জামাইয়ের দায়ে বিপাকে সনিয়া
গৌতম হোড়
নয়াদিল্লি: লোকসভায় গলা ফুলিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন বিজেপি সাংসদরা, 'কংগ্রেস কা হাত, দামাদ কা সাথ'৷ আর রাজ্যসভায় তাঁদের স্লোগান, 'চোর হ্যায় তো চোর হ্যায়, দামাদ হ্যায় তো কেয়া হ্যায়৷' এই 'দামাদ' আর কেউ নন, সনিয়া গান্ধীর জামাই রবার্ট ভাদরা৷ আইএএস অফিসার অশোক খেমকার কল্যাণে ভাদরার জমি কেলেঙ্কারি আবার সংবাদ শিরোনামে৷ আর সেই অস্ত্রকে কাজে লাগিয়ে সনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলতে মঙ্গলবার সকাল সকালই লোকসভা ও রাজ্যসভায় রবার্ট ভাদরার প্রসঙ্গ তুলল বিজেপি৷ হরিয়ানায় ভাদরার বিতর্কিত জমি-লেনদেন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে বিশেষ তদন্ত দল তৈরি করা হোক, এমন দাবিও করা হয়েছে প্রধান বিরোধী দলের তরফে৷
রবার্টকে আক্রমণ করা মানে এক অর্থে সনিয়াকেই সরাসরি আক্রমণ৷ বাদল অধিবেশন চলাকালীন হাঙ্গামা তোলার এমন সুযোগ ছাড়েনি বিজেপি৷ গোলমালের জেরে প্রথমে ১২টা পর্যন্ত ও পরে দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি রাখতে হয় অধিবেশন৷ তা সত্ত্বেও যে সনিয়া অন্তত এই মুহূর্তে বড়সড় অস্বস্তিতে পড়ছেন না, তার কারণ মায়াবতী ও মুলায়ম সিং যাদব৷ এতদিন বিভিন্ন সঙ্কটমুহূর্তে ইউপিএ সরকারকে বাঁচিয়েছেন তাঁরা, এ দিন বিজেপির আক্রমণ থেকে সনিয়াকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন৷ সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি দু'দলেরই বক্তব্য, জামাইয়ের কাজকারবারের সঙ্গে সনিয়ার রাজনৈতিক পরিচয়কে এক করে দেখা উচিত নয়৷ সনিয়ার পাশেই আছে তারা৷
মায়াবতী এ দিন বলেন, 'জামাই কী করেছেন না করেছেন তার জন্য সনিয়া গান্ধী কী করে দায়ী হবেন? আত্মীয়দের সঙ্গে নেতাদের জড়িয়ে দেখা উচিত নয়৷' অন্য দিকে সমাজবাদী পার্টির নরেশ আগরওয়ালের মত হল, রবার্ট ভাদরাকে নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে৷ তাঁকে সরকারি দামাদ বলা হচ্ছে৷ এটা সমাজবাদী পার্টি মানতে পারছে না৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলা যায়৷ সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে এর কী সম্পর্ক?
