটি চ্যানেলের কর্মীদের বেতন হিসাবে ষোল হাজার টাকা এককালীন এক্সগ্রাশিয়া অনুদান দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সরকারি টাকায় খবর ও বিনোদনের টিভি চ্যানেল চালানো নিয়ে কোনও কোনও মহলে প্রশ্ন উঠছে। বিপন্ন এবং রুগ্ন অন্য সংবাদমাধ্যমের ক্ষেত্রেও সরকার এই ধরনের ব্যবস্থা নেবে কিনা, সে প্রশ্নও উঠতে বাধ্য।
বলিউডের বিন্দু দারা সিংয়ের পর, এবার টলিউডের অজিত সুরেখা। ক্রিকেটের মাথা হেঁট করিয়ে দেওয়ার ফিক্সিং কাণ্ডে গ্রেফতারে এবার জুড়ল টলিউডের নাম। বেটিং চক্রে জড়িয়ে গেল টলিউডও। বেটিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে টলিউডের প্রযোজক অজিত সুরেখাকে।
গতকাল রাতে কলকাতার গৌরিবাড়ি লেনের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা দফতর এবং এসটিএফ। যৌথ ওই অভিযানে পুলিসের জালে ধরা পড়েন বুকি অজিত সুরেখা সহ দশজন। তার কাছ থেকে আটটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে।
ল্যাপটপে বেটিং সফটওয়্যার লোড করা ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিস। ধৃতদের কাছ থেকে নগদ তিনলক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিস।
পুলিস জানতে পেরেছে ঘোড়দৌড়ে নিয়মিত বিরাট অঙ্কের টাকা লাগাতেন ধৃত অজিত সুরেখা। পুলিসি জিজ্ঞাসাবাদে, গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন এবারই প্রথম ক্রিকেট বেটিং-এ টাকা লাগান অজিত সুরেখা। ধৃতদের আজ শিয়ালদহ আদালতে তোলা হবে।
সারদা কাণ্ডে যুক্ত কলকাতা পুরসভা। এই অভিযোগে আজ উত্তাল হল পুরসভার অধিবেশন। অভিযোগ, মাত্র দুহাজার বর্গফুট এলাকায় সারদা গোষ্ঠীর তেতাল্লিশটি সংস্থাকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। সবকটি লাইসেন্সেরই মালিক সুদীপ্ত সেন।
455, নম্বর ডায়মন্ডহারবার রোড। ওই ঠিকানায় মাত্র দুহাজার বর্গফুট এলাকায় সুদীপ্ত সেনের মালিকানাধীন তেতাল্লিশটি সংস্থাকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে কলকাতা পুরসভা। এই বিস্ফোরক অভিযোগটি পুরসভার অধিবেশনে এনেছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়। ওই ঠিকানাটি মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নিজের বিধানসভা এলাকা পূর্ব বেহালায়। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তেরও দাবি জানিয়েছেন প্রকাশ উপাধ্যায়।
শুধু চারশ পঞ্চান্ন ডায়মন্ডহারবার রোড নয়, কোনওরকম অনুসন্ধান না করেই শহরে সারদার মোট ঊনসত্তরটি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে ট্রেড লাইসেন্স। চারশ পঞ্চান্ন ডায়মন্ড হারবার রোডের ঠিকানায় যে ৪৩টি সংস্থাকে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে তারমধ্যে ৫০০টির বেশি সংস্থার লাইসেন্স প্রোমোটারির জন্য। পুরসভার লাইসেন্স বিভাগের সামান্য নজরদারি থাকলে যা কোনওমতেই সম্ভব নয়। লাইসেন্স দেওয়ায় কোনও দুর্নীতি হয়েছে বলে মানতে নারাজ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।
মেয়র যতই অভিযোগ অস্বীকার করুন না কেন, তথ্য বলছে অন্য কথা। ৪৫৫ নম্বর ডায়মন্ডহারবার রোডের ঠিকানায় দু হাজার বর্গফুট এলাকার হিসেব থাকলেও ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার হিসেব তা কিন্তু প্রায় ছয় হাজার বর্গফুট। বাকি চার হাজার বর্গফুটের কোনও হদিস নেই পুরসভার নথিতে।
