Twitter

Follow palashbiswaskl on Twitter

Memories of Another day

Memories of Another day
While my Parents Pulin babu and Basanti devi were living

Wednesday, August 14, 2013

ত্রাতা ওয়েভার স্কিম, ধরাধোঁয়ার বাইরে বড় করদাতারা

ত্রাতা ওয়েভার স্কিম, ধরাধোঁয়ার বাইরে বড় করদাতারা

ত্রাতা ওয়েভার স্কিম, ধরাধোঁয়ার বাইরে বড় করদাতারা
তাপস প্রামাণিক

আশঙ্কাই সত্যি হল৷

'ওয়েভার স্কিমে' সম্পত্তি-কর ছাড়ের সুযোগ নিয়ে ফের ধরাছোঁয়ার বাইরে কলকাতার বড় করদাতারা৷ পুরসভা একাধিকবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও সম্পত্তি-কর মেটানোর ব্যাপারে তাঁদের বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই৷ স্বাভাবিক ভাবেই পুর-কর্তৃপক্ষ এখন মহা ফাঁপরে৷ বকেয়া আদায় নিয়ে যেমন মাথাব্যথা, তেমনই কড়া হাতে মোকাবিলার রাস্তাও প্রায় বন্ধ৷ কারণ, পুরভোটের আগে জোর করে কর আদায়ের ঝুঁকি নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব৷ 

ওয়েভারে অংশ নেওয়ার পর বড় করদাতাদের অনেকেই আবার সম্পত্তি-কর দেওয়া বন্ধ করেছেন৷ অনেকের বকেয়ার পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে৷ ফলে অনাদায়ী করের পরিমাণও বেড়ে চলেছে ক্রমাগত৷ পুর-আধিকারিকরা বলছেন, বড় করদাতারা রয়েছেন তক্কে তক্কে৷ রীতিমতো জেনেবুঝেই ওয়েভার স্কিমের সুযোগ নিয়ে সম্পত্তি-কর মেটাচ্ছেন না৷ তাঁদের ধারণা, বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে পুরসভা ফের ওয়েভার স্কিম ঘোষণা করতে বাধ্য হবে৷ তখন নতুন করে করছাড়ের সুযোগ মিলবে৷

আশঙ্কা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়৷ কারণ, 'দাদা'দের দেখাদেখি 'ভাই'রাও একই পথের পথিক হতে পারেন৷ অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের আধিকারিকরা বলছেন, বড় করদাতারা যে ভাবে সম্পত্তি-কর মেটানোয় অনীহা দেখাচ্ছেন, তাতে ছোট ও মাঝারি করদাতারাও ভবিষ্যতে বেঁকে বসতে পারেন৷ আর তেমন কিছু ঘটলে পুরসভার রোজগার ঠেকবে তলানিতে৷ সংক্রমণ ঠেকাতে তাই আগেভাগে প্রতিষেধকের খোঁজে পুরসভা৷ করছাড়ের সুযোগ নেওয়ার পর যাঁরা সম্পত্তি-কর মেটানো বন্ধ করেছেন, তাঁদের একটি তালিকা প্রস্ত্তত করা হচ্ছে৷ আপাতত ৭৮ জনের তালিকা তৈরি করে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ যাঁদের গড়ে মাথাপিছু ২০ লক্ষ টাকার উপর বকেয়া, তাঁদেরই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে৷ 

সম্পত্তি-কর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, 'ওয়েভারের সুযোগ নিয়েও যাঁরা সম্পত্তি-কর মেটাচ্ছেন না, পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট কালেক্টররা তাঁদের বাড়ি বাড়ি যাবেন৷ কেন তাঁরা কর দিচ্ছেন না, তাঁদের কাছে সরাসরি তা জানতে চাওয়া হবে৷ তার ভিত্তিতে ঠিক হবে পরবর্তী পদক্ষেপ৷'
ওয়েভার স্কিম ঘোষণার সময়ই পুরকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে যাঁরা বকেয়া কর মেটাবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে আইনের সাহায্যে পুরসভা সেই সম্পত্তির দখল নেবে৷ পুরসভার সেই হুঁশিয়ারি ফাঁকা বুলি হয়েই রয়ে গিয়েছে৷
দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর-আধিকারিকরা স্বীকার করছেন, ছোট ও মাঝারি করদাতারা প্রকল্পের সুযোগ নিলেও, বড় করদাতাদের অনেকেই পুরসভাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন৷ পুরসভা সূত্রে খবর, ওয়েভার স্কিম ঘোষণা হওয়ার আগে বকেয়া সম্পত্তি-করের পরিমাণ ছিল প্রায় ২,৬২১ কোটি ৩৭ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা৷ মোট ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৬৪ জন করদাতার থেকে পুরসভা এই টাকা পেত৷ তার মধ্যে এককোটি টাকার উপর বাকি ছিল ৩০৫ জনের৷ তাঁদের মোট বকেয়ার পরিমাণ ছিল প্রায় ৯০৬ কোটি টাকা, ওয়েভারে সাড়া দিয়েছেন মাত্র ছ'জন৷ আদায় হয়েছে ১০ কোটি টাকা৷ সব মিলিয়ে ওয়েভারে অংশ নিয়েছেন ১,৩৯,৪৫২ জন৷ আদায় হয়েছে ৩৩৯ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা৷ প্রায় দু'লক্ষের উপর করদাতা করছাড়ের সুযোগ পেয়েও উপেক্ষা করছেন৷ অথচ, এই বড় করদাতাদের দিকে তাকিয়েই ওয়েভার স্কিম ঘোষিত হয়েছিল৷ পুরকর্তারা সে সময় দাবি করেছিলেন, সুদ ও জরিমানা মকুব করলে বড় করদাতারা বকেয়া সম্পত্তি-কর মেটাতে উত্‍সাহী হবেন৷ রাজ্যপাল এমকে নারায়ণনের কাছেও এই যুক্তি পেশ করা হয়েছিল৷ কিন্ত্ত রাঘববোয়ালরা পুরসভার ডাকে তেমন সাড়া দেননি৷

এ ব্যাপারে দেবব্রতবাবুর সাফাই, আদালতে মামলা চলার জন্য বড় করদাতাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা যাচ্ছে না৷ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, যাঁরা ওয়েভারের সুযোগ নেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল৷ জলের লাইন কেটে দেওয়া, সম্পত্তির দখল নেওয়ার মতো কড়া পদক্ষেপ করার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন মেয়র স্বয়ং৷ কিন্ত্ত মাঝপথে সে উদ্যোগে জল ঢেলে দেয় কর্তৃপক্ষ৷ কারণ, বছর ঘুরলেই কলকাতা পুরভোটের দামামা বেজে যাবে৷ তার আগে জোর করে কর আদায়ের ঝুঁকি নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব৷ ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখতে সম্পত্তি-কর আদায়ে তাই ধীরে চলো নীতি নেওয়ার পক্ষপাতী তৃণমূল পুরবোর্ড৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...