লোকসভায় রবার্ট ভাদরা নিয়ে আক্রমণ শানান প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ যশবন্ত সিনহা৷ তাঁর কথায়, 'দুনিয়ায় অনেক নামকরা বিজনেস স্কুল আছে৷ সেখানে বেসরকারি শিল্পপতিদের শেখানো হয়, কী করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতে হয়৷ কিন্ত্ত আমাদের দেশে উঁচুতলায় দারুণ যোগাযোগ আছে এমন এক ভদ্রলোক আছেন, যিনি কোনও বিজনেস স্কুলে না গিয়েই কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন৷' এরপরই শুরু হয় প্রবল হইচই৷ কংগ্রেস সাংসদরা ওয়েলে নেমে আসেন৷ সনিয়ার সপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন৷ পরে সংসদের বাইরে যশবন্ত বলেন, অর্থমন্ত্রীর উচিত তাঁর স্কুলে ভর্তি হয়ে এটা শেখা যে কী করে কোনও বিনিয়োগ ছাড়াই শয়ে শয়ে কোটি টাকা কামানো যায়৷ কংগ্রেস অবশ্য এ নিয়ে সংসদে আলোচনা না হতে দেওয়া বিষয়ে অনড়৷ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মণীশ তিওয়ারির কথায়, 'একজনের ব্যক্তিগত বিষয়আশয় সংসদের কক্ষে টেনে আনা হচ্ছে, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক৷ বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে৷'
পরে সর্বদলীয় বৈঠকে বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ দাবি করেন, সংসদে রবার্ট ভাদরাকে নিয়ে তাঁদের বলতে দিতে হবে৷ সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্তও জানান, একজন সম্পর্কে সরকার কেন এত স্পর্শকাতর হবে? কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, রবার্ট ভাদরা সংসদ সদস্য নন৷ তাছাড়া এটা হরিয়ানার রাজ্য সরকারের ব্যাপার৷ লোকসভাটা রাজ্যের বিষয় নিয়ে আলোচনার জায়গা নয়৷ কিন্ত্ত বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বললেন, তাঁরা সংসদের মধ্যে বিষয়টি তুলবেনই৷ এটা হরিয়ানার ব্যাপার নয়, এটা জাতীয় লুঠ৷ তাছাড়া এর সঙ্গে যে যে বিষয় যুক্ত, যেমন আয়কর, ব্যাঙ্কিং, ইত্যাদি তো কেন্দ্রেরই এক্তিয়ারে৷ তাই রবার্ট ভাদরা প্রসঙ্গ তোলার অধিকার তাঁদের আছে৷ বোঝা যাচ্ছে, সনিয়ার জামাই প্রসঙ্গ সহজে ছেড়ে দিতে নারাজ বিজেপি৷
নয়াদিল্লি: লোকসভায় গলা ফুলিয়ে স্লোগান দিচ্ছিলেন বিজেপি সাংসদরা, 'কংগ্রেস কা হাত, দামাদ কা সাথ'৷ আর রাজ্যসভায় তাঁদের স্লোগান, 'চোর হ্যায় তো চোর হ্যায়, দামাদ হ্যায় তো কেয়া হ্যায়৷' এই 'দামাদ' আর কেউ নন, সনিয়া গান্ধীর জামাই রবার্ট ভাদরা৷ আইএএস অফিসার অশোক খেমকার কল্যাণে ভাদরার জমি কেলেঙ্কারি আবার সংবাদ শিরোনামে৷ আর সেই অস্ত্রকে কাজে লাগিয়ে সনিয়া গান্ধী ও কংগ্রেসকে বিপাকে ফেলতে মঙ্গলবার সকাল সকালই লোকসভা ও রাজ্যসভায় রবার্ট ভাদরার প্রসঙ্গ তুলল বিজেপি৷ হরিয়ানায় ভাদরার বিতর্কিত জমি-লেনদেন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে বিশেষ তদন্ত দল তৈরি করা হোক, এমন দাবিও করা হয়েছে প্রধান বিরোধী দলের তরফে৷
রবার্টকে আক্রমণ করা মানে এক অর্থে সনিয়াকেই সরাসরি আক্রমণ৷ বাদল অধিবেশন চলাকালীন হাঙ্গামা তোলার এমন সুযোগ ছাড়েনি বিজেপি৷ গোলমালের জেরে প্রথমে ১২টা পর্যন্ত ও পরে দুপুর ২টো পর্যন্ত মুলতুবি রাখতে হয় অধিবেশন৷ তা সত্ত্বেও যে সনিয়া অন্তত এই মুহূর্তে বড়সড় অস্বস্তিতে পড়ছেন না, তার কারণ মায়াবতী ও মুলায়ম সিং যাদব৷ এতদিন বিভিন্ন সঙ্কটমুহূর্তে ইউপিএ সরকারকে বাঁচিয়েছেন তাঁরা, এ দিন বিজেপির আক্রমণ থেকে সনিয়াকে বাঁচাতে এগিয়ে এলেন৷ সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টি দু'দলেরই বক্তব্য, জামাইয়ের কাজকারবারের সঙ্গে সনিয়ার রাজনৈতিক পরিচয়কে এক করে দেখা উচিত নয়৷ সনিয়ার পাশেই আছে তারা৷
মায়াবতী এ দিন বলেন, 'জামাই কী করেছেন না করেছেন তার জন্য সনিয়া গান্ধী কী করে দায়ী হবেন? আত্মীয়দের সঙ্গে নেতাদের জড়িয়ে দেখা উচিত নয়৷' অন্য দিকে সমাজবাদী পার্টির নরেশ আগরওয়ালের মত হল, রবার্ট ভাদরাকে নিয়ে বিজেপি রাজনীতি করছে৷ তাঁকে সরকারি দামাদ বলা হচ্ছে৷ এটা সমাজবাদী পার্টি মানতে পারছে না৷ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলা যায়৷ সনিয়া গান্ধীর সঙ্গে এর কী সম্পর্ক?
