ত্রাতা ওয়েভার স্কিম, ধরাধোঁয়ার বাইরে বড় করদাতারা
তাপস প্রামাণিক
আশঙ্কাই সত্যি হল৷
'ওয়েভার স্কিমে' সম্পত্তি-কর ছাড়ের সুযোগ নিয়ে ফের ধরাছোঁয়ার বাইরে কলকাতার বড় করদাতারা৷ পুরসভা একাধিকবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও সম্পত্তি-কর মেটানোর ব্যাপারে তাঁদের বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই৷ স্বাভাবিক ভাবেই পুর-কর্তৃপক্ষ এখন মহা ফাঁপরে৷ বকেয়া আদায় নিয়ে যেমন মাথাব্যথা, তেমনই কড়া হাতে মোকাবিলার রাস্তাও প্রায় বন্ধ৷ কারণ, পুরভোটের আগে জোর করে কর আদায়ের ঝুঁকি নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব৷
ওয়েভারে অংশ নেওয়ার পর বড় করদাতাদের অনেকেই আবার সম্পত্তি-কর দেওয়া বন্ধ করেছেন৷ অনেকের বকেয়ার পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে৷ ফলে অনাদায়ী করের পরিমাণও বেড়ে চলেছে ক্রমাগত৷ পুর-আধিকারিকরা বলছেন, বড় করদাতারা রয়েছেন তক্কে তক্কে৷ রীতিমতো জেনেবুঝেই ওয়েভার স্কিমের সুযোগ নিয়ে সম্পত্তি-কর মেটাচ্ছেন না৷ তাঁদের ধারণা, বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে পুরসভা ফের ওয়েভার স্কিম ঘোষণা করতে বাধ্য হবে৷ তখন নতুন করে করছাড়ের সুযোগ মিলবে৷
আশঙ্কা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়৷ কারণ, 'দাদা'দের দেখাদেখি 'ভাই'রাও একই পথের পথিক হতে পারেন৷ অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের আধিকারিকরা বলছেন, বড় করদাতারা যে ভাবে সম্পত্তি-কর মেটানোয় অনীহা দেখাচ্ছেন, তাতে ছোট ও মাঝারি করদাতারাও ভবিষ্যতে বেঁকে বসতে পারেন৷ আর তেমন কিছু ঘটলে পুরসভার রোজগার ঠেকবে তলানিতে৷ সংক্রমণ ঠেকাতে তাই আগেভাগে প্রতিষেধকের খোঁজে পুরসভা৷ করছাড়ের সুযোগ নেওয়ার পর যাঁরা সম্পত্তি-কর মেটানো বন্ধ করেছেন, তাঁদের একটি তালিকা প্রস্ত্তত করা হচ্ছে৷ আপাতত ৭৮ জনের তালিকা তৈরি করে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ যাঁদের গড়ে মাথাপিছু ২০ লক্ষ টাকার উপর বকেয়া, তাঁদেরই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে৷
সম্পত্তি-কর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, 'ওয়েভারের সুযোগ নিয়েও যাঁরা সম্পত্তি-কর মেটাচ্ছেন না, পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট কালেক্টররা তাঁদের বাড়ি বাড়ি যাবেন৷ কেন তাঁরা কর দিচ্ছেন না, তাঁদের কাছে সরাসরি তা জানতে চাওয়া হবে৷ তার ভিত্তিতে ঠিক হবে পরবর্তী পদক্ষেপ৷'
ওয়েভার স্কিম ঘোষণার সময়ই পুরকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে যাঁরা বকেয়া কর মেটাবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে আইনের সাহায্যে পুরসভা সেই সম্পত্তির দখল নেবে৷ পুরসভার সেই হুঁশিয়ারি ফাঁকা বুলি হয়েই রয়ে গিয়েছে৷
দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর-আধিকারিকরা স্বীকার করছেন, ছোট ও মাঝারি করদাতারা প্রকল্পের সুযোগ নিলেও, বড় করদাতাদের অনেকেই পুরসভাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন৷ পুরসভা সূত্রে খবর, ওয়েভার স্কিম ঘোষণা হওয়ার আগে বকেয়া সম্পত্তি-করের পরিমাণ ছিল প্রায় ২,৬২১ কোটি ৩৭ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা৷ মোট ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৬৪ জন করদাতার থেকে পুরসভা এই টাকা পেত৷ তার মধ্যে এককোটি টাকার উপর বাকি ছিল ৩০৫ জনের৷ তাঁদের মোট বকেয়ার পরিমাণ ছিল প্রায় ৯০৬ কোটি টাকা, ওয়েভারে সাড়া দিয়েছেন মাত্র ছ'জন৷ আদায় হয়েছে ১০ কোটি টাকা৷ সব মিলিয়ে ওয়েভারে অংশ নিয়েছেন ১,৩৯,৪৫২ জন৷ আদায় হয়েছে ৩৩৯ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা৷ প্রায় দু'লক্ষের উপর করদাতা করছাড়ের সুযোগ পেয়েও উপেক্ষা করছেন৷ অথচ, এই বড় করদাতাদের দিকে তাকিয়েই ওয়েভার স্কিম ঘোষিত হয়েছিল৷ পুরকর্তারা সে সময় দাবি করেছিলেন, সুদ ও জরিমানা মকুব করলে বড় করদাতারা বকেয়া সম্পত্তি-কর মেটাতে উত্সাহী হবেন৷ রাজ্যপাল এমকে নারায়ণনের কাছেও এই যুক্তি পেশ করা হয়েছিল৷ কিন্ত্ত রাঘববোয়ালরা পুরসভার ডাকে তেমন সাড়া দেননি৷
এ ব্যাপারে দেবব্রতবাবুর সাফাই, আদালতে মামলা চলার জন্য বড় করদাতাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা যাচ্ছে না৷ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, যাঁরা ওয়েভারের সুযোগ নেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল৷ জলের লাইন কেটে দেওয়া, সম্পত্তির দখল নেওয়ার মতো কড়া পদক্ষেপ করার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন মেয়র স্বয়ং৷ কিন্ত্ত মাঝপথে সে উদ্যোগে জল ঢেলে দেয় কর্তৃপক্ষ৷ কারণ, বছর ঘুরলেই কলকাতা পুরভোটের দামামা বেজে যাবে৷ তার আগে জোর করে কর আদায়ের ঝুঁকি নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব৷ ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখতে সম্পত্তি-কর আদায়ে তাই ধীরে চলো নীতি নেওয়ার পক্ষপাতী তৃণমূল পুরবোর্ড৷
আশঙ্কাই সত্যি হল৷
'ওয়েভার স্কিমে' সম্পত্তি-কর ছাড়ের সুযোগ নিয়ে ফের ধরাছোঁয়ার বাইরে কলকাতার বড় করদাতারা৷ পুরসভা একাধিকবার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও সম্পত্তি-কর মেটানোর ব্যাপারে তাঁদের বিন্দুমাত্র হেলদোল নেই৷ স্বাভাবিক ভাবেই পুর-কর্তৃপক্ষ এখন মহা ফাঁপরে৷ বকেয়া আদায় নিয়ে যেমন মাথাব্যথা, তেমনই কড়া হাতে মোকাবিলার রাস্তাও প্রায় বন্ধ৷ কারণ, পুরভোটের আগে জোর করে কর আদায়ের ঝুঁকি নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব৷
ওয়েভারে অংশ নেওয়ার পর বড় করদাতাদের অনেকেই আবার সম্পত্তি-কর দেওয়া বন্ধ করেছেন৷ অনেকের বকেয়ার পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে৷ ফলে অনাদায়ী করের পরিমাণও বেড়ে চলেছে ক্রমাগত৷ পুর-আধিকারিকরা বলছেন, বড় করদাতারা রয়েছেন তক্কে তক্কে৷ রীতিমতো জেনেবুঝেই ওয়েভার স্কিমের সুযোগ নিয়ে সম্পত্তি-কর মেটাচ্ছেন না৷ তাঁদের ধারণা, বকেয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে পুরসভা ফের ওয়েভার স্কিম ঘোষণা করতে বাধ্য হবে৷ তখন নতুন করে করছাড়ের সুযোগ মিলবে৷