বিন্দুর পর এ বার কে, আতঙ্কে বলিউড পেজ থ্রি
মুম্বই: আইপিএলের টাকা আর গ্ল্যামারের ঝলকানির পিছনে কালো পর্দাটা সরে যেতেই বেআব্রু হয়ে পড়েছে বলিউডের পেজ-থ্রি দুনিয়া৷ বিন্দু দারা সিংয়ের মতো একেবারে পিছনের সারিতে থাকা এক বলিউড অভিনেতার সূত্রেই এখন হাড়ে কাঁপুনি শুরু হয়েছে মুম্বই চলচ্চিত্র জগতের বহু তারকার৷ বিন্দুকে জেরা করে আইপিএলে স্পট ফিক্সিংয়ে বলিউডের আরও বেশ কিছু বড় নাম বেরিয়ে আসতে পারে বলে মনে করছে মুম্বই পুলিশও৷
মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ ইতিমধ্যেই প্রায় ৪৫ জনকে জেরা করেছে৷ স্পট ফিক্সিংয়রে জাল গোটাতে কথা বলা হয়েছে আরও প্রায় ১০০ জনের সঙ্গে৷ এরা প্রায় সকলেই কোনও না কোনও ভাবে বেটিং চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করছে পুলিশ৷ প্রায় প্রতিটি আইপিএলের ম্যাচের পরে 'আফটার পার্টি'গুলিই যে বুকিদের জাল বিছোনোর প্রধান ক্ষেত্র ছিল সে ব্যাপারে প্রায় নিঃসংশয় পুলিশ৷ এখানেই বিপদ বাড়ছে বলিউডের৷ এত দিন প্রায় সবক'টি আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির এই সব আফটার পার্টি আলো করে থাকতেন বলিউডের ছোট-বড়-মেজ তারকারা৷ তাদের পাশাপাশিই প্রযোজক, ব্যাঙ্কার ও চিত্রতারকাদের আত্মীয়স্বজনরাও ভিড় জমাতেন এই সব পার্টিগুলিতে৷ বিন্দু ও বুকিদের জেরা করে এমনই অনেকের নাম জানতে পারছে পুলিশ৷
আগামী দিনে পুলিশের দল বলিউডের আরও অন্দরমহলে ঢুকে পড়তে পারে এই আশঙ্কাতেই এখন কাঁটা হয়ে আছে মুম্বইয়ের গ্ল্যামার দুনিয়া৷ ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক ও তাঁদের আত্মীয় বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়ে ভিআইপি বক্সে ঢুকে পড়েছেন বিন্দুর মতো আরও অনেকেই৷ বিন্দুদের মোডাস অপারেন্ডিটাও ছিল খুব সহজ৷ ভিআইপি বক্সে বা আফটার পার্টিতে যত বেশি সম্ভব লোকের সঙ্গে ভাব জমানো এবং তাদের বাড়তি টাকার প্রয়োজন আছে কি না ঠারেঠোরে জেনে নেওয়া৷ মুম্বই পুলিশের এক অফিসার জানালেন, 'বিন্দুর কাজই ছিল ক্রিকেটারদের সঙ্গে ভাব জমিয়ে যত্রতত্র ঘোরাঘুরি৷ কিছুটা সখ্য বাড়লেই বুকিদের টোপ তাদের সামনে ফেলে দিত বিন্দু মতো লোকজন৷'
তবে, মজার কথা হল গ্ল্যামার দুনিয়ার তাবড় লোকজন এই ধরনের পার্টিতে গেলেও আজ পর্যন্ত আইপিএলের এই ধরনের পার্টিতে দেখা যায়নি সচিন তেন্ডুলকর বা রাহুল দ্রাবিড়ের মতো খেলোয়াড়কে৷ বিন্দুর মতো বেনোজলদের এড়িয়ে স্বচ্ছ ভাবেই ক্রিকেটে মন দিয়েছেন যাঁরা৷
বিনা টেন্ডারে সদ্য তৈরি একটি কোম্পানিকে ৬০ কোটি টাকার নিকাশি সংস্কারের বরাত পাইয়ে দেওয়ার প্রস্তাবকে ঘিরে শোরগোল পড়ে গিয়েছে কলকাতা পুরসভায়৷ শহরের নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কারের কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরসভার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগের পক্ষ থেকে ওই প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা নিয়ে ঘোরতর আপত্তি জানিয়েছে পুর অর্থ বিভাগ৷ অভিযোগ, ওই কোম্পানিকে কাজের বরাত দেওয়ার জন্য রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক দিন আগেই মেয়রের কাছে তদ্বির করে গিয়েছেন৷ তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতারাও অফিসারদের উপর নানা ভাবে চাপ দিচ্ছেন৷ এই প্রস্তাবের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও৷