লোকসভায় রবার্ট ভাদরা নিয়ে আক্রমণ শানান প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ যশবন্ত সিনহা৷ তাঁর কথায়, 'দুনিয়ায় অনেক নামকরা বিজনেস স্কুল আছে৷ সেখানে বেসরকারি শিল্পপতিদের শেখানো হয়, কী করে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করতে হয়৷ কিন্ত্ত আমাদের দেশে উঁচুতলায় দারুণ যোগাযোগ আছে এমন এক ভদ্রলোক আছেন, যিনি কোনও বিজনেস স্কুলে না গিয়েই কোটি কোটি টাকা কামাচ্ছেন৷' এরপরই শুরু হয় প্রবল হইচই৷ কংগ্রেস সাংসদরা ওয়েলে নেমে আসেন৷ সনিয়ার সপক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন৷ পরে সংসদের বাইরে যশবন্ত বলেন, অর্থমন্ত্রীর উচিত তাঁর স্কুলে ভর্তি হয়ে এটা শেখা যে কী করে কোনও বিনিয়োগ ছাড়াই শয়ে শয়ে কোটি টাকা কামানো যায়৷ কংগ্রেস অবশ্য এ নিয়ে সংসদে আলোচনা না হতে দেওয়া বিষয়ে অনড়৷ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মণীশ তিওয়ারির কথায়, 'একজনের ব্যক্তিগত বিষয়আশয় সংসদের কক্ষে টেনে আনা হচ্ছে, এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক৷ বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে৷'
পরে সর্বদলীয় বৈঠকে বিরোধী নেত্রী সুষমা স্বরাজ দাবি করেন, সংসদে রবার্ট ভাদরাকে নিয়ে তাঁদের বলতে দিতে হবে৷ সিপিআই নেতা গুরুদাস দাশগুপ্তও জানান, একজন সম্পর্কে সরকার কেন এত স্পর্শকাতর হবে? কংগ্রেসের পাল্টা বক্তব্য, রবার্ট ভাদরা সংসদ সদস্য নন৷ তাছাড়া এটা হরিয়ানার রাজ্য সরকারের ব্যাপার৷ লোকসভাটা রাজ্যের বিষয় নিয়ে আলোচনার জায়গা নয়৷ কিন্ত্ত বিজেপি নেতা শাহনওয়াজ হুসেন বললেন, তাঁরা সংসদের মধ্যে বিষয়টি তুলবেনই৷ এটা হরিয়ানার ব্যাপার নয়, এটা জাতীয় লুঠ৷ তাছাড়া এর সঙ্গে যে যে বিষয় যুক্ত, যেমন আয়কর, ব্যাঙ্কিং, ইত্যাদি তো কেন্দ্রেরই এক্তিয়ারে৷ তাই রবার্ট ভাদরা প্রসঙ্গ তোলার অধিকার তাঁদের আছে৷ বোঝা যাচ্ছে, সনিয়ার জামাই প্রসঙ্গ সহজে ছেড়ে দিতে নারাজ বিজেপি৷
No comments:
Post a Comment