আশঙ্কা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়৷ কারণ, 'দাদা'দের দেখাদেখি 'ভাই'রাও একই পথের পথিক হতে পারেন৷ অ্যাসেসমেন্ট বিভাগের আধিকারিকরা বলছেন, বড় করদাতারা যে ভাবে সম্পত্তি-কর মেটানোয় অনীহা দেখাচ্ছেন, তাতে ছোট ও মাঝারি করদাতারাও ভবিষ্যতে বেঁকে বসতে পারেন৷ আর তেমন কিছু ঘটলে পুরসভার রোজগার ঠেকবে তলানিতে৷ সংক্রমণ ঠেকাতে তাই আগেভাগে প্রতিষেধকের খোঁজে পুরসভা৷ করছাড়ের সুযোগ নেওয়ার পর যাঁরা সম্পত্তি-কর মেটানো বন্ধ করেছেন, তাঁদের একটি তালিকা প্রস্ত্তত করা হচ্ছে৷ আপাতত ৭৮ জনের তালিকা তৈরি করে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে৷ যাঁদের গড়ে মাথাপিছু ২০ লক্ষ টাকার উপর বকেয়া, তাঁদেরই তালিকাভুক্ত করা হয়েছে৷
সম্পত্তি-কর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার জানিয়েছেন, 'ওয়েভারের সুযোগ নিয়েও যাঁরা সম্পত্তি-কর মেটাচ্ছেন না, পুরসভার অ্যাসেসমেন্ট কালেক্টররা তাঁদের বাড়ি বাড়ি যাবেন৷ কেন তাঁরা কর দিচ্ছেন না, তাঁদের কাছে সরাসরি তা জানতে চাওয়া হবে৷ তার ভিত্তিতে ঠিক হবে পরবর্তী পদক্ষেপ৷'
ওয়েভার স্কিম ঘোষণার সময়ই পুরকর্তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে যাঁরা বকেয়া কর মেটাবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে আইনের সাহায্যে পুরসভা সেই সম্পত্তির দখল নেবে৷ পুরসভার সেই হুঁশিয়ারি ফাঁকা বুলি হয়েই রয়ে গিয়েছে৷
দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর-আধিকারিকরা স্বীকার করছেন, ছোট ও মাঝারি করদাতারা প্রকল্পের সুযোগ নিলেও, বড় করদাতাদের অনেকেই পুরসভাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন৷ পুরসভা সূত্রে খবর, ওয়েভার স্কিম ঘোষণা হওয়ার আগে বকেয়া সম্পত্তি-করের পরিমাণ ছিল প্রায় ২,৬২১ কোটি ৩৭ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা৷ মোট ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭৬৪ জন করদাতার থেকে পুরসভা এই টাকা পেত৷ তার মধ্যে এককোটি টাকার উপর বাকি ছিল ৩০৫ জনের৷ তাঁদের মোট বকেয়ার পরিমাণ ছিল প্রায় ৯০৬ কোটি টাকা, ওয়েভারে সাড়া দিয়েছেন মাত্র ছ'জন৷ আদায় হয়েছে ১০ কোটি টাকা৷ সব মিলিয়ে ওয়েভারে অংশ নিয়েছেন ১,৩৯,৪৫২ জন৷ আদায় হয়েছে ৩৩৯ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা৷ প্রায় দু'লক্ষের উপর করদাতা করছাড়ের সুযোগ পেয়েও উপেক্ষা করছেন৷ অথচ, এই বড় করদাতাদের দিকে তাকিয়েই ওয়েভার স্কিম ঘোষিত হয়েছিল৷ পুরকর্তারা সে সময় দাবি করেছিলেন, সুদ ও জরিমানা মকুব করলে বড় করদাতারা বকেয়া সম্পত্তি-কর মেটাতে উত্সাহী হবেন৷ রাজ্যপাল এমকে নারায়ণনের কাছেও এই যুক্তি পেশ করা হয়েছিল৷ কিন্ত্ত রাঘববোয়ালরা পুরসভার ডাকে তেমন সাড়া দেননি৷
এ ব্যাপারে দেবব্রতবাবুর সাফাই, আদালতে মামলা চলার জন্য বড় করদাতাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা যাচ্ছে না৷ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, যাঁরা ওয়েভারের সুযোগ নেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল৷ জলের লাইন কেটে দেওয়া, সম্পত্তির দখল নেওয়ার মতো কড়া পদক্ষেপ করার ব্যাপারে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিলেন মেয়র স্বয়ং৷ কিন্ত্ত মাঝপথে সে উদ্যোগে জল ঢেলে দেয় কর্তৃপক্ষ৷ কারণ, বছর ঘুরলেই কলকাতা পুরভোটের দামামা বেজে যাবে৷ তার আগে জোর করে কর আদায়ের ঝুঁকি নিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব৷ ভোট ব্যাঙ্ক অটুট রাখতে সম্পত্তি-কর আদায়ে তাই ধীরে চলো নীতি নেওয়ার পক্ষপাতী তৃণমূল পুরবোর্ড৷
No comments:
Post a Comment