এই ধরনের বেআইনি পদক্ষেপ থেকে বিরত থাকার জন্য কমিশনারের কাছে সুপারিশ করেছেন চিফ মিউনিসিপ্যাল ফিনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসার দেবতোষ দাশগুপ্ত৷ আইনি বিশেষজ্ঞেরাও জানিয়েছেন, যাদের কাজ করার কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, তাদের কোনও মতেই এত টাকার কাজ দেওয়া যায় না৷ পুর কমিশনার খলিল আহমেদ এবং যুগ্ম কমিশনার (জেনারেল) তাপস চৌধুরীও প্রস্তাবের বিরুদ্ধেই মত দিয়েছেন৷ শুধু তা-ই নয়, পুরসভার একাধিক মেয়র পারিষদ এ নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা মেয়রকে জানিয়ে দিয়েছেন৷ কিন্তু সে-সব উপেক্ষা করেই প্রস্তাবটি মেয়র পারিষদের আসন্ন বৈঠকে উঠতে চলেছে৷
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'এ রকম একটি প্রস্তাব জমা পড়েছে ঠিকই, কিন্তু আমরা এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি৷ প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখার জন্য পুরসভার বিভিন্ন দন্তরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ তারা কী সুপারিশ করে, সেটা দেখার পরই মেয়র পারিষদ বৈঠকে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷' যে বিভাগ থেকে প্রস্তাবটি দেওয়া হয়েছে, সেই বিভাগের মাথায় রয়েছেন স্বয়ং মেয়র৷ প্রশ্ন উঠেছে, তাঁর মতামত না-নিয়ে অফিসারেরা কি এই ধরনের একটি প্রস্তাব দিতে পারেন? ওই বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নীলাংশু বসু বলেন, 'আমি প্রস্তাবটি যুগ্ম কমিশনার (ডেভেলপমেন্ট)-কে পাঠিয়ে দিয়েছি৷ যা বলার তিনিই বলবেন৷' যুগ্ম কমিশনার তাপস চৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে চাননি৷
পুর কমিশনার খলিল আহমেদ এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি৷ তবে ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্পের টাকায় কাজটা হবে, তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার রাজ্য সরকারের ঘাড়েই চাপাতে চাইছেন তিনি৷
এ ব্যাপারে রাজীববাবু বলেন, 'ওই কোম্পানির ডিরেক্টর আমার বহু দিনের পরিচিত৷ আমরা আগে একসঙ্গে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করতাম৷ যে কোনও কারণেই হোক উনি কিছুতেই মেয়রের সঙ্গে দেখা করতে পারছিলেন না৷ তাই তিনি আমাকে অনুরোধ করেছিলেন৷ আমি ওঁকে মেয়রের সঙ্গে দেখা করিয়ে দিয়েছি৷ সুপারিশের কোনও প্রশ্নই ওঠে না৷' একই সঙ্গে রাজীববাবু জানান, 'পুরোনো কোম্পানির অংশীদার হিসাবে তারা কাজ পেতেই পারে৷ এর মধ্যে কোনও অন্যায় আছে বলে আমি মনে করি না৷'
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাসবিহারী রোডে অসমান্ত নিকাশি সংস্কার কাজের বরাত দেওয়াকে কেন্দ্র করেই বিতর্কের সূত্রপাত৷ এর আগের ওই কাজের বরাত পেয়েছিল 'অ্যাঞ্জেলাইনার' নামে অস্ট্রিয়ার একটি সংস্থা৷ কিন্তু গত এপ্রিল মাসে সেই সংস্থাটি নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করে৷ তার আগেই গত মার্চ মাস থেকে নিকাশি সংস্কারের কাজ বন্ধ করে দেয় তারা৷ এর পরই ইন্টারন্যাশনাল অ্যাঞ্জেলাইনার নামে সদ্য তৈরি হওয়া একটি কোম্পানিকে বকেয়া কাজের বরাত দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয় পুরসভার প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ৷ তাতে বলা হয়, পুরোনো অ্যাঞ্জেলাইনার কোম্পানির এক অংশীদারই নতুন কোম্পানি তৈরি করেছেন৷ সেই সুবাদে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাঞ্জেলাইনার কোম্পানির পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ তাই তাদের বিনা টেন্ডারে কাজের বরাত দেওয়া হোক৷ সেই প্রস্তাব দেখে চমকে ওঠেন অর্থ দপ্তরের কর্তারা৷ তাঁরা জানতে পারেন, যে সংস্থাকে ৬০ কোটি টাকার বরাত দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তাদের এত বড় কাজ করার কোনও অভিজ্ঞতাই নেই৷
মালদহ শহরের বাসিন্দা সাগ্নিক সাহা ভিনরাজ্যে শ্রমিক পাঠানোর ঠিকাদার৷ চলতি মাসের গোড়ার দিকে মালদহ জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মোট ৩৩ জন শ্রমিককে জয়পুরের বালাপুরমে পাঠিয়েছিলেন তিনি৷ সেখানে মোবাইলের টাওয়ার বসানোর কাজে শ্রমিকের দরকার ছিল৷ সাগ্নিক জানিয়েছেন, আগ্রার লাকচি ইনফ্রা পাওয়ার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার সঙ্গে শ্রমিক সরবরাহের ব্যাপারে তাঁর চুক্তি হয়েছিল৷ জয়পুরে ৪০ ফুট উঁচু মোবাইল টাওয়ার বসানোর কাজ তিন মাস করার কথা শ্রমিকদের৷ চুক্তি অনুযায়ী, তাতে ওই ৩৩ জনের দৈনিক মোট ১৯ হাজার ৫০০ টাকা পাওনা৷ সাগ্নিক জানিয়েছেন, চুক্তির শর্তগুলি মানেনি ওই সংস্থা৷ ৪০ ফুট উঁচু টাওয়ারের কথা লেখা থাকলেও, প্রায় দ্বিগুণ উঁচু টাওয়ারের কাজ করতে হয় শ্রমিকদের৷ চুক্তি অনুযায়ী, দৈনিক যে মজুরি পাওয়ার কথা, তা-ও মেলেনি শ্রমিকদের৷
বিষয়টি জানতে পেরে সংস্থাটির কর্ণধার শৈলেন্দ্র সাক্সেনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন সাগ্নিক৷ তাঁর দাবি, এতে হিতে-বিপরীত হয়৷ তিনি জানিয়েছেন, শৈলেন্দ্র টেলিফোনে জানায়, অদক্ষ শ্রমিক পাঠিয়ে তাঁকে ঠকানো হয়েছে৷ তাই ক্ষতিপূরণ বাবদ চার লক্ষ টাকা পাঠাতে হবে সাগ্নিককে৷ নইলে ছাড়া পাবেন না শ্রমিকরা৷
এই ডামাডোলের মাঝেই দিন দুয়েক আগে তাঁর মোবাইলে এক শ্রমিক ফোন করেন৷ সাগ্নিক জানিয়েছেন, লুকিয়ে ফোন করেছিলেন ওই শ্রমিক৷ তিনি সাগ্নিককে বলেন, সংস্থার লোক তাঁদের সকলের মোবাইল কেড়ে নিয়েছে৷ রাত-দিন কাজ করাচ্ছে৷ মজুরি দেওয়া তো দূরের কথা, ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হচ্ছে না তাঁদের৷ এতে কয়েক জন অসুস্থও হয়ে পড়েছেন৷ কিন্ত্ত তাতেও রেহাই দেওয়া হচ্ছে না৷ জোর করে খাটানো হচ্ছে শ্রমিকদের৷
ওই শ্রমিকদের ফেরানো দাবিতে সাগ্নিকের বাড়িতে চড়াও হচ্ছেন তাঁদের পরিবার৷ বিপদ বুঝে সাগ্নিক মঙ্গলবার মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন৷ ঘটনার কথা জানান তাঁকে৷ মালদহ পুলিশের পক্ষ থেকে জয়পুরে যোগাযোগ করা হয়েছে৷ পাঠানো হয়েছে ফ্যাক্সবার্তা৷
পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, 'অভিযোগটা আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি৷ ইতিমধ্যেই জয়পুর পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে৷'
মাসখানেক আগেই মহারাষ্ট্রে কাজ করতে বহুতল দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল মালদহের ১১ জন শ্রমিকের৷ সেই ঘটনার পর টনক নড়ে জেলা প্রশাসনের৷ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র এবং কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীও৷ তদন্তে উঠে আসে, জেলায় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের বাস্তব অবস্থা খুবই করুণ৷ এলাকায় কাজ না পেয়ে গ্রামাঞ্চল থেকে প্রতি দিন হাজার হাজার মানুষ ভিনরাজ্যে পাড়ি দেন৷
সেই তদন্তের পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন৷ 'আপনার সরকার, আপনার অধিকার' নাম দিয়ে একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়৷ জেলায় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে ব্লকে ব্লকে সভা করে প্রচার করা হতে থাকে সরকারি উন্নয়নমূলক প্রকল্প, জীবিকার সুলুকসন্ধান৷ কিন্ত্ত তা যে বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি, তার প্রমাণ এই ঘটনা৷
ওই চিঠিতে মঞ্চের নেতা নেত্রীরা জানিয়েছেন, 'আমরা জানতে পেরেছি যে ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে জঙ্গলমহলের ২০ শতাংশ বুথকে 'অতি স্পর্শকাতর' বলে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ কিন্ত্ত এই তথ্য ঠিক নয়৷ তার সবথেকে বড় প্রমাণ, স্পর্শকাতর এলাকা বলেই সরকার এখনও পর্যন্ত এখানে যৌথ বাহিনী মোতায়েন করে রেখেছে৷ কেন্দ্র ইতিমধ্যেই এই এলাকাকে মাওবাদী অধ্যুষিত বলে ঘোষণা করেছে৷ তত্সত্ত্বেও কেন এই সমগ্র এলাকাকে 'অতি স্পর্শকাতর' তালিকাভুক্ত করা হল না?' এই মঞ্চে কংগ্রেস ছাড়াও যে সব আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলি রয়েছে, তার মধ্যে ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর সভানেত্রী চুনীবালা হাঁসদা বলেন, 'পুলিশ দিয়ে শান্তিপূর্ণ ভোট করানোতে তৃণমূলের আগ্রহ নেই৷ নির্বাচন কমিশনের উচিত, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার পাশাপাশি সমগ্র ঝাড়গ্রাম মহকুমাকেই 'অতি স্পর্শকাতর' বলে ঘোষণা করা এবং এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো৷' ঝাড়খণ্ড অনুশীলন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসিত খাটুয়ার অভিযোগ, '৩৪ বছর ধরে এলাকায় সন্ত্রাস চালিয়েছে সিপিএম৷ তার পরে দু'বছর মাওবাদীদের খুন-সন্ত্রাসের রাজনীতি চলেছে৷ এ বার পরিবর্তনের সরকার এসে ফের সন্ত্রাস চালিয়ে বিরোধীদের ভোটে না-দাঁড়ানোর হুমকি দিচ্ছে৷ তাই আমরা নির্বাচন কমিশননের কাছে নিরপেক্ষ বিচার চেয়েছি৷ কমিশনার আসুন, জঙ্গলমহল সরেজমিনে ঘুরে দেখুন এবং সেইমতো ব্যবস্থা নিন৷'
এই আঞ্চলিক দলগুলির দাবিতে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেসও৷ তাদের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, 'তৃণমূলনেত্রী এক দিকে বলছেন জঙ্গলমহল হাসছে৷ অন্য দিকে এলাকায় যৌথ বাহিনী মোতায়েন করে রেখেছেন৷ যদি এতই শান্তিপূর্ণ অবস্থা থাকে, তা হলে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহার করুন না কেন?'
এই সময়: দু'দিন জেলে কাটিয়ে সুদীপ্ত সেন এখন পুলিশের হেফাজতে৷ আর দু'দিন হাসপাতালে কাটানোর পর দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে সোমবার পাঠানো হল জেলে৷ এদিনই দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ কামালগাজিতে ইএম বাইপাসের ধারে সুদীপ্ত সেনের কোম্পানির প্রায় ১৮ বিঘা জমির সন্ধান পেয়েছে, যার বাজারমূল্য ৮০ কোটি টাকা বলে তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান৷
সারদা গোষ্ঠী-সহ বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে যখন তদন্ত যখন এগোচ্ছে, তখন এই প্রতিষ্ঠানগুলির কোটি কোটি টাকার কেলেঙ্কারির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে কি না, তা তা বিচারের ভার এ বার সুপ্রিম কোর্টে গড়াল৷ বেআইনি আর্থিক সংস্থাগুলির প্রতারণা মামলায় সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে দু'টি আবেদন সোমবার জমা পড়েছে৷ ওই দু'টি মামলার একটির ক্ষেত্রে আবেদনকারীরা হলেন আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা প্রতীম সিংহরায় ও আবু আব্বাসউদ্দিন৷ অন্যটির আবেদনকারী সুব্রত চট্টরাজ নামে এক আইনজীবী৷ সারদা কাণ্ডে সিবিআই তদন্ত চেয়ে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে চারটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে৷ এখনও পর্যন্ত ওই মামলাগুলির শুনানি শেষ হয়নি৷ তার মধ্যেই বকলমে কংগ্রেসের তরফে সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পদক্ষেপ যথেষ্ট তাত্পর্যপূর্ণ৷ সবক'টি বেআইনি আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তভার সিবিআইকে দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের কাছে৷ কিন্তু হাইকোর্টে যেখানে শুনানি চলছে, সেখানে হঠাত্ সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে মামলা কেন? সুপ্রিম কোর্টে মামলা করার ব্যাপারে প্রধান উদ্যোক্তা প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, বেআইনি আর্থিক সংস্থার ফাঁদে পড়ে বহু মানুষ সর্বস্বান্ত হচ্ছে৷ এখানে তো চুপচাপ বসে থাকা যায় না৷ কিন্তু সর্বোচ্চ আদালত আবেদন খারিজ করে দিলে হাইকোর্টের মামলাগুলির ক্ষেত্রে আইনগত অসুবিধা হবে না তো? মান্নান সাহেব জানান, হাইকোর্টের মামলার সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলার ফারাক আছে৷ আমরা ৭৩টি বেআইনি আর্থিক সংস্থার বিরুদ্ধেই তদন্ত দাবি করেছি৷ এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নেন কেন্দ্রীয় রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরি৷ পুরশুড়ায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই-কে ভয় পাচ্ছেন৷
এদিকে সারদা কাণ্ডে বিধাননগর কমিশনারেটের ভূমিকা নিয়ে ফের প্রশ্ন উঠল৷ সারদা কর্ণধার দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা নিয়ে আগেই সমালোচনার মুখে পড়েছিল পুলিশ৷ এদিন হাসপাতালের বিল না মিটিয়েই পুলিশ তাঁকে সেখান থেকে ছাড়িয়ে এনে বিধাননগর মহকুমা আদালতে তোলে৷ পুলিশ সূত্রের খবর, দু'দিনে প্রায় ৩২ হাজার টাকার মতো বিল হয়েছে দেবযানীদেবীর৷ কিন্তু টাকা মেটাবে কে, বিতর্ক তৈরি হয়েছে তা নিয়েই৷ দেবযানীদেবীর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা জানান, দেবযানীদেবীর পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে পুলিশ জানতে চেয়েছিল তাঁর মেডিক্লেম আছে কি না৷ বাড়ির লোকজন এনিয়ে কিছু বলতে পারেননি৷ কিন্তু তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেছিল পুলিশই৷ বিল মেটানোর দায়িত্বও তাদেরই৷
হাসপাতাল সূত্রের খবর, নিরাপত্তার কারণেই দেবযানীদেবীকে সুপার ডিলাক্স ঘরে রাখতে হয়েছিল৷ পুলিশের অনুরোধে ওই ঘরের দৈনিক ভাড়ায় কিছুটা ছাড় দেওয়া হচ্ছে৷ এদিন পর্যন্ত বিল পুরোপুরি তৈরি হয়নি৷ পুলিশের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তারাই বিল মিটিয়ে দেবে৷ যদিও এনিয়ে বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি৷
এদিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ হাসপাতাল থেকে বের করে এনে দেবযানীদেবীকে আদালতে আনা হয়৷ বেলা ২টো নাগাদ তোলা হয় এজলাসে৷ দু'দিন হাসপাতালে থাকার পর এদিন বেশ ক্লান্তই দেখাচ্ছিল তাঁকে৷ বাঁ হাতে টেপ দিয়ে আটকানো তুলো, এমনকী হাসপাতালের ট্যাগটিও খোলা হয়নি৷ এজলাসে জানলার পাশে একটি বেঞ্চে সারাক্ষণই তাঁকে দেওয়ালে হেলান দিয়ে আধবোজা চোখে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে৷ তবে তাঁর আইনজীবী সওয়াল করার সময় মাঝেমধ্যে আদালতের কার্যাবলি আগ্রহভরে দেখার চেষ্টা করেছেন৷ তাঁর আইনজীবীরা প্রশ্ন তোলেন, এই দু'দিন তিনি কোন হেফাজতে ছিলেন? কারণ, ১৮ মে তাঁর পুলিশ হেপাজতের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল৷ আর পুলিশ হেফাজত থেকে জেল হেপাজতে পাঠানোর আগে মক্কেলকে আদালতে হাজির করা বা তাঁর বক্তব্য ভিডিও কনফারেন্সে শোনাও হয়নি৷ এটা বেআইনি ভাবে আটক রাখা কি না, এ প্রসঙ্গ তুলে তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছেন অনির্বাণবাবু৷ আদালত অবশ্য সবক'টি মামলাতেই তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেয়৷ জেলারকে তাঁর স্বাস্থ্যের দিকে খেয়াল রাখার নির্দেশ দেন বিচারক৷
অন্য দিকে, বারুইপুর পুলিশের জেরায় সুদীপ্তবাবুর আরও সম্পত্তির হদিশ মিলেছে৷ রবিবারই তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ৷ নিউটাউন থানায় দীর্ঘ ক্ষণ তাঁকে জেরা করেন পুলিশকর্তারা৷ কামালগাজিতে সারদার প্রায় ১৮ বিঘা জমির সন্ধান মেলে৷ ওই জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৮০ কোটি টাকার মতো বলে পুলিশ সূত্রের খবর৷ সারদার বারুইপুর শাখার এজেন্ট অরিন্দম দাসের বাড়ি থেকে ওই জমির নথিপত্রও উদ্ধার করা হয়৷
ভাগীরথীর বিভিন্ন অংশ যেমন মুর্শিদাবাদ জেলার লালবাগ থেকে ফরাক্কা ব্যারেজ সংলগ্ন এলাকা, কিংবা কাটোয়া থেকে হুগলি ঘাট পর্যন্ত অংশে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ হয়েছে৷ ডায়মন্ড হারবার থেকে নিশ্চিন্তপুর, গোদাখালি, সুন্দরবনের মাতলা, রায়মঙ্গল, ঠাকুরান নদীতে অবস্থিত স্যান্ডবারের পাশাপাশি পাঁচ বর্গকিলোমিটার এলাকাও ইলিশের সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে৷ ইলিশের প্রাকৃতিক ভাবে প্রজননের সময় অর্থাত্ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত ও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সংরক্ষিত এলাকায় মাছ শিকারই পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মত্স্য দপ্তর৷
জানুয়ারি মাসে দিঘার মোহনাতে মত্স্যজীবীদের এক সমাবেশে এই মতই ব্যক্ত করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা৷ সহ মত্স্য অধিকর্তা সুরজিত্ বাগ বলেন, 'যথেচ্ছ ভাবে মাছ শিকারের ফলে ইলিশের আকাল দেখা দিয়েছে৷ প্রজননের সময় ডিম, মাছ ও চারা মাছ ধরার ফলে ইলিশের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে৷ ভরা মরশুমেও ইলিশের দেখা মিলছে না৷ তাই সরকারি ভাবে বিজ্ঞন্তি জারি করে ইলিশ মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ এ ধরনের উদ্যোগ এই প্রথম৷'
গত মরশুমে সে ভাবে জালে ওঠেনি ইলিশ৷ তাই এ বছর মরশুমের প্রথম থেকেই সতর্ক মত্স্য দপ্তর৷ ইলিশ শিকারে ছোট ফাঁসের জাল নিষিদ্ধ হয়েছে৷ জুন মাস থেকে মাছ শিকারের মরশুম শুরু হচ্ছে৷ ১৫ এপ্রিল থেকে ৩১ মে মাছেদের প্রজননের সময় সমুদ্রে মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকে৷ কিন্ত্ত একশ্রেণির মত্স্যজীবী তা মানতে চান না৷ তাই এ বছর শুরু থেকেই কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে মত্স্য দপ্তর৷ নির্দেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থাও নেওয়া হবে৷
No comments:
Post a Comment